Tag: সন্দ্বীপ

  • সন্দ্বীপের মগধরা ইউনিয়নে রমরমা মাদকের ব্যবসা

    সন্দ্বীপের মগধরা ইউনিয়নে রমরমা মাদকের ব্যবসা

    নিজস্ব প্রতিবেদক : সন্দ্বীপের মগধরা ইউনিয়নে রমরমা মাদকের ব্যবসা। পাশাপাশি থেমে নেই আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা।

    গেল কয়েক দিন আগে ইয়াবা সেবনরত অবস্থান পুলিশের কাছে পাকরাও হন মগধরার ইয়াবা সম্রাট বলে পরিচিতি কামরুজ্জামান(৩৩) ওরপে ইয়াবা কামরুল ও নিজান উদ্দিন (২৪)। ইতোমধ্যে তাদের বিরুদ্ধে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়েছে।

    গেল বছরের নভেম্বর মাসের দুই তারিখ গ্রেপ্তার হন মগধরা এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিপুল সংখ্যক অস্ত্রসহ দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী জাহিদ সরওয়ার প্রকাশ শিমুল মেম্বারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

    সে সময় তার কাজ থেকে উদ্ধারকৃত অস্ত্রের মধ্যে ছিল একটি দোনলা বন্দুক, দুটি একনলা বন্দুক, দুটি এলজি, ১৯ রাউন্ড কার্তুজ, দুই রাউন্ড চায়না রাইফেলের গুলি, আটটি ছোরা এবং একটি রামদা।

    পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলার মগধরা ইউনিয়নের পলিশ্যার বাড়ি এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে পুলিশের একটি দল। এই সময় সন্ত্রাসীদের সঙ্গে পুলিশের গুলিবিনিময় হয়। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী অভিযানে পুলিশ বিপুল অস্ত্রসহ তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী শিমুল মেম্বারকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
    তার বিরুদ্ধে সন্দ্বীপ থানায় একাধিক মামলা রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

    মগধরার এই জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে ইয়াবা ব্যবসা, চাঁদাবাজি সহ নানা অপকর্মের অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে শিমুলের পরিবার বলছে সে ষড়যন্ত্রের শিকার। তকে(শিমুল মেম্বার) ফাঁসানো হয়েছে। তারা এ ষড়যন্ত্রের র্তীর ছোঁড়ছে সাবেক মেম্বার সমিরের দিকে!

    সন্দ্বীপের মগধরা ইউনিয়নের বিভিন্ন স্পটে সন্ধ্যার পর নেমে আসে যেন মাদকের হাট। ইউনিয়নের পেলিশ্যার বাজার , সরকারী পুকুর মোড, শীলতলা,ও পূর্বে আদর্শ পাড়া কলোনী এসব এলাকায় প্রতিদিন সন্ধ্যার পর থেকে শুরু হয় মাদক কেনা বেচার বানিজ্য। ওপেন সিক্রেটের মতো বিক্রি হচ্ছে মদ গাজা, ফেনসিডাল আর স্পিরিট। এমনকি বিভিন্ন পাড়া মহল্লার দোকানগুলেতে বিক্রি হচ্ছে মদ, গাজা। মাদকের এ ছোবলে উঠতি বয়সের ছেলেরা জড়িয়ে পডছে বেশি। একটু সন্ধা নামতেই ঘর থেকে বের হতে সাহস করেন না অনেকই।

    সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে বেশ কিছু রাজনৈতিক নেতাদের আশ্রয়ে গডে উঠছে এ মাদকের রমরমা ব্যবসা। আর যার কারণে এলাকার আইন শৃঙ্খলার অবনতির আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী। এই ব্যপারে উপজেলার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উদাসীনতাকে দায়ী করছে এলাকার জনগণ।

    মাদক সহ সার্বিক বিষয়ে সন্দ্বীপ থানার সেকেন্ড অফিসারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, মগধরাসহ সন্দ্বীপের সার্বিক বিষয়ে আমরা (থানা পুলিশ) অবগত আছি, ইতোমধ্যে অনেকে আমরা আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছি আমাদের আন্তরিকতার কোন অংশে কমতি রাখছি না। জনগণের সহযোগীতা অব্যাহত থাকলে সন্দ্বীপকে মাদক মুক্ত করতে পারবো।

  • বিলুপ্তির পথে সন্দ্বীপের বেত বাগান!

    বিলুপ্তির পথে সন্দ্বীপের বেত বাগান!

    চট্টগ্রাম জেলার দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপ। সন্দ্বীপের প্রত্যন্ত এলাকায় এক সময়ে অনেক বেত বাগান ছিল। আর বেত দিয়ে তৈরি করা হতো বিভিন্ন শৌখিন সামগ্রী।

    বিশেষ করে মাটি কাটার ওড়া বা ঝুড়ি বানাের কাজে এ বেত ব্যবহার করা হতো। আর এ বেতের চাহিদা মেটাতে সন্দ্বীপের বেত ব্যবসায়ীরা গ্রাম-গঞ্জেও পদচারণা করতো। প্রত্যন্ত এলাকায় ঘুরে বেত সংগ্রহ করাই ছিল তাদের কাজ। বেত কিনে বাগানেই বেতের উপরের কাটা যুক্ত খোসা ছাড়িয়ে নিয়েই জমা করতো। সুযোগ বুঝে ফাঁকা মাঠে রোদে শুকিয়ে বেতের শৌখিন ফার্নিচার তৈরি ও বেতের বিভিন্ন সামগ্রী তৈরির কারখানায় মণ হিসেবে বিক্রি করতো।

    কিন্তু এখন প্রত্যন্ত অঞ্চলে সেই ধরনের বেত না থাকায় গ্রামাঞ্চলে ঘুরে ঘুরে বেত ক্রেতারা অন্য পেশায় গিয়ে জীবীকা অর্জন করছে। বেত এক প্রকার সপুষ্পক উদ্ভিদ।

    এটি বাংলাদেশ, ভুটান, কম্বোডিয়া, লাওস, মায়ানমার, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, ভারত, জাভা ও সুমাত্রা অঞ্চলের উদ্ভিদ।

    বেত ক্রান্তীয় ও উপক্রান্তীয় অঞ্চলের ভেজা ও জংলা নিচুভূমিতে ভাল জন্মে। এটি বর্তমানে আবাসন সংকটের জন্য বিপন্ন প্রজাতি। সন্দ্বীপে বেতগাছ সাধারণত গ্রামের রাস্তার পাশে, বসতবাড়ির পেছনে, পতিত জমিতে ও বনে কিছুটা আর্দ্র জায়গায় জন্মে। কিছুদিনের মধ্যেই বেত ঘন হয়ে ঝাড়েও পরিণত হয়। বেতগাছ জঙ্গলাকীর্ন কাঁটা ঝোপ আকারে দেখা যায়। বনের প্রাকৃতিক পরিবেশ ছাড়াও হাওরের কান্দাতে বেতগাছ জন্মে।

    চিরসবুজ এই উদ্ভিদটি পূর্ণবয়স্ক অবস্থায় ৪৫ থেকে ৫৫ ফুট এবং কখনো কখনো তার চেয়েও বেশি লম্বা হয়ে থাকে। এছাড়া লম্বা বেত ফালা করে নানা কিছু বাঁধার কাজেও ব্যবহার করা হয়।

