Tag: হেক্টর জমিতে

  • রাউজানে বিস্তীর্ণ ক্ষেতজুড়ে হলুদ বর্ণের মনমাতানো দৃশ্য

    রাউজানে বিস্তীর্ণ ক্ষেতজুড়ে হলুদ বর্ণের মনমাতানো দৃশ্য

    ২৪ ঘন্টা ডট নিউজ। নেজাম রানা, রাউজান : চট্টগ্রামের রাউজানে বিস্তীর্ণ ক্ষেত জুড়ে শোভা পাচ্ছে সরিষার আবাদ। যেইদিকে চোখ যায় শুধু হলুদ আর হলুদের দৃশ্য। সরিষা ক্ষেতের মনমাতানো এই দৃশ্য দেখে উপচে পড়ছে কৃষকের হাসি। সম্প্রতি উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে এই চিত্র।

    উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, প্রতিবারের ন্যায় এই বছরও রাউজানে সরিষার আবাদ হয়েছে। অল্প পুজিঁতে ফলনও হয় ভালো তাই সরিষার চাষে কৃষকদের আগ্রহ দিনদিন বাড়ছে।

    রাউজান উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার রাউজান পৌর এলাকা, উরকিরচর, বিনাজুরি, পশ্চিম গুজরা, ডাবুয়া, হলদিয়া, চিকদাইর, বাগোয়ান, নোয়াজিশপুর ও কদলপুর ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ জমিতে এবার সরিষার চাষাবাদ হয়েছে। বিশেষ করে উত্তর রাউজানের বেশ কিছু ইউনিয়নে সরিষা ক্ষেতের মনমাতানো দৃশ্য নজর কাড়ছে পথচারীদের।

    কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, দেশে ১৫ জাতের সরিষার চাষাবাদ হচ্ছে। প্রতি আড়াই কেজি সরিষা থেকে এক কেজি সরিষা তেল পাওয়া যায়। চাষাবাদের ৯০ দিনের মধ্যে সরিষার ক্ষেত থেকে ফসল ঘরে তোলা যায়।

    উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, রাউজানে বারি-১৪ জাতের ৪০ হে:, বারি-১৫ জাতের ৫৫ হে:, বিনা- ৯ জাতের ৫ হে: এবং টরি-৭ জাতের ৫ হে: জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছে। বারি- ১৫ জাতের সরিষা তেল উৎপাদনের জন্য খুবই ভাল।

    রাউজানে সরিষা তেল উৎপাদনের জন্য ২ টি ঘানি আছে। তেল উৎপাদনের পর সরিষার বাদ বাকি অংশ থেকে গরুর খৈল হয়। ভালো ফলন হওয়ায় বর্তমানে দিনদিন কৃষকরা সরিষার চাষাবাদে আগ্রহী হয়ে উঠছে।

    কৃষি অফিস সূত্র জানায়, সরিষা ফুল থেকে ভাল মানের মধু আহরণের জন্য সরিষা ক্ষেতে ৪ টি মৌ বাক্স বসানো হয়েছে।

    চলতি বছর উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নে ১৫ হেক্টর, ডাবুয়া ইউনিয়নে ১৫ হেক্টর, চিকদাইর ইউনিয়নে ১৫ হেক্টর, গহিরা ইউনিয়নে ৪ হেক্টর, পৌর সভায় ১২ হেক্টর, বিনাজুরি ইউনিয়নে ৩ হেক্টর, রাউজান ইউনিয়নে ৭ হেক্টর, কদলপুর ইউনিয়নে ২ হেক্টর, পাহাড়তলী ইউনিয়নে ২ হেক্টর, পূর্ব গুজরা ইউনিয়নে ৫ হেক্টর, পশ্চিম গুজরা ইউনিয়নে ৩ হেক্টর, উরকিরচর ইউনিয়নে ২ হেক্টর, নোয়াপাড়া ইউনিয়নে ৫ হেক্টর, বাগোয়ান ইউনিয়নে ৫ হেক্টর ও নোয়াজিশপুর ইউনিয়নে ১০ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষাবাদ করা হয়।

    রাউজান পশ্চিম গুজরা ইউনিয়নের কৃষক আব্দুল সালাম ২৪ ঘন্টা ডট নিউজকে বলেন, আমন মৌসুমের ধান কাটার পর তার কৃষি জমিতে সরিষার চাষাবাদ করেছেন। ফলন ভালো হলে কম খরচে ভালোই লাভবান হওয়া যায় তাই শীতকালীন বিভিন্ন সব্জির পাশাপাশি তিনি সরিষা চাষ করেছেন। তার সরিষা ক্ষেত এখন হলদে বর্ণে টইটুম্বুর।

    রাউজান ইউনিয়নের সুজন জানান, বিগত কয়েক বছর ধরে তিনি সরিষার চাষাবাদ করে আসছেন। কম পুঁজিতে লোকসানের তেমন আশংকা না থাকায় সরিষা চাষাবাদে তার মতো অনেকেই এগিয়ে আসছেন।

    রাউজান উপজেলা উপ সহকারি কৃষি কর্মকর্তা (উন্নয়ন শাখা) সনজীব কুমার সুশীল ২৪ ঘন্টা ডট নিউজকে বলেন, চলতি বছর রাউজানের বিভিন্ন ইউনিয়নে ১০৫ হেক্টর কৃষি জমিতে সরিষার চাষাবাদ করা হয়েছে। গত বছরের চাইতে যা ৩৫ হেক্টর বেশী। আশানুরুপ ফলন হলে ১০ টনের অধিক পরিমান সরিষা উৎপাদন হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

  • সীতাকুণ্ডে সাড়ে ৫ হাজার হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজির চাষ

    সীতাকুণ্ডে সাড়ে ৫ হাজার হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজির চাষ

    দেশের প্রধান সবজি উৎপাদনের ভান্ডার হচ্ছে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড। সীতাকুণ্ডে চলতি মৌসুমে উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে সাড়ে ৫ হাজার হেক্টর জমিতে শীতকালীন বিভিন্ন রকম সবজির চাষ হয়েছে। তবে বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত উপজেলার প্রায় ১৯ হাজার কৃষক পরিবার।

    এ জেলার হাট-বাজার গুলোতে তেমন কোনো নিয়ন্ত্রন নেই বললে চলে। ফলে খুচরা দোকানীরা ৪০ টাকার সবজি তার দ্বিগুণ দামে বিক্রি করছেন বলে প্রায় সময় ক্রেতা ও হাটে সবজি বিক্রি করতে আসা কৃষকরা ক্ষোভের সাথে অভিযোগ করেন। অন্যদিকে সিন্ডিকেটের থাবায় কৃষকদের সদ্য চাষকরা শীতকালীন সবজির প্রকৃত মূল্য পাবে কি পাবেনা তাও অনেকটা অনিশ্চিত।

    পৌরসভাস্থ মোহন্তের হাট বাজারে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা পাইকার তাদের পছন্দের শীতকালীন সবজি প্রতিটি শীত মৌসুমে ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান করে ঢাকা এবং চট্টগ্রামের হাটহাজারী, রিয়াজউদ্দিন বাজার, পাহাড়তলী,ওয়ার্লেস ঝাউতলা বাজারসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রির উদ্দেশ্যে নিয়ে যান আগত পাইকার।

    একটু ভাল দামের আশায় উপজেলার কৃষক পরিবার গুলো মৌসুম ছাড়াই আগাম বিভিন্ন রকম সবজির চাষ করে থাকেন। তবে পাইকারী বাজারে সবজির দাম কম থাকলেও খুচরা বাজারে কিন্তু অনেক বেশি। ফলে ক্রেতাদের কাছ থেকে ইচ্ছে মত দাম নিয়ে অনেকে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হচ্ছে বলে ক্ষোভ বাজারে আসা একাধীক সল্প আয়ের ক্রেতাদের।

    এখানকার খুচরা দোকানীরা সবজিতে প্রতি কেজি ১৫ থেকে ২০টাকা করে বেশি নিচ্ছেন। যা সাধারণ ক্রেতাদের অনেকটা হতাশ করে তুলছে।

    অভিযোগে জানা যায়, পৌরসদর মহোন্তের হাট, বড়দারোগা হাট, বাড়বকুণ্ড, শুকলালহাট, কুমিরা, ভাটিয়ারী, ফৌজদারহাটসহ উপজেলার অনেক হাটে কৃষকদের অধিক উৎপাদিত সবজি যখন সাপ্তাহিক হাটে নিয়ে আসেন। তখন এক ধরনের পাইকার তাদের কাছ থেকে খুব কমদামে সবজি ক্রয় করে বাইরে বেশি দামে বিক্রি করছেন। ফলে সারা বছর সবজি চাষকরে যে লাভের কথা ভাবে কৃষক, তা আর হয়ে উঠেনা। এতে অধিক লাভবান হচ্ছেন পাইকার ও খুচরা দোকানি। মধ্যখানে শুধু লোকসান গুনতে থাকেন খেটে খাওয়া কৃষি পরিবারগুলো।

    এদিকে মুরাদপুর ইউনিয়নের গুলিয়াখালী সাগরের বেড়িবাঁধ এলাকার পুরানো এক কৃষক মোঃ আলি ২৪ ঘন্টা যট নিউজকে জানান, মাথার ঘাম পায়ে ফেলে জমিতে ফসল উৎপাদন করেন তিনি। এবছর অন্তত ৫ একর জমিতে ছোট শশা ও শীতকালীন শিমের চাষ করেছেন। এতে তার শেষ পর্যন্ত খরচ পড়বে প্রায় সাড়ে ৪ লক্ষ টাকা। পরিস্থিতি ও বাজার দর ভাল থাকলে তিনি কমপক্ষে ৮ লক্ষ টাকারও বেশি সবজি বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন।

    তিনি আরো বলেন, একটি সিন্ডিকেট ৬০ টাকার সবজি ৪০ টাকা করে বলেন। কাচা মাল পঁচে যাওয়ার ভয়ে আমরা কৃষক কম দামে পাইকারদের কাছে বিক্রি করে দেই। শুধুু তাই নয় ১০০ কেজি সবজি বিক্রি করলে ৮০ কেজির টাকা পাওয়া যায়। আর বাকি ২০ কেজি টাকা বিভিন্ন অযুহাতে বাদ দিয়ে দেন পাইকার সিন্ডিকেট।

    উপজেলা বিভিন্ন হাট বাজারে পাইকারী দামে কৃষক টমেটো বিক্রি করছে কেজি ৭০ টাকা, আর খুচরা বাজারে ১২০ টাকা, বেগুন ৩৫ ও খুচরা বাজারে কেজি ৫০, ঢেঁড়শ ৪০ খুচরা বাজারে ৫০, চিচিংগা কেজি ৩০, খুচরা বাজারে ৪৫ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।

    সীতাকুণ্ড উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা সুভাষ চন্দ্রনাথ ২৪ ঘন্টা ডট নিউজকে বলেন, বর্তমানে সবজি বিক্রি করে অনেক লাভবান হচ্ছে কৃষক। চলতি বছর সাড়ে ৫হাজার হেক্টর জমিতে ১৯ হাজার কৃষক তাদের নিজ নিজ জমিতে শিমসহ বিভিন্ন রকম শীতকালীন সবজির চাষ করেছেন। তার মধ্যে তিন হাজার হেক্টর জমিতে শিম ও আড়াই হাজার জমিতে অন্যান্য সবজির চাষ হয়েছে।

    তিনি বলেন চলতি মৌসুমে সবজি শিম প্রতি হেক্টরে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২০ মেট্রিকটন। আর অন্যান্য সবজি হেক্টরে ৩৫ মেট্রিকটন।

  • সীতাকুণ্ডে ২৫০ হেক্টর জমিতে পেঁপে চাষ : কৃষকের মুখে হাসি

    সীতাকুণ্ডে ২৫০ হেক্টর জমিতে পেঁপে চাষ : কৃষকের মুখে হাসি

    কামরুল ইসলাম দুলু, সীতাকুণ্ড : সীতাকুণ্ডে পাহাড়ে পেঁপে চাষে দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের। এখন পাহাড়ে সারাবছরই চাষ হচ্ছে পেঁপের। যা স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। ফলন ও লাভ ভালো হওয়ায় এখানকার প্রায় দেড় হাজার কৃষকের মাঝে পেঁপে চাষে সচ্ছলতা এসেছে।

    স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সীতাকুণ্ড উপজেলার প্রায় সর্বত্রই কমবেশি পেঁপে চাষ করছেন কৃষকরা। তবে সবচেয়ে বেশি পেঁপে চাষ হয় কুমিরা ও সোনাইছড়ি ইউনিয়নের পাহাড়ি এলাকায়।

    দেখা গেছে, সোনাইছড়ি পাহাড় এখন পেঁপে বাগানে পরিণত হয়েছে। ব্যক্তিগত জমি ও সরকারি পাহাড় লিজ নিয়ে এখানে বেশ কয়েকটি পেঁপে বাগান গড়ে তুলেছেন স্থানীয় কৃষকরা।

    এলাকাবাসী জানান, সোনাইছড়ি ইউনিয়নের বার আউলিয়ার ফুলতলা পাহাড়ে ইতিমধ্যে পেঁপে চাষের জন্য সুপরিচিতি। পার্শ্ববর্তী ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন পাহাড়েও উল্লেখযোগ্য পেঁপে চাষ হয়ে থাকে। ফলে এখান থেকে পেঁপে কিনে নিয়ে যেতে প্রতিদিন চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের পাইকারী ব্যবসায়ীরা ভীড় করেন।

    ফুলতলার পেঁপে চাষী মো. নাসির উদ্দিন জানান, তিনি নিজে ৫০ শতক জমিতে পেঁপে চাষ করেছেন। ফলনও ভালো হয়েছে। গত দুই সপ্তাহে কয়েকদফা পেঁপে বিক্রি করেছি। তিনি জানান, শুধু কুমিরা এলাকাতেই পেঁপে চাষ করে অনেক কৃষক নিজেদের ভাগ্য বদল করেছেন।

    কৃষক আমজাদ হোসেন জানান, চাষাবাদে সার, কীটনাশক, শ্রমিক মুজুরি ও চারা ক্রয়সহ বিভিন্নভাবে তার যা খরচ হয়েছে তার দ্বিগুণ লাভ করেছি। তিনি জানান, শীত ও বর্ষা সবসময় তারা পেঁপে চাষ করেন। পাহাড়ি এলাকায় পেঁপে চাষের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো বর্ষায়ও গাছের গোড়ায় পানি না জমায় তেমন ক্ষতি হয় না।

    কৃষকরা জানান, চলতি বর্ষায় উপজেলার নিম্নাঞ্চল পানিতে প্লাবিত হলেও পেঁপে বাগানগুলোর ক্ষতি হয়নি। ফলে অনেকটা নিশ্চিন্তে চাষাবাদ করছেন তারা। গাছেও ফলন খুব ভালো। প্রতি কেজি পেঁপে পাইকারী দরে ১৫/২০ টাকায় বিক্রি হয়ে থাকে। তবে সরকারিভাবে পেঁপে চাষিদের তেমন কোনো সহায়তা প্রদান করা হয় না বলে অভিযোগ চাষিদের।

    যদি সহজ শর্তে কৃষি ঋণসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা দেয়া হত তাহলে কৃষকরা এই ফল চাষে অনেক বেশি আগ্রহী হতেন বলে দাবি তাদের।

    পেঁপে চাষে স্থানীয় চাষিরা স্বচ্ছল হচ্ছেন জানিয়ে উপজেলা কৃষি বিভাগের উপ-সহকারী কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, সীতাকুণ্ডে ২৫০ হেক্টর জমিতে দেড় হাজার কৃষক পেঁপে চাষ করেন। সোনাইছড়ি থেকে ছোট কুমিরার সুলতানা মন্দির পর্যন্ত এলাকায় পাহাড়ে প্রচুর পেঁপে চাষ হয়। স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে এসব পেঁপে দেশের বিভিন্ন এলাকায় যাচ্ছে।

    আরো:: হাতির পায়ে পিষ্ট হয়ে কৃষকের মৃত্যু

    ২৪ঘন্টা/কামরুল ইসলাম দুলু/রাজীব.