Tag: সাংসদ বাদল

  • শ্রদ্ধায় শেষ বিদায়, চির নিদ্রায় শায়িত সাংসদ বাদল

    শ্রদ্ধায় শেষ বিদায়, চির নিদ্রায় শায়িত সাংসদ বাদল

    পুজন সেন, বোয়ালখালী প্রতিনিধি: জাতীয় সমাজ তান্ত্রিক দল (জাসদ) কার্যকরী কমিটির সভাপতি চট্টগ্রাম-৮ আসনের সাংসদ মুক্তিযোদ্ধা মঈন উদ্দিন খান বাদলকে শ্রদ্ধায় শেষ বিদায় জানিয়েছেন তার নিজ এলাকার গ্রামবাসী।

    শনিবার (৯ নভেম্বর) রাতে সাংসদ বাদলকে চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার সারোয়াতলী গ্রামের বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে চির নিদ্রায় শায়িত করা হয়েছে।

    এর আগে শনিবার সকালে জাতীয় সংসদ প্লাজায় প্রয়াত মঈন উদ্দিন খান বাদলের ১ম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সড়ক পথে সাংসদ বাদলের মরদেহ চট্টগ্রাম নিয়ে আসা হয়। বাদ মাগরিব চট্টগ্রাম জমিয়তুল ফালাহ জামে মসজিদ ময়দানে নামাজে জানাজা শেষে সাংসদের মরদেহ সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় পৌছে নিজ গ্রাম বোয়ালখালীতে।

    উপজেলা স্মৃতি সৌধ চত্বরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (দক্ষিণ) আফরোজুল হক টুটুলের নেতৃত্বে জেলা পুলিশের একটি সু-সজ্জিত চৌকর্ষ দল রাষ্ট্রীয় গার্ড অব অনার প্রদান শেষে রাত ৮টায় বোয়ালখালী সিরাজুল ইসলাম ডিগ্রি কলেজ মাঠে বাদ এশা ৩য় বারের মতো নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

    এ সময় উপস্থিত ছিলেন, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদ, মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন, সাবেক সিডিএ চেয়ারম্যান কোষাধ্যক্ষ আবদুচ সালাম, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আবদুল কাদের সুজন, বিএনএফ চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল আলম, ভাইস চেয়ারম্যান এসএম সেলিম, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শামীম আরা বেগম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আছিয়া খাতুন, বোয়ালখালী পৌর মেয়র হাজী আবুল কালাম আবু, আওয়ামী লীগ নেতা রেজাউল করিম বাবুল, জেলা পরিষদ সদস্য মো. ইউনুচ, উপজেলা জাসদ সভাপতি মনির উদ্দিন খান, পৌর প্যানেল মেয়র এসএম মিজানুর রহমান, থানা অফিসার ইনচার্জ শেখ মোহাম্মদ নেয়ামত উল্লাহ পিপিএম, পুলিশ পরিদর্শক মুহাম্মদ হেলাল উদ্দিন ফারুকী, পূজা পরিষদ বোয়ালখালী শাখার সভাপতি শ্যামল বিশ্বাস প্রমুখ।

    উপজেলা চত্বরে রাখা সাংসদ বাদলকে জেলা পুলিশ, উপজেলা প্রশাসন, থানা প্রশাসনসহ উপজেলার বিভিন্ন সামাজিক রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

    এরপর রাত ৯টায় সারোয়াতলীর ইব্রাহীম নুর মোহাম্মদ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে চতুর্থ নামাজে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে সাংসদ বাদলের দাফন সম্পন্ন হয়।

    বৃহস্পতিবার ভোরে ভারতের ব্যাঙ্গালুর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টায় সাংসদ বাদলের মরদেহ ঢাকা বিমান বন্দরে পৌঁছায়।

  • জমিয়তুল ফালায় সাংসদ বাদলের দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত, শেষ শ্রদ্ধা জানাতে মানুষের ঢল

    জমিয়তুল ফালায় সাংসদ বাদলের দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত, শেষ শ্রদ্ধা জানাতে মানুষের ঢল

    ২৪ ঘন্টা চট্টগ্রাম ডেস্ক : মুক্তিযোদ্ধা, বর্ষীয়ান রাজনীতিক ও পার্লামেন্টারিয়ান মঈনউদ্দিন খান বাদলের দ্বিতীয় জানাজা চট্টগ্রাম নগরীতে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

    শনিবার (৯ নভেম্বর) বাদ মাগরিব নগরের জমিয়তুল ফালাহ মসজিদে ময়দানে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় জানাজায় ইমামতি করেন আওলাদে রাসুল (সাঃ) সৈয়দ মুহাম্মদ তাহের শাহ (মা.জি.আ) এর বড় শাহাজাদা হযরত মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ কাশেম শাহ (মা.জি.আ)। শনিবার ৫টা ৪০ মিনিটের দিকে ইমাম সাহেব জানাজা পড়ানো শুরু করেন।

    এর আগে বর্ষীয়ান এ রাজনীতিবিদকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে সর্বস্থরের মানুষের ঢল নামে জমিয়তুল ফালায়। ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে সারাদিনের মেঘলা আকাশ ও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করে মসজিদের দ্বিতীয় ও নিচতলায় অবস্থান নেন।

    জানাজায় অংশ নেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরী, সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী, আবু রেজা মোহাম্মদ নিজামুদ্দিন নদভী, মাহফুজুর রহমান মিতা, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এম এ সালাম, সাবেক সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম, বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুল মান্নান, সিএমপি কমিশনার মো. মাহাবুবর রহমান, জেলা জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেন প্রমুখ।

    জানাজায় অংশগ্রহণ নিতে জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ ময়দানে ছুটে আসেন চট্টগ্রাম নগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দরা। এছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক অরাজনৈতিক সংগঠনসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ বাদলকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে নগরীর জমিয়তুল ফালাহ মসজিদে ভিড় করেন।

    জানাজা শেষে বাদলের মরদেহে ফুল দিয়ে তারা শ্রদ্ধা নিবেদন করে। পরে পুলিশের পক্ষ থেকে মঈন উদ্দিন খান বাদলকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।

    এর আগে ঢাকায় প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। বাদলের ভাই মনির উদ্দিন খান জানিয়েছেন জানাজা শেষে ঢাকা থেকে সড়কপথে মঈন উদ্দিন খান বাদলের মরদেহ চট্টগ্রামের জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ ময়দানে আনা হয়। এখানে দ্বিতীয় জানাজা শেষে বর্ষীয়ান এ রাজনীতিবিদের মরদেহ নিজ এলাকা বোয়ালখালীর উদ্দ্যেশে নেয়া হচ্ছে।

    বোয়ালখালী সিরাজুল ইসলাম ডিগ্রি কলেজ ময়দানে তৃতীয় জানাজা এবং নিজ গ্রামে চতুর্থ জানাজা শেষ করে তার পারিবারিক কবরস্থানে পিতা-মাতার কবরের পাশে দাফন করা হবে।

    গত বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) বাংলাদেশ সময় সকাল ৭টা ৪৫ মিনিটে ভারতের বেঙ্গালোরে দেবী শেঠীর নারায়ানে হাসপাতালে মজুমদার ইউনিটে মারা যান বাদল। ৬৭ বছর বয়সে তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, তিন ছেলে ও এক মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

    গত ১৮ অক্টোবর থেকে ভারতে প্রখ্যাত হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ দেবী শেঠির তত্ত্বাবধানে ছিলেন তিনি। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, চিকিৎসাধীন অবস্থায় হার্টফেল করায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি।

    ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি জন্ম নেয়া মঈন উদ্দীন খান বাদল জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) একাংশের কার্যকরী সভাপতি ছিলেন। তিনি চট্টগ্রাম ৮ আসনের তিন তিন বারের সংসদ সদস্য। সংসদে অনলবর্ষী বক্তা হিসেবে খ্যাতি ছিল তার।
    ছাত্রলীগের রাজনীতি থেকে উঠে আসা বাদল ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন।

    বাঙালিদের ওপর আক্রমণের জন্য পাকিস্থান থেকে আনা অস্ত্র চট্টগ্রাম বন্দরে সোয়াত জাহাজ থেকে খালাসের সময় প্রতিরোধের অন্যতম নেতৃত্বদাতা ছিলেন বাদল।

    মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে বাদল সমাজতান্ত্রিক রাজনীতির প্রতি আকৃষ্ট হন। জাসদ, বাসদ হয়ে পুনরায় জাসদে আসেন। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৪ দল গঠনেও বাদলের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল।

  • সাংসদ বাদলের নামাজে জানাজা শনিবার

    সাংসদ বাদলের নামাজে জানাজা শনিবার

    বোয়ালখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি :

    সাংসদ মঈন উদ্দিন খান বাদলের নামাজের জানাজার সময়সূচি ঘোষণা করলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদ।

    সাংসদের পরিবারের সম্মতিতে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টায় সাংসদের গ্রামের বাড়ি খান মহলে প্রেস বিফিংয়ে তিনি এ সময়সূচি ঘোষণা দেন।

    তিনি জানান, চট্টগ্রাম-৮ আসনের সংসদ সদস্য মঈন উদ্দিন খান বাদলের মরদেহ ভারতের বেঙ্গালুর থেকে শুক্রবার (৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে এসে পৌঁছাবে। পরদিন শনিবার সকালে জাতীয় সংসদ প্লাজায় প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।

    শনিবার বিকেল ৩টায় চট্টগ্রামে জমিয়তুল ফালাহ্ জামে মসজিদ ময়দানে নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। বাদে আসর বোয়ালখালী সিরাজুল ইসলাম ডিগ্রি কলেজ মাঠে ও বাদে মাগরিব সারোয়াতলী ইব্রাহীম নূর মোহাম্মদ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে নামাজে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।

    এসময় উপস্থিত ছিলেন সাংসদের ছোট ভাই উপজেলা জাসদের সভাপতি মনির উদ্দিন খান, কামাল উদ্দিন খান মুকুল, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. নুরুল আলম, ভাইস চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা এসএম সেলিম, আওয়ামী লীগ নেতা নুরুল আমিন চৌধুরী, রেজাউল করিম বাবুল, ইউপি চেয়ারম্যান বেলাল হোসেন, মোহাম্মদ মোকারম, এসএম জসিম, কাজল দে, শফিউল আজম শেফু, পৌর প্যানেল মেয়র মিজানুর রহমান প্রমুখ।

    এর আগে সন্ধ্যায় দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদ সাংসদ বাদলের সরোয়াতলী খান মহলে যান। তিনি সাংসদ বাদলের মৃত্যুতে শোক জানিয়ে পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।

    এসময় তিনি বলেন, মঈন উদ্দিন খান বাদল পরিচ্ছন রাজনীতিবিদ ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে রাজনীতি অঙ্গনে যে শূণ্যতার সৃষ্টি হয়েছে তা পূরণ হবার নয়।

  • সেই চেয়ারে আর বসবেন না সাংসদ বাদল!

    সেই চেয়ারে আর বসবেন না সাংসদ বাদল!

