Tag: শীতকালীন সবজি

  • ঠাকুরগাঁওয়ে শীতকালীন লাউয়ের ন্যায্য মূল্য পেয়ে কৃষক খুশি

    ঠাকুরগাঁওয়ে শীতকালীন লাউয়ের ন্যায্য মূল্য পেয়ে কৃষক খুশি

    গৌতম চন্দ্র বর্মন,ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁওয়ে গত বছরের তুলনায় এবার লাউয়ের ভাল ফলন হয়েছে। অল্প জমিতে অধিক হারে লাউয়ের চাষ করতে পেরে খুশী কৃষকরা। পোকার আক্রমণ আর নানা রোগবালাইয়ের পরও এবার লাউয়ের বাম্পার ফলন পাচ্ছেন কৃষকরা।

    বর্তমানে শীতকালীন সবজি লাউয়ের দাম বেশি থাকায় লাভবান হওয়ার আশায় মুখ ভরা হাসি নিয়ে মাচা থেকে লাউ সংগ্রহের কাজে ব্যস্ত কৃষকেরা।

    জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলায় সাড়ে পাঁচ হাজার হেক্টর জমিতে সবজির চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। আর এ পর্যন্ত ৫০০ হেক্টর জমিতে লাউ চাষ করেছে কৃষকেরা।

    সরেজমিনে রবিবার (২২ নভেম্বর) জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, মাঠজুড়ে সারি সারি মাচায়-মাচায় ঝুলছে শীতকালীন ফসল লাউ। আর এই লাউ বাজারে ভালো দামে বিক্রির আশায় মাচা থেকে সংগ্রহ করে নির্দিষ্ট এক স্থানে জমা করছেন চাষীরা।

    জেলার সদর উপজেলার সালন্দর ইউনিয়নের দেওগা গ্রামের মফিজ উদ্দীন জানান,সবজি চাষ করে দূর করেছেন পরিবারের অভাব। এই মৌসুমে এক বিঘা জমিতে লাউয়ের চাষ করে প্রথমবার ছিঁড়েছেন এক হাজার লাউ। বাজারে তা বিক্রি করেছেন প্রতিটি ২০-২৫ টাকায়।

    একই গ্রামের এমামুল হক জানান, এবার দুই বিঘা জমিতে লাউয়ের চাষ করে ১ লক্ষ টাকা আয় করেছেন।

    আরেক কৃষক আসরাফ আলী, জানান, ১৮ শতক জমিতে লাউ চাষ করে এখন পর্যন্ত ৬০ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করেছেন। এখনও লাউয়ের গাছ তরতাজা আছে। সেখান থেকে অনেক টাকার লাউ বিক্রি করতে পারবেন। এক বিঘায় ৪০-৫০ হাজার টাকা খরচ করে লক্ষাধিক টাকা আয় করা সম্ভব।

    জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আলতাফ হোসেন বলেন,এবার ঠাকুরগাঁওয়ে লাউয়ের বাম্পার ফলন হয়েছে।এবার দামও ভাল পাচ্ছে কৃষকেরা। আর কৃষকদের মাঠ পর্যায়ে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা।

  • সীতাকুণ্ডে সাড়ে ৫ হাজার হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজির চাষ

    সীতাকুণ্ডে সাড়ে ৫ হাজার হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজির চাষ

    দেশের প্রধান সবজি উৎপাদনের ভান্ডার হচ্ছে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড। সীতাকুণ্ডে চলতি মৌসুমে উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে সাড়ে ৫ হাজার হেক্টর জমিতে শীতকালীন বিভিন্ন রকম সবজির চাষ হয়েছে। তবে বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত উপজেলার প্রায় ১৯ হাজার কৃষক পরিবার।

    এ জেলার হাট-বাজার গুলোতে তেমন কোনো নিয়ন্ত্রন নেই বললে চলে। ফলে খুচরা দোকানীরা ৪০ টাকার সবজি তার দ্বিগুণ দামে বিক্রি করছেন বলে প্রায় সময় ক্রেতা ও হাটে সবজি বিক্রি করতে আসা কৃষকরা ক্ষোভের সাথে অভিযোগ করেন। অন্যদিকে সিন্ডিকেটের থাবায় কৃষকদের সদ্য চাষকরা শীতকালীন সবজির প্রকৃত মূল্য পাবে কি পাবেনা তাও অনেকটা অনিশ্চিত।

    পৌরসভাস্থ মোহন্তের হাট বাজারে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা পাইকার তাদের পছন্দের শীতকালীন সবজি প্রতিটি শীত মৌসুমে ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান করে ঢাকা এবং চট্টগ্রামের হাটহাজারী, রিয়াজউদ্দিন বাজার, পাহাড়তলী,ওয়ার্লেস ঝাউতলা বাজারসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রির উদ্দেশ্যে নিয়ে যান আগত পাইকার।

