Tag: সুদান

  • সুদান থেকে আরও ২৩৯ প্রবাসী দেশে ফিরলেন

    সুদান থেকে আরও ২৩৯ প্রবাসী দেশে ফিরলেন

    দুই বাহিনীর ক্ষমতার দ্বদ্বে যুদ্ধবিধ্বস্ত সুদান থেকে সৌদি আরবের জেদ্দা হয়ে দেশে ফিরেছেন আরও ২৩৯ প্রবাসী। এনিয়ে পাঁচ ধাপে ৫৫৫ জন সুদান প্রবাসীকে দেশে ফেরত আনা হয়েছে।

    শুক্রবার (১২ মে) সকাল পৌনে ৯টার দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান তারা। এ সময় প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় ও জাতিসংঘ অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) বিমানবন্দরে তাদের স্বাগত জানিয়েছে।

    এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার (১১ মে) আইওএম থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তাদের দেশে আসার তথ্য জানানো হয়েছিল।
    এদিকে বৃহস্পতিবার (১১ মে) তিন ধাপে সুদান থেকে ১৮০ জন সুদান প্রবাসী বাংলাদেশিকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। ওই দিন সকালে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে ৫১ জন, সন্ধ্যায় কাতার এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে ৫৪ জন ও রাতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে ৭৫ জন সৌদি আরবের জেদ্দা হয়ে বাংলাদেশে ফিরেছে।

    অন্যদিকে ক্ষমতার দ্বন্দ্বে কয়েক সপ্তাহ ধরে সুদানে দুই বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। এতে বহু মানুষ হতাহত হয়েছে। এমন অবস্থায় গত সোমবার (৮ মে) দেশটি থেকে ১৩৬ জন বাংলাদেশি নাগরিককে জেদ্দা হয়ে ঢাকায় ফিরিয়ে আনা হয়।

    আইওএমের বাংলাদেশ মিশনের ন্যাশনাল কমিউনিকেশনস অফিসার শফিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, দেশে ফিরতে নিবন্ধন করা সব বাংলাদেশিকে সুদান থেকে আমরা ধাপে ধাপে ফিরিয়ে আনছি।

  • সুদান থেকে দেশে ফিরেছেন ৫২ বাংলাদেশি

    সুদান থেকে দেশে ফিরেছেন ৫২ বাংলাদেশি

    যুদ্ধকবলিত সুদান থেকে জেদ্দা হয়ে দেশে ফিরেছেন আরও ৫২ বাংলাদেশি।

    আজ (বৃহস্প‌তিবার) সকা‌ল সা‌ড়ে ১০টার পর বিমান বাংলাদেশের একটি ফ্লাইটে তারা দে‌শে ফিরে‌ছেন।

    বুধবার পোর্ট সুদান থে‌কে সুদানের বদর এয়ারলাইন্সের বি‌শেষ ফ্লাই‌টে জেদ্দায় পৌঁছান ১৭৬ বাংলা‌দে‌শি। তা‌দের ম‌ধ্যে থে‌কে ৫২ জন দে‌শে ফি‌রে এলেন।

    রিয়া‌দের বাংলা‌দেশ দূতাবা‌সের তথ‌্য বল‌ছে, আজকের ম‌ধ্যে কাতার এয়ারলাইন্সে আরও ১৩০ জন ও মদিনা থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে ২৩৮ জনের দেশে ফেরার কথা র‌য়ে‌ছে।

    গত সোমবার যুদ্ধকবলিত সুদান থেকে জেদ্দা হয়ে প্রথম দফায় দেশে ফেরেন ১৩৬ বাংলাদেশি। বিমান বাংলাদেশের একটি ফ্লাইটে তারা দেশে ফেরেন। দেশে ফেরাদের মধ্যে নারী, শিশু ও অসুস্থ প্রবাসী ছিলেন।

    গত ৩ মে সুদানের রাজধানী খার্তুম থেকে ৬৮০ বাংলাদেশিকে নিরাপদে পোর্ট সুদানে নেওয়া হয়। দুই দফায় মোট ১৩টি বা‌সে ক‌রে তাদের সেখানে নেওয়া হয়।

    রিয়াদের বাংলাদেশ দূতাবাস বল‌ছে, সুদানে প্রায় এক হাজার পাঁচশ বাংলাদেশি নাগরিক বসবাস করেন। এদের মধ্যে যারা দেশে আসার জন্য নিবন্ধন করেছেন পর্যায়ক্রমে সবাইকে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে।

    সুদানের সেনাবাহিনী ও আধা-সামরিক বাহিনীর লড়াইয়ের শুরুর দিকে গত ১৫ এপ্রিল দেশটির রাজধানী খার্তুমে বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদের বাসা আক্রান্ত হয়। রাষ্ট্রদূতের বাসার দেওয়াল ও জানালা ভেদ করে ঢুকে পড়ে মেশিনগানের গুলি। এরপর গত ২২ এপ্রিল সুদানের সেনাবাহিনী ও আধা-সামরিক বাহিনীর লড়াইয়ের সময় বাংলাদেশ দূতাবাসের জানালা ও দেওয়াল ভেদ করে মেশিনগানের গুলি ঢুকে পড়ে।

     

  • সুদান ফেরতদের পুনর্বাসনের আশ্বাস দিলেন মন্ত্রী

    সুদান ফেরতদের পুনর্বাসনের আশ্বাস দিলেন মন্ত্রী

    আগামী ৯ বা ১০ মে সুদান থেকে বাংলাদেশিদের পরবর্তী ব্যাচ দেশে ফেরার প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ। একইসঙ্গে সুদান থেকে দেশে ফেরত আসাদের পুনর্বাসনের জন্য সরকার থেকে সহায়তা দেওয়ার কথা জানান মন্ত্রী।

    সোমবার (৮ মে) ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সুদান ফেরত বাংলাদেশিদের স্বাগত জানানোর পর সাংবাকিদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা জানান মন্ত্রী।

    ইমরান আহমদ বলেন, আপনারা আশ্বস্ত হতে পারেন যে অতিসত্তর বাকিদের নিয়ে আসব। ৯ বা ১০ তারিখ আরেকটা ফ্লাইট আসবে। আমরা চেষ্টা করছি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নিয়ে আসব। আজকে আসার কথা ছিল ২৫০ জন কিন্তু শেষ পর্যন্ত এলো ১৩৬ জন। সেজন্য নির্দিষ্ট সংখ্যা বা তারিখ বলাটা কঠিন।

    সুদান ফেরত বাংলাদেশিদের অভয় দিয়ে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী বলেন, চিন্তা করবেন না। আপনারা সবকিছু হারিয়েছেন। দেশকে সবকিছু দিয়েছেন। আপনারা প্রত্যেকে খালি হাতে এসেছেন। কীভাবে আপনাদের সাহায্য করা করা সেটার জন্য আমরা এখানে এসেছি। আইওএম আপনাদের সহায়তা করবে। প্রবাসী কল্যাণ বোর্ড থেকে সবাইকে আর্থিক সহায়তা দেব, যেন এ কয়দিন আপনারা চলতে পারেন। আপনাদের অসুবিধাটা আমরা কিছুটা লাঘব করতে পারব।

    ইমরান আহমদ বলেন, সবচেয়ে বড় কথা হলো সবাইকে কিন্তু রেজিস্ট্রেশন করে নিতে হবে। আমরা পরবর্তী সময়ে আপনাদের কী সাহায্য করতে পারি, কীভাবে আপনাদের এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি; আপনাদের নামসহ সবকিছু আমাদের প্রয়োজন আছে। আগামীতে আপনাদের জন্য কী করা হবে তা জানানো হবে।

    মন্ত্রী বলেন, সুদান থেকে বাংলাদেশিদের দেশে ফেরত আনতে কল্যাণ বোর্ড থেকে ২ লাখ ডলার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আপনাদের পুনবাসনের জন্য আমাদের প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক আছে। আমরা নীতিমালা ঠিক করে দিলে আপনারা ওখান থেকেও সাহায্য নিতে পারবেন। পরবর্তী সময়ে সুদানে অবস্থা ভালো হলে যেতে পারবেন বা অন্য কোনো দেশে যদি যাওয়ার ব্যবস্থা হয় আমরা সেভাবে ব্যবস্থা করব।

    পোর্ট সুদান থেকে বাংলাদেশিদের ফেরাতে সরকার দেরি করল কী না -এমন প্রশ্নের জবাবে ইমরান আহমদ বলেন, আমরা বসে নেই। চার্জ করা খুব সোজা। ওখানে দূতাবাসের যারা আছেন তার বসে নেই।

    গণমাধ্যমকে উদ্দেশ্য করে মন্ত্রী বলেন, একটু বোঝার চেষ্টা করেন। সবসময় দোষ খোঁজার চেষ্টা করবেন না।

    সুদান থেকে প্রথম দফায় ১৩৬ বাংলাদেশি সকালে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেন। ঢাকায় পৌঁছানো প্রত্যেক বাংলাদেশিকে আইওএম থেকে নগদ ২ হাজার এবং কল্যাণ বোর্ড থেকে ৩ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে।

     

  • সুদান থেকে জেদ্দায় পৌঁছেছেন ১৩৫ বাংলাদেশি

    সুদান থেকে জেদ্দায় পৌঁছেছেন ১৩৫ বাংলাদেশি

    সুদানে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব নিয়ে দুই সশ্রস্ত্র বাহিনীর লড়াইয়ের মধ্যে দেশটিতে আটকে পড়া ৬৭৫ বাংলাদেশির মধ্যে ১৩৫ জনকে জেদ্দায় নেওয়া হয়েছে।

    স্থানীয় সময় রোববার (৭ মে) তাদের বহনকারী সৌদি সামরিক বাহিনীর একটি উড়োজাহাজ সৌদি আরবের জেদ্দা শহরে অবতরণ করে।

    বিষয়টি নিশ্চিত করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ আফ্রিকা অনুবিভাগের মহাপরিচালক তারিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, আটকে পড়া অন্য বাংলাদেশিদেরও দ্রুত সময়ের মধ্যে জাহাজ বা বিমানে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে।

    রোববার বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সুদানে নিযুক্ত বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ জানিয়েছিলেন, দুপুরের আগেই ১৩৫ বাংলাদেশিকে নিয়ে সৌদি সামরিক বাহিনীর উড়োজাহাজটি জেদ্দার উদ্দেশ্যে উড়াল দেবে।

    গত ৩ মে সুদানে আটকে পড়া ৬৫০ বাংলাদেশি দেশটির রাজধানী খার্তুম থেকে পোর্ট সুদান বন্দরে পৌঁছান। ওইদিন সকালে তাদের বহনকারী ১৩টি বাস বন্দরে পৌঁছায়। আগের দিন ২ মে বাসগুলো ৬৫০ বাংলাদেশিকে নিয়ে খার্তুম থেকে পোর্ট সুদানের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। বন্দরে পৌঁছানোর পর দেখা যায়, অনেক বাংলাদেশির পাসপোর্ট নেই। সেক্ষেত্রে নতুন করে তাদের ট্রাভেল ডকুমেন্ট তৈরি করতে হয়।

    জানা গেছে, পোর্ট সুদান থেকে জেদ্দায় ফেরার জন্য ৬৭৫ বাংলাদেশি অপেক্ষায় ছিলেন। ট্রাভেল পারমিট ইস্যু ও জাহাজের শিডিউল পেতে দেরি হওয়ায় তারা জেদ্দায় পৌঁছাতে পারছিলেন না। তবে জাহাজ না পাওয়ায় বিমানযোগে ১৩৫ জনকে জেদ্দায় আনা হয়েছে।

    আফ্রিকার তৃতীয় বৃহত্তম দেশ সুদানে গত ১৫ এপ্রিল থেকে সেনাবাহিনী ও প্যারামিলিটারি র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সের (আরএসএফ) মধ্যে যুদ্ধ চলছে। এতে এখন পর্যন্ত অন্তত চারশোর বেশি মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। যাদের মধ্যে জাতিসংঘ কর্মী ও মিশরের সহকারী প্রতিরক্ষা উপদেষ্টাও রয়েছেন। তবে নিহতের প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়েও অনেক বেশি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

