Tag: সিটিটিসি

  • ছাত্রদল নেতার নেতৃত্বে বাসে আগুন, প্রতি ঘটনায় দেওয়া হতো বোনাস

    ছাত্রদল নেতার নেতৃত্বে বাসে আগুন, প্রতি ঘটনায় দেওয়া হতো বোনাস

    রাজধানীতে বিএনপির ডাকা অবরোধে যাত্রীবেশে বাসে উঠে আগুনের ঘটনার নির্দেশনায় জড়িত অভিযোগে এক কেন্দ্রীয় ছাত্রদল নেতাসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

    গ্রেপ্তাররা হলেন— ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সূত্রাপুর থানা ছাত্রদের যুগ্ম আহ্বায়ক আমির হোসেন রকি (২৫) ও তার সহযোগী সাকিব ওরফে আরোহান (২১)।

    পুলিশের দাবি, রাজধানীতে প্রতিটি বাসে আগুন দিলে পুরস্কার হিসেবে দেওয়া হতো টাকা। এমন অভিযোগে ছাত্রদল নেতা রকি ও সহযোগী সাকিবকে গ্রেপ্তার করে ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ইউনিট (সিটিটিসি)।

    গতকাল রোববার (৫ নভেম্বর) রাতে বাবুবাজার ব্রিজ এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে বোতল ভর্তি পেট্রোল উদ্ধার করা হয়।

    সোমবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সিটিটিসি প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান।

    তিনি বলেন, গত ১ নভেম্বর রাজধানীর মুগদাপাড়া আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে মিডলাইন বাসে কতিপয় রাজনৈতিক দুর্বৃত্ত যাত্রীবেশে আগুন দিয়ে পালানোর সময় আল আমিন নামে একজনকে হাতেনাতে আটক করা হয়।

    আল আমিন কার নেতৃত্বে কীভাবে বাসে আগুন দিয়েছে তা স্বীকার করেছে। এই ঘটনায় কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) গোয়েন্দা দল আল আমিনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। পরে সে বেশকিছু তথ্য দেয়।

    সিটিটিসির প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আল আমিন বলেন, তার নেতা মিজানুর রহমান। এই মিজানুরের নেতৃত্বে আরও দুজন কমলাপুর টিটিপাড়া থেকে বাসে ওঠে পেছনের সিটে গিয়ে বসে। এরপর সঙ্গে থাকা পেট্রোল ঢেলে বাসে আগুন দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। মিজানসহ ৩ জন পালিয়ে যেতে পারলেও স্থানীয়রা আল আমিনকে ধরে ফেলেন। পরে মিজানকে গাজীপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

    এরপর মিজানকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে সিটিটিসিকে জানায়, মহানগর ছাত্রদলের একজন নেতা আমির হোসেন রকির (২৫) নেতৃত্বে মিজান রাজনীতি করে। এই রকির নির্দেশনায় ও তত্ত্বাবধানে প্রথম দফায় মিডলাইন বাসসহ বেশ কয়েকটি বাসে আগুন দেওয়া হয়। এই নেতার কাছ থেকে সব রশদ পেয়ে চারজন বাসে আগুন দেওয়া শুরু করে। এর বাইরেও আরও বেশ কয়েকটি বাসে আগুন দিয়েছে তারা।

    প্রথম দিনের অবরোধে মিজান আল আমিনের কাছে বোতলে পেট্রোল ও টাকা দেয়। এসময় মিজান তাদের আশ্বস্ত করে যে, দল ক্ষমতায় আসতেছে। কোনো সমস্যা হবে না। বাস পোড়ানোর নির্দেশনা দেয়।

    কমলাপুরের টিটিপাড়া থেকে খিলগাঁও সড়কে চলাচল করা বাসে আগুন দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়। প্রতিটি বাসে আগুন দেওয়ার জন্য তিন হাজার টাকা বোনাস বিকাশ করে দেয়। পরে দ্বিতীয় দফা অবরোধে বাসে আগুন দেওয়ার জন্য ডাবল বোনাস ঘোষণা করা হয়।

    সিটিটিসি প্রধান বলেন, দ্বিতীয় দফা অবরোধে রাজধানীতে ১০টি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে। গতকালও (রোববার) রকির নির্দেশনায় দুটি বাসে আগুন দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি গতকাল রকির নির্দেশে যাত্রাবাড়ীর দয়াগঞ্জে আগুন দেওয়ার সময়ে হাতেনাতে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

    রকি তার সহযোগী সাকিবকে নিয়ে কেরানীগঞ্জে এলাকায় বাসে আগুন দেওয়ার উদ্দেশ্যে বিএনপির এক নেতার কাছে যাচ্ছিলেন। পরে আমরা তার পিছু নিয়ে বাবুবাজার ব্রিজ থেকে পেট্রোলসহ তাকে গ্রেপ্তার করি। তার কাছ থেকে আমরা বেশ তথ্য প্রমাণ পেয়েছি। সে কি কি কাজ করেছে এই দুই দফা অবরোধে, কার কার নির্দেশনা ছিল, কারা টাকা দিয়েছে সব তথ্য আমরা পেয়েছি।

    প্রথম দিনের অবরোধে কি পরিমাণ জ্বালাও পোড়াও করেছে সেই ফুটেজ আমরা তার মোবাইলে পেয়েছি। অবরোধ কর্মসূচিতে বাসে আগুন দিতে কার কার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে, কারা কারা সহযোগিতা করেছে আমরা সবার নাম পেয়েছি। আমরা রকির কাছ থেকে নির্দেশ দাতাদের তথ্য পেয়েছি। রকির নেতৃত্বে আরও কয়েকটি দল সক্রিয় রয়েছে।

    পুরস্কারের অর্থদাতা কারা জানতে চাইলে সিটিটিসি প্রধান বলেন, আমরা সবার তথ্য পেয়েছি৷ কিন্তু তদন্তের স্বার্থে কারো নাম প্রকাশ করছি না। তবে একে একে সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে এবং গণমাধ্যমের সামনে হাজির করা হবে।

  • জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার প্রতিষ্ঠাতা গ্রেপ্তার

    জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার প্রতিষ্ঠাতা গ্রেপ্তার

    জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার প্রতিষ্ঠাতা শামিন মাহফুজ (মোস্ট ওয়ান্টেড জঙ্গি) ও তার স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের সদস্যরা।

    শুক্রবার রাতে রাজধানীর ডেমরা থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও বিস্ফোরকসহ তাদের গ্রেপ্তার করা হয়ে।

    রাতে ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগ থেকে পাঠানো এক বার্তায় এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

    এ বিষয়ে ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের (সিটিটিসি) প্রধান ও অতিরিক্ত কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, আজ রাতে ডেমরা এলাকায় অভিযান চালিয়ে শামিন মাহফুজ ও তার স্ত্রী ফাতিমাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য শনিবার সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জানানো হবে।

  • জঙ্গি ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা হয় ৬ মাস আগে : সিটিটিসি

    জঙ্গি ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা হয় ৬ মাস আগে : সিটিটিসি

    নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের পরিকল্পনায় ও নির্দেশে ঢাকার আদালত পাড়া থেকে দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) কর্মকর্তারা। আর ঘটনার ৬ মাস আগে থেকে এ নিয়ে পরিকল্পনা করা হয় বলেও জানানো হয়।

    আজ শনিবার (৮ এপ্রিল) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে সিটিটিসি প্রধান মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, শুক্রবার (৭ এপ্রিল) ঢাকার কোতয়ালি থানার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত প্রাঙ্গন থেকে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলেন ফাতেমা তাসনীম ওরফে শিখা ও হুসনা আক্তার ওরফে হুসনা। ফাতেমা তাসনীম শিখা ২০১৪ সালে প্রথম শ্রেণিতে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পন্ন করেন। একপর্যায়ে তার ভাই মোজ্জাম্মেল হোসেন ওরফে সাইমনের মাধ্যমে সে আনসার আল ইসলামের আদর্শে দীক্ষিত হয় এবং পরবর্তীতে সায়মনের মাধ্যমে আবু সিদ্দীক সোহেলের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। সোহেল আনসার আল ইসলামের সামরিক (আসকারি) শাখার সদস্য ছিলেন।

    তিনি বলেন, সোহেলের সঙ্গে বিয়ের পর থেকে সে আরও গভীরভাবে সংগঠনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। ২০১৭ সালে মুক্তমনা ব্লগার অভিজিত রায়, দিপন ও নীলাদ্রি নিলয় হত্যা মামলার আসামি হিসেবে আবু সিদ্দিক সোহেল গ্রেপ্তার হয়। গ্রেপ্তারের পর থেকে বিভিন্ন অ্যাপসের মাধ্যমে শিখা কারাবন্দি সোহলসহ সংগঠনের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রেখে সংগঠনের কার্যক্রমে সক্রিয় অংশগ্রহণ শুরু করে। আনসার আল ইসলামের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের পরিকল্পনা ও নির্দেশনা মোতাবেক গত বছরের ২০ নভেম্বর আদালতের কার্যক্রম শেষে পুলিশের ওপর আক্রমণ করে জঙ্গি ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করা হয়। শিখা এ কার্যক্রমে প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ করে।

    তিনি আরও জানান, পরিচয় গোপন করে আনসার আল ইসলামের সদস্যরা জঙ্গি ছিনতাইয়ের পুরো পরিকল্পনা, প্রস্তুতি ও সমন্বয় করার উদ্দেশ্যে ঢাকা এবং এর পাশের জেলায় একাধিক আনসার হাউস ভাড়া নেয়। সেখানে আনসার আল ইসলামের শীর্ষ এবং সামরিক শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা আয়মান এবং শিখাসহ অজ্ঞাতনামা আনসার আল ইসলাম সদস্যদের নিয়ে নিয়মিত মিটিং করত।

    আসাদুজ্জামান বলেন, ঘটনার প্রায় ৬ মাস আগে থেকে জঙ্গি ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করা হয়। কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে সিএমএম কোর্টে হাজিরা দেওয়ার সময় এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত হয় এবং পরিকল্পনার সমন্বয়ক হিসেবে শিখাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। পরবর্তীতে ঘটনার দিন সে সিএমএম কোর্ট এলাকায় এসে পৌঁছে কৌশলে তার বাবার কাছ থেকে বিছিন্ন হয়ে ছিনতাইয়ের ঘটনায় নেতৃত্ব দেওয়া মশিউর রহমান ওরফে আয়মান’সহ আনসার আল ইসলামের সদস্যের সাথে যোগাযোগ করে পুরো পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সক্রিয় অংশগ্রহণ করে।২০ নভেম্বর দুপুর সোয়া ১২টার দিকে ঢাকার নিম্ন আদালত প্রাঙ্গণ থেকে পুলিশের চোখে স্প্রে মেরে প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপন হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গি আনসারুল্লাহ বাংলাটিমের সদস্য আবু সিদ্দিক সোহেল ও মইনুল হাসান শামীমকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়।

    এ ঘটনায় রাতে ২০ জঙ্গিকে আসামি করে মামলা করেন পুলিশ পরিদর্শক জুলহাস উদ্দিন আকন্দ।

  • ‘লাদেন ও মোল্লা ওমরের সঙ্গে যুদ্ধ করা’ ফখরুল ধরেছে হুজির হাল!

    ‘লাদেন ও মোল্লা ওমরের সঙ্গে যুদ্ধ করা’ ফখরুল ধরেছে হুজির হাল!

    ফখরুল ইসলাম (৫৮)। ১৯৮৮ সালে আফগানিস্তানে যুদ্ধে যান। সেখানে আল কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেন ও মোল্লা ওমরের সঙ্গে একাধিকবার সাক্ষাৎ করেছেন। এছাড়া তাদের সঙ্গে যুদ্ধও করেছেন ফখরুল। এরপর ভারত হয়ে তিনি দেশে ফেরেন।

    নব্বই দশকে নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশের (হুজি-বি) সঙ্গে যোগ দেন। ২০০৫ সালে প্রথম গ্রেফতার হন তিনি। এরপর থেকে পলাতক ছিলেন। সাম্প্রতিক সময়ে ফের হুজির হাল ধরেন ফখরুল। সদস্য সংগ্রহের পাশাপাশি ঘরে বসেই বোমা তৈরি করে দেশে বড় হামলার পরিকল্পনা করেছিল তার নেতৃত্বে সংগঠিত হওয়া হুজি সদস্যরা। গতকাল শুক্রবার (২৭ জানুয়ারি) ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে হুজবির ছয় সদস্যকে গ্রেফতার করে সিটিটিসি।

    শনিবার (২৮ জানুয়ারি) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের অতিরিক্ত কমিশনার (সিটিটিসি) আসাদুজ্জামান এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।

    গ্রেফতাররা হলেন- ফখরুল ইসলাম (৫৮), মো. সাইফুল ইসলাম (২৪), সুরুজ্জামান (৪৫), হাফেজ আব্দুল্লাহ আল মামুন (২৩), দীন ইসলাম (২৫) এবং মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন (৪৬)। এসময় তাদের কাছ থেকে জঙ্গি কর্মকাণ্ডে ব্যবহৃত ৯টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে বলেও জানায় সিটিটিসি।

    আসাদুজ্জামান জানান, হুজির মুফতি হান্নানসহ একাধিক নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি গ্রেফতার হওয়ায় হরকাতুল জিহাদ সংগঠনটি নেতৃত্ব শূন্য হয়ে যায়। কিন্তু এই ফখরুল ইসলাম হুজির সদস্য সংগ্রহ ও অর্থ সংগ্রহ করা এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন।

    কে এই ফখরুল ইসলাম

    আফগানিস্তান থেকে জঙ্গি বিষয়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হুজি নেতা মো. ফখরুল ইসলাম ১৯৮৮ সালে গাজীপুর জেলার টঙ্গী থানাধীন তামিরুল মিল্লাত মাদ্রাসায় তিনি দারোয়ানের চাকরি করতেন। পরবর্তীতে ১৯৮৮ সালে কাজের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ থেকে পাকিস্তানের করাচি যান। তিনি পাকিস্তানে অবস্থানকালে বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত মুফতি জাকির হোসেনের সঙ্গে পরিচয় হয়। মুফতি জাকির হোসেন যিনি পাকিস্তানের করাচিতে ইসলামীয়া মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল এবং আল কায়েদার সামরিক কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন।

    মুফতি জাকির আল কায়েদা সংগঠনের জিহাদি ট্রেনিংয়ের কমান্ডার। মুফতি জাকির জিহাদের দাওয়াত দিলে ফখরুল ইসলাম দাওয়াত গ্রহণ করেন। ফখরুল ইসলাম জিহাদি ট্রেনিংয়ে অংশগ্রহণের জন্য মুফতি জাকিরের সঙ্গে একাধিকবার পাকিস্তান থেকে আফগানিস্তানের কান্দাহার শহরে দীর্ঘকালীন প্রশিক্ষণে যান।

    আফগানিস্তানে অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র প্রশিক্ষণ নেয় ফখরুল

    ফখরুল ওই ট্রেনিংয়ে বিভিন্ন অস্ত্র প্রশিক্ষণের পাশাপাশি অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র- একে-৪৭, এলএমজি ও রকেট লঞ্চার পরিচালনা শেখেন। ট্রেনিংয়ের সময় কান্দাহারের সমশেদ পাহাড়ে তিনি নিয়মিত ফায়ারিং অনুশীলন করতেন। অনুশীলনের সময় ফখরুল ইসলাম একে-৪৭সহ সশস্ত্র অবস্থায় প্রশিক্ষণ এলাকায় ৪ ঘণ্টা করে সিকিউরিটি গার্ডের ডিউটি করতেন।

    ওসামা বিন লাদেন ও মোল্লা ওমরের সঙ্গে ফখরুলের সাক্ষাৎ

    সিটিটিসি প্রধান আসাদুজ্জামান আরও বলেন, ওই সময়ে ফখরুল আল কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেন ও মোল্লা ওমরের সঙ্গে একাধিকবার সাক্ষাৎ করেন। তিনি আফগানিস্তানে বিভিন্ন মেয়াদে জিহাদি ট্রেনিং করার পর আবার পাকিস্তানের করাচিতে ফিরে আসেন। করাচি থেকে ১৯৯৫ সালে ইরানের রাজধানী তেহরান যান। প্রায় তিন বছর সেখানে থাকার পর করাচিতে ফিরে আসেন। পরে ইসলামাবাদ থেকে ভারতের ভিসা নিয়ে ১৯৯৮ সনে বাংলাদেশে চলে আসেন।

    যেভাবে হুজিকে পুনর্গঠন করতে চেয়েছিলেন ফখরুল

    সিটিটিসির এই কর্মকর্তা বলেন, সিটিটিসির জঙ্গি কার্যক্রম বিরোধী অপারেশন চলমান থাকায় এবং নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদের মুফতি হান্নানসহ একাধিক নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি গ্রেফতার হওয়ায় হরকাতুল জিহাদ সংগঠনটি নেতৃত্বশূণ্য হয়ে যায়। এরই ধারাবাহিকতায় দেশে এসে ফখরুল ইসলাম জঙ্গি কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে নতুন সদস্য সংগ্রহ ও বাংলাদেশে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদের (হুজি) সদস্য সংগ্রহ, অর্থ সংগ্রহ করা এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দাওয়াতী কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন।

    বিভিন্ন এনক্রিপটেড আ্যপস ব্যবহারে যোগাযোগ

    ফখরুল সাংঠনিক কার্যক্রম স্বশরীরে ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযাগ মাধ্যম ব্যবহার করে অব্যাহত রাখেন। তিনি অত্যাধুনিক সামাজিক যোগাযাগ মাধ্যমে এনক্রিপটেড আ্যপ Bip ব্যবহারের মাধ্যমে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে বিদেশে অবস্থানরত প্রবাসীদের এবং বাংলাদেশের অন্যান্য হুজি সদস্যদের সঙ্গে উগ্রবাদী ও আক্রমণাত্মক বিষয়ে আলোচনা করে ম্যাসেজ আদান প্রদান করেন। যে কোনও সময় বাংলাদেশের গুরুপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে বড় ধরনের জঙ্গি হামলা পরিচালনার বিষয়ে নিজেদের মধ্যে পরিকল্পনা করেন।

    রোহিঙ্গাদের রিক্রুট ও পাহাড়ি এলাকায় প্রশিক্ষণ ক্যাম্প করতে চেয়েছিল হুজি

    বাংলাদেশের হুজি সদস্যদের বান্দরবান পাহাড়ি এলাকায় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা করেছিল গ্রেফতার ব্যক্তিরা। ফখরুল ও তার ছেলে গ্রেফতার আসামি মো. সাইফুল ইসলাম অন্যান্য হুজি সদস্যদের নিয়ে একাধিকবার কক্সবাজার জেলায় অবস্থিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের তাদের সংগঠনে রিক্রুটের উদ্দেশ্যে এবং জিহাদি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রাণিত করার উদ্দেশ্যে তাদের বিভিন্ন মোটা অংকের টাকা অনুদান প্রদান করেন।

    গ্রেফতার অপর আসামি হাফেজ মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সিকিউরড এনক্রিপটেড আ্যপ ব্যবহার করে টেলিগ্রাম গ্রুপ ’মোরা সত্যের সৈনিক’এর এডমিন ‘অস্থায়ী মুসাফির’ হিসাবে ছদ্মনাম ধারণ করে গ্রুপটি পরিচালনা করে।

    আসাদুজ্জামান আরও বলেন, মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন আ্যপসে নিজেকে মামুনুল হিসেবে ছদ্মনাম ধারণ করেন। হাফেজ মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন টেলিগ্রাম আ্যপসের মাধ্যমে বিদেশে অবস্থানরত প্রবাসীদের এবং বাংলাদেশের অন্যান্য হুজি সদস্যদের সঙ্গে উগ্রবাদী ও আক্রমণাত্মক বিষয়ে আলোচনা করে ম্যাসেজ আদান প্রদান করেন।

    যেভাবে দেওয়া হতো বোমা বানানোর প্রশিক্ষণ

    নিষিদ্ধ ঘোষিত হুজির একটি এনক্রিপটেড আ্যপের প্রাইভেট চ্যানেল ’একটু প্রস্তুতির’ কনটেন্ট হিসেবে ’একটি বোমা তৈরি করো তোমার মায়ের রান্নার ঘরে শীর্ষক ১০ পাতার ডকুমেন্ট এবং একই চ্যানেল থেকে টাইম বোমা বানানো বাংলা বিবরণীসহ ভিডিও শেয়ার করে। আব্দুল্লাহ আল মামুন ওই এনক্রিপটেড আ্যপ্সের চ্যানেল থেকে প্রাপ্ত কনটেন্ট তার সংগঠনের পরিচিত দুই একজনকে হাতে কলমে বোমা বানানোর প্রশিক্ষণ লাভের উদ্দেশ্যে এবং বোমা বানানোর নির্দেশনা দিয়ে শেয়ার করেছে।

    রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দাওয়াতি তৎপরতা

    পুনরায় হুজি সংগঠনের পর রোহীঙ্গা ক্যাম্পে দাওয়াতি কার্যক্রম চালিয়েছে চক্রটি। সেখান থেকে রোহিঙ্গাদের তাদের দলে নিতে তারা কাজ করেছেন বলেও জানান সিটিটিসি।

  • জঙ্গি ছিনিয়ে নেওয়ার নেতৃত্ব দেওয়া ব্যক্তি শনাক্ত

    জঙ্গি ছিনিয়ে নেওয়ার নেতৃত্ব দেওয়া ব্যক্তি শনাক্ত

    ঢাকার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত প্রাঙ্গণ থেকে প্রকাশক দীপন হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামিকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় নেতৃত্ব দেওয়া ব্যক্তিকে শনাক্ত করেছে ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি)।

    সোমবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের এ কথা জানান সিটিটিসি প্রধান মো. আসাদুজ্জামান।

    তিনি বলেন, গতকাল রোববার আদালত থেকে দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেওয়ার নেতৃত্ব দেওয়া ব্যক্তির নাম আমরা পেয়েছি। তাকে শনাক্ত করা হয়েছে। তার সঙ্গে আরও কারা কারা ছিল এরকম বেশ কয়েকজনের নাম আমরা পেয়েছি। কিন্তু এই মুহূর্তে তদন্তের স্বার্থে ব্যক্তির নাম পরিচয় আমরা বলতে চাচ্ছি না।

    সিটিটিসি প্রধান বলেন, জঙ্গিদের ছিনিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা কীভাবে হয়েছে সেটাও আমরা গোয়েন্দার মাধ্যমে জানতে পেরেছি। পরিকল্পনা ও অপারেশনে কারা কারা ছিল এরই মধ্যে গোয়েন্দা তথ্যে আমরা নিশ্চিত হতে পেরেছি। তাদের যতদ্রুত সম্ভব গ্রেফতার করা আমাদের মূল লক্ষ্য।

    জঙ্গিদের টার্গেট শুধু চারজনই ছিল নাকি আরও জঙ্গি ছিনিয়ে নেওয়ার টার্গেট ছিল, এমন প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান বলেন, চারজনকে নেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল তবে দুজনকে তারা নিয়ে যায়। প্রথমে চারজন নেমেছে, তাদেরই তারা নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল। যদি একসঙ্গে বেশি নামতো তাদেরও নিয়ে যেতো হয়তোবা, এমন পরিকল্পনা থাকতে পারে। অপারেশনে যারা ছিল তাদের গ্রেফতার করলে পুরো পরিকল্পনা জানা যাবে।

    তাদের আরও বড় পরিকল্পনা থাকলেও থাকতে পারতো বলে জানান তিনি।

    সিটিটিসি প্রধান আরও বলেন, আদালতে হাজিরা দিতে আসেন আনসার আল ইসলামের শীর্ষ পর্যায়ের জঙ্গিরা। প্রত্যেক আসামিই জঙ্গি সংগঠনের কাছে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। সব সদস্যকে সিটিটিসি ২০১৬ সালে গ্রেফতার করেছিল। গ্রেফতারের মাধ্যমে তাদের বেশকিছু অপারেশন ও হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচিত ও উদঘাটিত হয়েছিল। তাদের পুনরায় গ্রেফতার করা আমাদের কাছে একইভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

    এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তবে রেড অ্যালার্ট বলতে কোনো শব্দ পুলিশি ভাষায় আছে বলে আমার মনে হয় না। আমরা প্রত্যেকটা পয়েন্টকে সতর্ক করে দিয়েছি। যেন করে পলাতক জঙ্গিরা পালিয়ে যেতে অথবা কোনোভাবে দেশত্যাগ করতে না পারে, সব ব্যবস্থা পুলিশের উচ্চপর্যায় থেকে নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও আইজিপি ঘোষণা দিয়েছেন তাদের ধরিয়ে দিতে পারলে ২০ লাখ টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে। একই সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সব সদস্যকে সতর্ক করা হয়েছে। যেন কোনোভাবেই পলাতক জঙ্গিরা নিরাপত্তার ফাঁকে পালিয়ে যেতে না পারে।

    সেনাবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক ওরফে মেজর জিয়াকে নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সিটিটিসি প্রধান আসাদুজ্জামান বলেন, অপারেশনের নেতৃত্ব জিয়া দেননি। যে অপারেশনের নেতৃত্ব দিয়েছে তাকে আমরা শনাক্ত করেছি। তবে তার নামটি এই মুহূর্তে প্রকাশ করতে চাচ্ছি না।

    জঙ্গি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় নতুন জঙ্গি সংগঠনের সম্পৃক্ততা আছে কি না এমন এক প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান বলেন, নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলাম, জেএমবি ও হরকাতুল জিহাদের বিভিন্ন পর্যায়ের সদস্যদের নিয়ে নতুন জঙ্গি সংগঠনটি তৈরি হয়েছে। আনসার আল ইসলামেরও নতুন জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যোগসূত্র পেয়েছি। তবে গতকালের জঙ্গি ছিনিয়ে নেওয়ার অপারেশনে নতুন জঙ্গি সংগঠনের কোনো হাত নেই।

    এর আগে রোববার (২০ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত প্রাঙ্গণ থেকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামিকে ছিনিয়ে নিয়ে যায় জঙ্গিরা। এসময় আসামি আরাফাত ও সবুরকে ছিনিয়ে নিতে চেষ্টা করে জঙ্গিরা। পরে ঘটনাস্থল আরাফাত ও সবুরকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় কোর্ট পরিদর্শক জুলহাস বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞানামা আসামি করা হয় আরও ৭-৮ জনকে।

    কোতোয়ালি থানায় করা মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য আসামিদের ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করে পুলিশ। শুনানি শেষে বিচারক প্রত্যেকের ১০ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

    মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, আনসার আল ইসলামের সামরিক শাখার নেতা সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল হক ওরফে সাগর ওরফে বড় ভাই ওরফে মেজর জিয়ার (চাকরিচ্যুত মেজর) পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় আয়মান ওরফে মশিউর রহমান (৩৭), সাব্বিরুল হক চৌধুরী ওরফে আকাশ ওরফে কনিক (২৪), তানভীর ওরফে সামশেদ মিয়া ওরফে সাইফুল ওরফে তুষার বিশ্বাস (২৬), রিয়াজুল ইসলাম ওরফে রিয়াজ ওরফে সুমন (২৬) ও মো. ওমর ফারুক ওরফে নোমান ওরফে আলী ওরফে সাদ (২৮) পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে আসামিদের ছিনিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করে।

    এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দুটি মোটরসাইকেলযোগে আনসার আল ইসলামের অজ্ঞাতনামা ৫/৬ জন সদস্য অবস্থান নেয়। এছাড়াও আদালতের আশপাশে অবস্থান করা অজ্ঞাতনামা আরও ১০/১২ জন আনসার আল ইসলামের সদস্য আদালতের

    মূল ফটকের সামনে অবস্থান করে। এরপর তারা পুলিশের কাছ থেকে আসামি ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

    মামলার এজাহারে আরও বলা হয়, রোববার সকাল ৮টা ৫ মিনিটে কাশিমপুর থেকে ১২ জন আসামিকে ঢাকার আদালতে প্রিজন ভ্যানে নিয়ে আসা হয়। সকাল ৯টা ৪০ মিনিটের দিকে ঢাকার প্রসিকিউশন বিভাগে আসামিদের হাজিরা দেওয়ার জন্য সিজেএম আদালত ভবনের সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনাল ৮-এ নিয়ে যাওয়া হয়।

    এ মামলার শুনানি শেষে জামিনে থাকা ১৩ নম্বর আসামি মো. ঈদী আমিন (২৭) ও ১৪ নম্বর আসামি মেহেদী হাসান অমি ওরফে রাফি (২৪) আদালত থেকে বের হয়ে যায়।

    এরপর বেলা ১১টা ৫৫ মিনিটের দিকে আদালতের মূল ফটকের সামনে পৌঁছানো মাত্র আগে থেকেই দুটি মোটরসাইকেলযোগে অজ্ঞাতনামা আনসার আল ইসলামের ৫/৬ জন সদস্য, আদালতের আশপাশে অবস্থানরত আনসার আল ইসলামের আরও ১০/১২ জন সদস্য হামলা করে। তারা কনস্টেবল আজাদের হেফাজতে থাকা আসামি মইনুল হাসান শামিম ওরফে সিফাত ওরফে সামির ওরফে ইমরান (২৪), মো. আবু সিদ্দিক সোহেল (৩৪) মো. আরাফাত রহমান (২৪) ও মো. আ. সবুর ওরফে রাজু ওরফে সাদ ওরফে সুজনকে (২১) ছিনিয়ে নিতে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের হত্যার উদ্দেশ্যে আক্রমণ করে।

    কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যরা তাদের কর্মকাণ্ডে বাধা দিলে আসামিদের মধ্যে কোনো একজন তার হাতে থাকা লোহা কাটার যন্ত্র দিয়ে কনস্টেবল আজাদের মুখে আঘাত করে।

  • শিবির সন্দেহেই আবরারকে হত্যা করা হয়েছে

    শিবির সন্দেহেই আবরারকে হত্যা করা হয়েছে

    বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের মেধাবী শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে শিবির সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ইউনিটের (সিটিটিসি) প্রধান মনিরুল ইসলাম।

    সোমবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।

    গত ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলে আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করে ছাত্রলীগের একদল নেতা-কর্মী। এরপর ১৯ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন আবরারের বাবা। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

    মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘আবরার হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ১৯ জন আসামির মধ্যে চারজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আসামিদের জবানবন্দিতে বলা হয়, মূলত শিবির সন্দেহেই আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তবে তাকে মেরে ফেলার জন্য পেটানো হয়েছে নাকি হুমকি-ধমকি দেওয়ার জন্য পেটানো হয়েছে সেটি আমরা এখনো নিশ্চিত হতে পারিনি।’

    সিটিটিসি প্রধান বলেন, ‘আগামী নভেম্বর মাসের শুরুর দিকেই আবরার হত্যা মামলার তদন্ত কাজ শেষ হবে। নভেম্বর মাসেই মামলার চার্জশিট আদালতে দাখিল করবে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।’

    আবরার হত্যাকাণ্ডের দিন পুলিশের টহলদল ছিল কি-না জানতে চাইলে মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনার দিন রাত তিনটা পর্যন্ত বুয়েট এলাকায় পুলিশের একটি টিম টহল দেয়। কিন্তু তারা এ সময় কোনো শব্দ পায়নি।’