খুঁজুন
বৃহস্পতিবার, ১৩ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৮শে ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কর্ণফুলীর বর্তমান চিত্র ভয়াবহ-আর ক্ষতি হতে দেওয়ার সুযোগ নেই

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: শনিবার, ১২ অক্টোবর, ২০১৯, ৭:৩৭ অপরাহ্ণ
কর্ণফুলীর বর্তমান চিত্র ভয়াবহ-আর ক্ষতি হতে দেওয়ার সুযোগ নেই

.jpg

দেশের লাইফ লাইন, চট্টগ্রাম বন্দরের প্রাণ কর্ণফুলীর অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে উল্লেখ করে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ বলেছেন, কর্ণফুলীর বর্তমান চিত্র ভয়াবহ। এভাবে যদি চলতে থাকে অদূর ভবিষ্যতে এ নদী থাকবে কিনা আমার সন্দেহ আছে। এখন যে অবস্থায় আছে তা আর ক্ষতি করতে দেওয়ার সুযোগ নেই।

শনিবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে নগরের ফিরিঙ্গিবাজারে অভয়মিত্র ঘাটে চ্যানেল আইয়ের ২১ বছরে পদার্পণ উপলক্ষে ‘দেশের অর্থনীতির হার্ট কর্ণফুলীর দখল-দূষণমুক্তসহ ক্যাপিটাল ড্রেজিং করে পূর্বেও অবস্থায় ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

চ্যানেল আইয়ের চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রধান চৌধুরী ফরিদের সভাপতিত্বে এ বৈঠকে নদীপাড়ের দখল, পানি দূষণ, বিভিন্ন জলজ প্রাণী ও মাছের বিলুপ্তি, ভরাট, লাইটারেজ জাহাজের অলস বসে থাকা, সিলট্রেশন, নব্যতা সংকটসহ বিভিন্ন সমস্যা ও সমাধানে সুপারিশ উঠে আসে।

ভূমিমন্ত্রী আরো বলেন, সবই সরকার করে দেবে এমন নয়। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমাদের প্রবৃদ্ধি ৭-৮ শতাংশে থাকছে। রিজার্ভ বেড়েছে। কর্মসংস্থান বেড়েছে। অবকাঠামো উন্নয়ন হয়েছে ব্যাপক। এর সঙ্গে যদি আমাদের মাইন্ডসেট পরিবর্তন করতে না পারি তাহলে সাসটেইবেল হবে না।

কর্ণফুলীর বিষয়ে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব বেশি উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, বিশ্বের মধ্যে একমাত্র গড গিফটেড পোর্ট চট্টগ্রাম বন্দর। ২ হাজার ১০০ বছরের বেশি এ বন্দরের বয়স। কর্ণফুলী নদী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটিকে ঘিরে সরকারের অনেক পরিকল্পনা আছে। কর্ণফুলী নদী বন্দরের ব্যবহারের বিষয় আছে।

বন্দর চেয়ারম্যানের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, নদী রক্ষায় দ্রুত যা যা করার করতে হবে। ড্রেজিং ভেরি ইমপর্টেন্টে। এগ্রেসিভলি কাজ করেন। আমরা তো আছি। আমি চাই আপনি থাকাবস্থায় একটি ম্যানুয়াল তৈরি করে যান। যাতে সাসটেইবেল হয়। দরকার হলে স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে বসতে হবে। বন্দরকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।

বালু এখন গোল্ডের মতো হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, বালুর দাম বেশি। অনেকে নানা ভাবে নদীর বালু নিয়ে যাচ্ছে। বন্দরকে দায়িত্ব নিতে হবে কর্ণফুলী নদী রক্ষণাবেক্ষণের বিষয়ে।

তিনি বলেন, নিজেদের ইচ্ছেমতো চলা আর ঠিক হবে না। সবাই মিলে কর্ণফুলীকে রক্ষা করতে হবে। এটি আমাদের অহংকার, আমাদের প্রাণ। এটিকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। কর্ণফুলীর দুই পাড়ের শিল্পকারখানা সরাতে হবে। সিরিয়াসলি চিন্তা করতে হবে। না হলে হবে না। শিল্পকারখানার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে।

লাইটারেজ জাহাজের যত্রতত্র পার্কিং বন্ধের আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, সাগরের সঙ্গে এ নদীর লিংক আছে। আমাদের বাণিজ্য বাড়ছে। লাইটারেজ জাহাজ বাড়ছে। আজ থেকে ১০ বছর আগেও এত জাহাজ ছিল না নদীতে। কেন? হতে পারে নিম্নচাপ সৃষ্টি হলে জাহাজ আসবে নদীতে। কিন্তু পার্কিংয়ের জন্য এ নদী নয়। নেভিগেশনে সমস্যা হচ্ছে। সিলট্রেশন হচ্ছে। দূষণ হচ্ছে। বন্দর চেয়ারম্যানকে বিষয়টি কড়াভাবে দেখতে হবে। প্রয়োজনে কোস্টগার্ডের সহযোগিতা নিন।

তিনি বলেন, হালদা নদী একটি বিস্ময়। মৌসুমে মাছ ডিম ছাড়তে আসে। আবার চলে যায়। এটা প্রাকৃতিক বিষয়। কিন্তু কয়েক বছর ধরে নানা সমস্যা দেখা দিয়েছে শুনেছি।

পলিথিনের কারণে কর্ণফুলীতে ড্রেজার মেশিন অকার্যকর হয়ে যাওয়ার ছবি দেখিয়ে মন্ত্রী বলেন, পলিথিনের এই যদি অবস্থা হয়। এটা কার দায়িত্বে পড়ে। যত বেশি পারি সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।

সমন্বয়ের অভাব আছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, সবার সঙ্গে সবাই কথা বলে ধাপে ধাপে কাজ করলে সময় বাঁচবে, টাকা বাঁচবে। সিটি করপোরেশন বলেন সিডিএ বলেন সবাই কিন্তু সরকারের টাকা খরচ করছে। আলটিমেটলি জনগণের টাকা যাচ্ছে। প্রপার সমন্বয় থাকলে শুধু কর্ণফুলী নয়, সাসটেইনেবল সিটি হিসেবে গড়ে তুলতে পারবো। কর্ণফুলী নদী রক্ষায় ড্রেজিংসহ যা যা করা দরকার সর্বোচ্চ সহযোগিতা দেবেন বলে জানান মন্ত্রী।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, কর্ণফুলী আমাদের অস্তিত্ব। কর্ণফুলীকে দখল ও দূষণমুক্ত করতে হবে। কর্ণফুলী নদী কেন, কী কারণে, কী জন্য দূষণ হচ্ছে এটি কমবেশি সবাই জানি। সবাই বুঝি। সবাই যদি যার যার অবস্থান থেকে নিজের ওপর অর্পিত দায়িত্ব সুচারুরূপে পালন করলে দখল-দূষণ থেকে নদী রক্ষা পাবে।

তিনি বলেন, আমাদের প্রতিজ্ঞা করা উচিত, নাগরিক দায়িত্ব সুচারুরূপে পালন করবো। তাহলে বাসযোগ্য, সাসটেইবেল সিটি ফিরে পাবো। চার বছর মেয়রের দায়িত্ব পালনের তিক্ত ও ক্ষুদ্র অভিজ্ঞতা হচ্ছে নগরবাসীর সম্পৃক্ততা-সহযোগিতায় অনেক ঘাটতি আছে। কর্ণফুলীর জন্য বন্দরকে দায়ী করা হয়। ক্যাপিটাল ড্রেজিংতো করতে পারছে না। পলিথিনের লেয়ার জমে গেছে। কোনো মেকানিজম কাজ করছে না। তাই নাগরিকদের ভূমিকা বেশি। জনসচেতনতা প্রয়োজন।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল জুলফিকার আজিজ বলেন, বন্দর ও কর্ণফুলী ওতপ্রোতভাবে জড়িত। নদী না থাকলে বন্দর থাকবে না। ১ নম্বর জেটির নিচের দিকে নব্যতা বেড়েছে। আগে জাহাজ আসতো ৮ দশমিক ৭ মিটার ড্রাফটের। এখন জাহাজ আসে সাড়ে ৯ মিটার ড্রাফটের। কারণ আমরা ড্রেজিং করে নব্যতা বাড়িয়েছি। উপর দিকে নব্যতা বাড়াতে অনেক প্রতিবন্ধকতা। কারণ এখানে মাটিটা মাটি না, গার্বেজ। পলিথিনের উৎস বাসাবাড়ি। এটি ড্রেজিংয়ে বড় বাধা।

তিনি বলেন, সরকারের সদিচ্ছা আছে। মাস্টারপ্ল্যান করা হয়েছে। যেখানে ৫৬টি রিকমন্ডেশন আছে। একটি চসিক, সিডিএ, ওয়াসা, ডিসি অফিস ও বন্দর মিলে মনিটরিং করবে। মূল কথা ড্রেজিং লাগবে। আমরা বিদেশি ফার্মকে দিয়ে একটি স্টাডি করাচ্ছি। কতটা সোজা করা যায় নদীকে। নদীকে সুন্দর করতে হলে কিছুটা ভাঙা লাগবে।

সীমানার ব্যাপারে প্রতিবন্ধকতা আছে। এখানে যেসব বিজনেস ও শিল্প আছে সেগুলো কোথায় রিলোকেটেড হবে সেই স্টাডি আমি পাইনি। তারাও আমাদের অর্থনীতির অংশ।

দৈনিক আজাদী সম্পাদক এমএ মালেক বলেন, পলিথিন সরকার নিষিদ্ধ করেছে। কিন্তু আসছে কোথা থেকে। পলিথিনের উৎস কারখানা। সেখানে বোমা মারলে উড়ে চলে যাবে। কারখানায় তালা মারলে হবে না। একেবারে উচ্ছেদ করতে হবে। আমরা আসলে উৎসটা ধরি না।

তিনি আরো বলেন কর্ণফুলী হচ্ছে বাংলাদেশের ফুসফুস, কর্ণফুলী বাঁচাতে হবে এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। সবাই মিলে এটা করবো। নিজেদের বাঁচতে হবে। নিজেদের বাঁচাতে হলে পারিপার্শ্বিক সব কিছুতে লক্ষ্য রাখতে হবে। সচেতন হতে হবে। তাহলে দেশ ও জাতি বাঁচবে।

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ বলেন, কর্ণফুলী নদী দিয়ে দেশের সিংহভাগ আমদানি-রপ্তানি হয়ে থাকে। ৪০০-৫০০ বছর আগে কর্ণফুলী ছিল কোর্ট বিল্ডিংয়ের নিচে। ক্রমে দক্ষিণে সরে এসেছে। সরকারের টাকা আছে। কর্ণফুলী বাঁচাতে যদি ৬ মিটার খনন করতে হয় তবে উন্নত ড্রেজার আনতে হবে। দেশের মানুষের মধ্যে আইন না মানা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। এর জন্য সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে যাতে আইন মানে।

চট্টগ্রাম চেম্বারের সহ-সভাপতি ও সাইফ পাওয়ারটেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তরফদার মো. রুহুল আমিন বলেন, বাকলিয়ায় ২০ ইঞ্চি ড্রেজার লাগানোর পর আধ ঘণ্টা পর পর বন্ধ হয়ে যাচ্ছিলো। শুধু পলিথিন নয়, ফিশিং নেট, গৃহস্থালি বর্জ্যে ড্রেজার বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এরপর চীন থেকে আনা হলো ৩২ ইঞ্চি ড্রেজার। সেটিও ব্যর্থ হলো। এরপর বিশেষজ্ঞদের নিয়ে জরিপ করে দেখা গেলো ৪২টি খাল দিয়ে প্রতিদিন ৮-৯ হাজার মেট্রিকটন বর্জ্য নদীতে পড়ছে।

জোয়ার-ভাটার নদী হলে এখানে নৌযান চালানো যেত না। সিটি করপোরেশনের পানি যাচ্ছে বর্জ্যসহ। খালের মুখে বর্জ্য সার্ক করে পুড়িয়ে ফেলার ব্যবস্থা বিশ্বের সব জায়গায় আছে। কর্ণফুলী না বাঁচলে দেশ বাঁচবে না। কর্ণফুলী মরে গেলে পুরো দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক দেলোয়ার হোসাইন বলেন, ভূমিমন্ত্রীর বদান্যতায় ১ কোটি ২০ লাখ টাকার মধ্যে ২০ লাখ টাকা পেয়েছি। আরএস মূলে অবৈধ স্থাপনা আছে ২ হাজার ১১২টি, বিএস মূলে ৭৫টি। আদালতের রায়ে আরএস মূলে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে হবে। ৫ দিনে ২৩০টি স্থাপনা উচ্ছেদ করে ১০ একর জমি উদ্ধার করেছি। নিম্নআদালতে একটি মামলা রয়েছে। এখনো ১২টি মামলা রয়েছে। বর্তমান অর্থবছরে ভূমি মন্ত্রণালয়ে ২৫ কোটি টাকা চেয়ে রেখেছি। কর্ণফুলী আপনাদের নদী। দখলদারদের তালিকা নদী কমিশনের ও জেলা প্রশাসনের ওয়েবসাইটে রয়েছে। বন্দর চেয়ারম্যানের উদ্দেশে বলবো, উচ্ছেদ করা জায়গা মাস্টারপ্ল্যান করে দ্রুত শাসনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।

ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক একেএম ফজলুল্লাহ বলেন, কর্ণফুলীর সঙ্গে কাপ্তাই হ্রদের সম্পর্ক আছে। হ্রদটির নাব্যতা হ্রাস পেয়েছে, সে ব্যাপারে কেউ নজর দিচ্ছি না। স্যুয়ারেজ সিস্টেম না থাকায় নগরের ৫০ হাজার স্যানিটারি ল্যাট্রিনের আড়াই হাজার টন বর্জ্য নদীতে পড়ছে। এর বাইরে হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, কসাইখানা, লাইটার জাহাজের বর্জ্য, পাহাড়ি বালু নদীতে পড়ছে। কর্ণফুলী ও হালদা এখনো বেঁচে আছে জোয়ার-ভাটার কারণে। কিছু দিন পর এ নদী খালে পরিণত হবে। দুর্বিষহ অবস্থা নেমে আসবে।

বিজিএমইএর প্রথম সহ-সভাপতি এমএ সালাম বলেন, কর্ণফুলী সুন্দর রাখতে হবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য। পাহাড় খেয়ে ফেলেছি আমরা। কর্ণফুলী খেয়ে ফেললে দেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। শিল্প বাড়বে, এটা বন্ধ করা যাবে না। শিল্পকে সবুজ করার জন্য ব্যবসায়ীদের কমিটমেন্ট থাকতে হবে।

হালদা বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরীয়া বলেন, কর্ণফুলীর পাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও দূষণ বন্ধে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক সমন্বয় জরুরি। চসিক, সিইউএফএল, কেপিএম ও ওয়াসা দূষণ বন্ধে উদ্যোগী হতে হবে। কালুরঘাট থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত ফেরি সার্ভিস চালু করলে নগরের অর্ধেক যানবাহন কমে যাবে।

কর্ণফুলী বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. ইদ্রিস আলী বলেন, নদীকে ব্যবসার উপাদানে পরিণত করা হয়েছে। ক্যাপিটাল ড্রেজিং বন্ধ মানে হচ্ছে অপারেশন থিয়েটারে রোগীর অর্ধেক অপারেশন করে ডাক্তারের চলে যাওয়ার মতো।

আইবিএফবি’র সভাপতি এসএম আবু তৈয়ব বলেন, মানুষের শরীরের নার্ভ ঠিক না থাকলে ব্যথা অনুভব হয়। পৃথিবীর নার্ভ হচ্ছে নদী, খাল, জলাশয়। কর্ণফুলী নামের সঙ্গে একটি মেয়ের কানের দুল হারানোর লোকগাথা আছে, কিন্তু এখন আমরা কর্ণফুলী নদীই হারাতে বসেছি।

স্থপতি আশিক ইমরান বলেন, কঠোর রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে কর্ণফুলীর দখল ও দূষণ বন্ধে। সরকার র‌্যাংগস ভবন ভেঙে সড়ক করেছে, হাতির ঝিল করেছে, নদীপাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করছে। কর্ণফুলীও বাঁচাতে পারবে।

কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব বলেন, কর্ণফুলী চট্টগ্রামের নাভি। ভূমিমন্ত্রীর ওপর আমরা আস্থা রাখতে চাই। তিনি বলেছিলেন, দখলদারদের চেয়ে সরকারের হাত অনেক বেশি লম্বা।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলনের সম্পাদক- সাংবাদিক আলীউর রাহমান। সেসময় চ্যানেল আইএর দর্শক ফোরামের সদস্য জাহেদুর রহমান সোহেল, মোহাম্মদ এনাম, আনোয়ারা উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি অ্যাপক আব্দুল মান্নান, সাধারণ সম্পাদক এম এ মালেক, কর্ণফুলী উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ফারুখ, কর্ণফুলী উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক হায়দার আলী রণি, কর্ণফুলী সাম্পান মাঝি কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি পেয়ার আলী, সহ সভাপতি জাফর আহম্মদ, সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম, চর পাথরঘাটা ইউপি চেয়ারম্যান সাবের আহম্মদ, সাংস্কৃতিক সংগঠক আব্দুল হালিম দোভাষ উপস্থিত ছিলেন।

Feb2

শরণার্থী শিবিরে এক লাখ রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতার করবেন প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘ মহাসচিব

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: বুধবার, ১২ মার্চ, ২০২৫, ১০:০৫ অপরাহ্ণ
শরণার্থী শিবিরে এক লাখ রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতার করবেন প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘ মহাসচিব

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস শুক্রবার কক্সবাজারে প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতার করবেন। প্রধান উপদেষ্টার উদ্যোগে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে এই ইফতার পার্টির আয়োজন করা হয়েছে। বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপ-প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বৃহস্পতিবার চার দিনের সফরে বাংলাদেশ আসছেন। জাতিসংঘ মহাসচিবের চার দিনব্যাপী এ সফরসূচি তুলে ধরেন উপ-প্রেস সচিব আজাদ মজুমদার। তিনি বলেন, আন্তোনিও গুতেরেস বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটায় ঢাকায় আসবেন। ১৬ মার্চ তিনি ফিরে যাবেন। এই চার দিনের মধ্যে মূলত শুক্র ও শনিবার তাঁর মূল কর্মসূচিগুলো আছে।

তিনি জানান, শুক্রবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তিনি সেই দিন রোহিঙ্গা শিবিরে চলে যাবেন। একই সঙ্গে কক্সবাজারে যাবেন প্রধান উপদেষ্টা। তবে কক্সবাজারে প্রধান উপদেষ্টার আলাদা কর্মসূচি আছে। জাতিসংঘের মহাসচিব কক্সবাজার থেকে সরাসরি রোহিঙ্গাশিবিরে চলে যাবেন। সেখানে তিনি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। সেখানে তাঁর কর্মসূচিগুলো শেষ হওয়ার পর তিনি রোহিঙ্গাদের সঙ্গে ইফতার করবেন। আর প্রধান উপদেষ্টা তাঁর কক্সবাজারের পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি শেষ করে এই ইফতারে অংশ নেবেন।

আজাদ মজুমদার বলেন, ‘আমরা আশা করছি, প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘের মহাসচিবের সঙ্গে এক লাখ রোহিঙ্গা ইফতারে যোগ দেবেন। এই ইফতার আয়োজন করা হচ্ছে প্রধান উপদেষ্টার সৌজন্যে।’ তিনি বলেন, পরদিন শনিবারও জাতিসংঘের মহাসচিব একটি কর্মব্যস্ত দিন কাটাবেন। তিনি সকালে জাতিসংঘের ঢাকা কার্যালয় পরিদর্শন করবেন। তারপর দুপুরে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ও সুশীল সমাজের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এ ছাড়া তিনি সেদিন সংবাদ সম্মেলনেও বক্তব্য দেবেন। সেদিনই জাতিসংঘের মহাসচিবের সম্মানে ইফতার ও রাতের খাবারের আয়োজন করছেন প্রধান উপদেষ্টা। সেখানে জাতিসংঘের মহাসচিব যোগ দেবেন। পরদিন তিনি বাংলাদেশ ছাড়বেন।

সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, জাতিসংঘের মহাসচিবের বাংলাদেশে এটি দ্বিতীয় সফর হবে। এই সফর বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ২০১৮ সালে তিনি একবার বাংলাদেশ সফর করেছিলেন। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এই রোহিঙ্গা সংকটের সমাধানের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। সরকার বিশ্বাস করে, জাতিসংঘের মহাসচিবের এই সফরের ফলে রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়টি আবার বৈশ্বিক আলোচনায় আসবে। সরকার আশা করে, এ বিষয়ে জাতিসংঘের মহাসচিব একটি ভালো বার্তা দেবেন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন মাহমুদউল্লাহ

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: বুধবার, ১২ মার্চ, ২০২৫, ৯:১৮ অপরাহ্ণ
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন মাহমুদউল্লাহ

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। টেস্ট ও টি২০ থেকে আগেই অবসর নেওয়ায় শুধু ওয়ানডে খেলতেন ৩৯ বছর বয়সী এ ব্যাটার। আজ বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক ঘোষণায় ওয়ানডে ক্রিকেটকেও বিদায় বললেন তিনি। তাঁর ওয়ানডে ক্রিকেট ছেড়ে দেওয়ার অর্থ হলো- আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বলে দেওয়া।

রাত সাড়ে ৮টার দিকে ফেসবুকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘সকল প্রশংসা মহান আল্লাহর। আমি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমার সকল সতীর্থ, কোচ এবং বিশেষ করে আমার ভক্তদের ধন্যবাদ দিতে চাই, যারা সবসময় আমাকে সমর্থন দিয়েছে।’

আগের দিন মঙ্গলবার জাতীয় দলের কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। বিসিবি এ দিন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, মার্চ মাস থেকে চুক্তিতে না রাখার অনুরোধ করেছেন মিডলঅর্ডার এ ব্যাটার। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলায় এ বছর জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন পাবেন তিনি। ওয়ানডে থেকে অবসর নেওয়ায় মুশফিকুর রহিম মার্চ থেকে অবনমিত হবেন ‘বি’ ক্যাটেগরিতে। মাহমুদউল্লাহ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছাড়ার ঘোষণা না দিলেও কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেওয়ার অর্থ হতে পারে জাতীয় দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকছেন না।

আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ইতি টানার আগে সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল, মাশরাফি বিন মুর্তজাও কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন। মাশরাফি আনুষ্ঠানিক বিদায় না বললেও তামিম আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন গত জানুয়ারিতে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শেষে ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে অবসর নেন মুশফিক।

পদত্যাগ করেছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আমিনুল ইসলাম

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: সোমবার, ১০ মার্চ, ২০২৫, ৩:০৮ অপরাহ্ণ
পদত্যাগ করেছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আমিনুল ইসলাম

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদা) অধ্যাপক এম আমিনুল ইসলাম পদত্যাগ করেছেন।

সোমবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সচিবের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন তিনি।সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের করিডোরে সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন ড. এম আমিনুল ইসলাম।

প্রধান উপদেষ্টার এ বিশেষ সহকারী বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছুই বলতে চাইছি না। আমি আমার পিএসের মাধ্যমে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিয়েছি।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সূত্র বলছে, সরকারের চাওয়া অনুযায়ী তিনি পদত্যাগ করেছেন।

গত প্রায় সাত মাসে কয়েক দফায় উপদেষ্টা পরিষদে রদবদল ও নতুন নিয়োগ হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টাসহ এখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে উপদেষ্টা ২৩ জন।

তাদের মধ্যে গত বুধবার অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আবরার (সিআর আবরার) উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নিয়েছেন। তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন। এত দিন শিক্ষা ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ এখন কেবল পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করছেন।

এর আগে গত নভেম্বরে প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদায় ৩ জনকে বিশেষ সহকারী নিয়োগ দেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। এই তিন বিশেষ সহকারী স্বরাষ্ট্র, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাদের সহযোগিতা করছেন। এই তিনজনের মধ্যে শিক্ষার দায়িত্বে ছিলেন অধ্যাপক এম আমিনুল ইসলাম।