আবু সুফিয়ানকে ভোট দিয়ে খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনকে বেগবান করুন:শাহাদাত

আসন্ন চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপ-নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী আবু সুফিয়ান বলেছেন, নির্বাচনের মাঠে ধানের শীষের জোয়ার দেখে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এবং সমর্থকদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। তারা বুঝে গেছেন, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে পাঁচ শতাংশ মানুষের সমর্থনও পাবেন না। সেজন্য বিএনপির ত্যাগী ও পরীক্ষীত নেতাদের টার্গেট করে হয়রানির নীলনকশা এঁকেছেন। দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মোস্তাক আহমদ খান ও বোয়ালখালীর পৌর মেয়র আবুল কালাম আবুর মত পরিচছন্ন দু’জন নেতার বিরুদ্ধে নৌকা পুড়িয়ে দেবার অভিযোগ হাস্যকর। অথচ আওয়ামীলীগ প্রার্থীর সমর্থকরা প্রতিদিন আচরণ বিধি লঙ্গন করে চলেছেন।
তিনি বলেন, নির্বাচনের মাঠে নেমে হালে পানি পাচ্ছেন না আওয়ামী লীগের প্রার্থী। সস্তা সহানুভূতি পেতে বিএনপি নেতাদের নামে মিথ্যা অভিযোগ করে খড়কুটো আঁকড়ে ধরে থাকার কৌশল নিয়েছেন তিনি। কিন্তু বোয়ালখালী-চান্দগাঁও আসনের জনগণ তাদের ভাওতাবাজি বুঝে গেছে। তারা জানে, বিএনপি নেতাদের নৌকা পুড়িয়ে দেবার দরকার নেই, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে জনগণ নৌকা নিয়ে পানিতে ডুবিয়ে দেবে।
তিনি আজ ৫ জানুয়ারী রবিবার চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপনির্বাচনে ধানের শীষের পক্ষে মোহরা ওয়ার্ডের হামিদচর শাহজীর মাজার জেয়ারত করে গণসংযোগ শুরু করে বিসিক শিল্প এলাকা, চররাঙ্গামাটিয়া, কামালবাজার, মৌলভী বাজার, ওয়াসা রোড, উত্তর মোহরা, পূর্ব মোহরা হয়ে কালনের দোকান এলাকায় এক পথসভায় এ কথা বলেন।
এ সময় তিনি সমবেত জনতার উদ্দেশ্যে আবু সুফিয়ান আরও বলেন, এই নির্বাচনে বোয়ালখালী-চান্দগাঁওয়ের জনগণ ক্ষমতাসীন দলের কাছ থেকে অনেক জবাব খুঁজছে। ১১ বছরে কেন কালুরঘাট সেতু হল না জনগণ জানতে চায়। বোয়ালখালীর রাস্তাঘাট দেখলে মনে হয় যেন যুদ্ধবিধ্বস্ত জনপদ। অথচ এটাই শহরের উপকন্ঠ। এই অবহেলার জবাব দেওয়ার জন্য জনগণ অপেক্ষা করছে।
তিনি বলেন, বিএনপি শান্তিপ্রিয় গণতান্ত্রিক দল। বিএনপি কারও গণতান্ত্রিক অধিকারে কখনও হস্তক্ষেপ করে না। নির্বাচনের মাঠে আওয়ামী লীগ যে সুবিধা পাচ্ছে, সমান সুবিধা চায় বিএনপিও। কিন্তু নির্বাচন কমিশনকে বারবার অভিযোগ দিলেও তারা সঠিক কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। এজন্য বিএনপিসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। তবে নির্বাচনে কারচুপির চেষ্টা হলে জনগণ সমুচিৎ জবাব দেবে।
পথ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, মানুষের মাঝে এখনও শঙ্কা আছে আদৌ তারা ভোটকেন্দ্রে যেতে পারবেন কি-না। গত নির্বাচনে ভোটাররা ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেননি। মানুষকে তার গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছিল। তাই এবার পছন্দের প্রার্থীকে বিজয়ী করার প্রতীক্ষায় আছেন ভোটাররা। নির্বাচনী এলাকায় যাচ্ছি, ভোটারদের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। সুষ্ঠু ভোট হলে বিপুল ভোটের ব্যবধানে ধানের শীষ জিতবে।
আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে সরকারের দায়িত্বশীল লোকজন নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ করছেন বলে অভিযোগ তুলে ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হওয়ার পর থেকে আওয়ামী লীগ সমর্থিতরা দুইবার হামলা করেছে। এছাড়া ভয়-ভীতি, হুমকি-ধমকি এবং পোস্টার-ব্যানার ছিঁড়ে ফেলার মতো ঘটনাও ঘটেছে। এসব বিষয়ে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দেয়ার পরও তারা কার্যকর কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। তিনি ধানের শীষের প্রার্থী আবু সুফিয়ানকে ভোট দিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনকে বেগবান করার আহবান জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর বলেন, এটি উপ-নির্বাচন, এই নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হবে না। কিন্তু আমরা নির্বাচনে যাচ্ছি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে সম্মান রেখে। আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দু’বছর ধরে জেলখানায়। তাকে মুক্তির আন্দোলনের জন্যও এই নির্বাচনে যাওয়া।
বাজার সরকারের নিয়ন্ত্রণে নেই উল্লেখ করে আবুল হাশেম বক্কর বলেন, দ্রব্যমূল্যের দাম হুহু করে বাড়ছে। মানুষের আয়ের চেয়ে ব্যয় বেড়েছে। সমাজে দুর্নীতি সব জায়গায় ছড়িয়ে গেছে। এসবের কারণে মানুষ সরকারের বিরুদ্ধে চলে গেছে। সুষ্ঠু ভোট হলে আওয়ামী লীগের ভরাডুবি হবে।
গণসংযোগকালে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সহসভাপতি হাজী মোহাম্মদ আলী, নাজিম উদ্দিন আহমেদ, ইকবাল চৌধুরী, যুগ্ম সম্পাদক কাজী বেলাল উদ্দিন, শাহ আলম, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, আনোয়ার হোসেন লিপু, গাজী মোহাম্মদ সিরাজ উল্লাহ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক হামিদ হোসেন, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক মাঈন উদ্দিন মো. শহীদ, চান্দগাঁও থানা বিএনপির সভাপতি কাউন্সিলর মো. আজম, মহানগর বিএনপির সহ সম্পাদক এ কে এম পেয়ারু, মোঃ ইদ্রিস আলী, আলমগীর নূর, নগর বিএনপির সদস্য ইউসুফ সিকদার, জাকির হোসেন শাহেদা বেগম, আফরোজা বেগম জলি, মোহরা ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি জানে আলম জিকু, সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ খান, বিএনপি নেতা দিদারুল আলম হিরামন, নুরুল আলম লিটন, শহিদুল আলম বাদশা, মো. ইব্রাহিম, অংঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ম. হামিদ, শহিদুল আলম শহীদ, জসিম উদ্দিন চৌধুরী, জিয়াউর রহমান জিয়া, জমির উদ্দিন মানিক, এস এম ফারুক, আকতার হোসেন, মো. জাবেদ, জয়নাল আবেদীন, আবদুল আজিজ, মনসুর আলম, শহিদুল আলম ছোটন, মো. সরওয়ার, ছাবের আহমদ প্রমূখ।
আপনার মতামত লিখুন