চলতি বছরের ডিসেম্বরে চালু হতে যাওয়া কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু ট্যানেলে স্থাপন করা হবে সেন্সরভিত্তিক মনিটরিং ব্যবস্থা। পরিচালনা, পর্যবেক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য একটি সম্পূর্ণ সেন্সর-ভিত্তিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা-ভিত্তিক স্বাস্থ্য মনিটরিং সিস্টেম (এইচএমএস) স্থাপন করা হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এইচএমএস বিশ্বের মেগা-কাঠামো সুরক্ষিত ও পরিচালনার জন্য সর্বাধুনিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি। দেশে প্রথমবারের মতো এমন একটি সিস্টেম ইনস্টল করা হচ্ছে যাতে টানেলের অদেখা এবং লুকানো অংশগুলি পর্যবেক্ষণ করা যায় সেন্সর মাধ্যমে।
সূত্র জানায় এ ধরনের কাঠামোগত পর্যবেক্ষণ সুড়ঙ্গের স্বাস্থ্যের অবস্থার দ্রæত মূল্যায়নের অনুমতি দেয় এবং এ ধরনের পদ্ধতি নিরাপত্তা বৃদ্ধি এবং ট্যানেলের অপারেশনাল ও রক্ষণাবেক্ষণ কার্যক্রম অপ্টিমাইজ করার জন্য একটি উপযুক্ত উপায় হিসাবে স্বীকৃত হচ্ছে।
মনিটরিং প্রোগ্রাম থেকে প্রাপ্ত ডাটা উদ্দেশ্যমূলক ফলাফলের ভিত্তিতে কাঠামোর অপারেশন, রক্ষণাবেক্ষণ, মেরামত এবং প্রতিস্থাপনের উন্নতি করতে ব্যবহৃত হয়।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের সুপারিনটেন্ড ইঞ্জিনিয়ার আবুল হোসেন বলেন, ট্যানেলের নিরাপত্তা ও সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তার মধ্যে একটি হলো সেন্সরভিত্তিক প্রযুক্তি যার নাম হেলথ মনিটরিং সিস্টেম।
এ ব্যবস্থায় একটি মানবদেহকে যেভাবে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়, ঠিক সেভাবে পুরো ট্যানেলটিকে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখা হবে।
টানেলের অপারেশনের দায়িত্বে থাকা চায়না কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন কোম্পানি (সিসিসিসি) এই সিস্টেমটি ইনস্টল করবে।
এতে ট্যানেলের প্রতিটি অংশে সেন্সর স্থাপন করা হবে যার মাধ্যমে পুরো টানেলের সামগ্রিক অবস্থা, বিশেষ করে তাপমাত্রা, আলো, কম্পন, ফাটল ইত্যাদি এক কক্ষ থেকে পর্যবেক্ষণ ও নির্ণয় করা যায়।
তিনি বলেন, চীনা রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানি (সিসিসিসি) এই ট্যানেলটি নির্মাণ করেছে এবং সরকার স¤প্রতি এই ট্যানেলের ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণের পাশাপাশি আগামী পাঁচ বছর টোল আদায়ের জন্য চীনা ফার্ম নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বঙ্গবন্ধু ট্যানেলের নিরাপত্তা, রক্ষণাবেক্ষণ ও সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ট্যানেলের প্রবেশ পথে চারটি স্ক্যানার বসানো হবে এবং জ্বালানি তেলসহ দাহ্য পদার্থ পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের পরিকল্পনা পরিচালক ড. মো. মনিরুজ্জামান।
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের জন্য কন্ট্রোল রুমটি ট্যানেলের আনোয়ারা অংশে অবস্থিত হবে, যার জন্য ভবন নির্মাণের কাজ আগে সম্পন্ন হয়েছে।
এই ট্যানেলে অন্তত ৪০০ জন লোকের কর্মসংস্থান হবে। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ হবে নিরাপত্তাকর্মীরা। বাংলাদেশ নৌবাহিনীও নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে যার জন্য সেতু কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে একটি টাগবোট দিয়েছে।
ইতোমধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে বঙ্গবন্ধু টানেলের। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত দেশের প্রথম বঙ্গবন্ধু ট্যানেল।
জে-আর
Leave a Reply