খুঁজুন
বুধবার, ১২ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৭শে ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পর্যটনবান্ধব একজন জেলা প্রশাসকের গল্প

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: রবিবার, ৯ জুলাই, ২০২৩, ১০:৫০ অপরাহ্ণ
পর্যটনবান্ধব একজন জেলা প্রশাসকের গল্প

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসের ৭ তারিখ চট্টগ্রামে যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকেই চট্টগ্রামের মানুষ তার বিভিন্ন সৃজনশীল কর্মকান্ডের স্বাক্ষী হয়েছেন। তিনি চট্টগ্রামের মানুষের সুস্থ বিনোদনের সুযোগ সৃষ্টির জন্য এমন কিছু উদ্যোগ নিয়েছেন যা সকল বিবেচনায় অনন্য।

অসামাজিক কার্যকলাপ ও মাদকের স্বর্গরাজ্য থেকে ১৯৯ একর সম্পত্তি উদ্ধার করে সেখানে দৃষ্টিনন্দন পার্ক তৈরী করেছেন। এলাকার জনসাধারন এবং সংবাদমাধ্যমের লোকজন ভালোবেসে সে পার্কের নাম দিয়েছে ডিসি পার্ক। জেলা প্রশাসন পার্কটিতে এরই মধ্যে চট্টগ্রামে প্রথমবারের মতো বাহারি রঙবেরঙের দেশি-বিদেশি ফুল নিয়ে ১০ দিন ব্যাপী ফুল উৎসব করা হয়েছে। বিটিআরসির তথ্য মতে, ১০ দিন ব্যাপী ঐ ফুল উৎসবে প্রতিদিন গড়ে ৬০ হাজার দর্শনার্থীর ঢল নেমেছিলো।

পর্যটকদের জন্য নিউমার্কেট থেকে পতেঙা সমুদ্র সৈকত পর্যন্ত পর্যটক বাস এবং সর্বশেষ সংযোজন ফুল ডে ট্যুর সার্ভিস। চট্টগ্রামে যোগদান করে তিনি চট্টগ্রামের মানুষের বিনোদনের সুযোগের অভাবের বিষয়টি অনুধাবন করে নানামুখী উদ্যোগ গ্রহন করেছেন।চট্টগ্রামসহ সারা দেশের মানুষের পর্যটনের অন্যতম আকর্ষনীয় স্পট হলো পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত। এ সৈকতের সৌন্দর্য উপভোগের জন্য চট্টগ্রাম শহর থেকে পতেঙা সমুদ্র সৈকত পর্যন্ত সরাসরি কোন বাস সার্ভিস ছিল না। অধিকাংশ পর্যটক সিএনজি/অটোরিকশা ভাড়া করে যেতেন। এতে করে সমুদ্র সৈকতগামী পর্যটকদের ভোগান্তির পাশাপাশি অনেক ভাড়া গুণতে হতো।

জেলা প্রশাসক ফখরুজ্জামান চট্টগ্রামের পর্যটনপ্রেমী মানুষের ভোগান্তির কথা বিবেচনায় নিয়ে সরকারের উচ্চ পর্য়ায়ে নিবিড় যোগাযোগ করে অল্প কিছুদিনের মধ্যেই বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশনের সহায়তায় পতেঙ্গাগামী পর্যটকদের জন্য জন্য দুইটি ডাবল ডেকার বাসের ব্যবস্থা করেন। বাস দুইটি গত ১০ জুন থেকে টাইগার পাস-ডিসি পার্ক (ফৌজদারহাট)- পতেঙ্গারুটে চলাচল শুরু করে। ডাবল ডেকার বাস দুটির মধ্যে একটি ছাদখোলা, যেখানে বসে কিংবা দাড়িয়ে পর্যকটরা পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতগামী পর্যটকগণ বায়েজিদ লিংক রোড়ের দুই পাশের নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক দৃশ্য ও ফৌজদারহাট মেরিন ড্রাইভের মনমাতানো সমুদ্রের দৃশ্য উপভোগ করতে করতে সৈকতে পৌছতে পারেন। বাস দুটির ২ টি ট্রিপ রবিবার থেকে বৃহস্পতিবার পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতের উদ্দেশ্যে নিউমার্কেট ছেড়ে যায় এবং ২ টি ট্রিপ আবার নিউমার্কেট ফিরে আসে। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে ট্রিপের সংখ্যা অন্যান্য দিনের তুলনায় বেশি থাকে। শুক্রবার মোট ৩ টি ট্রিপ নিউমার্কেট ছেড়ে যায় এবং আবার ৩টি ট্রিপ ফিরে আসে। শনিবার সকাল ও বিকেল মিলিয়ে মোট ৪ টি ট্রিপ শহর ছেড়ে যায় এবং ৪ টি ট্রিপ ফেরত আসে।পর্যটন বাসে সকল আয়ের মানুষের সামর্থ্য বিবেচনা করে বিআরটিসি নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে ও কম ভাড়া রাখা হয়েছে। টাইগার পাস হতে ডিসি পার্ক পর্যন্ত ৪০ টাকা, ডিসি পার্ক হতে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত পর্যন্ত ৩০ টাকা, টাইগার পাস হতে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত পর্যন্ত ৭০ টাকা ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে।

পর্যটক বাস চালু হওয়ার অল্প কিছুদিনের মধ্যেই চট্টগ্রামের মানুষের মধ্যে এটি ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। ছাদখোলা ডাবল ডেকার বাসের ধারণক্ষমতা ৫৫ জন এবং অপর বাসটির ধারণক্ষমতা ৭৪ জন হিসাবে প্রতিদিন ২৫৮ জন যাত্রী চলাচল করতে পারে। বাস দুইটি চালু হওয়ার কয়েকদিন পর থেকে প্রায় প্রতিদিন ধারণক্ষমতার বেশি সংখ্যক যাত্রী চলাচল শুরু করে। বিশেষ করে ছুটির দিনগুলোতে যাত্রীদের চাপ অনেক বেড়ে যায়। যাত্রীদের বাড়তি চাপ সামাল দেওয়ার জন্য সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে বিকালে আরো দুইটি করে বাস বাড়ানো হয়। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে বিকালে যাত্রী সংখ্যা ধারণক্ষমতার বেশি থাকলেও সকালে যাত্রীর সংখ্যা তুলনামূলক অনেক কম থাকে। সকালে যাত্রী কম থাকলেও পর্যটকদের সুবিধা বিবেচনা করে সকালের বাস সার্ভিসও চালু রাখা হয়েছে। উদ্বোধনের পর থেকে ০৮ জুলাই পর্যন্ত ২৭ দিনে মোট ৭৩৯৫ জন পর্যটক বাস দুইটি ব্যবহার করে চলাচল করেছে অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে ২৭৪ জন পর্যটক চলাচল করেছে। পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে পর্যটক বৃদ্ধি এবং তাদের সুবিধার বিষয় বিবেচনা করে ঈদের পরের ২ দিনের জন্য নিউমার্কেট রুটের পাশাপাশি চকবাজার ও বহদ্দারহাট রুটে ২ টি করে ৪ টি বাস সংযোজন করা হয়। পর্যটক বাসের চাহিদা বাড়ায় আগামী কিছু দিনের মধ্যে আরো কয়েকটি বাস সংযোজন করার পরিকল্পনা রয়েছে।

গত ১ জুলাই থেকে প্রতি শুক্রবার ও শনিবার উন্নত বিশ্বের আদলে চট্টগ্রামের পর্যটন শিল্পের বিকাশে জেলা প্রশাসক আরো একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নেন। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত মাইক্রোবাসে চালু করেন ফুল ডে ট্যুর সার্ভিস।এই ট্যুর সার্ভিসের মাধ্যেমে প্রাথমিকভাবে পর্যটকগণ সীতাকুন্ড ইকোপার্ক (সুপ্তধারা ও সহস্রধারা ঝর্ণা), গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত , মহামায়া লেক এবং ডিসি পার্কে ভ্রমণ করছেন।ফুল ডে ট্যুর সার্ভিসের মাইক্রো-বাসগুলো চট্টগ্রামের শহরের প্রাণকেন্দ্র নিউমার্কেটে অবস্থিত মোটেল সৈকত এর সামনে থেকে সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে সকাল ৮ঃ৩০ মিনিটে যাত্রা শুরু করে এবং সন্ধ্যা ৬.৩০ টার মধ্যে মোটেল সৈকতের সামনে ফিরে আসে। মাত্র ৮৫০ টাকার প্যাকেজটিতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত মাইক্রোবাস সার্ভিসের পাশাপাশি সকালের স্ন্যাকস , দুপুরের খাবার ,সার্বক্ষণিক ট্যুর গাইডের সুবিধা আছে। পর্যটক বাসের মতো ফুল ডে ট্যুর সার্ভিসও চট্টগ্রামের ভ্রমণপিপাসু মানুষের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলে।চট্টগ্রামের আপামরজনসাধারণ ফুল ডে ট্যুর সার্ভিস নিয়ে উচ্ছ্বসিত।গত ০১ জুলাই হতে চালু হওয়া ডে ট্যুরের প্রথম দিনেই ৪ টি মাইক্রোবাসে ৪০ জন পর্যটক ভ্রমন করেছেন। সর্বশেষ ০৮ জুলাই পর্যন্ত ০৩ দিনে ১৩ টি মাইক্রোবাস ট্রিপে ১২৯ জন পর্যটক ডে ট্যুর সার্ভিস গ্রহন করেছেন। পর্যটকরা চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকের নেয়া এই উদ্দ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করছেন।

অচিরেই রাঙ্গুনিয়া, বাশখালী , আনোয়ারা ও ফটিকছড়ি উপজেলার বিভিন্ন পর্যটন স্পটে এ ধরনের ফুল ডে ট্যুর চালু করা হবে বলে জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান জানিয়েছেন।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রনালয়ের প্রজ্ঞাপনমূলে চট্টগ্রামের পতেংগা ও পারকীসহ জেলার সকল সমুদ্র সৈকতের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা এবং অনান্য পর্যটন এলাকার উন্নয়ন ও সংশ্লিষ্ট কার্যাবলী সমন্বয়ের নিমিত্ত “বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটি”র অনুমোদন দেয়া হয়েছে। কমিটির সভাপতি হিসেবে জেলা প্রশাসক চট্টগ্রাম জেলার সমুদ্র সৈকতসহ সকল পর্যটন এলাকার উন্নয়নে বিশদ পরিকল্পনা প্রনয়ন এবং তার বাস্তবায়নে সরকারী-বেসরকারী অংশীজনদের নিয়ে কাজ শুরু করেছেন। দেশের অন্যতম জনপ্রিয় পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত ঘিরে যত্রতত্র বিদ্যমান বিভিন্ন অস্থায়ী অবকাঠামো সমূহকে আকর্ষনীয় ও জনবান্ধব করে তোলার জন্য বীচ এলাকায় ফুড জোন, কিডস জোন, পাবলিক টয়লেটসহ বিভিন্ন জোনিং এ ভাগ করার পরিকল্পনা গ্রহন করা হয়েছে।

চট্টগ্রামে চলমান পর্যটন বান্ধব উদ্যেগের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, চট্টগ্রাম বাংলাদেশের সবচেয়ে পর্যটন সম্ভাবনাময় জেলা। পাহাড়, নদী ও সাগরের মেলবন্ধন সমৃদ্ধ এ জেলায় সঠিক পরিকল্পনা এবং সময়োপযোগী উদ্যোগ গ্রহনের মাধ্যমে বিশ্বের অন্যতম পর্যটন আকর্ষনীয় স্থানে পরিনত করা সম্ভব। এজন্য সরকারী উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারী উদ্যোগক্তাদের এগিয়ে আসা উচিত।

Feb2

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন মাহমুদউল্লাহ

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: বুধবার, ১২ মার্চ, ২০২৫, ৯:১৮ অপরাহ্ণ
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন মাহমুদউল্লাহ

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। টেস্ট ও টি২০ থেকে আগেই অবসর নেওয়ায় শুধু ওয়ানডে খেলতেন ৩৯ বছর বয়সী এ ব্যাটার। আজ বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক ঘোষণায় ওয়ানডে ক্রিকেটকেও বিদায় বললেন তিনি। তাঁর ওয়ানডে ক্রিকেট ছেড়ে দেওয়ার অর্থ হলো- আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বলে দেওয়া।

রাত সাড়ে ৮টার দিকে ফেসবুকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘সকল প্রশংসা মহান আল্লাহর। আমি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমার সকল সতীর্থ, কোচ এবং বিশেষ করে আমার ভক্তদের ধন্যবাদ দিতে চাই, যারা সবসময় আমাকে সমর্থন দিয়েছে।’

আগের দিন মঙ্গলবার জাতীয় দলের কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। বিসিবি এ দিন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, মার্চ মাস থেকে চুক্তিতে না রাখার অনুরোধ করেছেন মিডলঅর্ডার এ ব্যাটার। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলায় এ বছর জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন পাবেন তিনি। ওয়ানডে থেকে অবসর নেওয়ায় মুশফিকুর রহিম মার্চ থেকে অবনমিত হবেন ‘বি’ ক্যাটেগরিতে। মাহমুদউল্লাহ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছাড়ার ঘোষণা না দিলেও কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেওয়ার অর্থ হতে পারে জাতীয় দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকছেন না।

আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ইতি টানার আগে সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল, মাশরাফি বিন মুর্তজাও কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন। মাশরাফি আনুষ্ঠানিক বিদায় না বললেও তামিম আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন গত জানুয়ারিতে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শেষে ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে অবসর নেন মুশফিক।

পদত্যাগ করেছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আমিনুল ইসলাম

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: সোমবার, ১০ মার্চ, ২০২৫, ৩:০৮ অপরাহ্ণ
পদত্যাগ করেছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আমিনুল ইসলাম

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদা) অধ্যাপক এম আমিনুল ইসলাম পদত্যাগ করেছেন।

সোমবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সচিবের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন তিনি।সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের করিডোরে সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন ড. এম আমিনুল ইসলাম।

প্রধান উপদেষ্টার এ বিশেষ সহকারী বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছুই বলতে চাইছি না। আমি আমার পিএসের মাধ্যমে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিয়েছি।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সূত্র বলছে, সরকারের চাওয়া অনুযায়ী তিনি পদত্যাগ করেছেন।

গত প্রায় সাত মাসে কয়েক দফায় উপদেষ্টা পরিষদে রদবদল ও নতুন নিয়োগ হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টাসহ এখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে উপদেষ্টা ২৩ জন।

তাদের মধ্যে গত বুধবার অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আবরার (সিআর আবরার) উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নিয়েছেন। তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন। এত দিন শিক্ষা ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ এখন কেবল পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করছেন।

এর আগে গত নভেম্বরে প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদায় ৩ জনকে বিশেষ সহকারী নিয়োগ দেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। এই তিন বিশেষ সহকারী স্বরাষ্ট্র, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাদের সহযোগিতা করছেন। এই তিনজনের মধ্যে শিক্ষার দায়িত্বে ছিলেন অধ্যাপক এম আমিনুল ইসলাম।

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপা পুনরুদ্ধার করল ভারত

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: সোমবার, ১০ মার্চ, ২০২৫, ১২:০৮ পূর্বাহ্ণ
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপা পুনরুদ্ধার করল ভারত

আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগের নাম ছিল আইসিসি নকআউট বিশ্বকাপ। ২০০০ সালে নকআউট বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারতকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল নিউজিল্যান্ড। দুই যুগ পর সেই হারের প্রতিশোধ নিলো ভারত। কিউইদের ৪ উইকেটে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছে রোহিত শর্মার দল। তাতে সর্বশেষ আসরে পাকিস্তানের কাছে হারানো শিরোপা এবার পুনরুদ্ধার করল তারা।

দুবাইয়ে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৫১ রান সংগ্রহ করে নিউজিল্যান্ড। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৬৩ রান করেছেন ড্যারিল মিচেল। তাছাড়া ফিফটি পেয়েছেন মাইকেল ব্রেসওয়েল। ভারতের হয়ে দুটি করে উইকেট শিকার করেছেন বরুণ চক্রবর্তী ও কুলদীপ যাদব। জবাবে খেলতে নেমে ৪৯ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ভারত। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৭৬ রান করেছেন রোহিত।

২৫২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে উড়ন্ত সূচনা পায় ভারত। দুই ওপেনার রোহিত শর্মা ও শুবমান গিল শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ছিলেন। বিশেষ করে রোহিত, ব্যাট হাতে তিনি রীতিমতো ঝড় তোলেন। বড় ম্যাচে এসে নিজের সেরাটা দেখালেন ভারত অধিনায়ক।

দুই ওপেনারের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে শুরুর পাওয়ার প্লেতে বিনা উইকেটে ৬৪ রান তোলে ভারত। ৪১ বলে ব্যক্তিগত ফিফটি করেন রোহিত। তার তুলনায় কিছুটা রয়ে-সয়ে খেলেছেন গিল। ৫০ বলে ৩১ রান করে এই ওপেনার ফিরলে ভাঙে ১০৫ রানে উদ্বোধনী জুটি।

ওপেনারদের গড়ে দেওয়া শক্ত ভিতে দাঁড়িয়েও সুবিধা করতে পারেননি তিনে নামা বিরাট কোহলি। অভিজ্ঞ এই ব্যাটার ২ বলে করেছেন ১ রান। কোহলি ফেরার পর রোহিতও আর বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি। সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়েও থেমেছেন ৭৬ রানে।

