ধীরে ধীরে নামছে তাপমাত্রা। চড়া রোদ আর কড়া লাগছে না। উত্তরের জনপদে হালকা শীতের আমেজ। আবহাওয়া অধিদপ্তরের আভাস, চলতি মাসের মাঝামাঝিতেই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অনুভূত হতে পারে শীত। আর ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে কয়েক দফা শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাবে। আগামী রোববার দেশের তিন বিভাগে বৃষ্টি হতে পারে। কমতে শুরু করবে তাপমাত্রাও।
গতকাল বৃহস্পতিবার আবহাওয়ার তিন মাসের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এই সময়ে দেশে ৮ থেকে ১০টি মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। আর উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে দুই থেকে তিনটি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বইতে পারে।
আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক জানান, ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে শৈত্যপ্রবাহ চলতে পারে। তবে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বইবে ডিসেম্বরের শেষ ও জানুয়ারির শুরুতে। শীত কবে আসবে– জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখনই সকালের দিকে উত্তরবঙ্গের লোকজন শীতের অনুভূতি পাওয়ার কথা বলছে। তবে এ মাসের ১৫ তারিখের পর শীতের অনুভূতি তৈরি হবে দেশের উত্তর-পূর্ব ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে।
বড় এলাকাজুড়ে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে গেলে তাকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ ধরা হয়; ৬ থেকে ৮ ডিগ্রির মধ্যে থাকলে মাঝারি এবং ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তাকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়।
আগামী তিন মাসের পূর্বাভাসে আবহাওয়া অফিস বলছে, বঙ্গোপসাগরে দুই থেকে পাঁচটি লঘুচাপ তৈরি হতে পারে, যার মধ্যে এক থেকে দুটি নিম্নচাপ বা ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে।
আবহাওয়াবিদ নাজমুল বলেন, নভেম্বরে অহরহ লঘুচাপ তৈরি হয়। এ মাসে ঘূর্ণিঝড় হতে পারে। ডিসেম্বরেও লঘুচাপ হতে পারে, তবে ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা কম। অক্টোবরেও বঙ্গোপসাগরে একাধিক লঘুচাপ তৈরি হয়েছিল। এর মধ্যে একটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে নাম দেওয়া হয় ‘দানা’। তবে প্রবল ঘূর্ণিঝড় দানার ধাক্কা বাংলাদেশে না লাগলেও ভারতের উড়িষ্যা উপকূলে এটি আঘাত হানে। আবহাওয়া অফিস বলছে, আগামী তিন মাসে দেশে ‘স্বাভাবিক’ বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এর মধ্যে দিন ও রাতে তাপমাত্রা ধীরে ধীরে কমতে পারে।
আর শেষ রাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের উত্তর, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল, মধ্যাঞ্চল ও নদী অববাহিকায় মাঝারি বা ঘন কুয়াশা এবং অন্যান্য এলাকায় হালকা বা মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। এ সময়ে ঘন কুয়াশার কারণে দিন ও রাতে তাপমাত্রার পার্থক্য কমে আসায় শীতের অনুভূতি বাড়তে পারে বলে আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
শীতকাল এলে গোসলের কথা শুনলেই অনেকে আঁতকে ওঠেন। অনেকে গোসলখানায় ঢুকেও গায়ে পানি না ঢেলেই বেরিয়ে আসেন। তবে নিয়মিত গোসল করতে না পারলে সেই বিষয় নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষকের মতে, নিয়মিত গোসল না করাই ভালো। একাধিক মার্কিন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিদিন গোসল করাটা অনেকটাই একটা সামাজিক রীতি বা অভ্যাস।
এ ক্ষেত্রে তাদের যুক্তি হলো, প্রতিদিন গোসলের অভ্যাস আসলে শরীর পরিচ্ছন্ন রাখা। তবে শরীর পরিচ্ছন্নের কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করে এই শীতে এড়িয়ে যেতে পারেন গোসলকে। গোসল না করেও শরীর পরিচ্ছন্ন রাখতে পারলে শীতে না করেও শরীর পরিচ্ছন্ন রাখার আরও অনেক পদ্ধতি রয়েছে। বিশেষ করে ৫টি এমন পদ্ধতি রয়েছে যার মাধ্যমে গোসল না করেও শরীর পরিচ্ছন্ন রাখা সম্ভব। আসুন এ বার এই পদ্ধতিগুলি সম্পর্কে সবিস্তারে জেনে নেওয়া যাক।
পায়ের যত্ন নিন
শীতকালে নিয়মিত গোসল না করলেও সাবান দিয়ে পা ধুতে ভুলবেন না। কারণ, যে ধরনের জুতোই পরুন না কেন, পায়ে প্রচুর জীবাণু বা ব্যাক্টেরিয়া থেকে যায়। তাই পায়ের তলা, আঙ্গুলের খাঁজগুলি ভালো করে সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এর পাশাপাশি জুতো পরার সময় সম্ভব হলে পায়ে ও জুতার ভেতরে সামান্য পাউডার বা পারফিউম ছিটিয়ে দিন।
ঘুমানোর আগে পারফিউম দিন
হয়তো কাজের চাপে বাড়ি ফিরতে দেরি হয়ে গেল। রাতে গোসল না করে যে সকালে গোসল করবেন, তারও উপায় নেই! সে ক্ষেত্রে কী করবেন! এ ক্ষেত্রে ঘুমানোর আগেই গায়ে বডি স্প্রে বা পারফিউম মেখে নিন আর সকালে ঘুম থেকে উঠে আরেকবার। শরীরে কোনো দুর্গন্ধ হবে না।
সঠিক পদ্ধতিতে পারফিউম দিন
পারফিউমের গন্ধ দীর্ঘস্থায়ী করতে সেটা সঠিক উপায়ে মাখুন। পারফিউম দিন শরীরের ‘পালস পয়েন্ট’-এ। যেমন, ঘাড়ে, কবজি বা কনুইয়ের ভেতরের দিকে। পারফিউম স্প্রে করে ঘষবেন না। চেষ্টা করুন শরীরের একটু দূর থকে স্প্রে করে আলতো করে আঙুলের ডগা দিয়ে শরীরে মেখে নিতে।
ঢিলেঢালা পোশাক পরুন
শীতকালে কখনওই আঁটসাঁট পোশাক পরা উচিত নয়। আঁটসাঁট পোশাক পরলে শরীরে ঘাম বা দুর্গন্ধ হয় বেশি। তাই শীতকালে ঢিলেঢালা পোশাক।
চুলের যত্ন নিন
অনেকেরই চুল দু-একদিন না ধুলেই আঠালো চিটচিটে হয়ে যায়। ফলে চুলে দুর্গন্ধও হয়। শীতকালে প্রতিদিন চুল না ভেজালেও ড্রাই শ্যাম্পু ব্যবহার করতে পারেন। ড্রাই শ্যাম্পু স্প্রে করার পর ভালো করে মাথা আঁচড়ে নিন। সম্ভব হলে প্রতিদিন অন্তত ৫-৬ বার চুলে ব্রাশ করুন।
শীতের কথা মনে পড়লেই অনুভূত হয় বাতাসের হিমশীতলতা, ঘ্রানেন্দ্রিয় পায় পিঠাপুলির ঘ্রাণ। মনে পড়ে লেপ-কম্বল মুরি দিয়ে গুটিসুটি করে ঘুমানো। শীতের এই সময়টাতে ত্বক খুবই রুক্ষ, শুষ্ক ও মলিন হতে দেখা যায়। বাইরের ধুলাবালি, শীতল আবহাওয়া ও আর্দ্র পরিবেশের কারণে নারী-পুরুষ উভয়ের ত্বকের ক্ষেত্রেই বিভিন্ন ধরণের সমস্যা যেমন ত্বক খসখসে হয়ে যাওয়া,ত্বক ও হাত-পা ফেটে যাওয়া, ত্বকে চুলকানি ইত্যাদি দেখা দেয়। বিশেষ করে যাদের ত্বক শুষ্ক, তাদের চেহারায় খসখসে ভাব চলে আসে ও চেহারার লাবণ্যতা নষ্ট হয়ে যায়। তাই শীতের এই সময়টাতে ত্বকের সুস্বাস্হ্য রক্ষায় এবং ত্বককে সজীব ও মসৃণ রাখতে দরকার একটু বাড়তি যত্ন ও সর্তকতা।
শীতে ত্বক এবং চুলের সমস্যার সমাধানে কী করবেন?
কী কী সমস্যা হয়?
