Tag: সিলেট

  • সিলেটের সীমান্তে খাসিয়ার গুলিতে ২ বাংলাদেশি নিহত

    সিলেটের সীমান্তে খাসিয়ার গুলিতে ২ বাংলাদেশি নিহত

    সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ সীমান্তে লাকড়ি আনতে গিয়ে ভারতীয় খাসিয়ার গুলিতে বাংলাদেশি দুই যুবক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন কয়েকজন। গতকাল রোববার বিকেলে উপজেলার উত্তর রণিখাই ইউনিয়নের কালাইরাগ সীমান্তের নাজিরেরগাঁও (১২৫২ নং পিলার) এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। নিহতরা হলেন উপজেলার উত্তর রণিখাই ইউনিয়নের কালাইরাগ গ্রামের মৃত ফজর আলীর ছেলে আলী হোসেন (৩২) ও মৃত সুন্দর আলীর ছেলে কাওসার আহমদ (৩০)। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম দস্তগীর।

    পুলিশ ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ওই যুবকরা সীমান্ত পেরিয়ে প্রায়ই ভারতে যাতায়াত করেন এবং বিভিন্ন মালপত্র নিয়ে আসেন। গতকাল সকালেও তারা ভারতে গিয়েছিলেন লাকড়ি আনতে। বিকেল ৩টার দিকে খবর আসে, খাসিয়ার গুলিতে মারা গেছেন আলী হুসেন ও কাউছার আহমদ। একটু পর গুরুতর আহত অবস্থায় ফিরে আসেন নবী হুসেন।

    উত্তর রণিখাই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ২নং ওয়ার্ডের সদস্য ফখরুল মিয়া বলেন, দুই যুবকের লাশ নাজিরেরগাঁও কারবালারটুক সীমান্ত এলাকায় পড়ে থাকতে দেখিছি। এ ঘটনা নিয়ে বিজিবি ও বিএসএফ পতাকা বৈঠক করেছে।

    কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি গোলাম দস্তগীর বলেন, ভারতীয় খাসিয়ার গুলিতে বাংলাদেশি দুই যুবক নিহত হয়েছেন। বিজিবির সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা লাশ দেশে আনতে কাজ করছে। লাশ দেশে আসার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ৪৮ বিজিবির কালাইরাগ বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাস্থলে বিজিবি সদস্যরা যাচ্ছেন।

  • সিলেট ১০ নম্বর কূপে তেলের সন্ধান

    সিলেট ১০ নম্বর কূপে তেলের সন্ধান

    সিলেট গ্যাসক্ষেত্র ১০ নম্বর কূপের প্রথম স্তরে তেলের সন্ধান পাওয়া গেছে। রোববার দুপুরে সচিবালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এ তথ্য জানান।

    বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী জানান, সিলেট গ্যাসক্ষেত্র ১০ নম্বর কূপে তেলের সন্ধান পাওয়া গেছে। সেখানে ৩৫ ব্যারেল তেলের প্রবাহ পাওয়া যাচ্ছে। তেলের মজুদের বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে ৩ থেকে ৪ মাস পর।

    তিনি আরও জানান, তেল ছাড়াও সেখানে ৪৩.৬ থেকে ১০৬ বিলিয়ন ঘন মিটার গ্যাসের গ্যাসের মজুদও মিলেছে।

    এর আগে সিলেটের হরিপুরে ১৯৮৬ সালে তেলের মজুদ পাওয়া যায়।

     

  • শেখ হাসিনার নির্বাচনী জনসভা সিলেট থেকে শুরু হবে : ওবায়দুল কাদের

    শেখ হাসিনার নির্বাচনী জনসভা সিলেট থেকে শুরু হবে : ওবায়দুল কাদের

    আগামী নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার নির্বাচনী জনসভা সিলেট থেকে শুরু করবেন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

    আজ (সোমবার) দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।

    ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি গত ২৮ তারিখ আন্দোলনের নামে প্রতারণার নাটক করেছে। তারা সহিংসতা করেছে। তারা পুলিশ হত্যা, সাংবাদিকদের ওপর হামলা, পুলিশ হাসপাতালে হামলা, প্রধান বিচারপতির বাড়িতে হামলা করেছে। তাদের হাতে বাংলাদেশের জনগণ নিরাপদ নয়।

    প্রধানমন্ত্রীর সৌদি আরব সফর প্রসঙ্গে কাদের বলেন, বর্তমান যে দুঃসময় যাচ্ছে সেটাতে সৌদি আরব আমাদের সাহায্য করবে। আর এ দুঃসময়ে মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে একটি দল আন্দোলন করছে। তারা একজন নন্দিত প্রধানমন্ত্রীকে ক্ষমতা থেকে হটাতে আন্দোলন করছে।

    বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে রিমোট কন্ট্রোলে আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বলেও মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের।

    ওবায়দুল কাদের বলেন, যেটাই করুক। আজকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বলা হচ্ছে জেলে থাকা ৮ হাজার নেতা-কর্মীকে (বিএনপি) মুক্তি দেওয়ার জন্য। তারা আমাদের বন্ধু রাষ্ট্র, আমরা তাদের বক্তব্যে নিন্দা জানাতে পারি না। তবে তাদের তথ্যে ঘাটতি আছে। তারা খোঁজখবর নিয়ে বক্তব্য দেবে এবং বক্তব্যে সংশোধন করবে। আমরা তাদের সঙ্গে ঝগড়ায় জড়াতে চাই না। আমরা বাংলাদেশেও ঝগড়া চাই না।

    তিনি আরও বলেন, নির্বাচন পর্যন্ত আমরা সতর্ক পাহারায় থাকব। আমরা নির্বাচন পর্যন্ত সতর্ক থাকব। দেশের মানুষ শেখ হাসিনাকে ভোট দেওয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে আছে। আমরা চোরাগোপ্তা হামলায় আতঙ্কিত না, আমরা ভয় পাই না।

    পুলিশকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের দায়িত্ব পালনকালে কোনো নিরীহ মানুষকে হয়রানি না করার অনুরোধও জানান।

    সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন— আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, সুজিত রায় নন্দী, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোহাম্মদ আলী আরাফাত।

  • সিলেটে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৬

    সিলেটে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৬

    সিলেটের কোম্পানিগঞ্জের বঙ্গবন্ধু মহাসড়কের সুন্দ্রাগাও নামকস্থানে মাইক্রোবাস ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে ৬ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।

    বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) সকাল ৯টার দিকে গোয়াইনঘাট উপজেলার নন্দিরগাও ইউনিয়নের সুন্দ্রাগাও এলাকার পিয়াইনগুল কলিম উল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

    গোয়াইনঘাট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম নজরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তাৎক্ষণিক নিহতদের নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি।

    স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সকাল ৯টার দিকে নন্দিরগাও ইউনিয়নের সুন্দ্রাগাও এলাকার পিয়াইনগুল কলিম উল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে কোম্পানিগঞ্জগামী একটি মাইক্রবাসের চাকা ফেটে সিলেট অভিমুখী একটি সিনজি অটোরিকশার সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। অটোরিকশা ও মাইক্রোবাসটি পাশে খাদে পড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান ৬ জন। তাৎক্ষণিক স্থানীয়রা উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করে।

  • সিলেটে বাস-টমটমের সংঘর্ষে নিহত ৫

    সিলেটে বাস-টমটমের সংঘর্ষে নিহত ৫

    সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলায় বাস ও ব্যাটারিচালিত টমটমের সংঘর্ষের ঘটনায় ৫ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন। তাদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

    শুক্রবার (৭ জুলাই) রাত সাড়ে ১০টার দিকে সিলেট-জাফলং সড়কের দরবস্তস্থ পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। তাৎক্ষণিকভাবে নিহতদের নাম পরিচয় জানা যায়নি।

    পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের দরবস্ত পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের সামনে সিলেট থেকে ছেড়ে আসা জাফলংগামী একটি বাস ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাকে (টমটম) চাপা দেয়। এরপর বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পার্শ্ববর্তী খাদে পড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলে ৪ জন নিহত হন। এ ঘটনায় আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। তাদেরকে উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। হাসপাতালে নেওয়ার পথে আরও একজনের মৃত্যু হয়।

    খাদে পড়া বাস উদ্ধারে কাজ করছেন পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস কর্মীসহ স্থানীয়রা।

    দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জৈন্তাপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) ওমর ফারুক মোড়ল।

  • সিলেটের নতুন নগরপিতা আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী

    সিলেটের নতুন নগরপিতা আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী

    সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। তিনি নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ১ লাখ ১৯ হাজার ৯৯১ ভোট। ১০ বছর পর সিলেট সিটিতে মেয়র পদে জয় পেল আওয়ামী লীগ। প্রথমবারের মতো সিলেটের নগরপিতা নির্বাচিত হলেন আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।

    বুধবার (২১ জুন) রাতে সিলেটের জালালাবাদ গ্যাস অডিটোরিয়ামে বেসরকারিভাবে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ফয়সল কাদের।

    প্রাপ্ত ফলাফলে দেখা যায়, আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির লাঙল প্রতীকের নজরুল ইসলাম বাবুল পেয়েছেন ৫০ হাজার ৮৬২ ভোট। স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. শাহজাহান মিয়া বাস গাড়ি প্রতীকে ২৯ হাজার ৬৮৮, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাওলানা মাহমুদুল হাসান হাতপাখা প্রতীকে ১২ হাজার ৭৯৪, জাকের পার্টির মো. জহিরুল আলম গোলাপফুল প্রতীকে ৩ হাজার ৪০৫, স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ আবদুল হানিফ কুটু ঘোড়া প্রতীকে ৪ হাজার ২৯৬ ভোট , মো. ছালাহ উদ্দিন রিমন ক্রিকেট ব্যাট প্রতীকে ২ হাজার ৬৪৮ ভোট ও মোশতাক আহমেদ রউফ মোস্তফা হরিণ প্রতীকে ২ হাজার ৯৫৯ ভোট পেয়েছেন।

    বুধবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ৭৯ দশমিক ৫০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের ৪২টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত সিলেট সিটি কর্পোরেশনে এ নিয়ে পঞ্চমবারের মতো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

    এবারের সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে আটজন ও কাউন্সিলর পদে ৩৫৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। যাদের মধ্যে ২৭২ জন সাধারণ ওয়ার্ডে এবং সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডে মোট ৮৭ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সিলেট নগরীতে মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৮৭ হাজার ৭৫৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৫৪ হাজার ৩৬৩ জন, নারী ২ লাখ ৩৩ হাজার ৩৮৪ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন ৬ জন।

    প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের ১৫ জুন সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমেদ কামরানের সঙ্গে মেয়র পদে প্রথম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী। সে সময় তিনি ১ লাখ ৭ হাজার ৩৩০ ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের বদর উদ্দিন আহমেদ কামরান পেয়েছিলেন ৭২ হাজার ২৩০ ভোট।

    সর্বশেষ আবারও ২০১৮ সালের সিলেট সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমেদ কামরানকে আবারও পরাজিত করেন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। সেবার ধানের শীষ প্রতীকে আরিফুল হক চৌধুরী পেয়েছিলেন ৯২ হাজার ৫৮৮ ভোট। বদর উদ্দিন আহমেদ কামরান নৌকা প্রতীক পেয়েছিলেন ৮৬ হাজার ৩৯২ ভোট।

  • সিলেটে ট্রাক-পিকআপ সংঘর্ষে নিহত ১৩

    সিলেটে ট্রাক-পিকআপ সংঘর্ষে নিহত ১৩

    সিলেটের নাজিরবাজারে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে ট্রাক ও পিকআপের সংঘর্ষে ১৩ জন নিহত হয়েছেন। দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ১৩ জন। বুধবার (৭ জুন) ভোরে ৫টা ৩৯ মিনিটে দক্ষিণ সুরমার নাজিরবাজার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন।

    তিনি জানান, ১১ জন ঘটনাস্থলে ও দুজন হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যান। তবে তাৎক্ষণিকভাবে তাদের নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি।

    এর আগে সিলেট মহানগর পুলিশের দক্ষিণ সুরমা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সামসুদ্দোহা পিপিএম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ঢাকা থেকে সিলেট অভিমুখে আসা একটি ট্রাক ও সিলেট থেকেআসা শ্রমিকবাহী পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলে ১১ জন নিহত হন এবং অপর একজন হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা গেছেন। তবে তাৎক্ষণিক তাদের নাম পরিচয় জানা যায়নি।

    এদিকে দুর্ঘটনার খবর পেয়ে উপ-পরিচালক মনিরুজ্জামানের নেতৃত্বে সিলেট ফায়ার সার্ভিসের ৭টি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার কাজ চালায় এবং হতাহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।

    সিলেট ফায়ার সার্ভিস সিলেটের সহকারী পরিচালক সফিকুল ইসলাম ভুঁইয়া জানান, নির্মাণ শ্রমিক বহনকারী পিকআপ ভ্যানটি ওসমানী নগরের উদ্দেশ্যে যাওয়ার পথে নাজিরবাজার এলাকায় পৌঁছামাত্র দুর্ঘটনাস্থলে বিপরীতগামী মাল বোঝাই ট্রাকের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের পর শ্রমিক বহনকারী পিকআপটি রাস্তার পাশে পড়ে যায় এবং ট্রাকটি দুমড়ে মুচড়ে যায়। নিহতদের সবাই পুরুষ।

  • সিলেটে ছুরিকাঘাতে বিএনপি নেতা খুন

    সিলেটে ছুরিকাঘাতে বিএনপি নেতা খুন

    সিলেটে প্রাইভেটকার আটকিয়ে ছুরিকাঘাত করে এক বিএনপি নেতাকে খুন করেছে দুর্বৃত্তরা। রবিবার রাত সোয়া ৮টার দিকে নগরের আম্বরখানা বড়বাজারে এ ঘটনা ঘটে।

    নিহত আ. ফ. ম কামাল সিলেট জেলা বিএনপির সাবেক স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ও সিলেট আইন মহাবিদ্যালয় ছাত্র সংসদের সাবেক জিএস।

    প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, প্রাইভেটকার চালিয়ে আ ফ ম কামাল বড়বাজারের গলি দিয়ে যাচ্ছিলেন। বড়বাজার গোয়াইনপাড়া সড়কের কাছে যাওয়ার পর কয়েকজন যুবক এসে তার গাড়ির গতিরোধ করে। পরে তাকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

    মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ জানান, ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হচ্ছে। অপরাধীদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারে পুলিশি তৎপরতা শুরু হয়েছে।

    ২৪ঘণ্টা/এসএ

  • প্লাবিত এলাকায় চরম মানবিক বিপর্যয় খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছে বানভাসি মানুষ

    প্লাবিত এলাকায় চরম মানবিক বিপর্যয় খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছে বানভাসি মানুষ

    আমাদের ঘরবাড়ি এখনও পানিতে ডুবে আছে। সিলেট প্রতিনিধিঃ পরিবার নিয়ে খুব কষ্টে দিন যাচ্ছে, যা ছিল সবকিছু পানি নিয়ে গেছে। না খেয়েই দিন পার করছি। সাহায্য-সহযোগিতায় নিয়ে কেউ আসছে না, পানি আরও কয়েকদিন থাকবে। কিভাবে দিন যাবে ভেবে পাচ্ছিনা। গত ১০০ বছরেও এত পানি এলাকার কেউ দেখেনি। 

    রবিবার দুপুরে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বিলাজুর গ্রামের এরশাদ মিয়া ও আব্দুল কাইয়ুম এভাবেই নিজেদের কথা জানিয়েছেন।

    জলযানের সংকটের কারণে সিলেটের বন্যাদুর্গত সব জায়গায় ত্রাণ পৌঁছানো যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান।

    ভয়াবহ বন্যায় পুরোপুরি বিপর্যস্ত সিলেট ও সুনামগঞ্জ, তবে রবিবার থেকে বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। সিলেট নগরের বিভিন্ন এলাকায় শনিবার রাতে এসেছে বিদ্যুৎ। তবে নগরের ১০ থেকে ১৫টি এলাকায় পানি না নামায় বিদ্যুৎহীন রয়েছে। পানিবন্দী এলাকায় দেখা দিয়েছে চরম খাবার ও বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট। ফলে পানিবন্দী অবস্থায় না খেয়েই দিন পার করছেন অনেক মানুষ।

    এখনও সারাদেশের সাথে বিচ্ছিন্ন সুনামগঞ্জ। জেলার বিভিন্ন উপজেলা সড়ক ও বাড়িঘর পানিতে তলিয়ে রয়েছে। গত চারদিন ধরে সুনামগঞ্জে নেই বিদ্যুৎ, মোবাইল নেটওয়ার্ক ও সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা। কোথায় কোথায় আবার আশ্রয়কেন্দ্রে জায়গা সংকট রয়েছে। পানিবন্দী এলাকায় দেখা দিয়েছে খাবার ও বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট। জেলার প্রতিটি বাড়িঘর প্লাবিত হয়েছে। হয়েছে হাঁটু থেকে গলাসমান পানি। এখনো ৪ থেকে ৬ ফুট পানিতে তলিয়ে আছে সুনামগঞ্জ শহর। হাসপাতাল, দোকানপাট, অফিস-আদালত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সব জায়গায় পানি আর পানি। নৌকা ছাড়া যাতায়াতের নেই কোনো সুযোগ। খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছে বানভাসি মানুষ।

    এদিকে বন্যার পানি কমতে শুরু করলেও বাড়তে শুরু করেছে দুর্ভোগ ও বন্যার রেখে যাওয়া ক্ষতচিহ্ন। তবে এবারের বন্যার পানি ধীরে ধীরে নামছে বলে জানিয়েছেন বন্যার্তরা। বন্যার্তদের উদ্ধারে কাজ করেছে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, পুলিশ প্রশাসনসহ বিভিন্ন সংস্থার সেচ্ছাসেবকরা।

    সরেজমিনে রবিবার দুপুরে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার হাইটেকপার্কের সড়কে বর্নি, তেলিখাল, বিলাজুর, আঙ্গুরাকান্দি গ্রামের মানুষজন অভিযোগ করেছেন- রবিবার পর্য়ন্ত তাদের গ্রামগুলোতে কোনো প্রকার সহায়তা আসেনি। অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছেন কয়েকদিন ধরে। বন্যায় শেষ হয়ে গেছে তাদের ঘরবাড়ি, ধান, গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি। পানির স্রোতে ভেসে গেছে নিজেদের ঘর। এখনও অনেকের ঘরবাড়ি রয়েছে পানির নিচে, এসব ঘরবাড়ি আছে কি নাই তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে। সবমিলেয়ে বন্যায় কারণে নি:স্ব হয়ে গেছেন তারা। এছাড়াও রবিবার পর্যন্ত সিলেট-সুনামগঞ্জের কোনো কোনো এলাকায় পৌঁছায়নি ত্রাণ সহায়তা। এসব এলাকাতে তৈরি হয়েছে চরম মানবিক বিপর্যয়। অনেকেই না খেয়ে পানিবন্ধী অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। টানা চারদিন ধরে পানিবন্ধী হয়ে থাকলেও পাননি কোনো ধরনের সহায়তা। তাছাড়াও আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে মিলছে না ঠিকমতো খারার।

    বিকেলে সরেজমিনে সিলেট নগরের সোবহানীঘাট, যতরপুর, উপশহর, মেন্দিবাগ, শিবগঞ্জ, মেজরটিলা, সাদাটিকর, তেরোরতন, মাছিমপুর, ছড়ারপাড়, কালীঘাট ও তালতলা, জামতলা, মাছুদিঘীরপাড়, লামাপাড়, বেতেরবাজার, ঘাসিটুলা, বাগবাড়ি, শেখঘাট, টিকরপাড়া, কুয়ারপার, কাজিরবাজারসহ বিভিন্ন এলাকার রাস্তাঘাট, বাসাবাড়ি ও দোকানপাটে পানি দেখা গেছে।

    সিলেট জেলা শহরের সাথে সদর, গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট, জৈন্তাপুর, কোম্পানীগঞ্জ ও জকিগঞ্জ উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। প্লাবিত এলাকার একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সরকারি-বেসরকারি কার্যালয়ের ভেতরে ঢুকে পড়েছে পানি। এর আগে গত ১৫ মে থেকে সিলেট নগর ও ১৩টি উপজেলায় টানা বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে বন্যা হয়েছিল। এতে প্রায় এক হাজার কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানায় জেলা প্রশাসন।

    কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার তেলিখাল গ্রামের হান্নান মিয়া জানান, গত ৩দিন ধরে পানিবন্ধী হয়ে আছি, এখনও কেউ ত্রাণ বা কোনো সহায়তা নিয়ে আসেনি। আমাদের বাড়িঘর পানির নিচে, আমাদের সবকিছু শেষ হয়ে গেছে।

    বর্নি গ্রামের বাসিন্দা দিলোয়ার জানান- পুরো ঘর ডুবে গিয়েছিল, এখন ঘরের ভেতরে কোমর পানি রয়েছে। আমাদের ধান, গুরুসহ ঘরের যাবতীয় জিনিসপত্র শেষ হয়ে গেছে। তবে আমরা এখনও কোনো সরকারি সহয়োগিতা পাইনি।

    একই উপজেলার আাঙ্গুরাকান্দি গ্রামের মৃত্যুঞ্জয় দাস জানান, গত ৩দিন ধরে হাইর্টেক পার্কের আশ্রয়কেন্দ্রে পরিবার নিয়ে উঠেছি। আমাদের ঘরবাড়িতে এখন পানি, বার বার বন্যার কারণে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত। গত বন্যার চেয়ে এবারের বন্যার পানি ৬ ফুট বেশি হবে।

    সিলেট নগরের কাজিরবাজারের ব্যবসায়ী ও শেখঘাটের স্থায়ী বাসিন্দা দিপু আহমদ জানান, গত কয়েকদিন ধরে পানির জন্য ব্যবসা বন্ধ রয়েছে, আমাদের বাসায় নেই বিদ্যুৎ, রয়েছে পানি। চরম ভোগান্তিতে রয়েছি।

    সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান বলেন, বন্যাকবলিত এলাকায় সরকার পর্যাপ্ত ত্রাণ বরাদ্দ দিয়েছে। নতুন করে সিলেটের জন্য আরও ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ এসেছে। তবে সমস্যা হচ্ছে, জলযানের সংকটে সব জায়গায় ত্রাণ পৌঁছানো যাচ্ছে না। তবে স্থানীয় প্রশাসন এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় আন্তরিকভাবে চেষ্টা করছে।

  • ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত সিলেট ও সুনামগঞ্জ; বন্যার্তদের উদ্ধারে সেনাবাহিনী, বন্ধ হতে পারে বিদ্যুৎ সরবরাহ

    ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত সিলেট ও সুনামগঞ্জ; বন্যার্তদের উদ্ধারে সেনাবাহিনী, বন্ধ হতে পারে বিদ্যুৎ সরবরাহ

    সিলেট প্রতিনিধিঃ টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকায় ভয়াবহ বন্যায় পুরোপুরি বিপর্যস্ত সিলেট ও সুনামগঞ্জ। ইতিমধ্যে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করায় সিলেট ও সুনামগঞ্জের বন্যার্তদের উদ্ধারে কাজ করেছে সেনাবাহিনী। দুই জেলার ৮ উপজেলায় সেনাবাহিনীর ৯ টি ইউনিট কাজ করছে।

    শুক্রবার দুপুর থেকে নৌকা দিয়ে প্লাবিত এলাকার বাড়িঘর থেকে পানিবন্দী মানুষদের উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়েছেন সেনাবাহিনী সদস্যরা।

    বন্যার পানি সিলেটের কুমারগাঁও বিদ্যুৎকেন্দ্রে প্রবেশ করায় বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা হুমকির মুখে পড়েছে। পানি বাড়লে বন্ধ হয়ে যাবে সিলেটের বিদ্যুৎ সরবরাহ। তবে কুমারগাঁও বিদ্যুতের গ্রিড উপকেন্দ্র রক্ষা করতে কাজ শুরু করেছেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা। দুপুর ১২টার দিকে গ্রিড উপকেন্দ্রে পানি প্রবেশ বন্ধ করতে জিও ব্যাগ ফেলা হয়।

    সিলেট-সুনামগঞ্জের কোথায় কোথায় ঘরে হাঁটু থেকে গলাসমান পানি ওঠায় অনেকে আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছেন, সেই সাথে পাচ্ছেন না খাদ্যসামগ্রী ও বিশুদ্ধ খাবার পানিও। তৈরি হয়েছে চরম মানবিক বিপর্যয়, বন্যার পানি যত বাড়ছে-সংকটও তত বাড়ছে। এখনও সিলেটের প্রধান নদনদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে সেনাবাহিনী বন্যার্তদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে পানিবন্দী মানুষের আশ্রয়ের ব্যবস্থা ও বন্যা আক্রান্তদের চিকিৎসা সহায়তা প্রদান। স্পর্শকাতর স্থাপনার নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং সীমিত পরিসরে খাদ্যসামগ্রী ও বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা করছেন।

    সিলেট সেনানিবাসের জিওসি মেজর জেনারেল হামিদুল হক গণমাধ্যমকে জানান, সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সিলেটের ৩ উপজেলা ও সুনামগঞ্জের ৫ উপজেলায় সেনাবাহিনী পানিবন্দী মানুষকে উদ্ধার সহ পাঁচটি কাজে তৎপরতা শুরু করেছে। সিলেটের উপজেলাগুলো হচ্ছে সদর, গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ, সুনামগঞ্জ জেলার সদর, দিরাই, ছাতক, দোয়ারাবাজার ও জামালগঞ্জ।

    তিনি জানান, সিলেট কুমারগাঁও বিদ্যুৎকেন্দ্রে পানি ওঠে বিদ্যুৎ সরবরাহ হুমকির মুখে পড়েছে। এছাড়া সুনামগঞ্জের বেশ কয়েকটি খাদ্য গুদাম হুমকিতে রয়েছে। এগুলো রক্ষায়ও সেনা সদস্যরা কাজ করছেন। সেনাবাহিনী নিজস্ব নৌকা দিয়ে পানিবন্দি মানুষদের উদ্ধার করছে। ঢাকা ও কুমিল্লা থেকে আরও ‘রেসকিউ বোট’ আনা হচ্ছে। এছাড়াও স্থানীয় লোকজনের নৌকাগুলোও উদ্ধার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। বিপদের সময় মানুষের পাশে দাঁড়ানো ও তাদের কাজ করতে পারাকে সেনাবাহিনী গৌরবের মনে করে বলেও মন্তব্য করেন।

    এদিকে বিভিন্ন উপজেলার আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে বন্যার্ত মানুষদের ভিড় বেড়েছে। কোথায় কোথায় আবার আশ্রয়কেন্দ্রে জায়গা সংকট রয়েছে। এছাড়াও দুই জেলার বেশিরভাগ স্থানে বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে। সুরমা নদীর পানি উপচে সিলেট নগরের বেশিরভাগ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বেড়েছে নগরের পানিবন্ধী মানুষের দুর্ভোগও। নগরে দুর্গন্ধযুক্ত পানির মধ্যে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন ও মানুষজন। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন প্লাবিত এলাকার বাসিন্দারা। সব মিলিয়ে সিলেট ও সুনামগঞ্জের লাখ-লাখ মানুষ এখন পানিবন্দী। সুনামগঞ্জ জেলার সাথে সারাদেশের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বৃহস্পতিবার রাত থেকে। এদিকে টানা বৃষ্টি ও পানির ঢল অব্যাহত থাকায় বন্যা পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সিলেট জেলা শহরের সাথে সদর, গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট, জৈন্তাপুর, কোম্পানীগঞ্জ ও জকিগঞ্জ উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। প্লাবিত এলাকার একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সরকারি-বেসরকারি কার্যালয়ের ভেতরে ঢুকে পড়েছে পানি।

    সুনামগঞ্জ জেলার পৌরশহর, দিরাই, শাল্লা, ছাতক, দোয়ারাবাজার, জামালগঞ্জ, বিশ্বম্ভরপুর ও তাহিরপুর, মধ্যনগরসহ আরও নতুন উপজেলার নতুন নুতন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী আছেন কয়েক লাখ-লাখ মানুষ। সুনামগঞ্জে বন্ধ আছে সরকারি-বেসরকারি অফিসসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি এখন ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। এর আগে গত ১৫ মে থেকে সিলেট নগর ও ১৩টি উপজেলায় টানা বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে বন্যা হয়েছিল। এতে প্রায় এক হাজার কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানায় জেলা প্রশাসন।

    শুক্রবার বিকেলে সরেজমিনে সিলেট নগরের সোবহানীঘাট, যতরপুর, উপশহর, মেন্দিবাগ, শিবগঞ্জ, মেজরটিলা, সাদাটিকর, তেরোরতন, মাছিমপুর, কদমতলি, ছড়ারপাড়, কালীঘাট ও তালতলা, জামতলা, মাছুদিঘীরপাড়, লামাপাড়, বেতেরবাজার, ঘাসিটুলা, বাগবাড়ি, শেখঘাট, টিকরপাড়া, কুয়ারপার, কাজিরবাজারসহ বিভিন্ন এলাকার রাস্তাঘাট, বাসাবাড়ি ও দোকানপাটে পানি দেখা গেছে।

    এসময় নগরের যতরপুর এলাকার একাধিক বাসিন্দা জানান, ঘরের ভেতরে ও চারপাশে পানি থাকায় বন্দী হয়ে আছি, ৩দিন ধরে এ অবস্থায় রয়েছি। প্রতিদিন পানি বাড়ছে, ফলে বাসার অনেক জিনিসপত্র নষ্ট হয়েছে। পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়াতে ভোগান্তির শেষ নাই আমাদের।

    পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সিলেট সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সকাল ৬টার তথ্য অনুযায়ী- সুরমা নদীর দুটি ও কুশিয়ারা নদীর একটি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া সারি নদের একটি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলার অন্যান্য নদ-নদীর পানিও ক্রমশ বাড়ছে বলে পাউবোর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

    স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও বন্যাকবলিত মানুষেরা জানিয়েছেন, সিলেট নগরের অন্তত ২০টি এলাকার পাশাপাশি জেলার কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, সদর, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট ও দক্ষিণ সুরমা উপজেলার ছয় শতাধিক গ্রাম বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এতে কমপক্ষে ১০ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। চলাচলের জন্য মিলছে না নৌকা। ফলে জরুরি প্রয়োজনে কেউ ঘরের বাইরে বেরোতে পারছেন না।

    বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) সিলেট বিক্রয় ও বিতরণ অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবদুল কাদির বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা দুপুর ১২টা থেকে জিও ব্যাগ ফেলে বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে পানি প্রবেশ ঠেকাতে কাজ করছেন। তবে কতক্ষণ প্রতিরোধ করা যাবে তা বলা যাচ্ছে না। পানি আরো বাড়লে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখতে হবে।

  • আবারও সিলেটে বন্যা

    আবারও সিলেটে বন্যা

    অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত আর পাহাড়ি ঢলের কারণে এক মাসের ব্যবধানে আবারও সুরমার পানি উপচে সিলেট নগরীতে পানি প্রবেশ করেছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন সিলেট নগরীর বেশ কয়েকটি এলাকার বাসিন্দা।

    হঠাৎ করে আবার বন্যার কারণে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে অফিসগামী মানুষ, স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষকে।

    সরেজমিনে দেখা যায়, সিলেট নগরীর উপশহর, যতরপুর, মেন্দিবাগ, তালতলা, শেখঘাট, কলাপাড়া, মজুমদার পাড়া, লালদীঘির পাড়সহ অনেক এলাকা পানির নিচে তলিয়ে গেছে।

    সিলেট নগরীর দশম শ্রেণির ছাত্রী আফসানা তালুকদার ঢাকা পোস্টকে বলেন, এক মাসের মধ্যে আবারও বন্যার কারণে আমাদের শিক্ষাজীবন ব্যাহত হচ্ছে। এমনিতেই গত এক মাসে পড়ালেখা খুব একটা হয়নি। এই মাসে কী হবে তা একমাত্র আল্লাহই ভালো বলতে পারবেন।

    অপরদিকে বারবার পানির নিচে বাসাবাড়ি তলিয়ে যাওয়ায় বেশ বেগ পোহাতে হচ্ছে এসব এলাকার বাসিন্দাদের। শহরাঞ্চলে এমনিতেই জরাজীর্ণ পরিবেশে বেশিরভাগ মানুষের বসবাস, তার ওপর টানা এই বন্যা তাদের ওপর মরার ওপর খাঁড়ার ঘা।

    নগরীর মেন্দিবাগ এলাকার বাসিন্দা সাংবাদিক দেবব্রত রায় দীপন ঢাকা পোস্টকে বলেন, গতমাসের বন্যার ধকল এখনো নগরবাসী কাটিয়ে উঠতে পারেনি। এর মধ্যে আবারও নগরীতে বন্যার পানি প্রবেশ করায় বেশ উৎকণ্ঠায় আছে পুরো নগরবাসী। এভাবে চলতে থাকলে সুপেয় পানিসহ নানা ধরনের সংকটে পড়তে হবে মানুষকে।

    সিসিকের প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমান বলেন, নগরের কিছু নিচু এলাকায় পানি প্রবেশ করেছে। নগরীতে আশ্রয়কেন্দ্র খোলার মতো পরিস্থিতি এখনো হয়নি। আমরা বিষয়টি মনিটরিং করছি এবং প্রস্তুত আছি। প্রয়োজন হলেই আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হবে। এ সময় তিনি আরও বলেন, নগরে সুপেয় পানির সরবরাহও স্বাভাবিক আছে। ফলে বিশুদ্ধ পানিরও সংকট দেখা দেয়নি।

    এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিলেট জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসিফ আহমদ বলেন, সিলেটের বেশ কয়েকটি পয়েন্টে নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে। সকালের পর থেকে লুভা ও সারী নদীর পানি কিছুটা কমেছে। কানাইঘাটে সুরমার পানি কয়েক সেন্টিমিটার কমলেও শহরের দিকে সুরমার পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে নগরীতে পানি বাড়ছে। টানা বর্ষণ অব্যাহত থাকলে বন্যার পানি আরও বাড়বে।

    মাসুদ আহমদ রনি/আরআই

  • সিলেটে টিলা ধসে একই পরিবারের ৪ জনের মৃত্যু

    সিলেটে টিলা ধসে একই পরিবারের ৪ জনের মৃত্যু

    সিলেটের জৈন্তাপুরে টিলা ধসে একই পরিবারের চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও পাঁচজন। সোমবার (০৬ জুন) ভোর রাতে উপজেলার ৬ নং চিকনাগুল ইউনিয়নের ঠাকুরির মাটি পূর্ব সাতজনি গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

    মৃতরা হলেন- জুবের আহমদ, তার স্ত্রী সুমি বেগম, পাঁচ বছর বয়সী ছেলে সাফি আহমদ ও মা শামীম আরা বেগম।

    জৈন্তাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, অতিরিক্ত বৃষ্টিতে ঠাকুরির মাটি সাতজনি এলাকায় টিলা ধসে বসতঘরের ওপর পড়ে। এতে ওই ঘরে বসবাসরত একই পরিবারের চারজন ঘটনাস্থলেই মারা যায়। খবর পেয়ে পুলিশ আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। মৃতদের সুরতহালের কাজ চলছে। এরপর ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহগুলো সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে।