ফাঁস হওয়া প্রশ্নে মেডিকেল-ডেন্টালে ভর্তি হয়েছেন ৪ হাজার শিক্ষার্থী

মেডিকেল, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস বিষয়ে বেরিয়ে আসছে চালিয়াত চক্রের চাঞ্চল্যকর তথ্য। প্রশ্নপত্র ফাঁসের জালিয়াত চক্রের মূলহোতাসহ আটক করা হয়েছে আরো অনেককে। জালিয়াতির মাধ্যমে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের একটি তালিকা এখন সিআইডির হাতে।
জানা গেছে, ফাঁস করা প্রশ্নপত্রে মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে ভর্তি হওয়া ৭৮ জন শিক্ষার্থীর নামের তালিকা দিয়েছেন রিমান্ডে থাকা জালিয়াত চক্রের তিন আসামি। ওই সব শিক্ষার্থী প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রকে দিয়েছে সাড়ে চার কোটি টাকা।
প্রশ্নপত্র জালিয়াতি চক্রের মূলহোতা জসিম ও চক্রের অপর সদস্য পারভেজ খান ও জাকির হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য জানা গেছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি)।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ফাঁস করা প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা দিয়ে ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত চার হাজার শিক্ষার্থী বিভিন্ন মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে ভর্তি হয়েছেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কামরুল আহসান জানান, জালিয়াতি করে ভর্তি হওয়া ৭৮ শিক্ষার্থীর নামের তালিকা পেয়েছে সিআইডি। রিমান্ডের প্রথম দিনে চক্রের হোতা জসিমউদ্দিন ও তাঁর দুই সহযোগী জিজ্ঞাসাবাদে বলেছেন, ৭৮ শিক্ষার্থীর পড়াশোনা এখন শেষ পর্যায়ে। তাঁরা প্রশ্নপত্রের জন্য প্রতিজনের কাছ থেকে পাঁচ থেকে সাত লাখ করে নিয়েছেন।
সহকারী পুলিশ সুপার সুমন কুমার দাস জানান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রেস থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁস করতেন মেশিনম্যান আবদুস সালাম। তাঁর খালাতো ভাই জসিমউদ্দিন তা সারা দেশে ছড়িয়ে দিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিতেন। সালাম ও জসিম সারা দেশে একটি বিশাল চক্র গড়েছিলেন। সালাম পলাতক।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, চক্রের হোতা জসিমের ২৭টি ব্যাংক হিসাব, পারভেজ ও জাকিরের ১০ থেকে ১১টি করে ব্যাংক হিসাব পাওয়া গেছে। সেখানে কত টাকা আছে, সে বিষয়টি খোঁজ নিচ্ছে সিআইডি। তাদের নামে আরও কোনো ব্যাংক হিসাব কিংবা সম্পদ আছে কি না, তা জানতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে তথ্য চাওয়া হয়েছে। সেখান থেকে তথ্য পেলে ও তাঁদের অবৈধ সম্পদের খোঁজ পাওয়া গেলে তাঁদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে মামলা করা হবে।
২০১৭ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে তদন্ত করে সিআইডি। ওই মামলায় ১২৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়া হয়। ওই মামলায় গ্রেফতার ৪৭ জনের মধ্যে ৪৬ জনই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
২৪ ঘণ্টা/এম আর
আপনার মতামত লিখুন