Tag: স্বাস্থ্য সেবা মানুষের অধিকার

  • স্বাস্থ্য সেবা মানুষের অধিকার এ সেবাকে পণ্য বানানো চলবে না:সুজন

    স্বাস্থ্য সেবা মানুষের অধিকার এ সেবাকে পণ্য বানানো চলবে না:সুজন

    স্বাস্থ্য সেবা মানুষের অধিকার, এ সেবাকে পণ্য বানানো চলবে না বলে অভিমত প্রকাশ করেছেন জনদুর্ভোগ লাঘবে জনতার ঐক্য চাই শীর্ষক নাগরিক উদ্যোগের প্রধান উপদেষ্টা ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন।

    তিনি আজ বুধবার (২৯ জানুয়ারী) সকালে নগরীর মেহেদীবাগে চিকিৎসা বেনিয়াদের হাত থেকে স্বাস্থ্য সেবা রক্ষার দাবীতে নাগরিক উদ্যোগ আয়োজিত এক বিশাল মানব বন্ধনে উপরোক্ত মন্তব্য করেন।

    এ সময় সুজন বলেন, চট্টগ্রাম বাংলাদেশের অর্থনৈতিক হৃদপিন্ড। ভৌগলিক কারণে চট্টগ্রামের গুরুত্ব অত্যধিক। জনসংখ্যার দিক থেকে ঢাকার পরেই চট্টগ্রামের অবস্থান। জীবন ও জীবিকার তাগিদে তাই বিভিন্ন শ্রেণী পেশার বিপুল সংখ্যক জনগোষ্ঠীর বসবাস এই চট্টগ্রামে। অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্যি যে এই বিপুল জনগোষ্ঠী পরিপূর্ণ চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত।

    মানববন্ধনে বক্তব্য রাখছেন খোরশেদ আলম সুজন

    সরকারী হাসপাতালের চিকিৎসা সেবার অপ্রতুলতাকে পুঁজি করে প্রাইভেট হাসপাতালগুলো চিকিৎসা সেবার সুযোগ নিয়ে প্রতিনিয়ত যাচ্ছেতাই লুটতরাজ করছে। নগরীর বিভিন্ন অলি গলিতে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠা ক্লিনিকগুলোর উপযুক্ততা কিংবা প্রয়োজনীয় সংখ্যক যন্ত্রপাতি আছে কিনা তা আমাদের বোধগম্য নয়। এতো বিপুল সংখ্যক প্রাইভেট হাসপাতাল এবং রোগ নিরূপনী কেন্দ্রে টেকনিশিয়ানের নামে কারা বিপুল পরিমাণ রোগীর রোগ নির্ণয় করছে তা আমাদের অজানা। প্রায়শই একই রকম পরীক্ষার ক্ষেত্রে একেক ডায়াগনস্টিক সেন্টার একেক রকম রিপোর্ট দিচ্ছে যা রোগীদের সাথে তামাশা ছাড়া আর কিছুই নয়।

    ক্লিনিকগুলোতে কোন সেবার দাম কতো তা সাধারণ রোগী কিংবা তার স্বজনদের ধারনার বাহিরে। অযথা রোগীকে আলট্রাসনোগ্রাফী, এন্ডোসকপি, ইসিজি, এমআরআই এর মতো ব্যয়বহুল ও অপ্রয়োজনীয় টেস্টের ঘানি টানতে হচ্ছে। স্বাস্থ্য সেবাকে পণ্যে রূপান্তরই হচ্ছে এর একমাত্র কারণ। অধিকাংশ রিপোর্ট দেয় টেকনিশিয়ানরা। যেখানে ভুলের পরিমাণ থাকে উল্লেখযোগ্য হারে। অথচ সেখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের স্বাক্ষরযুক্ত রিপোর্ট উপস্থাপন করা হয় রোগীর কাছে। এ যেন ধরাকে সরা জ্ঞান করার মতো অবস্থা। তাছাড়া দেখা যাচ্ছে যে প্রাইভেট হাসপাতালগুলোতে রোগীর বিলের কোন প্রকার ধারনা ছাড়াই রোগীকে ভর্তি করা হচ্ছে। অহেতুক আইসিইউ, সিসিইউ ও এইচডিও’র মতো চিকিৎসা গ্রহণ করার জন্যও রোগীদের বাধ্য করা হচ্ছে। এর পরবর্তীতে চিকিৎসা শেষে বিশাল অংকের একটা বিল রোগীকে ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে যা নিয়ে বিভিন্ন ক্লিনিকে রোগীর এবং রোগীর আত্নীয় স্বজনদের সাথে বাদানুবাদ লেগেই থাকছে। ঔষধের দামের ক্ষেত্রেও ব্যাপক তারতম্য লক্ষ্য করা যায়। একেক ঔষধের দাম একেক জায়গায় একেক রকম। যার ফলে রোগীরা প্রতারিত হচ্ছে এবং বিপুল সংখ্যক অর্থেরও অপচয় হচ্ছে।

    তিনি স্বাস্থ্য সেবার সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি বিনীত আহবান জানিয়ে বলেন, রোগী ভর্তি হওয়ার পূর্বেই রোগীকে রোগের খরচ সম্পর্কে একটা পূর্ব ধারনা দিতে হবে। ক্লিনিকগুলোর বিভিন্ন প্যাথলজী পরীক্ষার মূল্য এবং রুমের ভাড়া প্রকাশ্যে প্রদর্শন করতে হবে। আইসিইউ, সিসিইউ ও এইচডিও’র একটি অংশ দরিদ্র রোগীদের জন্য বরাদ্ধ রাখতে হবে।

    তিনি মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে বিভিন্ন সেবার ক্ষেত্রে ২৫% ছাড় দেওয়ার জন্য প্রাইভেট হাসপাতাল এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টার মালিকদের নিকট বিনীত আহবান জানান। এছাড়া যেসব প্রাইভেট হাসপাতালে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপযুক্ততা কিংবা প্রয়োজনীয় সংখ্যক যন্ত্রপাতি নাই সেগুলোর অনুমোদন বাতিল করার জন্যও স্বাস্থ্য মন্ত্রীর নিকট বিনীত অনুরোধ জানান সুজন।

    মানব বন্ধনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রাজনীতিবিদ হাজী মোঃ ইলিয়াছ, আব্দুর রহমান মিয়া, এস.এম.আবু তাহের, নিজাম উদ্দিন, নাগরিক উদ্যোগের সদস্য সচিব হাজী মোঃ হোসেন, আব্দুল আজিম, এজাহারুল হক, নুরুল কবির, মোরশেদ আলম, পংকজ চৌধুরী কংকন, মোঃ শাহজাহান, এ.এস.এম জাহিদ হোসেন, শেখ মামুনুর রশীদ, সোলেমান সুমন, অনির্বাণ দাশ বাবু, সমীর মহাজন লিটন, জাহাঙ্গীর আলম, সফি আলম বাদশা, হাসান মোঃ মুরাদ, রকিবুল আলম সাজ্জী, আশিকুন্নবী চৌধুরী, মহানগর নগর ছাত্রলীগ সভাপতি এম ইমরান আহমেদ ইমু, সহ-সভাপতি জয়নাল উদ্দিন জাহেদ, শহীদুল আলম লিটন, মোঃ ওয়াসিম, সৈয়দ ইবনে জামান, হাসান হাবিব সেতু, মোঃ কাইয়ুম, মিজানুর রহমান মিজান প্রমূখ।