    সুদানে প্রায় দেড় হাজারের মতো বাংলাদেশি রয়েছেন। এরমধ্যে রাজধানী খার্তুমেই প্রায় ১ হাজার ২০০ বাংলাদেশির বাস। যুদ্ধকালীন প্রায় ৭০০ বাংলাদেশি দেশে ফেরত আসার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। এরমধ্যে আটকে পড়া ৬৭৫ জন বাংলাদেশিকে গত ৩ মে খার্তুম থেকে পোর্ট সুদানে আনা হয়।

    এখন পোর্ট সুদান থেকে তাদের জেদ্দায় ফিরিয়ে আনা হবে। জেদ্দা থেকে বাংলাদেশ বিমানের কয়েকটি ফ্লাইটে করে এসব বাংলাদেশিদের ঢাকায় ফেরানো হবে।

    এদিকে চলমান যুদ্ধে সুদানে চিকিৎসাসেবা, পানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহতভাবে বিঘ্নিত হওয়া এবং খাদ্যের মজুত ফুরিয়ে আসায় মানবিক সংকট দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিদেশি রাষ্ট্রগুলো আরও আগেই তাদের নাগরিক ও কূটনীতিকদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার কার্যক্রম শুরু করেছে।

    ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে শীর্ষ দুই সামরিক নেতার কাউন্সিলের মাধ্যমে সুদানের রাষ্ট্র পরিচালনা হচ্ছে। তারা হলেন- সুদানের সেনাবাহিনীর প্রধান ও প্রেসিডেন্ট জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং দেশটির উপ-নেতা ও আরএসএফ কমান্ডার জেনারেল মোহামেদ হামদান দাগালো।

    ভবিষ্যৎ রাষ্ট্র পরিচালনার রূপরেখা ও দেশটিতে বেসামরিক শাসন ফেরানোর প্রস্তাব ইস্যুতে এ দুই নেতার বিরোধ ঘিরেই গত ১৫ এপ্রিল সকাল থেকে যুদ্ধের সূত্রপাত। তবে কোন পক্ষ প্রথম আঘাত হেনেছে, সেটি এখনো স্পষ্ট নয়।

  • সুদানে বাংলাদেশ দূতের বাসভবন-দূতাবাসে গোলাগুলি

    সুদানে বাংলাদেশ দূতের বাসভবন-দূতাবাসে গোলাগুলি

    রাষ্ট্রক্ষমতার দ্বন্দ্ব নিয়ে সুদানে চলমান যুদ্ধে বিবাদমান দুই সশস্ত্র বাহিনীর গোলাগুলি খার্তুমের বাংলাদেশ দূতাবাসে আঘাত হেনেছে। গত ১৫ এপ্রিল সুদানে সংঘাতে বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদের বাসভবন আক্রান্ত হওয়ার পর ২২ এপ্রিল তার দূতাবাসও গুলির আঘাতের শিকার হয়েছে।

    দুই প্রতিপক্ষের গোলাগুলির সময় দূতাবাসের ভবনের জানালা ও দেয়াল ভেদ করে মেশিনগানের গুলি ঢুকে পড়তে দেখা গেছে। তবে এতে দূতাবাসের কেউ হতাহত হননি। এর আগে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূতের বাসভবনও গুলিতে আক্রান্ত হয়।

    খার্তুমে বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদের বাসাটি ছিল যুদ্ধের একেবারে কেন্দ্রে বিমানবন্দর ও সামরিক ঘাঁটির কাছাকাছি। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গণমাধ্যমকে গুলির তথ্য জানিয়েছে।

    পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, সুদানের সেনাবাহিনী ও প্যারামিলিটারি র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সের (আরএসএফ) মধ্যে যুদ্ধ চলছে। সংঘর্ষের ফলে খার্তুমের বাংলাদেশ দূতাবাসের মধ্যে মেশিনগানের গুলি ঢুকে পড়েছে। সেখানে নিযুক্ত বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদের বাসায়ও গুলি এসে পড়েছে।

    জানা গেছে, খার্তুমের পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ জাজিরা প্রদেশের মাদানি শহরে অবস্থান করছেন। সেখান থেকে বাংলাদেশিদের নিরাপদে সরিয়ে নিতে কাজ করছেন তিনি।

    ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত জানিয়েছেন, সুদানে দেড় হাজারের মতো বাংলাদেশি রয়েছেন। এর মধ্যে খার্তুমেই প্রায় ১ হাজার ২০০ বাংলাদেশি রয়েছেন। এদের মধ্যে প্রথম দফায় ৫০০ বাংলাদেশিকে এপ্রিলের শেষে জেদ্দায় নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি চলছে। শুরুতে ১০টি বাসে ৫০০ বাংলাদেশিকে পোর্ট সুদান নামে একটি শহরে নিয়ে যাওয়া হবে। পরে সেখান থেকে জাহাজ বা ফেরিতে করে জেদ্দায় যাবে তারা।

    এদিকে সুদানে যুদ্ধ পরিস্থিতিতে দেশটিতে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিকদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।

    মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) বিকেলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।

    প্রতিমন্ত্রী বলেন, সুদানে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিকদের নিরাপদে অন্য দেশের মাধ্যমে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার কার্যক্রম শুরুর সিদ্ধান্ত হয়েছে। খারতুমে বাংলাদেশ দূতাবাস এরই মধ্যে এ বার্তা সেখানে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের মধ্যে প্রচার শুরু করেছে।

    গত শনিবার (২২ এপ্রিল) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সুদানের চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে দেশটিতে সফর থেকে বিরত থাকতে বাংলাদেশি নাগরিকদের পরামর্শ দিয়ে সতর্কতা জারি করেছিল।

    আফ্রিকার তৃতীয় বৃহত্তম দেশ সুদানে গত ১৫ এপ্রিল থেকে সেনাবাহিনী ও প্যারামিলিটারি র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সের (আরএসএফ) মধ্যে যুদ্ধ চলছে। এতে এখন পর্যন্ত অন্তত চারশো মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। যাদের মধ্যে জাতিসংঘ কর্মীও রয়েছেন। তবে নিহতের প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়েও অনেক বেশি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

    এরমধ্যে টানা প্রায় ৪৮ ঘণ্টার আলোচনার পর সুদানে যুদ্ধবিরতিতে দুপক্ষের সমঝোতা হয়। তবে সোমবার মধ্যরাত থেকে ৭২ ঘণ্টার এ যুদ্ধবিরতি আদতে কার্যকর হয়নি।

    দেশটিতে চিকিৎসাসেবা, পানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহতভাবে বিঘ্নিত হওয়া এবং খাদ্যের মজুত ফুরিয়ে আসায় মানবিক সংকট দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিদেশি রাষ্ট্রগুলো তাদের নাগরিক ও কূটনীতিকদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার কার্যক্রম শুরু করেছে।

  • সুদান ভ্রমণ বাংলাদেশিদের জন্য নিরাপদ নয়

    সুদান ভ্রমণ বাংলাদেশিদের জন্য নিরাপদ নয়

    সুদানের বর্তমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিবেচনায় দেশটি ভ্রমণ বাংলাদেশিদের জন্য নিরাপদ মনে করছে না দূতাবাস। তাই বাংলাদেশি নাগরিকদের দেশটি ভ্রমণ না করার অনুরোধ করা হয়েছে।

    শনিবার (২২ এপ্রিল) দূতাবাস থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ অনুরোধ করা হয়।

    দূতাবাসের বার্তায় বলা হয়, সম্প্রতি সুদানে মারাত্মক সশস্ত্র সংঘর্ষ শুরু হয়েছে, যার ফলে হতাহতের ঘটনা ঘটছে এবং খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি সরবরাহে ব্যাঘাত ঘটছে। খার্তুম বিমানবন্দরসহ খার্তুম শহর এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ চলছে। তাই বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য এখন সুদান ভ্রমণ নিরাপদ নয়।

    এ কারণে সব বাংলাদেশি নাগরিকদের পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেখানে ভ্রমণ না করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

    বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও সংস্থাগুলোকে এ পরামর্শটি অবগত করা হয়েছে বলেও বার্তায় উল্লেখ করে দূতাবাস।

