বিয়েতে যৌতুক দাবী, সীতাকুণ্ডে শশুড় বাড়ী যাওয়া আগেই জীবন দিলো তুশা

কামরুল ইসলাম দুলু : প্রেমের সম্পর্কে একে অপরকে আপন করে নিলেও শশুড়বাড়ী যাওয়ার আগেই লাশ হলো জান্নাতুল ফেরদৌস তুশা (১৮)।
স্বামীর বাড়ি গিয়ে নতুন জীবন শুরু করার আগেই অভিমানে পরাপরে চলে যেতে হলো তাকে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার সময় সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়া এলাকা থেকে পুলিশ গলায় ফাঁস দেওয়া তুুুুশার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে।
সীতাকুণ্ড মডেল থানার পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছে।
জানা যায়, উপজেলার শীতলপুরের লালবাগ এলাকার জাফর ইকবালের ছেলে ইমতিয়াজ হোসেন শিবলুর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে বাঁশবাড়িয়া এলাকার মোঃ রফিকের মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস তুশা’র। গত কয়েক মাস আগে তারা কোর্ট ম্যারিজের মাধ্যমে আকদ্ সম্পন্ন করে।

প্রথমে বিষয়টি তাদের পরিবার মেনে না নিলেও পরে তুশার পরিবার মেনে নেয়। কিন্তু বাঁধসাধে শিবলুর মা মাজেদা বেগম , তিনি কিছুতেই এই বিয়ে মানতে নারাজ। তবে শিবলু অনেক বুঝিয়ে কয়েকদিন আগে তার মাকে রাজি করান। আর এতে মাজেদা বেগম তুশার পরিবারের উপর চাপিয়ে দেন বিশাল যৌতুকের লিষ্ট।
তুশার খালাতো ভাই রায়হান বলেন, শিবলুর মা মাজেদা বেগম বিয়েতে তার ছেলেকে একটা পাকা ঘর করে দিতে বলেন। এছাড়া বিয়েতে দুই হাজার লোকের খাওয়ার ব্যবস্থা, বিভিন্ন পদের ফার্নিসারসহ আরো অন্যান্য যৌতুক দাবী করেন। যদি তা দিতে রাজি না হয় তাহলে তুশাকে তালাক দেওয়ার হুমকি দেয়।
এছাড়া শিবলুর মামা দেলোয়ার হোসেন বলেন, যৌতুক দিতে না পারলে তাকে তালাকের নোটিশ দাও, আমি এক সাপ্তাহের মধ্যে আরেকটি মেয়ে বিয়ে করাবো। দুইদিন আগে শিবলু ফোন করে তুশাকে বলেন, আমার মায়ের চাওয়া দাবীগুলো যদি পূরণে রাজি না হও তাহলে শনিবার তোমার কাছে ডিভোর্স লেটার যাবে।
তুশা শিবলুকে জানায় তাদের পক্ষে এত যৌতুক দেওয়া সম্ভব নয়। বৃহস্পতিবার বিকালে তাদের দুইজনের মধ্যে মোবাইলে বেশ তর্ক-বিতর্ক হয়।
তালাকের কথা শুনে অভিমানে সন্ধ্যায় ঘরের তিরের সাথে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে তুশা।
এব্যাপারে জানতে চাইলে ৬নং বাশঁবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ শওকত জাহাঙ্গীর বলেন, আমার ৫ নং ওয়ার্ডে একটি মেয়ে আত্মহত্যা করেছে খবর পেয়ে আমি বিষয়টি থানাকে অবহিত করি।
সীতাকুণ্ড মডেল থানার ওসি (তদন্ত) শামীম শেখ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বাঁশবাড়িয়া এলাকা থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় একটি মেয়ের লাশ উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছি।
যৌতুক দাবী করা নিয়ে অভিমানে মেয়েটি আত্মহত্যা করেছে বলে শুনেছি। এঘটনায় আত্মহত্যায় প্ররোচনা করার অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন