Tag: ১০ শয্যার

  • সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়িতে নির্মাণ হচ্ছে ১০ শয্যার সরকারি হাসপাতাল

    সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়িতে নির্মাণ হচ্ছে ১০ শয্যার সরকারি হাসপাতাল

    ২৪ ঘন্টা ডট নিউজ। কামরুল দুলু,সীতাকুণ্ড : সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়িতে নির্মিত হচ্ছে ১০ শয্যার অধুনিক একটি সরকারি হাসপাতাল। মা ও শিশুসহ সকলের স্বাস্থ্য সেবা দেওয়া হবে এই হাসপাতালে।

    হাসপাতালের জন্য তিন কোটি টাকা মূল্যের ৫১ শতক জমি দান করেছেন বিশিষ্ট শিল্পপতি ও শিপ ব্রেকার্স মাস্টার আবুল কাসেম। সবুজে ঘেরা পাহাড়ের পাদদেশে এই জমির উপর প্রায় ৪ কোটি ৮৩ লাখ টাকা ব্যায়ে নির্মিত হচ্ছে দুইটি বহুতল ভবন।

    পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর এই ভবনটি নির্মাণ করার জন্য সম্পন্ন করেছেন। গত ডিসেম্বর মাস থেকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করেছে। চলতি মাসের প্রথম তলার ছাদ দেওয়া হবে। আগামী ডিসেম্বর অথবা জানুয়ারিতে চালু হতে পারে এই হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা। এই হাসপাতালটি নাম দেওয়া হয়েছে বানু-মোনাফ মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র।

    হাসপাতালটি উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়নের কেশবপুর এলাকায় অবস্থিত। ২০১৭ সালে জুন মাসে অজ্ঞাত রোগে সোনাইছড়ি ইউনিয়নের ত্রিপুরা পাড়ায় মারা যায় ১১ শিশু। আক্রান্ত হন আরও শতাধিক শিশু। পরবর্তীতে অজ্ঞাত রোগটি ‘হাম’ বলে নিশ্চিত হন স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। ওই সময় উঠে আসে ত্রিপুরা পল্লীর বাসিন্দাদের স্বাস্থ্য না নেওয়ার বিষয়টি।

    পাহাড়ে বসবাসরত নৃ-গোষ্ঠির এই মানুষগুলো আধুনিক স্বাস্থ্য সেবা না নিয়ে ঝাঁড়ফুক ও কবিরাজি চিকিৎসায় প্রতি ঝুকে পড়া। সরকারিভাবে বিনা মূল্যে দেওয়া ‘হাম’সহ ১০টি রোগের টিকা দেওয়া বিষয়টি ছিলো তাদের অজানা।

    শিশু মৃত্যুর ঘটনার পর সরকারি ভাবে ত্রিপুরা পল্লীর পাশে ওই সময় অস্থায়ী ভাবে স্থাপিত হয় কমিউনিটি ক্লিনিক। পাহাড়ে নৃ-গোষ্ঠিসহ স্থানীয় বাসিন্দারা চিকিৎসা নিচ্ছেন ওই ক্লিনিক থেকে। প্রতিদিন দেড়শ থেকে দুইশ রোগীর চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্তব্যরত চিকিৎসকদের।

    তবে সেবা প্রার্থীরা বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এরই মধ্যে সরকারিভাবে মন্ত্রনালয়ে সিদ্ধান্ত হয় ওই এলাকায় যদি কেই জমি দান করেন তা হলে ১০ শয্যার একটি হাসপাতাল করবে সরকার।

    বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে সোনাইছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনির আহমেদ জমি সন্ধান করতে মরিয়া হয়ে ওঠেন। অনেক দানশীল ও ব্যবসায়ীর কাছে ধর্ণা দিয়েও কোন কাজে হয়নি। পরবর্তীতে চেয়ারম্যানের অনুরোধে জমি দান করতে এগিয়ে আসেন স্থানীয় শিপ ব্রেকার্স ও শিল্পপতি মাস্টার মোহাম্মদ আবুল কাসেম।তিনি সরকারি নিয়ম মোতাবেক ৫১শতক জমি রেজিষ্ট্রারী করে দেন হাসপাতালের জন্য।

    এ ব্যাপারে সোনাইছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনির আহমেদ বলেন, সোনাইছড়ি ইউনিয়ন পরিষদে একটি কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে। কিন্তু ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পূর্বে পাহাড়ে বসবাস করে চার শতাধিক নৃ-গোষ্ঠি পরিবার। তারা অধুনিক চিকিৎসা সেবা কী জানতো না। কখনো টিকাও নেইনি তারা।

    ফলে ২০১৭ সালের জুনে ‘হাম’ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায় ত্রিপুরা পল্লীর ১১ শিশু। সরকার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে একটি মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র করার উদ্যোগ নেন। এতে পাহাড়ে বসবাসরত নৃ-গোষ্ঠিসহ স্থানীয় গর্ভবতী মা, কিশোর কিশোরীসহ শিশুদের স্বাস্থ্য সেবা দেওয়া হবে। থাকবে ঠিকা কার্যক্রমও।

    জমিদাতা বিশিষ্ট শিল্পপতি মাদার স্টিল শিপ ব্রেকার্সের মালিক মাস্টার মোহাম্মদ আবুল কাসেম বলেন, সোনাইছড়ি ইউনিয়নের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পূর্বে কোন স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র নেই। পাহাড়ে থাকা নৃ-গোষ্ঠিসহ স্থানীয় গবীর অসহায় পরিবারের নারী শিশুরা অর্থ অভাবে স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

    আমার বাবা আলহাজ্ব আবদুল মোনাফ অনেক সময় বিষয়টি অনুধাবন করে আমাকে বলতে ওই এলাকার গবীর অসহায় লোকদের জন্য একটি হাসপাতাল করতে। স্থানীয় চেয়ারম্যান মনির আহমেদ হাসপাতাল নির্মাণের বিষয়টি আমাকে জানালে আমি ৫১ শতক জায়গা হাসপাতালের জন্য দান করি।