Tag: বিজিবি

  • রাজধানীর তিন এলাকায় বিজিবি মোতায়েন

    রাজধানীর তিন এলাকায় বিজিবি মোতায়েন

    আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে রাজধানীর তিন এলাকায় বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।

    মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) বিকেলে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম।

    তিনি জানান, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে রাজধানীর শাহবাগ, মৎস্য ভবন ও হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল এলাকায় চার প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।

    এর আগে, সোমবার (২৫ নভেম্বর) যাত্রাবাড়ী-ডেমরা এলাকায় ৬ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়।

  • সীমান্ত পরিস্থিতি বিজিবির নিয়ন্ত্রণে, রোহিঙ্গা ঢুকতে দেওয়া হবে না

    সীমান্ত পরিস্থিতি বিজিবির নিয়ন্ত্রণে, রোহিঙ্গা ঢুকতে দেওয়া হবে না

    বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) নবনিযুক্ত মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বলেছেন, বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত পরিস্থিতি বিজিবির সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আমরা কোনোভাবেই নতুন করে আর কোনো রোহিঙ্গা নাগরিককে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে দেব না।

    বিজিবি মহাপরিচালক মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় পৌঁছান এবং বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

    বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, আমি গতকাল দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে সবচেয়ে বেশি এই সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে ইনভলভ আছি। বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) আমি নিজে সরেজমিনে সীমান্ত পরিদর্শনে যাচ্ছি। আমরা ধৈর্য ধারণ করে, মানবিক দিক বিবেচনা করে এবং আন্তর্জাতিকভাবে সুসম্পর্ক বজায় রেখে পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা করছি। আমাদের প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা সেরকমই। গতকাল প্রধানমন্ত্রী এব্যাপারে কথাও বলেছেন, ধৈর্যধারণের নির্দেশনা দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা অনুযায়ী বিজিবি কাজ করে যাচ্ছে।

    বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, গতকাল রাত পর্যন্ত ১১৫ জন বিজিপি সদস্য আমাদের কাছে আত্মসমর্পণ করে বা আশ্রয় নিয়েছেন। আজ সকালে আরও ১১৪ জন যুক্ত হয়েছে। দুপুর পর্যন্ত এই সংখ্যা ছিল ২২৯। দুপুরের পর আরো বিজিপিসহ দেশটির অন্যান্য বাহিনীর ৩৫ জন যোগ হয়ে ২৬৪ জন আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের আমরা থাকা ও খাবারের ব্যবস্থা করেছি। তাদের মধ্যে ১৫ জন আহত ছিলেন, এরমধ্যে ৮ জন ছিলেন গুরুতর আহত। এই ৮ জনের মধ্যে চারজনকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে বিজিবির ব্যবস্থাপনায় ভর্তি করা হয়েছে। বাকি চারজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বিজিবির ব্যবস্থাপনায় চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

    সীমান্তে উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে সরকারি পরিকল্পনা সম্পর্কে তিনি বলেন, সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ করছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মিয়ানমারের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। আশ্রিতদের প্রত্যাবর্তন বা ফেরানোর বিষয়ে কীভাবে সমাধান করা যায় তা নিয়ে কাজ চলছে। মিয়ানমার এব্যাপারে সহযোগিতা করবে বলে জানিয়েছে। তারাও প্রত্যাবর্তনের ব্যাপারে নোট নিয়েছে। আশা করি খুব শিগগিরই তাদের প্রত্যাবর্তন করানো হবে।

    বিজিবি ডিজি বলেন, একই সঙ্গে দুই দেশের দুই সীমান্ত বাহিনীর মধ্যে যোগাযোগ হচ্ছে। সীমান্তবর্তী পরিস্থিতি আপনারা জানেন। মিয়ানমারে গোলাগুলির মধ্যে কিছু শেল এসে বাংলাদেশে পড়ছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে গতকাল এক রোহিঙ্গা নাগরিক ও একজন বাংলাদেশি নারী মারা গেছেন। এই মৃত্যু কোনোভাবেই কাম্য নয়। আমরা প্রোটেস্ট নোট দিয়েছি। আমরা বারবার বলেছি আজকেও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি বড় মিটিং হচ্ছে। আর আমি আগামীকাল সরেজমিন সীমান্ত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে যাব।

    তিনি বলেন, আজকে মিয়ানমারের ডিএ (ডিফেন্স অ্যাটাচ) আমার সঙ্গে দেখা করেছেন। সবদিক অ্যাঙ্গেজ করে কীভাবে এর আশু সমাধান করা যায়, সে চেষ্টা আমরা করছি।

    বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, আজকে ৬৫ জন রোহিঙ্গা বোটের মাধ্যমে নদী পথে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশের প্রবেশের চেষ্টা করেছে। আমাদের টেকনাফ বিজিবি তাদেরকে প্রতিহত করেছে। তাদের পুশব্যাক করার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। আমরা নতুন করে কোনো রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে আর প্রবেশ করতে দেব না। এভাবে আমরা বাংলাদেশের অখণ্ডতা রক্ষা করে প্রধানমন্ত্রী দিক-নির্দেশনায় বিজিবি কাজ করে যাচ্ছে। সীমান্তের সার্বিক নিরাপত্তা পরিষদের এখন পর্যন্ত বিজেপি নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।

    উল্লেখ্য, গত ৫ ফেব্রুয়ারি তিনি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।

  • মিয়ানমার ইস্যুতে সেনা ও বিজিবিকে ধৈর্য ধরার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

    মিয়ানমার ইস্যুতে সেনা ও বিজিবিকে ধৈর্য ধরার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

    মিয়ানমারে চলমান সংঘাত ও বাংলাদেশের সীমান্তে এর প্রভাব নিয়ে সশস্ত্রবাহিনী ও বিজিবিকে (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) ধৈর্য করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ সোমবার জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মজিবুল হক চুন্নুর এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এ কথা বলেন।

    এদিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের পক্ষে প্রশ্নোত্তরে সংসদ সদস্যদের প্রশ্নের জবাব দেন আইনমন্ত্রী। তিনি বলেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ ওই ঘটনা বাংলাদেশ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

    মিয়ানমার ইস্যুতে সরকার ওয়াকিবহাল আছে উল্লেখ করে আইনমন্ত্রী বলেন, আজ ৭৮ জন মিয়ানমারের বর্ডার পুলিশ বাংলাদেশে চলে এসেছে। তাদের মধ্যে কিছু কিছু আহতও আছে। তাদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আপাতত একটা স্কুলে রাখা হয়েছে। মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে একটা আলোচনার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমরা সেই আলোচনার জন্য এবং তাদের ফেরত পাঠানো বা ফেরত যদি পাঠানো না যায় তাহলে অন্য ব্যবস্থা কী করা যায়, সেটাও হবে। এই পরিস্থিতি বাংলাদেশ খুব নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

    মন্ত্রী বলেন, আমাদের সশস্ত্র বাহিনী বা প্যারামিলিটারি বাহিনী (বিজিবি) রয়েছে তাদের ধৈর্য ধারণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সেইসঙ্গে বর্ডারের স্কুলটি বন্ধ করার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

     

  • বিজিবির নতুন প্রধান আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী

    বিজিবির নতুন প্রধান আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী

    বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) নতুন মহাপরিচালক (ডিজি) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী। তিনি বর্তমান ডিজি মেজর জেনারেল এ. কে. এম. নাজমুল হাসানের স্থলাভিষিক্ত হবেন।

    মঙ্গলবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।

    প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকীকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক হিসেবে প্রেষণে পদায়ন করা হলো। এই সেনা কর্মকর্তা চাকরি সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ থেকে জননিরাপত্তা বিভাগে ন্যস্ত করা হয়েছে। এছাড়া বর্তমান মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এ. কে. এম. নাজমুল হাসানকে নিজ বাহিনীতে ফেরত নেওয়া হয়েছে। গতবছরের জানুয়ারি মাসে নাজমুল হাসান বিজিবি প্রধানের দায়িত্ব পান।

  • চট্টগ্রামে বিজিবির অভিযানে দুই কেজি হেরোইন উদ্ধার

    চট্টগ্রামে বিজিবির অভিযানে দুই কেজি হেরোইন উদ্ধার

    চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কে একটি বাসে তল্লাশি চালিয়ে দুই কেজি হেরোইন জব্দ করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

    শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে উপজেলার তেঁতুলতলা এলাকায় এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।

    বিজিবি চট্টগ্রাম ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাহেদ মিনহাজ বলেন, মেহেরপুর থেকে একটি বাস কক্সবাজারের দিকে যাচ্ছিল। এসময় ডগ স্কোয়াডের মাধ্যমে বাসে থাকা একটি কালো ব্যাগ থেকে হেরোইন জব্দ করা হয়।

    উদ্ধার হেরোইনের আনুমানিক বাজারমূল্য ২ কোটি টাকা বলে জানা গেছে।

  • সীমান্ত হত্যা বন্ধে বিজিবিকে আরো তৎপর হতে রাষ্ট্রপতির আহ্বান

    সীমান্ত হত্যা বন্ধে বিজিবিকে আরো তৎপর হতে রাষ্ট্রপতির আহ্বান

    রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন চোরাচালান, মাদক ও সীমান্ত হত্যা বন্ধে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) কে আরো তৎপর হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

    আজ দুপুরে বঙ্গভবনে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল একেএম নাজমুল হাসান রাষ্ট্রপতির সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ আহ্বান জানান।

    রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মোঃ জয়নাল আবেদীন জানান, সাক্ষাৎকালে বিজিবি প্রধান এই বাহিনীর অপারেশনাল কার্যক্রমসহ সার্বিক কর্মকান্ড সম্পর্কে রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করেন।

    দেশের ৪,৪২৭ কিলোমিটার সীমান্ত রক্ষায় বিজিবির দায়িত্বপূর্ণ ভূমিকারও প্রশংসা করেন রাষ্ট্রপ্রধান।

    রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন মাদকের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে “জিরো টলারেন্স নীতি” নিয়ে কাজ করার নির্দেশ দেন বাংলাদেশের সীমান্ত নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত এই আধাসামরিক বাহিনীকে।

    সামনে জাতীয় নির্বাচন উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, “নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ করতে যেকোনো ধরনের অনুপ্রবেশ বন্ধে বিজিবিকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় থাকতে হবে।”

    এ সময় রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব সম্পদ বড়ুয়া, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এসএম সালাহউদ্দিন ইসলাম এবং সচিব (সংযুক্ত) মোঃ ওয়াহিদুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন।

  • বিজিবি ফৌজদারি মামলা করতে পারবে: হাইকোর্ট

    বিজিবি ফৌজদারি মামলা করতে পারবে: হাইকোর্ট

    বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) কর্তৃক ফৌজদারি মামলা দায়েরের ওপর স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করেছেন হাইকোর্ট। এর ফলে বিজিবি এখন থেকে মামলা করতে পারবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

    বুধবার (২৪ মে) বিচারপতি এসএম কুদ্দুস জামান ও বিচারপতি শাহেদ নুরউদ্দিনের হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এ স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করেন।

    তবে বিজিবির মামলা দায়েরের এখতিয়ার নিয়ে জারি করা রুল বহাল রেখেছেন আদালত।

    আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী।

    এর আগে মঙ্গলবার (২৩ মে) বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) কর্তৃক ফৌজদারি মামলা দায়েরের ওপর স্থগিতাদেশ দেন আদালত।

