Tag: সশস্ত্র বাহিনী

  • দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন

    দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন

    আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে স্থানীয় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা প্রদানের নিমিত্তে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে ‘In Aid to the Civil Power’-এর আওতায় সশস্ত্র বাহিনী নিয়োজিত হয়েছে। সশস্ত্র বাহিনী ভোটগ্রহণের পূর্বে, ভোটগ্রহণের দিন ও ভোটগ্রহণের পরে শান্তি-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দেশব্যাপী ৩ থেকে ১০ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখ পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন/স্থানীয় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা প্রদান করবে।

    মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

    আইএসপিআর জানিয়েছে, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা প্রতিটি জেলা/উপজেলা/মেট্রোপলিটন এলাকার নোডাল পয়েন্ট ও অন্যান্য সুবিধাজনক স্থানে অবস্থান করবে। সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের অনুরোধক্রমে ও সমন্বয়ের মাধ্যমে বাহিনীসমূহ এলাকাভিত্তিক মোতায়েন সম্পন্ন করছে। সেনাবাহিনী ৬২টি জেলায় নিয়োজিত হয়েছে। সমতলে সীমান্তবর্তী ৪৫টি উপজেলায় বিজিবি এককভাবে দায়িত্ব পালন করবে; এ ছাড়াও সীমান্তবর্তী ৪৭টি উপজেলায় সেনাবাহিনী বিজিবির সাথে এবং উপকূলীয় ৪টি উপজেলায় কোস্ট গার্ড-এর সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে যৌথভাবে দায়িত্ব পালন করবে।

    উপকূলীয় দুটি জেলাসহ (ভোলা ও বরগুনা) সর্বমোট ১৯টি উপজেলায় বাংলাদেশ নৌবাহিনী দায়িত্ব পালন করবে। বাংলাদেশ বিমানবাহিনী হেলিকপ্টারযোগে দুর্গম পার্বত্য অঞ্চলের ভোটকেন্দ্রসমূহে প্রয়োজনীয় হেলিকপ্টার সহায়তা প্রদান করবে। জরুরি প্রয়োজনে নির্বাচনী সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রয়োজনীয় সংখ্যক হেলিকপ্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

    সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে যৌথ সমন্বয় সেল স্থাপন করা হয়েছে, যা ১০ জানুয়ারি ২০২৪ পর্যন্ত কার্যকরী থাকবে। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৪ উপলক্ষে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানে সশস্ত্র বাহিনী সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।

  • আঘাত এলে প্রতিঘাত করার মত সক্ষমতা অর্জনে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের প্রতি গুরুত্বারোপ প্রধানমন্ত্রীর

    আঘাত এলে প্রতিঘাত করার মত সক্ষমতা অর্জনে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের প্রতি গুরুত্বারোপ প্রধানমন্ত্রীর

    ‘বাংলাদেশ যুদ্ধ নয় শান্তি চায়,’ মর্মে দেশের পররাষ্ট্রনীতির পুনরোল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত এলে প্রতিঘাত করার মত সক্ষমতা অর্জনে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই,’ কিন্তু কেউ যদি আমাদের সার্বভৌমত্বে আঘাত করতে আসে, প্রতিঘাত করবার মত সক্ষমতা যেন আমরা অর্জন করতে পারি-সেভাবেই আমাদের প্রশিক্ষণ এবং প্রস্তুতি থাকতে হবে। এ বিষয়টি আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের সবসময় মনে রাখতে হবে।’

    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে মিরপুর সেনানিবাসের শেখ হাসিনা কমপ্লেক্সে, ন্যাশনাল ডিফেন্স কোর্স (এনডিসি)-২০২০ এবং আর্মড ফোর্সেস ওয়ার কোর্স (এএফডব্লিউসি )-২০২০ এর গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন।

    তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন।

    শেখ হাসিনা বলেন, ‘মিয়ানমার থেকে আমাদের দেশে তাদের প্রায় ১০ লাখের ওপরে নাগরিক আশ্রয় নিয়েছে। আমরা তাদের সঙ্গে কখনও সংঘাতে যাইনি এবং আলোচনার মাধ্যমে এটা সমাধানের চেষ্টা করছি এবং আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলেও সকলকে আমরা আহ্বান জানিয়েছি-এই যে বিশাল একটা বোঝা আমাদের ওপর রয়েছে-এটার যেন তারা দ্রুত সমাধান করেন।’

    জাতির পিতার করে যাওয়া দেশের পররাষ্ট্রনীতি ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়,’ এর পুনরোল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সকলের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখেছে। সবথেকে বড় কথা আমাদের দেশের উন্নতি করতে হবে। তার জন্য বিনিয়োগ প্রয়োজন।

    তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য সকলের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখে যেখানে এবং যাদের কাছ থেকে যতটুকু সহযোগিতা পাওয়া যায়, প্রযুক্তি জ্ঞান পাওয়া যায়, সেটুকু নিয়েই আমরা আমাদের দেশকে গড়ে তোলার চেষ্টা করে যাচ্ছি। এই কথাটা মনে রাখতে হবে, সকলের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আমরা রাখবো।’

    শেখ হাসিনা বলেন, ‘নিজের দেশের নিরাপত্তা, আঞ্চলিক নিরাপত্তা এবং আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ সশ¯্রবাহিনী সর্বদা প্রস্তুত থাকবে এবং আমরা সেভাবেই কাজ করে যাচ্ছি এবং সেকারণে সারাবিশে^ আজকে আমরা মর্যাদা পেয়েছি।’

    তিনি বলেন, লাখো শহিদের রক্তের বিনিময়ে আমাদের এই স্বাধীনতা। এর সুফল বাংলার প্রতিটি মানুষের ঘরে আমরা পৌঁছে দিতে চাই।
    চলমান মুজিববর্ষ থেকে আগামী বছর স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনকালীন দেশের প্রতিটি ঘরে বিদ্যুতের আলো পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি ভূমিহীন, গৃহহীনকে অন্তত একটি করে ঘর করে দেওয়ায় তাঁর সরকারের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে তিনি চলমান কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে সকলকে স্বাস্থ্য সুরক্ষাবিধি মেনে চলার আহ্বানেরও পুনরুল্লেখ করেন।

    ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের কমানড্যান্ট লেফটেন্যান্ট জেনারেল আতাউল হাকিম অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন।

    আইএসপিআর’এর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি জানায়, এ বছর ন্যাশনাল ডিফেন্স কোর্স-২০২০ এ (এনডিসি) বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩১ জন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল, বাংলাদেশ নৌবাহিনীর চার কমোডোর এবং একজন ক্যাপ্টেন, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর পাঁচ জন এয়ার কমোডোর রয়েছেন। সশস্ত্র বাহিনী অফিসারদের পাশাপাশি দু’জন অতিরিক্ত সচিব, ১১ জন প্রশাসনের যুগ্ম সচিব এবং সিভিল সার্ভিসের অন্যান্য ক্যাডার, বিদেশি পরিষেবা থেকে একজন মহাপরিচালক এবং বাংলাদেশ পুলিশের দুইজন উপ-মহাপরিদর্শক এতে অংশ নিয়েছিলেন। ১২ টি বন্ধু দেশের ব্রিগেডিয়ার জেনারেল/কর্নেল এবং সমমানের পদমর্যাদার ২৫ জন সদস্যও অংশগ্রহণ করেন।

    এ বছর আর্মড ফোর্সেস ওয়ার কোর্সে তিনজন কর্নেল এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৩ জন লেফটেন্যান্ট কর্নেল, দু’জন ক্যাপ্টেন এবং ছয় জন কমান্ডার বাংলাদেশ নৌবাহিনী থেকে এবং বাংলাদেশ বিমান বাহিনী থেকে সাত গ্রুপ ক্যাপ্টেন এবং একজন উইং কমান্ডার অংশগ্রহণ করেন।

    ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্যদিয়ে আমাদের সশস্ত্র বাহিনী গড়ে উঠেছে’, উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কাজেই এই বাহিনীর প্রতিটি সদস্য দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে নিজেদেরকে আপনারা গড়ে তুলবেন। যেন সবসময় জনগণের পাশে থেকে জনগণের কল্যাণে কাজ করেন।’

    তিনি সবসময় দুর্যোগে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, ‘কোভিড-১৯ এর সময় নিজেদের জীবন ঝুঁকিতে রেখেও আপনারা ব্যাপকভাবে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁদের সেবা দিয়েছেন। সেজন্য সবাইকে আমার আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’

  • নতুন পিএসও ওয়াকার উজ-জামানকে র‍্যাঙ্ক ব্যাজ পরানো হয়েছে

    নতুন পিএসও ওয়াকার উজ-জামানকে র‍্যাঙ্ক ব্যাজ পরানো হয়েছে

    সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের নবনিযুক্ত প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও) ওয়াকার-উজ-জামানকে আজ বিকেলে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে লেফটেন্যান্ট জেনারেল পদের র‌্যাঙ্ক ব্যাজ পরিয়ে দেয়া হয়।

    প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বলেন, ‘নৌবাহিনীর প্রধান এডমিরাল মোহাম্মদ শাহীন ইকবাল ও বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল মশিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত ওয়াকার-উজ-জামানকে ব্যাজটি পরিয়ে দেন।’

    তিনি আরো বলেন, অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নতুন পিএসও’র তার দায়িত্ব পালনে সাফল্য কামনা করেন এবং এ ব্যাপারে সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস প্রদান করেন।

    এ সময় প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল অব. তারিক আহমেদ সিদ্দিক এবং প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল নকিব আহমদ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

    অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের পক্ষ থেকে আর্মি কোয়ার্টারমাস্টার জেনারেল (কিউএমজি) লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. শামসুল হক উপস্থিত ছিলেন।

