Tag: শ্রীলঙ্কা

  • শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটকে নিষিদ্ধ করলো আইসিসি

    শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটকে নিষিদ্ধ করলো আইসিসি

    শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটে বড় দুঃসংবাদ। বোর্ডের ওপর সরকারি হস্তক্ষেপের কারণে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তে লঙ্কান ক্রিকেটে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে আইসিসি।

    বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘আইসিসি বোর্ড আজ বৈঠকে বসে ঠিক করেছে যে, শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট একটি সদস্য হিসেবে তার প্রতিশ্রুতির গুরুতর লঙ্ঘন করছে। বিশেষ করে, স্বায়ত্তশাসিতভাবে তার বিষয়গুলো পরিচালনা করার প্রয়োজনীয়তা এবং শাসন, প্রবিধান এবং প্রশাসনে কোনও সরকারি হস্তক্ষেপ নেই তা নিশ্চিত করতে পারেনি শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট।’

    যার ফলশ্রুতিতে লঙ্কান ক্রিকেটের সদস্যপদ স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আইসিসি। তারা আরও জানিয়েছে, নিষেধাজ্ঞার শর্তগুলো আইসিসির বোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়ে পরবর্তীতে যথাসময়ে জানাবে।

    এর আগে বিশ্বকাপে ভরাডুবির কারণে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ডের সকল সদস্যকে বরখাস্ত করেছিলেন দেশটির ক্রীড়ামন্ত্রী রোশান রানাসিংহে। এ ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের পুনরায় স্বপদে পুর্নবহাল করেছিলেন লঙ্কান আদালত।

    তবে দুইদিন পর সংসদে সরকারি দল ও বিরোধী দলের সর্বসম্মতিক্রমে বোর্ড সদস্যদের বরখাস্ত করার প্রস্তাব পাস করায়।

    বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) ‘দুর্নীতিগ্রস্থ এসএলসি (শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ড) ম্যানেজমেন্ট প্রত্যাহার’ নামে একটি বিল উত্থাপন করেন প্রধান বিরোধীদলীয় নেতা সাজিথ প্রেমাদাসা। পরে উত্থাপন করা বিলে সম্মতি প্রদান করেন সরকারদলীয় নেতা নিমাল সিরিপালা ডি সিলভা। এরপর চূড়ান্ত প্রস্তাব পাস হয়।

    পরে এ বিষয়ে প্রেমাদাসা জানান, জনগণকে ক্রিকেট বোর্ডের প্রশাসনিক পর্যায়ে দুর্নীতি বিষয়ে সচেতন করা এবং লঙ্কান ক্রিকেটকে দুর্নীতিবাজদের কবল থেকে রক্ষা করাই এই প্রস্তাবের লক্ষ্য। আবেগী ভক্তদের জন্য খেলাকে বাঁচাতে সম্মিলিত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন প্রেমাদাসা।

    বিশ্বকাপে লঙ্কান ক্রিকেটারদের বাজে পারফরম্যান্সের কারণে বোর্ডের কর্তাদের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়তে হয়। পরে সমালোচনার মুখে পড়ে সেক্রেটারির পদ থেকে সরে দাঁড়ান মোহন ডি সিলভা। এর পরেই দিনই বোর্ডের সবাইকে পদত্যাগে বাধ্য করেন রোশান রানাসিংহে।

     

  • ‘টাইমড আউটে’র ম্যাচ জিতে টিকে রইল চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আশা

    ‘টাইমড আউটে’র ম্যাচ জিতে টিকে রইল চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আশা

    ‘এল ক্লাসিকো’ নাকি দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর লড়াই? বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা ম্যাচে নজর রাখলে এমন জিজ্ঞাসা মনের কোণে উঁকি দিতেই পারে। গত কয়েক বছর ধরে দুই দলের মাঠের লড়াই অনেকটা এমন দ্বৈরথেই রূপ নিয়েছে। আজ যাতে ঘি ঢেলেছে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসের ‘টাইমড আউট’। জবাবে ম্যাচজুড়ে টাইগার ব্যাটারদের একের পর এক স্লেজিং করেন লঙ্কানরা। ক্ষেপে যাওয়া সাকিব আল হাসান ও নাজমুল হোসেন শান্তও পেয়ে যান ফর্মে ফেরার রসদ। তাদের দুজনের ১৬৯ রানের জুটিতে ভর করে বাংলাদেশ ৩ উইকেটের বড় জয় পেয়েছে।

    উত্তেজনার পারদ চরমে পৌঁছানোর জন্য পুরো আয়োজন প্রস্তুত করেছিলেন সাকিব-ম্যাথিউসরা। যে ম্যাথিউসের সঙ্গে এতকিছু, তার বলেই উইকেট দিয়ে বিদায় নেন সেঞ্চুরির পথে থাকা সাকিব-শান্ত দুজনেই। তাদের বিদায়ের পর মুশফিকুর রহিম ও ফর্মে থাকা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের আউটে ম্যাচ আরও নাটকীয় হয়ে ওঠে। মনের গহীনে শঙ্কাও জেগে ওঠে বলে– এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ বেশ কয়েকবার নিশ্চিত জয়ের ম্যাচ খুইয়েছিল। শেষ পর্যন্ত তেমন কিছু হতে দেননি তাওহীদ হৃদয়রা। ক্রিজে নামার পর তাকে উদ্দেশ্য করে চারিথ আসালাঙ্কাকে কিছু বলতে দেখা যায়।

    তার আগে ম্যাচ জয়ের মূল ভিতটা গড়ে দিয়েছেন সাকিব ও শান্ত। ৪১ রানে ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে গিয়েছিল টাইগাররা। সেখান থেকে টুর্নামেন্টজুড়ে রানের জন্য ভুগতে থাকা সাকিব-শান্ত মিলে কী স্বস্তির ইনিংসই না খেললেন! শান্ত করেছেন ৯০ আর ৮২ রান এসেছে সাকিবের ব্যাট থেকে। ৪১.১ ওভারেই লঙ্কানদের দেওয়া ২৮০ রানের লক্ষ্য পেরিয়েছে বাংলাদেশ।

    এ জয়ে পয়েন্ট তালিকায় শ্রীলঙ্কাকে টপকে সাতে উঠে এসেছে বাংলাদেশ। ২০২৫ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সুযোগ পেতে হলে থাকতে হবে শীর্ষ আটের মধ্যে। দুই দলেরই বাকি একটি করে ম্যাচ। নেট রান রেটে শ্রীলঙ্কাকে টপকে যাওয়ার ব্যাপার ছিল, তাতে সফল বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসের পর ম্যাচজুড়ে আলোচনার বিষয় ছিল অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসের টাইমড-আউট।

    লঙ্কানদের রান তাড়া করতে গিয়ে প্রথম ওভারটা দেখেশুনেই খেলেছেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার লিটন দাস ও তানজিদ হাসান তামিম। শেষ দুই বলে তানজিদ দুটি চার মারেন। দ্বিতীয় ওভারে এক চারের সঙ্গে আসে তিনটি সিঙ্গেল রান। ভালোই আগাচ্ছিল ইনিংস, এর মাঝেই পরের ওভারের প্রথম বলে দিলশান মাদুশঙ্কাকে মারতে গিয়ে ওপরে ক্যাচ তুলে দেন তামিম। টানা ব্যাট হাতে ব্যর্থ তামিম আজও ফিরেছেন ৫ বলে ৯ রান করে। এরপর অল্প সময়ের ব্যবধানে ফিরেন লিটনও। ৬ রানের মাথায় তিনি জীবন পেয়েছিলেন। পরে কাসুন রাজিথার ওপর চড়াও হয়ে পরপর ২ বলে ২টি ছক্কা মারার পরই পায়ে টান পড়ে তার। বেশ খানিকটা সময় নিয়ে ব্যাটিংয়ের জন্য প্রস্তুত হয়ে মাদুশঙ্কার এক ইয়র্কারে এলবডব্লিউ হন লিটন। সাজঘরে ফেরার আগে তিনি ২৩ বলে ২২ রান করেন।

    দুই ওপেনার ৪১ রানে ফিরলেও দলকে টেনে নিয়েছেন শান্ত ও সাকিব জুটি। যা শেষ পর্যন্ত ১৬৯ গিয়ে ঠেকে। দিল্লিতে শান্ত ও সাকিবের দারুণ ব্যাটিং দেখে সমর্থকদের আফসোস বরং বাড়তে পারে আরও! বড্ড দেরি হয়ে গেল যে। আসরজুড়ে রানখরায় ভুগেছে টাইগার ব্যাটাররা। দারুণ বোঝাপড়ায় তারা সেঞ্চুরির পথেই হাঁটছিলেন। ৩২তম ওভারে ম্যাথিউসের থেমে আসা বলে লিডিং-এজে মিড অফে আসালাঙ্কার হাতে ধরা পড়েন সাকিব। ১২ চার ও ২ ছক্কায় ৬৫ বলে ৮২ রানে টাইগার অধিনায়ক থামেন।

    সাকিবের বিদায়ের সময় ঘড়ি দেখিয়ে স্লেজিং করেন ম্যাথিউস
    ব্যাক্তিগত ৮২ রানের মাথায় সাকিবকে ফেরানোর পর ৯০ রানের মাথায় সেই ম্যাথিউসেরই শিকার হলেন শান্ত। অফ স্টাম্পের বাইরের বল খোঁচা মারতে গিয়ে ব্যাটের ভেতরের কানায় লেগে বোল্ড হন শান্ত। ১২ চারে ১০১ বলে তিনি খেলেছেন ৯০ রানের ইনিংস। তার বিদায়ে স্বস্তি উবে যায় বাংলাদেশের। পরপর উইকেট দিয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন মুশফিকুর ‍রহিম, মেহেদী হাসান মিরাজ ও ফর্মে থাকা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। মুশফিক ১০ ও রিয়াদ করেন ২২ রান।

    শেষদিকে নাটকীয়তা তৈরি হতে পারত আরও। তাওহীয় হৃদয় ক্রিজে আসতেই তাকে স্লেজিং করতে থাকেন আসালাঙ্কা। যার জবাব তিনি পরপর দুই ওভারে লং-অন ও মিড-অনে দুটি ছয় হাঁকিয়ে দেন। তার ৭ বলে ১৫ রানের ইনিংস বাংলাদেশকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যায়।

    লঙ্কানদের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ ‍উইকেট নিয়েছেন পেসার দিলশান মাদুশঙ্কা। এছাড়া দুটি করে শিকার করেন ম্যাথিউস ও মাহেশ থিকশানা।

    এর আগে দিল্লিতে টস হেরে আগে আজ ব্যাট করতে নেমে ৪৯ ওভার ৩ বলে সবকটি উইকেট হারিয়ে ২৭৯ রান সংগ্রহ করেছে শ্রীলঙ্কা। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ১০৮ রান করেছেন চারিথ আসালঙ্কা। বাংলাদেশের হয়ে ৩ উইকেট শিকার করেছেন তানজিম সাকিব। বল হাতে ইনিংস শুরু করেন শরিফুল ইসলাম। বাঁহাতি এই পেসার প্রথম ওভারেই সাকিবের আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন। ষষ্ঠ বলটি অফ স্টাম্পের বাইরে পরে আরো বাইরে দিয়ে চলে যাওয়ার সময় জায়গায় দাঁড়িয়ে শট খেলতে যান কুশল পেরেরা। ঠিকমতো টাইমিং না হওয়ায় ব্যাটের কানা ছুঁয়ে বল জমা পড়ে মুশফিকুর রহিমের গ্লাভসে। ডানদিকে ঝাঁপিয়ে দুর্দান্ত ক্যাচ নেন মুশফিক। পেরেরা ফেরেন ৪ রান করে।

    প্রথম ওভারেই উইকেট নিয়ে দুর্দান্ত শুরু করেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু এরপর প্রথম পাওয়ার প্লেতে আর সফলতার দেখা পায়নি। ফলে ১০ ওভার শেষে এক উইকেট হারিয়ে ৫২ রান তোলে শ্রীলঙ্কা। ১১তম ওভারে প্রথমবার স্পিন আক্রমণে যায় বাংলাদেশ। অধিনায়ক নিজেই হাতে বল তুলে নেন। সাকিবের ওভারের তৃতীয় বলটি স্লটেই ছিল সেখানে এক পা এগিয়ে লং অনের ওপর দিয়ে উঠিয়ে মারতে যান কুশল মেন্ডিস। ঠিকমতো খেলতে না পারায় শরিফুলের হাতে ধরা পড়েন তিনি। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ৩০ বলে ১৯ রান।

    আজকের ম্যাচের আগে বাংলাদেশের স্কোয়াডের ১৪ জনই ম্যাচ পেয়েছিলেন। বাকি ছিলেন কেবল তানজিম সাকিব। অবশেষে মুস্তাফিজের চোটে সুযোগ আসে তারও। খেলতে নেমে বল হাতে নিজের প্রথম ওভারেই উইকেটের সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন তিনি। তবে সেটা মুশফিকের নাগালের বাইরে দিয়ে যায়। ফলে বিশ্বমঞ্চে উইকেটের স্বাদ নিতে অপেক্ষা বাড়ে তার। তবে সেটা খুব বেশি দীর্ঘ হয়নি। ১৩তম ওভারের চতুর্থ বলে ৪১ রান করা নিশাঙ্কাকে বোল্ড করেছেন ডানহাতি এই পেসার।

    দ্রুত তিন উইকেট হারানোর পর চতুর্থ উইকেটে দারুণ ব্যাটিং করছিলেন চারিথ আসালঙ্কা-সাদিরা সামারাবিক্রমা।তাদের পঞ্চাশোর্ধ্ব জুটিতে লড়াই জমিয়ে তুলছিল শ্রীলঙ্কা। ৪১ রান করা সামারাবিক্রমাকে ফিরিয়ে সেই জুটি ভাঙেন সাকিব।

    সামারাবিক্রমা সাজঘরে ফেরার পর উইকেটে আসেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। তিনি যে হেলমেট নিয়ে উইকেটে আসেন সেটিতে নিরাপদ বোধ করছিলেন না। তাই বল খেলার আগেই নতুন আরেকটি হেলমেট নিয়ে আসা হয়। সেটিতেও খানিকটা সমস্যা ছিল। তাই আবারো হেলমেট পরিবর্তন করতে চান ম্যাথিউস। কিন্তু ততক্ষণে ২ মিনিট পার হয়ে যায়। তাতে টাইমড আউটের আবেদন করেন সাকিব। আর তাতে নিয়ম অনুযায়ী আউট দেন আম্পায়ার। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এই প্রথমবার ঘটল এমন ঘটনা। তবে ঘরোয়া ক্রিকেটে এর আগে ৬ বার টাইমড আউট হয়েছেন ব্যাটাররা।

    বিশ্বকাপের প্লেয়িং কন্ডিশন অনুযায়ী—কোনো ব্যাটার আউট হওয়ার দুই মিনিটের মধ্যে নতুন ব্যাটারকে বল খেলার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। তবে এমসিসির নিয়ম অনুযায়ী—ওয়ানডেতে কোনো ব্যাটার আউট হওয়ার ৩ মিনিটের মধ্যে নতুন ব্যাটারকে বল খেলার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। যেহেতু এই ম্যাচটি বিশ্বকাপের অংশ, তাই এখানে বিশ্বকাপের প্লেয়িং কন্ডিশনই কার্যকর হয়েছে।

    ম্যাথিউসের বিতর্কিত আউটের পর বড় জুটির পথে ছিলেন ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা-চারিথ আসালঙ্কা। তবে ৩৮তম ওভারে মিরাজকে ডাউন দ্য গ্রাউন্ডে এসে খেলতে গিয়ে লাইন মিস করেন ধনাঞ্জয়া। উইকেটের পেছনে মুশফিক প্রথম দফায় বল ধরতে পারেননি। তবে পরের দফায় স্টাম্প ভেঙেছেন, আরও নিশ্চিত হতে স্টাম্প উপড়ে ফেলেছেন। ধানাঞ্জয়া এতটাই দূরে ছিলেন যে, ক্রিজে ফেরার চেষ্টাটুকুও আর করেননি। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ৩৪ রান।

    আট নম্বরে ব্যাট করতে নেমে আসালঙ্কাকে ভালোই সঙ্গ দিচ্ছিলেন মহেশ থিকশানা। সপ্তম উইকেটে বড় জুটির পথেই এগোচ্ছিল তারা। তবে থিকশানাকে ২২ রানে থামালেন শরিফুল। আসালাঙ্কার সঙ্গে তার জুটিতে উঠেছে ৪৮ বলে ৪৫ রান।

    এক প্রান্তে ব্যাটারদের আসা-যাওয়ার মধ্যেও আরেক প্রান্তে মাটি কামড়ে পড়ে ছিলেন আসালঙ্কা। তার প্রতিদানও পেয়েছেন। ১০১ বলে পৌঁছেছেন তিন অঙ্কে। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ১০৫ বলে ১০৮ রান। তিনি ফেরার পর আর বেশি দূর এগোতে পারেনি লঙ্কানরা। ইনিংসের ৩ বল বাকি থাকতেই অলআউট হয়েছে তারা।

  • লঙ্কানদের হারিয়ে সেমির লড়াইয়ে আফগানিস্তান

    লঙ্কানদের হারিয়ে সেমির লড়াইয়ে আফগানিস্তান

    দুর্দান্ত বোলিংয়ে লঙ্কান ব্যাটারদের খুব বেশি দূর যেতে দেননি রশিদখান-মুজিব উর রহমানরা। জয়ের বাকি কাজটুকু সেরেছেন ব্যাটাররা। ৭ উইকেটের বড় জয়ে আসরে টিকে রইলো আফগানিস্তান। ইংল্যান্ডকে হারিয়ে আসরে প্রথম জয় পেয়েছিল তারা। এরপর পাকিস্তান, আর এবার শ্রীলঙ্কা সবমিলিয়ে ৬ ম্যাচে আফগানদের ৩ জয়।

    সোমবার (৩০ অক্টোবর) পুনেতে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৪৯ ওভার ৩ বলে সবকটি উইকেট হারিয়ে ২৪১ রান সংগ্রহ করেছে শ্রীলঙ্কা। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৬০ বলে ৪৬ রান করেছেন নিশাঙ্কা। আফগানদের হয়ে ৩৪ রানে ৪ উইকেট শিকার করেছেন ফজল হক ফারুকী। জবাবে খেলতে নেমে ৪৫ ওভার ২ বলে ৩ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় আফগানিস্তান। আফগানদের হয়ে সর্বোচ্চ ৭৩ রান এসেছে আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের ব্যাট থেকে।

    ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ফেরেন রহমানুল্লাহ গুরবাজ। ৪ বল খেলে ডাক মেরেছেন এই ওপেনার। তবে শুরুর সেই ধাক্কা সামাল দিয়েছেন ইব্রাহিম ও রহমত শাহ। ৩৭ রান করে ইব্রাহিম ফিরলে ভাঙে ৭৩ রানের দ্বিতীয় উইকেট জুটি।

    রহমত ফিরেছেন ফিফটি করে। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ৭৪ বলে ৬২ রান। এরপর মিডল অর্ডারে দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছেন হাশমতউল্লাহ শাহিদি ও আজমতউল্লাহ ওমরজাইও। এই দুইজনের অপরাজিত ফিফটিতে সহজেই জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় আফগানরা।

    এর আগে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুতেই দিমুথ করুণারত্নেকে হারায় শ্রীলঙ্কা। ফারুকীর বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ২১ বলে ১৫ রান।

    করুণারত্নে দ্রুত ফিরলেও সেই ধাক্কা ভালোভাবেই সামাল দেন আরেক ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কা। কুশল মেন্ডিসকে সঙ্গে নিয়ে দ্বিতীয় উইকেটে ৬২ রানের জুটি গড়েন তিনি। ৪৬ রান করে নিশাঙ্কা ফিরলে ভাঙ্গে সেই জুটি। এরপর মেন্ডিসও আর বেশিক্ষণ টিকতে পারেনননি। অধিনায়কের ব্যাট থেকে এসেছে ৩৯ রান।

    এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়েছে লঙ্কানরা। সামারাবিক্রমা-ধানাঞ্জয়া ডি সিলভারা উইকেটে থিতু হয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি। শেষদিকে মাহিশ থিকশানা ৩১ বলে ২৯ রান করলে লড়াই করার পুঁজি পায় লঙ্কানরা।

  • বিশ্বরেকর্ড গড়ে লঙ্কানদের হারাল পাকিস্তান

    বিশ্বরেকর্ড গড়ে লঙ্কানদের হারাল পাকিস্তান

    বলের পর ব্যাট হাতেও হতাশার এক ম্যাচের দিকে এগোচ্ছিল পাকিস্তান। শ্রীলঙ্কার ৩৪৫ রানের জবাবে ইমাম-উল-হক ও বাবর আজম দুজনেই ফিরে যান দলীয় ৩৭ রানে। এরপর যা ঘটেছে– সেটি পাকিস্তান কেন ‘আনপ্রেডিক্টেবল’ তা প্রমাণের জন্য যথেষ্ট! লঙ্কান ব্যাটার কুশল মেন্ডিস ও সাদিরা সামারাবিক্রমার জোড়া সেঞ্চুরির জবাবে পাকিস্তানি ব্যাটার মোহাম্মদ রিজওয়ান এবং আব্দুল্লাহ শফিকও ম্যাজিক ফিগার পূর্ণ করেছেন। যার ওপর ভর করে ১০ বল হাতে রেখেই বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ রান টপকানোর রেকর্ড গড়েছে বাবরের দল।

    তুলনামূলক দুর্বল দল নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে জয়ের পর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বিশ্বকাপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হয় পাকিস্তান। আজ (মঙ্গলবার) আগে ব্যাট করা দাসুন শানাকার দলের বিপক্ষে তারা বাজে বোলিংয়ের পসরা বসিয়েছিল। প্রায় সব বোলারই রান দিয়েছেন ওভারপ্রতি ৬-এর বেশি গড়ে। অন্যদিকে লঙ্কানরা আগের ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৪২৮ রানের পাহাড়ের সামনে পড়ে যায়। যদিও এরপর তারা ৩২৬ রান করে লড়াই চালিয়েছিল।

    হায়দরাবাদের রাজিব গান্ধী স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করতে নেমে কুশল মেন্ডিস ও সাদিরা সামারাবিক্রমার জোড়া সেঞ্চুরিতে লঙ্কানরা ৩৪৫ রানের বড় লক্ষ্য দাঁড় করায়। এরপর রানতাড়ায় নেমে চতুর্থ ওভারেই ব্যক্তিগত ১২ রানে ফিরেন পাকিস্তানি ওপেনার ইমাম। দিলশান মাদুশঙ্কার শর্ট লেংথের বাউন্স বল খেলতে গিয়ে তিনি কুশল পেরেরার হাতে ক্যাচ দিয়েছেন। প্রথম ম্যাচে ব্যাট হাতে ব্যর্থতার পর আজও রান পাননি পাক অধিনায়ক বাবর। বলতে গেলে মাদুশঙ্কার দুর্বল ডেলিভারিতে তিনি নিজের উইকেট তুলে দিয়েছেন সামারাবিক্রমার হাতে। ফিরেছেন ব্যক্তিগত ১০ রানে।

    এরপরই নিজেদের খোলস ছেড়ে দারুণ ফর্ম দেখিয়েছেন আব্দুল্লাহ শফিক ও রিজওয়ান। টানা ব্যর্থতার পর এদিন একাদশে জায়গা মেলে শফিকের। এর আগে যখনই সুযোগ পেয়েছেন ব্যাট হাতে দ্যুতি ছড়িয়েছেন এই ২৩ বছর বয়সী ব্যাটার। সেই ধারাবাহিকতায় আরও একবার দায়িত্ব পেয়ে তিনি দলের জন্য জয়ের ভিত গড়ে দিয়েছেন। চতুর্থ ওয়ানডে খেলতে নেমেই দেখা পেয়েছেন প্রথম সেঞ্চুরির। যদিও এরপর বেশিক্ষণ আর ক্রিজে টিকে থাকতে পারেননি শফিক। ১০৩ বলে তিনি ১০টি চার ও তিন ছক্কায় ১১৩ রানের ইনিংস খেলেছেন।