    সুদানের সেনাবাহিনী ও আধা-সামরিক বাহিনী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) সংঘর্ষ চলছে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, এরইমধ্যে দেশটিতে তিন শতাধিক নিহত হয়েছেন। আর আহতের সংখ্যা তিন হাজারের বেশি ছাড়িয়ে গেছে। দেশটিতে আরও বড় আকারে সংঘাত ছড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

     

  • সুদানে সেনা-মিলিশিয়ার সংঘাতে নিহত প্রায় ২০০

    সুদানে সেনা-মিলিশিয়ার সংঘাতে নিহত প্রায় ২০০

    সুদানে সেনাবাহিনী এবং আধা-সামরিক বাহিনীর মধ্যে সংঘাত এখনও চলছেই। দুপক্ষের লড়াইয়ে এখন পর্যন্ত প্রায় ২০০ মানুষ নিহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া আহত হয়েছে আরও ১৮০০ জন। তিনদিন ধরে চলা এই লড়াইয়ের কারণে সোমবার হাসপাতালগুলোতে ব্যাপক চাপ তৈরি হয়েছে। এতে করে মেডিক্যাল সরবরাহ ও খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে।

    রাজধানী খার্তুমে প্রেসিডেন্টের প্রাসাদ, রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ও সেনা সদর দপ্তরের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুই বাহিনীর মধ্যে শনিবার লড়াই শুরু হয়। সংঘাতের কেন্দ্রে রয়েছে শীর্ষ দুই জেনারেল এবং সবশেষ এই সংঘর্ষের জন্য তাদের নেতৃত্বাধীন দুই বাহিনী পরস্পরকে দায়ী করছে।

    সেনাবাহিনী ও আরএসএফ বাহিনীর মধ্যে নতুন করে শুরু হওয়া এই সংঘর্ষের কারণে রাজধানী খার্তুমসহ সারা দেশের মানুষের মধ্যে আবারও বড় ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।

    ২০২১ সালের অক্টোবরে এক সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে সুদানের ক্ষমতা মূলত সামরিক জেনারেলদের হাতে। এর নেতৃত্বে রয়েছেন জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান। তার প্রতি অনুগত সামরিক ইউনিটগুলোর সঙ্গে লড়াই চলছে আরএসএফের, যার নেতৃত্বে রয়েছেন সুদানের উপ-নেতা মোহাম্মদ হামদান দাগালো। তিনি হেমেডটি নামেও পরিচিত।

    দাগালো বলেছেন, তার সৈন্যরা সব সেনা ঘাঁটি দখল না করা পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাবে। অপরদিকে সুদানের সশস্ত্র বাহিনীগুলোও আধা-সামরিক বাহিনী আরএসএফ-কে ধ্বংস না করা পর্যন্ত কোনো ধরনের আপোস-আলোচনার প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছে।

    অল্প কিছুদিন আগেও এই দুই সামরিক নেতার মধ্যে বন্ধুত্ব ছিল। সুদানের প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরকে ২০১৯ সালে ক্ষমতা থেকে সরাতে তারা দুজন একসাথে কাজ করেছেন। ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানেও তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।

    কিন্তু এক পর্যায়ে আগামীতে দেশটি কিভাবে পরিচালিত হবে তা নিয়েই এই দুই নেতার মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়। বিশেষ করে সুদানের ভবিষ্যৎ এবং দেশটির বেসামরিক শাসনে ফিরে যাওয়ার প্রস্তাবনা নিয়ে তারা ভিন্ন অবস্থান গ্রহণ করেন।

    এর আগে দেশটিতে বেসামরিক সরকার পুন-প্রতিষ্ঠার জন্য বিভিন্ন গ্রুপ ও সেনাবাহিনীর মধ্যে আলাপ-আলোচনা চলছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ওই সংলাপও ব্যর্থ হয়।

    পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এই দুই জেনারেলের মধ্যে যে বিষয়টি বিরোধের একেবারে কেন্দ্রে রয়েছে তা হচ্ছে এক লাখ সদস্যের র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসকে সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা এবং তারপর নতুন এই বাহিনীর নেতৃত্বে কে থাকবে সে বিষয়টি।

