খুঁজুন
রবিবার, ৯ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৪শে ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সিএমপিতে ৭৭৪ জনের ‘সিটিজেনস্ ফোরাম’

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: সোমবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮:৪২ পূর্বাহ্ণ
সিএমপিতে ৭৭৪ জনের ‘সিটিজেনস্ ফোরাম’

সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে নিয়ে নাগরিক সমস্যা সমাধানে গত সরকারের আমলে ছিল ‘কমিউনিটি পুলিশিং’। তবে তখন এটি নানা বিতর্কেরও জন্ম দিয়েছে। সরকার পতনের পরপরই চট্টগ্রামে বিলুপ্ত করা হয় ‘কমিউনিটি পুলিশিং’-এর সকল স্তরের কমিটি। এই উদ্যোগকে ঢেলে সাজাতে পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী এরইমধ্যে চট্টগ্রাম নগরে ‘কমিউনিটি পুলিশিং’ এর নাম পরিবর্তন করে ‘সিটিজেনস্ ফোরাম’ নামে নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। যা কাজ করবে পুলিশ ও এলাকাবাসীর মাঝে ‘সেতুবন্ধন’ হিসেবে।

চট্টগ্রাম নগর পুলিশ (সিএমপি) সূত্রে জানা গেছে, নগরের মোট ১৬ থানার প্রতিটিতেই এই কমিটি কাজ করবে। এসব কমিটির সদস্যদের সাথে সমন্বয় করতে মহানগরীর অধীনেও থাকবে একটি কমিটি। আর পুরো নগরজুড়ে জনসচেতনতা বাড়াতে ও অপরাধ কমাতে এই কমিটির মোট ৭৭৪ জন সদস্য কাজ করবে। ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ, নৈশটহল, চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ, অপরাধদমনে তথ্য দেওয়া—এমন নানা কাজ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করে করবেন এই সদস্যরা।

সংস্থাটির সদর দপ্তরের তথ্যমতে, গত ৫ আগস্টের পর কমিউনিটি পুলিশিংয়ের বদলে নতুন করে প্রতিটি থানায় নাগরিক কমিটি গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তবে সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ‘জাতীয় নাগরিক কমিটি’ নামে আত্মপ্রকাশ করায় থানাভিত্তিক ‘নাগরিক কমিটি’র বদলে ‘সিটিজেন ফোরাম’ নামে কমিটি গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

‘সিটিজেনস্ ফোরাম’-এর কাজ কি?

জানা গেছে, মূলত ২০১৩ সালে পুলিশ সদর দপ্তরের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) অপারেশনের অধীনে স্বল্প পরিসরে শুরু করেছিল কমিউনিটি পুলিশিং। ২০১৪ সালে একজন সহকারী মহাপরিদর্শকের (এআইজি) তত্ত্বাবধানে পাবলিক সেফটি অ্যান্ড প্রিভেনশন (পিএস অ্যান্ড সিপি) শাখার কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর কমিউনিটি পুলিশিংকে ‘বিট পুলিশিং’ নাম দেওয়া হয়েছিল। আর সেই ‘কমিউনিটি পুলিশিং’ এর নতুন রুপই হচ্ছে ‘সিটিজেনস্ ফোরাম’।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার হাসিব আজিজের মতে—‘কমিউনিটি পুলিশিং’ এর চেয়েও ‘সিটিজেনস্ ফোরাম’ এর কাজের ব্যপ্তি বেশি। প্রান্তিক পর্যায়ের কমিউনিটি থেকে নানা বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে সেই আগাম তথ্যের ভিত্তিতে অগ্রাধিকারভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়াই এই ফোরামের কাজ।

নগর পুলিশের এই অভিভাবক বলেন, ‘সিটিজেনস্ ফোরাম কমিউনিটি পুলিশিংয়ের আরেকটি রুপ। এর কাজের ব্যপ্তি আরেকটু বড় পরিসরে হবে। কমিউনিটি পুলিশ থেকে এর কাজ একটু বেশি হবে। কমিউনিটি থেকে নানারকম খোঁজ-খবর এবং আগাম তথ্য পাওয়া যায়। এসমস্ত ক্ষেত্রে আগাম ব্যবস্থাও নেওয়া যায়। এই যে কমিউনিটি পুলিশের নতুন করে নাম বলেছি সিটিজেনস্ ফোরাম।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রত্যেকটি থানাতেই এই ফোরামের সদস্যদের বসার এবং মিটিং করার ব্যবস্থা থাকবে। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সাথে মিলেমিশে তারা এলাকার ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ, অবৈধ ট্যাক্সি স্ট্যান্ড, ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদাবাজি এবং চাঁদাবাজদের নিয়ন্ত্রণ করা নিয়ে কি কি করা যায়—সে ব্যাপারে হেডকোয়ার্টার্সে চাহিদা জানাবে।’

