Tag: হাম

  • সাজেকে কমেনি হামের প্রকোপ: চিকিৎসা সেবায় ‘আশিকা’র ভিন্নধর্মী উদ্যোগ(ভিডিও)

    সাজেকে কমেনি হামের প্রকোপ: চিকিৎসা সেবায় ‘আশিকা’র ভিন্নধর্মী উদ্যোগ(ভিডিও)

    রাঙামাটি প্রতিনিধি::রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার দুর্গম সাজেকে কমেনি হামের প্রকোপ। নতুন করে সাজেকের দুর্গম ও প্রত্যন্ত এলাকায় আরো একশ জনের বেশি হামে আক্রান্ত হয়েছে।

    স্থানীয় কার্বারী (পাড়া প্রধান), বেসরকারি চিকিৎসক এবং জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে প্রতিনিয়তই এমন খবর মিলছে।

    গত মঙ্গলবার ও বুধবার সরেজমিনে সাজেক ইউনয়নের শিজকছড়া, হাউজপাড়া, সুরুংনালা, মাচলং, উজোবাজার এবং ভূইয়োছড়ি ঘুরে কমপক্ষে ৩৫টি দরিদ্র পরিবারের শিশুকে হামে আক্রান্ত দেখা গেছে। তবে কোথাও গত এক সপ্তাহের মধ্যে সরকারি কোন চিকিৎসাকর্মীর দেখা না পাওয়ার অভিযোগও আছে মানুষের মুখে মুখে। চরম খাদ্য সংকটে থাকা নি:স্ব মানুষগুলোর অসহায়ত্ব চোখেমুুখে ফুটে উঠলেও স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে ভিন্ন কথা।

    তাঁদের বক্তব্য হলো নতুন করে হামে আক্রান্ত হবার তথ্য যেমন নেই, তেমনি মাঠে প্রতিনিয়তই কাজ করছেন স্বাস্থ্য কর্মীরা।
    এমন বাগাড়ম্বরের ফাঁদে পড়ে সাজেকের হাম পরিস্থিতি আরো বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারে বলে আশংকা করছেন এলাকার সব শ্রেণির বাসিন্দারা।

    সুরুংনালা এলাকার সমাজকর্মী বিজয় কেতন চাকমা জানান, সরকারি-বেসরকারি কর্তপক্ষের কাছে সাজেক মানে ‘রুইলুই পর্যটন’। ওখানে উঠলে পাহাড়-প্রকৃতি দেখা যায়, মানুষের কষ্ট দেখা যায় না। তাই এখানকার মানুষের অভাব-অসুস্থতা জানতে হলে রুইলুই পাহাড় থেকে নেমে চারপাশে হাঁটতে হবে।

    উজোবাজারের ফার্মেসি মালিক পুতুল চাকমা বলেন, চলতি মাসের শুরু থেকে রাঙামাটি থেকে ‘আশিকা ডেভলপমেন্ট এসোসিয়েটস’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান নিজেদের নিয়োগকৃত স্বাস্থ্য কর্মীদের মাধ্যমে ইউনিয়নের সবচেয়ে দুর্গম এলাকাগুলোতে স্বাস্থ্য সেবার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় ঔষধপত্র-পরামর্শের পাশাপাশি পরিবারপিছু নগদ অর্থ সহায়তাও প্রদান করছে।

    উন্নয়নকর্মী সুমিত চাকমা’র মতে সরকারি সেবার অপ্রতুলতা কাটিয়ে উঠতে ‘আশিকা’র প্রতি সাজেকের মানুষের আস্থা বেড়েছে।

    ইউপি সদস্য সুশীলা চাকমা ও হীরানন্দ ত্রিপুরা বলেন, সাজেক ইউনিয়নটি ফেনী জেলার সমান আয়তনের। বেশিরভাগ এলাকা দুর্গম এবং দারিদ্র্যপ্রবণ। গ্রীস্ম ও বর্ষাকাল মানেই এখানে খাদ্য সংকটের মৌসুম। এই সময়টাতে ‘আশিকা’র মতো এনজিওরা বেশি বেশি এগিয়ে আসলে এলাকার মানুষ উপকৃত হবে।

    চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে ‘আশিকা’

    হাম রোগীদের চিকিৎসা দিতে স্থানীয় উন্নয়ন সংস্থা ‘আশিকা ডেভেপমেন্ট এসোসিয়েটস’- এর প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর বিমল চাকমা জানিয়েছেন, এই উদ্যোগে মেডিকেল ক্যাম্পের মাধ্যমে চিকিৎসা ও বিনামূল্যে ঔষুধ সেবা দিয়ে যাচ্ছেন নিয়োগকৃত স্বাস্থ্যকর্মীরা। গত একমাসে ইউকে এইড ও স্টর্ট ফান্ড বাংলাদেশ-এর সহায়তায় সাজেকের দুর্গম কাইচ্ছা পাড়া, অরুণপাড়া, শিয়ালদা, ভূইয়োছড়ি, শিজকছড়া, দাড়িপাড়া, সুরুংনালা এলাকায় ফ্রি-মেডিকেল ক্যাম্প, কাউন্সেলিং, বিনামূল্যে ঔষধ এবং নগদ সহায়তা প্রদান অব্যাহত আছে।

    তিনি জানান, সাজেক ইউনিয়নের অধিকাংশ স্থায়ী বাসিন্দাই জুমজীবি এবং দিনমজুর। বছরের এই সময়টাতে পুরো এলাকাজুড়ে খাদ্য ও কাজের সংকট সৃষ্টি হয়। সরকার-বেসরকারিভাবে স্বল্পমূল্যের রেশনিং চালু করা গেলে মানুষের জীবন ও জীবিকা স্থায়িত্বশীল হবে।

    সাজেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নেলসন চাকমা নয়ন চাকমা, সাজেক এলাকায় নতুন করে মাচলংয়ে ৬৪ জন, সুরুনং নালায় ২৮ জন, গঙ্গারাম ও ভাইবোন ছড়ায় ৭ জন আক্রান্ত হয়েছে। ইতোমধ্যে উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় আইন-শৃখলা বাহিনীকে আক্রান্তদের তালিকা দেয়া হয়েছে। তবে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে নতুন করে হামে আক্রান্ত হয়েছে বলে তার কাছে এখনো কোন তথ্য আসেনি।

    ইউপি চেয়ারম্যান নেলসন চাকমা নয়ন আরো জানান, দুর্গম এলাকায় ৯ শিশুর মৃত্যুর খবর পেয়ে সবার আগে সেনাবাহিনী সর্বোচ্চ সহযোগিতা নিয়ে এগিয়ে এসেছে। পাশাপাশি অনেক এলাকায় বিজিবিও সহযোগিতা প্রদান করেছে। এই দুই প্রতিষ্ঠান এগিয়ে না আসলে পরিস্থিতি আরো খারপা হতে পারতো।

    ‘আশিকা ডেভলপমেন্ট এসোসিয়েটস’-এর নির্বাহী পরিচালক বিপ্লব চাকমা জানান, ২০১৭ সালে সাজেক এলাকায় ভয়াবহ খাদ্য সংকট সৃষ্টি হয়েছিলো। তাঁর আগেও ‘ইঁদুর বন্যা’র কবলে পড়ে ব্যাপক ফসলহানির মুখে মানুষ সাজেক ছেড়ে পালানোর ঘটনা ঘটেছিল। এলাকাটির অধিকাংশ মানুষ সুপেয় পানির সুযোগবঞ্চিত। অভাব-অশিক্ষায় মানবেতর জীবনযাপন করেন।

    তিনি তাঁর দীর্ঘ অভিজ্ঞতার রেশ টেনে বলেন, জিও-এনজিও ক্লোজলি দীর্ঘ মেয়াদে কাজ করলেই ওখানে স্থায়িত্বশীল উন্নয়ন নিশ্চিত করা যাবে। আর তখনিই মানুষের অন্যান্য মৌলিক অধিকারগুলো পূরণে অগ্রগতি মিলবে।

    বাঘাইছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য ও প:প: কর্মকর্তা ডা. ইফতেখার নতুন করে হামে আক্রান্ত রোগীর কোন তথ্য নেই দাবি করে বলেন, মাঠে স্বাস্থ্য কর্মীরা নিরবিচ্ছিন্নভাবে কাজ করছেন। প্রয়োজনে তিনি নিজেও এলাকা পরিদর্শন করে নির্দেশনা দেবেন।

    রাঙামাটির সিভিল সার্জন ডা. বিপাশ চাকমা জানান, তাঁদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য আমাদের চেষ্টার ত্রুটি নেই। সেনাবাহিনী-বিজিবিও জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের সাথে সমন্বিতভাবে কাজ করছেন। নতুন করে আক্রান্তের তথ্য নিশ্চিত হওয়া মাত্রই ব্যবস্থা নেয়া হবে।

    তিনি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে সরকারি প্রতিষ্ঠানের সাথে আরো ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করলে এলাকার মানুষ বেশি উপকৃত হবেন বলেও মত ব্যক্ত করেন।

    উল্লেখ্য, ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি থেকে সাজেক ইউনিয়ন এলাকায় হামের প্রার্দূভাব দেখা দেয়। এতে ৯ শিশু হামে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। তখন আক্রান্ত হয়েছিলে বয়স্ক ও শিশুসহ দুশতাধিক আক্রান্ত হয়েছে। এখন চলতি মাসের শেষদিক থেকে আবারো নতুন করে আক্রান্তের খবর মিলছে।

    ২৪ ঘণ্টা/এম আর/প্রদীপ

  • বাঘাইছড়িতে হামে পাঁচ শিশুর মৃত্যু

    বাঘাইছড়িতে হামে পাঁচ শিশুর মৃত্যু

    রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নের শিয়ালদহ এলাকায় বিগত এক মাসে হাম রোগে আক্রান্ত হয়ে ৬ শিশুর মত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ১জন প্রতিবন্ধী রয়েছে। এছাড়াও ওই মৌজার তিনগ্রামে আরও ১০৭ শিশু আক্রান্ত রয়েছে বলে স্থানীয় হেডম্যান জৈপুতাং ত্রিপুরা নিশ্চিত করেন।

    অবশ্য বৃহস্পতিবার (১৯মার্চ) রাতে ৫ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা সিভিল সার্জন ডা: বিপাস খীসা।

    স্থানীয় হেডম্যান জৈপুতাং ত্রিপুরা বলেন, তার অধীনস্ত লুং তিয়ান পাড়াতে ৮৫ পরিবার, কমলাপুরে আছে ৩০-৪০ পরিবার, অরুণ পাড়াতে আছে ৭০-৭৫ পরিবার। প্রত্যেক পরিবারে কমপক্ষে ৫জন করে সদস্য রয়েছে।

    তিনি জানান, আনুমানিক ২০ দিন আগে তার মৌজার তিনটি পাড়ায় এ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। লুংতিয়ান পাড়াতে ৮৮জন, কমলাপুর চাকমা পাড়াতে আছে ১২জন এবং অরুণ পাড়াতে আছে ৭জন। মোট ১০৭জন রোগী এখনো আক্রান্ত রয়েছে। আক্রান্তরা সকলের শিশু।

    নিহত শিশুরা হলেন, রোহিনা ত্রিপুরা(৮), সাগরিকা ত্রিপুরা(১১), কোহেন ত্রিপুরা(৩), বিশান ত্রিপুরা(২), ক্লাই ত্রিপুরা(২), মনে ত্রিপুরা(১.৫)।

    সাজেক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নেলসন চাকমা বলেন, সাজেক ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের সীমান্তবর্তী তিনটি গ্রাম অরুনপাড়া, নিউথাং পাড়া এবং হাইচপাড়ায় গত কয়েকদিনে হাম রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এতে শিশুরাই বেশি আক্রান্ত হচ্ছে এবং ইতোমধ্যেই ৫ জন শিশু মারা গেছেন বলে চেয়ারম্যান জানান। এ ব্যাপারে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। তবে দুর্গমতার কারণে আরও সঠিক তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না বলে যোগ করেন চেয়ারম্যান।

    বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আহসান হাবিব জিতু জানান, গত কয়েকদিন ধরে সাজেক ইউনিয়নের দুর্গম এবং সীমান্তবর্তী শিয়ালদহ এলাকার তিনটি গ্রামের শিশুদের হাম রোগে আক্রান্ত হওয়ার খবর শুনেছিলাম। বিষয়টি জেলা স্বাস্থ্য বিভাগকে জানানোর পর তারা ব্যবস্থা নিয়েছে । দূর্গমতার কারণে ওইসব এলাকায় গিয়ে চিকিৎসা সেবা দেওয়া অত্যন্ত কঠিন বলে জানান তিনি।

    ইউএনও আরও বলেন, শুক্রবার সকালে উপজেলা সদর হতে স্বাস্থ্য বিভাগের একটি দলকে ওই এলাকায় পাঠনো হবে। আক্রান্ত শিশুদের হেলিকপ্টারে উদ্ধার করে পাশ্ববর্তী জেলা খাগড়াছড়িতে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে বলে ইউএনও যোগ করেন।

    রাঙামাটির সিভিল সার্জন ডা: বিপাশ খীসা বলেন, আমরা ওই এলাকার জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে জানাতে পারলাম ওইসব ইউনিয়নের তিনটি গ্রামে হাম রোগে অনেক শিশু আক্রান্ত হয়েছে এবং অনেকে মারা গেছে।

    স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, আক্রান্ত এলাকায় একটি মেডিকেল টিম ইতোমধ্যে কাজ করছে। তবে সেখানে কোনো এমবিবিএস পাস ডাক্তার নেই। যারা কাজ করছে তারা সকলে প্যারামেডিক্স পাস ডাক্তার।

    শুক্রবার সকালের মধ্যে জরুরী ভিত্তিতে বিজিবির সহায়তায় হেলিকপ্টারে করে একটি মেডিকেল টিম প্রেরণ করা হবে সিভিল সার্জন জানান।

    উল্লেখ্য চলতি মাসে পার্বত্য চট্টগ্রামের বান্দরবানের লামা উপজেলায় হাম রোগে আক্রান্ত হয়ে ১ ম্রো শিশু মারা যায়। এছাড়াও আক্রান্ত ৩১ জনকে উদ্ধার করে লামা হামপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

  • হামের মহামারিতে সামোয়ায় মৃতের সংখ্যা ৭০

    হামের মহামারিতে সামোয়ায় মৃতের সংখ্যা ৭০

    প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ রাষ্ট্র সামোয়ায় মহামারি আকারে হাম ছড়িয়ে পড়ায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭০।এই মহামারি প্রতিরোধে জাতিসংঘ ২৬ লাখ মার্কিন ডলার জরুরি সহায়তা দিয়েছে।

    গত সপ্তাহে ব্যাপক টিকাদান কার্যক্রম সত্ত্বেও সোমবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় সরকারী হিসেবে আরো ১১২ জন এতে আক্রান্ত হয়েছে।এ ঘটনায় দেশটি গত দুইদিন থেকে অচল হয়ে রয়েছে।

    নিউইয়র্কে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা বিষয়ক আন্ডারসেক্রেটারি জেনারেল এবং জরুরি ত্রাণ সহায়তার সমন্বয়ক মার্ক লুকক বলেন, এই জরুরি সহায়তা দেয়া হয়েছে।

    লুকক এক বিবৃতিতে বলেন, ‘সামোরার জনগণ এককভাবে এই মহামারির সঙ্গে লড়াই করতে পারবে না। আমাদেরকে এগিয়ে আসতে হবে এবং এই মহামারির প্রাদুর্ভাব প্রতিরোধে দ্রত পদক্ষেপ নিতে হবে।’

    সামোরা সরকার বলেছে,দেশটির ২লাখ জনসংখ্যার ৯০ শতাংশকে হামের টিকা দেয়া হয়েছে।মধ্য অক্টোবরে যখন হাম ছড়ানো শুরু করে তখন টিকা গ্রহনকারী ছিল ৩০ শতাংশ ।টিকা গ্রহনের পরে এর কার্যকারিতা শুরু হতে সময় লাগে ১০ থেকে ১৪ দিন।

    মোট হাম আক্রান্ত লোকের সংখ্যা ৪,৬৯৩ জন, তাদের মধ্যে গুরুতর অসুস্থ ১৬ শিশুসহ ২২৯ জন বর্তমানে হাসপাতালে রয়েছে।এদের মধ্যে ১৬ শিশু গুরুতর আহত।