ফটিকছড়িতে বাবা ভান্ডারীর খোশরোজ শরীফ সম্পন্ন, ভক্ত-জনতার ঢল

মাইজভান্ডার দরবার শরীফের আধ্যাত্মিক সাধক মাওলানা সৈয়দ গোলামুর রহমান প্রকাশ বাবা ভান্ডারীর (ক:)’র ১৫৭ তম ২ দিন ব্যাপী খোশরোজ শরীফ সম্পন্ন হয়েছে।
আনজুমানে রহমানিয়া মইনীয়া মাইজভান্ডারীয়ার উদ্যোগে লাখো ভক্ত-জনতার অংশগ্রহণে ও দেশবাসীর ওপর আল্লাহর রহমত ও নিপীড়িত মানবতার মুক্তির কামনায় আখেরি মুনাজাতের মাধ্যমে খোশরোজ শরীফ সম্পন্ন হয়।
আজ ১৪ অক্টোবর চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার মাইজভান্ডার দরবার শরীফের গাউছিয়া রহমান মঞ্জিল ও আশেকানে মাইজভান্ডারী এসোসিয়শনের আয়োজনে খোজরোজ শরীফ উপলক্ষে দেশ-বিদেশের লাখো আশেকান ও ভক্তবৃন্দ বিভিন্ন যানবাহন যোগে দরবারে এসে অংশ গ্রহন করেন।
আগত ভক্ত ও আশেকানরা মাইজভান্ডার এসে গাউছিয়া রহমান মঞ্জিল ও গাউছিয়া রহমানিয়া মঞ্জিলের পূর্ব বাড়ীতে সারিবদ্ধভাবে সাজ্জাদানশীনদের সাথে সাক্ষাত করেন। ভক্তরা মাইজভান্ডার শরীফের সকল রওজায় জেয়ারতের মাধ্যমে নিজ নিজ মনোবাসনা পূরনের জন্য কোরআন তেলোয়াত, জিকির আজকার করে মহান রাব্বুল আলামীনের দরবারে ফরিয়াদে মশগুল ছিলেন।
খোশরোজ শরিফের প্রধান ও সমাপনী দিবসের মাহফিলে সভাপতিত্ব ও আখেরি মুনাজাত পরিচালনা করেন মাইজভাণ্ডার দরবার শরিফের সাজ্জাদানশীন, আনজুমান কেন্দ্রীয় সভাপতি হযরত শাহ্সূফী মাওলানা সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী (ম.জি.আ.)।
তিনি বলেন, ইসলামের সূফিবাদি দর্শন চর্চার উৎকৃষ্ট স্থান হচ্ছে মাইজভাণ্ডার শরিফ। সূফিসাধকরা কখনো মানুষে-মানুষে কোনো প্রভেদ-বিভাজনকে প্রশ্রয় দেন না। তেমনি গাউছুল আ’যম হযরত সৈয়দ গোলামুর রহমান বাবাভাণ্ডারী (ক.) মানুষে-মানুষে ঐক্য-সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন গড়ার দিক নির্দেশনাই দিয়ে গেছেন।
তিনি আজকের সহিংস অশান্ত বিশ্বে শান্তি ও জননিরাপত্তা ফিরিয়ে আনতে হযরত বাবাভাণ্ডারী (ক.) ও মাইজভাণ্ডারী মহাত্মাদের প্রদর্শিত বিশ্বশান্তির রূপরেখা অনুসরণের আহ্বান জানান।
খোশরোজ শরিফের কর্মসূচিতে ছিল খতমে কুরআন, খতমে গাউছিয়া, রওজায় গিলাফ চড়ানো, জিয়ারত, ফ্রী চিকিৎসা ক্যাম্প, হুজুর কেবলার জীবনী আলোচনা, ওয়াজ-মিলাদ, ছেমা, কাওয়ালী ও রাতে তবারক বিতরণ।
খোশরোজ মাহফিলে বিশেষ অতিথি ছিলেন, শাহ্জাদা আল্হাজ্ব হযরত সৈয়দ মাশুক-এ-মইনুদ্দীন আল্-হাসানী, শাহ্জাদা আল্হাজ্ব হযরত সৈয়দ হাসনাইন-এ-মইনুদ্দীন আল্-হাসানী, হযরত সৈয়দ মইনুদ্দীন আহমদ মাইজভাণ্ডারী ট্রাস্টের মহাসচিব এডভোকেট কাজী মহসীন চৌধুরী।
হযরত বাবাভাণ্ডারী কেবলা (ক.)’র জীবনদর্শনের ওপর আলোচনায় অংশ নেন আন্জুমান কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি খলীফা অ্যাডভোকেট ওয়াজউদ্দীন মিয়া, আল্হাজ্ব কবির চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক খলীফা আল্হাজ্ব আলমগীর খান মাইজভাণ্ডারী, খলিফা আব্দুল মান্নান, মাওলানা মুফতী বাকী বিল্লাহ আল-আযহারী, হযরত মাওলানা রুহুল আমিন ভূঁইয়া চাঁদপুরী, হযরত মাওলানা বাকের আনসারী, হযরত মাওলানা নঈমউদ্দিন, মাওলানা এইচ এম মাকসুদুর রহমান প্রমুখ।
খোশরোজ শরীফ সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন করতে উপজেলা প্রশাসন, থানা পুলিশ, গাউছিয়া রহমান মঞ্জিল ও আশেকানে মাইজভান্ডারী এসোসিয়েশনের স্বেচ্ছা সেবকবৃন্দ আইন শৃংখলা রক্ষার্থে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা করেন। ফলে কোন অপ্রিতিকর ঘটনা ছাড়া সুন্দর ও সুষ্টু ভাবে খোশরোজ শরীফ সম্পন্ন হয়।
রাতে কর্মসূচী শেষে বিশ্বের সকল উম্মাহর সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে আখেরী মোনাজাত পরিচালনা করেন, সাজ্জাদানশীন শাহ ছূফি মাওলানা ছৈয়দ মুজিবুল বশর আল-হাছানী আল-মাইজভান্ডারী (ম:জি:আ:)।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন শাহজাদা সৈয়দ নুরুল বশর আল-হাছানী আল- মাইজভান্ডরী সহ বাবা ভান্ডারীর আওলাদ ও অশেকানে ভক্তরা। পবিত্র খোশরোজ শরীফ সুষ্ট ও সুন্দর ভাবে সম্পন্ন হওয়ায় গাউছিয়া রহমান মঞ্জিল ও আশেকানে মাইজভান্ডারী এসোসিয়েশন সকল ভক্ত ও সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কতৃজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
আপনার মতামত লিখুন