    পুজন সেন, বোয়ালখালী :  চট্টগ্রাম-৮ আসনের সংসদ সদস্য মঈন উদ্দিন খান বাদলের মরদেহ দেশে আসবে কাল শুক্রবার (৮নভেম্বর)। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাংসদের ছোট ভাই মনির উদ্দিন আহমদ খান।

    সাংসদ বাদলের মৃত্যুর সংবাদে গ্রামের বাড়ি সারোয়াতলীর খান মহলে শুনশান নিরবতা। খান মহলের সামনে চলছে শেষ বারের মতো প্রিয়মুখ বাদলকে শ্রদ্ধার সাথে বিদায় জানানোর প্রস্তুুতি। খান মহলে অন্দরে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন তাঁর ভাই বোন স্বজনরা। ৫ ভাই ও ৩ বোনের মাঝে বাদল তৃতীয়।

    কথা হয় সাংসদের ছোট ভাই মনির উদ্দীন আহমদ খানের সাথে। তিনি ২৪ ঘন্টা ডট নিউজকে বলেন, বাড়িতে আসলে ড্রয়িং রুমে সেই চেয়ারে তিনি (বাদল) আর বসবেন না। ভাইটি সেতুর জন্য পদত্যাগ করবেন বলেছিলেন। পদত্যাগের আগেই পরপাড়ে চলে গেলেন তিনি।

    তিনি জানান, বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান পিপলস ত্রিদেশীয় কমিটির সেক্রেটারী জেনারেল হিসেবে এ কমিটি সভায় যোগ দিতে তিনি গত ১৮ অক্টোবর কলকাতা যান। এরপর ২৫ অক্টোবর বেঙ্গালুর নারায়ণা হৃদয়ালয়ে চেকআপ করাতে যান।

    সেখানে তাঁর এনজিওগ্রাম করা হয়। পরে তিনি দ্বিতীয়বারের মতো ব্রেন স্টোক করেন এবং তাঁর নিউমোনিয়া ধরা পরে। তখনই তাকে আইসিইউতে রাখা হয়েছিল।

    এরই মধ্যে বাড়ির পাশের পারিবারিক কবরস্থানে শায়িত পিতা-মাতার পাশেই দাফনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, মরদেহ দেশে পৌঁছলেই জানাযার সময় নির্ধারণ করা হবে।

  • নতুন কালুরঘাট সেতুর স্বপ্ন নিয়ে সাংসদ বাদলের পরপাড়ে পাড়ি

    নতুন কালুরঘাট সেতুর স্বপ্ন নিয়ে সাংসদ বাদলের পরপাড়ে পাড়ি

    পূজন সেন, বোয়ালখালী প্রতিনিধি : বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ মুক্তিযোদ্ধা সাংসদ মঈন উদ্দীন বাদল পরপারে পাড়ি জমিয়েছেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কালুরঘাটে সড়ক কাম রেল সেতুর দাবিতে অনড় ছিলেন। শুধুমাত্র কালুরঘাট সেতু নয়, বোয়ালখালীকে গড়তে চেয়েছিলেন আধুনিক মডেল উপজেলা হিসেবে।

    স্বপ্ন দেখেছিলেন সুখী সমৃদ্ধ অসম্প্রদায়িক বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের এ সৈনিক তার স্বপ্নের কথাগুলো বাস্তবায়ন করার জন্য আপ্রাণ আমৃত্যু চেষ্ঠা করে গেছেন।

    বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) ভোরে ৬৭ বছর বয়সে ভারতের বেঙ্গালুর নারায়ণা হৃদরোগ রিসার্চ এণ্ড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ সাংসদ মঈন উদ্দিন খান বাদল। তাঁর মৃত্যুর খবরে বোয়ালখালীর স্বর্বস্তরের মানুষের মাঝে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

    ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৮ আসন থেকে জাতীয় সমাজ তান্ত্রিক দল (জাসদ) কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যকরী সভাপতি সাংসদ মঈন উদ্দিন খান বাদল প্রথম সাংসদ নির্বাচিত হন। সংসদের অনর্গল বক্তা হিসেবে আপামর জনসাধাণের হৃদয় জয় করেন নেন তিনি। এর ধারাবাহিকতায় ২০১৪ ও ২০১৮ সালে নির্বাচনেও সাংসদ নির্বাচিত হন তিনি।

    শুরু থেকেই বোয়ালখালীকে স্বপ্নের উপজেলা গড়ার স্বপ্ন বুনেন তিনি। এ স্বপ্ন বাস্তবায়নে বড় বাধা কর্ণফুলী নদীর ওপর বিট্রিশ আমলে নির্মিত জরাজীর্ণ কালুরঘাট সেতু। সংসদে বারবার তিনি সড়ক সেতু নির্মাণের দাবি নিয়ে কথা বলেছেন।

    গত দুই বছর আগে শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে তিনি সরকারকে জানিয়ে দেন ‘কালুরঘাটে সেতু দেখে যেতে না পারলে মরেও শান্তি পাবো না’। ২০১৮ সালের নির্বাচনের জাতীয় সংসদের অধিবেশনে চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে সেতুর বিষয়ে সুরাহা না হলে সংসদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন তিনি।

    এ সেতু নির্মাণের প্রয়োজনে নিজ দল জাসদ ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগদানের কথা বলেছিলেন তিনি। যে কোনো কিছুর বিনিময়ে কালুরঘাটে সড়ক কাম রেল সেতু নির্মাণের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রামবাসীর প্রাণের দাবি পূরণ করতে চেয়েছিলেন এ সাংসদ। এই সড়ক কাম রেল সেতু জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে নামকরণের প্রস্তাব রেখেছিলেন সংসদে।

    সর্বশেষ গত ২৭ সেপ্টেম্বর কালুরঘাটে সড়ক কাম রেল সেতু নির্মাণের দাবিতে চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলা পরিষদ চত্বরে জাসদ আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথি’র বক্তব্যে সাংসদ মঈন উদ্দিন খান বাদল বলেছিলেন, সেতু নির্মাণের দায়িত্ব মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিয়েছেন। তিনি করবেন বলে আশা রাখি। বোয়ালখালী উপজেলাকে দেশের আধুনিক মডেল উপজেলা করবেন বলে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছিলেন। পৌর এলাকার ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের পাশে একটি কারিগরি বিদ্যালয় করার ঘোষণা দেন তিনি। এছাড়া বিগত দিনের স্বপ্ন অপূরণ থাকার কথা পুন ব্যক্ত করেছিলেন তিনি।

    এছাড়াও শুরু থেকে বোয়ালখালী উপজেলার পাহাড়ে অবস্থিত তিন ধর্মাবলম্বীদের তীর্থস্থান ঘিরে পর্যটন কেন্দ্র ও কমপ্লেক্স গড়ার স্বপ্ন দেখেছেন তিনি। এ স্বপ্নের কথাগুলো বিভিন্ন সভা সমাবেশে বারবার বলেছিলেন বর্ষীয়ান এ রাজনীতিবিদ। তিনি উপজেলা কড়লডেঙ্গা পাহাড়ের পাদদেশে পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারসহ ডাকবাংলো করার সার্বিক প্রস্তুতি নিয়েও তা নানা জটিলতার কারণে পূরণ হয়নি সাংসদের স্বপ্ন।

    ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার সারোয়াতলীতে তিনি জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি জাসদ একাংশের কার্যকরী সভাপতি ছিলেন। মৃত্যুকালে স্ত্রী, তিন ছেলে এক মেয়ে রেখে গেছেন তিনি।

    সাংসদের মৃত্যুতে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ বোয়ালখালী শাখার সভাপতি শ্যামল বিশ্বাস জানান, সাংসদ বাদলের মৃত্যুতে বোয়ালখালীবাসী একজন গুনী ব্যক্তিকে হারালো। তাঁকে আরো বেশ কিছুদিন বোয়ালখালীবাসীর প্রয়োজন ছিলো।

    বোয়ালখালী প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি রাজু দে বলেন, সাংসদ বাদল গণমানুষের মনের কথা সাবলীলভাবে সংসদে তুলে ধরতেন। তাঁর চিরবিদায়ে দেশের অপূরনীয় ক্ষতি হয়ে গেল।