খুঁজুন
মঙ্গলবার, ১১ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৬শে ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ই-পাসপোর্ট জাতির জন্য ‘মুজিব বর্ষে’র উপহার : প্রধানমন্ত্রী

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: বুধবার, ২২ জানুয়ারি, ২০২০, ৩:২০ অপরাহ্ণ
ই-পাসপোর্ট জাতির জন্য ‘মুজিব বর্ষে’র উপহার : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে ই-পাসপোর্ট কর্মসূচি এবং স্বয়ংকৃত বর্ডার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনার উদ্বোধন করে বলেছেন, এটা (ই-পাসপোর্ট) জাতির জন্য ‘মুজিব বর্ষে’ একটি উপহার।

প্রধানমন্ত্রী বলেন,‘আমরা মুজিব বর্ষে দেশের জনগণের হাতে ই-পাসপোর্ট তুলে দিচ্ছি। এটি একটি বিশেষ বছর এবং ঘটনাক্রমে জাতি এ বছর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উদযাপন করছে।’

তিনি বলেন, ‘এর মাধ্যমে যে কোন দেশে প্রবেশ এবং বহির্গমনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশী নাগরিকের ঝামেলামুক্ত চলাচল নিশ্চিত হবে এবং ই-গেটের সর্বাধিক সুবিধা গ্রহণ করা যাবে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ‘ই-পাসপোর্ট কর্মসূচি এবং স্বয়ংকৃত বর্ডার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনার উদ্বোধন করেন।

দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম এবং বিশ্বে ১১৯ তম দেশ হিসেবে বাংলাদেশে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি ই-পাসপোর্ট এবং স্বয়ংকৃত বর্ডার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা সন্দেহাতীতভাবে ডিজিটাল বিশ্বে বাংলাদেশের জনগণের মর্যাদা আরো সমুন্নত করবে এবং বাংলাদেশ আরো এক ধাপ এগিয়ে যাবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘ই-পাসপোর্টে এমবেডেড ইলেকট্রনিক মাইক্রো প্রসেসর চিপ থাকবে। যেখানে পাসপোর্ট গ্রহিতার সকল তথ্য, স্বাক্ষর, ছবি, চোখের কর্ণিয়া এবং ফিঙ্গার প্রিন্ট সিল্ড অবস্থায় সুরক্ষিত থাকে।’

তিনি আরো উল্লেখ করেন, ‘অতীতে একটা সমস্যা ছিল পাসপোর্ট নিয়ে। একসময় গলাকাটা পাসপোর্টও দেশে প্রচলিত ছিল, সেটা আর কখনো হবে না। মানুষ আর ধোকায় পড়বেনা। স্বচ্ছতার সাথে চলবে’,বলেন তিনি।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। ঢাকায় জার্মান রাষ্ট্রদূত পিটার ফাহরেনহোল্টস অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

বহির্গমন এবং পাসপোর্ট অধিদপ্তরের (ডিআইপি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো.শহিদুজ্জামান অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।

ই-পাসপোর্ট প্রকল্পের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল সাইদুর রহমান খান প্রকল্পের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে তাঁর ই-পাসপোর্টটি হস্তান্তর করেন।

প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে ই-পাসপোর্ট ভবনের ফলক উন্মোচন করেন এবং এনরোলমেন্ট বুথ পরিদর্শন করেন।

এই ই-পাসপোর্ট ব্যবস্থা প্রবর্তন বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূ্র্তি উজ্জ্বল করার পাশাপাশি আধুনিক সুরক্ষা নিশ্চিত করবে এবং ইমিগ্রেশন পদ্ধতি সহজীকরণ করবে বলে গতকাল এক সাংবাদিক সম্মেলনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানান।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন,‘মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট’কে (এমআরপি) আরও অধিকতর নিরাপত্তা সম্বলিত করার জন্য ‘বাংলাদেশে ই-পাসপোর্ট এবং অটোমেটেড বর্ডার কন্ট্রোল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের বাস্তবায়ন’ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়।’

তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের আওতাধীন ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতর বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় জার্মান কোম্পানি ভেরিডোস জিএমবিএইচ কর্তৃক ই-পাসপোর্ট ও স্বয়ংক্রিয় বর্ডার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৫শ ৬৯ কোটি টাকা। ই-পাসপোর্টের মেয়াদ হবে ৫ থেকে ১০ বছর।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রাথমিকভাবে ডিআইপি তাদের আগারগাঁও, যাত্রাবাড়ি এবং উত্তরা কার্যালয় থেকে এই পাসপোর্ট ইস্যু করবে। পর্যায়ক্রমে এ বছর থেকেই দেশের সবখান থেকে এই পাসপোর্ট ইস্যু করা সম্ভব হবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বপ্রথম এই পাসপোর্ট লাভ করেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রতিদিন প্রয়োজনে ২৫ হাজার পাসপোর্ট ইস্যু করা সম্ভব হবে।

সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া তথ্য মতে, ৪৮ পৃষ্ঠার ৫ বছর মেয়াদি পাসপোর্টের সাধারণ ফি ৩,৫০০ টাকা, জরুরি ফি ৫,৫০০ টাকা ও অতীব জরুরি ফি ৭,৫০০ টাকা এবং ১০ বছর মেয়াদি পাসপোর্টের সাধারণ ফি ৫,০০০ টাকা, জরুরি ফি ৭,০০০ টাকা ও অতীব জরুরি ফি ৯,০০০ টাকা।

নতুন পাসপোর্টের ক্ষেত্রে অতীব জরুরিতে ৩ দিনে, জরুরিতে ৭ দিনে ও সাধারণ পাসপোর্ট আবেদনের ক্ষেত্রে ২১ দিনে পাসপোর্ট পাওয়া যাবে। তবে পুরনো অথবা মেয়দোত্তীর্ণ পাসপোর্ট রি-ইস্যু করার ক্ষেত্রে অতীব জরুরি পাসপোর্ট ২ দিনে, জরুরি পাসপোর্ট ৩ দিনে ও সাধারণ পাসপোর্ট ৭ দিনের মধ্যে দেওয়া হবে।

আলাদা আলাদা ই-পাসপোর্ট ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসে সাধারণ আবেদনকারীদের জন্য ৪৮ পৃষ্ঠার ৫ বছর মেয়াদি সাধারণ ফি ১০০ মার্কিন ডলার ও জরুরি ফি ১৫০ মার্কিন ডলার। ১০ বছর মেয়াদি পাসপোর্টের সাধারণ ফি ১২৫ মার্কিন ডলার ও জরুরি ফি ১৭৫ মার্কিন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে।

ই-পাসপোর্টের আবেদনপত্র জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) বা জন্মনিবন্ধন সনদ (বিআরসি) অনুযায়ী পূরণ করতে হবে। অপ্রাপ্ত বয়স্ক (১৮ বছরের কম) আবেদনকারী, যার জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নেই, তার পিতা-মাতার জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নম্বর অবশ্যই সংশ্লিষ্ট তথ্য হিসেবে উল্লেখ করতে হবে।

উল্লেখ্য, ই-পাসপোর্ট চালু হলে সমগ্র ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়াটি অন-লাইনে সম্পন্ন করা সম্ভব হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পরই তিনি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত ‘সোনার বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি দেশকে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ হিসেবে গড়ে তোলার কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।

তিনি বলেন,‘সেই নির্বাচনী ইসতেহারেই আমরা ঘোষণা দিয়েছিলাম বাংলাদেশ হবে ডিজিটাল বাংলাদেশ। কারণ কম্পিউটার শিক্ষা বা ডিজিটাল ডিভাইস যেন বাংলাদেশের মানুষ ব্যবহার করতে পারে। ’৯৬ সালে কিছু উদ্যোগ নিলেও তা সম্পূর্ণ করে যেতে পারিনি তাই ২০০৮ সালে ক্ষমতায় এসেই সেই উদ্যোগটা নেই।’

‘দেশের স্কুল,কলেজ, অফিস,বিশ্ববিদ্যালয়, আদালত-সকল ক্ষেত্রেই আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করি, কম্পিউটার-ল্যাপটপ জনগণের কাছে সহজলভ্য করার জন্য এসব যন্ত্রাংশ থেকে ট্যাক্স প্রত্যাহার করি। যার সুফল আজকে আমরা পাচ্ছি। দেশে একটা ডিজিটাল বিপ্লব সাধিত হয়েছে, ’বলেন তিনি।

ইন্টারনেটের জন্য সাড়ে ৩ হাজার ইউনিয়নে সাবমেরিন কেবল সুবিধা পৌঁছে দেয়া, মহাকাশে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ এবং নতুন নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে জনগণকে পরিচয় করিয়ে দেয়ায় তাঁর সরকারের উদ্যোগ তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
স্বল্পতম সময়ে ই-পাসপোর্ট চালুর উদ্যোগ গ্রহণে এবং এরআগে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট চালু করায় ইমিগ্রেশন এবং পাসপোর্ট অধিদপ্তর সহ সংশ্লিষ্ট সকল মহলকে ধন্যবাদ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা একেকবার নতুন প্রযুক্তি নিয়ে আসছি এবং সেটা যে তারা কার্যকর করতে পারছেন এজন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’

‘বাংলাদেশকে উচ্চ মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করার লক্ষ্য’ নিয়ে তাঁর সরকার কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী ই-পাসপোর্ট প্রসংগে বলেন, ‘একটি আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন পদ্ধতি আমরা গ্রহণ করেছি। যার সুযোগটা দেশের মানুষ পাবে।’তিনি বলেন, বিশ্বে ১১৯ তম দেশ হিসেবে ই-পাসপোর্ট চালু হয়েছে এবং দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম দেশ হিসেবে আমরা সেটা চালু করতে পেরেছি এবং আমরা সেই জায়গায় পৌঁছাতে পেরেছি।

ফরেন রেমিট্যান্স দেশের উন্নয়নে কাজে লাগায় সেই প্রবাসীদের দেশ-বিদেশে যাতায়াত সহজিকরণের লক্ষ্যে তাঁর সরকারের এই উদ্যোগ একথা উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, ‘দেশের অভ্যন্তরে ৬৪টি জেলায় ৬৯টি পাসপোর্ট অফিস, ৩৩টি ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট, বিদেশে অবস্থিত ৭৫টি বাংলাদেশ মিশনের পাসপোর্ট ও ভিসা উইং-এর মাধ্যমে পাসপোর্ট, ভিসা ও ইমিগ্রেশন সেবাকে আমরা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিচ্ছি।’

তিনি বলেন,উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমরাও পাসপোর্ট ও ইমিগ্রেশন সেবাকে যুগোপযোপী করতে ই-পাসপোর্ট প্রদান করতে যাচ্ছি। যাতে প্রবাসী বাংলাদেশীরা আর হয়রানির শিকার না হন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ই-পাসপোর্টের সঙ্গে ই- গেটও সংযোজিত হচ্ছে। ই-পাসপোর্ট ও ই-গেট সংযোজিত হলে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট সেবা সহজ, স্বাচ্ছন্দময় ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন হবে।’

জনসেবাকে ত্বরান্বিত করতে তাঁর সরকার পাসপোর্ট অধিদপ্তরের অবকাঠামো উন্নয়ন ও জনবল বৃদ্ধিসহ যুগের সংগে তাল মেলাতে এর আধুনিকায়নে সব ধরনের প্রচেষ্টা অব্যহত রেখেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন,জনগণের ভোটে সরকার গঠন করতে পেরে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখাতেই তাঁর সরকার দেশের উন্নয়ন করতে পেরেছে এবং ২০২০ সালে রাষ্ট্রীয়ভাবে জাতির পিতার জন্ম শতবার্ষিকী এবং ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনের সুযোগ পেয়েছে। যার ক্ষণ গণনা শুরু হয়ে গেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের জণগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই যে, তাঁরা আমাদের ওপর আস্থা রেখেছেন, বিশ্বাস রেখেছেন, ভোট দিয়ে নির্বাচিত করে তাঁদের সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন।’

তিনি বলেন, জাতির পিতা যুদ্ধবিধ্বস্ত সদ্য স্বাধীন দেশকে পুনর্গঠনে বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণকালে ১৯৭৩ সালে তিনি পূর্নাঙ্গ ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা করেন।

কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার পর জাতির ভাগ্যাকাশে ঘোর অন্ধকার নেমে আসে এবং দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি থেমে গিয়ে হত্যা ক্যু আর ষড়যন্ত্রের রাজনীতি শুরু হয়, বলেন তিনি।

তাঁর সরকার প্রতিশ্রুত ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে পারায় বর্তমানে জনগণের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটেছে,’ উল্লেখ করে করে তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ১৫ ভাগে উন্নীত হয়েছে এবং মাথাপিছু আয় বেড়েছে।’
দারিদ্রের হার ২০ দশমিক ৫ ভাগে নামিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে এবং একে আরো কমিয়ে এনে দেশকে দারিদ্রমুক্ত করার লক্ষ্য বাস্তবায়নেই তাঁর সরকারের সকল কর্মসূচি আবর্তিত হচ্ছে বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, সকল উন্নয়ন কাজের সময় আমরা একটা বিষয় মাথায় রাখি, এর সুফল যেন একেবারে গ্রামের তৃণমূল পর্যন্ত পৌঁছায়।

তিনি সরকারের এসডিজি বাস্তবায়নের পদক্ষেপ তুলে ধরে বলেন, ‘জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের জন্য আমাদের সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় ইতোমধ্যে বাংলাদেশের জন্য যা যা প্রযোজ্য সেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করে আমরা বাস্তবায়নেও উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।

সেইসাথে বাংলাদেশ ভবিষ্যতে কিভাবে এগিয়ে যাবে সে পদক্ষেপও তাঁর সরকার নিয়েছে উল্লেখ করে ২০১০ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত এবং ২০২১ সাল থেকে ২০৪১ সাল পর্যন্ত গৃহীত প্রেক্ষিত পরিকল্পনার পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় শতবর্ষ মেয়াদি ডেল্টা পরিকল্পনা গ্রহণ এবং বাস্তবায়নের উদ্যোগ ও তুলে ধরেন তিনি।

‘যুগের সাথে তাল মিলিয়ে এইসব পরিকল্পনা যুগোপযোগীকরণ করতে হবে’ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘একটি লক্ষ্য স্থির করে দেশকে এগিয়ে নেয়ার জন্যই পরিকল্পনা মাফিক তাঁর সরকার এগিয়ে যাচ্ছে।’

Feb2

পদত্যাগ করেছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আমিনুল ইসলাম

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: সোমবার, ১০ মার্চ, ২০২৫, ৩:০৮ অপরাহ্ণ
পদত্যাগ করেছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আমিনুল ইসলাম

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদা) অধ্যাপক এম আমিনুল ইসলাম পদত্যাগ করেছেন।

সোমবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সচিবের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন তিনি।সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের করিডোরে সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন ড. এম আমিনুল ইসলাম।

প্রধান উপদেষ্টার এ বিশেষ সহকারী বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছুই বলতে চাইছি না। আমি আমার পিএসের মাধ্যমে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিয়েছি।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সূত্র বলছে, সরকারের চাওয়া অনুযায়ী তিনি পদত্যাগ করেছেন।

গত প্রায় সাত মাসে কয়েক দফায় উপদেষ্টা পরিষদে রদবদল ও নতুন নিয়োগ হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টাসহ এখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে উপদেষ্টা ২৩ জন।

তাদের মধ্যে গত বুধবার অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আবরার (সিআর আবরার) উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নিয়েছেন। তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন। এত দিন শিক্ষা ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ এখন কেবল পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করছেন।

এর আগে গত নভেম্বরে প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদায় ৩ জনকে বিশেষ সহকারী নিয়োগ দেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। এই তিন বিশেষ সহকারী স্বরাষ্ট্র, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাদের সহযোগিতা করছেন। এই তিনজনের মধ্যে শিক্ষার দায়িত্বে ছিলেন অধ্যাপক এম আমিনুল ইসলাম।

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপা পুনরুদ্ধার করল ভারত

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: সোমবার, ১০ মার্চ, ২০২৫, ১২:০৮ পূর্বাহ্ণ
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপা পুনরুদ্ধার করল ভারত

আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগের নাম ছিল আইসিসি নকআউট বিশ্বকাপ। ২০০০ সালে নকআউট বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারতকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল নিউজিল্যান্ড। দুই যুগ পর সেই হারের প্রতিশোধ নিলো ভারত। কিউইদের ৪ উইকেটে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছে রোহিত শর্মার দল। তাতে সর্বশেষ আসরে পাকিস্তানের কাছে হারানো শিরোপা এবার পুনরুদ্ধার করল তারা।

