২৪ ঘন্টা স্পেশাল : পঞ্চাশ কোটি ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার বাই পাস সংলগ্ন দ্বিতীয় ইন্দ্রপুল সেতু। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার ও বান্দরবান জেলায় যাতায়াতের সহজতম যোগাযোগের লক্ষ্যে পুরনো একটি ব্রিজ থাকা অবস্থায় নতুন সেতুটি নির্মিত হচ্ছে।
তবে এ সেতুটি মানুষের উপকারে আসবে নাকি মৃত্যুফাঁদে পরিণত হবে তাই নিয়ে এখন থেকেই চিন্তিত স্থানীয় এলাকাবাসী। সেতুর নির্মাণ কাজ চলমান অবস্থায় ব্রিজের জন্য নির্মিত ৭ টি গার্ডারের মধ্যে ১ টি গার্ডারে ফাটল দেখা দিয়েছে।
প্রয়োজনের তুলনায় কম এবং নিম্নমানের উপাদান ব্যবহার করায় নির্মাণ কাজ চলমান অবস্থায় ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত গার্ডারটিতে ফাটল দেখা দিয়েছে বলে অভিযোগ তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন স্থানীয়রা।
তাছাড়া ব্রীজ নির্মাণে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার, সংশ্লিষ্টদের গাফিলতি ও ঠিকাদারের দুর্নীতি হচ্ছে কিনা তা খতিয়ে দেখার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারী বাড়ানোর দাবী জানান স্থানীয়রা।
মঙ্গলবার (১৬ মার্চ) সরেজমিনে ইন্দ্রপুল ব্রীজের নির্মাণ কাজের সর্বশেষ অবস্থান জানতে গিয়ে দেখা যায়, পুরাতন একটি ব্রিজের পাশে নতুন ব্রিজটির নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে।
নির্মাণকাজে নিয়োজিত একাধিক শ্রমিকের সাথে কথা বলে জানা যায় ব্রিজটির নির্মাণ কাজে মোট ২৪টি গার্ডার তৈরি করা হবে। ইতিমধ্যে ৭টি গার্ডারের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে।
তাছাড়া ব্রিজটির জন্য বর্তমানে তিনটি পিলার নির্মাণ কাজও শেষ। আর ৫টি গার্ডার তৈরি শেষ হলে মোট ১২টি গার্ডার বসানো হবে এ তিন পিলারের উপর। কিন্তু সোমবার সকাল ১০ টার দিকে একটি গার্ডারের লোহা টাইট দিতে গিয়ে সেটি ভেঙ্গে যায়।
গার্ডারের ফাটল মারাত্মক জানিয়ে সেটি আর কোন কাজে আসবে না বলে জানালেন এ প্রকল্পের প্রকৌশলী তানভীর হাসান খান। ফাটল দেয়া গার্ডারটির নির্মাণে প্রায় ৩৫ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে জানিয়ে সেটি পুনরায় নির্মাণের ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে তিনি জানান।
এদিয়ে এ ঘটনায় ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মাঝে। বিষয়টি নিয়ে নানান আলোচনার জন্ম দিচ্ছে।
অনেকেই বলেন, নির্মান কাজ চলমান থাকতেই গার্ডারের ফাটল দেখেই বুঝা যায় এখানে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। তাছাড়া ঠিকাদারের দুর্ণীতির পাশাপাশি গাফিলতি হচ্ছে সংশ্লিষ্টদের।
তবে এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন দাবি করে কাজ শতভাগ ভালো হয়েছে দাবি করেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান স্পেক্ট্রার পরিচালক জিয়াউল হক জিয়া।
নির্মাণ কাজে কোনো ধরনের অনিয়ম কিংবা গাফিলতি হয়নি জানিয়ে গার্ডারে ফাটলের বিষয়টি তিনি অবগত নয় বললেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক। অন্যদিকে বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করার আশ্বাস দিয়েছেন পটিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী।
জানা যায়, বাংলাদেশ সরকার ও জাপানের জাইকার যৌথ অর্থায়নে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে প্রায় ৭শ কোটি টাকা ব্যয়ে চারটি সেতু নির্মাণের কাজ পেয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান স্পেক্ট্রা-সিআর ২৪বি জয়েন্ট ভেনচার।
এর মধ্যে পটিয়া ইন্দ্রপুল সেতুটির ব্যয় ধরা হয়েছে ৫০ কোটি টাকা। যা ২০২৩ সালের নভেম্বরে শেষ হওয়ার কথা। একই প্রকল্পের বাকি সেতুগুলো হচ্ছে চন্দনাইশ উপজেলার বরগুনি সেতু, দোহাজারী সাঙ্গু সেতু ও কক্সবাজারের চকরিয়ায় মাতামুহরী সেতু।
২৪ ঘন্টা/রাজীব সেন প্রিন্স