    এর আগে, সরকার সেনা সদরদপ্তরের সামরিক সচিব মেজর জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানকে লেফটেন্যান্ট জেনারেল হিসেবে পদন্নোতি দিয়ে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের পিএসও করা হয়। পিএসও হিসেবে লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. মাহফুজুর রহমানের মেয়াদ শেষ হওয়ায় আজ ৩০ নভেম্বর থেকে তার এই নতুন নিয়োগ কার্যকর হবে।

  • করোনায় সশস্ত্র বাহিনীর ১০২০ জন আক্রান্ত, মারা গেছেন ১০ জন

    করোনায় সশস্ত্র বাহিনীর ১০২০ জন আক্রান্ত, মারা গেছেন ১০ জন

    বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত এক হাজার ২০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়া ৯২ জন পরিবারের সদস্য এবং সশস্ত্র বাহিনীর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বেসামরিক ও অন্যান্য ২৫২ জন আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ১০ জন।

    শনিবার (২৩ মে) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর)।

    বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আক্রান্তদের মধ্যে ৯৩৩ জন বিভিন্ন সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন। ৪২১ জন সুস্থ হয়ে নিজ নিজ আবাসস্থলে ফিরেছেন। এছাড়া ভর্তি অন্য রোগীরা সুস্থ আছেন।

    আইএসপিআর আরও জানায়, কোভিড-১৯ এ মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ৬০ বছরের বেশি বয়স্ক আটজন (অবসরপ্রাপ্ত) এবং দুজন কর্মরত সেনাসদস্য প্রত্যেকেই দীর্ঘদিন ধরে অনিরাময়যোগ্য বিভিন্ন শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন।

    এ পর্যন্ত সামরিক বাহিনীর পিসিআর ল্যাবরেটরিতে সশস্ত্র বাহিনীর চার হাজার ৩৭৫ জন, ৭৭৪ জন পরিবারের সদস্য এবং বেসামরিকসহ অন্যান্য দুই হাজার ২৬১ জন সদস্যের মোট সাত হাজার ৪১০টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রণীত সব স্বাস্থ্যবিধি মেনে কোভিড-১৯ সংক্রমিত রোগীদের সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষিত চিকিৎসক দ্বারা সার্বক্ষণিক চিকিৎসা নিশ্চিত করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর।

    বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর কর্মরত সব সদস্য, তাদের পরিবার ও অবসরপ্রাপ্ত সদস্যদের কোভিড-১৯ এর নমুনা পরীক্ষার জন্য আর্মড ফোর্সেস ইনস্টিটিউট অব প্যাথলজিসহ (এএফআইপি) সব সিএমএইচে ১৩টি ‘আরটি-পিসিআর’ মেশিন প্রতিনিয়ত কাজ করে চলেছে। এছাড়া সব সিএমএইচে পর্যাপ্ত পরিমাণ ব্যক্তিগত সুরক্ষাসামগ্রী (পিপিই), মাস্ক, গ্লাভস এবং প্রয়োজনীয় ওষুধসহ আনুষঙ্গিক চিকিৎসা সরঞ্জামাদি মজুত আছে বলে জানায় আইএসপিআর।

    ২৪ ঘণ্টা/এম আর

  • সেনা সদস্যদের সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারের আহ্বান রাষ্ট্রপতির

    সেনা সদস্যদের সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারের আহ্বান রাষ্ট্রপতির

    রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ আজ জাতীয় পতাকার সম্মান রক্ষার্থে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।

    রাষ্ট্রপতি আজ বন্দর নগরী চট্টগ্রামের হালিশহর আর্টিলাটি সেন্টার ও স্কুলে এয়ার ডিফেন্স রেজিমেন্টের চার আর্টিলারির জাতীয় পতাকা প্রদান অনুষ্ঠানে এ আহ্বান জানান।

    তিনি আরো বলেন, ‘জাতীয় পতাকা স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, সম্মান ও মর্যাদার প্রতীক। তাই পতাকার মান রক্ষা করা সকল সৈনিকের পবিত্র দায়িত্ব। এই পতাকার সম্মান রক্ষায় সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে তাদের সর্বদা প্রস্তুত থাকতে হবে।’

    সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক রাষ্ট্রপতি জরুরি পরিস্থিতির পাশাপাশি মাতৃভূমির অস্তিত্ব রক্ষায় যে কোন দুর্যোগপূর্ণ মুহূর্তে সম্ভাব্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারের জন্য সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেন।

    ১, ২, ৩ ফিল্ড রেজিমেন্ট আর্টিলারি ও ৩৮ এয়ার ডিফেন্স রেজিমেন্ট আর্টিলারির জাতীয় পতাকা প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি আরো বলেন, দেশ ও জাতীর প্রয়োজনে জনকল্যাণমূলক কাজেও সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের অবদান রাখতে হবে।

    এ বিষয়ে তিনি বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং জাতিসংঘের বিভিন্ন মিশনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যদের কর্তব্যনিষ্ঠা ও পেশাদারিত্বের কথা উল্লেখ করে বলেন, তাদের জনকল্যাণমূলক কর্মকাণ্ড বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে।

    রাষ্ট্রপতি বলেন, বাহিনীর প্রতিটি সদস্যকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে ও মুক্তিযুদ্ধের চেতানায় উদ্বুদ্ধ হয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ গড়ে তুলতে অক্লান্ত পরিশ্রম করতে হবে।

    আধুনিকায়ন ও প্রযুক্তি অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত উল্লেখ করে তিনি সকল সদস্যকে আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে টিকে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় কারিগরি ও ও পেশাগত জ্ঞান অর্জনের উপর গুরুত্বারোপ করেন।

    রাষ্ট্রপতি হামিদ বলেন, ‘একটি আধুনিক, সময় উপযোগী ও শক্তিশালী সামরিক বাহিনী যে কোন দেশের জন্য অপরিহার্য।’

    তিনি আরো বলেন, ১৯৭৪ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ‘প্রতিরক্ষা নীতি’ প্রণয়ন করেন। এই নীতির আলোকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাংগঠনিক কাঠামোর বিন্যাস ও পরিবর্তনের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর আধুনিকায়নের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

    রাষ্ট্রপতি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার ‘ফোর্স গোল-২০৩০’ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে সেনাবাহিনীর সাংগঠনিক কাঠামো বিন্যাস ও পরিবর্তনের পাশাপাশি আধুনিকায়নের প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে।

    তিনি আরো বলেন, ‘আধুনিক বিশ্বের সাথে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে বর্তমান সরকার আধুনিক সমরাস্ত্র, আর্টিলারি গান ও আধুনিক ইনফ্যান্ট্রি গ্যাজেটের মাধ্যমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধি করেছে।’

    মূল কার্যক্রমের পাশাপাশি জাতিগঠনমূলক কর্মকা-ে অসধারণ অবদানের জন্য রাষ্ট্রপতি সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, তারা প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময়, ভোটার ডাটাবেজ তৈরি ও জরুরি মুহূর্তে বেসামরিক প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিয়ে নিজেদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে।

    রাষ্ট্রপতি প্যারেড গ্রাউন্ডে কুঁচকাওয়াজ পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ করেন।
    অনুষ্ঠানের পর রাষ্ট্রপতি সিনিয়র কর্মকর্তাদের সাথে ছবি তুলেন এবং দর্শনার্থীদের বইয়ে স্বাক্ষর করেন।

    এর আগে, রাষ্ট্রপতি প্যারেড গ্রাউন্ডে পৌঁছুলে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ তাঁকে অভ্যর্থনা জানান।

    অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য, উচ্চ পদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা, কূটনীতিক ও রাষ্ট্রপতির সংশ্লিষ্ট সচিবগণ।

  • সামাজিক অভিশাপগুলোর বিরুদ্ধে সজাগ থাকতে সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান

    সামাজিক অভিশাপগুলোর বিরুদ্ধে সজাগ থাকতে সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান

    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ রুটিন দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি বিদ্যমান কিছু সামাজিক অভিশাপের বিরুদ্ধে সতর্ক নজর রাখার জন্য সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, তাঁর সরকার এসব সামাজিক অভিশাপ নির্মূল করতে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণ করে যাবে।

    তিনি বলেন, ‘সমাজে মাদক, সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতির মতো কিছু সামাজিক অভিশাপ রয়েছে। আমি এসব বিষয়ে আপনাদের বিশেষ মনোযোগ আকর্ষণ করছি।’

    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে মিরপুর সেনানিবাসে ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড এন্ড স্টাফ কলেজ’র (ডিএসসিএসসি) শেখ হাসিনা কমপ্লেক্সে ২০১৯-২০২০ কোর্সের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন।

    সমাজের বিদ্যমান সামাজিক অপরাধের বিরুদ্ধে চলমান অভিযান পরিচালনায় সরকারের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ, মাদক ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছি। অপরাধ বিরোধী এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।’

    শেখ হাসিনা বলেন, সমাজকে রক্ষা করার জন্য এই ধরণের অভিশাপ নির্মূল করা জরুরি। কারণ আমরা আমাদের সন্তানদের জীবন ধ্বংস করার কোন সুযোগ দিতে চাই না।

    তিনি একইসঙ্গে বলেন, তাঁর সরকার সশস্ত্র বাহিনীকে সমগ্র বিশ্বের সঙ্গে যেন তাল মিলিয়ে চলতে পারে তেমনই একটি আধুনিক ও সুসজ্জিত বাহিনী হিসাবে গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছে।
    শেখ হাসিনা বলেন, ‘তাঁর সরকার তরুণদের মেধা, জ্ঞান এবং শক্তি দেশের কল্যাণে কাজে লাগাতে চায়।’

    জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর অবদানের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি সশস্ত্রবাহিনীকে এমন ভাবে উন্নত করতে চাই যাতে তাঁরা যেকোন দেশে যেকোন পরিস্থিতিতে শান্তি রক্ষায় কাজ করে যেতে পারে।’

    তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী পৃথিবীর যেখানে কাজ করেছে সেখানেই সুনাম অর্জন করেছে।’

    শেখ হাসিনা বলেন, ‘মানবিক সেবা দিয়ে বিভিন্ন দেশে স্থানীয় মানুষের হৃদয় জয় করেছে বাংলাদেশ সেনা বাহিনী।’

    অনুষ্ঠানে ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড ও স্টাফ কলেজের কম্যাড্যান্ট মেজর জেনারেল মো. এনায়েত উল্লাহ স্বাগত বক্তৃতা করেন।

    বাংলাদেশ সেনা বাহিনীর ১২৫ জন, নৌ বাহিনীর ৩৪ জন এবং বিমান বাহিনীর ২২ জন ছাড়াও ২১ দেশ থেকে আগত ৫৪ জন বিদেশী অফিসার সহ মোট ২৩৫ জন শিক্ষার্থী এ বছর এ কলেজ থেকে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেছেন।

    উল্লেখ্য, ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড এন্ড স্টাফ কলেজ বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যপর্যায়ের নির্বাচিত কর্মকর্তাদের কমান্ড স্টাফ হিসেবে ভবিষ্যতের গুরু দায়িত্ব পালনে দক্ষ করে গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে এই প্রতিষ্ঠান কাজ করে যাচ্ছে।

    প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত ‘ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড ও স্টাফ কলেজে’ সেনাবাহিনীর ৪৪টি, নৌবাহিনীর ৩৮টি এবং বিমানবাহিনীর ৪০টি স্টাফ কোর্সে ৫ হাজার ২৫৩ জন সাফল্যের সঙ্গে কোর্স সম্পন্ন করেছেন। এরই মধ্যে ৪২টি বন্ধুপ্রতিম দেশের ১ হাজার ১৬৫ জন অফিসারও এ কলেজ থেকে গ্র্যাজুয়েশন করেছেন।

    প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে গ্র্যাজুয়েশন করা অফিসারদের হাতে সনদ তুলে দেন।

    ২১ টি দেশের মধ্যে রয়েছে- যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, কুয়েত, মালয়েশিয়া, মালদ্বীপ, নেপাল, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান, ফিলিস্তিন, ফিলিপাইন, সৌদি আরব, সিয়েরা লিয়ন, দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কা, সুদান, তানজানিয়া, তুরস্ক, উগান্ডা এবং জাম্বিয়া।

    অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে মন্ত্রিপরিষদ সদস্যবৃন্দ, তিন বাহিনী প্রধানগণ, সশস্ত্রবাহিনী বিভাগের পিএসও সহ সরকারের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ এবং উর্ধ্বতন বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

  • সশস্ত্র বাহিনীর ভাবমূর্তি সমুন্নত রাখার আহ্বান রাষ্ট্রপতির

    সশস্ত্র বাহিনীর ভাবমূর্তি সমুন্নত রাখার আহ্বান রাষ্ট্রপতির

    রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ নেতৃত্বের প্রতি পরিপূর্ণ অনুগত থেকে কঠোর অনুশীলন, শৃঙ্খলা, পেশাগত দক্ষত, কর্তব্য নিষ্ঠা ও দেশপ্রেমের সমন্বয়ে সশস্ত্র বাহিনীর ভাবমূর্তিকে সম্মুন্নত রাখার জন্য ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ (এনডিসি)’র স্নাতকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

    রাষ্ট্রপতি আজ মিরপুর সেনানিবাসে এনডিসি পুনর্মিলনী ২০২০ অনুষ্ঠানে এ আহ্বান জানান।

    তিনি আরো বলেন, ‘নেতৃত্বের প্রতি গভীর আস্থা, পারস্পারিক শ্রদ্ধাবোধ, পেশাগত অভিজ্ঞতা ও শৃঙ্খলা যে কোন বাহিনীর উন্নয়নের পূর্বশর্ত।’
    বর্তমান সরকার সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকীকরণে ‘ফোর্সেস গোল ২০৩০’ প্রণয়ন করেছে উল্লেখ করে যথাযথ দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে বাহিনীর ভাবমূর্তি সমুন্নত রাখাতে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালানোর জন্য তিনি সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান।

    রাষ্ট্রপতি সশস্ত্র বাহিনীর সার্বিক কর্মকান্ডের প্রশংসা করে বলেন, তারা দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা তাদের নিয়মিত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি বিভিন্ন দেশ গঠনমূলক কাজে ও জাতীয় দুর্যোগপূর্ণ মুহূর্তেও বেসামরিক প্রশাসনকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা দিয়ে থাকেন।

