২৪ ঘণ্টা আন্তর্জাতিক ডেস্ক || প্রাণঘাতী করেনায় প্রাণহানী রোধে ভারত সরকার পুরো দেশ লকডাউন ঘোষণা করেন।
এরপরও ভাইরাসটিতে আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার বেড়ে যাওয়ায় দ্বিতীয় দফায় আগামী ৩ মে পর্যন্ত লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানো হয় পুরো ভারত জুড়ে। এতে করে দুস্থ, দিনমজুরসহ বিপাকে পড়েছেন ভিনদেশে কাজ করতে যাওয়া শ্রমিকরা।
খিদের জ্বালায় শ্মশান থেকে কলা কুড়িয়ে খাচ্ছেন বিদেশি শ্রমিকরা। দেশটির রাজধানী দিল্লির যমুনা নদীর ধারে নিগমবোধ শ্মশানের এই মর্মান্তিক ঘটনা চমকে দিয়েছে গোটা দেশকে।
এর মধ্যেই উত্তর দিল্লির এই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভারতে টানা ৪০ দিনের লকডাউন চলছে। এ সময় মানুষ কতটা ভয়াবহ পরিস্থিতিতে পড়েছে, তার প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠেছে এমন দৃশ্য।
ভাইরাল হওয়া ওই ছবিতে দেখা যায়, শ্মশানের মাঠের ঘাসের উপর পড়েছিল কিছু কলা। যার মধ্যে বেশিরভাগই পঁচে গিয়েছে। আর কিছু কলায় পচন ধরার পথে।
মৃতের শেষকৃত্যর পুজা সম্পন্ন করতে উপাচার হিসেবে ওই কলাগুলো ব্যবহার করা হয়েছিল। খিদের জ্বালায় সেই কলা কুড়িয়ে খেতে দেখা গেল কয়েকজন শ্রমিকদেরকে।
দেশটির সংবাদমাধ্যম সংবাদ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই কলার স্তূপের পাশে ব্যাগ হাতে জড়ো হয়েছেন কিছু ক্ষুধার্ত শ্রমিক। পচা কলার মধ্যে বেছে বেছে খাওয়ার মতোগুলো সযত্নে ব্যাগে ভরে নেন তারা।
তাদের মধ্যে একজন শ্রমিক বলেন, ‘এমনিতে তো কলা তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু বেছে বেছে ভালগুলো নিতে পারলে এখন চলে যাবে।’
আরেকজন বলেন, ‘যেভাবেই হোক পেট তো ভরাতেই হবে। আর কলাতে পোকা তো আর পড়ে না।’
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ডিউ টিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, শ্মশানের পচা কলা খেয়ে যে বিষক্রিয়ায় তাঁরা মারা যেতে পারেন, সে বোধও এখন তাঁদের নেই। আগে পেটের আগুন নিভুক, তারপর ভাবা যাবে বাকি সব।
করোনার ফলে হঠাৎ করে লকডাউন হয়ে যাওয়ার পর এই বিপন্ন পরিযায়ী শ্রমিকদের কষ্টের অনেক ছবি এই কয়েক দিনে বার বার সামনে এসেছে। হেঁটে বাড়ি ফিরতে গিয়ে তাঁরা পথে মারা গিয়েছেন।
উত্তর প্রদেশ সরকার কিছু বাসের ব্যবস্থা করায় হাজার হাজার শ্রমিক ঠাসাঠাসি করে লাইনে দাঁড়িয়ে ঘরে ফিরেছেন। নিজের বাড়িতে পরিবারের কাছে গেলে তাও বাঁচবেন। মহানগরে কে তাঁদের সাহায্য করবে? যদিও লকডাউনের প্রথম পর্বে দিল্লি সহ বেশ কিছু রাজ্যের সরকার চেষ্টা করেছে পরিযায়ী শ্রমিকদের আশ্রয় ও খাবার দিতে।
শ্রমিকদের আশা ছিল ১৫ তারিখের পর তাঁরা বাড়ি ফিরে যেতে পারবেন। কিন্তু লকডাউন ওঠেনি। ৩ মে পর্যন্ত সময়সীমা বৃদ্ধি করা হয়েছে। তাতে কীভাবে পরিযায়ী শ্রমিকদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙেছে মুম্বইয়ে সে দৃশ্য দেখা গিয়েছে।
সুরাত, হায়দরাবাদে হাজারো শ্রমিক বাড়ি ফেরার মরিয়া চেষ্টা চালিয়েছেন। দিল্লি দেখলো তাঁদের খিদের জ্বালা।
২৪ ঘণ্টা/আর এস পি