    বিজিবি কর্তৃক দায়ের করা এক মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আসামির করা আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি এসএম কুদ্দুস জামান ও বিচারপতি শাহেদ নুরউদ্দিনের হাইকোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার এই আদেশ দেন। একইসঙ্গে মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। আগামী ১৪ জুন এই রুলের ওপর শুনানির জন্য দিন ধার্য করেছেন আদালত।

    ২০২২ সালে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় পণ্য আটক করে বিজিবি। ওই ঘটনায় ওইদিনই বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫(বি) ধারায় আসামিদের বিরুদ্ধে চোরাচালানের অভিযোগ এনে কসবার আখাউড়া রেলওয়ে থানায় মামলা করে বিজিবি। ওই মামলার তদন্ত শেষে চার্জশিট দেয় পুলিশ। চার্জশিট আমলে নেন আদালত। একইসঙ্গে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ব্রাক্ষণবাড়িয়ার আদালত। এই অভিযোগ গঠনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করেন আসামি কামরুজ্জামান খান।

    ওই আবেদনের শুনানিতে ফৌজদারি মামলা দায়ের করার বিজিবির আইনগত এখতিয়ার রয়েছে কি না তা নিয়ে আলোচনা হয়। এ পর্যায়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী বলেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ১৫৪ ধারা অনুযায়ী যেকেউ মামলা দায়ের করতে পারেন। সেক্ষেত্রে বিজিবিও এর বাইরে নয়। আদালত বলেন, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ আইনের কোথাও বিজিবিকে মামলা দায়েরের ক্ষমতা দেওয়ার বিষয়টি দেখতে পাওয়া গেল না। শুনানি শেষে হাইকোর্ট মামলার কার্যক্রম স্থগিতের পাশাপাশি রুল জারি করেন।

  • বিজিবি সদস্যদের প্রতি কমান্ড মেনে চলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

    বিজিবি সদস্যদের প্রতি কমান্ড মেনে চলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

    কমান্ড মেনে চলতে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

    তিনি বলেন, শৃঙ্খলা এবং চেইন অব কমান্ড একটি বাহিনীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চালিকাশক্তি। তিনি বিজিবির প্রতিটি সদস্যকে চেইন অব কমান্ড এবং কর্তৃপক্ষের আদেশ মেনে চলার আহ্বান জানান।

    মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) সকালে পিলখানাস্থ সদর দপ্তরে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) দিবস ২০২২ উদযাপন অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৪ সালের ৫ ডিসেম্বর পিলখানায় এসে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘ঈমানের সাথে কাজ করো, সৎ পথে থেকো, দেশকে ভালবাস।’ তিনি সকল বিজিবি সদস্যকে বঙ্গবন্ধুর এই চিরন্তন দিক নির্দেশনা মেনে চলার আহ্বান জানান।

    সকালে কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করে বিজিবি সদস্যদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কখনো শৃঙ্খলার ব্যাঘাত ঘটাবেন না। অর্পিত দায়িত্ব পালন করবেন। কমান্ড মেনে চলবেন। এসময় প্রধানমন্ত্রী বিজিবির জন্য তার সরকারের নানা উদ্যোগের চিত্র তুলে ধরেন।

    সরকারপ্রধান বলেন, করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা বা সংকট দেখা দিয়েছে। আমাদের এখানে যেন মন্দা বা সংকট না আসে। সেজন্য প্রতিটি মানুষকে নিজ নিজ জায়গা থেকে কিছু না কিছু উৎপাদন করতে আহ্বান করেছিলাম। বিজিবি প্রতিটি বিওপিতে আমার নির্দেশনা মেনেছে, দেখে খুশি হয়েছি।

    প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতার ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ এবং ২১০০ সালের মধ্যে আমরা ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়ন করবো।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ বাহিনীকে যুগোপযোগী করে গড়ে তুলতে এর পুনর্গঠন ও আধুনিকায়নের কাজ শুরু করেন। তার পদাঙ্ক অনুসরণ করে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার ‘বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ আইন-২০১০’ প্রণয়নসহ বিজিবিকে একটি বিশ্বমানের আধুনিক, দক্ষ ও শক্তিশালী সীমান্তরক্ষী বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ‘বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ভিশন-২০৪১’ এর পরিকল্পনা গ্রহণ করে। এরই ধারাবাহিকতায় বাহিনী পুনর্বিন্যাস করে বিজিবির সাংগঠনিক কাঠামোতে ৫টি রিজিয়নসহ নতুন নতুন সেক্টর ও ইউনিট সৃজন করে কমান্ড স্তরে ভারসাম্য আনাসহ প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ করা হয়েছে।

    তিনি জানান, ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৯২২ জন নারী সৈনিকসহ সৈনিক ও অসামরিক পদে ৩৫ হাজারের অধিক জনবল নিয়োগ করা হয়েছে। আরও ১৫ হাজার জনবল নিয়োগের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এ বাহিনীর জনবল আগামী ২০৪১ সাল নাগাদ ৯০ থেকে ৯৫ হাজারে উন্নীত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।

    সরকারপ্রধান বলেন, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশকে একটি যুগোপযোগী ও আধুনিক সীমান্তরক্ষী বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে স্বতন্ত্র এয়ার উইং সৃজন করে এরই মধ্যে অত্যাধুনিক এমআই-১৭১-ই প্রযুক্তির হেলিকপ্টার সংযোজনের মাধ্যমে এ বাহিনীকে একটি ‘ত্রিমাত্রিক বাহিনী’ হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। বিজিবি এখন জল, স্থল ও আকাশ পথে দায়িত্ব পালনে সক্ষম। দেশের সীমান্ত এলাকায় নিশ্ছিদ্র নজরদারি ও আন্তঃরাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় ঝুঁকিপূর্ণ সীমান্তে ‘স্মার্ট ডিজিটাল সার্ভেইল্যান্স অ্যান্ড ট্যাকটিক্যাল বর্ডার রেসপন্স সিস্টেম’ স্থাপন করা হয়েছে।

    তিনি বলেন, বিজিবির সাংগঠনিক কাঠামোতে অত্যাধুনিক আর্মাড পার্সোনেল ক্যারিয়ার (এপিসি), রায়ট কন্ট্রোল ভেহিক্যাল, অল ট্যারেইন ভেহিক্যাল (এটিভি), আধুনিক ও যুগোপযোগী এন্টি ট্যাংক গাইডেড উইপন, উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বিভিন্ন সিরিজের হাইস্পিড বোট এবং এয়ার বোট সংযোজন করা হয়েছে। বিজিবিতে এসব অত্যাধুনিক ও যুগোপযোগী অস্ত্র ও সরঞ্জামাদি যুক্ত হওয়ায় এ বাহিনীর আভিযানিক সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি সৈনিকদের মনোবল ও কর্মোদ্দীপনা বহুগুণ বেড়েছে।

    তিনি বলেন, বর্তমান সরকার পার্বত্য সীমান্তের নিরাপত্তা বৃদ্ধি এবং দুর্গম পার্বত্য এলাকায় বসবাসকারী জনসাধারণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে সর্বমোট ১,০৩৬ কিলোমিটার সীমান্ত সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। প্রথম পর্বে ৩১৭ কিলোমিটার সীমান্ত সড়ক নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। এর ফলে সীমান্ত সুরক্ষার পাশাপাশি পার্বত্য অঞ্চলে স্থিতিশীলতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে বিজিবির আভিযানিক কর্মকাণ্ড সহজতর হবে।

    তিনি জানান, ভারত এবং মিয়ানমার সীমান্তে ৪টি ব্যাটালিয়ন এবং সুন্দরবন এলাকায় ২টি ভাসমান বিওপিসহ মোট ৬২টি বিওপি সৃজনের মাধ্যমে প্রায় সাড়ে ৫শত কিলোমিটার অরক্ষিত সীমান্তের মধ্যে অধিকাংশ সীমান্তই এরই মধ্যে নজরদারির আওতায় আনা হয়েছে। এছাড়াও সীমান্তে বিজিবির সক্ষমতা বৃদ্ধি, অপারেশনাল কার্যক্রমে গতিশীলতা আনয়ন এবং নজরদারি জোরদার করার জন্য বিওপির দায়িত্বপূর্ণ এলাকা কমানোর লক্ষ্যে ২৪২টি নতুন বিওপি সৃজন এবং সীমান্ত হতে অধিক দূরত্বে স্থাপিত ১২৬টি বিওপি সীমান্তের সন্নিকটে স্থানান্তর

    কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিজিবি সৈনিকদের জীবনমান উন্নয়নে বর্তমান সরকার বিভিন্ন ধরনের কল্যাণমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। বিজিবি সদস্যদের নতুন র‌্যাংক ব্যাজ প্রবর্তন, যোগ্যতার ভিত্তিতে পদোন্নতি, সীমান্ত ভাতা বৃদ্ধি, জুনিয়র কর্মকর্তা ও হাবিলদার পদবির সদস্যদের বেতন স্কেল উচ্চ ধাপে উন্নীতকরণ, অগ্রিম বেতনসহ বাৎসরিক ২ মাসের ছুটি প্রদান, পারিবারিক রেশন ও ৩ বছরের নীচে সন্তানদের পূর্ণস্কেল রেশন প্রদানসহ বিজিবি সদস্যের প্রতিবন্ধী সন্তানদের অবসরের পূর্ব পর্যন্ত নগদমূল্যে রেশন প্রদান এবং জ্বালানি, মসলা, চুলকাটা ও পোশাক ধোলাই ভাতাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পূর্বের তুলনায় বহুগুণ বৃদ্ধি করা হয়েছে।

    বিজিবি সদস্য ও তাদের পরিবারের উন্নত চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করার জন্য বর্ডার গার্ড হাসপাতাল, ঢাকায় ক্যাথ ল্যাব, সিসিইউ, আরটিপিসিআর ল্যাব, ডায়ালাইসিস মেশিন স্থাপনসহ আরও অত্যাধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জামাদি সংযোজন করে বিজিবি হাসপাতালসমূহকে ডিজিটালাইজেশনের আওতায় আনা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

    প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে কোনো পেশাদার বাহিনীর জন্য প্রশিক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একটি সুশৃঙ্খল ও দক্ষ বাহিনীর জন্য প্রশিক্ষণের কোন বিকল্প নেই। বিজিবি সদস্যদের উন্নত প্রশিক্ষণের জন্য সাতকানিয়ার ‘বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার এন্ড কলেজ’ এর পাশাপাশি চুয়াডাঙ্গায় অত্যাধুনিক প্রশিক্ষণ সুবিধা সম্বলিত আরও একটি প্রশিক্ষণ সেন্টার স্থাপনের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

    তিনি বিজিবির মনোমুগ্ধকর কুচকাওয়াজ বিশেষ করে নারী সৈনিকদের ড্রিল দেখে অত্যন্ত মুগ্ধ হন এবং বিজিবিতে বীরত্ব ও কৃতিত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ পদক প্রাপ্তদের অভিনন্দন জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা এ বাহিনীকে যুগোপযোগী করে গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন। বর্তমান সরকার এ বাহিনীকে আধুনিক ও যুগোপযোগী করে পুনর্গঠন করেছে। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে বর্তমান সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টা এবং সহযোগিতা সবসময়ই অব্যাহত থাকবে।

    জাতির পিতার প্রত্যাশিত আধুনিক সীমান্তরক্ষী বাহিনী হিসেবে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ তার অভীষ্ট লক্ষ্যে এগিয়ে যাবে এবং বাংলাদেশের মানুষের আস্থার প্রতীক হয়ে ‘সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী’ হিসেবে বিজিবি একদিন বিশ্বের শ্রেষ্ঠতম সীমান্তরক্ষী বাহিনী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে বলে তিনি প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।