  • প্রোটিয়াদের ৪২৮ রান তাড়ায় লড়াই করে হারল লঙ্কানরা

    প্রোটিয়াদের ৪২৮ রান তাড়ায় লড়াই করে হারল লঙ্কানরা

    পরাজয়ের ব্যবধান দেখে মনে হতেই পারে, কোথাও একটু ভুল হচ্ছে। একপেশে এই ম্যাচে কোনভাবেই লড়াই করতে পারেনি লঙ্কানরা। দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে এক অর্থে নাস্তানাবুদ হয়েছে তারা। কিন্তু টার্গেট যখন বিশ্বকাপের নতুন রেকর্ডের, রান তাড়ায় চারশো’র বেশি যখন লক্ষ্য, তখন লঙ্কানদের প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানাতেই হয়।

    ম্যাচের ৩৬তম ওভার পর্যন্ত রানের বিচারে দক্ষিণ আফ্রিকার চেয়ে এগিয়ে ছিল শ্রীলঙ্কা। তবে, হাতে পর্যাপ্ত উইকেট না থাকায় হার মানতে হয়েছে এশিয়ান দেশটিকে। তবু ক্ষণে ক্ষণে লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন লঙ্কান ক্রিকেটাররা। কখনো কুশাল মেন্ডিস, কখনো চারিথ আসালাঙ্কা, কখনোবা দাসুন শানাকা লড়ে গিয়েছেন। তবে শেষরক্ষা আর হয়নি। বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে লঙ্কানরা হেরেছে ১০২ রানের বড় ব্যবধানে।

    অথচ ৪২৯ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে লঙ্কানদের শুরুটা ছিল নড়বড়ে। দলীয় এক রানেই সাজঘরে ফিরে যান পাথুম নিশাঙ্কা। তিনে নামা কুশাল মেন্ডিস যেন হাল ছাড়তে নারাজ। রিভিউ নিয়ে বেঁচে গিয়েছিলেন শুরুতেই। এরপরই খেললেন অসাধারণ এক ইনিংস। একপর্যায়ে স্কোর ছিল এমন, দলীয় রান ৫৪, কুশাল মেন্ডিস ৫১। অপর ব্যাটার কুশাল পেরেরা তখনও রানের খাতাই খোলেননি।

    কুশাল পেরেরা আর বড় কিছু করতেও পারেননি। ব্যক্তিগত ৭ রানে ফিরেছেন তিনি। এরপর সাদিরা সামারাবিক্রমাকে নিয়ে শুরু হয় মেন্ডিসের সংগ্রাম। এই জুটি যোগ করে ৪২ রান। দারুণ খেলতে থাকা মেন্ডিস ফেরেন ৪২ বলে ৭৬ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলে। রাবাদার বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন তিনি।

    দুই রান পরেই আবার উইকেটের পতন। কোয়েটজের বলে আউট সামারাবিক্রমা। ১১১ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় লঙ্কানরা। তবে হাল ছাড়তে রাজি ছিল না ৯৬ এর চ্যাম্পিয়নরা। ব্যাট হাতে এবার নায়ক চারিথ আসালাঙ্কা। ৮ চার এবং ৪ ছয়ে খেলেছেন ৬৫ বলে ৭৯ রানের ইনিংস। তবে দলীয় ২৩২ রানে আসালাঙ্কা ফিরে গেলে আবারও চাপে পড়ে যায় শ্রীলঙ্কা। এর এক রান পরেই আউট দুনিথ ভেল্লালাগে।

    কাসুন রাজিথাকে নিয়ে এরপর লড়াই চালিয়ে যান অধিনায়ক দাসুন শানাকা। অধিনায়ক হয়ে খেলেছেন অধিনায়কের মতোই ইনিংস। তার ৬৮ রানের ইনিংস কিছুটা হলেও স্বপ্ন দেখাচ্ছিল লঙ্কানদের। তবে কেশব মহারাজের বলে আউট হওয়ার পর শ্রীলঙ্কার স্বপ্নটাও শেষ হয়ে যায়। লঙ্কানদের ইনিংস শেষ পর্যন্ত থেমেছে সবকটি উইকেট হারিয়ে ৩২৬ রানে।

    এর আগে ব্যাট করতে নেমে রেকর্ডবুক তোলপাড় করে দেওয়া এক ইনিংস উপহার দিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়াম আগে থেকেই ব্যাটিংবান্ধব হিসেবে পরিচিত। এবার তাতে যেন রানের বন্যা বসিয়ে দিয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটাররা।

    বড় স্কোরের দিনে বিশ্বকাপের রেকর্ডবুকে নিজের নাম তুলেছেন এইডেন মার্করাম। বিশ্বকাপে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড নিজের করে নিয়েছেন এই প্রোটিয়া ব্যাটার। ৪৯ বলে পৌঁছে গেছেন সেঞ্চুরির মাইলফলকে। এর আগে বিশ্বকাপের দ্রুততম সেঞ্চুরির মালিক ছিলেন আয়ারল্যান্ডের কেভিন ও ব্রায়ান। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২০১১ বিশ্বকাপে ৫০ বলে শতরান করেছিলেন এই আইরিশ ব্যাটার।

    এইডেন মার্করাম ছাড়াও এদিন সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন আরও দুই প্রোটিয়া ব্যাটার। ওপেনার কুইন্টন ডি কক করেছেন ৮৪ বলে ১০০। আর রাসি ভ্যান ডার ডুসেন ১১০ বলে খেলেছেন ১০৮ রানের ইনিংস। আর এই ত্রয়ীর সেঞ্চুরিতে ভর করে এদিন বিশ্বকাপের আরও এক নতুন রেকর্ড করেছে তারা।

    এর আগে বিশ্বকাপের দলীয় সংগ্রহে শীর্ষে ছিল অস্ট্রেলিয়া। নিজ দেশের মাটিতে ২০১৫ সালে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৪১৭ রান করেছিল অজিরা। আজ ৪২৮ রান করে তাদের ছাড়িয়ে গেল প্রোটিয়ারা।

    বল হাতে লঙ্কানরা এদিন ছিল অসহায়। দলের সবচেয়ে সফল বোলার দিলশান মাদুশাঙ্কা দুই উইকেট পেলেও ৮৬ রান খরচা করেছেন। কাসুন রাজিথা ১ উইকেট পেলেও দিয়েছেন ৯০ রান। মাথিশা পাথিরানা এবং দুনিথ ওয়েল্লালাগে দুজনে রান দিয়েছেন যথাক্রমে ৯৫ ও ৮১।

  • শ্রীলঙ্কাকে উড়িয়ে বিশ্বকাপ প্রস্তুতি শুরু বাংলাদেশের

    শ্রীলঙ্কাকে উড়িয়ে বিশ্বকাপ প্রস্তুতি শুরু বাংলাদেশের

    নিয়মিত অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে ছাড়াই প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। তানজিদ, লিটন ও মিরাজের দাপুটে ব্যাটিংয়ে লঙ্কানদের বিপক্ষে ৭ উইকেটের জয় পেয়েছে টাইগাররা। আগে ব্যাট করে বাংলাদেশকে ২৬৪ রানের লক্ষ্য দিয়েছিল লঙ্কানরা। জবাবে ৪৮ বল বাকি থাকতেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় মিরাজের দল। এই জয়ে স্বাভাবিকভাবেই আত্মবিশ্বাস নিয়ে বিশ্বকাপ মাতাবে সাকিব-মুশফিকরা।

    রান তাড়া করতে নেমে দারুণ খেলেছেন দুই ওপেনার তানজিদ তামিম ও লিটন দাস। ৩৯ বলে অর্ধশতক পেয়েছেন লিটন, ৫৩ বলে ফিফটি করেন তানজিদ। লিটন ৬১ রান করে আউট হন। তার বিদায়ে ভাঙে তানজিদের সঙ্গে ১৩১ রানের জুটি। এরপর মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গে ৫২ রানের জুটি গড়ে আউট হন তানজিদ। ৮৮ বলে ১০ চার, ২ ছয়ে ৮৪ রানে থামেন তিনি। তাওহিদ হৃদয় গোল্ডেন ডাক মারেন।

    ওয়ানডাউনে নেমে অধিনায়কোচিত ইনিংস খেলেছেন মিরাজ। মুশফিকের সঙ্গে ৭৬ রানের জুটিতে তিনি দলের জয় নিশ্চিত করেছেন। ৩৫ রানে মুশফিক ও ৬৭ রানে অপরাজিত ছিলেন মিরাজ। ফলে বাংলাদেশ ৮ ওভার হাতে রেখেই ৭ উইকেটের বড় জয় পেয়েছে।

    এর আগে টস জিতে আগে ব্যাট করতে দুই ওপেনারে উড়ন্ত সূচনা পায় শ্রীলঙ্কা। যদিও খানিক পরেই কাঁধে অস্বস্তি বোধ করায় রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে মাঠ ছাড়েন কুশল পেরেরা। মাঠ ছাড়ার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ২৪ বলে ৩৪ রান। এরপর নিশাঙ্কাকে সঙ্গ দিতে আসেন কুশল মেন্ডিস। দুজনের ব্যাটে শতরান পেরিয়ে যায় লঙ্কানরা। তবে দলীয় ১০৪ রানে মেন্ডিসকে(২২) ফিরিয়ে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন নাসুম আহমেদ। পরের ওভারেই সাদিরা সামারাবিক্রমাকে (২) আউট করেন শেখ মাহেদী।

    এরপর ধনঞ্জয়া ডি সিলভাকে নিয়ে ৫২ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন নিশাঙ্কা। এই লঙ্কান ব্যাটারকেও সাজঘরে ফেরান মাহেদী। ৬৪ বলে ৬৮ রানে থামেন নিশাঙ্কা। এরপর ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা চারিথ আশালঙ্কাকে সাজঘরে ফেরান শেখ মাহেদী। মিরাজের দারুণ ক্যাচে প্যাভিলিয়নে ফেরেন ১৮ রান করে। এরপর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি লঙ্কান অধিনায়ক শানাকা। শরিফুলের শর্ট বলে তানজিমের ক্যাচে ৩ রানেই ফিরতে হয়েছে তাকে।

    রান আউটে কাটা পড়েন করুনারত্নে (১৮)। দলের পক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫৫ রান করে মিরাজের শিকার হন ধনঞ্জয়া। ১০ রানে দুনিথ ও ১১ রানে আউট হন হেমন্ত। ১৩ রানে অপরাজিত থাকেন লাহিরু কুমারা।

    বাংলাদেশের হয়ে শেখ মাহেদী ৩৬ রান খরচায় শিকার করেছেন ৩ উইকেট। এছাড়া নাসুম, শরিফুল, তানজিম ও মিরাজ একটি করে উইকেট পেয়েছেন। এদিন ৭ ওভার বোলিং করে উইকেট শূন্য থাকলেও বেশ মিতব্যায়ী ছিলেন তাসকিন আহমেদ।

  • মাত্র ৭৩ রানে অলআউট হয়ে ৩১৭ রানে পরাজয়ের লজ্জার রেকর্ড শ্রীলঙ্কার

    মাত্র ৭৩ রানে অলআউট হয়ে ৩১৭ রানে পরাজয়ের লজ্জার রেকর্ড শ্রীলঙ্কার

    ৩৯১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ৭৩ রানেই অলআউট হয়ে গেলো শ্রীলঙ্কা। বিশাল রানের নিচে চাপা পড়ে সেটা তাড়া করতে নামার আগেই হেরে বসেছিলো লঙ্কানরা। যার প্রমাণ দেখা গেলো তাদের ব্যাট করতে নামার পর। মাত্র ২২ ওভার ব্যাটিং করে পুরো দল মিলে তিন অংকের ঘরই স্পর্শ করতে পারেনি।

    যার ফলে ৩১৭ রানের বিশাল ব্যবধানে পরাজয় বরণ করলো লঙ্কানরা। সে সঙ্গে গড়লো এক লজ্জার রেকর্ডও। একদিনের ক্রিকেটে রানের হিসেবে সর্বোচ্চ ব্যবধানে পরাজয় ঘটলো তাদের।

    কৃতিত্বটা অবশ্যই ভারতের। রোববার তিরুভানান্তপুরমে শ্রীলংকাকে তৃতীয় ও শেষ একদিনের ম্যাচে হারিয়ে হোয়াইটওয়াশও করলো ভারতীয়রা। ওয়ানডে ক্রিকেটে এত রানে এর আগে কখনো কোনও দল জিততে পারেনি। ভারত ভেঙে দিল নিউজিল্যান্ডের রেকর্ড। ১৪ বছরেরও বেশি সর্বোচ্চ রানের ব্যবধানে জয়ের রেকর্ড গড়েছিলো কিউইরা।

    এর আগে ২০০৮ সালে নিউজিল্যান্ডে ২৯০ রানে হারিয়েছিল আয়ারল্যান্ডকে। যেটা ছিল ওয়ানডে ক্রিকেটে সর্বোচ্চ ব্যবধানে জয়ের রেকর্ড। সেই ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে জেমস মার্শাল এবং ব্রেন্ডন ম্যাককালামের শতরানের ওপর ভর করে ৪০২ রান তুলেছিল নিউজিল্যান্ড। জবাব দিতে নেমে ১১২ রানে আউট হয়ে যায় আয়ারল্যান্ড।

    এরপর প্রথম পাঁচে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া এবং দু’বার দক্ষিণ আফ্রিকা। অস্ট্রেলিয়া ২০১৫ সালে আফগানিস্তানকে হারায় ২৭৫ রানে। দক্ষিণ আফ্রিকা জিম্বাবোয়ে এবং শ্রীলঙ্কাকে যথাক্রমে ২৭২ এবং ২৫৮ রানে হারায়।

    ওয়ানডেতে ভারতের সর্বোচ্চ রানের ব্যবধানে জয়ের রেকর্ড ছিল ২০০৭ সালের বিশ্বকাপে। সেবার ম্যাচে বারমুডাকে তারা হারিয়েছিল ২৫৭ রানের ব্যবধানে। বিরেন্দর শেবাগের শতরানের সুবাধে প্রথমে ব্যাট করে ৪১৩ রান তুলেছিল ভারত। জবাবে বারমুডা শেষ হয়ে যায় ১৫৬ রানে।

    আজ (রোববার) তিরুভানান্তপুরমে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুভমান গিল (১১৬) এবং বিরাট কোহলির দুর্দান্ত সেঞ্চুরির (১৬৬*) ওপর ভর করে ৫ উইকেট হারিয়ে ভারত ৩৯০ রান তোলে। জবাবে প্রথম থেকেই তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়তে শুরু করে শ্রীলঙ্কার ব্যাটিং।

    মোহাম্মদ সিরাজের আগুনে বোলিংয়ের সামনে ৭৩ রানে শেষ হয়ে যায় তারা। সিরাজ নেন ৪ উইকেট। ২টি করে উইকেট নেন মোহাম্মদ শামি এবং কুলদিপ যাদব। লঙ্কানদের হয়ে সর্বোচ্চ ১৯ রান করেন নুয়ানিদু ফার্নান্দো, ১৩ রানে অপরাজিত থাকেন কাসুন রাজিথা এবং ১১ রান করেন দাসুন শানাকা। আশেন বান্দারা ব্যাটই করতে পারেননি।

  • অস্ট্রেলিয়ায় ধর্ষণ করে গ্রেপ্তার লঙ্কান ক্রিকেটার

    অস্ট্রেলিয়ায় ধর্ষণ করে গ্রেপ্তার লঙ্কান ক্রিকেটার

    চলমান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার সেরা ১৫ জনের মধ্যে ছিলেন দানুস্কা গুনাথিলাকা। দলের হয়ে শুরুর দিকে বিশ্বমঞ্চে প্রতিনিধিত্বও করেছেন এই টপ অর্ডার লঙ্কান ক্রিকেটার। তবে ইনজুরির জন্য এরপর ছিটকে যান বিশ্বকাপ থেকে।

    বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গেলেও দলের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ায় ছিলেন গুনাথিলাকা। আর সেখানেই বড়সড় ধরনের অনৈতিক কাজ করে বসলেন এই ক্রিকেটার। ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে এই ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে। যার ফলে সিডনি থেকে এই ক্রিকেটারকে গ্রেপ্তারও করেছে অস্ট্রেলিয়ার পুলিশ। এমনই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে অস্ট্রেলিয়ার গণমাধ্যম।

    বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভ পর্বে বাদ পড়েছে শ্রীলঙ্কা। যার ফলে অস্ট্রেলিয়া ছেড়ে নিজেদের দেশের উদ্দেশ্যে পাড়ি জমিয়েছেন লঙ্কান ক্রিকেটাররা। তবে গ্রেপ্তার হওয়ায় অস্ট্রেলিয়ায় এই ক্রিকেটারকে রেখেই উড়াল দিয়েছে দল।

    এই বিষয় নিশ্চিত করে শ্রীলঙ্কান সাংবাদিক রেক্স ক্লেমেন্টাইন টুইটারে এক টুইটে লিখেছেন,’শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটার দানুস্কা গুনাথিলাকা ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন। শ্রীলঙ্কা দল তাকে ছাড়াই দেশের উদ্দেশ্যে উড়াল দিয়েছে। গুনাথিলাকা তিন সপ্তাহ আগে চোটে পড়লে তার বদলে বিশ্বকাপে সুযোগ পায় আসেন বান্দারা। তবে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গেলেও দল এই ক্রিকেটারকে সঙ্গেই রেখেছিল।’

    ২৪ঘণ্টা/এনআর

  • শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে সেমিফাইনালে ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার বিদায়

    শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে সেমিফাইনালে ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার বিদায়

    জিতলেই সেমিফাইনাল, এমন সমীকরণের ম্যাচে শনিবার শ্রীলঙ্কাকে হারিয়েছে ইংল্যান্ড। তবে লঙ্কানদের এমন পরাজয়ে তাদের চেয়েও দুখী আরেক দল, অস্ট্রেলিয়া। কারণ এ ইংলিশদের জয়ে ঘরের মাঠের বিশ্বকাপে সেমিফাইনাল খেলা থেকে বঞ্চিত হলো অ্যারন ফিঞ্চের দল। শ্রীলঙ্কা অবশ্য বাদ পড়েছে বেশ আগেই।

    সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে আজ শ্রীলঙ্কাকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে ইংল্যান্ড। বল হাতে দুর্দান্ত পারফর্ম করে ম্যাচসেরা হয়েছেন আদিল রশিদ।

    টস জিতে শুরুতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় শ্রীলঙ্কা। অধিনায়কের সিদ্ধান্তের সম্মান রেখেছেন দুই লঙ্কান ওপেনার পাথুম নিসাঙ্কা ও কুশল মেন্ডিস। ২৪ বলে ৩৯ রানের জুটিতে দলকে ভালো শুরু এনে দেন তারা।

    ১৪ বলে ১৮ রান করে কুশলের বিদায়ের পর দ্বিতীয় উইকেটে ধনঞ্জয়ার সঙ্গে ৩৩ রানের জুটি গড়েন নিসাঙ্কা। তবে ধনঞ্জয়ার বিদায়ের পরই রানের গতি কমতে থাকে। দুই অঙ্কে পৌঁছার আগেই আশালঙ্কাকে ফেরান স্টোকস।

    চতুর্থ উইকেটে বড় সংগ্রহের সম্ভাবনা দেখাচ্ছিলেন নিসাঙ্কা ও ভানুকা রাজাপাকোশে। কিন্তু ৬৭ রানে থাকা নিসাঙ্কা আদিল রশিদের বলে আউট হলে রানের চাকা আরও শ্লথ হয়ে যায়। ১৪১ রানে থামে শ্রীলঙ্কার ইনিংস।

    ইংলিশদের হয়ে তিন উইকেট নিয়েছেন মার্ক উড। একটি করে উইকেট পেয়েছেন রশিদ, স্টোকস, ক্রিস ওকস ও স্যাম কারান।

    মাঝারি লক্ষ্যতাড়ায় ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই বাজিমাত করেছে ইংলিশ ওপেনাররা। জস বাটলার ও অ্যালেক্স হেলসের ৭৫ রানের উদ্বোধনী জুটিটি এসেছে মাত্র ৪৪ বলে। সেখানেই ম্যাচটা প্রায় জিতে গিয়েছিল ইংলিশরা।

    তবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে লড়াকু লঙ্কানরা। ৪৪ রানের ব্যবধানে ইংলিশদের ৬ ব্যাটারকে সাজঘরে ফিরিয়ে ম্যাচেও ফিরেছিল। কিন্তু শেষ ওভারের খেলায় হার মানতে হয় দাসুন শানাকার দলকে। ৩৬ বলে ৪২ রান করে ইংল্যান্ডকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান স্টোকস।

    ২৪ঘণ্টা/এনআর

  • আফগানিস্তানের বিদায়, সেমির আশা বাঁচল শ্রীলঙ্কার

    আফগানিস্তানের বিদায়, সেমির আশা বাঁচল শ্রীলঙ্কার

    লঙ্কান ব্যাটার ধনঞ্জয়া ডি সিলভার দাপুটে ব্যাটিংয়ের কাছে পরাস্ত হয়েছে আফগানিস্তান। ধনঞ্জয়ার অপরাজিত ৬৬ রানে ভর করে আফগানদের ছুড়ে দেওয়া ১৪৪ রানের টার্গেট সহজেই ছুঁয়ে ফেলেছে শ্রীলঙ্কা।

    টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভে নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে আফগানিস্তানের ছুড়ে দেওয়া ১৪৪ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারের ৯ বল আগেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ধনঞ্জয়া-মেন্ডিসরা। ১৮ ওভার তিন বলে ১৪৮ রান করে ৬ উইকেটের জয় তুলে নেয় শ্রীলঙ্কা।

    এ জয়ে সেমিফাইনালের দৌড়ে টিকে থাকল শ্রীলঙ্কা। অপরদিকে সেমির স্বপ্ন ভেঙে গেছে আফগানিস্তানের।

    অস্ট্রেলিয়ার ব্রিজবেন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে আজ বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টায় শুরু হয় ম্যাচটি।

    ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা দুর্দান্ত হলেও শেষে আফগান ব্যাটারদের আসা যাওয়ার মিছিলে লঙ্কানদের সামনে চ্যালেঞ্জিং স্কোর দাঁড় করাতে পারেনি আফগানিস্তান। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভে নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে টস জিতে ব্যাট করতে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৪৪ রান করে আফগানিস্তান।

    এদিন উদ্বোধনী জুটিতে উড়ন্ত সূচনা করে আফগানরা। পাওয়ার প্লেতে কোনও উইকেট না হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ৪২ রান সংগ্রহ করে আফগানিস্তান। পরে সপ্তম ওভারের প্রথম বলে রহমানউল্লাহকে (২৮) বোল্ড আউট করেন লঙ্কান বোলার লাহিরু কুমারা।

    দ্বিতীয় উইকেটে ইব্রাহিম জাদরানকে নিয়ে ইনিংস বড় করার চেষ্টা করেন উসমান। তবে ম্যাচের ১১তম ওভারে জুটি ভাঙেন হাসারাঙ্গা। উসমান ২৭ রান করে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান। দলের স্কোর তখন ৬৮। ইব্রাহিম বিদায় নিলে আর বড় কোনো জুটি তৈরি হয়নি।

    পরে ব্যাটারদের আসা যাওয়ার মিছিলে ডেথ ওভারে ১৭ রানে ৪ উইকেট বিলিয়ে দেয় আফগানিস্তান। শেষ ওভারে হাসারাঙ্গার জোড়া আঘাতে দেড়শ পার করতে পারেনি আফগানিস্তান। এতে শ্রীলঙ্কার লক্ষ্য দাড়ায় ১৪৫ রানে।

    জবাবে ব্যাট করতে নেমে, উদ্বোধনী জুটি বেশি সময় মাঠে থিতু হতে পারেনি। পাথুম নিসাঙ্কা ১০ বলে ১০ রান ও কুসল মেন্ডিস ২৭ বলে ২৫ রান করে ফিরে গেলে দলের হাল ধরেন ধনঞ্জয়া ডি সিলভা। পরে চারিথ আসালাঙ্কা ১৮ বলে ১৯ রানে প্যাভিলিয়নে ফিরে গেলে ভানুকা রাজাপাকসের সঙ্গে জুটি গড়েন ধনঞ্জয়া ডি সিলভা। এরপর আফগান বোলারদের ঘূর্ণি একাই সামলেছেন ডি সিলভা। ৪২ বলে ৬৬ রানের সিলভা ঝড়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় শ্রীলঙ্কা।

    সংক্ষিপ্ত স্কোর:

    আফগানিস্তান: ১৪৪/৮ (২০)

    শ্রীলঙ্কা: ১৪৮/৪ (১৮.৩)

    টার্গেট: ১৪৫

    সর্বোচ্চ ব্যাক্তিগত স্কোর: ৬৬* (৪২)
    এদিকে বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে এ পর্যন্ত লঙ্কানরা তিন ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছে। অপরদিকে বৃষ্টির কারণে আফগানিস্তানের শেষ দুটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়। সেই হিসেবে ‘গ্রুপ-১’ এ শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তানের পয়েন্ট সমান ২ করে। শ্রীলঙ্কা দুই হার ও এক জয়ে ২ পয়েন্ট পায়। এবার এ জয়ে আরো ২ পয়েন্টসহ ৪ পয়েন্ট হলো শ্রীলঙ্কা। অপরদিকে আফগানিস্তান একটিতে হারে অপর দুটি ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেস্তে গেলে ২ পয়েন্ট পায়। এ ম্যাচে হেরে তাদের তারা ২ পয়েন্টেই আটকে রইলো।

    ২৪ঘণ্টা/এনআর

  • এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কা

    এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কা

    ফাইনালের আগে বেশ আলোচনা হচ্ছিল টস নিয়ে। ইতিহাস বলছিল, টস জিতলেই যে আরব আমিরাতের মাটিতে ম্যাচ জেতা হয়ে যায় অনেকটাই! সেই টসে আজ জিতেছিল পাকিস্তান, নিয়েছিল ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত। টুর্নামেন্টে টসে জিতে ফিল্ডিং নেওয়া, এরপর রান তাড়া করে ম্যাচ জেতার যে ধারা চলে আসছিল, তাতে পাকিস্তানের জয়টাকেই মনে হচ্ছিল সম্ভাব্য নিয়তি।

    বিশেষ করে ম্যাচের প্রথম ১০ ওভারের পর তো বটেই! তবে সব পাশার দান উল্টে দিয়ে অবশেষে শ্রীলঙ্কাই জিতেছে আজ, তাতে পাকিস্তানের স্বপ্ন ভেঙে এশিয়া কাপটাও ষষ্ঠবারের মতো উঠে গেছে লঙ্কারদের ট্রফি কেসে।

    কথায় বলে, উঠন্তি মুলো নাকি পত্তনেই চেনা যায়। তবে আজকের ম্যাচে সেটা চেনা যায়নি মোটেও। শুরুর ওভারে নাসিম শাহর কুশল মেন্ডিসের ওভাবে স্টাম্প উপড়ে ফেলা, এরপর পাওয়ারপ্লেতে হারিস রউফের গতির কাছে লঙ্কান টপ অর্ডারের মুখ থুবড়ে পড়া দেখে কে ভেবেছিল শেষ হাসিটা হাসবে শ্রীলঙ্কা?

    একজন অন্তত ভেবেছিলেন; শুধু ভাবেনইনি, স্রোতের বিপরীতে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়েও গিয়েছিলেন। তথৈবচ এক পাওয়ারপ্লের পর ১০ ওভারের আগেই ৫ উইকেট খোয়ানো শ্রীলঙ্কাকে ভানুকা রাজাপাকশেই কক্ষপথে ফিরিয়েছেন দারুণ প্রতি আক্রমণের কৌশলে।

    শুরুতে ওয়ানিন্দু হাসরাঙ্গার সঙ্গ পেয়েছিলেন, ২১ বলে তার ৩৫ রানের ইনিংস বলছে, প্রতি আক্রমণের গোড়াপত্তনে তার ভূমিকাটাও কম নয়। তবে দলীয় ১১৬ রানে তিনি যখন ফিরলেন, এরপর লঙ্কানদের ইনিংসটা প্রায় একাই টেনেছেন ভানুকা। শাদাব খানের কল্যাণে দুবার ‘জীবন’ পেয়েছেন বটে, তবে এরপর তিনি দেখিয়েছেন কী করে ফেরত পাওয়া জীবন কাজে লাগাতে হয়। ৪৫ বল খেলে তিনি করেছেন ৭১ রান, তাতেই পাকিস্তানের সামনে ১৭০ রানের চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেয় লঙ্কানরা।

    লঙ্কানদের শিরোপাজয়ের উঠন্তি মুলোটা চেনা যায়নি পাক ইনিংসের শুরুতেও। দিলশান মাদুশাঙ্কার করা প্রথম ওভারে যে কোনো বৈধ বল মাঠে গড়ানোর আগেই যে পাক স্কোরবোর্ডে জমা পড়ে গিয়েছিল ৯ রান!

    ফাইনালের মতো মঞ্চে এমন শুরু যে কোনো দলকেই ভড়কে দিতে যথেষ্ট। তবে লঙ্কানদের পারেনি। তাদের যে একজন প্রমোদ মাদুশান ছিলেন! তার কল্যাণেই পঞ্চম ওভারে বাবর আজমকে তুলে নেয় শ্রীলঙ্কা, এক বল পর ফখর জামানকেও।

    সেই জোড়া ধাক্কা সামলাতে ওপেনার মোহাম্মদ রিজওয়ান আর চারে নামা ইফতিখার আহমেদ রীতিমতো খোলসেই ঢুকে পড়েছিলেন। পাকিস্তান উইকেট খোয়াচ্ছিল না বটে, কিন্তু আস্কিং রেটটা তখন বেড়ে যাচ্ছিল চড়চড় করে। ১৪তম ওভারের দ্বিতীয় বলে যখন ইফতিখার ফিরছেন ওয়ানডে মেজাজে ৩১ বলে ৩২ রানের ইনিংস খেলে, তখন পাকিস্তানের রান তিন অঙ্কই ছোঁয়নি।

    ৪০ বলে তখন দলের দরকার ছিল ৭৮ রান। এমন পরিস্থিতি থেকে পাকিস্তান ভারতের বিপক্ষেই ম্যাচ বের করেছে সুপার ফোরে। ধারণা করা হচ্ছিল, আজও বুঝি ওভাবেই উতরে যাবে বাবরের দল। তবে আজ আর সম্ভব হয়নি, পাকিস্তানের মিডল অর্ডার চাপের মুখে ভেঙে পড়েছে রীতিমতো তাসের ঘরের মতো। ৩২ রানের ব্যবধানে খুইয়েছে সাত উইকেট; আগের সব ম্যাচের নায়ক আসিফ আলী, শাদাব খান, খুশদিল শাহরা রিক্ত হাতে ফিরেছেন আজ, পাকিস্তানের হারটা অবধারিত হয়ে গেছে তখনই। বাকি ছিল কেবল আনুষ্ঠানিকতার, শেষ বলে হারিস রউফকে বোল্ড করে সেটাও সেরেছেন চামিকা করুণারত্নে, ১৪৭ রানে শেষ হয় পাকিস্তানের ইনিংস। ২৩ রানের জয় নিয়ে শ্রীলঙ্কা মাতে শিরোপার উৎসবে। আর পাকিস্তানের এশিয়া কাপ শিরোপার অপেক্ষাটা বাড়ে আরও।

  • সুপার ফোরে শ্রীলঙ্কার শুভসূচনা

    সুপার ফোরে শ্রীলঙ্কার শুভসূচনা

    গ্রুপপর্বে আফগানিস্তানের বিপক্ষে মাত্র ১০৫ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। হেরেছিল ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে। এবার যেন সেই হারের ‘প্রতিশোধ’ নিলো লঙ্কানরা।

    শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সুপার ফোর পর্বের প্রথম ম্যাচে শুভসূচনা করলো দাসুন শানাকার দল। আফগানিস্তানকে হারালো ৪ উইকেট আর ৫ বল হাতে রেখে।

    ১৭৬ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে উড়ন্ত সূচনা করেন লঙ্কান দুই ওপেনার কুশল মেন্ডিস আর পাথুম নিশাঙ্কা। ৩৯ বলে ৬২ রানের জুটি গড়েন তারা। ১৯ বলে ২ চার আর ৩ ছক্কায় ৩৬ রানের ঝড় তুলে মেন্ডিস হন নাভিন উল হকের শিকার।

    এরপর নিশাঙ্কাকে (২৮ বলে ৩৫) উইকেটরক্ষকের দারুণ ক্যাচ বানান আফগান অফস্পিনার মুজিব ‍উর রহমান। উইকেটে এসে সুবিধা করতে পারেননি চারিথ আসালাঙ্কা। ১৪ বলে মাত্র ৮ রান করা এই ব্যাটারকে বোল্ড করেন নাবি।

    কপাল বোধ হয় একেই বলে! বাংলাদেশের বিপক্ষে কুশল মেন্ডিস একাই পেয়েছিলেন ৫টি জীবন। এবার আফগানিস্তানের বিপক্ষে টানা দুই বলে বেঁচে যান লঙ্কান দুই ব্যাটার।

    ইনিংসের ১২তম ওভারে মোহাম্মদ নাবি চারিথ আসালাঙ্কাকে (১৪ বলে ৮) বোল্ড করলে ৯৪ রানে ৩ উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। দ্রুত আরও দুটি উইকেট হারালে বেশ বিপদেই পড়ে যেতো লঙ্কানরা।

    নাবির ওই ওভারেই শেষ বলে উঠেছিল ক্যাচ। কিন্তু গুনাথিলাকার সেই ক্যাচ ফাইন লেগে ফেলে দেন করিম জানাত। তার পরের ওভারের প্রথম বলে রশিদ খানের ঘূর্ণিতে পরাস্ত হন লঙ্কান অধিনায়ক দাসুন শানাকা। আম্পায়ারও আবেদনে আঙুল তুলে দেন।

    কিন্তু রিভিউ নিয়ে জিতে যায় শ্রীলঙ্কা। গুনাথিলাকা ১৩ আর শানাকা জীবন পান ব্যক্তিগত ১ রানে। যদিও শানাকা সেই জীবন কাজে লাগাতে পারেননি। মুজিবের দ্বিতীয় শিকার হন ৯ বলে ১০ করেই।

    ১৬তম ওভারে নাভিন উল হকের ওপর চড়াও হন ভানুকা রাজাপাকসে। প্রথম তিন বলে দুটি বাউন্ডারি আর একটি ছক্কা হাঁকান বাঁহাতি এই ব্যাটার। ওভারের শেষ বলেই আউট হতে পারতেন রাজাপাকসে। এবার ডিপকভারে ড্রপ হয় সহজ ক্যাচ।

    পরের ওভারে রশিদ খান বোল্ড করেন ভয়ংকর গুনাথিলাকাকে। ২০ বলে ২টি করে চার-ছক্কায় ৩৩ রান আসে গুনাথিলকার ব্যাট থেকে। ১৫১ রানে ৫ উইকেট হারায় লঙ্কানরা। তবে ততক্ষণে জয়ের পথ অনেকটাই সহজ হয়ে গেছে। ২০ বলে দরকার ছিল ২৫ রান।

    ভানুকা রাজাপাকসে আর ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা দলকে প্রায় জয়ের বন্দরে নিয়ে আসেন। রাজাপাকসে (১৪ বলে ৩১) অবশ্য শেষ সময়ে এসে বোল্ড হন নাভিনের বলে। তবে তখন ৯ বলে মাত্র ২ রান দরকার লঙ্কানদের। হাসারাঙ্গা ৯ বলে ১৬ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন।

    আফগানিস্তানের বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল ছিলেন মুজিব উর রহমান। ৪ ওভারে ৩০ রানের বিনিময়ে ২টি উইকেট নেন এই অফস্পিনার।

    এর আগে রহমানুল্লাহ গুরবাজ যে ইনিংসটা খেলে দিয়েছেন, তাতে মনে হচ্ছিল আফগানিস্তানের সংগ্রহ দুইশর কাছাকাছি হয়ে যাবে। কিন্তু শেষ ৫ ওভারে দারুণ বোলিং করে আফগানদের বিশাল পুঁজি গড়তে দেয়নি শ্রীলঙ্কা।

    শেষ ৫ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে আফগানিস্তান তুলতে পারে মাত্র ৩৭ রান। সবমিলিয়ে ২০ ওভার শেষে আফগানদের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ১৭৫ রান।

    শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে আফগানিস্তানকে প্রথমে ব্যাটিংয়ে পাঠায় শ্রীলঙ্কা। রহমানুল্লাহ গুরবাজের ব্যাটে উদ্বোধনী জুটিতে উড়ন্ত সূচনা পায় আফগানরা।

    প্রথম ২ ওভারে মাত্র ১১ রান আসার পর তৃতীয় ওভারেই চড়াও হন গুরবাজ। লঙ্কান অফস্পিনার মাহিশ থিকশানাকে টানা দুই বলে দুই ছক্কা হাঁকান ডানহাতি এই ব্যাটার। পরের ওভারে পেসার আসিথা ফার্নান্ডোকে হাঁকান আরও একটি ছক্কা ও চার।

    ইনিংসের তৃতীয় আর চতুর্থ ওভার মিলিয়ে ২৯ রান তুলে নেয় আফগানিস্তান। তবে পরের ওভারে মধুশঙ্কা বোল্ড করে ফেরান ওপেনিংয়ে গুরবাজের সঙ্গী হজরতউল্লাহ জাজাইকে (১৬ বলে ১৩)। ভাঙে ২৯ বলে ৪৬ রানের ঝড়ো উদ্বোধনী জুটি। পাওয়ার প্লের প্রথম ৬ ওভারে ১ উইকেটে ৪৯ রান তোলে আফগানরা।

    এরপর ২২ বলে ফিফটি তুলে নেন গুরবাজ, যা কিনা আফগানিস্তানের পক্ষে টি-টোয়েন্টিতে দ্বিতীয় দ্রুততম। দেশের পক্ষে দ্রুততম ফিফটির রেকর্ডটি অধিনায়ক মোহাম্মদ নাবির (২১ বলে)।

    শ্রীলঙ্কাকে পেলেই যেন জ্বলে উঠেন রহমানুল্লাহ গুরবাজ। গ্রুপপর্বে লঙ্কানদের বিপক্ষে ১৮ বলে খেলেছিলেন ৪০ রানের বিধ্বংসী ইনিংস। ২০ বছর বয়সী এই আফগান ওপেনার সুপার ফোরপর্বেও শ্রীলঙ্কার বোলারদের নিয়ে ছেলেখেলা করেছেন।

    মাঠে রীতিমত চার-ছক্কার বন্যা বইয়ে দিচ্ছিলেন গুরবাজ। অবশেষে ১৬তম ওভারে এসে তাকে ফেরান আসিথা ফার্নান্ডো। এবারও ছক্কাই হাঁকাতে গিয়েছিলেন গুরবাজ। কিন্তু বল অনেক ওপরে উঠে যায়, মিডউইকেটে কঠিন ক্যাচ তালুবন্দী করেন হাসারাঙ্গা।

    সেঞ্চুরি মিসের আক্ষেপ নিয়ে সাজঘরে ফিরতে হয় গুরবাজকে। ৪৫ বলে গড়া তার ৮৪ রানের বিধ্বংসী ইনিংসে ছিল ৪টি চারের সঙ্গে ৬টি ছক্কার মার।

    ১৭ ওভারে দেড়শ ছোঁয় আফগানিস্তান। ১৮তম ওভারে ৩৮ বলে ৪০ করে মধুশঙ্কার শিকার হয়ে ফেরেন ইব্রাহিম জাদরান। তবে নাজিবুল্লাহ জাদরানের

    একটি করে চার-ছক্কায় ওভারে ঠিকই ১৩ রান তুলে নেয় আফগানিস্তান।

    কিন্তু শেষ দুই ওভারে প্রত্যাশিত রান পায়নি আফগানরা। ১৯তম ওভারে থিকসানা আফগান অধিনায়ক মোহাম্মদ নাবিকে (১) ফিরতি ক্যাচ বানান, রানআউট হন নাজিবুল্লাহ (১০ বলে ১৭)। ওই ওভারে মাত্র ৩ নিতে পারে আফগানিস্তান।

    ২০তম ওভারেও প্রথম তিন বল ব্যাটেই লাগাতে পারেননি রশিদ খান। আসিথা ফার্নান্ডোর পঞ্চম বলে ছক্কা হাঁকান তিনি। তবে শেষ বলে দুই নিতে গিয়ে রানআউট হয়ে যান (৭ বলে ৯)।

    লঙ্কান বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল দিলশান মধুশঙ্কা। তবে ২ উইকেট পেলেও ৪ ওভারে তিনি খরচ করেন ৩৭ রান।