লক্ষ্মীপুরে নির্দেশনা মানছে না জনপ্রতিনিধিরা

অ আ আবীর আকাশ,লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি ::::লক্ষ্মীপুর পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে গাছ ও বাঁশ দিয়ে সড়ক বন্ধ করে অঘোষিত ‘লকডাউন’ করা হয়েছে। পৌরসভার ৩, ৪, ৫, ১১ ও ১২ নং ওয়ার্ডের স্থানীয় কাউন্সিলর ও ব্যক্তি উদ্যোগে এ লকডাউন করা হয়। এতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গাড়িসহ জরুরী যানবাহন ও রোগীবাহী যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে।
এদিকে সড়ক অবরোধকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে বিভিন্ন স্থানে অবরোধকারীদের বাকবিতন্ডার ঘটনা ঘটে। কোন এলাকায় লকডাউন করতে হলে জেলা প্রশাসনের অনুমোতির নিয়ম থাকলেও প্রশাসনের নির্দেশনা মানছেন না এসব জনপ্রতিনিধিরা।
স্থানীয়রা জানায়, লকডাউনের নামে এলাকার প্রধান প্রধান সড়কগুলো বন্ধ করায় বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে। এতে এলাকার বিভিন্ন মোড়ে বখাটে আর নেশাগ্রস্থদের আড্ডা বেড়ে যাচ্ছে। বাহিরে লকডাউন ভিতরে সুযোগ নিচ্ছে মাদকসেবীরা। রাস্তা বন্ধ থাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান ব্যহত হওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে।
বুধবার সকালে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের আবদুল হাকিম সড়ক, বিদ্যানিকেতন সড়ক ও ইসলাম বক্স ভূইয়া সড়কসহ বিভিন্ন সড়ক স্থানীয় কাউন্সিলর উত্তম দত্ত ও ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ফজলু ভূঁইয়ার নেতৃত্বে বাঁশ দিয়ে বন্ধ করে দেয়া হয়। এতে স্থানীয়দের সাথে অবরোধকারীদের বাকবিতান্ডার ঘটনা ঘটে। পরে প্রশাসনের তোপের মুখে আবদুল হাকিম সড়কের বাঁশ অপসারণ করা হলেও অন্যান্য সড়কের বাঁশ এখনো অপসারণ করা হয়নি। এতে স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে।
এ বিষয়ে লক্ষ্মীপুর পৌর সভার ৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর উত্তম দত্ত’র কাছে জানতে চাইলে তিনি সড়ক অবরোধ করার বিষয়টি অস্বীকার করলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সড়ক বন্ধের সময় তার উপস্থিতির ছবি প্রকাশিত হয়।
এদিকে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পৌরসভার ১১ নং ওয়ার্ডের পলোয়ান মসজিদ এলাকার ফরিদিয়া সড়কে বাঁশ বেঁধে দেয়া হয়। এতে সড়কটি দিয়ে জরুরী যানবাহন ও রোগীবাহী যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। একই ওয়ার্ডের মুক্তিগঞ্জ এলাকার সড়কের ওপর বৈদ্যুতিক খুঁটি ফেলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে কিছু অতিউৎসাহী লোকজন।
অপরদিকে, পৌর সভার ১২ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মীর শাহাদাত হোসেন রুবেল মঙ্গলবার রাতে তাঁর ফেইসবুক পেজে ঘোষণা দিয়ে ১২ নং ওয়ার্ডে প্রবেশের প্রতিটা রাস্তা বন্ধ করে দেয়। এতে স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। অন্যদিকে পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ড ও পৌর ৪নং ওয়ার্ডের আভ্যন্তরীণ বিভিন্ন রাস্তা একই ভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়।
প্রশাসনের অনুমতি ব্যতিরেকে একই ভাবে জেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের সড়কগুলো বন্ধ করে দিয়েছে বিভিন্ন চেয়ারম্যান ও স্থানীয় প্রতিনিধিরা। এতে ওইসব এলাকায় বাহিরে থেকে লকডাউন বুঝালেও এলাকার বিভিন্ন স্থানে মাদকসহ বিভিন্ন অসামাজিক কার্যকলাপ বৃদ্ধি পাওয়া আশঙ্কা রয়েছে।
লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক অঞ্জন চন্দ্র পাল বলেন, জেলার কোন এলাকা এখন পর্যন্ত লকডাউন করা হয়নি বা কোন রাস্তা বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়নি। জেলা প্রশাসকের অনুমিত ছাড়া কেউ কোন রাস্তা বা এলাকা বন্ধ করতে পারবে না বলে জানান তিনি।
আপনার মতামত লিখুন