সিএমপি কমিশনার জানান, সমাজের প্রান্তিক অংশ যেমন—প্রতিবন্ধী, বয়স্ক মানুষ, দুস্থ নারী, যারা গরীব মানুষ কোথাও সেবা দাবি করতে পারে না এই ফোরামের সদস্যরা তাদের কথাগুলো থানা পুলিশকে অবহিত করবেন এবং সেই অনুযায়ী ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে। এছাড়াও সদস্যরা যদি নিজেরা যদি নৈশটহল, ট্রাফিকিংয়ে কাজ করাসহ ভলিন্টিয়ারিং এর ব্যবস্থা করতে চান, করতে পারবেন।

নগর পুলিশের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মূলত সমাজের সব স্তরের জণমানুষকে সেবা দেওয়ার লক্ষ্যেই কাজ করবে এই ফোরাম। এরমধ্যে সর্বস্তরের মানুষ পুলিশের কাজে সহযোগিতা, অপরাধবিরোধী সচেতনতা তৈরি, বাল্যবিবাহ রোধ, ইভটিজিং প্রতিরোধ, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমন, মাদকের কুফল, নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধসহ সামাজিক মূল্যবোধ বাড়াতে কাজ করবেন তারা।

কারা আছেন কমিটিতে?

পুলিশ বলছে, নগরের ১৬ থানার প্রতিটি থানা ও ওয়ার্ডের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, মসজিদ ও মাদ্রাসার ইমাম, এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী, সামাজিক সংগঠক, সাংবাদিক এবং আইনজীবীদের নিয়ে এই ‘সিটিজেনস্ ফোরাম’ গঠন করা হয়েছে। গত সরকারের আমলের ‘কমিউনিটি পুলিশিং’-এর মতো বিতর্ক এড়াতে এবার কয়েক ধাপে ভেরিফিকেশন করে সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যেটি বলছেন খোদ সিএমপি কমিশনারও।

নাম প্রকাশে অনুচ্ছিক সিএমপির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘এসব ফোরাম কিংবা কমিউনিটিতে সমাজের বিভিন্ন অংশীদারদের অন্তর্ভুক্ত করতে হয়। আবার তারা যেন সমাজের স্বচ্ছ ব্যক্তি হয় সেদিকেও নজর রাখা উচিত। কিন্তু গত সরকারের আমলে বিভিন্ন চোর-বাটপার কিংবা সন্ত্রাসীকে কমিউনিটি পুলিশিং এ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। যা নিয়ে বিভিন্ন বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছিল। তাই এবার সিটিজেনস্ ফোরাম-এ যাচাই-বাছাই করে ক্লিন ইমেজের লোকদের নিয়ে কমিটি করা হয়েছে।’

সিএমপি সূত্রে জানা গেছে, ‘সিটিজেনস্ ফোরাম’-এর চট্টগ্রাম মহানগরে ৮৬ সদস্য, কোতোয়ালী থানার ৪৫, সদরঘাট থানার ৫০, চকবাজার থানার ৫০, বাকলিয়া থানার ৪১, খুলশী থানার ৫৩, বায়েজিদ থানার ৫১, পাঁচলাইশ থানার ৪২, চান্দগাঁও থানার ৩৫, পাহাড়তলী থানার ৩৬, আকবরশাহ্ থানার ৪৫, হালিশহর থানার ৫৮, ডডবলমুরিং থানার ৪৯, বন্দর থানার ৩৭, ইপিজেড থানার ৩৬, পতেঙ্গা থানার ২৯ ও কর্ণফুলী থানার ৩১ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।

এ বিষয়ে হাসিব আজিজ বলেছেন, ‘এটা সিটিজেনস্ ফোরাম। নামটার দিকে খেয়াল রাখতে হবে। এটা কিন্তু কোনো পলিটিক্যাল অর্গানাইজেশন না, এটা অরাজনৈতিক। আমরা চেষ্টা করেছি এখানে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ থেকে শুরু করে সিভিল সোসাইটি, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার, ধর্মের মানুষকে একত্র করে এই কমিটি গঠন করেছি। যেন এই কমিটির মধ্যে দিয়ে জন-আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটে।’

