Tag: সরকার

  • আমার জীবনের একমাত্র লক্ষ্য মানুষের মুখে হাসি ফোটানো:প্রধানমন্ত্রী

    আমার জীবনের একমাত্র লক্ষ্য মানুষের মুখে হাসি ফোটানো:প্রধানমন্ত্রী

    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর সরকারের দুর্নীতি বিরোধী অভিযান অব্যাহত রাখার দৃঢ় প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করে সাধারণ মানুষের ‘হক’ নিশ্চিত করার জন্য দুদকের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রতি আহ্বান থাকবে, যে-ই অবৈধ সম্পদ অর্জনের সঙ্গে জড়িত থাকুক, তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসুন। সাধারণ মানুষের হক যাতে কেউ কেড়ে নিতে না পারে তা নিশ্চিত করতে হবে।’

    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে আজ সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে একথা বলেন।

    তিনি বলেন, ‘দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে চলমান অভিযান অব্যাহত থাকবে। আমি আবারও সবাইকে সতর্ক করে দিতে চাই – দুর্নীতিবাজ যে-ই হোক, যত শক্তিশালীই হোক না কেন – তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।’

    তিনি বলেন, ‘আমি সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করি। মানুষের কল্যাণের জন্য আমি যে কোন পদক্ষেপ করতে দ্বিধা করবো না।’

    ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ভূমিধস বিজয় অর্জন করলে শেখ হাসিনা ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি একটানা তৃতীয় মেয়াদ এবং চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন।

    প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতি বন্ধে জনগণের অংশগ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, ‘মানুষ সচেতন হলে দুর্নীতি আপনা আপনি কমে যাবে।’ ‘তাই আমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে জনসচেতনতা সৃষ্টির উদ্যোগ গ্রহণ করছি। তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির সম্প্রসারণের মাধ্যমে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুর্নীতি নির্মুল করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে,’যোগ করেন তিনি।

    শেখ হাসিনা বলেন, ‘জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। পবিত্র ইসলাম ধর্মের অপব্যাখ্যা করে কেউ যাতে তরুণদের বিপথে পরিচালিত করতে না পারে।’

    তিনি বলেন, একটি শান্তিপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠাই তাঁর সরকারের লক্ষ্য যেখানে হিংসা-বিদ্বেষ হানাহানি থাকবে না। সকল ধর্ম-বর্ণ এবং সম্প্রদায়ের মানুষ শান্তিতে বসবাস করতে পারবেন।’

    ইসলামের অপব্যাখ্যা রোধকল্পে সারাদেশে ইমামসহ ধর্মীয় নেতাদের প্রশিক্ষণ এবং সারাদেশে ৬৫০টি মসজিদ-কাম-ইসলামিক সেন্টার নির্মাণে তাঁর সরকারের পদক্ষেপেরও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

    তাঁর রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ দেশের প্রচলিত আইন এবং সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি জনগণের রায়ই হচ্ছে ক্ষমতার পালাবদলের একমাত্র উপায়। যে কোন শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে আমরা স্বাগত জানাই। তবে, অযৌক্তিক দাবিতে ধ্বংসাত্মক কর্মকা-কে আমরা বরদাশত করবো না।’

    তিনি দেশবাসীকে স্মরণ করিয়ে দেন যে, আপনারা অতীতে আন্দোলনের নামে বিএনপি-জামাতের অগ্নি-সন্ত্রাস এবং মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করা দেখেছেন। বাংলাদেশের মাটিতে এ ধরনের ধ্বংসাত্মক কর্মকা-ের পুনরাবৃত্তি আর হতে দেওয়া হবে না।’

    তাঁর সরকার বর্তমান জাতীয় সংসদকে কার্যকর করতে সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার এবং বিরোধীদলের সংসদ সদস্যগণের অংশগ্রহণ সংসদকে প্রাণবন্ত করেছে।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, একাদশ সংসদ নির্বাচনের পর সরকার গঠনের এক বছর পূর্ণ হল। বিগত এক বছর আমরা চেষ্টা করেছি আপনাদের সর্বোচ্চ সেবা দিতে।

    তিনি বলেন, আমরা সবক্ষেত্রে শতভাগ সফল হয়েছি তা দাবি করবো না। কিন্তু এটুকু জোর দিয়ে বলতে পারি, আমাদের চেষ্টার ত্রুটি ছিল না।

    প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘অতীতের ভুল-ভ্রান্তি এবং অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাব। আমাদের সামনে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ আসবে। সকলের সহযোগিতায় আমরা সেসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করবো, ইনশাআল্লাহ’।

    তিনি বিগত এক বছরে গুটিকয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সৃষ্ট অনাকাঙ্খিত ঘটনা প্রতিরোধে তাঁর সরকারের পদক্ষেপ এবং সরকারের উদ্যোগ থাকার পরেও ডেঙ্গুরোগে প্রাণহানিতে দু:খ প্রকাশ করে এ রোগ প্রতিরোধে আগাম ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের প্রতি নির্দেশ প্রদান করেন।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত বছর দু’একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটেছে। আমি দৃঢ়ভাবে বলতে চাই, আমরা এসব কর্মকা-ের সঙ্গে জড়িতদের প্রশ্রয় দেইনি। জড়িতদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিকভাবে প্রশাসনিক এবং আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

    তিনি বলেন, কোন কোন মহল গুজব ছড়িয়ে অরাজকতা সৃষ্টির মাধ্যমে ফায়দা লোটার চেষ্টা করেছে। আমরা জনগণের সহায়তায় দ্রুত সেসব অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নিয়েছি।
    গুজবের বিষয়ে সর্বদা সতর্ক থাকার জন্যও এ সময় দেশবাসীর প্রতি তিনি আহবান জানান।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এডিস-মশা-বাহিত ডেঙ্গু জ্বর গত বছর সারাদেশে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া সত্ত্বেও এডিস-মশা-বাহিত ডেঙ্গু জ্বরে বেশ কিছু মূল্যবান প্রাণহানি ঘটেছে।’

    আমি শোকসন্তপ্ত পরিবারগুলোর প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। এডিস-মশার বিস্তার রোধে আগে থেকেই সর্বাত্মক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমি সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশ দিচ্ছি, ’বলেন তিনি।

    ২০২০ সাল এবং পরবর্তী বছর বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে জাতীয়ভাবে এ সময়ে ‘মুজিব বর্ষ’ এবং ‘স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী’ উদযাপনের প্রসংগ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই উদযাপন শুধু আনুষ্ঠানিকতা-সর্বস্ব নয়, এই উদযাপনের লক্ষ্য জাতির জীবনে নতুন জীবনীশক্তি সঞ্চারিত করা। জাতিকে নতুন মন্ত্রে দীক্ষিত করে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বাস্তবায়নের পথে আরও একধাপ এগিয়ে যাওয়া।’

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অর্থনৈতিক অগ্রগতির সূচকে বিশ্বের শীর্ষ ৫টি দেশের একটি এখন বাংলাদেশ। আইএমএফ-এর হিসেব অনুযায়ী পিপিপি’র ভিত্তিতে বাংলাদেশের অর্থনীতির অবস্থান ৩০তম। প্রাইস ওয়াটার হাউস কুপারস-এর প্রক্ষেপণ অনুযায়ী ২০৪০ সাল নাগাদ বাংলাদেশের অর্থনীতি বিশ্বে ২৩তম স্থান দখল করবে।’ ‘এইচ.বি.এস.সি’র প্রক্ষেপণ অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের ২৬তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হবে। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম বলছে ২০২০-এ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ভারতসহ এশিয়ার দেশগুলো থেকে এগিয়ে থাকবে।’ এ প্রসংগে তিনি মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ, পাবনার রূপপুরে ২৪০০ মেগাওয়াট পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ, ভারতের সঙ্গে স্থল সীমানা চুক্তি বাস্তবায়নের মাধ্যমে ছিটমহল সমস্যার সমাধান এবং মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমানার বিরোধ মীমাংসার ফলে বঙ্গোপসাগরের বিশাল জলরাশির উপর আমাদের স্বার্বভৌম অধিকার প্রতিষ্ঠায় তাঁর সরকারের সাফল্য তুলে ধরেন।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট ঘাত-প্রতিঘাত মোকাবিলা করে কাক্সিক্ষত উন্নয়ন অর্জনের জন্য আমরা ‘বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০’ নামে শতবর্ষের একটি পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছি। সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার সঙ্গে এসডিজির লক্ষ্যমাত্রাগুলো সম্পৃক্ত করে তা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা প্রণয়নের কাজও শুরু হয়েছে।’

    শেখ হাসিনা বলেন, ‘কৃষক ও কৃষি-বান্ধব নীতি গ্রহণের ফলে দেশ দ্রুত খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ম্ভরতা অর্জন করে। পাশাপাশি আমরা বিভিন্ন খাতে স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘ-মেয়াদী নীতিমালা গ্রহণ করি যার সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়েছে অর্থনীতিতে।’ বাংলাদেশ আজ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিশ্বে একটি সুপরিচিত নাম হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘দারিদ্র্য বিমোচন, নারীর ক্ষমতায়ন, শিশু ও মাতৃমৃত্যু হার হ্রাস, লিঙ্গ বৈষম্য দূরীকরণ, শিক্ষার হার ও গড় আয়ু বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশ তার দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিবেশিদেরই শুধু নয়, অনেক উন্নত দেশকেও ছাড়িয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে।’

    সরকার প্রধান দেশবাসীর উদ্দেশ্যে বলেন,‘আপনাদের জন্য কী করতে চেয়েছিলাম আর কী করতে পেরেছি এ বিষয়ে আমরা সব সময়ই সচেতন। আপনারাও নিশ্চয়ই তা মূল্যায়ন করবেন। ‘তবে আমরা মুখরোচক প্রতিশ্রুতিতে বিশ্বাসী নই। আমরা তা-ই বলি, যা আমাদের বাস্তবায়নের সামর্থ রয়েছে।’

    দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করার জন্য ২০০৮ সালের নির্বাচনের পূর্বে আওয়ামী লীগ ঘোষিত ‘রুপকল্প-২০২১’র উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের হিসেব মতে ২০১০ সালে দারিদ্র্য সীমার নীচে বসবাসরত কর্মজীবী মানুষের সংখ্যা ছিল ৭৩ দশমিক ৫ শতাংশ। ২০১৮ সালে তা ১০ দশমিক ৪ শতাংশে হ্রাস পেয়েছে। ২০১৮ সালে জাতিসংঘ বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে স্থান দিয়েছে।’

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির বিকাশের প্রমাণ মেলে তার বার্ষিক আর্থিক পরিকল্পনায়। ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাজেটের আকার সাড়ে আট গুণেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকায়। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ২ হাজার ৭২১ কোটি টাকায়। বাজেটের নব্বই ভাগই এখন বাস্তবায়ন হয় নিজস্ব অর্থায়নে।

    গত অর্থবছরে ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি এবং মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশের নীচে রাখায় তাঁর সরকারের সাফল্যের প্রসংগে তিনি বলেন,‘বছছেরর শেষ দিকে আমদানি-নির্ভর পিঁয়াজের দাম বৃদ্ধি ব্যতীত অন্যান্য নিত্য-প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম স্বাভাবিক ছিল।’ নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ এবং তিন ভাগের দুই ভাগ কাজ সম্পন্ন করা, রাজধানীর যানজট নিরসনে মেট্রোরেল নির্মাণের পদক্ষেপ, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ উদ্যোগ এবং চট্টগ্রামে কর্ণফুলি নদীর তলদেশ দিয়ে দেশের প্রথম টানেল নির্মাণেও তাঁর সরকারের পদক্ষেপ তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

    যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে সড়ক পথ, রেলপথ, নৌ পথ সহ বিমান বহরে নতুন নতুন বিমান সংযোজন এবং দেশের বিমানবন্দরগুলো আধুনিকায়নের মাধ্যমে আকাশপথেও যোগাযোগ বিস্তৃত করায় বিভিন্ন পদক্ষেপের উল্লেখ করেন তিনি।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের প্রতিটি গ্রামে শহরের সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ৯৫ শতাংশ মানুষের ঘরে বিদ্যুৎ সুবিধা পৌঁছে গেছে। ৯৭ ভাগ মানুষ উন্নত স্যানিটেশন সুবিধার আওতায় এসেছেন।’

    শেখ হাসিনা বলেন, খাদ্যশস্য, মাছ এবং মাংস উৎপাদনে আমরা স্বয়ং-সম্পূর্ণতা অর্জন করেছি। চাল উৎপাদনে বিশ্বে বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থান ৪র্থ এবং মাছ ও সবজি উৎপাদনে তৃতীয়।
    তিনি বলেন,কৃষি উপকরণের দাম কয়েক দফা হ্রাস করা হয়েছে। সর্বশেষ গতমাসে ডাই-অ্যামোনিয়াম ফসফেট বা ডিএপি সারের দাম কেজি প্রতি ৯ টাকা কমিয়ে কৃষক পর্যায়ে ১৬ টাকা করা হয়েছে। ভর্তুকি মূল্যে কৃষকদের মধ্যে কৃষি উপকরণ ও যন্ত্রপাতি বিতরণ করা হচ্ছে।

    তিনি বলেন,প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যায় পর্যন্ত প্রতি বছর ২ কোটি ৩ লাখেরও বেশি শিক্ষার্থীকে বৃত্তি, উপ-বৃত্তি প্রদান করা হচ্ছে।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা খাতে ২০০৫-০৬ অর্থবছরে বরাদ্দের পরিমাণ ৩৭৩ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে চলতি অর্থবছরে এই বরাদ্দের পরিমাণ ৭৪ হাজার ৩৬৭ কোটি টাকা করা হয়েছে। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ৫ কোটি ১০ লাখ মানুষ উপকৃত হচ্ছেন। তিনি বলেন,‘দেশের ৩ হাজার ৫শ’র বেশি ইউনিয়নে ব্রডব্যান্ড সংযোগ দেওয়া হয়েছে। আমরা ফোর-জির পর ফাইভ-জি প্রযুক্তি চালুর উদ্যোগ নিয়েছি।’ তরুণ সমাজের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিই তাঁর সরকারের প্রধানলক্ষ্য উল্লেখ করে তিনি বলেন,চলতি মেয়াদে আমরা দেড় কোটি কর্মসংস্থানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি। সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার কাজ এগিয়ে চলেছে। ২ ডজনের বেশি হাইটেক পার্ক এবং আইটি ভিলেজ নির্মাণের কাজ এগিয়ে চলছে। দক্ষ জনশক্তি তৈরির জন্য সরকারি এবং বেসরকারি পর্যায়ে সারাদেশে ভকেশনাল এবং কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হচ্ছে।

    সশস্ত্রবাহিনীর উন্নয়ন এবং সম্প্রসারণে তাঁর সরকারের উদ্যোগ তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আর্মড ফোর্সেস গোল-২০৩০-এর আলোকে প্রতিটি বাহিনীকে শক্তিশালী করে গড়ে তোলার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। তিনি বলেন,‘বহিঃশত্রুর যে কোন আক্রমণ বা আগ্রাসন মোকাবিলায় প্রতিরক্ষা বাহিনীকে সক্ষম করে গড়ে তুলতে যা যা করণীয় আমরা তা করে যাচ্ছি।’

    দেশের পররাষ্ট্রনীতি সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়,’এর উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর ক্ষেত্রে কূটনৈতিক সমাধানের ওপরই পুণরায় গুরুত্বারোপ করেন।

    তিনি বলেন, আলোচনার মাধ্যমে আমরা দ্বিপাক্ষিক সমস্যা সমাধান করতে চাই। এটি আমাদের দুর্বলতা নয়, কৌশল। এ কারণেই মায়ানমারের দিক থেকে নানা উস্কানি সত্ত্বেও আমরা সে ফাঁদে পা দেইনি।

    শেখ হাসিনা বলেন,আলোচনার মাধ্যমে রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানের পথ থেকে সরে যাইনি। রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতে মামলা হয়েছে। আমরা আশা করছি, এই আদালত থেকে আমরা একটি স্থায়ী সমাধান সূত্র খুঁজে পাবো।

    জাতির পিতা মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য আজীবন সংগ্রাম করেছেন উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘তাঁর কন্যা হিসেবে আমার জীবনেরও একমাত্র লক্ষ্য মানুষের মুখে হাসি ফোটানো। আমার উপর ভরসা রাখুন। আমি আপনাদেরই একজন হয়ে থাকতে চাই।’

  • সরকার সশস্ত্র বাহিনীকে একটি আধুনিক-সুদক্ষ বাহিনীতে পরিণত করার লক্ষ্যে কাজ করছে

    সরকার সশস্ত্র বাহিনীকে একটি আধুনিক-সুদক্ষ বাহিনীতে পরিণত করার লক্ষ্যে কাজ করছে

    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার সশস্ত্র বাহিনীকে পরিবর্তিত বিশ্বের সঙ্গে তাল মেলাতে সক্ষম একটি আধুনিক, পেশাদার এবং সুদক্ষ বাহিনীতে পরিণত করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ফোর্সেস গোল-২০৩০’ আলোকে একটি আধুনিক, পেশাদার ও প্রশিক্ষিত সশস্ত্র বাহিনী প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আমরা আধুনিক অস্ত্রসস্ত্র জোগাড় এবং প্রশিক্ষণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।’

    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে মিরপুর সেনানিবাসের শেখ হাসিনা কমপ্লেক্সে ন্যাশনাল ডিফেন্স কোর্স (এনডিসি)-২০১৯ এবং আর্মড ফোর্সেস ওয়ার কোর্স (এএফডব্লিউসি কোর্স)-২০১৯ এর গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা ১৯৭৪ সালে আমাদের সশস্ত্র বাহিনী পরিচালনার যে নীতিমালা করে যান তারই আলোকে আমরা ফোর্সেস গোল ২০৩০ প্রণয়ন করেছি। আমাদের সশস্ত্র বাহিনীকে আরো শক্তিশালী এবং যুগোপযোগী করতে এবং সেটাই সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ।

    পরিবর্তনশীল বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলাটা জরুরি আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, ‘এই পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়েই চলার জন্যই আমরা সশস্ত্র বাহিনীর জন্য নতুন নতুন অস্ত্রসস্ত্র জোগাড় থেকে শুরু করে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা এবং বিভিন্ন জায়গায় নতুন করে সেনানিবাসও গড়ে তুলেছি।’

    শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশের জন্য যখন যেটা প্রয়োজন সে ব্যাপারে আমরা যথেষ্ট সচেতন এবং সেই পদক্ষেপ নিচ্ছি। কারণ, আমরা একটা পেশাদার এবং প্রশিক্ষিত সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তুলতে চাই।’

    তিনি বলেন, বাংলাদেশ থেকে শন্তিরক্ষী মিশনে আমাদের সশস্ত্র বাহিনী যাচ্ছে এবং সেক্ষেত্রেও আমাদের অভিজ্ঞতা সঞ্চয় হচ্ছে। আবার শান্তিরক্ষী মিশনে গিয়ে আধুনিক যুগের সাথে তাল মিলিয়ে যেন আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা চলতে পারে, যুদ্ধ সরঞ্জামের সঙ্গে যেন তাঁদের পরিচিতি থাকে এবং তাঁরা যেন যেকোন ক্ষেত্রে ভূমিকা পালনে কোন ধরনের দ্বিধাগ্রস্ত না হন সেজন্য প্রশিক্ষণ এবং আধুনিক যুদ্ধাস্ত্রের বিষয়ে আমরা সচেতন।’ যতদূর সম্ভব সীমিত সম্পদের মধ্যেও সরকার তাঁর জোগান দিয়ে যাচ্ছে, বলেন তিনি।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি সবসময় এটা মনে করি প্রশিক্ষণ, গবেষণা এবং দেশপ্রেম, মানুষের প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধ এবং মানুষের প্রতি ভালবাসা প্রতিটি মানুষের মাঝেই এ চিন্তাটা থাকা উচিত। দেশ মাতৃকার জন্য যেকোন ত্যাগ স্বীকারেই আপনারা সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা এখানে এসেছেন।’

    এই দেশ আপনাদের এবং আমাদের সকলের-এই চিন্তা থেকেই এদেশকে আমরা আগামীর পথে এগিয়ে নিয়ে যাব, বলেন তিনি।

    তিনি এ সময় প্রশিক্ষণ কোর্সে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন দেশের সদস্যবৃন্দের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘যারা অন্যান্য দেশ থেকে এসেছেন তারা পরবর্তীতে নিজ নিজ দেশের কর্মক্ষেত্রে ফিরে যাবেন। আমি আপনাদেরকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই।’

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারাই হবেন আমাদের গুডউইল অ্যাম্বাসেডর। কারণ, আপনারা একটি বছর এখানে থেকে বাংলাদেশকে চিনেছেন, জেনেছেন, সকলের সঙ্গে মিশেছেন এবং আপনারা দেখেছেন যে, বাংলাদেশের মানুষ সাধারণভাবে খুব আন্তরিক এবং বন্ধুসুলভ। কাজেই, আপনারা আমাদের শুভবার্তা নিয়ে যাবেন নিজ দেশে।’

    তিনি বলেন, আপনারা আপনাদের অভিজ্ঞতা দেশ ও দেশের মানুষের কাজে লাগাবেন। সেটাই আমি কামনা করি এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগণ ‘সিকিউরিটি থ্রু নলেজ’ অর্থাৎ ‘জ্ঞানেই নিরাপত্তা’- ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের এই মূলমন্ত্রে অনুপ্রাণিত হয়ে দেশকে স্থিতিশীল, টেকসই উন্নয়ন, আত্মনির্ভরশীলতা এবং সর্বোপরি গৌরবময় অবস্থানের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন।

    সরকার প্রধান বলেন, সবসময় একটা কথাই মনে রাখবেন-অনেক রক্ত দিয়ে এই স্বাধীনতা অর্জন। কোনক্রমেই আমরা একে ব্যর্থ হতে দিতে পারি না। বাংলাদেশ হবে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ।’

    তিনি কলেজের কমান্ড্যান্ট, সকল ফ্যাকাল্টি সদস্য, রিসোর্স পারসনস ও স্টাফ অফিসারদেরকেও আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
    ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের কমান্ড্যান্ট লেফটেন্যান্ট জেনারেল শেখ মামুন খালেদ অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেন।

    প্রায় ৮৫ জন সশস্ত্র বাহিনী, জনপ্রশাসন এবং বিদেশী সামরিক কর্মকর্তাগণ ‘এনডিসি কোস-২০১৯’ এ এবং সশস্ত্র বাহিনীর ৩৮ জন কর্মকর্তা ‘এএফডব্লিউসি কোর্স-২০১৯’ অংশগ্রহণ করেন।

    ১৬টি দেশের সামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ এতে অংশ নেন। দেশগুলো হচ্ছে- চীন, মিশর, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, সৌদি আরব, কুয়েত, মালয়েশিয়া, নেপাল, নাইজেরিয়া, ওমান, পাকিস্তান, শ্রীলংকা, তানজানিয়া, যুক্তরাজ্য, মালি এবং নাইজার।
    জাতীয় সংসদের স্পিকার, মন্ত্রিপরিষদ সদস্যবৃন্দ, সংসদ সদস্যবৃন্দ, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, তিনবাহিনী প্রধানগণ, মুখ্য সচিব, উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং অধ্যাপকবৃন্দ, বিশিষ্ট নাগরিকবৃন্দ, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত এবং মিলিটারি এ্যাটাচিগণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

    আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে সমাদৃত এই ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ অত্যন্ত সীমিত পরিসরে তাঁর সরকারের হাত ধরে এর যাত্রা শুরু করেছিল বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২১ বছর পর ’৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে ১৯৯৮ সালে মাত্র ১৫ জন নিয়ে এর যাত্রা শুরু মাত্র দুই কোটি টাকা ব্যয়ে।’

    তিনি বলেন, ‘সেটাও আমার অবশ্য চ্যালেঞ্জ ছিল যে, সবকিছু টাকার মাপে হয় না। শুরুটা হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ। একবার শুরু করলে এটি একদিন বিশ্বব্যাপী খ্যাতি অর্জন করবে এবং আজকে সেটাই আমরা দেখতে পাচ্ছি।’

    ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ স্ট্যাটেজিক স্তরে একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে অসামরিক পরিমন্ডলেও যথেষ্ট সমাদৃত উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারি উচ্চপদস্থ অসামরিক কর্মকর্তাগণ এই প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রভূত অবদান রেখে চলেছেন।

    তিনি বলেন, এনডিসি এবং এএফডব্লিউসি কোর্স ছাড়াও এনডিসি কর্তৃক পরিচালিত ‘ক্যাপস্টোন কোর্স’- এর মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালনা ও নীতিনির্ধারক পর্যায়ের ব্যক্তিবর্গ এমনকি দেশের সফল উদ্যোক্তা, ব্যবসায়ী, সম্পাদক, সাংবাদিক, অধ্যাপক, সংসদ সদস্যসহ সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ এবং বিদেশি নাগরিকবৃন্দ বর্তমানে ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের ক্যাপস্টোন কোর্সে অংশগ্রহণ করছেন। ফলে আন্তর্জাতিক পরিপন্ডলে একটি চমৎকার সংহতির পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে।

    ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের উত্তোরত্তর সমৃদ্ধি কামণা করে প্রতিষ্ঠানটির উন্নয়নে তাঁর সরকারের পক্ষ থেকে সম্ভাব্য সবধরণের সহযোগিতারও প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী।

    তিনি বলেন, ‘স্বাভাবিকভাবে এটাতো আমি করবোই, কেননা এটা আমার হাতে গড়া প্রতিষ্ঠান। কাজেই এর প্রতি আমার একটা আলাদা আন্তরিকতা রয়েছে।’ সশস্ত্র বাহিনীকে আমাদের স্বাধীনতা এবং স্বার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রতীক আখ্যায়িত করে শেখ হাসিনা দেশের দুর্যোগকালীন জনগণের পাশে দাঁড়ানোর জন্য এর ভূমিকার ভূয়সী প্রসংসা করেন এবং তা ভবিষ্যতেও এ ধারা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।

    তিনি বলেন, ‘এদেশের জনগণের সেবা করাটা আমাদের সকলেরই দায়িত্ব। এই সাধারণ মানুষের অর্থেইতো আমাদের বেতন-ভাতা সবকিছু। কাজেই তাঁদের জীবনযাত্রাটা সুন্দর করাই আমাদের লক্ষ্য।’

    বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধশালী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য তাঁর সরকার একটি পরিকল্পিত উন্নয়নের পথে দেশকে পরিচালিত করছে উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, ‘একটি দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা নিয়েছি। আশু করণীয় কি- সেটাও আমরা ঠিক করেছি এবং ভবিষ্যতের বাংলাদেশকে কিভাবে গড়ে তুলবো সে পরিকল্পনাও আমরা প্রণয়ন করেছি।’ ভাত-মাছ, শাক-সবজী, ফলমূল, তরিতরকারী উৎপাদন বৃদ্ধি করে দেশকে উদ্বৃত্ত খাদ্যের দেশে পরিণত করায় তাঁর সরকারের সাফল্য তুলে ধরে এজন্য গবেষণায় অধিক গুরুত্ব প্রদান এবং কৃষি উপকরণকে সহজলভ্য এবং বিনামূল্যে অথবা স্বল্পমূল্যে কৃষকদের হাতে তুলে দেওয়ায় কথাও উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা । জাতির পিতার গুচ্ছগ্রাম কর্মসূচির আলোকে তাঁর সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ের সফল কর্মসূচি যেমন গৃহহীনকে ঘর প্রদানে ‘আশ্রয়ণ প্রকল্প’সহ দারিদ্র্য বিমোচনে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপেরও উল্লেখ করেন তিনি।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাত্র সাড়ে তিন বছরের শাসনামলে জাতির পিতা একটি যুদ্ধ বিধ্বস্থ দেশ পুণর্গঠনকালেই দেশকে স্বল্পোন্নত দেশের পর্যায়ে রেখে যেতে সমর্থ হন। যেখান থেকে আমরা এখন উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে গ্রাজুয়েশন লাভ করেছি। যা আমাদের ধরে রাখতে হবে আগামী ২০২৪ সাল পর্যন্ত। অবশ্য সেই ক্রাইটেরিয়া ইতোমধ্যেই অর্জিত হওয়ায় আমরা আরো সামনে এগিয়ে যেতে চাচ্ছি।

    প্রধানমন্ত্রী এ সময় তাঁর রাজনৈতিক অঙ্গীকার পুণর্ব্যক্ত করে বলেন, ‘আমরা আমাদের লক্ষ্য স্থির করেছি ২০২০ সালে জাতির পিতার জন্ম শতবার্ষিকী আমরা উদযাপন করবো। ২০২১ সালে স্বাধীনতার জয়ন্তীতে দেশকে মধ্যম আয়ের আয়ের এবং২০৪১ সাল নাগাদ দক্ষিণ এশিয়ার একটি উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলবো।’ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার পাশাপাশি ১০ বছর এবং ২০ বছর মেয়াদি প্রেক্ষিত পরিকল্পনার বাস্তবায়ন এবং আগামীর প্রজন্মকে সুন্দর জীবন দেওয়ার জন্য নেদারল্যান্ড সরকারের সহযোগিতায় শতবর্ষ মেয়াদি ‘ডেল্টা পরিকল্পনা-২১০০’ প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নের উদ্যোগের ও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

    শেখ হাসিনা বলেন, ‘যে দুঃখ ও দারিদ্র্য আমরা দেখেছি ভবিষ্যত প্রজন্মকে তা যেন আর দেখতে না হয় সেজন্য আমরা একটি সুন্দর বাংলাদেশ গড়ে রেখে যেতে চাই এবং উন্নয়নের এই ধারাবাহিকতা যেন অক্ষুণ্ন থাকে সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।’

    পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত এনডিসি ও ডিএসসিএসি এর পরিচালনা পর্ষদের যৌথ সভাতেও যোগদান করেন।

  • গ্রাম্য মোড়লদের মতো আচরণ করছে সরকার : ফখরুল

    গ্রাম্য মোড়লদের মতো আচরণ করছে সরকার : ফখরুল

    বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সম্পর্কে বলেছেন, ওবায়দুল কাদের সাহেবের মানসিক সমস্যা হয়েছে। তারা এখন নিজেকে প্রভু মনে করতে শুরু করেছে। এ রাষ্ট্রের প্রভু তারা। এটাই তাদের সমস্যা হয়ে গেছে এখন। একটা দল কীভাবে চলবে, কীভাবে কাজ করবে- এটাও তারা নিয়ন্ত্রণ করতে চায়।

    আজ মঙ্গলবার সকালে ঠাকুরগাঁও শহরের কালিবাড়িস্থ নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

    বিএনপি এখন থেকে সমাবেশ করতে সরকারের অনুমতি নিবে না- গত সোমবার মির্জা ফখরুলের এমন বক্তব্যের পর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের মন্তব্য করেছিলেন, অনুমতি ছাড়া সভা সমাবেশ করার ক্ষমতা বিএনপির নেই। এর জবাবেই মূলত মির্জা ফখরুল এ কথা বলেন।

    মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সংবিধানে সভা সমাবেশ, প্রতিবাদ করার সমস্ত অধিকার দেয়া আছে। আমরা সভা সমাবেশ করতে সরকারের অনুমতি চাই না। আমরা অবগত করতে চাই। এটা আমরা বরাবরই করে আসছি। কিন্তু সরকার একবারে গ্রাম্য মোড়লদের মতো আচরণ করছে। সমাবেশের অনুমতি দেয় না। আবার দুই ঘণ্টা আগে অনুমতি দেয়। ১৯৭২ সালে ক্ষমতায় গিয়ে বাকশাল কায়েম করে তারা প্রভু হয়ে গিয়েছি। এখন তো দশ বছর ধরে প্রভুত্ব করছেন। এবার পাকাপোক্ত প্রভু হিসাবে বসতে চান।’

    তিনি আরো বলেন, সরকার ক্ষমতা দখল করার পর অনভিজ্ঞ ও অদক্ষ লোকদের দ্বায়িত্ব দিয়েছে। একটি অস্থিতিশীল দেশ পরিচালনা করার জন্য যে কৌশল, প্রজ্ঞা থাকা দরকার তা মন্ত্রীদের নেই। কিছু কিছু মন্ত্রীরা ভেবে চিন্তে কথা বলেন না। এখানে একদলীয় নিয়ম একদলীয় শাসন চলছে, এখানে প্রধানমন্ত্রী যা বলবেন তাই হবে। এখানে সুশাসনের অভাব, গণতান্ত্রিক চিন্তাভাবনা তাদের মধ্যে নেই। লক্ষ্য যেহেতু একদলীয় সরকার, যেখানে সুশাসন প্রধান নয়। ১৬ কোটি মানুষের একটি দেশ এভাবে চলতে পারে না।

    মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশ এখন পুরোপুরি একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। কারণ সরকার দ্রব্যমূল্য, আইনশৃঙ্খলা, সুশাসনসহ সব জায়গায় ফেল করে যাচ্ছে। বিচার বিভাগ, নির্বাচন কমিশন, প্রশাসনকে নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে দিতে হয়, তা এখানে অনুপস্থিত। একদলীয় শাসন ব্যবস্থাকে তারা পাকাপোক্ত করতে চায়, সকল ক্ষেত্রে দলীয় লোকজনকে নিয়োগ দিচ্ছে। কোনো ভিন্নমতের লোকদের চাকুরী হয় না। অপর দিকে বিদেশ থেকে বাংলাদেশী শ্রমিকরা ফেরৎ আসছে।

    তিনি বলেন, সরকার দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে এতটাই ব্যর্থ যে, এনবিআর এর চেয়ারম্যানকে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের জন্য বেঠক করতে হয়। সেখানে বসেও তারা বলছে সব ঠিক আছে। কিন্তু কিছুই ঠিক নেই।

    ফখরুল বলেন, সরকার যতই চিৎকার করুক, মুখে কথা বলুক, তারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আসেনি। ফলে তাদের সে দূর্বলতা সব সময় কাজ করে, যে জন্য জায়গাটা নিতে পারছে না। দেশ অগণতান্ত্রিক ও স্বৈরতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় চলছে। সুতরাং সরকারের উচিৎ অবিলম্বে পদত্যাগ করা।

    এ সময় জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমান, সহসভাপতি নূর এ শাহাদাৎ স্বজনসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

  • টেনিসকে যথাযথ গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার : প্রধানমন্ত্রী

    টেনিসকে যথাযথ গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার : প্রধানমন্ত্রী

    তরুণ প্রজন্মের শারিরীক ও মানসিক বিকাশে খেলাধূলার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তাঁর সরকার ক্রিকেট এবং ফুটবলের পাশাপাশি টেনিসসহ অন্যান্য খেলার প্রসারেও সমান গুরুত্ব দিচ্ছে।

    তিনি একইসঙ্গে ক্রিকেট এবং ফুটবলের পাশাপাশি টেনিস অনুশীলনের জন্যেও দেশবাসীর প্রতি আহবান জানান।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ক্রিকেট, ফুটবল নিয়েই আমরা সবসময় মেতে থাকি। তবে, টেনিসও অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আর খেলাধূলার প্রতি আমরা সবসময়ই গুরুত্ব দিয়ে থাকি। কারণ, খেলাধূলা আমাদের ছেলে-মেয়েদেরকে মানসিক শক্তি জোগায়।’

    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ অপরাহ্নে গণভবনে ‘শেখ রাসেল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপ টেনিস টুর্নামেন্ট-২০১৯-এ অংশগ্রগণকারী বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধি এবং কূটনিতিকদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে একথা বলেন।

    তিনি বলেন, বাংলাদেশে ক্রিকেট এবং ফুটবল জনপ্রিয় খেলা হলেও এখন মানুষ টেনিসের সঙ্গেও পরিচিত হচ্ছে। আর এই প্রতিযোগিতা

