Tag: সড়ক পরিবহন আইন

  • নতুর সড়ক পরিবহন আইন কার্যকরে আরও ১ সপ্তাহ সময় বৃদ্ধি

    নতুর সড়ক পরিবহন আইন কার্যকরে আরও ১ সপ্তাহ সময় বৃদ্ধি

    সড়ক পরিবহনের নতুন আইন কার্যকর করার সময় আরও এক সপ্তাহ বাড়ানো হয়েছে।

    বৃহস্পতিবার বনানীতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) কার্যালয়ে সড়ক পরিবহনের নতুন আইন কার্যকর নিয়ে আয়োজিত মতবিনিময় সভা শেষে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

    তিনি বলেন, ‘এই আইন প্রয়োগের শুরুতে এক সপ্তাহ সময় বাড়ানো হয়েছিল সচেতনতা সৃষ্টির জন্য। এবার আরও এক সপ্তাহ সময় একই কারণে বাড়ানো হলো। এরপর থেকে কঠোরভাবে আইন বাস্তবায়নে কাজ করা হবে।’

    ওবায়দুল কাদের বলেন, মূলত কঠোর আইন প্রয়োগের আগে আরও সময় দেয়া প্রয়োজন। তাই তাদের সচেতনতা বাড়াতে আরও এক সাপ্তাহ সময় বাড়ানো হলো। এরপর থেকে আইনটি কঠোরভাবে প্রয়োগ করা হবে। এছাড়া এ আইনের বিধি প্রণয়নের কাজও শেষ পর্যায়ে রয়েছে।

    কঠিন আইন বাস্তবায়ন করলে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরবে জানিয়ে সড়ক পরিবহন মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে। এই কথা সবার মেনে নিয়ম অনুযায়ী কাজ করতে হবে। যে কঠিন আইন করা হয়েছে, তা জানগণকে জানানোর জন্য ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা করা হচ্ছে। আমাদের দেশের মিডিয়াও এ বিষয় ভূমিকা রাখছে। এই কঠিন আইন প্রয়োগ হলে সবাই সড়কে শৃঙ্খলভাবে নিয়ম মেনে চলবে।

    সড়ক আইন প্রয়োগে বিলম্বের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, বেটার লেট দ্যান নেভার… আইনটি এখন প্রায়োগিক পর্যায়ে চলে এসেছে। সকল সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে অ্যালাইনড করা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও তার প্রত্যাশা জানিয়েছেন। এখন আমরা প্রয়োগে যাওয়ার পর্যায়ে রয়েছি। আইনের বিধি প্রণয়নের কাজ শেষ পর্যায়ে।

    সড়ক আইন প্রয়োগে সবকিছু নিয়ে আঁটঘাঁট বেঁধে নামতে হবে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, নগরে সড়কে ফুটপাতে, পার্কিংয়ে শৃঙ্খলা আনতে দেশের দুটি সিটি কর্পোরেশন কাজ শুরু করলেও ডেঙ্গুর প্রকোপের কারণে তাতে কিছুটা ভাটা পড়েছিল। তার পরে আমরা কাজ এগিয়ে নিয়েছি তা বাস্তবায়নের পথে। এরই মধ্যে যেসব ড্রাইভারের লাইসেন্স নেই তারা লাইসেন্স করার জন্য ভিড় করছে।

    বিআরটিএ এর চেয়ারম্যানকে কোনো অপকর্মের ছাড় না দেয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বিআরটিএ কোন কর্মকতারা যদি দুর্নীতি করে, তাহলে তাকে ছাড় না দিয়ে বাদ দিতে হবে। এই প্রতিষ্ঠানকে দুর্নীতি মুক্ত করতে যা করার দরকার তাই করা হবে। বিআরটিএ ভেতরেও দালাল আছে তা না থাকলে বাইরের দালান থাকে কি ভাবে তাদেরকেও সরিয়ে দিতে হবে।

    সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে ওবায়দুল কাদের বলেন, অন্য দল নিয়ে এখন ভাবছি না। আওয়ামী লীগে যারা অনুপ্রবেশকারী, তাদের নিয়ে আমরা বেশি ব্যস্ত। দেশে যেসব রাষ্ট্রদূত আছেন, বিকেলে তাদের সঙ্গে কথা হবে। বিএনপি কথায় কথায় বিদেশিদের কাছে নালিশ করে, অভিযোগ করে, কী অভিযোগ করেছে, সে কথা আমাদের শুনতে বলে।

    এর আগে সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ বাস্তবায়ন এবং জনসচেতনতা তৈরিতে বিআরটিএ’র বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় সভায় অংশ নেন ওবায়দুল কাদের।

  • নতুন আইনে প্রথম সাতদিন প্রচারণা চালাবে সরকার : সেতুমন্ত্রী

    নতুন আইনে প্রথম সাতদিন প্রচারণা চালাবে সরকার : সেতুমন্ত্রী

    সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে নতুন সড়ক পরিবহন আইন কার্যকর হয়েছে। যা গতকাল থেকে চালু হয়েছে। তবে কার্যকরের প্রথম সাতদিন নতুন আইনে কোনো মামলা হবে না। এই সময়ে প্রচারণা চালাবে সরকার।

    শনিবার সকালে নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় নতুন সড়ক পরিবহন আইন বাস্তবায়নে বিআরটিএ’র কার্যক্রম পরিদর্শনে এসে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।

    সেতুমন্ত্রী বলেন, নতুন সড়ক পরিবহন আইন পুরোপুরি বাস্তবায়িত হলে দুর্ঘটনা কমে যাওয়াসহ সড়কে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। এই আইন কার্যকরের জন্য এখন সারা বাংলাদেশে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো হচ্ছে। এই সময়ে কোনও পরিবহনের বিরুদ্ধে নতুন আইনে মামলা দায়ের না করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

    ভূমিদস্যু, সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, সারাদেশে তৃণমূল পর্যায়ে শুদ্ধি অভিযান চলছে। এরই মধ্যে জেলা ও তৃণমূল পর্যায়ে ভূমিদস্যু, মাদক ব্যবসায়ী, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।

    এ সময় বিআরটিএ’র চেয়ারম্যান ড. আহসানুল করিম, হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত আইজি ব্যারিস্টার মাহবুবুর রহমান, নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, পুলিশ সুপার মো. হারুন-অর-রশিদসহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

    বহুল আলোচিত সড়ক পরিবহন আইন ১ নভেম্বর থেকে কার্যকর হয়েছে। আইনে রয়েছে নিয়োগপত্র ছাড়া কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কোনো ব্যক্তিকে গণপরিবহনের চালক হিসেবে নিয়োগ করতে পারবে না। নিয়োগপ্রাপ্ত চালক তার কাগজপত্র গাড়িতে প্রদর্শন করবেন।

    এ ছাড়া কন্ডাকটর লাইসেন্স ছাড়া কন্ডাকটর নিয়োগ করা যাবে না। ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালালে ছয় মাসের কারাদণ্ড বা অনধিক ২৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। আগে এ অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি ছিল চার মাসের কারাদণ্ড বা ৫০০ টাকা অর্থদণ্ড। লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালালে অনধিক ছয় মাসের জেল বা অনধিক ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে। ফিটনেসবিহীন গাড়ি চালালে ছয় মাসের জেল বা অনধিক ২৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড দেওয়া হবে।

    এছাড়া নতুন আইনে শিক্ষানবিশ লাইসেন্স ছাড়া কর্তৃপক্ষের দেওয়া যে কোনো লাইসেন্সের বিপরীতে ১২ পয়েন্ট দেওয়া থাকবে। অপরাধ করলে তা কাটা যাবে। লালবাতি অমান্য, ওভারটেক, গতিসীমা অমান্য, বিপরীত দিক থেকে গাড়ি চালানো, ওজনসীমা লঙ্ঘন, নেশাগ্রস্ত হয়ে গাড়ি চালালে পয়েন্ট কাটা যাবে চালকের। এ বিধান আগে ছিল না।

  • আজ থেকে চালু হচ্ছে নতুন সড়ক পরিবহন আইন

    আজ থেকে চালু হচ্ছে নতুন সড়ক পরিবহন আইন

    আজ ১ নভেম্বর (শুক্রবার) থেকে কার্যকর হতে যাচ্ছে সড়ক পরিবহন আইন। ৭৯ বছরের পুরনো আইনটি এতদিন চলমান ছিল। গত বছর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে কাজের গতি বাড়িয়ে আইনটি পাসের পর নানা দিক বিশ্লেষণের কারণে আইনটি বাস্তবায়নে সময় নিয়েছে সরকার।

    নতুন আইনে বেপরোয়া গাড়ি চালকের কারণে মৃত্যু হলে পাঁচ বছর কারাদণ্ড বা অনধিক পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয়দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। আর উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বেপরোয়া গাড়ি চালিয়ে হত্যাকাণ্ড ঘটালে চালকের সর্বোচ্চ সাজা হবে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন অপরাধের জন্য জেল-জরিমানার সঙ্গে চালকের পয়েন্ট কাটা হবে।

    বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) ও পুলিশসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তারা বলছেন, নতুন আইন কার্যকর করতে প্রস্ততি নেওয়া হচ্ছে।

    পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সড়ক আইন কার্যকরে এরইমধ্যে দেশের সব ট্রাফিক ইউনিটগুলোতে এবং সার্জেন্টদের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। বিশেষ করে ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনের মামলা পস মেশিনে করা হয়। সেই মেশিনটিতে জরিমানার টাকাসহ আরও কিছু বিষয় নির্ধারিত থাকে। সেই বিষয়গুলো এখনও আপডেট করা হয়নি। সেগুলো আপডেট করে তারপর ট্রাফিক পুলিশ নতুন আইনে জরিমানা করবে। এটি না হওয়া পর্যন্ত আগের নিয়মেই সব চলবে।

    অবশ্য এ আইনের আলোকে জরিমানা ও শাস্তি দেওয়ার ব্যাপারে এখনো ধোঁয়াশা রয়েছে। কারণ, বিআরটিএ ও পুলিশ আইন প্রয়োগ শুরু করছে কি না তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। বিআরটিএ সূত্র বলছে, প্রয়োগের দিকে যেতে আরও কিছুদিন সময় লেগে যেতে পারে। কারণ, সড়ক পরিবহন খাতের দীর্ঘদিনের চলা রীতিনীতির পরিবর্তন ঘটাতে হবে।

    গত বছর ঢাকায় বাসচাপায় দুই স্কুল শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পর নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীরা নজিরবিহীন আন্দোলন করে। আন্দোলনের মুখে আগের আইন কঠোর করে এই আইনটি করা হয়।

    গত বছর আগস্টে আইনের খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় সরকার। জাতীয় সংসদে পাস হওয়ার পর গত বছরের ৮ অক্টোবর ‘সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮’ এর গেজেট প্রকাশ হয়।

    এই আইন অনুযায়ী, মোটরযান চালনাজনিত কোনো দুর্ঘটনায় কোনো ব্যক্তি গুরুতর আহত বা নিহত হলে এ সংক্রান্ত অপরাধ দণ্ডবিধি-১৮৬০ এর এ সংক্রান্ত বিধান অনুযায়ী অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।

    কিন্তু গেজেট প্রকাশের পরও আইনটি কার্যকর না হওয়ায় আদালতে রিট আবেদনও হয়েছিল।

    আইনটি প্রণয়নের পর থেকে তার প্রবল বিরোধিতা করে আসছিল পরিবহন মালিক-শ্রমিক সংগঠনগুলো। তাদের দাবি, সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর ঘটনার মামলায় নতুন আইনে শাস্তির মাত্রা ‘অযৌক্তিক’ বেশি।

    এরপর গত ২৫ সেপ্টেম্বর পরিবহন মালিক ও শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে উপ-কমিটির সভা শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল ও আইনমন্ত্রী আনিসুল হক আইন সংশোধনের সুপারিশ সম্বলিত একটি প্রতিবেদন জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিলের কাছে দেবেন বলে জানিয়েছিলেন।

    তবে পরে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আইনটি সংশোধনের প্রস্তাব নাকচ করে দেন। এরপরই আইনটি কার্যকরের তারিখ ঘোষণা হয়।

    গত ২২ অক্টোবর আইনটি কার্যকরের তারিখ ঘোষণা করে গেজেট জারি করে সরকার।

    বিআরটিএ থেকে আইনটি কার্যকর করতে সকলের কাছে অনুরোধ জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রচার শুরু হয়। এতে বলা হচ্ছে, ‘আইন মেনে চালাবো গাড়ি, নিরাপদে ফিরব বাড়ি’।

    নতুন আইনে বেপরোয়া বা অবহেলায় গাড়ি চালানোর কারণে কেউ গুরুতর আহত বা কারও প্রাণহানি হলে অপরাধীর সর্বোচ্চ পাঁচ বছর কারাদণ্ড বা অনধিক ৫ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। তদন্তে যদি দেখা যায় উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে চালক বেপরোয়া গাড়ি চালিয়ে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, তাহলে দণ্ডবিধির ৩০২ ধারা অনুযায়ী শাস্তি দেওয়া হবে। অর্থাৎ সর্বোচ্চ সাজা হবে ফাঁসি। তবে এটা তদন্ত সাপেক্ষে এবং তথ্যের ওপর ভিত্তি করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নির্ধারণ করবে। এটি অজামিনযোগ্য শাস্তি। আগের আইনে ছিল ৩ বছরের কারাদণ্ড ও তা জামিনযোগ্য।

    নতুন সড়ক আইনে শিক্ষানবিশ লাইসেন্স ছাড়া কর্তৃপক্ষের দেওয়া যেকোনো লাইসেন্সের বিপরীতে ১২ পয়েন্ট দেওয়া থাকবে। দোষ করলে তা কাটা যাবে। লালবাতি অমান্য, ওভারটেক, গতিসীমা অমান্য, বিপরীত দিক থেকে গাড়ি চালানো, ওজনসীমা লংঘন, নেশাগ্রস্ত হয়ে গাড়ি চালালে পয়েন্ট কাটা যাবে চালকের। এ বিধান আগে ছিল না।

    নতুন আইনে বৈধ চালক ছাড়া নিয়োগ না দেওয়ার বিধান আবারও যুক্ত করে বলা হয়েছে। কারও ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকলে তাকে চালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া যাবে না। বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ অনুসারে, লিখিতভাবে চুক্তি সম্পাদন ও নিয়োগপত্র ছাড়া কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কোনো ব্যক্তিকে গণপরিবহনের চালক নিয়োগ করতে পারবে না। নিয়োগপ্রাপ্ত চালক তাঁর কাগজপত্র গাড়িতে প্রদর্শন করবেন।

    এ ছাড়া কন্ডাক্টর লাইসেন্স ছাড়া কন্ড্রাক্টর নিয়োগ করা যাবে না বলে বিধান করা হয়েছে। ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালালে ছয় মাসের কারাদণ্ড বা অনধিক ২৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। আগে এ অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি ছিল চার মাসের কারাদণ্ড বা ৫০০ টাকা অর্থদণ্ড। কর্তৃপক্ষ ছাড়া কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বা সমিতি ড্রাইভিং লাইসেন্স তৈরি, প্রদান ও নবায়ন করলে শাস্তি অনধিক দুই বছর। তবে অন্যূন ছয় মাসের জেল বা এক থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয়দণ্ডের বিধান রয়েছে।

    নিবন্ধন ছাড়া গাড়ি চালালে অনধিক ছয় মাসের জেল বা অনধিক ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে।

    নতুন আইনে ফিটনেস সনদ ছাড়া বা মেয়াদ পেরোনো ফিটনেস সনদ ব্যবহার করে ইকোনমিক লাইফ

  • শাস্তির ভয় দেখিয়ে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরবে না: শাজাহান

    শাস্তির ভয় দেখিয়ে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরবে না: শাজাহান

    শুধু শাস্তির ভয় দেখিয়ে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সম্ভব না বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি,সাবেক নৌ-পরিবহন মন্ত্রী ও সরকার দলীয় সংসদ সদস্য শাজাহান খান।

    নতুন সড়ক পরিবহন আইন কার্যকরের একদিন আগে এর বেশ কিছু ধারার সমালোচনা করে শাজাহান খান বলেন, ‘এখনও বিধি প্রণয়ন করা হয়নি। বিধি প্রণয়ন ব্যতীত আইন প্রয়োগে জটিলতার অবসান হবে কীভাবে?’