    আর শুকনো বেত দিয়ে বিভিন্ন হস্তশিল্প জাতীয় জিনিসপত্র তৈরি করা হয়। যেমন- চেয়ার, টেবিল, বই রাখার তাক, সোফা, দোলনা, খাট, টেবিলল্যাম্প, ল্যাম্পশেড ইত্যাদি। এটি গৃহনির্মাণ কাজেও ব্যবহার করা হয়।

    বিশেষ করে রেস্তোরা, ঘর বা অফিসের শৌখিন পার্টিশন হিসেবে এর ব্যাপক ব্যবহার হয়ে থাকে। এছাড়া সন্দ্বীপে ফলদ, বনজ এবং ওষুধি গাছের চারা পর্যাপ্ত বরাদ্দ আছে। বেত চাষের জন্য বরাদ্দ আসলে বেতকে আরো সম্প্রসারিত করা যেত।

  • পুরনো স্মৃতি মনে করতেই হাউমাউ করে কাঁদছিলেন ভিপি শাহজাহান

    পুরনো স্মৃতি মনে করতেই হাউমাউ করে কাঁদছিলেন ভিপি শাহজাহান

    ডাকসুতে চট্টগ্রামের দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপের দু’জন প্রগতিশীল ছাত্রনেতা প্রতিনিধিত্ব করেছেন। একজন ছিলেন এ.জি.এস অন্যজন আপ্যায়ন সম্পাদক। এ.জি.এস ছিলেন, নাসির উদ দূজা। আপ্যায়ন সম্পাদক ছিলেন, নূরুল আকতার। তাদের দু’জনের সাথে আমার স্মৃতি থাকলেও সন্দ্বীপ সরকারি হাজী এ.বি কলেজ ছাত্র সংসদে নির্বাচিত একমাত্র ভি.পি মোহাম্মদ শাহজাহানের সাথে আমার কোন স্মৃতি ছিল না।

    চট্টগ্রামের পাহাড়তলী গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ’র প্রধান শিক্ষক এবং ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো: ফজলুল করিমকে আলাপকালে বলছিলাম স্যার চলেন একদিন ভি.পি শাহজাহানের বাসায় যাই। ঝটপট সম্মতি। তারই আলোকে একদিন শুক্রবার সকালে আমরা দু’জন ভি.পি শাহজাহানের মুখোমুখি হই।

    ভি.পি শাহজাহান (৬৭)। সনদে তাঁর নাম মোহাম্মদ শাহজাহান। তিনি ১৯৭২ সালে অনুষ্ঠিত সন্দ্বীপ সরকারি হাজী এ.বি কলেজ ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ভি.পি নির্বাচিত হন। অদ্যাবধি আর কোন নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হওয়ায় তিনিই সন্দ্বীপ সরকারি হাজী এ.বি কলেজ ছাত্র সংসদে নির্বাচিত একমাত্র ভি.পি।

    মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি বি.এল এফ ছিলেন। ১৯৯১ সালের বন্যায় বি.এল এফ সনদ হারিয়েছেন বলে জানান।

    আলোচনায় উঠে আসে তাঁর বাল্য বন্ধু মুক্তিযুদ্ধকালীন সন্দ্বীপ থানা কমান্ডার মো: রফিকুল ইসলাম চেয়ারম্যান, মো: মাহাবুবুল আলম চেয়ারম্যান ও মো: হেদায়েতুল ইসলাম মিন্টু প্রমুখের নাম।

    যখন তিনি আমার থেকে জানলেন জাসদ নেতা মো: আবুল কাসেম ইন্তেকাল করেছেন তখন তিনি হাউমাউ করে কাঁদছিলেন। আলাপচারিতায় পুরনো স্মৃতি যতবারই উঠে এসেছে ততবারই তিনি কেঁদেছেন।

    পড়ালেখা শেষে প্রথমে ঠিকাদারি পরে ঔষধ ব্যবসায় মনযোগী হলেও ব্যবসা তিনি জমাতে পারেননি।

    ১৯৯৯ সালের ১৮ ডিসেম্বর প্রথমবার এবং ২০১৭ সালের ১৫ আগষ্ট দ্বিতীয়বার তিনি ষ্ট্রোক করেন। দু’বার ষ্ট্রোক করার কারনে এখন তিনি অনিচ্ছাকৃত অবসর সময় কাটাচ্ছেন।

    ১৯৯৯ সালে ষ্ট্রোক করার পর থেকে প্যারালাইজড তাঁর নিত্য সঙ্গী।

    ২০০৫ সালে কিছুটা রাজনৈতিক কারনে সপরিবারে সন্দ্বীপ ছাড়েন বলে জানান ভি.পি শাহজাহান।

    তিনি ১৯৬৯ সালে সন্দ্বীপ মডেল হাই স্কুল থেকে এস.এস.সি এবং ১৯৭২ সালে সন্দ্বীপ সরকারি হাজী এ.বি কলেজ থেকে আই.এ পাশ করেন।

    ভি.পি শাহজাহান হরিশপুর ইউনিয়নের ১নম্বর ওয়ার্ডস্থ মৌলভী আবদুস সালামের বাড়িতে ১৯৫২ সালের ১৮ আগষ্ট জন্মগ্রহন করেন। তাঁর পিতা-মাতা-স্ত্রী যথাক্রমে মুন্সী আবুল কাসেম, সখিনা খাতুন ও আফতাব আরা খানম।

    ব্যাক্তিগত জীবনে তিনি ১ কন্যা ও ১ পুত্র সন্তানের জনক। তাঁর কন্যা মেহের আফরোজ চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজ থেকে রাষ্ট্র বিজ্ঞানে মাস্টার্স এবং পুত্র শাহ মোহাম্মদ তানভীর হোসেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যবস্থাপনায় এম.বি এ ডিগ্রী সম্পন্ন করেছেন।

    এখন তিনি চট্টগ্রাম নগরীর আকবরশাহ থানাধীন রেলওয়ে হাউজিং সেসাইটির ১ নম্বর সড়কের ৬৯ নম্বর বাড়ির ইউনিট ৬/বি ফ্ল্যাটে বসবাস করছেন।

    লেখক-অধ্যক্ষ মুকতাদের আজাদ খান।

  • কালের বিবর্তণে সন্দ্বীপে গরুর গাড়ি ডুমুরেরফুল!

    কালের বিবর্তণে সন্দ্বীপে গরুর গাড়ি ডুমুরেরফুল!

    ওকি গাড়িওয়াল ভাই কতো রবো আমি পন্থের দিকে চাইয়া রে…’, ‘গ্রামের পথে গরুর গাড়ি, বউ চলেছে শ্বশুর বাড়ি’ এসব এখন গান কিংবা কবিতার চরণ হলেও একসময় তা ছিল বাস্তব। যদিও এমন দৃশ্য এখন দুর্লভ প্রায়।

    আধুনিকতার ছোঁয়া, প্রযুক্তিগত উন্নতি ও যান্ত্রিকতা যোগাযোগ ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে। ৩০/৩৫ বছর আগেও যেখানে গরু, ঘোড়া কিংবা মহিষে টানা গাড়ির কদর ছিল।

    বিশেষ করে সন্দ্বীপের মত গ্রামীণ জনপদে কৃষি ফসল বহন ও মানুষ বহনের প্রিয় বাহন ছিল দু-চাকার গরুর গাড়ি। সেখানে আজ গ্রামগঞ্জের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও এসবের দেখা মেলা ভার। গরুর গাড়ির স্থান দখল করে নিয়েছে ভ্যান, বাস, ট্রাক, অটোরিকশা, নছিমন, করিমন, ইত্যাদি। কৃষকসহ সকল শ্রেণির মানুষ এখন যাতায়াত ও পণ্য পরিবহনের জন্য এ সকল যান্ত্রিক পরিবহণের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে।

    চট্টগ্রাম জেলার দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপে এক সময় গরুর গাড়ির ব্যাপক কদর থাকলেও এখন এর প্রচলন দেখা যায়না বললেই চলে। মাত্র দুই যুগ আগেও ৬৮ কিলোমিটারের চার লক্ষ মানুষের জনপদে কৃষিপণ্য ও মানুষ বহনের প্রিয় বাহন ছিল এই দু-চাকার গরুর গাড়ি। কালের বিবর্তনে আধুনিক সভ্যতার ছোঁয়ায় প্রয়োজনীয়তা হারিয়ে অধিকাংশ অঞ্চল থেকেই উঠে যাচ্ছে এর প্রচলন। দৃশ্যপট থেকে হারিয়ে যাচ্ছে একসময়ের গুরুত্বপূর্ণ এ বাহন।

    গরুর গাড়ির ইতিহাস সুপ্রাচীন। নব্যপ্রস্তর যুগের সময় থেকেই মানুষ এই যানটি ব্যবহার করে আসছে। ফ্রান্সের ফঁতান অঞ্চলে আল্পস পর্বতের উপত্যকায় একটি গুহায় গরুর গাড়ির যে ছবি পাওয়া যায়, তার থেকে জানতে পারা যায় খ্রিস্টের জন্মের ৩১০০ বছর আগে ব্রোঞ্জ যুগেও গরুর গাড়ির অস্তিত্ব ছিল। হরপ্পা সভ্যতাতেও যে গরুর গাড়ির অস্তিত্ব ছিল তার সপক্ষে প্রতœতাত্ত্বিক প্রমাণ পাওয়া যায়। সেখানেও নানা অঞ্চল থেকে এক অক্ষবিশিষ্ট চাকাওলা নানা খেলনা পাওয়া গেছে।

    এগুলি থেকে বিশেষজ্ঞদের অনুমান, খ্রিস্টপূর্ব ১৬০০ থেকে ১৫০০ সালের দিকে সিন্ধু অববাহিকা ও ভারতীয় উপমহাদেশের উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলে গরুর গাড়ির প্রচলন শুরু হয়। যা সেখান থেকে ক্রমে ক্রমে দক্ষিণেও ছড়িয়ে পড়ে।

    সাগর বেষ্টিত সন্দ্বীপে মাত্র দুই যুগ আগেও গরুর গাড়ি ছাড়া বিয়েই হতো না। বর-কনেসহ বিয়ে বাড়ির মালামাল পরিবহনে গরুর গাড়ি ছিল উৎকৃষ্ট বাহন। বরপক্ষের লোকজন বরযাত্রী ও ডুলিবিবিরা বিয়ের জন্য ১০ থেকে ১৫টি গরুর গাড়ির ছাওনি সাজিয়ে শ্বশুরবাড়ি ও বাবার বাড়ি আসা-যাওয়া করত। রাস্তাঘাটে গরুর গাড়ি থেকে পটকাও ফুটাত। যেসব পরিবারে গরুর গাড়ি ছিল, তাদের কদরের সীমা ছিল না। কৃষকেরা প্রতিদিন ফজরের আজানের আগে গরুর গাড়িতে কখনো জৈবসার তথা গোবরের সার, কখনো গরুর খাবার ও লাঙ্গল-মই-জোয়াল নিয়ে যেত মাঠে।

    গরুর গাড়ির চালককে বলা হয় গাড়িওয়াল। আর তাই চালককে উদ্দেশ্য করে বলত, ‘ওকি গাড়িয়াল ভাই, আস্তে বোলাও গাড়ি, আরেক নজর দেখিবার নাও মুই দয়ার বাপের বাড়িরে গাড়িয়াল’।

    ২০ থেকে ২৫ কিলোমিটারের রাস্তা পাড়ি দিয়ে কৃষকেরা জমি চাষাবাদ এবং মালামাল বহনের জন্য গরুর গাড়ি বাহন হিসেবে ব্যবহার করত। অনেক অঞ্চলে রাস্তা পাকা না থাকায় এক সময় যান্ত্রিক যানবাহন চলাচল করত না। ফলে গরুর গাড়িই ছিল একমাত্র ভরসা। তবে বর্তমানে মোটরযানের দাপটে ধীরগতির এই যানটির ব্যবহার অনেক কমে গেছে। তাই এখন আর তেমন চোখেই পড়ে না। কয়েক বছর আগেও কালে ভাদ্রে দু’একটি গরু, ঘোড়ার গাড়ি চোখে পড়লেও বর্তমানে তা ডুমুরের ফুল।

    বর্তমান যুগ হচ্ছে যান্ত্রিকতার যুগ। মানুষ বিভিন্ন ধরনের প্রয়োজনীয় মালামাল বহনের জন্য বাহন হিসেবে ব্যবহার করছে ট্রাক, পাওয়ারটিলার, লরি, নসিমন-করিমনসহ বিভিন্ন মালগাড়ি। মানুষের যাতায়াতের জন্য রয়েছে মোটরগাড়ি, রেলগাড়ি, সিএনজি, অটোরিকশা ইত্যাদি। ফলে গ্রামাঞ্চলেও আর চোখে পড়ে না গরুর গাড়ি। অথচ গরুর গাড়ির একটি সুবিধা হলো, এতে কোনো জ্বালানি তেল খরচ হয় না। ফলে ধোয়া হয় না, পরিবেশেরও কোনো ক্ষতি হয় না।

    রিকশা বা ঠেলাগাড়ির মতো গরুর গাড়িও একটি পরিবেশবান্ধব যান। এতে কোনো জ্বালানি খরচ নেই। শব্দ দূষণ নেই। তেল, গ্যাস, বিদ্যুৎ এসব কিছুই এই যানে ব্যবহার হয় না। গরুর গাড়ি ধীর গতিতে চলে বলে দুর্ঘটনাও ঘটত না।

    কিন্তু কালের বিবর্তণে আজ গরুর গাড়ি শুধুই স্মৃতি। যুগের পরিবর্তনে বিলুপ্তির পথে আজ আবহমান বাংলার আরেকটি ঐতিহ্য। ঐতিহ্যের স্বার্থে হলেও এ বিষয়ে সুচিন্তিত পদক্ষেপ থাকা দরকার বলে মনে করছে সুশীল সমাজ।

  • সনাতনী যাতায়াত ব্যবস্থা সন্দ্বীপের উন্নয়নের প্রধান অন্তরায়

    সনাতনী যাতায়াত ব্যবস্থা সন্দ্বীপের উন্নয়নের প্রধান অন্তরায়

    নিজস্ব প্রতিবেদক : জাতীয় উন্নয়ন অগ্রগতির অপার সম্ভাবনার হাতছানি চট্টগ্রামের দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপ। সন্দ্বীপের পশ্চিম অংশে জেগেছে বিশাল চর।যা কাজে লাগাতে পারলে উন্নত জনপদ হতে পারে সাগর কন্যা সন্দ্বীপ।