চট্টগ্রাম নগর পুলিশের সদর দপ্তরে ‘সিটিজেনস্ ফোরাম’-এর উদ্বোধন ঘোষণা পূর্ববর্তী দেওয়া বক্তব্যে কমিশনার হাসিব আজিজ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘যতটা সম্ভব একটা অরাজনৈতিক চেহারা এই কমিউনিটিতে থাকার কথা। মনে রাখবেন, এই সিটিজেনস্ কমিটি তৈরি করতে আমরা আইনগতভাবে বাধ্য না। কিন্তু আমাদের পুলিশের সদিচ্ছা থেকে এটি গঠন করেছি। অপ্রীতিকর ঘটনা হলে এই কমিটি আমি ভেঙে দিতে বাধ্য হবো। আমাদের প্রত্যেককে ধৈর্য এবং সংযম বজায় রাখতে হবে। কারো আপত্তি থাকলে তা হৈ হৈ করে বলার বিষয় নয়। এটি রাজনৈতিক পার্টি নয়।’

‘সিটিজেনস্ ফোরাম’ কতটা কার্যকর

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি—কমিউনিটি পুলিশিং এর মতো এই নতুন উদ্যোগে যেন বিতর্কিতরা ঠাঁই না পায়। তারা বলছেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রাজনৈতিক নেতাদের ছত্রছায়ায় কর্মীরা অপকর্ম ‘হালাল’ করতে এসব কমিটিতে স্থান করে নেয়। আর পুলিশের সাথে সুসম্পর্ক করে প্রভাব খাটিয়ে অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়ে। এসব বিষয়েও পুলিশের ঊর্ধ্বতনদের সজাগ দৃষ্টি থাকতে হবে।

নগরের ইপিজেড এলাকার ব্যবসায়ী সালাউদ্দিন শুভ বলেন, ‘শুধু কমিটি করলেই হবে না। আমাদের যেন এই কমিটির মাধ্যমে উপকার হয়—সেই ব্যবস্থাও নিশ্চিত করতে হবে। এর আগেও আমরা দেখেছি চাঁদাবাজদেরই চাঁদাবাজি নির্মুল করতে কমিটিতে রাখা হয়েছিল। এটা শিয়ালের কাছে মুরগি বর্গা দেওয়ার মতো। নতুন বাংলাদেশে নতুন পুলিশিং চাই আমরা। যেন আমাদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারে।’

নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (জনসংযোগ) কাজী মো. তারেক আজিজ বলেন, ‘কমিশনার স্যারের নির্দেশ অনুযায়ী কয়েক দফা ভেরিফেকেশনের মাধ্যমে কমিটিতে নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আর যাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে তারা স্বচ্ছ এবং ক্লিন ইমেজের। আশা করি জনগণ এবং পুলিশের মাঝে সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করবে সিটিজেনস্ ফোরাম-এর কমিটি।’

একটি জরিপের হিসেবে, আইনি সহায়তার জন্য থানায় যায় ৫ থেকে ১০ শতাংশ মানুষ। বাকিরা অর্থাৎ সেবাপ্রত্যাশীদের মধ্যে ৯০ শতাংশই পুলিশের সংস্পর্শে আসেন না। আর এই বিশাল জনগোষ্ঠীকে পুলিশি সেবা দিতেই এই ফোরাম গঠন হয়েছে। যেকোনো দরকারে কমিটির সদস্যদের মাধ্যমে পুলিশি সহায়তা পাওয়াই এই ফোরাম গঠনের অন্যতম উদ্দেশ্য।

সচেতন সমাজের মতে, ভালো কাজের মাধ্যমে যদি এই উদ্যোগ সফল হয় তবে সমাজে অপরাধের প্রবণতা অনেকাংশেই কমে যাবে। সুস্থ-সুন্দর সমাজ গড়তে এই উদ্যোগের বিকল্প নেই বলেও মনে করেন তারা।

Feb2

মাগুরার শিশুটির সব ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে সরানোর নির্দেশ

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: রবিবার, ৯ মার্চ, ২০২৫, ১:০১ অপরাহ্ণ
মাগুরার শিশুটির সব ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে সরানোর নির্দেশ