১৮ রানের ব্যবধানে ৩ উইকেট তুলে তখন কিছুটা হলেও ম্যাচে ফেরে কিউইরা। তবে চতুর্থ উইকেট জুটিতে শ্রেয়াস আইয়ার ও অক্ষর প্যাটেল আবারো নিউজিল্যান্ডকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দেয়। ৬২ বলে ৪৮ রান করে আইয়ার ফিরলে ভাঙে ৬১ রানের চতুর্থ উইকেট জুটি।

এরপর অক্ষর, হার্দিক পান্ডিয়া শুরু পেলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি। তাদের বিদায়ে কিছুটা হলেও ভারতের ওপর চাপ পড়ে। তবে সেই চাপ শক্ত হাতে সামাল দেন লোকেশ রাহুল। এক প্রান্ত আগলে রেখে হিসেব-নিকেষ করে শট খেলেছেন তিনি। দলের প্রয়োজন মতো আক্রমণাত্মক হয়েছে তো আবার প্রয়োজনে দেখে-শুনে খেলেছেন। তার অপরাজিত ৩৪ রানের ইনিংসে ৬ বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ভারত।

এর আগে আগে ব্যাট করতে নেমে দুই ওপেনারের ব্যাটে ভালো শুরু পেয়েছিল নিউজিল্যান্ড। রাচিন রবীন্দ্র ও উইল ইয়াং বেশ আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেছেন। বিশেষ করে রাচিন। এই ইনফর্ম ব্যাটার পেসারদের বেশ স্বাছন্দ্যেই খেলছিলেন। যদিও সপ্তম ওভারে মোহাম্মদ শামিকে ফিরতি ক্যাচ দিয়েও জীবন পেয়েছিলেন।

তবে ভারত স্পিন আক্রমণে যাওয়ার পর বেশ ভুগেছেন রাচিন। অষ্টম ওভারের প্রথম বলে বরুণকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ডিপ মিডউইকেটে ক্যাচ দিয়েছিলেন রাচিন। এবারও বল হাতে পেয়ে জমাতে পারেননি ফিল্ডার। তাতে আরো একবার জীবন পান এই ওপেনার।

রাচিন জীবন পেলেও একই ওভারের পঞ্চম বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন উইল ইয়াং। এই ওপেনার সাজঘরে ফেরার আগে ২৩ বলে করেছেন ১৫ রান।

ফাইনালের মতো বড় ম্যাচে দুইবার জীবন পেয়েও বেশি দূর এগোতে পারলেন না রাচিন। এগারোতম ওভারে প্রথমবারের মতো আক্রমণে এসেই রাচিনকে ফিরিয়েছেন কুলদীপ যাদব। এই চায়নাম্যানের গুগলিতে বোকা বনে যান রাচিন। বোল্ড হওয়ার আগে ২৯ বলে করেছেন ৩৭ রান।

বড় ম্যাচে বেশিরভাগ সময়ই রান পান উইলিয়ামসন। তবে আজ সেই রীতি ভাঙলেন তিনি নিজেই। বাজে এক শটে রীতিমতো আত্মহত্যা করেছেন এই অভিজ্ঞ ব্যাটার! রাচিন ফেরার পর বড় দায়িত্ব ছিল তার কাঁধে। তবে আজ আর পারলেন না। ১৩তম ওভারের দ্বিতীয় বলে কুলদীপকে ফ্লিক করতে গিয়ে ফিরতি ক্যাচ দিয়েছেন তিনি। তার আগে ১৪ বলে করেছেন ১১ রান।

এরপর টম ল্যাথামও উইকেটে থিতু হয়ে ফিরেছেন। কিন্তু বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। ৩০ বলে করেছেন ১৪ রান। ১০৮ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর গ্লেন ফিলিপসকে সঙ্গে নিয়ে দলকে টেনে তোলেন ড্যারিল মিচেল। ভালো শুরু পেয়েও তা কাজে লাগাতে পারেননি ফিলিপস। ৫২ বলে করেছেন ৩৪ রান।

বাকি ব্যাটারদের আসা-যাওয়ার মাঝে এক প্রান্ত আগলে রেখেছিলেন মিচেল। দেখে-শুনে খেলায় প্রচুর ডট বল খেলেছেন। তাই ব্যক্তিগত ফিফটির পর গিয়ার পরিবর্তন করেন। তাতেই বাড়ে বিপদ। ৬৩ রান করে রোহিত শর্মার হাতে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি।

মিচেল ফিরলে দলের হাল ধরেন ব্রেসওয়েল। তার দুর্দান্ত ব্যাটিংয়েই লড়াই করার পুঁজি পায় দল। ৪০ বলে অপরাজিত ৫৩ রান করেছেন এই ব্যাটার।