১. ইকথায়োসিস (হাঁটু থেকে পা পর্যন্ত এমনকি সর্বাঙ্গ শুকিয়ে খোসার মতো আঁশ উঠতে থাকে) সারা বছর থাকলেও এর প্রকোপ বাড়ে শুষ্ক শীতকালেই।
২. সেনাইল জেরোটিক প্রুরাইটাস (সারা গা শুকিয়ে চুলকানির তৈরি হয়)। চল্লিশোর্ধ্বদেরই এ ক্ষেত্রে ঝুঁকি বেশি।
৩. সোরাইসিস বা সোরিওসিস-এর সমস্যা (এই রোগে মাথা, হাঁটু, কনুই-সহ সারা শরীরে মাছের আঁশের মতো খোসা ওঠতে থাকে)।
৪. যে সব শিশুদের অ্যাটোপিক ডার্মাটাইসিস (এগজিমা) রয়েছে, তাদের এই রোগ বেড়ে যাওয়ার সম্ভবনা থাকে শীতে।
৫. এ ছাড়াও অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায়, উলের পোশাক অর্থাৎ সোয়েটার, মাফলার, টুপি ইত্যাদি থেকে অ্যালার্জির সমস্যা হয়। আসলে সিনথেটিক উল সরাসরি ত্বকের সংস্পর্শে এসে অ্যালার্জির সৃষ্টি করে।
৬. খুশকির সমস্যা। শীতকালে নিয়মিত স্নান না করায় মৃত কোষ এবং ধূলিকণা জমে যায় চুলের গোড়ায়। এর থেকে খুশকির সমস্যা বেড়ে গিয়ে অত্যধিক পরিমানে চুল উঠতে থাকে।
সমাধান:
১. শীতকালে যাঁরা বিশেষ সমস্যায় ভোগেন, শীতের গোড়াতেই তাঁদের চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত।
২. প্রথমেই খেয়াল রাখুন যাতে সবসময় আপনার ত্বকের আদ্রতা বজায় থাকে। গোসলের আগে নারকেল তেল বা অলিভ অয়েল মাখুন। তবে সরিষা তেল একেবারেই ব্যবহার করবেন না। কারণ, বিশুদ্ধ না হওয়ার ফলে ত্বকের সমস্যা বাড়তে পারে।
৩. শীতকালে গোসলের সময় সাবান ব্যবহার না করাই ভাল। এ ক্ষেত্রে সিনথেটিক ডিটার্জেন্ট ব্যবহার করতে পারেন। এই ধরনের সাবানে চামড়ার ওপর থেকে তেলের স্তর ওঠে যাওয়ার সম্ভবনা নেই। শীতকালে জীবানুনাশক সাবান একেবারেই ব্যবহার করবেন না। এতে ত্বকের ক্ষতির পরিমান বেড়ে যায়।
৪. গোসলের পরে এবং রাতে ঘুমানোর সময় অন্তত দু’বার ময়েশ্চরাইজার মাখুন।
৫. ঠোঁট ফাটার সমস্যায় ভেসলিন ব্যবহার করুন।
৬. প্রচুর পরিমানে পানি খাবেন, এর ফলে শরীরের আদ্রতা বজায় থাকবে।
৭. সব সময় পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকুন। সপ্তাহে অন্তত তিনবার শ্যাম্পু করুন। প্রতিদিন গোসল করুন। এ ক্ষেত্রে মাথায় সরিষার তেল না দেওয়াই ভাল।
৮. ছোটদের তেল মালিশ করা যেতেই পারে। তবে সরিষাার তেল মাখিয়ে রোদে ফেলে রাখার যে রীতি প্রচলিত রয়েছে, তা ত্যাগ করুন আজই।
৯. সুতির পোশাক ব্যবহার করুন, উলের পোশাক সরাসরি না ব্যবহার করাই ভাল। হালকা সুতির জামার ওপর উলের পোশাক ব্যবহার করা উচিত।
১০. ফল, ভিটামিন সমৃদ্ধ শাকসবজি খান।
প্রাকৃতিক উপায়ে শীতকালীন ত্বকের যত্ন:
তৈলাক্ত ত্বকের জন্য এক টেবিল চামচ মসুরের ডাল বাটা ও এক টেবিল চামচ কাঁচা দুধ বা সর ব্যতীত দুধের সঙ্গে আধা টেবিল চামচ মধু ও এক টেবিল চামচ ফলের রস মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে ত্বকে লাগাতে পারেন। বেছে নিতে পারেন সাইট্রিক অ্যাসিডসমৃদ্ধ ফল (টক ফল), যেমন—কাগজিলেবু, বাতাবিলেবু, কমলালেবু ইত্যাদি।
