উধাও’ করোনা ফিরলো যশোরে পরীক্ষা শুরুতেই, যশোরে নতুন আক্রান্ত-১১

যশোর প্রতিনিধি::যশোর থেকে উধাও হয়ে যাওয়া কোভিড-১৯ (করোনাভাইরাস) ফিরলো বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয় দফা নমুনা পরীক্ষা শুরু করামাত্র।
আজ সকালে যবিপ্রবি থেকে পরীক্ষার ফলাফলের যে রিপোর্ট সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে পাঠানো হয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, এই জেলার ৫৭ নমুনার মধ্যে ১১টিই পজেটিভ।
এছাড়া এদিন (যবিপ্রবি) পরীক্ষাগারে ঝিনাইদহের ৭ এবং চুয়াডাঙ্গার ১ জন করোনা রোগী শনাক্ত হন। এই ২ জেলার যথাক্রমে ২৩ ও ১৩টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছিল। আর মাগুরার পরীক্ষিত ১টি নমুনার ফল নেগেটিভ আসে।
আজকের ফলাফলসহ যশোর জেলায় এখন পর্যন্ত মোট ৬৯ জন করোনাভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তির সন্ধান মিললো। এর মধ্যে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষাগার থেকেই ৬৬ জনের ফলাফল পজেটিভ আসে। আর মাত্র ৩ টি নমুনার ফলাফল পজেটিভ আসে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরীক্ষাগার থেকে।
দুই প্রতিষ্ঠানের ল্যাবে নমুনা পরীক্ষার ফলাফলে আকাশ_পাতাল ব্যবধান নিয়ে গতকাল সোমবার একটি বিশ্লেষণধর্মী রিপোর্ট প্রকাশ করে। এছাড়া যবিপ্রবি ল্যাব জীবাণুমুক্ত করার জন্য কয়েকদিন বন্ধ থাকার সময় খুলনা থেকে একের পর এক নেগেটিভ ফলাফল আসার বিষয়টিকে সন্দেহে রেখে, যশোর থেকে হঠাৎ করোনা উধাও শিরোনামে আরেকটি রিপোর্ট প্রকাশ করে।
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনোম সেন্টারে সোমবার এই অঞ্চলের কয়েকটি জেলার সন্দেহভাজন করোনা রোগীদের মোট ৯৪ টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে ১৯টি নমুনা পজেটিভ হয়।
এদিন যশোর জেলার ৫৭টি নমুনার মধ্যে ১১টি, ঝিনাইদহের ২৩টির মধ্যে ৭টি এবং চুয়াডাঙ্গার ১৩টির মধ্যে একটি নমুনা পজেটিভ পাওয়া যায়। আর মাগুরা জেলার একটি নমুনা পরীক্ষা করে ফল আসে নেগেটিভ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ও জেনোম সেন্টারের সহকারী পরিচালক প্রফেসর ড. ইকবাল কবীর জাহিদ সোমবার জানিয়েছিলো,এ দিন যশোর, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা এবং ঝিনাইদহ জেলা থেকে মোট ৯১টি নমুনা এসেছে। এইগুলোর মধ্যে থেকে কিছু এবং পেন্ডিং থাকা কিছু নমুনা পরীক্ষা করা হয় সোমবার।
যবিপ্রবির প্রথম দফা পরীক্ষার কাজে নিয়োজিত টিমের লিডার (বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে) প্রফেসর জাহিদ আজ মঙ্গলবার সকালে জানান, পরীক্ষার ফলাফল ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট জেলার সিভিল সার্জনদের কাছে ইমেইল-যোগে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
কোড অনুযায়ী রোগীদের চিহ্নিত করে সংশ্লিষ্ট সিভিল সার্জনরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন।
এই বিষয়ে সকালে যশোরের সিভিল সার্জন ডা. মো. আবু শাহীন সংবাদকর্মীদের বলেন, যবিপ্রবির করোনা শনাক্তের রেজাল্ট এখনো তিনি দেখেননি। অফিসে গিয়ে ইমেইল চেক করে এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পরীক্ষার ফলাফল সম্বন্ধে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. আনোয়ার হোসেন আজ সকালে বলেন, ল্যাব পরিচ্ছন্ন করার আগের কিছু নমুনা ছিল। আর গতকাল কিছু নমুনা হাতে পাওয়া গেছে। আগের ৫৪টি নমুনার মধ্যে ১৩টির রেজাল্ট পজেটিভ এসেছে। বাদবাকি পজেটিভগুলো নতুন স্যাম্পলের।
যশোরে সিভিল সার্জন গতকাল ৪১টি নমুনা পাঠিয়েছিলেন। এর মধ্যে একটি রিজেক্ট করা হয়েছে। বাকি ৪০টির মধ্যে ছয়টি নমুনার ফল পজেটিভ এসেছে, বলছিলেন প্রফেসর আনোয়ার।
খুলনা মেডিকেল কলেজ থেকে আসা নমুনা পরীক্ষার ফলাফল একের পর এক নেগেটিভ আসছে, অথচ যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবে দ্বিতীয় দফা পরীক্ষার কাজ শুরু করা মাত্রই পজেটিভ রেজাল্ট আসা শুরু করলো। এই প্রসঙ্গে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে দেশের অন্যতম শীর্ষ অণুজীববিজ্ঞানী ড. আনোয়ার বলেছেন, অন্য কোনো ল্যাবের পরীক্ষার বিষয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। তবে আমাদের ল্যাবের পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে আমরা কনফিডেন্ট।
২৪ ঘণ্টা/এম আর/নিলয়
আপনার মতামত লিখুন