    এর আগে বেশ কিছু সময় ধরেই উত্তেজনা চলছিল। পরিস্থিতি সামাল দিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে আরএসএফ বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়। এই সিদ্ধান্তকে মেনে নিতে পারেনি সুদানি সেনাবাহিনী। তারা এটিকে তাদের জন্য হুমকি হিসেবে মনে করে।

    উত্তেজনা নিরসনে আলাপ আলোচনাও শুরু হয়েছিল। আশা করা হচ্ছিল যে সংলাপের মধ্য দিয়ে এই উত্তেজনা প্রশমিত হবে এবং বিরোধের অবসান ঘটবে।

    কিন্তু আলোচনায় কোনো সমাধান আসেনি। এর জের ধরেই শনিবার সকালে লড়াই শুরু হয়। তবে কোন পক্ষ প্রথম আক্রমণ করেছে তা স্পষ্ট নয়। দুপক্ষের মধ্যে বিমান হামলা, আর্টিলারি এবং ভারী অস্ত্র দিয়ে গোলাগুলি হচ্ছে। দেশটির বাসিন্দারা একদিকে খাবার এবং পেট্রোলের সংকটে রয়েছে। অন্যদিকে নতুন করে যুক্ত হয়েছে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের মতো সমস্যাও।

  • প্রেসিডেন্টের ‘মূত্রত্যাগের’ ভিডিও ফাঁস, দক্ষিণ সুদানে ৬ সাংবাদিক গ্রেপ্তার

    প্রেসিডেন্টের ‘মূত্রত্যাগের’ ভিডিও ফাঁস, দক্ষিণ সুদানে ৬ সাংবাদিক গ্রেপ্তার

    একটি অনুষ্ঠানে জাতীয় সংগীত বাজার সময় বুকে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা দক্ষিণ সুদানের প্রেসিডেন্টের প্যান্ট ভিজে যাওয়ার একটি ভিডিও অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ার পর দেশটির ছয় সংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয়।

    বিবিসি জানায়, গত ডিসেম্বর মাসে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ওই ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ে।

    ভিডিও দেখা মনে হচ্ছে, লাঠিভর দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা প্রেসিডেন্ট সালভা কির হয়ত প্রস্রাব ধরে রাখতে পারেননি।

    প্রেসিডেন্টের প্যান্টে প্রস্রাব করে দেওয়ার ভিডিও ফাঁস করে দেওয়ার দায়ে গ্রেপ্তার সাংবাদিকদের সবাই সাউথ সুদানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যমের কর্মী।

    এ সপ্তাহে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় জানিয়ে তাদের মুক্তি দাবি করেছে দ্য কমিটি টু প্রোটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে)।

    দক্ষিণ সুদান ইউনিয়ন অব জার্নালিস্টস এর প্রেসিডেন্ট প্যাট্রিক ওয়েট বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘‘কীভাবে প্রেসিডেন্টের প্যান্টে মূত্রত্যাগ করে দেওয়ার ভিডিও ফাঁস হল সেটা হয়তো তারা জানেন- এমন সন্দেহ থেকেই ওই ছয় সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”

    দ্য সাউথ সুদান ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশনের (এসএসবিসি) দাবি, তারা কখনোই ওই ভিডিও সম্প্রচার করেনি।

    এদিকে দেশটির তথ্যমন্ত্রী মাইকেল মাকুইভ ভয়েস অব আমেরিকাকে বলেছেন, কেন ওই সাংবাদিকদের আটক করা হয়েছে সেটা জানতে লোকজনের অপেক্ষা করা উচিত।

    মানবাধিকার সংগঠনগুলো বারবার দক্ষিণ সুদানে সাংবাদিকদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে এবং দেশটির প্রশাসনকে ক্রমাগত সাংবাদিকদের হেনেস্তা করা ও হুমকি দেওয়া বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে।

    ২০১১ সালে কির আফ্রিকা মহাদেশের একেবারে নতুন দেশ দক্ষিণ সুদানের প্রথম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।

    জন্মের পর থেকেই দেশটি অসংখ্য সংকটের সম্মুখীন হচ্ছে। নির্মম সংঘাত, রাজনৈতিক অস্থিরতা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং দুর্ভিক্ষ যেন দেশটির পিছু ছাড়ছেই না।