    আয়োজনের পরে তরুণ প্রজন্ম আরো বেশি করে টেনিসের প্রতি আকৃষ্ট হবে বলে আমি মনে করি।
    তাঁর সরকার টেনিস কোর্ট তৈরী এবং প্রশিক্ষণ প্রদানসহ স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে প্রতিযোগিতা আয়োজনের মধ্যদিয়ে এই খেলাটির প্রসারে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, বলেন প্রধানমন্ত্রী।

    তিনি ছেলে-মেয়েদের এই খেলায় এগিয়ে আসার আহবান জানিয়ে বলেন, ‘আমাদের ছেলে-মেয়েরা যেন এই খেলাধূলায় এগিয়ে আসে এবং তাঁদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা আমরা করবো।’

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা খেলাধূলাকে আরো বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি এইজন্য যে, তরুণ প্রজন্ম যত বেশি অংশ নেবে ততটাই তাদের মন মানসিকতা আরো ভাল হবে। শারিরীকভাবে সুস্থ হবে এবং নিজেদেরকে আরো বেশি তৈরী করতে পারবে। ’

    তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক খেলায় বিদেশিরা যখন অংশগ্রহণ করে তখন একে অপরের সঙ্গে ওঠা-বসার মাধ্যমে পরস্পরকে জানার একটি সুযোগ পাওয়া যায়। কাজেই সেইদিক থেকে আমি মনে করি এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’

    শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা বাড়িয়ে দেব, যেটা খুব জরুরী। আমরা টেনিসের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেব।’

    প্রধানমন্ত্র খুলনায় শেখ রাসেল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপ টেনিস টুর্নামেন্ট-২০১৯’র মত একটি টুর্নামেন্ট সফলভাবে আয়োজনে সকল আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান। বিশেষকরে এ ব্যাপারে স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং এক সময়কার দেশ বরেন্য ফুটবলার এবং বাফুফে সহ-সভাপতি সালাম মুর্শেদীর ভূমিকার প্রশংসা করেন।

    অন্য অনুষ্ঠানে ব্যস্ত থাকায় প্রধানমন্ত্রী সেখানে যেতে না পারার কারণে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন বলেও উল্লেখ করেন।

    তিনি বিজয়ী এবং বিজিতসহ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী ১৯টি দেশের ২১টি ক্লাবের সকল সদস্যদের প্রতি শুভেচ্ছা জানিয়ে এই টুর্নামেন্টটিকে গুরুত্ব প্রদান করে এর সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত এবং হাইকমিশনারদের প্রতিও শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন।

    যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আখতার হোসেন প্রতিযোগিতার বিভিন্ন দিক তুলে ধরে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।

    অনুষ্ঠানে বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনসি, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহ্সান রাসেল এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য সালাম মুর্শেদী এবং শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল উপস্থিত ছিলেন।

    যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং সরকারের মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের সহযোগিতায় ১৩ থেকে ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত খুলনার শেখ রাসেল আন্তর্জাতিক টেনিস কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত ‘শেখ রাসেল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপ টেনিস টুর্নামেন্ট-২০১৯’র আয়োজন করে খুলনা জেলা প্রশাসন।

    বঙ্গবন্ধুর ছোট ছেলে এবং ’৭৫ এর ১৫ আগষ্ট কালরাতে পরিবারের অন্যসদস্যদের সঙ্গে ঘাতকের নির্মম বুলেটের শিকার ১০ বছর বয়সের শেখ রাসেলের ৫৪তম জন্মদিন উদযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত এই টুর্নামেন্টটি গত ১৩ নভেম্বর গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

    যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, ইতালি, ভূটান, ভারত, পাকিস্তান, ইরাক, দক্ষিণ কোরিয়া, মঙ্গোলিয়া, নেপাল, শ্রীলংকা, থাইল্যান্ড, তিউনেশিয়া, তুর্কমেনিস্তান, তাজিকিস্তান, ক্যামেরুন এবং বাংলাদেশের পুরুষ ও মহিলাসহ মোট ৭৪জন প্রতিযোগী এর তিনটি বিভাগে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে।

    প্রতিযোগিতার পুরুষ এককে ভারতের নিতিন কুমার সিনহা এবং মহিলা এককে মঙ্গোলিয়ার মারালোগো চগসোমজাত শিরোপা জয় করেন। আর পুরুষ দ্বৈতে থাইল্যান্ডের চায়ানন কেউসুতো ও উনশায়াট্রং চারোয়েন চাইকুল জুটি চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেন।

  • হিজড়া সম্প্রদায়ের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করেছে সরকার-মেয়র

    হিজড়া সম্প্রদায়ের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করেছে সরকার-মেয়র

    চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আলহাজ্ব আ.জ.ম নাছির উদ্দীন বলেছেন বাংলাদেশ সরকার হিজড়া সম্প্রদায়কে তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে হিজড়া সম্প্রদায়ের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করেছেন।

    আজ সোমবার সকালে সিটি কর্পোরেশন কনফারেন্স হলে সমাজসেবা অধিদপ্তরের উদ্যোগে হিজড়া প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে সনদ বিতরণকালে সিটি মেয়র একথা বলেন।

    সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ শহীদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় হিজড়া দলনেতা জেরিন,পিংকী তাদের সমস্যাদি সম্পর্কে বক্তব্য রাখেন।

    অনুষ্টানে চসিক প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মুফিদুল আলম,সমাজ সেবা অধিদপ্তরের এডি ওয়াহিদুল আলম,সমাজ সেবা কর্মকর্তা আবুল কাশেম,আরমান বাবু,হাফেজ আমান উল্লাহসহ হিজড়া প্রশিক্ষণার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

    সিটি মেয়র আরো বলেন এই সরকারই হিজড়াদের ‘তৃতীয় লিঙ্গ’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এই স্বীকৃতির উদ্দেশ্যে হচ্ছে হিজড়া সম্প্রদায়কে স্বাভাবিক জীবন ধারায় সম্পৃক্তকরণ। দেশের উন্নয়ন কর্মকান্ডে গতি আনায়ন। অর্থনীতির এ গতির জন্য সকল জনগোষ্টির সম্পৃক্ততা অপরিহার্য।

    কোনো সম্প্রদায়কে বাদ দিয়ে কাংখিত উন্নয়ন সম্ভব নয়। হিজড়া সম্প্রদায়ও মানুষ। এ লক্ষ্যে বর্তমান সরকার তাদেরকে স্বাভাবিক জীবনে আনার জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহন করেছে। তা ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। হিজড়া ভাতাসহ বিভিন্ন ভাবে ভিক্ষাবৃক্তি থেকে সরিয়ে আনা আনা হচ্ছে হিজড়াদের। এমনকি তাদের সন্তানদের জন্য সরকার চালূ করেছে উপবৃত্তি।

    সরকারের এ উদ্যোগ আগামী দশ বছর চালু থাকলে দেশে কোনো হিজড়া বেকার কিংবা ভিক্ষাবৃত্তিতে থাকবে না বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি বলেন তাদের নিয়ে আমাদের পরিবার, সমাজের নেতিবাচক মনোভাব রয়েছে। তার পরিবর্তন ঘটাও জরুরি। প্রচলিত আইন অনুযায়ী দেশের সব মানুষ সমান।

    ব্যাপক প্রচার- প্রচারণা চালিয়ে হিজড়াদের সম্পর্কে মানুষের মধ্যে যে ভুল ধারণা, তা দূর করতে হবে। এ ব্যাপারে তিনি তাদের নিজেদেরও মনমানসিকতার পরিবর্তন ঘটাতে হবে বলে মেয়র উল্লেখ করেন।

    সিটি মেয়র বলেন সরকার ২০১৩ সালে হিজড়াদের ‘তৃতীয় লিঙ্গ’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। তারপরও সমাজে তাদের অবস্থানের তেমন কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। সমাজে তারা প্রতিনিয়ত তুচ্ছ তাচ্ছিল্যের শিকার হয়। নিজ পরিবারেও তারা অচ্ছুত ও অনাদৃত। বেশির ভাগ হিজড়াই কোনো সম্মানজনক জীবিকায় নেই, ভিক্ষা ও চাঁদাবাজিই তাদের মূল পেশা।

    এই প্রসঙ্গে সিটি মেয়র হিজড়া সম্প্রদায়ের ৯জনকে চসিকে চাকুরির কথা উল্লেখ করে বলেন হিজড়াদের সাথে আমরা কম বেশী সবাই পরিচিত। কিছু মানুষ হিজড়াদের সাথে মজা করতে পছন্দ করে, কেউ আবার এড়িয়ে চলে। নারীদের ক্ষেত্রে তারা হিজড়াদের রীতিমত ভয় পায় বিশেষ করে তাদের অশোভন আচরণ এর কারণে। এই ধরণের আচরণ পরিত্যাগ করতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

    সমাজসেবা অধিদপ্তরাধীন হিজড়া জনগোষ্টির জীবনমান উন্নয়ন কর্মসূচি আওতায় ৫০জন হিজড়াকে ৪টি ট্রেডে ৫০দিন ব্যাপি প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। প্রশিক্ষণ শেষে প্রত্যেক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হিজড়ার হাতে ২৫ হাজার টাকার অনুদান ও সনদ তুলে দেন সিটি মেয়র।

    হিজড়া জনগোষ্ঠিপর দক্ষতা অর্জন ও স্বাবলম্ভী করার জন্য সমাজকল্যাণ অধিদপ্তরের এই উদ্যোগ। ট্রেডগুলো মধ্যে হস্তশিল্প,বুটিক,সেলাই ও কম্পিউটার প্রশিক্ষণ রয়েছে।

  • সরকার চাচ্ছে খালেদা জিয়া ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে চলে যাক

    সরকার চাচ্ছে খালেদা জিয়া ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে চলে যাক

    সরকার চাচ্ছে কারাবন্দি অসুস্থ বিএনপির চেয়ারসপারসন বেগম খালেদা জিয়া ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে চলে যাক— এমনটাই দাবি করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

    পাকিস্তানের সাজাপ্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ শারীরিক অসুস্থতার কারণে জামিন পেলেও বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী কারাগারে অসুস্থ হলেও তাকে জামিনে দেয়া হচ্ছে না বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির মহাসচিব।

    শনিবার (২৬ অক্টোবর) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

    দলীয় প্রধানের শারীরিক অবস্থা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘তিনি (খালেদা জিয়া) নিজে তুলে খেতে পারছেন না, টয়লেটে যেতে পারছেন না। তাকে কাউকে না কাউকে সাহায্য করতে হচ্ছে।’

    তিনি বলেন, ‘উনার (খালেদা জিয়া) যে অসুখ যদি যথাযথ চিকিৎসা না হয়, তাহলে এটা আরও খারাপের দিকে যাবে। ওখান থেকে আর ফিরে আসা যায় না। এই কথাটা আমরা বহুবার বলেছি। সংবাদ সম্মেলন করে বলেছি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে বলেছি। যারা দায়িত্বে আছেন তাদেরকে আমরা প্রত্যেকটি বিষয়ে বলেছি।’

    মির্জা ফখরুল বলেন, তাঁর (খালেদা জিয়া) যাতে চিকিৎসা না হয়, তিনি যেন ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে চলে যান এটাই সরকারের কাম্য! আমার কাছে বারবার এটাই মনে হয়েছে। কারণ যে মামলাতে খালেদা জিয়া জামিন পাওয়ার যোগ্য সে মামলাগুলোতে তিনি জামিন পাচ্ছেন না। বিভিন্ন কারসাজি করে তাঁর জামিন আটকে দেয়া হচ্ছে। লক্ষ্যটাই হচ্ছে উনি যেন কারাগার থেকে বের হতে না পারেন।’

    বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘গতকাল (শুক্রবার) খালেদা জিয়ার পরিবার সদস্যরা তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। তারাও তাঁর চিকিৎসার ব্যাপারটা তুলে ধরেছেন। এটা পরিবারের বক্তব্য, এটা থাকবেই।’

    খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে দলীয় বক্তব্য তুলে ধরে ফখরুল বলেন, ‘আমরা বারবার যেটা বলে আসছি, তিনি জামিন পেলে তাঁর পছন্দ মতো তিনি যেখানে ইচ্ছা চিকিৎসা করাবেন। এটা তাঁর অধিকার। পাকিস্তানের নওয়ার শরিফের সাজা হলেও তাকে জামিন দেয়া হয়েছে। তিনি অসুস্থ, সে কারণে তাকে জামিন দেয়া হয়েছে। কতগুলো বিষয় আছে, যা মানবিক। এটা না পাওয়ার কোনও কারণ নাই্। খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে সরকারই বাধা সৃষ্টি করছে।’

  • নিরাপদ খাবার পানি সরবরাহ নিশ্চিতে কাজ করছে সরকার

    নিরাপদ খাবার পানি সরবরাহ নিশ্চিতে কাজ করছে সরকার

    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তাঁর সরকার জেলা ও উপজেলা থেকে ইউনিয়ন পর্যন্ত নিরাপদ খাবার পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে জেলা ও উপজেলা থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ের মানুষের কাছে নিরাপদ খাবার পানি পৌঁছে দেয়া।

    তিনি বলেন, আমরা বর্তমানে কেবল ঢাকা নয়, বিভাগীয় শহরগুলোতেও নিরাপদ খাবার পানি সরবরাহ করছি।

    প্রধানমন্ত্রী আজ মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ের জশলদিয়ায় পদ্মা ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট (ফেজ-১) ঢাকার সাভারের তেতুলঝরায় ওয়েল ফিল্ড কনস্ট্রাকশন প্রজেক্ট (ফেজ-১) এবং নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের গান্ধাপুর ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনকালে পানি ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে সবার প্রতি আহ্বান জানান।

    প্রথম ২টি প্রকল্পের যথাক্রমে ৪৫ কোটি ও ১৫ কোটি লিটার পানি সরবরাহ এবং শেষের প্রকল্পটির ৫০ কোটি লিটার পানি শোধনের সক্ষমতা রয়েছে।

    এলজিআরডি মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, স্থানীয় সরবরাহ বিভাগের সচিব হেলাল উদ্দীন আহমেদ, বাংলাদেশে চীনের রাষ্ট্রদূত লি-জিমিং, দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত হু কাং-ইল, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন প্রকাশ ও ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।

    এতে রাজধানীর ক্রম বর্ধমান পানি চাহিদা মেটাতে এই ৩ প্রকল্প এবং বিগত ১০ বছরে ঢাকা ওয়াসার গৃহীত বিভিন্ন প্রকল্প ভিডিও উপস্থাপনার মাধ্যমে দেখানো হয়।

    শেখ হাসিনা বলেন, ‘সবার জন্য নিরাপদ পানি’ সরকারের এই শ্লোগানকে ধারণ করে ঢাকা ওয়াসা রাজধানীর বস্তিগুলোতে আইনসম্মত ও নিরাপদ পানি সংযোগের প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে নিশ্চিত করেছে। পর্যায়ক্রমে সব বস্তি পানি সরবরাহের আওতায় আনা হবে।

    তিনি বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে সব বিভাগীয় শহরে ভূ-উপরিস্থ পানির উৎসের মাধ্যমে নিরাপদ পানি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ চলছে।
    প্রধানমন্ত্রী ভূ-গর্ভস্থ পানির ওপর চাপ কমাতে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ও ব্যবহারের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, ভূ-গর্ভস্থ পানির ওপর নির্ভরতা না কমালে আমাদেরকে গুরুতর পরিণতির মোকাবেলা করতে হবে।

    এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ব্যবস্থার জন্য শিল্পাঞ্চল ও আবাসিক এলাকায় জলাধার নির্মাণ এবং বর্জ্য ও দূষিত পানি নিষ্কাশনের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

    প্রধানমন্ত্রী সেচ কাজে বৃষ্টি ও ভূ-উপরিস্থ পানি ব্যবহারের জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, বৃষ্টির পানি সংরক্ষণে ৪ হাজার ৭শ’ জলাধার নির্মাণ করা হয়েছে এবং গুরুত্বপূর্ণ সব নদীর নাব্যতা বজায় রাখা ও তা জলাধার হিসেবে ব্যবহার করতে নদী খননের কাজ চলছে।

    তিনি বলেন, পরিষোধনের মাধ্যমে ৭ হাজার পুকুর লবণাক্ততামুক্ত হয়েছে। এছাড়া লবণাক্ত অঞ্চলে ৩২ হাজার ৬শ’ গভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে।
    তিনি বলেন, মানুষের নগরমুখী প্রবণতা বন্ধ করতে গ্রামের জনগণের কাছে নাগরিক সকল সুযোগ-সুবিধা পৌঁছে দিতে তাঁর সরকার কাজ করছে।

    সবার জন্য বিশুদ্ধ খাবার পানি নিশ্চিত করতে সরকারের উদ্যোগ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পানি সরবরাহ, স্যুয়ারেজ এবং ড্রেনেজ সিস্টেম নিয়ে আমাদের সরকার তিনটি মাস্টার প্লান তৈরি করেছে পাশাপাশি ঢাকা ওয়াটার সাপ্লাই এন্ড স্যুয়ারেজ এ্যাক্ট, ন্যাশনাল ওয়াটার সাপ্লাই এন্ড স্যানিটেশন এ্যাক্ট ২০১৪ পাস এবং ১৯৯৯ সালে জাতীয় পানি নীতি এবং ন্যাশনাল পলিসি ফর আর্সেনিক মিটিগেশন এন্ড ইমপ্লিমেন্টেশন প্লান গ্রহণ করা হয়।

    এমডিজি’র সফল বাস্তবায়নের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘের ঘোষিত এসডিজি-২০৩০ এর ১৭টি লক্ষ্যের মধ্যে ৬ নম্বর হচ্ছে ‘সবার জন্য স্যানিটেশনের টেকসই ব্যবস্থাপনা ও পর্যাপ্ত সুযোগ নিশ্চিত করা। আমরা সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় এসডিজি সমন্বিত করেছি এবং এটি বাস্তবায়ন হচ্ছে।

    নিরাপদ পানি নিশ্চিত করতে কিছুই না করার তীব্র সমালোচনা করে তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে আমি যখন দায়িত্ব গ্রহণ করি, আমরা ঢাকা মহানগরীকে ‘পানি সংকটের’ মধ্যে পাই এবং এই সংকট কাটাতে আমরা সায়েদাবাদ ওয়াটার ট্রিটমেন্ট নির্মাণ করি। পুনরায় ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পরে একই পরিস্থিতি পাই এবং আমরা তখন সায়েদাবাদ ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট ২ ও ৩ নির্মাণ করি।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার ২০৪১ সাল নাগাদ দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশকে একটি সমৃদ্ধ ও উন্নত দেশে পরিণত করতে কাজ করে যাচ্ছি।

  • সরকারের পায়ের নিচে মাটি নাই : খন্দকার মাহবুব

    সরকারের পায়ের নিচে মাটি নাই : খন্দকার মাহবুব

    ‘ক্ষমতাসীন অবৈধ সরকারকে ভয় করার কিছু নাই, তাদের পায়ের নিচে মাটি নাই। তারা দোদুল্যমান অবস্থায় আছে। যেকোনো মুহূর্তে তাদের ধাক্কা দিলেই পতন হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন।

    আজ শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরাম নামক একটি সংগঠনের আয়োজনে ‘প্রতিহিংসার বিচারে কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার অনতিবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে’ প্রতীকী অবস্থান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

    নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরামের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এম জাহাঙ্গীর আলমের সঞ্চালনায় প্রতীকী অবস্থান কর্মসূচিতে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমী, যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, প্রিন্সিপাল শাহ মোহাম্মদ নেসারুল হক, তাঁতী দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ড. কাজী মনিরুজ্জামান মনির প্রমুখ বক্তব্য দেন।

    খন্দকার মাহাবুব বলেন, ‘এই সরকার অবৈধ। পাতানো নির্বাচনের মাধ্যমে তারা ক্ষমতায় এসেছে। তাদের উচিত নিরপেক্ষ সরকারের মাধ্যমে নির্বাচন করা।’

    তিনি বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর কাছে নাকি অপরাধীদের তালিকা আছে। তালিকা রেখে লাভ নাই। আমরা দেখতে চাই কারা সেই অপরাধী। তাদেরকে গ্রেফতার করে বিচারের কাঠগড়ায় নিয়ে আসতে হবে। আপনি বারবার ভালো ভালো কথা বলবেন আর চমক সৃষ্টি করবেন সেই চমক সৃষ্টির দিন চলে গেছে।’

    সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র এই আইনজীবী বলেন, ‘আমরা অনেক দেখেছি, আমাদের ধৈর্যচ্যুত হয়ে গেছে। এখনো সময় আছে আপনি পদত্যাগ করুন। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন। হাইকোর্ট নিয়ে খেলতে যাবেন না। বিচার বিভাগকে নিয়ে খেলতে যাবেন না। বিচারকরাও আপনার খেলার সঙ্গি আর হবে না। আল্লাহর নামে শপথ নিয়ে বলছি, আর কোনোদিন করুণা ভিক্ষা করবো না। হাইকোর্টের বিচার যদি থাকে, সংবিধান অনুযায়ী বিচার যদি করতে পারে তাহলে হাইকোর্টের অস্তিত্ব থাকবে। নতুবা অস্তিত্ব থাকবে কিনা সেটা নিয়ে আমরা সন্দিহান।’

    বিএনপির এই ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ‘সংবিধানে হাইকোর্টকে যে অধিকার দেয়া হয়েছে সেখানে যদি আইনের শাসন না থাকে তাহলে সেই হাইকোর্ট থাকার অস্তিত্ব নাই। আমরা শপথ নিয়ে এসেছি বাংলাদেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করব। আমি হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টের মাননীয় বিচারপতিদেরকে সতর্ক করে দিয়ে বলতে চাই, দেশে আইনের শাসন যদি না থাকে তাহলে আপনাদেরও শাসন থাকবে না, আপনাদের অস্তিত্ব থাকবে না।’