খুঁজুন
রবিবার, ৯ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৪শে ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিশ্বের অনেক উন্নত দেশও যখন প্রবৃদ্ধি অর্জনে পিছিয়ে পড়ছে, তখনও এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ:প্রধানমন্ত্রী

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারি, ২০২০, ৮:৩৯ অপরাহ্ণ
বিশ্বের অনেক উন্নত দেশও যখন প্রবৃদ্ধি অর্জনে পিছিয়ে পড়ছে, তখনও এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ:প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার মাধ্যমে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ এবং দুর্নীতি মুক্ত করে দেশকে আরো এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে তাঁর সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ এবং দুর্নীতির হাত থেকে রক্ষা করে দেশকে আরো এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ দুপুরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর শীতকালীন অনুশীলন-প্রশিক্ষণ উপলক্ষে আয়োজিত প্রীতিভোজে অংশগ্রহণ করে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের মানুষ শান্তিতে থাকুক, নিরাপদে থাকুক, উন্নত জীবন পাক-সেই লক্ষ্যই আমরা বাস্তবায়ন করছি।’

প্রধানমন্ত্রী বক্তৃতাকালে সেনা সদস্যদের কর্তব্য নিষ্ঠা এবং দেশপ্রেম সম্পর্কে সচেতন করতে এ সময় বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমীর প্রথম কোর্স সমাপনীতে ক্যাডেটদের উদ্দেশ্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু প্রদত্ত ভাষণের চুম্বক অংশ উদ্বৃত করেন।
জাতির পিতা বলেছিলেন, ‘রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা এনেছি, এই স্বাধীনতা নিশ্চয়ই ইনশাআল্লাহ থাকবে, কেউ ধ্বংস করতে পারবেনা। তবে স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি বাংলার দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফুটাতে না পারো। সেই জন্য তোমাদের কাছে আবেদন রইল সৎ পথে থেকো।’
জাতির পিতার কন্যা বলেন, ‘জাতির পিতা সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের লক্ষ্য করে এ কথা বলেছিলেন। তবে, এটা শুধু সশস্ত্র বাহিনীর জন্য নয়, সমগ্র জাতির ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।’

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৩ পদাতিক ডিভিশন আয়োজিত এই প্রীতিভোজ অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ স্বাগত বক্তৃতা করেন।

এরআগে, প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর শীতকালীন প্রশিক্ষণ অনুশীলন (মহড়া) ‘অপারেশন বিজয় গৌরব’ প্রত্যক্ষ করেন।

স্বাধীনদেশে স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষার গুরু দায়িত্ব ‘সশস্ত্র বাহিনীর উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী যেন স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বিশ্বে মাথা উঁচু করে চলতে পারে এবং বিশ্বের সঙ্গে তাল মেলাতে পারে সেভাইে আমরা বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। যার শুভফল ইতোমধ্যেই সকলে পাচ্ছেন।’

শেখ হাসিনা জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সশস্ত্র বাহিনী এবং পুলিশ বাহিনীর ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন, ‘বহুদেশে শান্তি স্থাপনে বিশেষ ভূমিকা রাখার পাশপাশি সামাজিক কাজেও যথেষ্ট আন্তরিকতার সঙ্গে সশস্ত্র বাহিনী এবং পুলিশ বাহিনী ভূমিকা রাখছে।’

‘দেশের অনেক উন্নয়ন কাজে সম্পৃক্ত হয়ে সেনা সদস্যরা ভূয়শী প্রশংসা কুড়িয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘অনেক উন্নয়নের কাজ তাঁদের দিয়ে আমরা করাতে পারছি এবং তারা করে যাচ্ছে। এভাবে দেশের একদিকে যেমন স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা হচ্ছে। অন্যদিকে, দেশের উন্নয়নের ক্ষেত্রেও অনেক অবদান রেখে যাচ্ছেন আমাদের সেনা সদস্যরা।

তিনি সকল সেনা সদস্যকে এজন্য আন্তরিক ধন্যবাদ এবং অভিনন্দন জানান।

তিনি বলেন, অন্যকোন দেশের সৈনিকরা ততটা মানবিকতা দেখায় না, যতটা আমরা বাঙালিরা দেখাতে পারি। কাজেই সেইদিক থেকে আমি মনে করি প্রশিক্ষণ এবং সমরাস্ত্রের দিক থেকে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার উপযুক্ত আমাদের সশস্ত্র বাহিনী হবে। সে লক্ষ্য নিয়েই আমরা যথেষ্ট কাজ করেছি এবং উদ্যোগ নিয়েছি।

প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারের ব্যাপক উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ সম্পর্কে বিস্তারিত উল্লেখ না করে বলেন, ‘শুধু এটুকুই বলবো আমাদের সীমিত সম্পদ দ্বারা যতটুকু সম্ভব তা আমরা করে যাচ্ছি।’

বাংলাদেশ রেজিমেন্ট সহ তিনটি পদাতিক বাহিনী আওয়ামী লীগ সরকারই করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের দক্ষিণাঞ্চল এক সময় অবহেলিত ছিল। সেখানে কোন সেনানিবাস ছিলনা। সেখানেও আমরা সেনানিবাস করে দিয়েছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা ১৯৭৪ সালে যে প্রতিরক্ষা নীতিমালা প্রণয়ন করেন তার আলোকে তাঁর সরকার ‘ফোর্সেস গোল-২০৩০’ প্রণয়ন করে সশস্ত্র বাহিনীর উন্নয়ন ও সম্প্রসারণে প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৩ পদাতিক ডিভিশনের সার্বিক তত্বাবধানে ৬৬ পদাতিক ডিভিশন এই শীতকালীন প্রশিক্ষণ অনুশীলনের আয়োজন করে।

বাংলাদেশ নৌবাহিনী এবং বিমান বাহিনীর সদস্যরা প্রায় ঘন্টাব্যাপী তিন বাহিনীর সম্মিলিত এই মহড়ায় অংশগ্রহণ করেন।

আধুনিক ট্যাংক, এপিসিএস, মিগ ফাইটার প্লেন এবং তিন সশস্ত্র বাহিনীর এমআই হেলিকপ্টারগুলো অনুশীলনে অংশগ্রহণ করে। যেখানে বাংলাদেশ সশস্ত্রবাহিনী এবং শত্রু বাহিনীর মধ্যে ছদ্ম যুদ্ধ অনুষ্ঠিত হয়।

বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর বিজয় অর্জনের মধ্য দিয়ে মহড়া সমাপ্ত হয়।

২২২ পদাতিক ব্রিগেডের ব্রিগেড কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুব শত্রুদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীর বিজয় অর্জনের বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরে শত্রু বাহিনীর বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর বিজয়ে তাঁদের অভিনন্দন জানান।

স্থানীয় সংসদ সদস্যবৃন্দ, তিন বাহিনী প্রধানগণ, প্রধানমন্ত্রীর সচিবগণ এবং উচ্চপদস্থ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

এরআগে, প্রধানমন্ত্রী আজ সকালে নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার উপকূলীয় দ্বীপ স্বর্ণদ্বীপে (পূর্বের নাম জাহাইজ্জার চর) পৌঁছলে সেনা বাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ, ৬৬ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল নজরুল ইসলাম এবং ৩৩ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল আহমেদ তাবরেজ শামস চৌধুরী তাঁকে স্বাগত জানান।

পরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেল লেফটেনান্ট জেনারেল মো. শামসুল হক এবং প্রকৌশল বিভাগের প্রধান মেজর জেনারেল ইবনে ফজল শায়েখুজ্জামান দ্বীপের উন্নয়ন সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন।

প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণদ্বীপে সেনাবাহিনীর সদস্যদের মাধ্যমে নির্মিত ও বাস্তবায়িত তিনটি বহুমুখী সাইক্লোন শেল্টার, পরিকল্পিত বনায়ন প্রকল্প এবং এক মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প উদ্বোধন করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ’৯৬ সালে প্রথমবার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই তাঁর সরকার সশস্ত্র বাহিনীতে আধুনিক সরঞ্জাম সন্নিবেশিত করে একে আরো যুগোপযোগী করার উদ্যোগ নেয় এবং উন্নয়ন যাত্রায় কোন প্রতিষ্ঠান যেন পিছিয়ে না থাকে, তারও উদ্যোগ গ্রহণ করে।

‘সশস্ত্র বাহিনীকে তাঁর সরকার আধুনিক জ্ঞান সম্পন্ন করে গড়ে তোলার ব্যবস্থা নিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা সব থেকে বেশি প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্ব দিয়েছি। কেননা একটি আধুনিক বাহিনী গড়ে তোলায় এটি সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ।’

এজন্যই অতীতে জলদস্যু প্রবণ এই দ্বীপটিকে (স্বর্ণদ্বীপ) সেনাবাহিনীর উন্নত প্রশিক্ষণ এবং খোলামেলাভাবে মহড়া করার জন্য ২০১৩ সাল থেকে বরাদ্দ করেছেন এবং এর নামও পরিবর্তন করে দিয়েছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।

তিনি চরটির আধুনিকায়নে সেনা সদস্যদের প্রশংসা করে বলেন, জাহাইজ্জার চরকে স্বর্ণদ্বীপে রূপান্তরিত করার জন্য আমি সেনা সদস্যদের আন্তরিক ধন্যবাদ এবং অভিনন্দন জানাই এবং এখানে যা যা করণীয় তা করা হচ্ছে। আমরা তা করবো।

তিনি বলেন, আমাদের তিন বাহিনীর জন্যই প্রত্যেকটি হেড কোয়ার্টারে আমরা ্একটি করে বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্স করে দিয়েছি এবং সেখানে প্রশিক্ষণের আরো সুযোগ করে দিয়েছি। শিক্ষা-দীক্ষা, প্রশিক্ষণ-সবদিক থেকেই আমাদের সশস্ত্র বাহিনী আরা উন্নত হোক সেটাই আমাদের লক্ষ্য। সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নেই আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি।

শেখ হাসিনা বলেন, দেশের উন্নয়নে তাঁর সরকার স্বল্প, মধ্য এবং দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। যার ভিত্তিতে বর্তমানে ৭ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার বাস্তবায়ন চলছে এবং ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, প্রথমে আমরা ১০ বছর মেয়াদি প্রেক্ষিত পরিকল্পনা করেছিলাম সেটা বাস্তবায়ন শেষে ২০ বছর মেয়াদি (২০২১-৪১) প্রেক্ষিত পরিকল্পনা গ্রহণ করছি।

শতবর্ষ মেয়াদি ‘ডেল্টা পরিকল্পনা-২১০০’র প্রসংগও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।

তিনি এ সময় দেশের দারিদ্রের হার ২০ দশমিক ৫ শতাংশে নামিয়ে আনা এবং জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষ্যে বছরব্যাপী ‘মুজিব বর্ষ’ উদযাপনের সময়ে দারিদ্র আরো কমিয়ে আনার প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা মুজিববর্ষ উদযাপন করছি, সেই অনুষ্ঠান চলাকালে আরো দেড় থেকে দু’ভাগ এবং পরে আরো অন্তত তিনভাগ দারিদ্র যদি কমিয়ে আনতে পারি তাহলেই দেশকে আমরা দারিদ্র মুক্ত করতে পারবো।’

সরকারের দারিদ্র বিমোচন কর্মসূচিতে সেনা সদস্যদের অবদান তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, দেশের সকলকে অন্তত একটি ঘর তুলে দেওয়ার লক্ষ্যে সরকারের ‘আশ্রায়ন প্রকল্প’ও শুরু হয় সেনা সদস্যদের সহায়তায়।

তিনি এ সময় তাঁর সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ের বিভিন্ন কর্মসূচি, দেশের সকল বিদ্যালয়ে বিনামূল্যে পাঠ্য পুস্তক প্রদান, প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা স্তর পর্যন্ত ২ কোটি ৩ লাখ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি প্রদানের উল্লেখ করেন।

সরকার প্রধান বলেন, সমাজের কেউ যেন পিছিয়ে না থাকে এবং উন্নয়নের সুফলটা যেন একদম গ্রামের তৃণমূল পর্যন্ত পৌঁছায়, সেটা নিশ্চিত করাই তাঁর সরকারের লক্ষ্য।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার আদর্শ নিয়ে চলছে বলেই তাঁর সরকার দেশের এত উন্নয়ন করতে পারছে। প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ১৫ ভাগে উন্নীত করতে পেরেছে।

তিনি বলেন, ‘বিশ্বের অনেক উন্নত দেশও যখন প্রবৃদ্ধি অর্জনে পিছিয়ে পড়ছে, তখনও এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।’

Feb2

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সম্মুখসারিতে ছিল নারীরা: ড. ইউনূস

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: শনিবার, ৮ মার্চ, ২০২৫, ৪:৩০ অপরাহ্ণ
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সম্মুখসারিতে ছিল নারীরা: ড. ইউনূস

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে বাংলাদেশের ছাত্র-শ্রমিক-জনতা মিলে যে অসাধ্য সাধন করেছে তার সম্মুখসারিতে ছিল এ দেশের নারীরা। ফ্যাসিবাদী শক্তির প্রাণঘাতি অস্ত্রের সামনে হিমালয়ের মতো দাঁড়িয়েছিল আমাদের মেয়েরা।