দুবাইয়ে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৫১ রান সংগ্রহ করে নিউজিল্যান্ড। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৬৩ রান করেছেন ড্যারিল মিচেল। তাছাড়া ফিফটি পেয়েছেন মাইকেল ব্রেসওয়েল। ভারতের হয়ে দুটি করে উইকেট শিকার করেছেন বরুণ চক্রবর্তী ও কুলদীপ যাদব। জবাবে খেলতে নেমে ৪৯ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ভারত। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৭৬ রান করেছেন রোহিত।

২৫২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে উড়ন্ত সূচনা পায় ভারত। দুই ওপেনার রোহিত শর্মা ও শুবমান গিল শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ছিলেন। বিশেষ করে রোহিত, ব্যাট হাতে তিনি রীতিমতো ঝড় তোলেন। বড় ম্যাচে এসে নিজের সেরাটা দেখালেন ভারত অধিনায়ক।

দুই ওপেনারের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে শুরুর পাওয়ার প্লেতে বিনা উইকেটে ৬৪ রান তোলে ভারত। ৪১ বলে ব্যক্তিগত ফিফটি করেন রোহিত। তার তুলনায় কিছুটা রয়ে-সয়ে খেলেছেন গিল। ৫০ বলে ৩১ রান করে এই ওপেনার ফিরলে ভাঙে ১০৫ রানে উদ্বোধনী জুটি।

ওপেনারদের গড়ে দেওয়া শক্ত ভিতে দাঁড়িয়েও সুবিধা করতে পারেননি তিনে নামা বিরাট কোহলি। অভিজ্ঞ এই ব্যাটার ২ বলে করেছেন ১ রান। কোহলি ফেরার পর রোহিতও আর বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি। সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়েও থেমেছেন ৭৬ রানে।

১৮ রানের ব্যবধানে ৩ উইকেট তুলে তখন কিছুটা হলেও ম্যাচে ফেরে কিউইরা। তবে চতুর্থ উইকেট জুটিতে শ্রেয়াস আইয়ার ও অক্ষর প্যাটেল আবারো নিউজিল্যান্ডকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দেয়। ৬২ বলে ৪৮ রান করে আইয়ার ফিরলে ভাঙে ৬১ রানের চতুর্থ উইকেট জুটি।

এরপর অক্ষর, হার্দিক পান্ডিয়া শুরু পেলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি। তাদের বিদায়ে কিছুটা হলেও ভারতের ওপর চাপ পড়ে। তবে সেই চাপ শক্ত হাতে সামাল দেন লোকেশ রাহুল। এক প্রান্ত আগলে রেখে হিসেব-নিকেষ করে শট খেলেছেন তিনি। দলের প্রয়োজন মতো আক্রমণাত্মক হয়েছে তো আবার প্রয়োজনে দেখে-শুনে খেলেছেন। তার অপরাজিত ৩৪ রানের ইনিংসে ৬ বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ভারত।

এর আগে আগে ব্যাট করতে নেমে দুই ওপেনারের ব্যাটে ভালো শুরু পেয়েছিল নিউজিল্যান্ড। রাচিন রবীন্দ্র ও উইল ইয়াং বেশ আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেছেন। বিশেষ করে রাচিন। এই ইনফর্ম ব্যাটার পেসারদের বেশ স্বাছন্দ্যেই খেলছিলেন। যদিও সপ্তম ওভারে মোহাম্মদ শামিকে ফিরতি ক্যাচ দিয়েও জীবন পেয়েছিলেন।

তবে ভারত স্পিন আক্রমণে যাওয়ার পর বেশ ভুগেছেন রাচিন। অষ্টম ওভারের প্রথম বলে বরুণকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ডিপ মিডউইকেটে ক্যাচ দিয়েছিলেন রাচিন। এবারও বল হাতে পেয়ে জমাতে পারেননি ফিল্ডার। তাতে আরো একবার জীবন পান এই ওপেনার।

রাচিন জীবন পেলেও একই ওভারের পঞ্চম বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন উইল ইয়াং। এই ওপেনার সাজঘরে ফেরার আগে ২৩ বলে করেছেন ১৫ রান।