    তিনি আরো বলেন, ‘পাশাপাশি, দেশের বাইরে বিভিন্ন শান্তিরক্ষী মিশনগুলোতে সততা, নিষ্ঠা ও শৃঙ্খলার সাথে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে তারা বিশ্বের দরবারে আমাদের দেশের ভাবমূর্তিকে উজ্জ্বল করছেন।’

    জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান অনুসৃত ‘সকালের সাথে বন্ধুত্ব। কারো সাথে বৈরীতা নয়।’ এ মূলমন্ত্র অনুসরণ করেই বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতি পরিচালিত হচ্ছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, বিশ্ব শান্তি রক্ষার পাশাপাশি জাতীয় উন্নয়নে বাংলাদেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

  • সরকার সশস্ত্র বাহিনীকে একটি আধুনিক-সুদক্ষ বাহিনীতে পরিণত করার লক্ষ্যে কাজ করছে

    সরকার সশস্ত্র বাহিনীকে একটি আধুনিক-সুদক্ষ বাহিনীতে পরিণত করার লক্ষ্যে কাজ করছে

    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার সশস্ত্র বাহিনীকে পরিবর্তিত বিশ্বের সঙ্গে তাল মেলাতে সক্ষম একটি আধুনিক, পেশাদার এবং সুদক্ষ বাহিনীতে পরিণত করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ফোর্সেস গোল-২০৩০’ আলোকে একটি আধুনিক, পেশাদার ও প্রশিক্ষিত সশস্ত্র বাহিনী প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আমরা আধুনিক অস্ত্রসস্ত্র জোগাড় এবং প্রশিক্ষণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।’

    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে মিরপুর সেনানিবাসের শেখ হাসিনা কমপ্লেক্সে ন্যাশনাল ডিফেন্স কোর্স (এনডিসি)-২০১৯ এবং আর্মড ফোর্সেস ওয়ার কোর্স (এএফডব্লিউসি কোর্স)-২০১৯ এর গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা ১৯৭৪ সালে আমাদের সশস্ত্র বাহিনী পরিচালনার যে নীতিমালা করে যান তারই আলোকে আমরা ফোর্সেস গোল ২০৩০ প্রণয়ন করেছি। আমাদের সশস্ত্র বাহিনীকে আরো শক্তিশালী এবং যুগোপযোগী করতে এবং সেটাই সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ।

    পরিবর্তনশীল বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলাটা জরুরি আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, ‘এই পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়েই চলার জন্যই আমরা সশস্ত্র বাহিনীর জন্য নতুন নতুন অস্ত্রসস্ত্র জোগাড় থেকে শুরু করে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা এবং বিভিন্ন জায়গায় নতুন করে সেনানিবাসও গড়ে তুলেছি।’

    শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশের জন্য যখন যেটা প্রয়োজন সে ব্যাপারে আমরা যথেষ্ট সচেতন এবং সেই পদক্ষেপ নিচ্ছি। কারণ, আমরা একটা পেশাদার এবং প্রশিক্ষিত সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তুলতে চাই।’

    তিনি বলেন, বাংলাদেশ থেকে শন্তিরক্ষী মিশনে আমাদের সশস্ত্র বাহিনী যাচ্ছে এবং সেক্ষেত্রেও আমাদের অভিজ্ঞতা সঞ্চয় হচ্ছে। আবার শান্তিরক্ষী মিশনে গিয়ে আধুনিক যুগের সাথে তাল মিলিয়ে যেন আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা চলতে পারে, যুদ্ধ সরঞ্জামের সঙ্গে যেন তাঁদের পরিচিতি থাকে এবং তাঁরা যেন যেকোন ক্ষেত্রে ভূমিকা পালনে কোন ধরনের দ্বিধাগ্রস্ত না হন সেজন্য প্রশিক্ষণ এবং আধুনিক যুদ্ধাস্ত্রের বিষয়ে আমরা সচেতন।’ যতদূর সম্ভব সীমিত সম্পদের মধ্যেও সরকার তাঁর জোগান দিয়ে যাচ্ছে, বলেন তিনি।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি সবসময় এটা মনে করি প্রশিক্ষণ, গবেষণা এবং দেশপ্রেম, মানুষের প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধ এবং মানুষের প্রতি ভালবাসা প্রতিটি মানুষের মাঝেই এ চিন্তাটা থাকা উচিত। দেশ মাতৃকার জন্য যেকোন ত্যাগ স্বীকারেই আপনারা সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা এখানে এসেছেন।’

    এই দেশ আপনাদের এবং আমাদের সকলের-এই চিন্তা থেকেই এদেশকে আমরা আগামীর পথে এগিয়ে নিয়ে যাব, বলেন তিনি।

    তিনি এ সময় প্রশিক্ষণ কোর্সে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন দেশের সদস্যবৃন্দের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘যারা অন্যান্য দেশ থেকে এসেছেন তারা পরবর্তীতে নিজ নিজ দেশের কর্মক্ষেত্রে ফিরে যাবেন। আমি আপনাদেরকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই।’

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারাই হবেন আমাদের গুডউইল অ্যাম্বাসেডর। কারণ, আপনারা একটি বছর এখানে থেকে বাংলাদেশকে চিনেছেন, জেনেছেন, সকলের সঙ্গে মিশেছেন এবং আপনারা দেখেছেন যে, বাংলাদেশের মানুষ সাধারণভাবে খুব আন্তরিক এবং বন্ধুসুলভ। কাজেই, আপনারা আমাদের শুভবার্তা নিয়ে যাবেন নিজ দেশে।’

    তিনি বলেন, আপনারা আপনাদের অভিজ্ঞতা দেশ ও দেশের মানুষের কাজে লাগাবেন। সেটাই আমি কামনা করি এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগণ ‘সিকিউরিটি থ্রু নলেজ’ অর্থাৎ ‘জ্ঞানেই নিরাপত্তা’- ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের এই মূলমন্ত্রে অনুপ্রাণিত হয়ে দেশকে স্থিতিশীল, টেকসই উন্নয়ন, আত্মনির্ভরশীলতা এবং সর্বোপরি গৌরবময় অবস্থানের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন।

    সরকার প্রধান বলেন, সবসময় একটা কথাই মনে রাখবেন-অনেক রক্ত দিয়ে এই স্বাধীনতা অর্জন। কোনক্রমেই আমরা একে ব্যর্থ হতে দিতে পারি না। বাংলাদেশ হবে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ।’

    তিনি কলেজের কমান্ড্যান্ট, সকল ফ্যাকাল্টি সদস্য, রিসোর্স পারসনস ও স্টাফ অফিসারদেরকেও আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
    ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের কমান্ড্যান্ট লেফটেন্যান্ট জেনারেল শেখ মামুন খালেদ অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেন।

    প্রায় ৮৫ জন সশস্ত্র বাহিনী, জনপ্রশাসন এবং বিদেশী সামরিক কর্মকর্তাগণ ‘এনডিসি কোস-২০১৯’ এ এবং সশস্ত্র বাহিনীর ৩৮ জন কর্মকর্তা ‘এএফডব্লিউসি কোর্স-২০১৯’ অংশগ্রহণ করেন।

    ১৬টি দেশের সামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ এতে অংশ নেন। দেশগুলো হচ্ছে- চীন, মিশর, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, সৌদি আরব, কুয়েত, মালয়েশিয়া, নেপাল, নাইজেরিয়া, ওমান, পাকিস্তান, শ্রীলংকা, তানজানিয়া, যুক্তরাজ্য, মালি এবং নাইজার।
    জাতীয় সংসদের স্পিকার, মন্ত্রিপরিষদ সদস্যবৃন্দ, সংসদ সদস্যবৃন্দ, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, তিনবাহিনী প্রধানগণ, মুখ্য সচিব, উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং অধ্যাপকবৃন্দ, বিশিষ্ট নাগরিকবৃন্দ, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত এবং মিলিটারি এ্যাটাচিগণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

    আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে সমাদৃত এই ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ অত্যন্ত সীমিত পরিসরে তাঁর সরকারের হাত ধরে এর যাত্রা শুরু করেছিল বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২১ বছর পর ’৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে ১৯৯৮ সালে মাত্র ১৫ জন নিয়ে এর যাত্রা শুরু মাত্র দুই কোটি টাকা ব্যয়ে।’

    তিনি বলেন, ‘সেটাও আমার অবশ্য চ্যালেঞ্জ ছিল যে, সবকিছু টাকার মাপে হয় না। শুরুটা হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ। একবার শুরু করলে এটি একদিন বিশ্বব্যাপী খ্যাতি অর্জন করবে এবং আজকে সেটাই আমরা দেখতে পাচ্ছি।’

    ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ স্ট্যাটেজিক স্তরে একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে অসামরিক পরিমন্ডলেও যথেষ্ট সমাদৃত উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারি উচ্চপদস্থ অসামরিক কর্মকর্তাগণ এই প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রভূত অবদান রেখে চলেছেন।

    তিনি বলেন, এনডিসি এবং এএফডব্লিউসি কোর্স ছাড়াও এনডিসি কর্তৃক পরিচালিত ‘ক্যাপস্টোন কোর্স’- এর মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালনা ও নীতিনির্ধারক পর্যায়ের ব্যক্তিবর্গ এমনকি দেশের সফল উদ্যোক্তা, ব্যবসায়ী, সম্পাদক, সাংবাদিক, অধ্যাপক, সংসদ সদস্যসহ সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ এবং বিদেশি নাগরিকবৃন্দ বর্তমানে ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের ক্যাপস্টোন কোর্সে অংশগ্রহণ করছেন। ফলে আন্তর্জাতিক পরিপন্ডলে একটি চমৎকার সংহতির পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে।

    ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের উত্তোরত্তর সমৃদ্ধি কামণা করে প্রতিষ্ঠানটির উন্নয়নে তাঁর সরকারের পক্ষ থেকে সম্ভাব্য সবধরণের সহযোগিতারও প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী।

    তিনি বলেন, ‘স্বাভাবিকভাবে এটাতো আমি করবোই, কেননা এটা আমার হাতে গড়া প্রতিষ্ঠান। কাজেই এর প্রতি আমার একটা আলাদা আন্তরিকতা রয়েছে।’ সশস্ত্র বাহিনীকে আমাদের স্বাধীনতা এবং স্বার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রতীক আখ্যায়িত করে শেখ হাসিনা দেশের দুর্যোগকালীন জনগণের পাশে দাঁড়ানোর জন্য এর ভূমিকার ভূয়সী প্রসংসা করেন এবং তা ভবিষ্যতেও এ ধারা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।

    তিনি বলেন, ‘এদেশের জনগণের সেবা করাটা আমাদের সকলেরই দায়িত্ব। এই সাধারণ মানুষের অর্থেইতো আমাদের বেতন-ভাতা সবকিছু। কাজেই তাঁদের জীবনযাত্রাটা সুন্দর করাই আমাদের লক্ষ্য।’

    বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধশালী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য তাঁর সরকার একটি পরিকল্পিত উন্নয়নের পথে দেশকে পরিচালিত করছে উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, ‘একটি দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা নিয়েছি। আশু করণীয় কি- সেটাও আমরা ঠিক করেছি এবং ভবিষ্যতের বাংলাদেশকে কিভাবে গড়ে তুলবো সে পরিকল্পনাও আমরা প্রণয়ন করেছি।’ ভাত-মাছ, শাক-সবজী, ফলমূল, তরিতরকারী উৎপাদন বৃদ্ধি করে দেশকে উদ্বৃত্ত খাদ্যের দেশে পরিণত করায় তাঁর সরকারের সাফল্য তুলে ধরে এজন্য গবেষণায় অধিক গুরুত্ব প্রদান এবং কৃষি উপকরণকে সহজলভ্য এবং বিনামূল্যে অথবা স্বল্পমূল্যে কৃষকদের হাতে তুলে দেওয়ায় কথাও উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা । জাতির পিতার গুচ্ছগ্রাম কর্মসূচির আলোকে তাঁর সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ের সফল কর্মসূচি যেমন গৃহহীনকে ঘর প্রদানে ‘আশ্রয়ণ প্রকল্প’সহ দারিদ্র্য বিমোচনে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপেরও উল্লেখ করেন তিনি।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাত্র সাড়ে তিন বছরের শাসনামলে জাতির পিতা একটি যুদ্ধ বিধ্বস্থ দেশ পুণর্গঠনকালেই দেশকে স্বল্পোন্নত দেশের পর্যায়ে রেখে যেতে সমর্থ হন। যেখান থেকে আমরা এখন উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে গ্রাজুয়েশন লাভ করেছি। যা আমাদের ধরে রাখতে হবে আগামী ২০২৪ সাল পর্যন্ত। অবশ্য সেই ক্রাইটেরিয়া ইতোমধ্যেই অর্জিত হওয়ায় আমরা আরো সামনে এগিয়ে যেতে চাচ্ছি।

    প্রধানমন্ত্রী এ সময় তাঁর রাজনৈতিক অঙ্গীকার পুণর্ব্যক্ত করে বলেন, ‘আমরা আমাদের লক্ষ্য স্থির করেছি ২০২০ সালে জাতির পিতার জন্ম শতবার্ষিকী আমরা উদযাপন করবো। ২০২১ সালে স্বাধীনতার জয়ন্তীতে দেশকে মধ্যম আয়ের আয়ের এবং২০৪১ সাল নাগাদ দক্ষিণ এশিয়ার একটি উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলবো।’ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার পাশাপাশি ১০ বছর এবং ২০ বছর মেয়াদি প্রেক্ষিত পরিকল্পনার বাস্তবায়ন এবং আগামীর প্রজন্মকে সুন্দর জীবন দেওয়ার জন্য নেদারল্যান্ড সরকারের সহযোগিতায় শতবর্ষ মেয়াদি ‘ডেল্টা পরিকল্পনা-২১০০’ প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নের উদ্যোগের ও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

    শেখ হাসিনা বলেন, ‘যে দুঃখ ও দারিদ্র্য আমরা দেখেছি ভবিষ্যত প্রজন্মকে তা যেন আর দেখতে না হয় সেজন্য আমরা একটি সুন্দর বাংলাদেশ গড়ে রেখে যেতে চাই এবং উন্নয়নের এই ধারাবাহিকতা যেন অক্ষুণ্ন থাকে সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।’

    পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত এনডিসি ও ডিএসসিএসি এর পরিচালনা পর্ষদের যৌথ সভাতেও যোগদান করেন।