Tag: সিরিয়া

  • বিমান দুর্ঘটনায় নিহত বাশার আল-আসাদ!

    বিমান দুর্ঘটনায় নিহত বাশার আল-আসাদ!

    সিরিয়ায় বিদ্রোহীদের তড়িৎগতির আক্রমণের মুখে দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় থাকা প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের শাসনের অবসান ঘটেছে। দেশটির ইসলামপন্থী সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) রোববার এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘‘রাজধানী দামেস্ক এখন আসাদ মুক্ত।’’ বিদ্রোহীদের দামেস্কের প্রাণকেন্দ্রে ঢুকে পড়ার সময় ব্যক্তিগত একটি বিমানে করে উড়াল দিয়েছেন বাশার-আল আসাদ। কিন্তু বর্তমানে তিনি কোথায় রয়েছেন, সেই বিষয়ে বিস্তারিত কোনও তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না।

    তবে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, বাশার-আল আসাদ সম্ভবত সিরিয়ার বাইরে রয়েছেন।

    যদিও সিরিয়ার দুটি নিরাপত্তা সূত্রের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলেছে, প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের বিমান দুর্ঘটনার মারা যাওয়ার উচ্চ সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ দামেস্ক থেকে তাকে বহনকারী বিমানটি উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পর উপকূলীয় এলাকায় গিয়ে অনেকটা আকস্মিকভাবে দিক পরিবর্তন করে। বিমানের এই দিক পরিবর্তন নিয়ে রহস্য তৈরি হয়েছে।

    বিশ্বজুড়ে বিমানের চলাচল পর্যবেক্ষণকারী ওয়েবসাইট ফ্লাইটরাডার বলছে, আসাদকে বহনকারী বিমানটি সিরিয়ার মানচিত্র থেকে অদৃশ্য হয়ে গেছে।

    ফ্লাইটরাডারের তথ্য অনুযায়ী, বিদ্রোহীরা সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের দখল নেওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ার পরপরই একটি বিমান দামেস্ক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়ন করেছে। বিমানটি প্রাথমিকভাবে সিরিয়ার উপকূলীয় অঞ্চলের দিকে উড়েছিল। ওই অঞ্চলটিতে আসাদ-সমর্থিত আলাউইত সম্প্রদায়ের শক্ত ঘাঁটি রয়েছে। কিন্তু সেখানকার আকাশে পৌঁছানোর পর আকস্মিক ইউ-টার্ন নেয় বিমানটি। এরপর কয়েক মিনিটের জন্য বিপরীত দিকে উড়ে যায় এবং কিছুক্ষণ পর মানচিত্র থেকে অদৃশ্য হয়ে যায় বিমানটি।

    তবে দামেস্ক থেকে উড্ডয়ন করা ওই বিমানে প্রেসিডেন্ট বাশার-আল আসাদ ছিলেন কি না তা তাক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হতে পারেনি রয়টার্স। যদিও সিরিয়ার নিরাপত্তা সূত্র রয়টার্সকে বলেছে, প্রেসিডেন্ট আসাদের বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। তার বিমানটি কেন আকস্মিক ইউটার্ন নিয়েছে, সেটি ঘিরে রহস্য তৈরি হয়েছে।

    সিরিয়ার লৌহশাসক বাশার আল-আসাদের পতনের সাথে সাথে দেশজুড়ে আনন্দ-উল্লাসে মেতে উঠেছেন লাখ লাখ মানুষ। দেশটির প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ গাজী আল জালালি সিরিয়ায় অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠানের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এই নির্বাচনের মাধ্যমে সিরীয় নাগরিকরা তাদের নেতা বেছে নেবেন।

    জালালি বলেছেন, দেশের এই ক্রান্তিকাল অতিক্রমের জন্য তিনি বিদ্রোহী কমান্ডার ইসলামপন্থী সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) প্রধান আবু মোহাম্মদ আল-জোলানির সাথে আলোচনার জন্য যোগাযোগ করেছেন। যা দেশটির রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ গঠনের প্রচেষ্টায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

    প্রেসিডেন্ট বাশার-আল আসাদের পাশাপাশি তার সন্তান ও ক্যানসার আক্রান্ত স্ত্রী আসমা কোথায় রয়েছেন, তা এখনও জানা যায়নি। তবে সিরিয়ার এই প্রেসিডেন্ট মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতে পৌঁছেছেন বলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়লেও আমিরাতের প্রেসিডেন্টের কূটনৈতিক উপদেষ্টা আনোয়ার গারগাশ বলেছেন, আসাদ সংযুক্ত আরব আমিরাতে আছেন কি না, তা তিনি জানেন না।

    বাহরাইনের মানামা সংলাপে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আনোয়ার গারগাশ সংযুক্ত আরব আমিরাতে আসাদ আশ্রয় নিতে পারেন এমন জল্পনার বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি অস্বীকৃতি জানান।

    তিনি বলেন, ‘‘লোকজন জানতে চাইছেন, বাশার আল-আসাদ কোথায় যাচ্ছেন? সত্যিই দিনের শেষে এটি ইতিহাসের একটি পাদটীকা। আমি এটিকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করি না। যেমনটা আমি বলেছি, শেষ পর্যন্ত এটি বড় ঘটনার এক পাদটীকা।’’

  • তুরস্ক-সিরিয়ায় ফের শক্তিশালী ভূমিকম্প

    তুরস্ক-সিরিয়ায় ফের শক্তিশালী ভূমিকম্প

    তুরস্ক-সিরিয়া সীমান্তে ফের শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ৬ দশমিক ৪ বলে জানিয়েছে ইউরোপিয়ান মেডিটেরিয়ান সেন্টার।

    কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

    খবরে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টা ৪ মিনিটে দক্ষিণাঞ্চলীয় হাতায় প্রদেশের দেফনে শহরে এ ভূমিকম্প আঘাত হানে। ভূপৃষ্ঠ থেকে ভূমিকম্পটির গভীরতা ছিল মাত্র ২ কিলোমিটার। ভূমিকম্পের তীব্রতা ২০০ কিলোমিটার উত্তরের আন্তাকিয়া ও আদানা শহরেও অনুভূত হয়।

    প্রথম ভূমিকম্পটির কয়েক মিনিট পর হাতায়ের সামান্দাগ জেলায় ৫ দশমিক ৮ মাত্রার আরেকটি ভূমিকম্প আঘাত হানে বলে জানিয়েছে দেশটির জরুরি ব্যবস্থাপনা সংস্থা। তবে প্রাথমিক কোনো প্রাণহানি বা ক্ষয়ক্ষতির খবর জানা যায়নি।

    তুরস্কের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আনাদুলু জানিয়েছে, ভূমিকম্প পার্শ্ববর্তী জর্ডান, ইসরায়েল, মিশরেও অনুভূত হয়েছে।

    গত ৬ ফেব্রুয়ারি তুরস্ক-সিরিয়া সীমান্তে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার একটি ভূমিকম্প আঘাত হানে। এর কয়েক মিনিট পর ৭ দশমিক ৬ মাত্রার আরেকটি শক্তিশালী ভূমিকম্প হয়। এতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৪৭ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ঘরছাড়া হয়েছেন কয়েক লাখ মানুষ।

     

  • তুরস্ক-সিরিয়ায় নিহত ৩৪ হাজার ছাড়াল

    তুরস্ক-সিরিয়ায় নিহত ৩৪ হাজার ছাড়াল

    তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্পের সাতদিন পরও ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে শতশত মরদেহ উদ্ধার করা হচ্ছে। নিহতের সংখ্যা এরইমধ্যে ৩৪ হাজার ছাড়িয়েছে। আহত লাখেরও বেশি।

    সিএনএনের তথ্যমতে, ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন এলাকা থেকে এখন পর্যন্ত ৩৪ হাজার ১৭৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে তুরস্কের ২৯ হাজার ৬০৫ এবং সিরিয়ায় ৪ হাজার ৫৭৫ জন। তবে, জাতিসংঘ বলছে, নিহতের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে।

    এদিকে ভয়াবহ এই ভূমিকম্পে তুরস্কের ২৪ হাজার ৯২১টি ভবন ধসে পড়েছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও বহু আটকা পড়ে আছেন। তাদের বেঁচে থাকাটা ক্ষীণ। তারপরও উদ্ধারকারীরা জীবিতদের উদ্ধারে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ভূমিকম্পের সাতদিন পরও অলৌকিকভাবে বেঁচে থাকাদের সন্ধান পাচ্ছেন তারা।

    জাতিসংঘ বলছে, ভূমিকম্পের পরে সিরিয়ায় ৫৩ লাখ মানুষ গৃহহীন হতে পারে। তুরস্ক ও সিরিয়ায় প্রায় ৯ লাখ মানুষের জন্য জরুরি খাবারের প্রয়োজন।

    এর আগে, গত ৬ ফেব্রুয়ারি ভোরের দিকে সিরিয়া এবং তুরস্কে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। এর কিছুক্ষণ পর ফের ৬ দশমিক ৭ মাত্রার আরও একটি ভূমিকম্প।

    উল্লেখ্য, ১৯৩৯ সালে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে তুরস্কের পূর্ব এরজিনকান প্রদেশে ৩৩ হাজার মানুষ নিহত হয়েছিল।

  • তুরস্ক ও সিরিয়ায় মৃতের সংখ্যা ২৮ হাজার ছাড়াল

    তুরস্ক ও সিরিয়ায় মৃতের সংখ্যা ২৮ হাজার ছাড়াল

    ভয়াবহ ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ায় মৃতের সংখ্যা ২৮ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। ধ্বংসস্তুপে আটকে পড়াদের জীবিত উদ্ধার করতে এখনো অভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন উদ্ধারকারীরা। ভূমিকম্পের পর দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ায় অনেক জীবিতদের খুঁজে পাওয়ার আশা ম্লান হয়ে যাচ্ছে।

    স্থানীয় সময় শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) অনুসন্ধান অভিযান স্থগিত করেছেন জার্মান উদ্ধারকারীরা এবং অস্ট্রিয়ান সেনাবাহিনী। একটি অপরিচিত গোষ্ঠীর সঙ্গে সংঘর্ষের কথা উল্লেখ করে উদ্ধার অভিযান স্থগিত করা হয়েছে। যদিও সংঘর্ষের কারণ জানাননি উদ্ধারকারীরা।

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন উদ্ধারকারী বলেছেন, খাদ্য সরবরাহ কমে যাওয়ায় নিরাপত্তা আরও খারাপ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

    এদিকে ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত এলাকায় লুটপাটের অভিযোগে প্রায় ৫০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া বেশ কয়েকটি বন্দুক জব্দ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো।

    তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বলেছেন, এ পরিস্থিতিতে কেউ আইন ভঙ্গ করলে জরুরি ক্ষমতা ব্যবহার করবেন তিনি।

    অস্ট্রিয়ান সেনাবাহিনীর একজন মুখপাত্র বলেছেন, হাতায় প্রদেশে অজ্ঞাত গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের ফলে অস্ট্রিয়ান ফোর্সেস ডিজাস্টার রিলিফ ইউনিটের কয়েক ডজন কর্মী অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে একটি বেস ক্যাম্পে আশ্রয় চেয়েছেন।

    এক বিবৃতিতে লেফটেন্যান্ট কর্নেল পিয়েরে কুগেলওয়েস বলেছেন, তুরস্কে দলগুলোর মধ্যে আগ্রাসন বাড়ছে। একটি জীবন বাঁচানোর সম্ভাবনা নিরাপত্তা ঝুঁকির সঙ্গে কোনো যুক্তিসঙ্গত সম্পর্ক বহন করে না।

    অস্ট্রিয়া উদ্ধার প্রচেষ্টা স্থগিত করার কয়েক ঘণ্টা পরে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তুর্কি সেনাবাহিনী সুরক্ষা দেওয়ার জন্য পদক্ষেপ নিয়েছে। উদ্ধার অভিযান পুনরায় শুরু করার অনুমতি দিয়েছে তারা।

    সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ গ্রুপ আইএসএআর এবং জার্মানির ফেডারেল এজেন্সি ফর টেকনিক্যাল রিলিফের (টিএসডব্লিউ) জার্মান শাখাও নিরাপত্তা উদ্বেগ উল্লেখ করে অপারেশন স্থগিত করেছে।

    আইএসএআরের মুখপাত্র স্টেফান হাইন বলেছেন, বিভিন্ন দলগুলোর মধ্যে সংঘর্ষের খবর পাওয়া যাচ্ছে এবং গুলিও চালানো হয়েছে।

    বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, তুর্কি কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি নিরাপদ মনে করার সঙ্গে সঙ্গে আবার কাজ শুরু করবে জার্মান উদ্ধারকারী দলগুলো।

  • তুরস্ক-সিরিয়ায় ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ২৪ হাজার ছাড়িয়েছে

    তুরস্ক-সিরিয়ায় ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ২৪ হাজার ছাড়িয়েছে

    তুরস্ক-সিরিয়া ভূমিকম্পের ধ্বংসস্তুপ থেকে উদ্ধারকারীরা শনিবার আরো শিশুদের উদ্ধার করেছে। ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৪,০০০ ছাড়িয়েছে এবং বরফ শীতল তাপমাত্রা লাখ লাখ মানুষের দুর্ভোগ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে, অনেকের চরমভাবে সাহায্যের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।

    জাতিসংঘ সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, ভূমিকম্পের পর দুই দেশে অন্তত ৮৭০,০০০ মানুষের জরুরিভাবে খাদ্যের প্রয়োজন, শুধুমাত্র সিরিয়াতেই ৫.৩ মিলিয়ন লোক গৃহহীন হয়ে পড়েছে।

    গত সোমবারের ৭.৮-মাত্রার কম্পনের পরে আফটারশকগুলো মৃতের সংখ্যা বাড়িয়েছে এবং বেঁচে থাকা ব্যক্তিদের জীবনের ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

    তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর আন্তাকায়ার বাসিন্দা পেনশনভোগী ফিদান তুরান অশ্রু ভরা চোখে বলেন, ‘যখন আমি ধ্বংস হওয়া ভবন, মৃতদেহ দেখি, তখন এমন নয় যে আমি দুই বা তিন বছরে কোথায় থাকব তা দেখতে পাচ্ছি না, কার্যত আমি ভাবতে পারি না যে আমি আগামীকাল কোথায় থাকব।’

    তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের বর্ধিত পরিবারের ৬০ জন সদস্যকে হারিয়েছি’। ‘ষাট! জন, আমি কি বলব? এটা ঈশ্বরের ইচ্ছা।’

    জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি তুরস্কের অন্তত ৫৯০,০০০ জন এবং সিরিয়ায় ২৮৪,০০০ জন সদ্য বাস্তুচ্যুত মানুষকে খাদ্য রেশন প্রদানের জন্য ৭৭ মিলিয়ন ডলার অর্থ সরবরাহের আবেদন করেছে।

    এতে বলা হয়েছে, তুরস্কে বাস্তুচ্যুতদের মধ্যে, ৫৪৫,০০০ অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত এবং ৪৫,০০০ শরণার্থী রয়েছে।
    জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় শুক্রবার কুর্দি যোদ্ধা এবং সিরিয়ার বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রিত ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানবিক সহায়তা পৌঁছে দিতে সুযোগ করে দেয়ার জন্য সকল পক্ষকে অনুরোধ জানিয়েছে।

    আঙ্কারা এবং তার পশ্চিমা মিত্রদের কাছে একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসাবে বিবেচিত নিষিদ্ধ কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পাটি পুনরুদ্ধারের কাজ সহজ করার জন্য যুদ্ধে সাময়িক বিরতির ঘোষণা দিয়েছে।

    বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ায় প্রায় ৪ মিলিয়ন মানুষ মানবিক সহায়তার উপর নির্ভর করে তবে তিন সপ্তাহে সরকার-নিয়ন্ত্রিত এলাকা থেকে কোনো সাহায্য বিতরণ করা হয়নি।

    সিরিয়ার সরকার বলেছে, তারা তাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে ভূমিকম্প কবলিত এলাকায় মানবিক সহায়তা বিতরণের অনুমোদন দিয়েছে।

    এই সপ্তাহে মাত্র দুটি সাহায্য কনভয় তুরস্ক থেকে সীমান্ত অতিক্রম করেছে, যেখানে তুরস্ক কর্তৃপক্ষ তাদের নিজস্ব একটি আরও বড় ভূমিকম্প ত্রাণ অভিযানে নিযুক্ত রয়েছে।
    এক দশকের গৃহযুদ্ধ এবং সিরীয়-রাশিয়ান বিমান হামলা ইতিমধ্যে হাসপাতাল ধ্বংস করেছে এবং বিদ্যুৎ ও পানির ঘাটতি তৈরি করেছে।

    জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস তুরস্ক ও সিরিয়ার মধ্যে নতুন আন্তঃসীমান্ত মানবিক সহায়তা কেন্দ্র খোলার অনুমোদন দেওয়ার জন্য নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। কাউন্সিল সম্ভবত আগামী সপ্তাহের শুরুতে সিরিয়া নিয়ে আলোচনার জন্য বৈঠক করবে।
    তুরস্ক বলেছে,তারা সিরিয়ার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত অংশে দুটি নতুন রুট খোলার জন্য কাজ করছে।

    তুরস্কের কর্মকর্তারা বলছেন, ভূমিকম্পে ১২,১৪১টি ভবন ধ্বংস হয়েছে বা গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

    ইস্তাম্বুল-ভিত্তিক বোগাজিসি ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক মুস্তাফা এরদিক বলেন, ‘মেঝেগুলো একে অপরের ওপরে স্তুপ হয়ে আছে, যার মানে জীবিত কাউকে পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।’

    প্রলয়ঙ্করী ভূমিকম্পে ভবন ধসে পড়ার পর দেশ ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করা এক ঠিকাদারকে শুক্রবার আটক করেছে পুলিশ।

    ১৯৩৯ সালে ৭.৮-মাত্রার কম্পনে ৩৩,০০০ লোক মারা যাওয়ার পর এই কম্পনটি ছিল সবচেয়ে শক্তিশালী এবং মারাত্মক।

    কর্মকর্তা ও চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তুরস্কে ২০,৬৬৫ জন এবং সিরিয়ায় ৩,৫৫৩ জন মারা গেছেন। নিশ্চিত মোট মৃত্যুর সংখ্যা এখন দাঁড়িয়েছে ২৪,২১৮ জন।

  • তুরস্ক-সিরিয়ায় ভূমিকম্পে নিহত ২১ হাজার ছাড়াল

    তুরস্ক-সিরিয়ায় ভূমিকম্পে নিহত ২১ হাজার ছাড়াল

    তুরস্ক ও সিরিয়ায় শক্তিশালী ভূমিকম্পের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ২১ হাজার ছাড়িয়েছে। এখন পর্যন্ত দুই দেশে মোট ২১ হাজার ৫১ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছেন উদ্ধারকারীরা। সংবাদমাধ্যম সিএনএন আজ শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

    প্রতিবেদনে বলা হয়, নিহতদের মধ্যে তুরস্কের ১৭ হাজার ৬৭৪ জন ও সিরিয়ার তিন হাজার ৩৭৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া দুই দেশে কয়েক হাজার মানুষ আহত হয়েছে। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

    দাতব্য সংস্থাগুলো বলছে, হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে, বিশেষ করে সিরিয়ায়। অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারীরা ধসে পড়া হাজার হাজার ভবনের ধ্বংসস্তূপের মধ্যে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু প্রচণ্ড ঠান্ডায় উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে। পাশাপাশি আফটারশকের শঙ্কাও রয়েছে। ধসে পড়া হাজার হাজার ভবনের ধ্বংসস্তূপের মধ্যে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন উদ্ধারকারীরা।

    এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বলছে, মানবিক সংস্থাগুলোর সামনে এখন ভূমিকম্পে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের বাঁচিয়ে রাখার চ্যালেঞ্জ আসছে।

    গত সোমবার তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল ও সিরিয়ার সীমান্তবর্তী এলাকায় ৭ দশমিক ৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প হয়। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপের (ইউএসজিএস) তথ্য অনুযায়ী, ভূমিকম্পটি গাজিয়ানটেপ প্রদেশের নুরদাগি এলাকা থেকে ২৩ কিলোমিটার পূর্বে আঘাত হানে। এর গভীরতা ছিল ২৪ দশমিক ১ কিলোমিটার।

  • তুরস্ক-সিরিয়ায় মৃতের সংখ্যা ৭,৮০০ ছাড়িয়েছে

    তুরস্ক-সিরিয়ায় মৃতের সংখ্যা ৭,৮০০ ছাড়িয়েছে

    তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চল ও সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা সাত হাজার ৮০০ ছাড়িয়ে গেছে আর ভেঙে পড়া ভবনগুলোর ধ্বংসস্তুপের ভেতর থেকে জীবিতদের বের করে আনতে প্রচণ্ড ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় উদ্ধারকর্মীদের মরণপণ সংগ্রাম চলছে।

    যতোই সময় যাচ্ছে বিপর্যয়ের মাত্রা চোখের সামনে আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠছে আর তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। জাতিসংঘের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন ভয়াবহ এই ভূমিকম্পে কয়েক হাজার শিশু মারা যেতে পারে। খবর রয়টার্সের।

    তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়িপ এরদোগান দেশের ১০টি প্রদেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। তবে ভূমকম্পে বিধ্বস্ত বেশ কয়েকটি শহরের অধিবাসীরা তাদের ভাষায় উদ্ধার তৎপরতায় অপ্রতুল সাড়ার বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।

    মালাতিয়া এলাকায় বিধ্বস্ত বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে আত্মীয়-স্বজন হারানো মুরাত আলিনাক বলেন, ‘এখানে একজনও আসেনি। আমরা সম্পূর্ণ নিঃস্ব অবস্থায় প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় তুষারের নীচে আশ্রয়হীন অবস্থায় রয়েছি। আমি এখন কী করবো, কোথায় যাবো?’

    সোমবার (৬ফেব্রুয়ারি) ভোররাতে প্রথমে ৭.৮ মাত্রার এবং ঘণ্টাখানেক পর প্রায় সমান মাত্রার আরেকটি ভূমিকম্প তুরস্ক ও উত্তর সিরিয়ায় আঘাত হানলে স্কুল, হাসপাতাল, এপার্টমেন্টসহ কয়েক হাজার ভবন ভেঙে পড়ে। এই দুর্যোগে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন আর বাড়িঘর হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন অসংখ্য মানুষ।

    এদিকে ভেঙে যাওয়া রাস্তা, খারাপ আবহাওয়া ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির অভাবে উদ্ধারকর্মীরা সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পৌঁছাতে পারছেন না। কোথাও দেখা দিয়েছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির সঙ্কট।

    তবে যেটুকু সহায়তা পাওয়া যাচ্ছে তা দিয়েই স্থানীয় জনতা বেঁচে যাওয়া মানুষদের উদ্ধারে প্রাণপণ সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন।

    অন্যদিকে ১২ বছরের গৃহযুদ্ধে জর্জরিত সিরিয়ায় ভূমকম্পের কারণে মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা করে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সাহায্য সংস্থাগুলোর কর্মকর্তারা।

  • সিরিয়ায় গাড়ি বোমা বিস্ফোরণে নিহত ৪০

    সিরিয়ায় গাড়ি বোমা বিস্ফোরণে নিহত ৪০

    পৃথিবী জুড়ে যখন মহামারী করোনা ভাইরাসে ভয়াবহতা চলছে, ঠিক তার মধ্যেই সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে তুর্কি সেনাদের নিয়ন্ত্রিত আফরিন শহরে এক ভয়াবহ ট্রাক বোমা বিস্ফোরণে অন্তত ৪০ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অর্ধশত।

    তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাতে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম আল জাজিরা জানায়, সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় আলেপ্পো শহর থেকে ৪০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত আফরিন শহরে মঙ্গলবার (২৮ এপ্রিল) বিকেলে একটি বাজারের মধ্য দিয়ে আসার সময় তেলের ওই ট্যাংকারে গ্রেনেড ছুড়ে মারলে তা বিস্ফোরিত হয়ে ওই হতাহতের ঘটনা ঘটে।

    তুরস্কের প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ নৃশংস হামলার জন্য কুর্দি বিদ্রোহীগোষ্ঠী ওয়াইপিজিকে দায়ী করেছেন।

    ওয়াইপিজিকে দমনের জন্যই তুর্কি সেনারা সিরিয়ার সরকারবিরোধীদের নিয়ন্ত্রণে থাকা আফরিন শহর ও এর আশপাশের বিশাল এলাকা দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে দখল করে রেখেছে।

    তুর্কি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজন নারী ও ১১টি শিশু রয়েছে।

    ট্রাক বোমা হামলার জন্য ওয়াইপিজি বিদ্রোহীদের দায়ী করে তুরস্ক আরও জানিয়েছে, বিস্ফোরণে ৪৭ ব্যক্তি আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

    লন্ডনভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস বলেছে, একটি বাজারের মধ্যে জ্বালানিবোঝাই ট্রাকটি বিস্ফোরিত হয়।

    নিহতদের মধ্যে তুর্কি-সমর্থিত ছয় জঙ্গিও রয়েছে বলে জানিয়েছে তারা।

    ২৪ ঘণ্টা/এম আর