ত্যাগের মহিমা ও সচেতনতায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে পালিত হোক পবিত্র ঈদ উল আযহা: রেজাউল করিম

ত্যাগের মহিমা নিয়ে আবারো এলো পবিত্র ঈদ উল আযহা। নবীজী হজরত ইবরাহিম (আ.) ও হজরত ইসমাইলের (আ.) অতুলনীয় আনুগত্য এবং মহান ত্যাগের পুণ্যময় স্মৃতিবহ ঈদ উল আযহার দিনে আমরা মুমিনেরা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য প্রতি বছর পশু কোরবানি দিয়ে থাকি।হজরত ইবরাহিম (আ.) ও প্রিয় পুত্র হজরত ইসমাইল (আ.) এবং মা হাজেরার আল্লাহর প্রতি পরম আনুগত্য ও ভালোবাসাকে হজের অংশ হিসেবে গণ্য করা হয়।
হজরত ইবরাহিম (আ.) ও তার পুরো পরিবারের অভূতপূর্ব ত্যাগের শিক্ষায় আল্লাহর মুমিন হিসেবে আমাদেরকে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগের জন্য সর্বদা প্রস্তুত থাকা উচিৎ। তাই মহান আল্লাহত আয়ালার সন্তুষ্টি লাভের আশায় পশু কোরবানীর মধ্য দিয়ে বিশ্ব মুসলিম উম্মা এক পবিত্র আনন্দানুভুতির আনন্দে মেতে উঠবে ঈদ উল আযহার পবিত্র দিবসে। মহান আল্লাহর উদ্দেশ্যে পশুকে কোরবানী দেয়ার সাথে সাথে মনের পশুত্বকেও বলি দিতে হবে আমাদের।
প্রিয় মনে করে আমরা অনেক অকুশল চিন্তা ও ধারনাকে আমরা তিলে তিলে মনে ধারন করে ফেলি নিজেদের অজান্তেই। সমস্ত অকুশল পুঞ্জীভূত হয়ে পশুত্ব জেগে ওঠে মনে। মনের পাশবিকতা অনেক সময় আমাদের দৈহিক আচরনেও পরিষ্ফুট হয়ে ওঠে। এর সবকিছুর মূলে অন্যতম প্রধান নিয়ামক হয়ে থাকে স্বার্থপরতা, অহংবোধ। অহংবোধ ও স্বার্থপরতাসহ সকল প্রকার লোভ, হিংসা, বিদ্বেষপূর্ণ খারাপ দিক গুলোকে বিসর্জন দিয়ে পবিত্র মনে আল্লাহর দরবারে মোনাজাত করতে পারলে আমরা নিশ্চয়ই তাঁর নৈকট্য লাভে সক্ষম হব।
আমরা যারা পশু কোরবানী দেব, আমাদেরকে প্রিয় আবাসভূমির পরিবেশের কথা বিবেচনায় রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে আমাদের নগরীর সৌন্দর্য, পরিচ্ছন্নতা ও নির্মল পরিবেশ রক্ষার দায়িত্ব আমাদের সকলের। পশু জবাইয়ের পর এর রক্ত ও অন্যান্য বর্জ্য পড়ে না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। যত্রতত্র পশু জবাই না করে নির্দিষ্ট স্থানে করাই বাঞ্চনীয়। না হয় আমাদের পরিবেশকে দুর্গন্ধময় ও দুষিত করে তোলার ক্ষেত্রে আমরাই আমাদের শত্রু হয়ে দাঁড়াব। কোরবানীর পশুর চামড়া নিয়ে যাতে কোন প্রকার অপ্রীতিকর পরিস্থিতির উদ্ভব না হয় তজন্য প্রশাসন সহ এলাকাবাসীরও একটি দায়িত্ব থেকে যায়। এক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট নিয়ম রক্ষায় সকলকে সচেতন থাকতে হবে।
তাছাড়া এবারের ঈদ উল আযহা আমরা পালন করতে চলেছি এক ভিন্ন পরিস্থিতিতে। করোনার সংক্রমনে সমগ্র বিশ্ব এক বিভীষিকাময় পরিস্থিতি অতিক্রম করছে। প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ ও আমার চট্টগ্রামেও করোনার কুপ্রভাব রয়েছে।
সামাজিক দুরত্ব ও পারস্পরিক সংস্পর্শ এড়িয়ে আমাদেরকে দৈনন্দিন কর্মকান্ড পরিচালনা করতে হচ্ছে। অর্থনৈতিক ব্যবস্থা যাতে ভেঙ্গে না পড়ে, সে লড়াইটাও করতে হচ্ছে করোনার সাথে যুদ্ধের পাশাপাশি। প্রয়োজনীয় সমস্ত স্বাস্থ্য বিধি মেনেই করোনার সাথে লড়াইয়ের পাশপাশি আমাদের ধর্মীয়, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
বিগত ঈদ উল ফিতরে আমরা যেভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পারস্পরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আমাদের সচেতনতা ও সক্ষমতা দেখিয়েছি। ঈদ উল আযহা’ তেও তদ্রুপ সচেতনতা রক্ষা করার জন্য আমি সকলের প্রতি আহ্বান রাখছি। সহসাই করোনামুক্ত হয়ে ঘুরে দাঁড়াবে প্রিয় স্বদেশ, বিশ্ব জাহান এ প্রত্যাশা রেখে সকলকে জানাই ঈদ মোবারক।
সকলের কল্যান হোক।
জয় বাংলা
জয় বঙ্গবন্ধু
জয়তু শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশ চিরজীবি হোক!
২৪ ঘণ্টা/এম আর
আপনার মতামত লিখুন