    জাতীয় অর্থনীতিতে রেমিট্যান্স যোদ্ধারা ভূমিকা রাখছে। কিন্তু সব কিছু ছাপছি বিশদ সম্ভাবনার এ জনপদের প্রধান অন্তরায় সনাতনী যাতায়াত।

    সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে সাগরের তলদেশ দিয়ে গত বছরের নভেম্বর মাস থেকে বিদ্যুৎ পাচ্ছে সন্দ্বীপবাসী। স্বাধীনতার ৪৭ বছর পর বিদ্যুৎ পেয়ে আনন্দে আত্নহারা সন্দ্বীপের বাসিন্দারা। চারদিকে সাগরবেষ্টিত সাগরকন্যা খ্যাত দ্বীপ উপজেলাটি দূর্যোগপবন এলাকা তাই ব্লক দিয়ে বেড়ীবাঁধ নির্মাণ হচ্ছে।

    দেলোয়ার খাঁ সড়ক ( মেইন রোড) প্রস্ততকরণের কাজও চলমান। আরসিসি জেটি নির্মাণ কাজ শেষ পর্যায়ে। ফায়ার সার্ভিস স্টেশন উদ্ভোধনের অপেক্ষায়।

    সন্দ্বীপকে অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ পর্যটন এলাকা হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনাও রয়েছে সরকারের। এতো সব উন্নয়নকে প্রশ্নবিদ্ধ করে রেখেছে শুধুমাত্র নিরাপদ নৌ যাতায়াত না হওয়ায়। সন্দ্বীপের গুপ্তছড়া ঘাট থেকে চট্টগ্রাম পৌঁছাতে ১৫ কি.মি. সাগর পাড়ি দিতে হয় অনিরাপদ নৌযানে করে। প্রতিনিয়ত সন্দ্বীপের বাসিন্দাদের উপেক্ষা করতে হয় মৃত্যুর চোখ রাঙ্গানি।

    বিশেযজ্ঞদের দাবী, স্বাধীনতার পর গত ৫ বছরে স্মরণকালের সবচেয়ে বেশি উন্নয়ন কর্মকান্ড হলেও শুধুমাত্র অনিরাপদ নৌ যাতায়াতের কারণে সবকিছু দুলিশ্চাৎ হয়ে যাচ্ছে অনিরাপদ নৌযাতায়াতে কারণে।

    যথাসময়ে চিকিৎসকের কাছে পৌঁছাতে না পেরে কেউ চোখ হারিয়েছেন। সংকটাপন্ন বহু প্রসূতি মাকে চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের কাছে নিতে গিয়ে জীবিত অবস্থায় স্বজনদের কাছে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি। অনেক মা আবার নদীর মাঝে ট্রলারে সন্তান প্রসব করে মৃত্যুবরণ করেছেন। সন্দ্বীপে এমন হাজারো ঘটনার বিবরণ পাওয়া যায়।

    মূল ভূ-খণ্ড থেকে অনেক দূরে চারিদিকে জলরাশি বেষ্টিত এই দ্বীপের যাতায়াত ব্যবস্থার কাছে মানুষ যেন অসহায়। প্রাকৃতিক নানামুখী প্রতিকূলতায় বিপন্ন এই মানুষগুলোর চিকিৎসা সেবা নিয়তিনির্ভর।

    যথাসময়ে চিকিৎসকের কাছে পৌঁছাতে না পেরে চিরদিনের জন্য ডান চোখটি হারিয়েছেন ঘাট শ্রমিক নিজাম উদ্দিন। নিজের চোখ হারিয়ে তার এখন আর তেমন কোন দুঃখ নেই। তার দাবি, আর কাউকে যাতে এভাবে চোখ হারাতে না হয়, সে ব্যবস্থা যেন সরকার গ্রহণ করে।

    নিজামউদ্দিন বলেন, ঘাটে শ্রমিকের কাজ করতে গিয়ে ট্রলার থেকে বস্তা নামানোর সময় তার ডান চোখে আঘাত লাগে। সঙ্গে সঙ্গে তিনি চলে চান সন্দ্বীপের উত্তরপ্রান্তে গাছুয়ায় অবস্থিত উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। সেখানে চিকিৎসার কোনো ব্যবস্থা না থাকায় তাকে চট্টগ্রাম যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। চট্টগ্রামে যাওয়ার জন্য গুপ্তছড়া ঘাটে গিয়ে কোনো যানবাহন পেলেন না, রাত হয়ে যাওয়ায়। সেই চোখ নিয়ে বাড়ি চলে আসেন। পরের দিন একটি বালুর ট্রলারে করে চট্টগ্রামে চক্ষু ডাক্তারের কাছে পৌঁছাতে বিকেল গড়িয়ে যায়। ডাক্তার জানান, এই চোখ ভালো করার কোনো সুযোগ নেই।

    শুধুমাত্র মূলভূখন্ডের সাথে অনিরাপদ নৌযাতায়াতের কারণে এমন দুর্বিসহ কষ্ট সন্দ্বীপবাসীর। বার বার নৌ দূর্ঘটনায় মানুষের প্রানহানী ঘটে তবুও নিরাপদ হয়নি যাতায়াত ব্যবস্থার। ২০১৭ সালের ২ এপ্রিল ১৮ জনের শরীর সমাধি আজও কাঁদায় সন্দ্বীপবাসীদের।

    শুধু তাই নয় সন্দ্বীপ চ্যানেল পাড়ি দিতে গিয়ে প্রয়াত সাংসদ দ্বীপবন্ধু মুস্তাফিজুর রহমানের মা, বোনও মৃত্যুবরণ করেছেন।

    কলেজ ছাত্র জোবায়ের হোসেন রাজু বলেন, বর্ষাকালে সন্দ্বীপ চ্যানেল খুব বেশি উত্তাল থাকে। ফিটনেসবিহীন স্পীডবোটে করে মৃত্যুর চোখ রাঙ্গানি উপেক্ষা করে আমাদের আসা যাওয়া করতে হয়। আমরা নিরাপদ নৌযান চাই।

    সম্মিলিত সন্দ্বীপ অধিকার আন্দোলনের আহবায়ক হাসানুজ্জামান সন্দ্বীপি বলেন, বর্তমান জনবান্ধব সরকার অবহেলিত সন্দ্বীপের উন্নয়নে ব্যাপক কর্মযজ্ঞ সম্পাদন করেছেন। আমরা বিদ্যুৎ পেয়েছি, যা ছিল অকল্পনীয়। সরকারে সব উন্নয়ন প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে অনিরাপদ নৌযাতায়াতের কারণে।

    সন্দ্বীপের সংসদ সদস্য মাহফুজুর রহমান মিতা বলেন, সন্দ্বীপে যাতায়াত ব্যবস্থার দূর্ভোগ লাঘোবে আমি কাজ করে যাচ্ছি। জরুরি প্রয়োজনে রাতের বেলায়ও যাতে মানুষ সাগর পাড়ি দিতে পারে সেজন্য বয়াবাতি দেয়া হবে। সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে নৌযাতায়াত নিরাপদ করা হবে।