আবার ব্যবহার করতে পারেন পাকা পেঁপে, যা মুখের দাগ দূর করতে সাহায্য করবে। তৈলাক্ত ত্বকে শশার রস চমৎকার কাজে দিবে। শশার রসের সঙ্গে মুলতানি মাটি ও চন্দনের গুঁড়া মিশিয়ে প্রয়োগ করুন। এতে তেলতেলে ভাব কমবে সাথে ত্বকের উজ্জ্বলতাও ফিরে আসবে।
শুষ্ক ত্বকের জন্য একটু ভিন্ন ফর্মুলা। মসুর ডাল বাটার সঙ্গে মধু নিন এক টেবিল চামচ। আর ফলের রস নিতে হবে আধা টেবিল চামচ। সঙ্গে যোগ করুন একটু দুধের সর আর চারটি আমন্ড বাদাম বাটা। প্যাকটি তুলে ফেলার পর কোল্ড ক্রিম বা বেশি ময়েশ্চারযুক্ত কোনো ক্রিম লাগাবেন। কলা পেস্ট করে লাগালে শুষ্ক ত্বকে প্রাণবন্ত ভাব ফিরে আসবে। মধুও শুষ্ক ত্বকের জন্য খুব উপকারী। টমেটোর রসের সঙ্গে একটু মধু পেস্ট করে নিন। অনেক ভালো ফল পাবেন।
স্বাভাবিক ত্বকের জন্যও এই প্যাক ব্যবহার করতে পারেন। তবে লেবুর রস বাদ দিতে হবে আর মধুর পরিমাণ হবে এক টেবিল চামচ। স্বাভাবিক ত্বকে নারকেল তেল খুবই কার্যকরি। সুতির রুমাল গরম পানিতে ভিজিয়ে ভালো মতো নিংড়ে নিন। মুখের ওপর দিয়ে রাখুন কিছুক্ষণের জন্য। মুখটা মুছে নিয়ে এবার গোলাপ জল লাগিয়ে নিন। যেকোন ত্বকেই এটি ব্যবহার করতে পারেন।
শীতের পোশাক
যারা হালকা শীতের ফ্যাশান নিয়ে বেশ কনফিউশড, তাদের জন্য এটা কিন্তু ফ্যাশানের একদম সঠিক সময়। গরমের তীব্রতায় মেকআপ গলে যাবার চান্স নেই। আবার চুলও টেনে ওপরে বাঁধার দরকার নেই। সবচেয়ে ফ্যাশানেবল পোশাক গুলো, যেগুলো গরমে পরতে অস্বস্তি হচ্ছিল, সেগুলো অনায়াসে পরা যায়। হালকা শীতে মেয়েদের পোশাক
অনেকেই নিত্য কাজে টি-শার্ট পর। হালকা শীতের জন্য কিনে নাও ফুলহাতা টিশার্ট আর জিন্স। আর এর ওপরে পড়ে নাও হুডি। হালকা শীতের জন্য একদম পারফেক্ট। এখন নানারকম স্টাইলিশ হুডিও বাজারে এসে গেছে। এছাড়াও হালকা জ্যাকেট বা পাতলা উলের কুর্তিও বেশ স্টাইলিশ। আর শুরুর শীতের ঠাণ্ডা হাওয়া থেকে বাঁচতে কিনে নাও স্কার্ফ। এখন প্রচুর স্টাইলিশ স্কার্ফ পাওয়া যায়। গলায় জড়িয়ে নিলে স্টাইলটাই বদলে যায়। এছাড়াও নানারকম ফ্যাশানেবল টুপিও পাওয়া যায় এই মৌসুমে।
চুলের সাজ
পোশাক তো হল। কিন্তু চুল নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করব না, তা কি হয়! শীতে মনের মত হেয়ার কাট করে নাও। ব্যাঙ্গস কাটিং করিয়ে নিতে পার সামনেটা। এতে বয়সটাও কম দেখাবে। আর খুব স্টাইলিশ। আর পিছনটা ইচ্ছা মত লেয়ার, ইউ। আবার সামনে ব্যাঙ্গস কাট করলে পেছনটা কিছু না করলেও হয়। এমনিই স্টাইলিশ লাগে। আর বাঁধতে চাইলে করে নাও পনিটেইল বা ফিশটেইল বিনুনি। চুলকে এলোমেলো করে নাও। তারপর এই এলোমেলো চুলের টপনট খোঁপা। দারুন লাগবে কিন্তু। মেকআপ
হালকা শীতে মেকআপ কেমন হবে অনেকেই বুঝতে পারে না। কারণ তখন ইচ্ছামত কমপ্যাক্টটি তো আর বোলানো যাবে না। স্কিন এমনিতেই শুকনো থাকে। তাই আগে একটা ভালো ফেসওয়াশ কিনে নাও। মিল্কি বা জেল বেসড। অয়েল কন্ট্রোল ফেসওয়াশ দরকার নেই। এইসময় লাগবে না। এবার ফাউণ্ডেশন লাগাবার আগে কোনো ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নাও। এতে মুখ শুকিয়ে যাবে না। এরপর হালকা করে ব্লাশন পাউডার লাগিয়ে নিতেই পার। আর আই মেকআপ তো ইচ্ছা মত করতে পার। গলে যাবার কোন সুযোগ নেই। লিপস্টিক
শীতে ম্যাট খুব একটা ভালো লাগে না। শীতের জন্য গ্লসি বেশ ভালো মানায়। তবে গ্লসি পছন্দ না হলে, হালকা ক্রিমি লিপস্টিক বেঁছে নিতে পার। যে কোনো ডার্ক শেড শীতে অনায়াসে পরা যায়। আর ঠোঁট খুব ফাটলে কাজের ফাঁকে লিপবাম লাগিয়ে নাও। এখন নানারকম কালারের লিপবাম পাওয়া যায়। শীতে যদি থাকে ইন্টারভিউ
শীতে যদি থাকে ইন্টারভিউ তখন কিভাবে সাজবে? শীতে ইন্টারভিউ থাকলে ফরমাল শার্ট প্যান্ট আর ওপরে ব্লেজার পরা যেতে পারে।এক্ষেত্রে হালকা রঙ পছন্দ করা শ্রেয়।ব্লেজার কালো পড়াই যায়। চড়া সাজ যেন না হয়। আর মেকআপ অবশ্যই হবে হালকা। হালকা ক্রিমি লিপস্টিক। সঙ্গে একটা পনিটেইল করা যায়।সঙ্গে মানানসই জুতো। আর হাতে একটা ঘড়ি। ব্যাস রেডি।
প্রকৃতি জানান দিচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা। গ্রামবাংলায় এরই মধ্যে মৃদুমন্দ ঠাণ্ডা অনুভূত হচ্ছে। আর শীতের সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে শুরু করে রোগের প্রকোপ। সর্দি-কাশি তো আছেই, সেইসঙ্গে দেখা দেয় গলাব্যথা। আর টনসিলের কারণেই এমনটি হয়ে থাকে।
জিহ্বার পেছনে গলার দুই পাশে গোলাকার পিণ্ডের মতো যেটি দেখা যায়, সেটিই হলো টনসিল। এটি আমাদের শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ টিস্যু বা কোষ। এই টনসিল গলা, নাক, মুখ কিংবা সাইনাস হয়ে শরীরে প্রবেশ করা জীবাণুকে অন্ত্রে বা পেটে ঢুকতে বাধা দিয়ে থাকে। সর্দি-কাশির জন্য যে ভাইরাসগুলো দায়ী, তা টনসিলের সংক্রমণের জন্যেও দায়ী।
শীতে অনেকেরই গলাব্যথা হয়। আর এটি প্রতিরোধে সামান্য গরম পানির সঙ্গে কিছুটা লবণ মিশিয়ে তা দিয়ে কুলকুচি করা যেতে পারে। এটি টনসিলের সংক্রমণ রোধ করে ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। শুধু তাই নয়, এভাবে কুলকুচি করলে গলায় ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের আশঙ্কাও অনেক কমে যায়।
* সবুজ চা আর মধু
সবুজ চা ও মধু টনসিলের ব্যথা কমাতে বেশ সহায়ক। এক কাপ গরম পানিতে আধ চামচ সবুজ চা পাতা আর এক চামচ মধু দিয়ে ১০ মিনিট ফুটিয়ে নিন। এর পর ধীরে ধীরে ওই চা পান করুন। সবুজ চায়ে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা সব রকম ক্ষতিকর জীবাণু ধ্বংস করে। দিনে তিন থেকে চার কাপ এই মধু-চা পান করুন, ভালো ফলাফল পাবেন।
* হলুদ দুধ
এক কাপ গরম দুধে এক চিমটি পরিমাণ হলুদ মিশিয়ে নিন। ছাগলের দুধ টনসিলের ব্যথা দূর করতে বেশ কার্যকর। কারণ, এতে অ্যান্টিবায়োটিক উপাদান আছে। তবে ছাগলের দুধ না পেলে গরুর দুধে সামান্য হলুদ মিশিয়ে সেটিকে সামান্য গরম করে খেলেও উপকার পাওয়া যায়। হলুদ অ্যান্টিইনফ্লামেন্টরি, অ্যান্টিবায়োটিক এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ একটি উপাদান, যা গলাব্যথা দূর করে, টনসিলের সংক্রমণ দূর করতে সাহায্য করে থাকে।
* আদা চা
দেড় কাপ পরিমাণ পানিতে এক চা চামচ আদা কুচি আর অনুমান অনুযায়ী চা দিয়ে ১০ মিনিট ফুটিয়ে নিন। দিনে অন্তত দু-তিনবার এটি পান করুন। আদার অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টিইনফ্লামেন্টরি উপাদান সংক্রমণে বাধা দেয়। এর সঙ্গে সঙ্গে গলার ব্যথা কমিয়ে দিতেও এটি অত্যন্ত কার্যকরী।
* লেবুর রস
২০০ মিলিগ্রাম গরম পানিতে এক চা চামচ লেবুর রস, এক চা চামচ মধু, আধা চা চামচ লবণ ভালো করে মিশিয়ে নিন। যত দিন গলাব্যথা ভালো না হয়, তত দিন পর্যন্ত এই মিশ্রণটি সেবন করুন। টনসিলের সমস্যা দূর করার জন্য এটি খুবই কার্যকর।
শীতে ঘরোয়া উপায়ে দূর করুন পায়ের গোড়ালি ফাটা। শীতে পায়ের গোড়ালি ফাটে অনেকের। পা ফাটা আপনার পায়ের সৌন্দর্য নষ্ট করে, সঙ্গে ব্যক্তিত্বও।সাধারণত পায়ের নিচের দিকের ত্বক শরীরের অন্যান্য অংশের চেয়ে বেশি শুষ্ক হয়ে থাকে। কেননা এই অংশে কোনো ওয়েল গ্ল্যানড থাকে না, যে কারণে শীতে সহজেই পা ফেটে যায়।
আসুন জেনে নিই পা ফাটা রোধে ঘরোয়া উপায়-
উপাদান
১ টেবিল চামচ লবণ, আধা কাপ লেবুর রস, ২ টেবিল চামচ গ্লিসারিন, ২ চা চামচ, গোলাপজল, পরিমাণমতো গরম পানি, পিউমিস স্টোন।
যেভাবে ব্যবহার করবেন
একটি বড় পাত্রে পায়ে সহ্য করার মতো গরম পানি নিয়ে এতে লবণ, ১০ ফোঁটা লেবুর রস, ১ টেবিল চামচ গ্লিসারিন, ১ চা চামচ গোলাপজল নিয়ে মিশিয়ে নিন।
এর পর এতে পা ডুবিয়ে রাখুন ১৫ মিনিট। এর পর পিউমিস স্টোন দিয়ে পায়ের গোড়ালি হালকা হাতে রাব করুন কয়েক মিনিট। হয়ে গেলে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে পা ধুয়ে ভালো করে মুছে নিন।
এর পরে ১ টেবিল চামচ গ্লিসারিন, ১ চা চামচ গোলাপজল ও ২-৩ ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে দুই পায়ে লাগিয়ে রাখুন সারারাত।
মিশ্রণটি একটু আঠালো, তাই চাইলে সুতির মোজা পরে থাকতে পারেন। সকালে উঠে হালকা গরম পানিতে পা ধুয়ে লোশন লাগিয়ে নিন। যদি আপনার পা অনেক বেশি ফেটে গিয়ে থাকে, তা হলে লেবুর রস এভয়েড করাই ভালো।
ওপরের প্যাকটি নিজের সুবিধা অনুযায়ী প্রতিদিন ব্যবহার করুন।