Tag: হরিপুর

  • ঠাকুরগাঁও সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে ২ বাংলাদেশি নিহত

    ঠাকুরগাঁও সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে ২ বাংলাদেশি নিহত

    ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার বেতনা সীমান্তের বিপরীতে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন।

    মঙ্গলবার ভোরে ভারতের তিনগাঁও বিএসএফের জওয়ানরা তাদের গুলি করে।

    নিহতরা হলেন- নিহত রবিউল ইসলাম (২৬) উপজেলার ছোট্ট চড়ই গেদী গ্রামের আবদুল হকের ছেলে এবং নাজিমউদ্দিন (৩০) হরিপুর উপজেলার বাসিন্দা।

    আমজানখোর ইউপি চেয়ারম্যান মো. আকালু এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

    স্থানীয়রা জানান, রবিউলসহ আরও কয়েকজন সকালে বাড়ির অদূরে নাগর নদীতে মাছ ধরতে যান। একপর্যায়ে তারা নদী থেকে উঠে সীমান্ত এলাকায় গেলে বিএসএফ তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে।

    এতে অন্যরা কোনো রকমে প্রাণে রক্ষা পেলেও রবিউল ঘটনাস্থলেই মারা যান। এ সময় গুলিবিদ্ধ নাজিমউদ্দিনকে উদ্ধার করে দিনাজপুরে নেয়ার পথে তিনিও মার যান।

    বালিয়াডাঙ্গী থানার ওসি হাবিবুল হক প্রধান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

    তিনি বলেন, নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে বিএসএফের গুলিতে দুজন নিহত হয়েছেন।

    ঠাকুরগাঁও-৫০ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সহিদুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি শুনেছি, খোঁজ নেয়া হচ্ছে।

  • হরিপুরের বাবু অসময়ে তরমুজ চাষে সফল

    হরিপুরের বাবু অসময়ে তরমুজ চাষে সফল

    গৌতম চন্দ্র বর্মন, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : অসময়ে তরমুজ চাষ করে সফল হয়েছেন, ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার বকুয়া বটতলা দুলালপাড়া গ্রামে কৃষক গিয়াসউদ্দিন বাবু। ২৫ শতক জমিতে বেরি জাতের এই তরমুজের চাষ করেন তিনি।

    অসময়ে উৎপাদন হওয়ায় এ তরমুজ বিক্রি করে ভালো দামও মিলছে। ৬৫ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে তরমুজ বিক্রি করে এ পর্যন্ত গিয়াসউদ্দিন বাবু আয় করেছেন প্রায় দুই লাখ টাকা। সফল এ কৃষককে উৎসাহ দেওয়াসহ সার্বিক সহযোগিতার জন্য বাবুর তরমুজের মাঠ পরিদর্শন করেছেন হরিপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মারুফ হোসেন।

    তরমুজ চাষি গিয়াসউদ্দিন বাবু বলেন, ‘অসময়ে চাহিদা থাকায় ক্রেতারা মাঠ থেকেই তরমুজ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। আমি ২৫ শতক জমিতে এ জাতের তরমুজ চাষ করি। এতে আমার মোট খরচ হয়েছে ৩৫ হাজার টাকা। খরচ বাদ দিয়ে যে লাভ হয়েছে তাতে আমি সন্তুষ্ট।’ বাবু আরো বলেন, ‘লাভের আশায় ২৫ শতক জমিতে আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে বেরি জাতের তরমুজের বীজ বপন করি। অক্টোবরের মধ্যেই খাবার উপযোগী হয় এ তরমুজ। আমি আশা করছি অসময়ে ফলানো এ জাতের তরমুজ বিক্রি করে আরো লাভ হবে।’

    হরিপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মারুফ হোসেন বলেন, ‘চাষি গিয়াসউদ্দিন বাবু আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহে বেরি জাতের এ তরমুজের বীজ বপন করেন। এর আগে জমিটি চাষ দিয়ে তৈরি করেন। সেইসঙ্গে বেড ও ড্রেন তৈরি করেন। এরপর বীজ বপন করে পরিচর্যা করতে থাকেন। পরে গাছ একটু বড় হয়ে উঠলে বাঁশের বাতা এবং সুতা দিয়ে মাচা তৈরি করেন। সঠিকভাবে পরিচর্যার কারণে কৃষক গিয়াসউদ্দিন এর সুফল ভোগ করছেন।’

    ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ আফতাব হোসেন বলেন, ‘এটি একটি ভালো উদ্যোগ। দুই মাসের মাথায় গিয়াস উদ্দিনের এ জাতের তরমুজ খাবার উপযোগী হয়েছে। অসময়ের এ তরমুজ খেতে বেশ মিষ্টি ও সুস্বাদু হওয়ায় ভোক্তাদের কাছে বেশ জনপ্রিয়।

  • হরিপুরে নিখোঁজের একদিন পর লাশ উদ্ধার

    হরিপুরে নিখোঁজের একদিন পর লাশ উদ্ধার

    ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুরে মাছ ধরতে গিয়ে নদীতে ডুবে ওয়াদুদ (৬০) নামে এক ব্যাক্তির মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে, ৫নং হরিপুর ইউনিয়নের কান্দাল গ্রামের পার্শ্ববর্তী নাগর নদীতে।

    পারিবারিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার সদরের আঃ ওয়াদুদ (৬০) বৃহস্পতিবার (৬ই আগষ্ট) সকালে মাছ ধরতে গিয়ে দুপুরে নদীর পানিতে নিখোঁজ হয়। ঐ দিন অনেক খোজখুজি করেও পাওয়া যায়নি তাকে।

    পরদিন শুক্রবার (৭ আগস্ট) সকালে রানীশংকৈল ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের সহযোগিতায় পরিবারের লোকজন স্থানীয়দেরকে সাথে নিয়ে অনেক খোঁজাখুঁজির পরে সকাল ৯টায় ওয়াদুদ এর মৃত দেহ টি নাগর নদী থেকে উদ্ধার করে।

    ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন ৫নং হরিপুর ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমান (মংলা)।

    ২৪ ঘণ্টা/এম আর/গৌতম

  • হরিপুরে নাগর নদী থেকে যুবকের লাশ উদ্ধার

    হরিপুরে নাগর নদী থেকে যুবকের লাশ উদ্ধার

    ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুরে নাগর নদীর সীমান্ত এলাকা থেকে রাজু (১৭) নামে এক যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। নিহত রাজু হরিপুর উপজেলার ৩ নং বকুয়া ইউনিয়নের রুহিয়া গ্রামের রফিজ উদ্দিনের ছেলে।

    ঘটনা সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘ ৮ মাস আগে শ্রমিকের কাজের জন্য ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশে গিয়েছিল। রাজুসহ কয়েকজন বাংলাদেশি কাজ শেষে ৬ জুলাই দিবাগত রাতে ভারতের ফুলবাড়ি সীমান্ত দিয়ে চোরাই পথে দেশে ফিরছিলেন।সীমান্ত ঘেঁসা নাগর নদী পার হওয়ার সময় রাজু পানির প্রবল স্রোতে তলিয়ে যায়।

    পরদিন মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে জনৈক এক ব্যক্তি রাজুর লাশ সীমান্তের ৩৬৮/ নং মেইন পিলারে ৩-এস ও ৪-এস পিলারের মাঝামাঝি স্থানের নাগর নদীতে ভাসতে দেখে।

    বিষয়টি থানা পুলিশকে খবর দেওয়া হলে থানা পুলিশ রাজুর লাশ ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে।

    হরিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আমিরুজ্জামান লাশ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এবং তিনি বলেন লাশ ময়না তদন্তের জন্য ঠাকুরগাঁও মর্গে পাঠানো হয়েছে।

    ২৪ ঘণ্টা/এম আর/গৌতম

  • হরিপুরে পানিতে ডুবে ২ স্কুল ছাত্রের মৃত্যু

    হরিপুরে পানিতে ডুবে ২ স্কুল ছাত্রের মৃত্যু

    ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ বন্যার পানিতে গোলস করার সময় হামিদুর (১৫) ও রহিত (১২) নামে দুই স্কুল ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে।

    আর ঘটনাটি ঘটেছে ২৮ জুন (রবিবার) ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুরের
    ৪নং ডাঙ্গীপাড়া ইউনিয়নের শিহিপুর মৌজার গন্দর ব্রীজ নামক স্থানে। হামিদুর হরিপুর উপজেলার ৪নং ডাঙ্গীপাড়া ইউনিয়নের রণহাট্টা গ্রামের মৃত আলম দর্জির ছেলে এবং রহিত একই উপজেলার ৩নং বকুয়া ইউনিয়নের নারগুন গ্রামের সোহাগের ছেলে। হামিদুর এবার রণহাট্টা চৌরঙ্গী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় উর্ত্তীন্ন হয় ও রহিত একই বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেনীর ছাত্র।

    প্রত্যক্ষদর্শী শরিয়াতুল্লাহ ও তুষার বলেন শিহিপুর-গন্দর ব্রীজের পশ্চিম পার্শ্বে কয়েকজন ছেলে পানির মধ্যে ফুটবল খেলছিল আর গোসল করছিল। এসময় হামিদুর ও রহিত নামে দুইজন পানির স্রোতে গভীর জ্বলে তলিয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে তাদের উদ্ধারের জন্য চেষ্টা চালানো হয়। ঘটনার কিছুক্ষনের মধ্যে হামিদুরের লাশ উদ্ধার করা হলেও রহিতের লাশ গভীর জ্বলে তলিয়ে যায়।

    পরে রানীশংকৈল ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে খবর দেওয়া হয়। দ্রুত তারা ঘটনাস্থলে আসে। তবে তাদের সাথে ডুবুরি দল না থাকার কারণে তারা উদ্ধার কাজে সহযোগিতা করতে পারে নাই। দীর্ঘ দুই ঘণ্টা পর বিকাল ৪টার দিকে স্থানীয় লোকজন রহিতের লাশ উদ্ধার করে।

    ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনি।

    ২৪ ঘণ্টা/এম আর/গৌতম

  • কালের সাক্ষী হিসাবে দাঁড়িয়ে আছে হরিপুরের “রাজবাড়ী”

    কালের সাক্ষী হিসাবে দাঁড়িয়ে আছে হরিপুরের “রাজবাড়ী”

    গৌতম চন্দ্র বর্মন, ঠাকুরগাঁও : ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার রাজবাড়ীতে এক সময় রাজা ছিল, রাজ্য ও রাজা রক্ষায় ছিল সৈন্যবাহিনী। কিন্তু সেই প্রাসাদে আজ রাজা নেই, আর রাজবাড়ীটিও ধীরে ধীরে হারিয়ে যেতে বসেছে।

    উপজেলার স্থানীয় লোক জনের মাধ্যমে জানা যায়, এই প্রাসাদোপম অট্টালিকাটি নির্মিত হয় ১৮৯৩ সালে। নির্মাণ কাজ শুরু করেন ঘনশ্যাম কুন্ডুর বংশধর রাঘবেন্দ্র রায় চৌধুরী। আর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করেন তারই ছেলে জগেন্দ্র নারায়ণ রায় চৌধুরী।

    মুসলিম শাসন আমলে ঘনশ্যাম কুন্ডু নামে একজন ব্যবসায়ী এন্ডি কাপড়ের ব্যবসা করতে হরিপুরে আসেন। তখন মেহেরুন্নেসা নামে এক বিধবা মুসলিম মহিলা এই অঞ্চলের জমিদার ছিলেন। তার বাড়ি মেদিনীসাগর গ্রামে। জমিদারির খাজনা দিতে হতো তাজপুর পরগনার ফৌজদারের নিকট। খাজনা অনাদায়ের কারণে মেহেরুন্নেসার জমিদারির কিছু অংশ নিলাম হয়ে গেলে ঘনশ্যাম কুন্ডু কিনেন। ঘনশ্যামের পরবর্তী বংশধরদের একজন রাঘবেন্দ্র রায় ঊনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগে বৃটিশ আমলে হরিপুর রাজবাড়ির কাজ শুরু করেন। কিন্তু তার সময়ে রাজবাড়ির কাজ শেষ হয়নি। রাঘবেন্দ্র রায়ের ছেলে জগেন্দ্র নারায়ণ রায় ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষদিকে রাজবাড়ির নির্মাণ কাজ শেষ করেন। জগেন্দ্র নারায়ণ রায়ের শেষ করা রাজবাড়ির দোতলা ভবনে লতাপাতার নকশা এবং পূর্ব দেয়ালের শীর্ষে রাজর্ষি জগেন্দ্র নারায়ণের চৌদ্দটি আবক্ষ মূর্তি আছে।

    এক শতাব্দীরও বেশি পুরোনো এই অট্টালিকাটির দৃষ্টিনন্দন কারুকাজের বিলুপ্তপ্রায় নিদর্শনগুলো প্রাচীনত্বের বিবেচনায় খুব মূল্যবান নয়। তদুপরি এ অঞ্চলের একটি আকর্ষণীয় স্থাপত্য কীর্তি হিসেবে এখনো মানুষকে কাছে টানে।

    জগেন্দ্র নারায়ণ রায় চৌধুরী বৃটিশ সরকার কর্তৃক রাজর্ষি উপাধিতে ভূষিত হয়েছিলেন। সে সময়ে বৃটিশ সরকার তাদের স্বার্থ রক্ষার জন্যই সামন্ত প্রভুদের বিভিন্ন উপাধিতে ভূষিত করে খুশি করত। জগেন্দ্র নারায়ণ রায় চৌধুরীকে এই একই উদ্দেশে রাজর্ষি উপাধিতে ভূষিত করেছিল।

    যতটুকু জানা যায়, তা হচ্ছে এই উপাধি প্রদানের ক্ষেত্রে সম্ভবত আরো একটি বিষয় কাজ করেছিলো। আর সেটি হচ্ছে তার বিদ্যানুরাগ ও শিল্প সংস্কৃতি চর্চার ব্যাপারে আগ্রহ। রাজর্ষি জগেন্দ্র নারায়ণ যেমন আকর্ষণীয় স্থাপত্য শৈলীর প্রাসাদ নির্মাণ করেছিলেন তেমনি তিনি গড়ে তুলেছিলেন একটি সমৃদ্ধ গ্রন্থাগারও। শিক্ষা ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে রাজর্ষির এই অনুরাগ শুধু তার ব্যক্তিগত সমৃদ্ধির পরিচয় বহন করে তা নয়। গোটা হরিপুরবাসীর মানসিক ঐশ্বর্যের উজ্জ্বল দিকটিকেও তুলে ধরে।

    শিক্ষা ও সংস্কৃতি চর্চার এই ধারায় যে আলোকিত জীবনের আকাঙ্খা সেদিন মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে গিয়েছিলো তা আজো অনেকটাই বহমান রয়েছে এই হরিপুরে।

    ভবনটির পূর্বপাশে একটি শিব মন্দির এবং মন্দিরের সামনে নাট মন্দির রয়েছে। রাজবাড়িতে ছিল একটি বড় পাঠাগার যার অস্তিত্ব এখন নেই। রাজবাড়িটির যে সিংহদরজা ছিল তাও নিশ্চিহ্ন হয়েছে। ১৯০০ সালের দিকে ঘনশ্যামের বংশধররা বিভক্ত হলে হরিপুর রাজবাড়িও দু’টি অংশে বিভক্ত হয়ে যায়। রাঘবেন্দ্র ও জগেন্দ্র নারায়ণ রায় কর্তৃক নির্মিত রাজবাড়িটি বড় তরফের রাজবাড়ি নামে পরিচিত। এই রাজবাড়ির পশ্চিম দিকে নগেন্দ্র বিহারী রায় চৌধুরী ও গিরিজা বল্লভ রায় চৌধুরী ১৯০৩ সালে আরেকটি রাজবাড়ি নির্মাণ করেন যার নাম ছোট তরফ।

    এই রাজবাড়ীর সংস্কার খুব জরুরি সে কথা জানালেন আশিতে পা রাখা স্থানীয় বাসিন্দা হামিদুল হক। তিনি বলেন, প্রতিদিনই দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ আসে বাড়িটি দেখতে। যদি সংস্কার করা যায় তাহলে হয়তো এটা দর্শনার্থীদের জন্য একটি পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তোলা যাবে। আর সংস্কার ছাড়া এভাবেই থাকলে একদিন বিলুপ্ত হয়ে যাবে।

    রাজবাড়ী সংস্কার করা সম্পর্কে হরিপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা এম. জে. আরিফ বেগ  বলেন, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ থেকে বাড়িটি পরিদর্শ করা হয়েছে। স্থানীয়ভাবে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখার চেষ্টা করা হয়। যদি সরকারিভাবে অনুদান পাওয়া যায় তাহলে খুব দ্রুত এর সংস্কার কাজ শুরু করা সম্ভব হবে। প্রশাসনও চেষ্টা করছে ঐতিহ্যকে ধরে রাখার।