  • সন্দ্বীপে ব্লক বেড়ীবাঁধ নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ, কাজেরও ধীরগতি

    সন্দ্বীপে ব্লক বেড়ীবাঁধ নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ, কাজেরও ধীরগতি

    নিজস্ব প্রতিবেদক : চট্টগ্রামের দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপের ভাঙনপ্রবণ এলাকায় পুনর্বাসন প্রকল্পের মেয়াদ রয়েছে আর ৯ মাস। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ১৯৭ কোটি টাকার প্রকল্পটিতে দুই বছরে অগ্রগতি মাত্র ৪০ শতাংশ। প্রকল্পের কাজের মান নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন খোদ সরকারি দলের উপজেলা চেয়ারম্যান।

    জানা যায়, সন্দ্বীপকে ‘৭২ নং পোল্ডার’ নামে সাগরের ভাঙন রোধে নেওয়া নানা প্রকল্প বাস্তবায়ন করে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

    উপজেলার বঙ্গোপসাগর তীরবর্তী রহমতপুর, মুছাপুর, সারিকাইত, মগধরা ইউনিয়নের প্রায় লক্ষাধিক মানুষকে সাগরের অতি জোয়ারে জলোচ্ছ্বাস, লবণাক্ত পানির দুর্যোগ থেকে রক্ষার জন্য ৯ দশমিক ৬০ কিলোমিটার সীমানায় বাঁধ প্রতিরক্ষা কাজ এবং ১ দশমিক ২০ কিলোমিটার বাঁধ মেরামত কাজ হাতে নেয় পাউবো।

    ২০১৬ সালের দিকে প্রকল্পটি হাতে নিলেও ২০১৭ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ১৯৭ কোটি ৪ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকার ‘চট্টগ্রাম জেলার সন্দ্বীপ উপজেলার পোল্ডার নং ৭২ এর ভাঙনপ্রবণ এলাকায় স্লোপ প্রতিরক্ষা কাজের মাধ্যমে পুনর্বাসন প্রকল্প’ অনুমোদন দেওয়া হয়।

    পরে টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ২০১৮ সালের নভেম্বরে কাজ শুরু হয় বলে জানান পাউবোর কর্মকর্তারা। প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন সাইজের প্রায় ৮ লাখ ৪৪ হাজার সিসি ব্লক এবং প্রায় ৮ লাখ ৯০ হাজার ঘনমিটার মাটি ভরাটের কাজ রয়েছে।

    প্রকল্পের বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, প্রকল্পের ঠিকাদাররা প্রভাবশালী। দ্বীপ উপজেলা হওয়ায় চট্টগ্রাম নগরী কিংবা ঢাকা থেকে এসে পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলীরা প্রকল্পের কাজ তদারকি করতে পারেন না। সে সুযোগে বাঁধ পুনর্বাসনের নামে নিম্নমানের কাজ হচ্ছে। স্থানীয়ভাবে যারা তদারকি করেন তাদেরকে ম্যানেজ করে ঠিকাদাররা নিম্নমানের কাজ করছেন।

    প্রকল্পের তদারককারী কর্মকর্তা পাউবোর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ফজলুল হক বলেন, ২০১৭ সালের অক্টোবর মাসে মন্ত্রণালয় থেকে প্রকল্পের অনুমোদন পাওয়া গেছে। ২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে কাজ শুরু হয়েছে। বর্তমানে প্রকল্পে ৪০ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে।

    তিনি বলেন, প্রকল্পের আওতায় ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ মেরামত করা হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে সংলগ্ন এলাকার ঘূর্ণিঝড়, অতি জোয়ার ও জলাবদ্ধতা থেকে মুক্ত হবে উপজেলার কমপক্ষে চারটি ইউনিয়ন। এতে ওখানকার লক্ষাধিক মানুষের আর্তসামাজিক উন্নয়ন হবে।

    কাজের মান ও নির্ধারিত সময়ে প্রকল্প শেষ হবে কিনা জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী (চট্টগ্রাম ডিভিশন-২) খ ম জুলফিকার তারেক বলেন, নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ করা সম্ভব হবে। প্রকল্পের কাজের মান নিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে কোনো অভিযোগ নেই।

    তবে, সন্দ্বীপ উপজেলা চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান বলেন, পুনর্বাসন প্রকল্পের কাজের মান নিয়ে মানুষের মধ্যে অসন্তোষ রয়েছে। তবে কেউ মুখ খুলছে না।

  • বই প্রেমী জিহাদ বাবুর ১০ টাকার বই!

    বই প্রেমী জিহাদ বাবুর ১০ টাকার বই!

    বই মানুষকে আন্ধকার থেকে আলোর দিশারি করে, আলোকিত মানুষ গড়তে প্রধান চালিকাশক্তি হিসেবে ভূমিকা রাখে। সে উপলব্ধি থেকে নাম মাত্র মূল্যে চট্টগ্রামে দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপে এ ব্যতিক্রমি কার্যক্রম হাতে নিয়েছেন উপজেলা ছাত্রলীগের শিক্ষা ও পাঠ চক্রবিষয়ক সম্পাদক জিহাদ বাবু।

    পড়িলে বই আলোকিত হই, না পড়িলে বই অন্ধকারে রই । সৃজনশীল বই শুদ্ধ মননের আয়না। নতুন প্রজন্মকে বইমুখী করা গেলে চিন্তাশীল সমাজ সৃষ্টি করা যাবে। নতুন প্রজন্মকে বাঙালি জাতিসত্তার প্রকৃত ইতিহাস জানাতে হবে।

    এ জন্য বই পড়ার বিকল্প নেই। তারা যেন বিপথগামী না হয়, সেদিকে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। তরুণ প্রজন্ম বইবিমুখ। এখন আর তরুন প্রজন্ম বই পড়ে না। তাদের মস্তিষ্ক কম্পিউটার ভাইরাসে সীমাবদ্ধ। তাদের কল্পনাশক্তি হ্রাস পেয়েছে। তথ্য প্রযুক্তির অবাধ বিচরণে বই থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে শুরু করেছে স্কুল কলেজ পড়ুয়া ছাত্ররা।

    তারুণ্যের অবক্ষয় আর প্রজন্মের বই পড়ার অনীহা থেকে মুক্তি দেয়ার জন্য একটি ভিন্নভাবে বই পড়ার প্রতি ভালবাসা সৃষ্টি করে ১০ টাকার বিনিময়ে একটি বই ভাড়া কার্যক্রম শুরু করেছেন সন্দ্বীপ উপজেলা ছাত্রলীগের শিক্ষা ও পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক জিহাদ বাবু।

    ১০ টাকার বিনিময়ে একটি বই একটি প্রজেক্টের নাম। মূলত বই পড়ার উৎসাহ জাগাতে এই প্রজেক্ট। এই প্রজেক্টের সদস্য হয়ে যেকেউ প্রতি সপ্তাহে নিতে পারেন একটি বই,পুনরায় এক সপ্তাহ পর সেই বই ফেরত দিয়ে আবার দশ টাকার দিয়ে আরো একটি একটি বই নিতে পারেন। দশ টাকা দিয়ে হবে একটি ফান্ড, সেই ফান্ডের টাকায় কেনা হবে আরো নতুন বই।

    এ কার্যক্রম সম্পর্কে জিহাদ বাবু বলেন, নিজে পড়া শেষ হলে আরেকজনকে পড়তে দেওয়ার উদ্দেশ্যেই বই ভাড়া দেওয়ার চিন্তা মাথায় আসে।

    স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরাই হবে পাঠক। কেননা এখন আর তারা আগের মত বই পড়তে চাই না। আমার কাছে থাকে ৪০-৪৫ টি বই দিয়ে কার্যক্রম শুরু করেছি ,ধীরে ধীরে বিভিন্ন মাধ্যম থেকে বই সংগ্রহ করে এই কার্যক্রম কে আরও বড় করার ইচ্ছে আছে। আমার নির্দিষ্ট কোন স্থান নেই ভ্রাম্যমান হিসেবে সবাইকে বই পৌঁছে দিই। ব্যাপক সাড়াও পাচ্ছি।

    জাবেদ হোসেন নামে এক পাঠক বলেন , মাত্র ১০ টাকার বিনিময়ে হুমায়ুন আজাদের নারী বইটি পড়ার সুযোগ হয়েছে। বইয়ের মূল্য ২৫০ টাকা, যা হয়তো কিনে পড়া হতো না। বইটি পড়ে আবার অন্য একটি বই নিয়ে যাব। এভাবেই প্রতি সপ্তাহে বই নেয়ার ইচ্ছে আছে।

    উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক সামি উদ দ্দৌলা সীমান্ত বলেন, সন্দ্বীপ উপজেলা ছাত্রলীগের প্রগতিশীল ও মেধাবী ছাত্র নেতাদের মধ্যে অন্যতম একজন হচ্ছে জিহাদ বাবু। শিক্ষা বিষয়ক তার এই উদ্যোগ ছোট আকারে হলে তার ভাবনা পুরো সন্দ্বীপে এই উদ্যোগ ছড়িয়ে দিবে। আর তার জন্য প্রয়োজন কিছু সহযোগিতা, তাই সবার কাছে অনুরোধ থাকবে যাদের সম্ভব বই দিয়ে হোক অথবা অন্যন্যা সহযোগিতা দিয়ে হোক এই সুন্দর ও সৃজনশীল এই উদ্যোগের পাশে থাকবেন।

    উত্তর সন্দ্বীপ কলেজ অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান বলেন, এভাবে পাঠাভ্যাস আর কে বা গড়ে তুলতে পারে? স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও তরুণেরা সামান্য টাকার বিনিময়ে বই পড়তে পারছেন। আশা করি তরুণদের পাঠাভ্যাস আরও বেড়ে যাবে।

  • সন্দ্বীপ ও সীতাকুণ্ডের মানুষের সুবিধার্থে ঢাকাগামী আন্ত:নগর দুটি ট্রেন দাঁড়াবে কুমিরাতে

    সন্দ্বীপ ও সীতাকুণ্ডের মানুষের সুবিধার্থে ঢাকাগামী আন্ত:নগর দুটি ট্রেন দাঁড়াবে কুমিরাতে

    সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি : সন্দ্বীপ ও সীতাকুণ্ডের মানুষের সুবিধাত্বে উপজেলার কুমিরা রেলওয়ে স্টেশনে আজ শুক্রবার (১০ জানুয়ারী) থেকে ঢাকাগামী আন্ত:নগর দুটি ট্রেন দুই মিনিটের জন্য দাঁড়াবে।

    সীতাকুণ্ড ও সন্দ্বীপের মানুষ কুমিরা রেলস্টেশন থেকে ট্রেনে চেপে ঢাকায় যেতে পারবেন।

    সীতাকুণ্ডবাসী দীর্ঘদিন ধরে আন্ত:নগর ট্রেন স্টেশন করার দাবী জানিয়ে আসছিলেন। যে দুটি ট্রেন কুমিরা স্টেশনে দাঁড়াবে, সেগুলো হলো চট্টলা এক্সপ্রেস ও মহানগর এক্সপ্রেস।

    কুমিরা রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার সাইফুদ্দিন বশর বলেন, রেলওয়ে প্রধান কার্যালয় থেকে পাওয়া নির্দেশনা অনুযায়ী চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা চট্টলা এক্সপ্রেস ট্রেনটি সকাল ৮টা ৫৮ মিনিটে কুমিরা স্টেশনে পৌঁছাবে। ২ মিনিট স্টেশনে যাত্রীদের জন্য অপেক্ষার পর ৯টায় ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। বেলা ৩টা ৫০ মিনিটে ঢাকায় পৌঁছাবে ট্রেনটি। কুমিরা স্টেশনে শুধু সুলভ আসনের টিকিট কাটা যাবে। এর দাম হবে ১৭৫ টাকা। দুপুর সাড়ে ১২টায় চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে ছেড়ে আসবে মহানগর এক্সপ্রেস। ট্রেনটি কুমিরা স্টেশনে পৌঁছাবে দুপুর ১২টা ৫৬ মিনিটে। ২ মিনিট অপেক্ষার পর ১২টা ৫৮ মিনিটে কুমিরা স্টেশন ছেড়ে যাবে। সন্ধ্যা ৭টা ১০ মিনিটে ঢাকায় পৌঁছাবে। কুমিরা স্টেশনে ৩৪৫ টাকায়ে শোভন চেয়ারের টিকিট কেনা যাবে।

    মাস্টার সাইফুদ্দিন বশর বলেন, সীতাকুণ্ডের স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি সন্দ্বীপের যাত্রী ও আন্তর্জাতিক ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় এবং শিল্পকারখানার কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিকদের কথা বিবেচনা করে কুমিরায় আন্তনগর ট্রেন স্টেশন স্থাপন করেছে কর্তৃপক্ষ। এতো দিন সীতাকুণ্ড ও সন্দ্বীপ দুটি উপজেলার মানুষ সাত লাখের বেশি মানুষকে ট্রেনে চলাচল করতে হতো ৩৮ কিলোমিটার দূরে চট্টগ্রাম স্টেশনে। বর্তমানে কুমিরা থেকে ঢাকা যেতে পারবে এমন সুবিধা পেয়ে খুবি আনন্দিত সীতাকুণ্ড ও সন্দ্বীপের মানুষ।

  • আজ সন্দ্বীপ উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন

    আজ সন্দ্বীপ উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন

    সন্দ্বীপ (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি : দীর্ঘ ৮ বছর পর সন্দ্বীপ উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে আজ ৩০ নভেম্বর। এই উপলক্ষে প্রার্থী, নেতা কর্মী ও কাউন্সিলরদের মাঝে উৎসব মুখর পরিবেশ বিরাজ করছে।

    কাউন্সিলকে ঘিরে পদ প্রত্যাশীরা ইতিমধ্যে তাদের প্রচারণা শেষ করেছেন, আবার কেউ কেউ উপর মহলের আশির্বাদে পদ পাওয়ার জন্য লবিং করে যাচ্ছে। সেই ক্ষেত্রে বর্তমান সাংসদের অনুসারী প্রার্থীদের সংখ্যায় বেশি বলে কাউন্সিলরদের আশংকা প্রকাশ করছেন শেষ পর্যন্ত সব নিয়ম মাফিক শেষ হবে কিনা।

    সম্মেলনে ভোটাভুটির মাধ্যমে নাকি সমঝোতায় নতুন নেতৃত্ব আসছে তা নিয়েও আলোচনার কমতি নেই। তবে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ কমিটির গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি পদে নতুন মুখ আসতে পারে বলে দলের কেন্দ্র ও জেলা হাইকমান্ড সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে। উৎসবের পাশাপাশি সম্মেলন অনুষ্ঠানে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে ঘিরে কোনো অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটে কি না—এ নিয়ে আতঙ্কে আছেন কেউ কেউ।

    দেশের বৃহৎ এ সংগঠনের উপজেলা কমিটির সভাপতি পদে দুই জন সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশীরা সংখ্যা এক ডজনেরও বেশি। পদ প্রত্যাশীদের অনুসারী ও শুভাকাঙ্খিরা পছন্দের প্রার্থীকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার-প্রচারণায় সরব রয়েছেন।

    উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সভাপতি পদে বর্তমান সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান মাস্টার শাহজাহান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলামকে নিয়ে তৃনমূলের নেতাকর্মীদের আগ্রহ চোখে পড়ার মতো।

    সাধারণ সম্পাদক পদ পাওয়ার জন্য যারা লড়ছেন তাদের মধ্যে- উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ – সভাপতি হাজী ফোরকান উদ্দীন আহমেদ, ভাইস চেয়ারম্যান মাঈন উদ্দীন মিশন, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মো. আলী খসরু, যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দীন বেদন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাকসুদুর রহমান খাঁন শাহীন, সাংগঠনিক সম্পাদক মশিউর রহমান বেলাল, দপ্তর সম্পাদক আবু তাহের, জেলা যুবলীগের অর্থ সম্পাদক আতিকুর রহমান ফরহাদ পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি অধ্যক্ষ জামিল ফরহাদ লবিং ও প্রচারণা শেষ করেছেন, মুলত এই পদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে দুই থেকে তিনজনের মধ্যে।

    সর্বশেষ কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয় ২০১১ সালে। দীর্ঘ ৮ বছর পর সন্দ্বীপ উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হচ্ছে তাই তৃণমূল নেতাকর্মীদেরও আগ্রহের কমতি নেই। তবে কাউন্সিলে দলীয় আদর্শে বিশ্বাসী ত্যাগী আর নিবেদিতদের স্থান দিতে আহবান জানিয়েছেন তৃণমূল কর্মীরা।

    সভাপতি সাধারণ সম্পাদক পদে একাধিক জনের আগ্রহ থাকায় কাউন্সিলরদের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত করা হতে পারে এমন ধারণা সকলের।

    সম্মেলনে প্রধান অতিথি থাকবেন সাবেক মন্ত্রী, আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন এমপি। বিশেষ অতিথি থাকবেন উত্তর জেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি, সাধারণ সম্পাদক এম এ সালাম ও স্থানীয় সংসদ সদস্য মাহফুজুর রহমান মিতা এমপি।

    উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাস্টার শাহজাহান বলেন, দীর্ঘ দিন উপজেলা আওয়ামী লীগের দায়িত্ব পালন করে আসছি। দলের যেকোন দুঃসময়ে ছিলাম এবং আমৃত্যু থাকবো। যদি তৃনমূলের নেতাকর্মীরা মনে করে আমি থাকলে উপজেলা আওয়ামী লীগের জন্য মঙ্গলজনক হবে তাহলে আমি বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার জন্য কাজ করার বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

    সভাপতি পদ প্রত্যাশী সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন ৭৫ পরবর্তী দলের দুঃসময়ে হাল ধরেছিলাম। দলের যেকোন আন্দোলন সংগ্রামে ওতপ্রোত জড়িত ছিলাম। আশা করি দলের নীতিনির্ধাকরা এবং তৃণমূলের নেতাকর্মীরা আমাকে সভাপতি পদে নির্বাচিত করবেন।

    এমপি মন্ত্রীদের উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হওয়ার বিষয়ে বিধি নিষেধ থাকায় সন্দ্বীপের সংসদ সদস্য মাহফুজুর রহমান মিতা সভাপতি পদে আগ্রহী নয় বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘোষণা দিয়েছেন।

    এমপি মিতা আরো বলেন, বর্তমান উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাস্টার শাহজাহান এর নেতৃত্বে উপজেলা আওয়ামী লীগ এখনো পর্যন্ত ঐক্যবদ্ধ আছে। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের বটবৃক্ষ। পুনরায় তিনি সভাপতি হলে উপজেলা আওয়ামী লীগ শক্তিশালী হবে বলে নেতৃস্থানীয়রা মনে করছেন। তাই আমি মনে প্রাণে চাইব মাস্টার শাহজাহান আবারও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হোক। কারণ তিনি আমার পিতার মতো। আগামী দিনে আমরা বাবা ছেলে মিলে উপজেলা আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত করতে কাঁধে কাঁধ রেখে কাজ করে যাব।

  • সন্দ্বীপে আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থীর বাড়িতে সন্ত্রাসী হামলা

    সন্দ্বীপে আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থীর বাড়িতে সন্ত্রাসী হামলা

    সন্দ্বীপ উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও আগামী ৩০ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী মাকসুদুর রহমান খান শাহীনের বাড়িতে একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে।

    আজ দুপুরে তার বাড়ি ঘেরাও করে মুহুর্মুহু গুলি ছুঁড়ে এলাকায় আতঙ্ক ছড়ায় সন্ত্রাসীরা

    আজ শাহীন চেয়ারম্যানের বাড়িতে তার মায়ের মেজবানির খাবারের আয়োজন করেছিলেন, উক্ত অনুষ্ঠানে আগত মেহমানদের উনার বাড়িতে আসতেও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে।

    সর্বশেষ তথ্যমতে সন্দ্বীপ থানা থেকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয়।

    এ ব্যাপারে সন্দ্বীপ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে জানতে চাইলে তিনি ব্যস্ত আছেন বলে জানান।

  • সন্দ্বীপে হাত-পা বাঁধা যুবকের লাশ উদ্ধার

    সন্দ্বীপে হাত-পা বাঁধা যুবকের লাশ উদ্ধার

    সন্দ্বীপ (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি: চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার মগধরা ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডে হাত-পা বাঁধা এক যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

    বুধবার দুপুরে উপজেলার মগধরা এলাকা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়েছে।

    ওই যুবকের নাম মো. সৌরভ (২৭)। সে হারামিয়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের আবুধাবি প্রবাসী মোছাদ্দেকুল মাওলার ছেলে। কী কারণে তিনি খুন হয়েছেন, সেটা এখনো জানতে পারেনি পুলিশ।

    সন্দ্বীপ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ শরীফুল আলম বলেন, হাত-পা বাঁধা এক যুবকের লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় লোকজন পুলিশকে খবর দেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। সৌরভের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন আছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে।

    সৌরভের পিতা মো. মোছাদ্দেক স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, বছরখানেক আগে তাঁর ছেলে প্রবাস থেকে দেশে আসেন। সৌরভ মঙ্গলবার রাত দশটার পরেও ঘরে না ফেরায় তার মা তার মোবাইলে ফোন করে। তখন অপরিচিত কেউ ফোন রিসিভ করে কেটে দেয়। এরপর থেকে তাকে আর ফোনে পাওয়া যায়নি। পরদিন সৌরভের বাড়ির পাশের অন্য আরেকটি বাড়ির পাশের পুকুর পাড়ের বাগানে একটি গাছের সাথে বাধা অবস্থায় তার লাশ দেখতে পায়।লাশের শরীরের মুখ, চোখ, মাথা পেটে আঘাতের ফুলা চিহ্ন দেখাযায়। পা থেকে রক্ত পড়তে দেখাযায়। লাশের পড়নের লুঙ্গি ছিড়ে হাত ও পা বেধে তাকে আঘাত করে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা করবেন বলে জানান তিনি।

  • বুলবুল মোকাবেলায় সন্দ্বীপে ব্যাপক প্রস্তুতি

    বুলবুল মোকাবেলায় সন্দ্বীপে ব্যাপক প্রস্তুতি

    চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলা প্রশাসন ঘূর্ণিঝড় বুলবুল মোকাবেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।

    ইতিমধ্যে ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

    উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৯ নম্বর মহবিপদ সংকেত এবং অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫ থেকে ৭ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

    শনিবার (৯ নভেম্বর) জরুরি প্রস্তুতিমূলক সভা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিদর্শী সম্বৌধি চাকমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।

    এ সময় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সরকারি বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তা, গণমাধ্যম কর্মী ছাড়াও সিপিবির কর্মকর্তা ও বিভিন্ন ইউনিটের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

    উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিদর্শী সন্বোধী চাকমা বলেন,সন্দ্বীপে ১১০টি সাইক্লোন শেল্টার মানুষের অবস্থানের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। ইতিমধ্যে, পাঁচ হাজার লোক শেল্টারে অবস্থান নিয়েছেন। এবং শুকনো খাবারসহ বিভিন্ন উপকরণ স্টকসহ একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে ও রাতে খাওয়ার পর বেশির ভাগ লোক শেল্টারে ফিরবেন বলে মনে করি।

    দুর্যোগপূর্ণ আবহওয়ার কারণে সন্দ্বীপের সঙ্গে বাহিরের সকল প্রকার নৌ-যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। ৯৫টি ভলন্টিয়ার টিম, ইউনিয়নভিত্তিক স্কাউট দল, নয়টি মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

    যেকোনো জরুরি প্রয়োজনে উপজেলা প্রশাসনের কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। ইতোমধ্যে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে লোকজনকে সরিয়ে আনার জন্য ব্যাপক মাইকিং করা হয়েছে।

    ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের সম্ভাব্য ক্ষতি মোকাবেলায় ও ক্ষয়-ক্ষতি কমিয়ে আনতে চট্টগ্রাম জেলার উপকূলীয় এলাকা সন্দ্বীপ উপজেলায় স্বেচ্ছাসেবকদের উদ্যোগে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে প্রচারণা শুরু করেছে।

    সিপিপি’র কর্মীদের সাথে বৈঠক করেছেন পৌর মেয়র জাফর উল্যাহ টিটু

    শনিবার সকাল থেকে হরিশপুর ২নং ইউনিট সিপিপির স্বেচ্ছাসেবক সহ সকল ইউনিট একযোগে প্রচার প্রচারনা শুরু করেন। পুরুষের পাশাপাশি নারী স্বেচ্ছাসেবকরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করছে। রাস্তা,বেড়িবাঁধে মানুষকে সচেতন করছে। এছাড়াও পরিত্যাক্ত সাইক্লোন সেল্টারকে অবস্থানের উপযোগী করা হয়েছে।

    পৌর মেয়র জাফর উল্যা টিটু সিপিপি হরিশপুর ২নং ইউনিটের সাথে বৈঠক করে তাদেরকে সর্বসাধারণের পাশে থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন।ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় পৌরসভা কর্তৃপক্ষ সর্বাত্মক সহযোগীতা করবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন।

    পৌর-আওয়ামী সভাপতি মোক্তাদের মাওলা সেলিম, কমিশনার শাহাদাৎ বিল্লাহ খাঁন মহসিন ও ইউনিয়ন টিম লিডার মো. দুলাল জনগণকে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে প্রচারণা চালিয়েছেন।

    সন্দ্বীপ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোক্তাদের মাওলা সেলিম জানান পৌর এলাকায় সিপিপির স্বেচ্ছাসেবক সহ ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সদস্যদের নিয়ে আমি সর্বোচ্চ প্রচারণা চালিয়েছি। যারা এখনো শেল্টারে ফেরেননি তাদের রাতে গিয়ে আমরা নিয়ে আসবো শেল্টারে।

    ২ নং ইউনিটের টিম লিডার কার্তিক চক্রবর্তী,বাদল রায় স্বাধীন,মিঠু মজুমদার,পলি রানী নাথ,অশ্রু বিশ্বাস,ঝিনুক বিশ্বাস,সীমা ভদ্র, সতি রানী ভদ্র, পাভেল রায়, প্রান্ত চক্রবর্তী ও শুভ দে সাধারণ মানুষকে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে ব্যাপক প্রচারণা চালিয়েছেন।

    বাদল রায় স্বাধীন জানান, সর্বোচ্চ প্রচারণা চালিয়ে আমরা মানুষকে সচেতন করেছি। আশা করি, সন্ধ্যার মধ্যে সবাই সেল্টারে আশ্রয় নেবে। আমাদের প্রচারণায় গর্ভবতী, প্রসূতি নারী ও প্রতিবন্ধী এবং বৃদ্ধদের সবার আগে শেল্টারে নেওয়ার আহবান করেছি। আমার সহযোগী সকল স্বেচ্ছাসেবক যেকোনো সময় প্রস্তুত রয়েছে। এবং ঘূর্ণিঝড়ের সংকেত বিপদ সীমা নিচে নামা পর্যন্ত সকলে সক্রিয় থাকবে সেটা প্রত্যাশা করছি।

    সিপিপির পরিচালক নজরুল ইসলাম জানান, সন্দ্বীপের ১৫টি ইউনিয়নের ১৪৬ ইউনিটের ৭৩০ নারী ভলান্টিয়ার ১৪৬০ পুরুষ ভলান্টিয়ারসহ মোট ২১৯০ জন ভলান্টিয়ার দুর্যোগের প্রস্তুতি মুলক প্রচারণায় সক্রিয় রয়েছে।

    মগধারা ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন প্রচারণা চালাচ্ছেন

    মগধরা ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন তার ইউনিয়নের জনগণকে নিরাপদে সরে যেতে ব্যাপক প্রচারণা চালিয়েছেন। তিনি বাড়ীতে বাড়ীতে গিয়ে সাইক্লোন সেন্টারে আশ্রয় নিতে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করেছেন।

    এদিকে সংসদ সদস্য মাহফুজুর রহমান মিতা দুর্যোগ আবহাওয়াকে উপেক্ষা করে সন্দ্বীপবাসীর পাশে দাঁড়াতে নিজের সংসদীয় এলাকায় ফিরে এসে উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সকল দপ্তরের অফিসারদের নিয়ে জরুরি সভায় অংশগ্রহণ করে দুর্যোগ মোকাবেলার সর্বশেষ আপডেট জেনে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দিয়েছেন।

    আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫ থেকে ৭ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।