Tag: সত্যতা পায়নি

  • ছাত্রলীগ নেতা রনির বিরুদ্ধে অধ্যক্ষের মামলায় অস্ত্র ও চাঁদাবাজির সত্যতা পায়নি পুলিশ!

    ছাত্রলীগ নেতা রনির বিরুদ্ধে অধ্যক্ষের মামলায় অস্ত্র ও চাঁদাবাজির সত্যতা পায়নি পুলিশ!

    শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনুপ্রবেশ করে অস্ত্র ঠেকিযে চাঁদাবাজি ও হত্যার উদ্দ্যেশে মারধরের অভিযোগে চট্টগ্রাম বিজ্ঞান কলেজের অধ্যক্ষের দায়ের করা একটি মামলার চার্জশিট আদালতে পেশ করেছে পুলিশ।

    এতে অভিযুক্ত চট্টগ্রাম নগর ছাত্রলীগের সাবেক সম্পাদক নুরুল আজিম রনিসহ ৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। সোমবার (২৮ অক্টোবর) চট্টগ্রাম মহানগর হাকিমের আদালতে চার্জশিটটি দাখিল করার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চকবাজার থানার এসআই বদিউল আলম।

    তবে প্রেরিত চার্জশিটে পুলিশ আসামিদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ঠেকিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগের কোনও সত্যতা পাওয়া যায়নি উল্লেখ করেছেন বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে।

    আদালত সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম মহানগর হাকিমের আদালতে চার্জশিটটি দাখিল করা হয় সোমবার (২৮ অক্টোবর)। চার্জশিটে নগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনিসহ ছাত্রলীগের বিভিন্ন স্তরের আরো ৬ নেতাকর্মীসহ মোট ৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়।

    পুলিশের দেয়া চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়, বিজ্ঞান কলেজের অধ্যক্ষ জাহেদ খানের দায়ের করা অভিযোগে নুরুল আজিম রনির নির্দেশে তানভীর মেহেদি ও নেওয়াজ শরীফ তার ঘাড়ে পিস্তল ঠেকিয়ে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি ও না দিলে তাকে হত্যার হুমকি দেয়ার যে অভিযোগগুলো আনা হয়েছে তার সত্যতা পাওয়া যায়নি। তবে অনুমতি না নিয়ে কলেজ অধ্যক্ষের কক্ষে অনুপ্রবেশের সিসিটিভি ভিডিও ফুটেজ জব্দ করা হয়। এতে কলেজটির অধ্যক্ষের কক্ষে অনধিকার প্রবেশ করে তাকে থাপ্পড় ও মারধরের সত্যতা পাওয়া যায়।

    ভিডিও ফুটেজ ও বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সংগ্রহের পর শিক্ষককে মারধর, অপরাধমূলক ভয়ভীতি প্রদর্শন ও কলেজে অনধিকার প্রবেশের অপরাধে তিন ধারায় নুরুল আজিম রনির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়্ অন্যান্য আসামিদের শুধু একটি ধারায় (কলেজে অনধিকার প্রবেশ করার) অভিযোগ আনা হয়েছে।

    নুরুল আজিম রনি ছাড়া চার্জশিটে উল্লেখ থাকা অন্য ৬ আসামি চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগ, কলেজ ও বিভিন্ন ওয়ার্ড ছাত্রলীগ কমিটির বিভিন্ন দায়িত্বে রয়েছেন। এরা হলেন তানভীর মেহেদি মাসুদ, নেওয়াজ শরীফ অমি, মজিবুর রহমান রাসেল, আরিফুর রহমান মাসুদ,নুরুল হুদা মিঠু ও কিরণ।

    অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা নুরুল আজিম রনি একজন মাদকাসক্ত দাবী করে রনির ডোপ টেস্ট করানোর জন্য আদালতে আবেদন করার কথা জানিয়েছেন মামলার বাদি চট্টগ্রাম বিজ্ঞান কলেজের অধ্যক্ষ ড. জাহেদ।

    প্রসঙ্গত, গত বছরের মার্চে বিজ্ঞান কলেজের তিন শতাধিক এইচএসসি পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকা করে উন্নয়ন ফি আদায়ের জন্য প্রবেশপত্র আটকে রেখেছিলেন অধ্যক্ষ জাহেদ খান। সেই প্রবেশপত্র আদায়ের জন্য নগর ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনি আন্দোলনে নেমেছিলেন।

    ২০১৮ সালের ২৯ মার্চ দুপুরে মহানগর ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনির নেতৃত্বে ছাত্রলীগের একটি গ্রুপ বিজ্ঞান কলেজে যায়। আন্দোলনের মুখে প্রবেশপত্র ফেরত দিতে বাধ্য হন জাহেদ খান। পরে সেই আন্দোলনের সময় জাহেদ খানকে ঘুষি দেয়ার একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হলে বিতর্কের মুখে পড়েন রনি।

    ২০১৮ সালের ৪ এপ্রিল রনিসহ তার কয়েকজন অনুসারীর বিরুদ্ধে অস্ত্র ঠেকিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে নগরীর চকবাজার থানায় মামলা দায়ের করেন কলেজ অধ্যক্ষ জাহেদ খান।

    এদিকে ওই বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর শিক্ষা বাণিজ্যসহ নানা অনিয়ম এবং মারধরের অভিযোগে চট্টগ্রাম বিজ্ঞান কলেজের অধ্যক্ষ জাহেদ খানের বিরুদ্ধেও আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়। চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আবু ছালেম মো. নোমানের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন ওই কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করা ছাত্র জাকারিয়া হোসেন নাহিদ।

    মামলার আরজিতে নাহিদ উল্লেখ করেন, গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর এইচএসসি পরীক্ষার সনদ ও ছাড়পত্রের জন্য বিজ্ঞান কলেজের অধ্যক্ষের কক্ষে যান নাহিদ। তখন অধ্যক্ষ তার কাছে ছাড়পত্রের জন্য দুই লাখ টাকা দাবি করেন। এ সময় নাহিদ টাকা ছাড়া ছাড়পত্র দিতে কলেজ কর্তৃপক্ষ বাধ্য জানিয়ে টাকা দিতে অস্বকীকৃতি জানান।

    এতে অধ্যক্ষ ক্ষেপে গিয়ে নাহিদকে মারধর শুরু করেন এবং এক পর্যায়ে অধ্যক্ষ তার গলা টিপে ধরে তাকে খুন করার হুমকি দেন। এ ঘটনায় নাহিদ চকবাজার থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে ওসি আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেন বলে আরজিতে উল্লেখ করেন নাহিদ। ওই মামলার বাদী তখন গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন আদালত মামলাটি গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন।