নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার তারাবো পৌরসভার রসুলপুর এলাকার ইউনুস মৃধার ছেলে জামাল হোসেন। মাস্টার কয়েল নামে একটি মশার কয়েল কারখানার মালিক। যার কোনো বৈধ কাগজপত্র নেই। তাছাড়া তার মালিকানাধিন রয়েছে গরুর খামার। কয়েল কারখানা এবং গরুর খামার দুটোরই নেই কোন পরিবেশের ছাড়পত্র।
ছাড়পত্র ও বৈধ কাগজপত্র থাকার কথাও না কারণ এসব ব্যবসা ছিলো শুধুমাত্র প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিতে। তার আয়ের আসল উৎস মাদক। তার ভাই মোস্তফা কামাল এবং প্রতিবেশী মানিক মিয়ার সহযোগীতায় সে গড়ে তুলেছিলো মাদকের সাম্রাজ্য। এ তথ্য প্রশাসন জানতে পেরে গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে জামালের বাস ভবনে হানা দেয় জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।
মাদক ব্যবসার বিষয়টি এতোদিন সকলের অগোচরে থাকলেও জামালকে তার দুই সহযোগীসহ গ্রেফতারের পর তা প্রকাশ পায়। অভিযানের সময় তার বাড়িতে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা ও ২ হাজার ইয়াবা বড়ি জব্দ করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, জামাল ও মোস্তফার বাড়ি বরিশাল জেলার উজিরপুর থানার ধাসুরা এলাকায়। আট বছর আগে তাঁরা রসুলপুর এলাকায় জমি কিনে বাড়ি নির্মাণ করেন। তাঁরা অবৈধ কয়েল কারখানা ও গরুর খামারের আড়ালে ইয়াবার ব্যবসা করে আসছিলেন। মঙ্গলবার ইয়াবার বড় একটি চালান তার বাড়িতে আসছে গোপন তথ্য পেয়ে অভিযানে যায় পুলিশ।
জেলা পুলিশের উপ-পরিদর্শক মো. মিজান জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ জানতে পারে স্থানীয় কয়েল ব্যবসায়ী জামাল হোসেন মৃধার বাড়িতে এক লাখ পিছ ইয়াবা ট্যাবলেটের একটি চালান প্রবেশ করবে। এরপর গোয়েন্দা পুলিশ মঙ্গলবার বিকেল থেকে ওই এলাকায় নজরদারি শুরু করে।
মধ্য রাত থেকে জামাল হোসেন মৃধার চার তলা বাড়ির তৃতীয় তলার ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালায়। এ সময় একটি ট্রাংক থেকে নগদ এক কোটি টাকা এবং আমলমারির ভেতর থেকে আরো পঁচিশ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। একই সঙ্গে বাড়িটির নিচ তলায় জামাল হোসেনের ব্যক্তিগত অফিস থেকে দুই হাজার পিছ ইয়াবা উদ্ধার হয়।
রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান বলেন, এ ঘটনায় বাড়ির মালিক জামাল হোসেন, তাঁর সহযোগী মোস্তফা কামাল ও প্রতিবেশী মানিক মিয়াকে আটক করে পুলিশ।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ বলেন, আটক ব্যক্তিরা টাকার বৈধ উৎস জানাতে পারেননি। এত টাকা কোথা থেকে এসেছে, সে তথ্যও দিতে পারেননি। তাকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে সব তথ্য বেরিয়ে আসবে। তার বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে আইনে মামলা হবে জানিয়ে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে পুলিশ সুপার।