    একটু ভাল দামের আশায় উপজেলার কৃষক পরিবার গুলো মৌসুম ছাড়াই আগাম বিভিন্ন রকম সবজির চাষ করে থাকেন। তবে পাইকারী বাজারে সবজির দাম কম থাকলেও খুচরা বাজারে কিন্তু অনেক বেশি। ফলে ক্রেতাদের কাছ থেকে ইচ্ছে মত দাম নিয়ে অনেকে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হচ্ছে বলে ক্ষোভ বাজারে আসা একাধীক সল্প আয়ের ক্রেতাদের।

    এখানকার খুচরা দোকানীরা সবজিতে প্রতি কেজি ১৫ থেকে ২০টাকা করে বেশি নিচ্ছেন। যা সাধারণ ক্রেতাদের অনেকটা হতাশ করে তুলছে।

    অভিযোগে জানা যায়, পৌরসদর মহোন্তের হাট, বড়দারোগা হাট, বাড়বকুণ্ড, শুকলালহাট, কুমিরা, ভাটিয়ারী, ফৌজদারহাটসহ উপজেলার অনেক হাটে কৃষকদের অধিক উৎপাদিত সবজি যখন সাপ্তাহিক হাটে নিয়ে আসেন। তখন এক ধরনের পাইকার তাদের কাছ থেকে খুব কমদামে সবজি ক্রয় করে বাইরে বেশি দামে বিক্রি করছেন। ফলে সারা বছর সবজি চাষকরে যে লাভের কথা ভাবে কৃষক, তা আর হয়ে উঠেনা। এতে অধিক লাভবান হচ্ছেন পাইকার ও খুচরা দোকানি। মধ্যখানে শুধু লোকসান গুনতে থাকেন খেটে খাওয়া কৃষি পরিবারগুলো।

    এদিকে মুরাদপুর ইউনিয়নের গুলিয়াখালী সাগরের বেড়িবাঁধ এলাকার পুরানো এক কৃষক মোঃ আলি ২৪ ঘন্টা যট নিউজকে জানান, মাথার ঘাম পায়ে ফেলে জমিতে ফসল উৎপাদন করেন তিনি। এবছর অন্তত ৫ একর জমিতে ছোট শশা ও শীতকালীন শিমের চাষ করেছেন। এতে তার শেষ পর্যন্ত খরচ পড়বে প্রায় সাড়ে ৪ লক্ষ টাকা। পরিস্থিতি ও বাজার দর ভাল থাকলে তিনি কমপক্ষে ৮ লক্ষ টাকারও বেশি সবজি বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন।

    তিনি আরো বলেন, একটি সিন্ডিকেট ৬০ টাকার সবজি ৪০ টাকা করে বলেন। কাচা মাল পঁচে যাওয়ার ভয়ে আমরা কৃষক কম দামে পাইকারদের কাছে বিক্রি করে দেই। শুধুু তাই নয় ১০০ কেজি সবজি বিক্রি করলে ৮০ কেজির টাকা পাওয়া যায়। আর বাকি ২০ কেজি টাকা বিভিন্ন অযুহাতে বাদ দিয়ে দেন পাইকার সিন্ডিকেট।

    উপজেলা বিভিন্ন হাট বাজারে পাইকারী দামে কৃষক টমেটো বিক্রি করছে কেজি ৭০ টাকা, আর খুচরা বাজারে ১২০ টাকা, বেগুন ৩৫ ও খুচরা বাজারে কেজি ৫০, ঢেঁড়শ ৪০ খুচরা বাজারে ৫০, চিচিংগা কেজি ৩০, খুচরা বাজারে ৪৫ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।

    সীতাকুণ্ড উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা সুভাষ চন্দ্রনাথ ২৪ ঘন্টা ডট নিউজকে বলেন, বর্তমানে সবজি বিক্রি করে অনেক লাভবান হচ্ছে কৃষক। চলতি বছর সাড়ে ৫হাজার হেক্টর জমিতে ১৯ হাজার কৃষক তাদের নিজ নিজ জমিতে শিমসহ বিভিন্ন রকম শীতকালীন সবজির চাষ করেছেন। তার মধ্যে তিন হাজার হেক্টর জমিতে শিম ও আড়াই হাজার জমিতে অন্যান্য সবজির চাষ হয়েছে।

    তিনি বলেন চলতি মৌসুমে সবজি শিম প্রতি হেক্টরে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২০ মেট্রিকটন। আর অন্যান্য সবজি হেক্টরে ৩৫ মেট্রিকটন।