    বৃহস্পতিবার সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।

    শাজাহান খান বলেন, ‘চালক বা শ্রমিককে সাজা বা ফাঁসি দিলে দুর্ঘটনা বন্ধ হবে এমন অলীক কল্পনা যারা করেন, তারা বোকার স্বর্গে বাস করছেন।’

    সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ‘সব দেশে আইন আছে। কেউ কাউকে হত্যা করলে তার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। এ কঠিন আইন থাকার পরও কি হত্যাকাণ্ড বন্ধ হয়ে গেছে? তাদের মনে রাখতে হবে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হত্যাকাণ্ড নয়। দুর্ঘটনা দুর্ঘটনাই। এই দুর্ঘটনার জন্য চালক এককভাবে দায়ী নয়।’

    দুর্ঘটনার ওপর আদালতের কয়েকটি রায়ের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে শাজাহান খান বলেন, ‘সম্প্রতি দুর্ঘটনার কারণে দেশের সর্বোচ্চ আদালত পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের রায় দিয়েছেন। ঢালাওভাবে এ ধরনের রায় কোনো দেশে নেই। এতে মালিক-শ্রমিক গভীর উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার মধ্যে আছেন। এসব রায় সড়কে কতটা শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনবে, তা নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। শুধু শাস্তির ভয় দেখিয়ে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সম্ভব না। বরং সড়ক আইন যথাযথ বাস্তবায়ন করতে হলে আমাদের প্রস্তাবিত ১১১টি সুপারিশের বাস্তবায়ন জরুরি।’

    সংবাদ সম্মেলনে কয়েকটি দাবি উত্থাপন করেন শাজাহান খান। তার দাবিগুলো হলো- সড়ক দুর্ঘটনার মামলাকে জামিনযোগ্য করতে হবে। তদন্ত ব্যতীত দুর্ঘটনার মামলা ৩০২ ধারায় দায়ের করা যাবে না। সড়ক দুর্ঘটনার মামলা নিরপেক্ষতার স্বার্থে পুলিশ ও দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের যৌথ উদ্যোগে তদন্ত করতে হবে। প্রস্তাবিত ১১১টি সুপারিশ অবিলম্বে বাস্তবায়ন করতে হবে। আইনটির কয়েকটি ধারা সংশোধনের জন্য শ্রমিক ফেডারেশনের প্রস্তাব গ্রহণ করতে হবে। লোডিং পয়েন্টে ওভারলোড চেক করার ব্যবস্থা করতে হবে।

    শাজাহান খান বলেন, ‘আইনটি ভেটিংয়ের সময় মালিক ও শ্রমিকরা এর কয়েকটি বিধান সংশোধনের প্রস্তাব করেন। প্রস্তাবগুলোর মধ্যে কিছু গ্রহণ করা হয়, আবার কিছু গ্রহণ করা হয়নি। আইনটি পাস হওয়ার পর আমরা দেখতে পাই আইনের মধ্যে কিছু অসামঞ্জস্য রয়ে গেছে। আমরা বিষয়গুলো সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের দৃষ্টিতে আনি। তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি কমিটি করে দেন। কমিটি কয়েক দফা বৈঠক করে আমাদের কয়েকটি প্রস্তাবের যৌক্তিকতার সঙ্গে একমত পোষণ করেন।’

    আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘একথা সত্য, এই আইনে মালিক-শ্রমিকদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অনেকগুলো ধারা রয়েছে। তবে কিছু ধারা সম্পর্কে আমাদের আপত্তির জায়গাটা বিবেচনা করা হোক, এটাই আমাদের দাবি। বর্তমান সরকার আইনটি বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন। প্রশ্ন হলো এখনও বিধি প্রণয়ন করা হয়নি। বিধি প্রণয়ন ব্যতীত আইন প্রয়োগে জটিলতার অবসান হবে কীভাবে?’

    শাজাহান খান বলেন, ‘দুর্ঘটনা ঘটলে শুধু যাত্রী বা পথচারী নিহত হয় না। চালক বা শ্রমিকও নিহত হন। চালক বা শ্রমিকের কারণে যদি দুর্ঘটনা ঘটে তার দায়ভার চালক ও শ্রমিকের। আইন অনুযায়ী তাদের সাজা হবে। অন্য কারণে দুর্ঘটনার দায়ভার তারা নেবে কেন?’

    উদাহরণ দিয়ে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ‘রেলপথের ওপর মোবাইল ফোন কানে দিয়ে কথা বলতে গিয়ে আনমনা কেউ ট্রেনের চাকায় কাটা পড়লে, তার জন্য কি ট্রেনের ড্রাইভারকে দায়ী করা হয়?’

    এসময় আইন বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতা অবলোকন ও নিবিড় পর্যবেক্ষণের পর তাদের পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলেও জানান শাজাহান খান।