খুঁজুন
বুধবার, ১২ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৭শে ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বদলে যাওয়া একটি দ্বীপের গল্প

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: বুধবার, ২৯ জানুয়ারি, ২০২০, ৩:৩৩ অপরাহ্ণ
বদলে যাওয়া একটি দ্বীপের গল্প

নুর মোহাম্মদ রানা : তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী তাসনিয়া। আদিনাথ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ছে সে। কক্সবাজারের দ্বীপ উপজেলা মহেশখালী’র এই শিক্ষার্থী প্রায়ই ঢাকার অভিজ্ঞ শিক্ষকের কাছ থেকে পাঠ নেয়। দুর শিক্ষণের মাধ্যমে সে নিজ বিদ্যালয়ে বসেই ইংরেজী, অংক, বাংলা বিষয়ে পাঠ নিচ্ছে। জাগো ফাউন্ডেশনের জাগো ডিজিটাল স্কুলের শিক্ষক ফারিহা আহমদ ঢাকায় বসেই সরাসরি তাসনিয়াদের ইংরেজী পড়াচ্ছেন।

তাসনিয়ার মতো ফারিহা ইসলাম, বুলবুল আহমদ সহ বিদ্যালয়টির অন্যান্য শিক্ষার্থীরাও খুশী দুর-শিক্ষণের মাধ্যমে ইংরেজী শিখতে পেরে। তাসনিয়া জানায়ঃ “ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আমরা ঢাকার ম্যাডাম থেকে পড়া শিখছি। এতে আমরা আনন্দ পাচ্ছি, নতুন নতুন অনেক কিছু শিখছি।“

দ্বীপের গোরকঘাটার আনোয়ারা বেগম তার ছয় বছরের মেয়েকে নিয়ে এসেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। জটিল রোগ হওয়ায় আনোয়ারা বেগম তার মেয়েকে নিয়ে কক্সবাজার কিংবা চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন দেখা দিল। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক শিব শেখর ভট্টাচার্য্য ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়ে আনোয়ারা বেগমের মেয়ের চর্ম রোগের ব্যবস্থাপত্র নিলেন। আনোয়ারা বেগম তার মেয়েকে নিয়ে এখন আর তাকে দূরে যেতে হচ্ছে না। দ্বীপে থেকেই ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখাতে পারছে। আনোয়রা বেগম জানানঃ “মহেশখালীতে বসেই তার মেয়ের বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের চিকিৎসা করাতে পেরে সে খুশী। তার সময় এবং অর্থ দুটোই বেঁচে গেল।“

দ্বীপের বাসিন্দা দিদারুল ইসলাম, মারুফা নাসরিন লোপা এবং রোমেনা আকতার। মূল ভুখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন এই দ্বীপে শুধু পড়ালেখা নিয়েই বসে থাকেননি এই তরুণ-তরুণীরা। পাশাপাশি যুক্ত হয়েছেন অনলাইন ব্যবসায়। নিজেদের গড়ে তুলেছেন উদীয়মান ‘উদ্যোক্তা’ হিসেবে। তারা মোট নয় জন মিলে গড়ে তুলেছেন অনলাইনে বিষমুক্ত শুটকি বিকিকিনির ব্যবসা প্রতিষ্টান ‘ই-বিজনেস সেন্টার’। এখান থেকেই ওই তরুণ-তরুণীরা মাঠ পর্যায় থেকে বিষমুক্ত শুটকি মাছ সংগ্রহ করে অনলাইনে দেশের নানাপ্রান্তে গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন। আর তাদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করে দেশের অন্যতম বৃহৎ অনলাইন প্রতিষ্টান ‘দারাজ’। মহেশখালীতে বেড়াতে আসা পর্যটকেরাও তাদের কাছ থেকে শুটকি কিনে নিয়ে যাচ্ছে।

এসবই সম্ভব হয়েছে দ্রুতগতির ইন্টারনেট গতির মাধ্যমে ই-সেবা দিয়ে মহেশখালীকে ইন্টারনেটের আওতায় নিয়ে আসার কারণে। ডিজিটাল আইল্যান্ড হিসেবে মহেশখালীকে পাইলট প্রকল্প হিসেবে গ্রহণ করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে এই সেবা দেয়া হচ্ছে। গত ২৭ জানুয়ারী ডিজিটাল আইল্যান্ড মহেশখালী উপজেলায় বিভিন্ন ই-সেবা, কেন্দ্র, ই-কমার্স সেন্টার এবং ডিজিটাল স্কুল সরেজমিনে গিয়ে এমন চিত্রই ফুটে উঠেছে। বর্তমান সরকার তথ্য প্রযুক্তির সেবা গ্রামের তৃনমূল পর্যায়ে পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে পাইলট প্রকল্প হিসেবে মহেশখালী দ্বীপকেই বেছে নিয়ে ক্রমান্বয়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ই-সেবা শুরু করেছে।

আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)-এর ডিজিটাল আইল্যান্ড প্রকল্পটি দেশের দ্রুততম ইন্টারনেট গতির মাধ্যমে মহেশখালীকে একটি বিচ্ছিন্ন উপদ্বীপ থেকে একটি উদীয়মান প্রযুক্তি কেন্দ্র হিসাবে রূপান্তর করতে সহায়তা করছে। এই প্রকল্পটি আইওএম বাংলাদেশ মিশনের প্রথম পাবলিক-প্রাইভেট-পার্টনারশিপ (পিপিপি) প্রকল্প।

আইওএম, কোরিয়া টেলিকম, বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল যৌথভাবে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। ডিজিটাল আইল্যান্ড প্রকল্পটি দ্বীপের একটি পৌর এলাকা ও দুইটি ইউনিয়ন এলাকার মানুষের মাঝে ডিজিটাল সেবা পৌঁছে দিচ্ছে। ২০১৭ সালের ২৭ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মহেশখালীকে ‘ডিজিটাল আইল্যান্ড’ ঘোষণা করেছিলেন।

আইওএম-এর ট্রানজিশন এন্ড রিকভারি ডিভিশন (টিআরডি)-এর প্রধান প্যাট্রিক শেরিগনন জানানঃ “মহেশখালী দ্বীপটিকে এই প্রকল্পের জন্য নির্বাচন করা হয়েছিল কারণ এটি বাংলাদেশের অন্যতম স্বল্প-উন্নত জনগোষ্ঠী। এখানে নিরক্ষরতার হার বেশি এবং মাটির লবণাক্ততা কৃষিফলনকে বাধাগ্রস্থ করে। স্থানীয় যুবসমাজ দ্বীপ থেকে স্থানান্তরিত হচ্ছে এর ফলে এই দ্বীপের ভবিষ্যৎ প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। ডিজিটাল দ্বীপ প্রকল্পটির লক্ষ্য হল সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের বিদ্যমান জনসুবিধাদির আরো প্রসার ঘটিয়ে মহেশখালীর বাসিন্দাদের জন্য সুযোগ তৈরি করা।“

প্রকল্পটির অর্জনগুলোর মধ্যে রয়েছে মহেশখালীতে বিদ্যমান একটি টাওয়ার সংস্কার এবং গিগা মাইক্রোওয়েভ স্থাপন যার ফলে মহেশখালীর বাসিন্দারা ১০০ এমবিপিএসেরও বেশি গতিসম্পন্ন ইন্টারনেট সুবিধা পাচ্ছেন। মহেশখালীর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো জামিরুল ইসলাম বলেনঃ “ডিজিটাল আইল্যান্ড একটি বহুমুখী প্রকল্প যা বাংলাদেশের অন্যতম বিচ্ছিন্ন জনগোষ্ঠীটিকে দেশের দ্রুততম গতির ইন্টারনেট মাধ্যমে বিশ্বের সাথে যুক্ত করেছে।“

তিনি আরো বলেনঃ “ডিজিটাল আইল্যান্ড প্রকল্পটির মাধ্যমে দ্বীপে পজিটিভ পরিবর্তন এসেছে। সুফল দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। তিনি বলেন, টেলিমেডিসিন, দুর-শিক্ষণ, তথ্যপ্রযুক্তি ও কমিউনিটি ক্লাবের মাধ্যমে সেবা পাচ্ছেন জনগণ।“ তাঁর মতে, দ্রুতগতির ইন্টারনেটের মাধ্যমে উপজেলা প্রশাসন ই-ফাইলিংয়ের মাধ্যমে ৮০ শতাংশ দাপ্তরিক কাজ করছে। ই-ফাইলিংয়ের মাধ্যমে মহেশখালী উপজেলা প্রশাসন সারাদেশের সবগুলো উপজেলার মধ্যে ১৪তম অবস্থান করে নিয়েছে।

মহেশখালী দ্বীপ সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, দ্রুতগতির ইন্টারনেট সুবিধা স্থানীয় জনগোষ্ঠীটিকে উন্নত স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং কর্মসংস্থানের পরিষেবাগুলো নিশ্চিতে ভূমিকা রাখছে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে দ্বীপটির বাসিন্দাদের শিক্ষার সরঞ্জামাদি এবং চিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য অনলাইন স্বাস্থ্য পরিষেবাও দেয়া হচ্ছে। স্থানীয় শুটকি উৎপাদনকারিদের উৎপাদিত শুটকি বিক্রির জন্য ই-কমার্সের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) পূরণে ‘ডিজিটাল আইল্যান্ড দ্বীপ’ উদ্যোগও বাংলাদেশের অগ্রগতির একটি অংশ হয়ে প্রকাশ পেয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রকল্পটি ই-টিচিং এবং ই-লার্নিংয়ের মাধ্যমে স্থানীয় শিক্ষকদের সক্ষমতা উন্নত করছে। প্রকল্পটি শেষ হওয়ার পরে এই প্রকল্পের মাধ্যমে দেয়া শিক্ষা-উপাদানগুলো স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এবং শিক্ষকদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। কীটনাশক এবং সংরক্ষণকারী রাসায়নিক উপকরণগুলোর ব্যবহার কমিয়ে স্থানীয়দের জৈব কৃষি এবং অর্গানিক পদ্ধতিতে মাছ শুকানোতে উৎসাহিত করছে এই প্রকল্প। পাশপাশি ই-কমার্সের মাধ্যমে উৎপাদিত পণ্য বিক্রির মাধ্যমে আয় বাড়ানো ও মধ্যস্বত্তভোগীদের দৌরাত্ম্য দূর করতে উৎসাহিত করা হচ্ছে।

‘ডিজিটাল দ্বীপে’র সুবিধাভোগীরা জানান, আইওএম-এর মাধ্যমে বাস্তবায়িত প্রকল্পের মাধ্যমে ২৫টি স্থানীয় সরকারি প্রতিষ্ঠানে দ্রুতগতির ইন্টারনেট সংযোগ দেয়া হয়েছে। এসব প্রতিষ্টান ১০০ এমবিপিএসেরও বেশি স্পিডের ইন্টারনেট পাচ্ছে।

জাগো ফাউন্ডেশন নামের একটি প্রতিষ্টানের মাধ্যমে দশটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের দূর-শিক্ষণ পরিষেবা দেয়া হচ্ছে। এই প্রক্রিয়ায় রাজধানী ঢাকার শিক্ষকরা মহেশখালী দ্বীপের শিক্ষার্থীদের তাৎক্ষণিক ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ইংরেজী কোর্সে শিক্ষা দেন।

চারটি কমিউনিটি স্বাস্থ্য ক্লিনিক এবং একটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মাধ্যমে মোবাইল স্বাস্থ্য পরিষেবা পাওয়া যাচ্ছে। এসব পরিষেবাগুলো হলো স্বয়ংক্রিয় স্বাস্থ্যগত রেকর্ড সিস্টেম, টেলিমেডিসিন পরামর্শ, মোবাইল স্বাস্থ্যসেবা ডিভাইসগুলোর মাধ্যমে নির্ণয়, যেমন- মূত্র পরীক্ষক, আল্ট্রাসাউন্ড ডিভাইস এবং রক্ত পরীক্ষক ইত্যাদি। স্থানীয় এবং সরকারী কর্মকর্তাদের কম্পিউটার দক্ষতা বিষয়ক প্রশিক্ষণও দেয়া হয়েছে আইওএমের গড়া ডিজিটাল সেন্টারে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সাথে সমন্বয় করে একটি কমিউনিটি ক্লাব এবং কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের মাধ্যমে কম্পিউটার এবং দ্রুতগতির ইন্টারনেট সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে বলে জানান তারা।

মহেশখালী পৌরসভার মেয়র মকছুদ মিয়া বলেনঃ “এই প্রকল্পের মাধ্যমে মহেশখালীবাসি অনেক সুফল পাচ্ছেন। শিক্ষার্থীরা ইন্টারনেটের মাধ্যমে ঢাকার মতো শিক্ষা পাচ্ছে। কৃষকরাও সুফল পাচ্ছেন। মাত্র তিন বছরে মহেশখালীকে ডিজিটাল আইল্যান্ড হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব নয়। এই দ্বীপকে ডিজিটাল দ্বীপ হিসেবে একশ ভাগ সফলতা পেতে হলে এই প্রকল্প চলমান রাখতে হবে।“

তিনি মনে করেন, এখন পৌরসভাসহ যে ৩ ইউনিয়নে ‘ডিজিটাল আইল্যান্ড’ প্রকল্পের কাজ চলছে তা ১০০ ভাগ সফল হওয়ার পর অন্য ৭টি ইউনিয়নকে এই প্রকল্পের অন্তর্ভূক্ত করতে হবে। তার আগে সব ইউনিয়নে একসাথে কাজ শুরু করলে পুরোপুরি সফলতা পাওয়া যাবে না।

উল্লেখ্য, আইওএম গত ২১ অক্টোবর, ২০১৯-এ এই দ্বীপে আয়োজন করে ‘ডিজিটাল আইল্যান্ড ফেস্ট’। এই আয়োজনে স্থানীয় শিক্ষার্থী ও বাসিন্দারা নানা সামাজিক-সাংস্কৃতিক পরিবেশনার এবং ভিডিও-অনলাইনের বিভিন্ন বিষয়ে প্রতিযোগীতার মাধ্যমে ‘ডিজিটাল দ্বীপ’-কে তুলে ধরে।

Feb2

পদত্যাগ করেছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আমিনুল ইসলাম

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: সোমবার, ১০ মার্চ, ২০২৫, ৩:০৮ অপরাহ্ণ
পদত্যাগ করেছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আমিনুল ইসলাম

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদা) অধ্যাপক এম আমিনুল ইসলাম পদত্যাগ করেছেন।

সোমবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সচিবের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন তিনি।সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের করিডোরে সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন ড. এম আমিনুল ইসলাম।

প্রধান উপদেষ্টার এ বিশেষ সহকারী বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছুই বলতে চাইছি না। আমি আমার পিএসের মাধ্যমে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিয়েছি।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সূত্র বলছে, সরকারের চাওয়া অনুযায়ী তিনি পদত্যাগ করেছেন।

গত প্রায় সাত মাসে কয়েক দফায় উপদেষ্টা পরিষদে রদবদল ও নতুন নিয়োগ হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টাসহ এখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে উপদেষ্টা ২৩ জন।

তাদের মধ্যে গত বুধবার অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আবরার (সিআর আবরার) উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নিয়েছেন। তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন। এত দিন শিক্ষা ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ এখন কেবল পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করছেন।

এর আগে গত নভেম্বরে প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদায় ৩ জনকে বিশেষ সহকারী নিয়োগ দেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। এই তিন বিশেষ সহকারী স্বরাষ্ট্র, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাদের সহযোগিতা করছেন। এই তিনজনের মধ্যে শিক্ষার দায়িত্বে ছিলেন অধ্যাপক এম আমিনুল ইসলাম।

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপা পুনরুদ্ধার করল ভারত

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: সোমবার, ১০ মার্চ, ২০২৫, ১২:০৮ পূর্বাহ্ণ
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপা পুনরুদ্ধার করল ভারত

আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগের নাম ছিল আইসিসি নকআউট বিশ্বকাপ। ২০০০ সালে নকআউট বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারতকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল নিউজিল্যান্ড। দুই যুগ পর সেই হারের প্রতিশোধ নিলো ভারত। কিউইদের ৪ উইকেটে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছে রোহিত শর্মার দল। তাতে সর্বশেষ আসরে পাকিস্তানের কাছে হারানো শিরোপা এবার পুনরুদ্ধার করল তারা।

দুবাইয়ে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৫১ রান সংগ্রহ করে নিউজিল্যান্ড। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৬৩ রান করেছেন ড্যারিল মিচেল। তাছাড়া ফিফটি পেয়েছেন মাইকেল ব্রেসওয়েল। ভারতের হয়ে দুটি করে উইকেট শিকার করেছেন বরুণ চক্রবর্তী ও কুলদীপ যাদব। জবাবে খেলতে নেমে ৪৯ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ভারত। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৭৬ রান করেছেন রোহিত।

২৫২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে উড়ন্ত সূচনা পায় ভারত। দুই ওপেনার রোহিত শর্মা ও শুবমান গিল শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ছিলেন। বিশেষ করে রোহিত, ব্যাট হাতে তিনি রীতিমতো ঝড় তোলেন। বড় ম্যাচে এসে নিজের সেরাটা দেখালেন ভারত অধিনায়ক।

দুই ওপেনারের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে শুরুর পাওয়ার প্লেতে বিনা উইকেটে ৬৪ রান তোলে ভারত। ৪১ বলে ব্যক্তিগত ফিফটি করেন রোহিত। তার তুলনায় কিছুটা রয়ে-সয়ে খেলেছেন গিল। ৫০ বলে ৩১ রান করে এই ওপেনার ফিরলে ভাঙে ১০৫ রানে উদ্বোধনী জুটি।

ওপেনারদের গড়ে দেওয়া শক্ত ভিতে দাঁড়িয়েও সুবিধা করতে পারেননি তিনে নামা বিরাট কোহলি। অভিজ্ঞ এই ব্যাটার ২ বলে করেছেন ১ রান। কোহলি ফেরার পর রোহিতও আর বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি। সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়েও থেমেছেন ৭৬ রানে।

১৮ রানের ব্যবধানে ৩ উইকেট তুলে তখন কিছুটা হলেও ম্যাচে ফেরে কিউইরা। তবে চতুর্থ উইকেট জুটিতে শ্রেয়াস আইয়ার ও অক্ষর প্যাটেল আবারো নিউজিল্যান্ডকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দেয়। ৬২ বলে ৪৮ রান করে আইয়ার ফিরলে ভাঙে ৬১ রানের চতুর্থ উইকেট জুটি।

এরপর অক্ষর, হার্দিক পান্ডিয়া শুরু পেলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি। তাদের বিদায়ে কিছুটা হলেও ভারতের ওপর চাপ পড়ে। তবে সেই চাপ শক্ত হাতে সামাল দেন লোকেশ রাহুল। এক প্রান্ত আগলে রেখে হিসেব-নিকেষ করে শট খেলেছেন তিনি। দলের প্রয়োজন মতো আক্রমণাত্মক হয়েছে তো আবার প্রয়োজনে দেখে-শুনে খেলেছেন। তার অপরাজিত ৩৪ রানের ইনিংসে ৬ বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ভারত।

এর আগে আগে ব্যাট করতে নেমে দুই ওপেনারের ব্যাটে ভালো শুরু পেয়েছিল নিউজিল্যান্ড। রাচিন রবীন্দ্র ও উইল ইয়াং বেশ আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেছেন। বিশেষ করে রাচিন। এই ইনফর্ম ব্যাটার পেসারদের বেশ স্বাছন্দ্যেই খেলছিলেন। যদিও সপ্তম ওভারে মোহাম্মদ শামিকে ফিরতি ক্যাচ দিয়েও জীবন পেয়েছিলেন।

তবে ভারত স্পিন আক্রমণে যাওয়ার পর বেশ ভুগেছেন রাচিন। অষ্টম ওভারের প্রথম বলে বরুণকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ডিপ মিডউইকেটে ক্যাচ দিয়েছিলেন রাচিন। এবারও বল হাতে পেয়ে জমাতে পারেননি ফিল্ডার। তাতে আরো একবার জীবন পান এই ওপেনার।

রাচিন জীবন পেলেও একই ওভারের পঞ্চম বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন উইল ইয়াং। এই ওপেনার সাজঘরে ফেরার আগে ২৩ বলে করেছেন ১৫ রান।

ফাইনালের মতো বড় ম্যাচে দুইবার জীবন পেয়েও বেশি দূর এগোতে পারলেন না রাচিন। এগারোতম ওভারে প্রথমবারের মতো আক্রমণে এসেই রাচিনকে ফিরিয়েছেন কুলদীপ যাদব। এই চায়নাম্যানের গুগলিতে বোকা বনে যান রাচিন। বোল্ড হওয়ার আগে ২৯ বলে করেছেন ৩৭ রান।

বড় ম্যাচে বেশিরভাগ সময়ই রান পান উইলিয়ামসন। তবে আজ সেই রীতি ভাঙলেন তিনি নিজেই। বাজে এক শটে রীতিমতো আত্মহত্যা করেছেন এই অভিজ্ঞ ব্যাটার! রাচিন ফেরার পর বড় দায়িত্ব ছিল তার কাঁধে। তবে আজ আর পারলেন না। ১৩তম ওভারের দ্বিতীয় বলে কুলদীপকে ফ্লিক করতে গিয়ে ফিরতি ক্যাচ দিয়েছেন তিনি। তার আগে ১৪ বলে করেছেন ১১ রান।

এরপর টম ল্যাথামও উইকেটে থিতু হয়ে ফিরেছেন। কিন্তু বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। ৩০ বলে করেছেন ১৪ রান। ১০৮ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর গ্লেন ফিলিপসকে সঙ্গে নিয়ে দলকে টেনে তোলেন ড্যারিল মিচেল। ভালো শুরু পেয়েও তা কাজে লাগাতে পারেননি ফিলিপস। ৫২ বলে করেছেন ৩৪ রান।

বাকি ব্যাটারদের আসা-যাওয়ার মাঝে এক প্রান্ত আগলে রেখেছিলেন মিচেল। দেখে-শুনে খেলায় প্রচুর ডট বল খেলেছেন। তাই ব্যক্তিগত ফিফটির পর গিয়ার পরিবর্তন করেন। তাতেই বাড়ে বিপদ। ৬৩ রান করে রোহিত শর্মার হাতে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি।

মিচেল ফিরলে দলের হাল ধরেন ব্রেসওয়েল। তার দুর্দান্ত ব্যাটিংয়েই লড়াই করার পুঁজি পায় দল। ৪০ বলে অপরাজিত ৫৩ রান করেছেন এই ব্যাটার।

মাগুরার শিশুটির সব ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে সরানোর নির্দেশ

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: রবিবার, ৯ মার্চ, ২০২৫, ১:০১ অপরাহ্ণ
মাগুরার শিশুটির সব ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে সরানোর নির্দেশ

মাগুরায় বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার শিশুটির সব ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে সরানোর নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

ওই শিশুর ছবি সরিয়ে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসির) দুপুর সোয়া ১২টার মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীর কাছে তথ্য জানানোর জন্য বলেছেন আদালত।

বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন উপস্থাপন করার পর রোববার (৯ মার্চ) হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদেশের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শাহিনুজ্জামান।

তিনি বলেন, মাগুরাসহ সারাদেশে ধর্ষণের ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যাওয়ায়, আজ পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করার পর, মাগুরার সেই শিশু সমস্ত ছবি ইউটিউব, ফেসবুকসহ অন্যান্য মাধ্যম থেকে সরিয়ে ফেলার জন্য বিটিআরসিকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে এ সংক্রান্ত বিষয়ে যথাযথ প্রক্রিয়ায় আবেদন করার জন্য পরামর্শ দিয়ে, আবেদনের পর এ সংক্রান্ত বিষয়ে পরবর্তী নির্দেশনা দেবেন বলে আদালত জানিয়েছেন।

এর আগে, শনিবার ঢাকা মেডিকেল থেকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচে) নেওয়া হয় শিশুটিকে। সেখানেই তার চিকিৎসা চলছে।

এদিকে, ধর্ষণের ঘটনায় মামলা করেছেন শিশুটির মা। মামলায় শিশুটির বোনের স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাশুরকে আসামি করা হয়েছে। তারা আগে থেকেই পুলিশের হেফাজতে ছিলেন। মামলার এজাহারে তিনি অভিযোগ করেন, মেয়ের স্বামীর সহায়তায় তার বাবা (শ্বশুর) শিশুটিকে ধর্ষণ করেন। বিষয়টি মেয়ের শাশুড়ি ও ভাশুর জানতেন। তারা ঘটনা ধামাচাপা দিতে শিশুটিকে হত্যাচেষ্টা চালান।