৪০তম স্প্যান বসানোর মধ্যে দিয়ে দৃশ্যমান হয়েছে পদ্মা সেতুর ছয় কিলোমিটার। আজ শুক্রবার সকাল ১০টা ৫৮ মিনিটে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া অংশে মাঝ নদীতে সেতুর ১১ ও ১২ নম্বর পিয়ারে (খুঁটি) বসানো হয় স্প্যানটি। ৩৯তম স্প্যান বসানোর সাত দিনের মাথায় বসানো হলো ৪০তম স্প্যানটি।
পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী (মূলসেতু) দেওয়ান আব্দুল কাদের এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ছয় দশমিক ১৫ কিলোমিটারের মূল সেতুতে মোট ৪১টি স্প্যানের মধ্যে বসানো বাকি রইল আর মাত্র একটি।
দেওয়ান আব্দুল কাদের জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের স্প্যানটি বহন করে ভাসমান ক্রেন তিয়াইন-ই নির্ধারিত পিয়ারে কাছে নিয়ে নোঙর করে রাখা হয়েছিল। বাকি ছিল শুধু স্প্যানটি উপরে তুলে বসানোর কাজ। শুক্রবার সকাল ৯টা ২০ মিনিটে স্প্যানটি উপরে তোলার কাজ শুরু হয়। এরপর ইঞ্চি মেপে নির্ধারিত পিয়ারের ওপর ভূমিকম্প সহনশীল বিয়ারিং ধীরে ধীরএ বসানো হয়।
চল্লিশতম স্প্যানটি বসে যাওয়ায় এখন ১২ ও ১৩ নম্বর পিয়ারে সর্বশেষ ৪১তম স্প্যান স্প্যান ‘২-এফ’ বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে প্রকৌশলীদের। আগামী ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসের মধ্যে বাকি থাকা স্প্যানটি বসানো হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে, স্প্যান বাসানো ছাড়াও অন্যান্য কাজও এগিয়ে চলেছে। এর মধ্যে সেতুতে আঠারোশতাধিক রেলওয়ে ও বারোশতাধিক রোডওয়ে স্ল্যাব বসানো হয়েছে।
২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় পদ্মা সেতু। এরপর একে একে বসানো হয় ৪০টি স্প্যান। এতে দৃশ্যমান হয়েছে সেতুর ছয় কিলোমিটার অংশ। ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্প্যান বসিয়ে ছয় দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হবে। সবকটি পিয়ার এরই মধ্যে দৃশ্যমান হয়েছে। মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। দুটি সংযোগ সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণ করেছে বাংলাদেশের আবদুল মোমেন লিমিটেড।
ছয় দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো। নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর আগামী ২০২১ সালে খুলে দেওয়া হবে পদ্মা সেতু।