    হরিপুর উপজেলার সর্বস্তরের লোকজনও চায় রাজবাড়ীটি সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ করা হোক। এই জন্য স্থানীয়রা সরকারের সাহায্যের অপেক্ষায় রয়েছে।

    বিলুপ্তপ্রায় এ রাজবাড়িটি হরিপুর উপজেলার কেন্দ্রস্থলে
    আজো কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

    ২৪ ঘণ্টা/এম আর

  • হরিপুরে শিশুকে শ্বাসরোধ করে হত্যা থানায় মামলা

    হরিপুরে শিশুকে শ্বাসরোধ করে হত্যা থানায় মামলা

    ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর উপজেলায় রিমা (৭) নামে এক কন্যা শিশুকে শ্বাসরোধ করে রাজু (১৩) নামে এক কিশোর হত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

    এবিষয়ে শিশু কন্যা রিমার বাবা সিরাজুল ইসলাম বাদী হয়ে হত্যাকারী রাজুকে ১নং আসামী করে ৪ জনের নামে হরিপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে।

    হরিপুর থানা পুলিশ বৃহস্পতিবার (২৮ মে) বিকাল ৩টার দিকে শিশু কন্যা রিমার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঠাকুরগাঁও মর্গে প্রেরন করেন।

    হত্যাকারী রাজু (১৩) হরিপুর উপজেলার বকুয়া (কাসুয়াপাড়া) গ্রামের আব্দুল বারেকের ছেলে। শিশুকন্যা রিমা এই গ্রামের প্রতিবেশী সিরাজুল ইসলামের কন্যা।

    এলাকাবাসী ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানাযায়, বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিকে নাস্তা খেয়ে বাড়ি থেকে শিশু কন্যা রিমা বের হয়। রিমাকে ৩/৪ ঘন্টা ধরে তার বাবা-মা বাসায় দেখতে না পেয়ে প্রতিবেশীদের বাড়ি ও আশে-পাশে খোঁজাখুজি শুরু করে। দুপুর ১টার দিকে প্রতিবেশী আব্দুল বারেকের তালাবদ্ধ টিনসেট ঘরের দরজার ফাঁক দিকে জনৈক এক ব্যক্তি শিশুকন্যা রিমার মরদেহ ঘরের মেঝেতে দেখতে পায়। বিষয়টি হরিপুর থানা পুলিশকে অবহিত করেন। তৎক্ষণাৎ হরিপুর থানার ওসি আমিরুজ্জামান ঘটনাস্থলে গিয়ে হত্যাকারী রাজুর বাবার শয়ন ঘর থেকে শিশুকন্যার মরদেহ উদ্ধার করেন।

    হরিপুর থানার ওসি আমিরুজ্জামান হত্যা মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এবং তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টার দিকে ৭ বছরের এক শিশুকন্যার লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঠাকুরগাঁও মর্গে প্রেরন করা হয়েছে।

    ২৪ ঘণ্টা/এম আর/গৌতম

  • হরিপুরে সংক্রমিত এলাকায় চলাচলে বাধা

    হরিপুরে সংক্রমিত এলাকায় চলাচলে বাধা

    ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুরে করোনাভাইরাস সংক্রমিতের গ্রামের লোকজনের চলাচলে বাধা দেওয়ায় পাল্টা সড়ক অবরোধ করে সহকারী কমিশনারের গাড়ি আটকে দিয়েছে তারা।

    হরিপুর উপজেলার ডাঙ্গীপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মনিরুজ্জামান বলেন, “সোমবার (১৩ এপ্রিল) বিকালে আমার ইউনিয়নের ডাঙ্গীপাড়া-হরিপুর সড়ক অবরোধ করে এলাকাবাসী।”

    প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত শনিবার হরিপুরের ডাঙ্গীপাড়া গ্রামে নারায়ণগঞ্জ ফেরত দুই তরুণের শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়। ওই দুই পরিবারের বাড়ির লোক জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে নির্দেশ দেয় প্রশাসন। এরপর ওই রাতে ঠাকুরগাঁও জেলা অবরুদ্ধ ঘোষণা করে জেলা প্রশাসন।

    চেয়ারম্যান মো. মনিরুজ্জামান বলেন, “দুই তরুণের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হওয়ায় আতঙ্কিত হয়ে পার্শ্ববর্তী ধীরগঞ্জ ও হরিপুর গ্রামের তরুণ-যুবকেরা ডাঙ্গীপাড়ার মানুষের চলাচল বন্ধ করে দেয়। এর প্রতিবাদে ডাঙ্গীপাড়ার মানুষরা একত্রিত হয়ে সোমবার বিকালে ডাঙ্গীপাড়া-হরিপুর সড়ক অবরোধ করেন।

    “সেসময় ওই সড়ক দিয়ে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে এলাকাবাসীকে সচেতন করার দায়িত্বে থাকা টিমের গড়িবহরও আটকে দেয় গ্রামবাসী।”

    ওই গাড়িবহরে থাকা ঠাকুরগাঁওয়ের সহকারী কমিশনার সরদার মো. গোলাম রব্বানী বলেন, “অন্যগ্রামের লোকজন করোনা আক্রান্ত গ্রামের লোকজনের চলাচলে বাধা দেওয়ায় আত্মসন্মানবোধের জায়গা থেকে সড়ক অবরোধ করে গ্রামবাসী।“প্রশাসনের কারো ওপর তাদের রাগ বা অভিমান ছিল না। পরে তাদের চলাচল উন্মুক্ত করে দিলে তারা সরে যান।”

    ওই গ্রামের এক ব্যক্তি আনোয়ার হোসেন জানান, গ্রামের দুইজনের শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পড়ার পর প্রশাসন তাদের হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেছে। তাদের পরিবারের লোকজনকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে নির্দেশ দেওয়ার পর তারা তা মেনে চলছে।“এরপরও গ্রামের মানুষের চলাচলে বাধা দেওয়া হচ্ছে।”

    চেয়ারম্যান মো. মনিরুজ্জামান বলেন, “অবরোধের কথা শুনে ঘটনাস্থলে ইউএনও আব্দুল করিম এসে গ্রামবাসীর কথা শোনেন। সেসময় তারা খাদ্যসামগ্রীর দাবি করেন ইউএনওর কাছে। এলাকায় যথেষ্ট পরিমাণ খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হলেও ইউএনও গ্রামবাসীদের জন্য আরো বরাদ্দ দেওয়ার আশ্বাস দেন।”

    হরিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল করিম বলেন, গ্রামবাসীর সড়ক অবরোধ করার বিষয়টি শোনা মাত্রাই ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের সাথে কথা বলেছি।

    “গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলে ডাঙ্গীপাড়াবাসীর চলাচল উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। সে সময় গ্রামবাসী খাদ্যসামগ্রীর দাবি করে বসে। এলাকার যারা খাদ্যসহায়তা পাওয়ার যোগ্য, তাদের একটি তালিকা তৈরীর আশ্বাস দেওয়া হলে গ্রামবাসী সড়ক ছেড়ে চলে যান।”

     

  • কম পুঁজিতে মাল্টা চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন হরিপুরের চাষিরা

    কম পুঁজিতে মাল্টা চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন হরিপুরের চাষিরা

    গৌতম চন্দ্র বর্মন,ঠাকুরগাঁওঃ সারি সারি গাছে থোকা থোকা মাল্টা। একেকটি গাছে ৭০টি থেকে ১০০টি পর্যন্ত। কোনো কোনোটিতে তারও বেশি। ফলের ভারে নুয়ে পড়েছে অনেক গাছ।

    ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর উপজেলার কাঁঠালডাঙ্গী গ্রামের বেলাল হোসেনের বাগানের দৃশ্য এটি।

    তিনি একা নন, এই এলাকার শতাধিক চাষি মাল্টা চাষ করছেন। মাল্টা চাষে আগ্রহী হয়ে ওঠছেন নতুন নতুন চাষি।

    কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর ঠাকুরগাঁও কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ৪৫ দশমিক ৫ হেক্টর জমিতে মাল্টা-কমলা আবাদ হচ্ছে।

    বেলাল হোসেন পেশায় একজন শিক্ষক। শখের বশে মাল্টা চাষে আগ্রহী হয়ে ওঠেন তিনি। ২০১৫ সালে হরিপুর উপজেলা কৃষি বিভাগে যোগাযোগ শুরু করেন। সে সময় হরিপুরে সাইট্রাস ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট চলছিল। আগ্রহ দেখে কৃষি বিভাগ তাঁকে মাল্টা-কমলা চাষের প্রশিক্ষণ শেষে বারি মাল্টা-১ জাতের ৭৫টি, ৫টি কমলা লেবু, ২০টি কলম্ব লেবু, ১০টি বাতাবি লেবু চারা দেয়। পরে তিনি চারাগুলো বাড়ির পেছনের একখণ্ড জমিতে রোপণ করেন। এরপর শুরু হয় পরিচর্যা।

    গত বছর থেকে বাগানের তিন-চতুর্থাংশ মাল্টা গাছে ফল ধরতে শুরু করে। নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে কিছু মাল্টা বিক্রিও করেন। ওই ফল খেতে সুস্বাদু হওয়ায় তিনি সে বছর বাণিজ্যিক ভিত্তিতে আরও দুই একর জমিতে মাল্টার নতুন বাগান করেন। এ মৌসুমে ফল এসেছে।

    হরিপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নইমুল হুদা সরকার জানান, মার্চ-এপ্রিল মাসে বারি মাল্টা-১ গাছে ফুল আসে। আগস্ট- সেপ্টেম্বর মাসে ফল পাকে। ৫-৬টা মাল্টা ওজনে এক কেজি হয়।ঠিকভাবে পরিচর্যা করলে একটি পরিণত গাছে গড়ে ১৫০ থেকে ৩০০টি পর্যন্ত ফল ধরে।

    বেলালের বাগানে গিয়ে দেখা গেছে, গাছে গাছে ঝুলছে সবুজ মাল্টা। বেলাল মাল্টা বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত। এ প্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলে গাছ থেকে একটি মাল্টা তুলে নিয়ে কেটে হাতে দিলেন।

    ফলটি সবুজ হলেও ভীষণ রসাল ও মিষ্টি লাগল খেতে। তিনি বলেন, বাগানে মানবদেহে ক্ষতিকারক রাসায়নিক কীটনাশক বা সার ব্যবহার করি না।ভেষজ কীটনাশক তৈরি করে পোকামাকড় দমন করি।

    বেলাল বলেন, আমরা যারা মাল্টা চাষ করেছি, তারা এখনো বাজার সৃষ্টি করতে পারিনি। তাই এলাকার লোকজনের কাছেই প্রতি কেজি মাল্টা ৮০ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি করছি।

    বাড়ির পাশের ৫০ শতক জমিতে মাল্টা বাগান করেছেন আল মামুন চৌধুরী। এ বছর তাঁর বাগানের ২৮টি গাছে ফল ধরেছে। তিনি বলেন, অনেকেই এখন আমার মাল্টা বাগান দেখতে এসে নিজেরা বাগান করতে চাচ্ছেন। তাঁর বাগানে গিয়ে দেখা যায়, মাল্টার ভারে গাছের ডালগুলো নুয়ে পড়েছে।

    আল মামুন বলেন, সরকার মাল্টা উৎপাদনে পৃষ্ঠপোষকতা করার পাশাপাশি বাজারজাতের ব্যবস্থা করে দেয়, তবে দেশের চাষিদের আগ্রহ বেড়ে যাবে। আর বিদেশ থেকে মাল্টা আমিদানি করতে হবে না। এতে বৈদেশিক মুদ্রাও সাশ্রয় হবে।

    কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর ঠাকুরগাঁও কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. আফতাব হোসেন বলেন, মানুষ মনে করতেন, মাল্টা বিদেশি ফল। কিন্তু এখন মানুষের ধারণা পাল্টেছে। মাল্টা-কমলা চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। সাধারণ কৃষকদের মাঝে বাণিজ্যিকভাবে বাগান তৈরিতে আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে।

    মাল্টা চাষ হচ্ছে শুনে হরিপুরের বেলালের বাগান পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক কে এম কামরুজ্জামান সেলিম। তিনি বলেন, দেখে খুবই ভালো লাগছে। মাল্টা চাষের বিস্তারে উদ্যোগ নেওয়া হবে।