২৪ ঘণ্টা ডট নিউজ। ডেস্ক নিউজ : মাত্র একটি ব্রীজের অভাবে চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার কয়েক লক্ষ জনগণ প্রতিনিয়ত মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে সমুদ্র পথেই আসা যাওয়া করছে।
জনবহুল এ দ্বীপপূর্ণ এলাকার সাধারণ জনগণের প্রাত্যহিক সীমাহীন কষ্টের কথা ভেবে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে নিজ হস্তে চিঠি লিখেছেন ৮ম শ্রেণী পড়ুয়া ক্ষুদে এক শিক্ষার্থী। চিঠিতে চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড এলাকার কুমিরা সন্দ্বীপ ফেরীঘাট থেকে সন্দ্বীপ উপজেলা যাতায়াতের জন্য সাগরে একটি ব্রীজ নির্মাণের আকুল আবেদন জানিয়েছে ওই শিক্ষার্থী।
প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চিঠিটি লিখেছেন চট্টগ্রামের দক্ষিণ হালিশহর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ক্ষুদে স্কুল ছাত্রী তৃষ্ণা রাণী দেবনাথ।
জানা যায়, তৃষ্ণা চট্টগ্রামের মীরসরাই উপজেলার জোরারগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা সাংবাদিক জীবন কৃষ্ণ দেবনাথের বড় মেয়ে। সম্প্রতি সে কুমিরা সন্দ্বীপ ফেরীঘাট এলাকায় বেড়াতে যায়। এ সময় স্থানীয় এলাকার লোকজনের সাগর পারাপারে ব্যাপক কষ্ট স্বচোক্ষেই উপলদ্ধি করে।
সে কষ্ট ও দুর্ভোগের চিত্রগুলো তার মনে দাগ কেটেছে। আর তাই নিজের হাতেই একটি চিঠি লিখে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজের আবেগঘন অনুভুতির আবেদনগুলি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে শেয়ার করে। চিঠিটি ভাইরাল হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করে তৃষ্ণা তার চিঠিতে উল্লেখ করেছেন, সন্দ্বীপ উপজেলা থেকে চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের সাথে সাগর পথে যোগাযোগ সম্পূর্ণ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায়।
যে কোন সময় শিশু ও বয়স্ক রোগীরা রোগাক্রান্ত হলে চট্টগ্রাম শহরে চিকিৎসার আনা নেওয়ার ক্ষেত্রে সাগর পথেই মারা যায়। এমনকি সন্দ্বীপ স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা উচ্চ শিক্ষার জন্য চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াতে সম্পর্ণূ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় পড়তে হয়।
তৃষ্ণা তার আবেদনে আরো উল্লেখ করেন, সন্দ্বীপের মতো এমন জনবহুল দ্বীপপূর্ণ এলাকায় কেবল মাত্র একটি ব্রীজের অভাবে লক্ষ লক্ষ জনগণ প্রতিনিয়ত মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে সমুদ্র পথে আসা যাওয়া করে। এমনকি সাগর উত্তাল থাকার কারণে অধিকাংশ সময় ছোট ছোট নৌকা ও স্প্রীডবোট গুলি দূর্ঘটনায় পতিত হয়। ইতিমধ্যে এ দূর্ঘটনায় বহু লোকের প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে।
তৃষ্ণা তার আবেদনে বলেন, সন্দ্বীপের সাথে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মা শেখ হাসিনা একটি ব্রীজ নির্মাণ করে দিলে তার মতে সন্দ্বীপের দ্বীপ এলাকার জনগণ তাদের দীর্ঘদিনের কষ্ট লাঘব হবে।
এমনকি সন্দ্বীপের সাথে তখন সকল প্রকার যোগাযোগ স্থাপন হলে, দ্বীপপূর্ণ সন্দ্বীপ এলাকায় বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণের মাধ্যমে এলাকার জনগণকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে প্রতি মাসে কয়েক কোটি টাকা সরকারি রাজস্ব আয় করা সম্ভব।
শুধু তাই নয়, দীর্ঘতম এ সাগর পথে ব্রীজ নির্মাণ করলে প্রতি বছর ব্রীজ টোলের মাধ্যমে অর্থনৈতিক ভাবে দেশের উন্নয়নে সরকার ব্যাপক রাজস্ব আয় করতে পারবে। যে অর্থ দিয়ে দেশের সামাজিক যোগাযোগ সকল মাধ্যমে সার্বিক উন্নয়ন কর্মকান্ডে ব্যবহার করতে পারবে দেশের সরকার।
তৃষ্ণা তার আবেদনে বলেন, বিশেষ করে আমার মতো স্কুলগামী শিশুরা সন্দ্বীপ এলাকায় উন্নত চিকিৎসা না থাকায় চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হয়ে চট্টগ্রামে আসা যাওয়ার প্রতিনিয়ত প্রাণ হারাচ্ছে। কেবলমাত্র একটি ব্রীজ নির্মাণ হলে এ দুঃখ ঘুছে যাবে। অসংখ্য শিশু ও বৃদ্ধরা উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করতে পারবে।
অবশেষে কুমিরা সীতাকুন্ড সন্দ্বীপ ফেরাঘাটে ব্রীজটি নির্মাণের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নিকট একান্ত সহযোগিতা কামনা করেছেন।
উল্লেখ্য যে, গত ৬ ফেব্রুয়ারি বুধবার সকালে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে স্থানীয় এমপি ও জেলা প্রশাসককে আশ্বস্থ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তখন তিনি বলেছেন, যদি মাটিতে ব্রিজ ধারণ ক্ষমতা থাকে, সেই সঙ্গে পরীক্ষা করে দেখা হবে। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে সন্দ্বীপ- চট্টগ্রামের মধ্যে একটি সেতু তৈরি করে দেওয়া হবে।
২৪ ঘণ্টা/রাজীব সেন প্রিন্স