করোনা : মিরসরাইয়ে লাপাত্তা ২৮৫ প্রবাসী, ঝুঁকিতে উপজেলাবাসি

২৪ ঘন্টা ডট নিউজ। আশরাফ উদ্দিন, মিরসরাই : মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশ থেকে গত ২১ দিনে মিরসরাই উপজেলায় এসেছেন ২ হাজার প্রবাসী।
এরমধ্যে ১ হাজার ৬’শ ৯৯ জন প্রবাসীর ১৪ দিন পার হয়ে যাওয়ায় হোম কোয়ারেন্টিনে ৩০১ জন থাকার কথা থাকলেও আছেন মাত্র ১৬ জন প্রবাসী! বাকি ২৮৫ জন প্রবাসী লাপাত্তা। তারা কোথায় আছেন তার নির্দিষ্ট হিসেব নেই প্রশাসনের কাছে।
মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ রুহুল আমিন ২৪ ঘন্টা ডট নিউজকে বলেন, চলতি মাসের ১ মার্চ থেকে ২১ মার্চ পর্যন্ত মধ্যপ্রাচ্য সহ বিভিন্ন দেশ থেকে মিরসরাইয়ে ২ হাজার প্রবাসী এসেছেন। এদের মধ্যে ১৬৯৯ জন প্রবাসীর ১৪ দিন অতিবাহিত হওয়ায় হোম কোয়ারেন্টিনের প্রয়োজন নেই। বাকি ৩০১ জন হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার কথা।
খবর পেয়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আমি বাড়ি বাড়ি গিয়ে হোম কোয়ারেন্টিন অমান্য করায় কয়েকজনকে জরিমানা করেছি এবং হোম কোরারেন্টিনে থাকার নির্দেশ দিয়েছি। বর্তমানে মিরসরাইতে ১৬ জন প্রবাসী হোম কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন। অন্য প্রবাসীদের সনাক্তের চেষ্টা চলছে।
তিনি বলেন, এতো বড় উপজেলায় কয়জনকে খোঁজ করা সম্ভব। নিজেদের সচেতন হতে হবে। তাহলে সে নিজে, তার পরিবার, সমাজ, দেশ রক্ষা পাবে। আমি ইতমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গত ২১ দিনে দেশে ফেরত প্রবাসীদের তালিকা প্রকাশ করেছি।
জানা গেছে, উপজেলার হিঙ্গুলী ইউনিয়নের পূর্ব হিঙ্গুলী গ্রামের সরকার বাড়ির মৃত ছান্দু মিস্ত্রির ছেলে আসাদুজ্জামান আসাদ প্রকাশ এরশাদ গত ১১ মার্চ সৌদী আরব থেকে বাড়ি এসে হোম কোয়ারেন্টিন অমান্য করে দিব্যি চলাফেরা করছে।
একই ইউনিয়নের তালতলা এলাকার মাখন মেম্বার বাড়ির জগদ্বীশ নাথের ছেলে সুভাষ নাথ গত ১৮ মার্চ কাতার থেকে বাড়ি এসে প্রকাশ্যে ঘুরছেন।
২১ মার্চ মালয়েশিয়া থেকে দেশে এসে হোম কোয়ারেন্টিন মানছেন না হিঙ্গুলী গ্রামের সোবহান প্রকাশ কামাল ড্রাইভার বাড়ির ইসমাইলের ছেলে সোহেল। শুধু এরা নয়, উপজেলার ১৬ ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভার বিভিন্ন গ্রামের প্রবাসীরা এভাবে ঘুরছেন। এতে আতংকে আছেন স্থানীয়রা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেন, বারইয়ারহাট পৌরসভার এক কাউন্সিলরের মেয়ে বিদেশ থেকে এসে হোম কোয়ারেন্টিন অমান্য করছেন। তার কারণে আতংকের মধ্যে দিন কাটছে আমাদের।
এদিকে, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা ঘোষিত মহামারি করোনা ভাইরাসকে নিয়ন্ত্রণে ৩১ মার্চ পর্যন্ত স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকলেও সচেতনতা দেখা যায়নি গ্রামাঞ্চলের সাধারণ মানুষদের মাঝে। অনেকটা স্বাভাবিকভাবে প্রাত্যহিক কাজগুলো সেরে গভীর রাতে ফিরছেন তারা।
মাস্কের ব্যবহারও তেমন একটা নেই। অনেকে মেতে উঠছেন খোশ গল্পে আর আড্ডা দিচ্ছেন যে যার মতো। তবে দেশের লাইফ লাইন হিসেবে পরিচিত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ও মিরসরাই উপজেলার আঞ্চলিক সড়কগুলোতে গাড়ি চলাচল কিছুটা কমেছে।
উপজেলার ১৬ টি ইউনিয়ন ও ২ পৌরসভার চেয়ারম্যান ও মেয়রদের সভাপতি করে ইতোমধ্যে সাব-কমিটিও গঠন করা হয়েছে। কয়েকটি ইউনিয়নে করোনাভাইরাস এর প্রতিরোধে সচেতনতামূলক কার্যক্রম দেখা গেলেও বেশির ভাগ ইউনিয়নে তেমন কার্যক্রম চোখে পড়েনি।
উপজেলার করেরহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এনায়েত হোসেন নয়ন ২৪ ঘন্টা ডট নিউজকে বলেন, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ও মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। লিফলেট, সাবান, হ্যান্ডওয়াশ মাক্স বিতরণ করা এবং ইউনিয়ন জুড়ে মাইকিং করা হয়েছে।
২৪ ঘন্টা/আর এস পি
আপনার মতামত লিখুন