তিনি বলেন, পতিত স্বৈরাচার দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করছে। আমাদেরকে এখন ততটাই সতর্ক থাকতে হবে যেমনটা আমরা যুদ্ধের মতো পরিস্থিতির মধ্যে ছিলাম। নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা রক্ষায় সর্বোচ্চ সজাগ থাকুন। নিপীড়নের বিরুদ্ধে সামাজিক ঐক্য গড়ে তুলুন। একে অন্যের পাশে দাঁড়ান। একটি সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ সমাজ গড়তে সরকারকে সহযোগিতা করুন।

৮ মার্চ (শনিবার) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, গণঅভ্যুত্থানে সম্মুখসারিতে থাকলেও আমাদের সমাজে এখনো অনেক ক্ষেত্রেই নারীরা পিছিয়ে আছে। নারীদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে সরকার সবসময় সচেষ্ট। এজন্য বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ চলমান। দুস্থ মায়েদের আর্থিক সহায়তা প্রদান, নারীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচি, কর্মজীবী নারীদের থাকার হোস্টেল, ডে-কেয়ার সেন্টার সুবিধাসহ বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ অন্তর্বর্তী সরকার নিচ্ছে। আরও কী কী করা যেতে পারে সেটা নিয়েও আলোচনা চলছে।

ড. ইউনূস বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতা রোধ সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকার। অনেক সময় নারীরা নির্যাতনের শিকার হলেও তারা বুঝতে পারেন না কোথায় অভিযোগ জানাবেন। নারীরা যেন তাদের অভিযোগ জানাতে পারেন সেজন্য হটলাইন চালু করা হয়েছে। আইনি সহায়তা দেওয়ার জন্য আমরা পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন, ২০১০ হালনাগাদ করার উদ্যোগ নিয়েছি। যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও সুরক্ষা আইন, ২০২৫ প্রণয়নের কাজও আমরা হাতে নিয়েছি। আমরা একটি নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন করেছি, তারাও তাদের সুপারিশগুলো দেবে।

নিরাপত্তাকর্মীরা পালন করবেন পুলিশের দায়িত্ব, করতে পারবেন গ্রেফতার

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: শনিবার, ৮ মার্চ, ২০২৫, ৪:২৩ অপরাহ্ণ
নিরাপত্তাকর্মীরা পালন করবেন পুলিশের দায়িত্ব, করতে পারবেন গ্রেফতার

রমজান ও ঈদ উপলক্ষে অনেক রাত পর্যন্ত ঢাকা মহানগরীর মার্কেট, শপিংমল খোলা থাকে। তবে পুলিশের স্বল্পতা রয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রাজধানীর বিভিন্ন আবাসিক এলাকা, শপিংমল ও মার্কেটগুলোতে ‘অক্সিলারি পুলিশ ফোর্স’ নিয়োগ দিয়েছে ডিএমপি।

আবাসিক এলাকা, বিভিন্ন মার্কেট, শপিংমলে নিয়োজিত বেসরকারি নিরাপত্তা কর্মীরা ‘অক্সিলারি পুলিশ ফোর্স’ হিসেবে কাজ করবেন। তাদের ক্ষমতা থাকবে গ্রেফতারের।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের আইনবলে তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী।

শনিবার (৮ মার্চ) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি।

তিনি বলেন, আজ ৭ রমজান। সন্ধ্যা হতেই মুসল্লিরা মসজিদে যান। দেড়-দুই ঘণ্টা সময় যায় তারাবির নামাজে। ওই সময় শহরের বিভিন্ন অলিগলিতে জনশূন্যতা তৈরি হয়। বিশেষ করে পুরুষ মানুষ তারাবি নামাজে থাকে। আপনারা বাড়ি, ফ্ল্যাট দোকান যত্নে রেখে আসবেন। নিরাপত্তাটা খেয়াল করবেন।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘আমি ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার হিসেবে আপনাদের জানাতে চাই, অনুরোধ করতে চাই, আপনারা যখন বাড়ি যাবেন (ঈদে), তখন আপনার বাড়ি, ফ্ল্যাট-দোকান, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা নিজ দায়িত্বে করে যাবেন। আমরা আপনাদের সাথে আছি। তবে আমাদের পুলিশের স্বল্পতা আছে। আমাদের লোকও অনেকে ছুটিতে যাবে, যেতে চায়। যারা ব্যারাকে থাকে, তারা দীর্ঘ সময় পরিবার ছাড়া থাকে। তাদের একটা পার্সেন্টেজ সরকারের নির্দেশে ছুটি দিতে হয়।’

শেখ মো. সাজ্জাত আলী আরও বলেন, শপিং সেন্টারগুলো অনেক রাত পর্যন্ত খোলা থাকবে। বিভিন্ন শপিংমল, শপিং সেন্টার ও গেট দিয়ে ঘেরা বিভিন্ন আবাসিক এরিয়ায় মেট্রোপলিটন পুলিশ আইনবলে অক্সিলারি (সহযোগী) পুলিশ ফোর্স নিয়োগ ক্ষমতা আমার আছে। সেই ক্ষমতা মোতাবেক আমি বেসরকারি নিরাপত্তা কর্মীদের অক্সিলারি পুলিশ ফোর্স হিসেবে নিয়োগ দিয়েছি। তাদের হাতে একটি ব্যান্ড থাকবে। লেখা থাকবে সহায়ক পুলিশ কর্মকর্তা।

আইন মোতাবেক তিনি দায়িত্ব পালন ও গ্রেফতারের ক্ষমতা পাবেন। পুলিশ অফিসার আইনগতভাবে যে প্রটেকশন পান এই অক্সিলারি ফোর্সের সদস্যরাও প্রটেকশন পাবেন।

এসময় উপস্থিত ছিলেন ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এন মো. নজরুল ইসলাম; অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) রেজাউল করিম মল্লিক, যুগ্ম কমিশনার রবিউল (ডিবি) ইসলাম ও মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম, রমনার ডিসি মাসুদ আলম, ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেসন্স বিভাগের মুহাম্মদ ডিসি তালেবুর রহমান প্রমুখ।

বৈষম্যবিরোধী ও সমন্বয়ক পরিচয়ের কী হবে, জানালে নাহিদ

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: শুক্রবার, ৭ মার্চ, ২০২৫, ৭:৩২ অপরাহ্ণ
বৈষম্যবিরোধী ও সমন্বয়ক পরিচয়ের কী হবে, জানালে নাহিদ

জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, বৈষম্যবিরোধী অথবা সমন্বয়ক পরিচয়ের এখন কোনো অস্তিত্ব নেই। এ সময় ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে দেওয়া নিজের বক্তব্য ভুলভাবে উপস্থাপিত হয়েছে মর্মে যুক্তি তুলে ধরেন তিনি।

শুক্রবার (৭ মার্চ) বিকালে জাতীয় নাগরিক কমিটির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

একটি আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় নিজের দেওয়া সাক্ষাৎকারের প্রসঙ্গে নাহিদ ইসলাম বলেন, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন সম্ভব নয়, এভাবে বলিনি। বলেছি পুলিশ যে নাজুক অবস্থায় আছে, সেই অবস্থায় থেকে নির্বাচন সম্ভব না। আমরা নির্বাচনের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত রয়েছি।

তিনি বলেন, রয়টার্সের ইন্টারভিউতে কিছু মিস কোড হয়েছে। আমি বলেছিলাম যে আমাদের আর্থিক বিষয়ে সমাজের যে সচ্ছল মানুষ বা শুভাকাঙ্ক্ষী রয়েছেন, তারা মূলত আমাদের সহযোগিতা করে। আমরা একটা ক্রাউড ফান্ডিংয়ের দিকে যাচ্ছি। অনলাইন এবং অফলাইন কেন্দ্রিক। ক্রাউড ফান্ডিংয়ের মাধ্যমে কার্যালয় স্থাপনসহ ইলেকশন ফান্ডিং রিচ করব। বিভিন্ন গণমাধ্যমে এটা নিয়ে ভুল তথ্য এসেছে। এটা সংশোধনের জন্য অনুরোধ থাকবে।

তিনি বলেন, দেশের বর্তমান পুলিশ প্রশাসনের কিন্তু সুষ্ঠু নির্বাচন করার অভিজ্ঞতা নেই। তাদের সক্ষমতার পরীক্ষা হয় না দীর্ঘদিন ধরে। নির্বাচনের আগে আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি অবশ্য উন্নত করতে হবে।

নাহিদ ইসলাম বলেন, সাম্প্রতিক দেশের বিভিন্ন স্থানে নারীর ওপর সহিংসতা, ধর্ষণের মতো ঘটনা ও ইভটিজিংয়ের মতো ঘটনা ঘটছে। এসব ঘটনায় উদ্বেগ ও নিন্দা জানাচ্ছে জাতীয় নাগরিক পার্টি।

জেএন/এমআর