ফাইনালের মতো বড় ম্যাচে দুইবার জীবন পেয়েও বেশি দূর এগোতে পারলেন না রাচিন। এগারোতম ওভারে প্রথমবারের মতো আক্রমণে এসেই রাচিনকে ফিরিয়েছেন কুলদীপ যাদব। এই চায়নাম্যানের গুগলিতে বোকা বনে যান রাচিন। বোল্ড হওয়ার আগে ২৯ বলে করেছেন ৩৭ রান।

বড় ম্যাচে বেশিরভাগ সময়ই রান পান উইলিয়ামসন। তবে আজ সেই রীতি ভাঙলেন তিনি নিজেই। বাজে এক শটে রীতিমতো আত্মহত্যা করেছেন এই অভিজ্ঞ ব্যাটার! রাচিন ফেরার পর বড় দায়িত্ব ছিল তার কাঁধে। তবে আজ আর পারলেন না। ১৩তম ওভারের দ্বিতীয় বলে কুলদীপকে ফ্লিক করতে গিয়ে ফিরতি ক্যাচ দিয়েছেন তিনি। তার আগে ১৪ বলে করেছেন ১১ রান।

এরপর টম ল্যাথামও উইকেটে থিতু হয়ে ফিরেছেন। কিন্তু বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। ৩০ বলে করেছেন ১৪ রান। ১০৮ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর গ্লেন ফিলিপসকে সঙ্গে নিয়ে দলকে টেনে তোলেন ড্যারিল মিচেল। ভালো শুরু পেয়েও তা কাজে লাগাতে পারেননি ফিলিপস। ৫২ বলে করেছেন ৩৪ রান।

বাকি ব্যাটারদের আসা-যাওয়ার মাঝে এক প্রান্ত আগলে রেখেছিলেন মিচেল। দেখে-শুনে খেলায় প্রচুর ডট বল খেলেছেন। তাই ব্যক্তিগত ফিফটির পর গিয়ার পরিবর্তন করেন। তাতেই বাড়ে বিপদ। ৬৩ রান করে রোহিত শর্মার হাতে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি।

মিচেল ফিরলে দলের হাল ধরেন ব্রেসওয়েল। তার দুর্দান্ত ব্যাটিংয়েই লড়াই করার পুঁজি পায় দল। ৪০ বলে অপরাজিত ৫৩ রান করেছেন এই ব্যাটার।

মাগুরার শিশুটির সব ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে সরানোর নির্দেশ

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: রবিবার, ৯ মার্চ, ২০২৫, ১:০১ অপরাহ্ণ
মাগুরার শিশুটির সব ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে সরানোর নির্দেশ

মাগুরায় বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার শিশুটির সব ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে সরানোর নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

ওই শিশুর ছবি সরিয়ে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসির) দুপুর সোয়া ১২টার মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীর কাছে তথ্য জানানোর জন্য বলেছেন আদালত।

বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন উপস্থাপন করার পর রোববার (৯ মার্চ) হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদেশের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শাহিনুজ্জামান।

তিনি বলেন, মাগুরাসহ সারাদেশে ধর্ষণের ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যাওয়ায়, আজ পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করার পর, মাগুরার সেই শিশু সমস্ত ছবি ইউটিউব, ফেসবুকসহ অন্যান্য মাধ্যম থেকে সরিয়ে ফেলার জন্য বিটিআরসিকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে এ সংক্রান্ত বিষয়ে যথাযথ প্রক্রিয়ায় আবেদন করার জন্য পরামর্শ দিয়ে, আবেদনের পর এ সংক্রান্ত বিষয়ে পরবর্তী নির্দেশনা দেবেন বলে আদালত জানিয়েছেন।

এর আগে, শনিবার ঢাকা মেডিকেল থেকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচে) নেওয়া হয় শিশুটিকে। সেখানেই তার চিকিৎসা চলছে।

এদিকে, ধর্ষণের ঘটনায় মামলা করেছেন শিশুটির মা। মামলায় শিশুটির বোনের স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাশুরকে আসামি করা হয়েছে। তারা আগে থেকেই পুলিশের হেফাজতে ছিলেন। মামলার এজাহারে তিনি অভিযোগ করেন, মেয়ের স্বামীর সহায়তায় তার বাবা (শ্বশুর) শিশুটিকে ধর্ষণ করেন। বিষয়টি মেয়ের শাশুড়ি ও ভাশুর জানতেন। তারা ঘটনা ধামাচাপা দিতে শিশুটিকে হত্যাচেষ্টা চালান।