২৪ ঘন্টা ডট নিউজ। চট্টগ্রাম ডেস্ক : করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে চট্টগ্রামে সেনাবাহিনীর ১৭ টিম মাঠে নেমেছে। মেজর অথবা ক্যাপ্টেন পদমর্যাদার সেনা কর্মকর্তার নেতৃত্বে সকাল ৮টার আগেই সেনানিবাস থেকে চট্টগ্রাম নগরী ও উপজেলায় এসব টিমের সদস্যরা পৌছে যায়।
আজ ২৫ মার্চ বুধবার সকাল থেকে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের ৬ জন ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযানে অংশগ্রহণের পাশাপাশি নগরীর সড়ক ও অলি-গলিতে সেনাবাহিনী টহল শুরু করে।
তাছাড়া প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের সংক্রমন রোধে লোকজনকে সচেতন করার লক্ষ্য এবং অযথা ঘরের বাইরে ঘোরাঘুরি না করার জন্য বুধবার সকাল ৮টা থেকেই চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করছেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, বিদেশ থেকে আসা অনেক প্রবাসী সরকারি নির্দেশনা মতে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকছে না। এসব ব্যাক্তিদের হোম কোয়ারেনটাইন ব্যবস্থা ও নগরবাসীর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে মাঠে আছেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ। ইতিমধ্যে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে অনেককে জরিমানা করা হয়েছে।
কিন্তু পুরোপুরি নিশ্চিত করা যাচ্ছে না কোয়ারান্টাইন। এ জন্য বিশেষভাবে কাজ করবে সেনাবাহিনী। তাই সরকারের নির্দেশেই আজ বুধবার (২৫) সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সেনা সদস্যরা মাঠে নামেন।
জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে সকাল থেকে অভিযান চলে নগরীর খুলশী, আকবর শাহ ও পাহাড়তলী এলাকায়। এসময় ওই এলাকায় বিদেশি নাগরিকসহ পাঁচজনকে বাধ্যতামূলক হোম কোয়ারেনটাইনে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া একটি কোরিয়ান রেস্টুরেন্ট সিলগালা করা হয়েছে।
এ বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল বলেন, নগরীর খুলশীর ২ নম্বর সড়কে ১২/২ নম্বর ভবনে দক্ষিণ কোরিয়ানদের ওই রেস্টুরেন্টটি গতকাল মঙ্গলবার বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু বুধবার সকালেও ওই রেস্টুরেন্টটি খোলা পাওয়া যায়। তাছাড়া ওই রেস্টুরেন্টে তখনও দুজন কোরিয়ান ও তিনজন বাংলাদেশি নাগরিক ছিলেন।
সেনা সদস্যদের সহযোগীতায় অভিযানকারী দল ওই পাঁচজনকে বাধ্যতামূলক হোম কোয়ারেনটাইনে পাঠিয়ে রেস্টুরেন্টটি সিলগালা করে দিয়েছে।
চট্টগ্রাম সেনানিবাসের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, করোনা ভাইরাসের সংক্রমন ঠেকাতে মূলত জনসমাগম ঠেকানো, বিদেশ ফেরত প্রবাসীদের হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চত করা ও আক্রান্ত রোগীদের সঠিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করার টার্গেট নিয়ে আমরা কাজ শুরু করেছি।
বুধবার সকাল থেকে নগরীর বিভিন্ন অলি-গলিতে ঘুরে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা বাসীরা যথাযথভাবে নির্দেশনা মানছেন কিনা তা তদারকি করা হয়।
তাছাড়া হোম কয়োরেন্টিনে থাকা ব্যক্তিদের বাসায় লাল পতাকা ও স্টিকার লাগানোর পাশাপাশি লোকজনকে অযথা বাইরে ঘোরাঘুরি না করে বাসায় থাকার আহ্বান জানিয়ে মাইকিং করা হয়। এরপরও যারা মানবে না তাদের বিরুদ্ধে শাস্থিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি হুঁশিয়ারি দেন।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ইলিয়াস হোসেন বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবিলায় চট্টগ্রামে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে অভিযানে নেমেছে সেনাবাহিনীর ১৭ টিম। নগরীর ১৬ থানা ও জেলার ১৬ থানায় জেলা প্রশাসনকে সহায়তা করতে আজ থেকে মাঠে রয়েছেন এসব টিমের সেনা সদস্যরা।
তিন পার্বত্য জেলায় আরো ২৬টি সহ সেনাবাহিনীর মোট ৪৩টি টিম এখন করোনাভাইরাস মোকাবিলায় চট্টগ্রামের মাঠে আছে জানিয়ে তিনি বলেন, করোনা বিস্তার ঠেকাতে যা যা করা প্রয়োজন তার সবটায় করবে জেলা প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর যৌথ টিম।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (২৪ মার্চ) বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত প্রশাসন ও সশস্ত্র বাহিনীর কর্মপদ্ধতি নির্ধারণ সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সেনাবাহিনীর সদস্যরা মাঠে কাজ করছেন।
২৪ ঘন্টা/ আর এস পি..