মাগুরায় বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার শিশুটির সব ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে সরানোর নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

ওই শিশুর ছবি সরিয়ে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসির) দুপুর সোয়া ১২টার মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীর কাছে তথ্য জানানোর জন্য বলেছেন আদালত।

বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন উপস্থাপন করার পর রোববার (৯ মার্চ) হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদেশের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শাহিনুজ্জামান।

তিনি বলেন, মাগুরাসহ সারাদেশে ধর্ষণের ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যাওয়ায়, আজ পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করার পর, মাগুরার সেই শিশু সমস্ত ছবি ইউটিউব, ফেসবুকসহ অন্যান্য মাধ্যম থেকে সরিয়ে ফেলার জন্য বিটিআরসিকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে এ সংক্রান্ত বিষয়ে যথাযথ প্রক্রিয়ায় আবেদন করার জন্য পরামর্শ দিয়ে, আবেদনের পর এ সংক্রান্ত বিষয়ে পরবর্তী নির্দেশনা দেবেন বলে আদালত জানিয়েছেন।

এর আগে, শনিবার ঢাকা মেডিকেল থেকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচে) নেওয়া হয় শিশুটিকে। সেখানেই তার চিকিৎসা চলছে।

এদিকে, ধর্ষণের ঘটনায় মামলা করেছেন শিশুটির মা। মামলায় শিশুটির বোনের স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাশুরকে আসামি করা হয়েছে। তারা আগে থেকেই পুলিশের হেফাজতে ছিলেন। মামলার এজাহারে তিনি অভিযোগ করেন, মেয়ের স্বামীর সহায়তায় তার বাবা (শ্বশুর) শিশুটিকে ধর্ষণ করেন। বিষয়টি মেয়ের শাশুড়ি ও ভাশুর জানতেন। তারা ঘটনা ধামাচাপা দিতে শিশুটিকে হত্যাচেষ্টা চালান।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সম্মুখসারিতে ছিল নারীরা: ড. ইউনূস

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: শনিবার, ৮ মার্চ, ২০২৫, ৪:৩০ অপরাহ্ণ
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সম্মুখসারিতে ছিল নারীরা: ড. ইউনূস

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে বাংলাদেশের ছাত্র-শ্রমিক-জনতা মিলে যে অসাধ্য সাধন করেছে তার সম্মুখসারিতে ছিল এ দেশের নারীরা। ফ্যাসিবাদী শক্তির প্রাণঘাতি অস্ত্রের সামনে হিমালয়ের মতো দাঁড়িয়েছিল আমাদের মেয়েরা।

তিনি বলেন, পতিত স্বৈরাচার দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করছে। আমাদেরকে এখন ততটাই সতর্ক থাকতে হবে যেমনটা আমরা যুদ্ধের মতো পরিস্থিতির মধ্যে ছিলাম। নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা রক্ষায় সর্বোচ্চ সজাগ থাকুন। নিপীড়নের বিরুদ্ধে সামাজিক ঐক্য গড়ে তুলুন। একে অন্যের পাশে দাঁড়ান। একটি সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ সমাজ গড়তে সরকারকে সহযোগিতা করুন।

৮ মার্চ (শনিবার) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, গণঅভ্যুত্থানে সম্মুখসারিতে থাকলেও আমাদের সমাজে এখনো অনেক ক্ষেত্রেই নারীরা পিছিয়ে আছে। নারীদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে সরকার সবসময় সচেষ্ট। এজন্য বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ চলমান। দুস্থ মায়েদের আর্থিক সহায়তা প্রদান, নারীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচি, কর্মজীবী নারীদের থাকার হোস্টেল, ডে-কেয়ার সেন্টার সুবিধাসহ বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ অন্তর্বর্তী সরকার নিচ্ছে। আরও কী কী করা যেতে পারে সেটা নিয়েও আলোচনা চলছে।

ড. ইউনূস বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতা রোধ সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকার। অনেক সময় নারীরা নির্যাতনের শিকার হলেও তারা বুঝতে পারেন না কোথায় অভিযোগ জানাবেন। নারীরা যেন তাদের অভিযোগ জানাতে পারেন সেজন্য হটলাইন চালু করা হয়েছে। আইনি সহায়তা দেওয়ার জন্য আমরা পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন, ২০১০ হালনাগাদ করার উদ্যোগ নিয়েছি। যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও সুরক্ষা আইন, ২০২৫ প্রণয়নের কাজও আমরা হাতে নিয়েছি। আমরা একটি নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন করেছি, তারাও তাদের সুপারিশগুলো দেবে।

নিরাপত্তাকর্মীরা পালন করবেন পুলিশের দায়িত্ব, করতে পারবেন গ্রেফতার

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: শনিবার, ৮ মার্চ, ২০২৫, ৪:২৩ অপরাহ্ণ
নিরাপত্তাকর্মীরা পালন করবেন পুলিশের দায়িত্ব, করতে পারবেন গ্রেফতার

রমজান ও ঈদ উপলক্ষে অনেক রাত পর্যন্ত ঢাকা মহানগরীর মার্কেট, শপিংমল খোলা থাকে। তবে পুলিশের স্বল্পতা রয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রাজধানীর বিভিন্ন আবাসিক এলাকা, শপিংমল ও মার্কেটগুলোতে ‘অক্সিলারি পুলিশ ফোর্স’ নিয়োগ দিয়েছে ডিএমপি।

আবাসিক এলাকা, বিভিন্ন মার্কেট, শপিংমলে নিয়োজিত বেসরকারি নিরাপত্তা কর্মীরা ‘অক্সিলারি পুলিশ ফোর্স’ হিসেবে কাজ করবেন। তাদের ক্ষমতা থাকবে গ্রেফতারের।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের আইনবলে তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী।

শনিবার (৮ মার্চ) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি।

তিনি বলেন, আজ ৭ রমজান। সন্ধ্যা হতেই মুসল্লিরা মসজিদে যান। দেড়-দুই ঘণ্টা সময় যায় তারাবির নামাজে। ওই সময় শহরের বিভিন্ন অলিগলিতে জনশূন্যতা তৈরি হয়। বিশেষ করে পুরুষ মানুষ তারাবি নামাজে থাকে। আপনারা বাড়ি, ফ্ল্যাট দোকান যত্নে রেখে আসবেন। নিরাপত্তাটা খেয়াল করবেন।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘আমি ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার হিসেবে আপনাদের জানাতে চাই, অনুরোধ করতে চাই, আপনারা যখন বাড়ি যাবেন (ঈদে), তখন আপনার বাড়ি, ফ্ল্যাট-দোকান, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা নিজ দায়িত্বে করে যাবেন। আমরা আপনাদের সাথে আছি। তবে আমাদের পুলিশের স্বল্পতা আছে। আমাদের লোকও অনেকে ছুটিতে যাবে, যেতে চায়। যারা ব্যারাকে থাকে, তারা দীর্ঘ সময় পরিবার ছাড়া থাকে। তাদের একটা পার্সেন্টেজ সরকারের নির্দেশে ছুটি দিতে হয়।’

শেখ মো. সাজ্জাত আলী আরও বলেন, শপিং সেন্টারগুলো অনেক রাত পর্যন্ত খোলা থাকবে। বিভিন্ন শপিংমল, শপিং সেন্টার ও গেট দিয়ে ঘেরা বিভিন্ন আবাসিক এরিয়ায় মেট্রোপলিটন পুলিশ আইনবলে অক্সিলারি (সহযোগী) পুলিশ ফোর্স নিয়োগ ক্ষমতা আমার আছে। সেই ক্ষমতা মোতাবেক আমি বেসরকারি নিরাপত্তা কর্মীদের অক্সিলারি পুলিশ ফোর্স হিসেবে নিয়োগ দিয়েছি। তাদের হাতে একটি ব্যান্ড থাকবে। লেখা থাকবে সহায়ক পুলিশ কর্মকর্তা।

আইন মোতাবেক তিনি দায়িত্ব পালন ও গ্রেফতারের ক্ষমতা পাবেন। পুলিশ অফিসার আইনগতভাবে যে প্রটেকশন পান এই অক্সিলারি ফোর্সের সদস্যরাও প্রটেকশন পাবেন।

এসময় উপস্থিত ছিলেন ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এন মো. নজরুল ইসলাম; অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) রেজাউল করিম মল্লিক, যুগ্ম কমিশনার রবিউল (ডিবি) ইসলাম ও মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম, রমনার ডিসি মাসুদ আলম, ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেসন্স বিভাগের মুহাম্মদ ডিসি তালেবুর রহমান প্রমুখ।