    দিনরাত নিরবচ্ছিন্ন আভিযানিক কার্যক্রম এবং নজরদারির মাধ্যমে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা, সীমান্ত সুরক্ষা, চোরাচালান প্রতিরোধ, মাদক ও নারী-শিশু পাচার রোধের পাশাপাশি বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনে দায়িত্ব পালনসহ দেশের অভ্যন্তরীণ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা প্রদান, বাংলাদেশে আশ্রয় গ্রহণকারী বলপূর্বক বাস্তচ্যুত মায়ানমার নাগরিকদের ক্যাম্পের নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা রক্ষা এবং অবৈধ মায়ানমার নাগরিকদের বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ রোধে বিজিবির ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী সব বিজিবি সদস্যের প্রতি ধন্যবাদ জানান।

    ভবিষ্যতে এ সফলতা আরও বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিজিবি সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

    অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, বিজিবি প্রধানসহ মন্ত্রিপরিষদ সদস্যরা এবং সামরিক-অসামরিক পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

  • সীমান্তে সাম্প্রতিক ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ মিয়ানমার বিজিপির

    সীমান্তে সাম্প্রতিক ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ মিয়ানমার বিজিপির

    বাংলাদেশের অভ্যন্তরে গোলা এসে পড়া এবং আকাশ সীমা লংঘনসহ সম্প্রতি ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছে মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি)। আজ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি)-এর মধ্যে ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক পর্যায়ে পতাকা বৈঠকে দুঃখ প্রকাশ করে বিজিপি।

    সকাল ১০টায় শাহপরীরদ্বীপ বিওপি সংলগ্ন সাউদার্ন পয়েন্টে অধিনায়ক, টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি) এবং অধিনায়ক, নম্বর (১) বর্ডার গার্ড পুলিশ ব্রাঞ্চ, পিইন ফিউ, মায়ানমার-এর মধ্যে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে ৮ (আট) সদস্য বিশিষ্ট বিজিবি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে দেন টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি) এর অধিনায়ক লে. কর্ণেল শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার এবং বিজিপি’র ৭ (সাত) সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন পুলিশ লে. কর্ণেল ইয়ে ওয়াই শো, অধিনায়ক, নম্বর (১) বর্ডার গার্ড পুলিশ ব্রাঞ্চ, পিইন ফিউ।

    পতাকা বৈঠকে বাংলাদেশ-মায়ানমার এর সীমান্ত এলাকায় উদ্ভুত পরিস্থিতি ছাড়াও অবৈধভাবে মায়ানমার নাগরিকদের অনুপ্রবেশ ও মাদক পাচার রোধ সম্পর্কে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়।

    বন্ধুপ্রতীম দুটি রাষ্ট্রের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে পারস্পারিক যোগাযোগ, আস্থা এবং নির্ভরতার পরিবেশ তৈরির জন্য ভবিষ্যতে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের জন্য গুরুত্ব আরোপ করা হয়। এছাড়াও বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত এলাকা দিয়ে মিয়ানমার নিরাপত্তা বাহিনীর হেলিকপ্টার উড্ডয়ন, সীমান্ত এলাকায় ক্ষুদ্রাস্ত্র এবং ভারী অস্ত্রের ফায়ারিং, জানমালের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের প্রধান কর্তৃক তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়। সীমান্তে শান্তিপূর্ণ অবস্থান বজায় রাখা, মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের ফলে চলমান সংঘাতের জের ধরে ভবিষ্যতে যেন বাংলাদেশের অভ্যন্তরে কোন গোলা পতিত না হয় সে ব্যাপারে সজাগ দৃষ্টি রাখার বিষয়ে বিজিপিকে আহ্বান জানানো হয়।

    এছাড়াও প্রতিবেশী সীমান্তরক্ষী বাহিনী হিসেবে বিজিবি আশা করে যে, মায়ানমারের চলমান অভ্যন্তরীণ সংকট অতিশীঘ্রই সমাধান হবে এবং সীমান্তে চলমান উদ্ভূত পরিস্থিতি দ্রুত নিরসণ হবে।

    সীমান্ত ব্যবস্থাপনা এবং সীমান্তে স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য বিজিবি সবসময় বিজিপি’র নিকট দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের প্রত্যাশা করে। এ বিষয়ে বিজিপি ব্যাটালিয়ন কমান্ডার সম্প্রতি ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেন। পতাকা বৈঠকে সীমান্তবর্তী জনসাধারণের নিরাপত্তা এবং সীমান্তে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রেখে উভয় দেশের অধিনায়ক একসাথে কাজ করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

    পরিশেষে পারস্পরিক বিদায়ী শুভেচ্ছা জ্ঞাপনের মাধ্যমে অত্যন্ত শান্তি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে বাংলাদেশ সময় বেলা ২টা ৫০ মিনিট পতাকা বৈঠকের পরিসমাপ্তি ঘটে এবং বিজিপি প্রতিনিধিদল বেলা তিনটায় মায়ানমারের উদ্দেশ্যে প্রত্যাবর্তন করে।
    ২৪ঘণ্টা/এনআর

  • রোববার বিজিবি-বিজিপি পতাকা বৈঠক

    রোববার বিজিবি-বিজিপি পতাকা বৈঠক

    সীমান্তে চলমান উত্তেজনা নিরসনে বাংলাদেশের সঙ্গে বৈঠকে বসতে যাচ্ছে মিয়ানমার। রোববার (৩০ অক্টোবর) সকাল ১০টায় কক্সবাজারের টেকনাফে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ’র (বিজিবি) সঙ্গে মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশ’র (বিজিপি) ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

    শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) বিজিবির টেকনাফ ২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার পর এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

    তিনি বলেন, গত কয়েকমাস ধরে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান গোলাগুলিকে কেন্দ্র করে সীমান্তে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এতে বাংলাদেশ সীমান্তের বাসিন্দারা আতঙ্কে রয়েছেন। সীমান্তের এ পরিস্থিতি নিয়ে শুরু থেকে দু’দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে নানা পর্যায়ে যোগাযোগ চলছিল। একাধিকবার বিজিপির কাছে চিঠি পাঠানোও হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি বৈঠকে বসতে রাজি হয়েছে। তবে কি কি বিষয়ে আলোচনা হবে এবং দু’দেশের কতজন করে সদস্য অংশ নেবেন তা বিস্তারিত জানাননি বিজিবির এ কর্মকর্তা।

    প্রসঙ্গত, সীমান্তে উত্তেজনার রেশ শুরু হয় চলতি বছরের আগস্টে। প্রথমে নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্তে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে শুরু হয় ব্যাপক গোলাগুলি ও মর্টার শেল বিস্ফোরণ। এর মধ্যে ২৮ আগস্ট মিয়ানমারে ছোড়া দুটি মর্টার শেল এসে পড়ে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে। তবে বিস্ফোরিত না হওয়ায় কেউ হতাহত হয়নি। এরপর ৩ সেপ্টেম্বর, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর যুদ্ধ বিমান থেকে ছোঁড়া আরও দুটি মর্টার বাংলাদেশের অভ্যন্তরে এসে পড়ে। একইদিন বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেঁষে উড়ে যায় মিয়ানমারের যুদ্ধ বিমান ও ফাইটিং হেলিকপ্টার। যার কারণে সীমান্তের বাসিন্দাদের মধ্যে বাড়ে আতঙ্ক। এরপর আরও কয়েকবার সীমান্তে গোলাগুলির ঘটনা ঘটিয়েছে মিয়ানমারের বিজিপি।

    সবশেষ গত ২৩ অক্টোবর নাইক্ষ্যংছড়ির চাকঢালা সীমান্তে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে নতুন করে শুরু হয় ব্যাপক গোলাগুলি ও গোলা বর্ষণ। যা দু’দিন থেমে থেমে অব্যাহত থাকে। তবে এরপর থেকে আর শোনা যায়নি গোলাগুলির শব্দ। এই উত্তেজনা কয়েকদিন বন্ধ থাকার পর এবার মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে চলমান সংঘাতের প্রেক্ষিতে অবশেষে ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠকে সম্মত হয় দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি।

  • কাসালং সীমান্তে বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে ‘বিএসএফ’র মৈত্রী সাইকেল র‌্যালীতে বিজিবি’র অংশগ্রহণ

    কাসালং সীমান্তে বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে ‘বিএসএফ’র মৈত্রী সাইকেল র‌্যালীতে বিজিবি’র অংশগ্রহণ

    খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি : রাঙামাটি জেলার কাসালং বিওপি’র সীমান্ত পিলার (২৩০০ মেইন পিলার)- এর কাছে ভারত-বাংলাদেশ শূন্য লাইনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু’র জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার ভারতীয় ‘বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ)’-এর উদ্যোগে মৈত্রী সাইকেল র‌্যালী অনুষ্ঠিত হয়েছে।

    শনিবার সকাল সাড়ে দশটা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত মৈত্রী সাইকেল র‌্যালীতে ‘বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)’র পক্ষে ৫৪ বিজিবি’র অধিনায়ক লে: কর্ণেল মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম পিএসসি, জি এবং বিএসএফ’র পক্ষে আইজল (মিজোরাম) সেক্টরের অধিনায়ক ডিআইজি শ্রী রাজীব, ডেপুটি ডিআইজি সি. পি. মিনা, ১৪৫ বিএসএফ ব্যাটালিয়ন’র কমান্ড্যান্ট শ্রী আর. পি. উদিত এবং ৯০ বিএসএফ ব্যাটালিয়ন’র উপ-অধিনায়ক শ্রী নিলন অংশগ্রহণ করেন।

    মৈত্রী সাইকেল র‌্যালীর সমাপনী অনুষ্ঠানে ৫৪ বিজিবি ব্যাটালিয়ন’র অধিনায়ক লে: কর্ণেল মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম পিএসসি, জি পুরস্কার বিতরণ করেন।

    অনুষ্ঠানে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা শেষে ‘বিজিবি’ ও ‘বিএসএফ’ কর্মকর্তারা উভয় দেশের সীমান্ত সম্প্রীতি সুরক্ষায় এ ধরনের কর্মতৎপরতা অব্যাহত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

    ২৪ ঘণ্টা/প্রদীপ চৌধুরী

  • সার্বভৌমত্ব ও সীমান্ত সুরক্ষায় সরকার বিজিবিকে আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন করে গড়ে তুলবে : প্রধানমন্ত্রী

    সার্বভৌমত্ব ও সীমান্ত সুরক্ষায় সরকার বিজিবিকে আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন করে গড়ে তুলবে : প্রধানমন্ত্রী

    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তাঁর সরকার স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্ব সুরক্ষার পাশাপাশি সীমান্তে চোরাচালান এবং নারী-শিশু পাচার বন্ধে বিজিবিকে যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন করে গড়ে তুলবে।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ আমরা একটা আধুনিক যুগে প্রবেশ করেছি। ডিজিটাল বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলেছি। কাজেই, আমাদের বর্ডার গার্ড সেভাবে আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন হবে।’

    তিনি বলেন, তারা আমাদের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্বের সুরক্ষার পাশাপাশি চোরাচালান, নারী ও শিশু পাচারসহ সীমান্তে যেসব অপকর্ম হয় সেগুলো বন্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে। সে দিকে লক্ষ্য রেখেই আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের দিকে আমরা বিশেষভাবে নজর দিয়েছি।

    প্রধানমন্ত্রী আজ সকালে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এর ৯৫তম ব্যাচ রিক্রুট মৌলিক প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন।

    তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার এন্ড কলেজ, সাতকানিয়া, চট্টগ্রামের মূল অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যোগ দেন।

    শেখ হাসিনা বিজিবি’র ৯৫তম রিক্রুট ব্যাচের সকল সদস্যকে সফলভাবে তাদের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করায় অভিনন্দন জানিয়ে শৃঙ্খলা এবং চেইন অব কমান্ড বজায় রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

    তিনি বলেন, ‘সব সময় মনে রাখতে হবে যে কোন সুশৃঙ্খল বাহিনীর জন্য সব চেয়ে বেশি প্রয়োজন শৃঙ্খলা। কাজেই, সেদিকে লক্ষ্য রেখে সবাইকে চলতে হবে। বাংলাদেশ যে আদর্শ নিয়ে স্বাধীন হয়েছে। সে আদর্শ নিয়েই চলতে হবে এবং উর্ধ্বতন কতৃর্পক্ষের আদেশ মেনে কর্তব্য পালনে নির্ভীক থাকতে হবে। আর অধঃস্তনদের প্রতিও সহমর্মিতার মানসিকতা নিয়ে কাজ করতে হবে।’

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশটাকে ভবিষ্যতে যেন আমরা আরো উন্নত করতে পারি সেদিকে লক্ষ্য রেখেই সকলে কাজ করবেন। সেটাই আমি চাই।’

    তিনি বিজিবি’র চার মূলনীতি-‘মনোবল, ভ্রাতৃত্ববোধ, শৃঙ্খলা ও দক্ষতায়’ উদ্বুদ্ধ হয়ে সততা এবং নিষ্ঠার সঙ্গে সকলকে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান।

    বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, এই দেশটা আমাদের, আপনাদের, আমাদের সকলের। এই দেশ উন্নত হলে আপনার বাবা-মা-ভাই-বোন এবং ভবিষ্যত বংশধরেরা সুন্দরভাবে বাঁচতে পারবে। সেই কথাটা সব সময় আপনাদের মনে রাখতে হবে।

    স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তৃতা করেন।

    বিজিবি’র মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাফিনুল ইসলাম বিজিবি ট্রেনিং সেন্টার থেকে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন।

    প্রধানমন্ত্রীকে অনুষ্ঠান থেকে রাষ্ট্রীয় সালাম জানানো হয়। তিনি নবীন সদস্যদের মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজও উপভোগ করেন।

    প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৭৪ সালের ৫ ডিসেম্বর এই বাহিনীর ৩য় রিক্রুট ব্যাচের সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে দেয়া ভাষণের উল্লেখযোগ্য অংশ উদ্ধৃত করেন।

    জাতির পিতা বলেছিলেন, ‘আজ আপনাদের কাছে আমি অনেক বড় কর্তব্য দিয়েছি, অনেক বড় কাজ দিয়েছি। এ কাজ হলো চোরাচালান বন্ধ করা। তোমাদের কাছে আমার হুকুম, স্মাগলিং বন্ধ করতে হবে। আমি বিশ্বাস করি, তোমরা পারবা। এ বিশ্বাস তোমাদের উপর আমার আছে। আশা করি, তোমরা স্মরণ রাখবা। মনে রাখতে হবে, স্মাগলারের কোন যাত নাই, ধর্ম নাই, তারা মানুষ নামের নর পশু। তারা এদেশের সম্পদকে বিদেশে চালান দেয় সামান্য অর্থের লোভে।’

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই বক্তব্যে জাতির পিতার যে নির্দেশনা রয়েছে, আমি আশা করি, আপনারা তা মেনে চলবেন। আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের পাশাপাশি এই অপকর্মগুলো রোধ করতে আপনারা আন্তরিক ভাবে কাজ করবেন। কারণ, এই কথাগুলো এখনও প্রাসঙ্গিক।’

    শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশ ও জাতির প্রতি সেবার মনোভাব নিয়ে নিজেদের দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করতে হবে। দেশকে ভালবাসতে হবে, মানুষকে ভালবাসতে হবে, দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে হবে এবং মনে রাখতে হবে এই দেশ অর্থনৈতিকভাবে যত উন্নত হবে আপনাদের পরিবারগুলোও উন্নত হবে।’

    শেখ হাসিনা করোনার সেকেন্ড ওয়েভ সম্পর্কে দেশবাসীকে পুণরায় সতর্ক করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এবং মাস্ক ব্যবহারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

    শেখ হাসিনা করোনা প্রসঙ্গে বলেন, ‘দারিদ্র্যের হার আমরা ৪০ ভাগ থেকে ২০ দশমিক ৫ ভাগে নামিয়ে এনেছিলাম এবং লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিলাম আরো ২/৩ ভাগ কমিয়ে আনার। কিন্তু করোনার কারণে সেটা কিছুটা হয়তো থেমে গেছে। যদিও আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। যে যেখানে আছেন (সরকারি কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং চিকিৎসা কার্যে নিয়োজিত) তারা হয়তো অসুস্থ হচ্ছেন তারপরেও দেশের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।’

    তিনি এজন্য সকলকে ধন্যবাদ জানান এবং করোনাকালীন জনগণের কষ্ট লাঘবে বিভিন্ন শ্রেনী পেশা এবং আম জনতার জন্য তাঁর সরকার প্রদত্ত বিভিন্ন প্রণোদনার উল্লেখ করেন।

    তিনি বলেন, ‘আমরা সকলকেই সহযোগিতা করছি যাতে সকলে নিজ নিজ অবস্থানে সুরক্ষিত থাকতে পারেন এবং দেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখতে পারেন।’

    ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি এই মুজিবর্ষে একটি মানুষও আর গৃহহারা থাকবে না। আর ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন কালে দেশের প্রত্যেকটি ঘরে বিদ্যুতের আলো জ¦লবে,’ বলেন প্রধানমন্ত্রী।

    শীতের প্রকোপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ইউরোপ-আমেরিকাসহ বিশে^র বিভিন্ন দেশে ব্যাপকভাবে আবারো করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে, উল্লেখ করে তিনি বিজিবি সদস্যদের করোনাভাইরাস যেন ক্ষতি করতে না পারে সেজন্য সচেতন থাকার আহ্বান জানান।

    তিনি বলেন, ‘নিজে সুরক্ষিত থাকার পাশাপাশি পরিবারের সদস্য এবং বন্ধু-বান্ধবদের সুরক্ষিত রাখার উদ্যোগ নেবেন।’

    ‘করোনার সেকেন্ড ওয়েভ মোকাবেলায় যা যা করণীয় তার সবই সরকার করছে’, উল্লেখ করে তিনি ভ্যাকসিন সংগ্রহেও তাঁর সরকারের পদক্ষেপ তুলে ধরেন।

    তিনি বলেন, ‘ভ্যাকসিন ক্রয়ের জন্য আমরা টাকার বরাদ্দ দিয়ে ইতোমধ্যেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছি।’

    শেখ হাসিনা তাঁর সরকারের সময়ে বিজিবি’র উন্নয়নের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।

    তিনি বলেন, ’৭৫ এ জাতির পিতাকে হত্যার ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানকে আধুনিক ও শক্তিশালী করে গড়ে তোলার কাজ শুরু করে। আমাদের আশু, মধ্যমেয়াদি এবং দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নের জন্য প্রেক্ষিত পরিকল্পনা প্রণয়ন করে আমরা বাংলাদেশকে যেমন গড়ে তুলছি তেমনি বিজিবিকেও ভবিষ্যতে আরো শক্তিশালী করে গড়ে তোলার পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি।’

    জাতির পিতা ভারতের সঙ্গে সীমান্ত চুক্তি করে গেলেও ’৭৫ পরবর্তী সরকারগুলো-জিয়া, এরশাদ এবং খালেদা জিয়ার কেউই ভারতের সঙ্গে এই চুক্তির বাস্তবায়ন ঘটিয়ে বর্ডার গার্ডের সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণ করেনি, মর্মে অভিযোগ উত্থাপন করেন সরকার প্রধান।

    আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পরই কেবল দীর্ঘদিনের অমীমাংসিত সীমান্ত সমস্যার সমাধান করা হয় বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

    পাশাপাশি, সীমান্তের উন্মুক্ত এলাকাগুলোতে নতুন নতুন বর্ডার পোস্ট তাঁর সরকার নির্মাণ করছে, বলেন প্রধানমন্ত্রী।

    শেখ হাসিনা বলেন, বিজিবিকে আরো শক্তিশালী করা এবং সীমান্তের প্রতিটি জায়গায় যেন তাদের অবস্থান নিশ্চিত হয় সেব্যবস্থা নেয়ার সঙ্গে সঙ্গে ‘বর্ডার গার্ড ভিশন-২০৪১’ প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কারণ, তাঁর সরকার এখন বিজেবিকে একটি ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলেছে।

    তিনি বলেন, ‘বাহিনীতে হেলিকপ্টারের সঙ্গে নদী মাতৃক এই দেশের সীমান্ত প্রহরায় নৌযান সংযুক্তির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ফলে, জলে, স্থলে এবং আকাশ পথে-সর্বত্রই বিজিবি’র এখন বিচরণ রয়েছে। ১৫ হাজার জনবলের ধাপে ধাপে অন্তর্ভূক্তি এবং প্রশিক্ষণের উদ্যোগ ও নেয়া হয়েছে।’

    তাঁর সরকারই বিজিবিতে প্রথম নারী সদস্য অন্তর্ভূক্ত করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘নারী সদস্য আমরা নিতে শুরু করেছি। পাশাপাশি, আধুনিক সরঞ্জামাদি যা যা প্রয়োজন তার জন্য আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি।’

    তিনি বলেন, স্মার্ট বর্ডার ম্যানেজমেন্টের অংশ হিসেবে সীমান্তে নতুন বিওপি, বিএসপি নির্মাণসহ অত্যাধুনিক সার্ভেইলেন্স ইকুইপমেন্ট স্থাপন, এটিভি ও অত্যাধুনিক এপিসি, ভেহিক্যাল স্ক্যানার ও দ্রুতগামী জলযান সংযোজন করার মাধ্যমে বিজিবি’র উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। পাশাপাশি, বিজিবি সদস্য ও পরিবারবর্গের চিকিৎসা সেবায় বিজিবি’র ৫টি হাসপাতালকে আরও উন্নত করা হয়েছে। বিজিবি হাসপাতাল, ঢাকায় একটি অত্যাধুনিক ক্যাথ ল্যাব ও করোনারী কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ) স্থাপন করা হয়েছে।

    প্রধানমন্ত্রী ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে জাতির পিতার স্বাধীনতার ঘোষণা দেশব্যাপী প্রচারে অংশ নেয়ার কারণে চরম নির্যাতনে তৎকালীন ইপিআর সদস্যসহ মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বিজিবি সদস্যদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন।

    তিনি বলেন, ‘এ বাহিনীর প্রায় ১২ হাজার সদস্য মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছেন। ৮১৭ জন সদস্য মহান মুক্তিযুদ্ধে শহিদ হন। তাদের আত্মত্যাগ শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি।’

    করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের মধ্যেও বিজিবি’র নবীন সদস্যরা তাদের প্রশিক্ষণ সমাপ্ত করতে পারায় প্রধানমন্ত্রী এজন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান।