দুইশত বছরের প্রাচীন মন্দির সংস্কারের অভাবে বেহাল দশা

নিলয় ধর,যশোর প্রতিনিধি : যশোর মনিরামপুরে দুই শত বছরের প্রাচীন ’হেলাঞ্চী গোবিন্দ মন্দির’ দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় বর্তমান বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। এলাকাবাসী বলছে প্রাচীন এই মন্দিরটি শুধুমাত্র অর্থাভাবে সংস্কার করানো সম্ভব হচ্ছে না। তারপরও এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের হাজারো মানুষ ১৪ বিঘা জমির ওপর এই প্রাচীন মন্দিরে নিয়মিত নামযজ্ঞসহ বিভিন্ন পূজা-পার্বন করে আসছে। তাদের দাবি সরকারি সহায়তা পেলে প্রাচীন এই মন্দিরটি আবারও প্রাণচাঞ্চল্য হয়ে উঠবে।
সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, উপজেলার খেদাপাড়া ইউনিয়নের হেলাঞ্চী গ্রামের পশ্চিমপ্রান্তে পালপাড়া এবং মন্ডলপাড়ার মাঝখানে রাস্তার পাশে বিশাল আকৃতির বটগাছ তলায়(কালিতলা)অবস্থিত হরিতলা গোবিন্দ মন্দির। সেই প্রাচীনকাল থেকেই এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরা এখানে কালিপূজা, স্বরসতীপূজা, নামযজ্ঞসহ বিভিন্ন পূজা-পার্বন করে আসছে। ১৪ শতক জমির ওপর নির্মিত এই মন্দিরে প্রতিমার ঘর এবং বাইরে ছাদের বিশাল ১টি খোলামেলা কক্ষ রয়েছে। বাইরের এই কক্ষটিতে মূলত পূজা অর্চনকারীরা অবস্থান করে।
কথা হয় নারায়ণ চন্দ্র বিশ্বাস(৮২)এর সাথে। তিনি বলেছেন আমার বাবা এবং ঠাকুর দাদারাও এই মন্দিরে পূজাঅর্চনা করেছে। রাখাল চন্দ্র মন্ডল(৮০) বলেছেন, জন্মের পর থেকেই আমরা এ মন্দিরে পূজা-পার্বণ করে আসছি। যতীন্দ্র চন্দ্র বিশ্বাস(৯০) বলেছেন, প্রায় দুই শত বছর আগে এই গোবিন্দ মন্দিরটি নির্মাণ করা হয় বলে পূর্ব পুরুষদের কাছে শুনেছি। রানী বালা মন্ডল(৬৫) বলেন, সংস্কারের অভাবে প্রাচীন এ মন্দিরে বর্তমান পূজা-পার্বন করা দুরুহ হয়ে পড়েছে।
মন্দির কমিটির সভাপতি তারাপদ পাল বলেছেন, পূজা অর্চনকারীদের কমবেশি সহযোগিতায় মাঝে-মধ্যে সংস্কার করা হয়। শুকান্ত মন্ডল জানিয়েছেন, এই পর্যন্ত তারা কয়েকদফায় মাত্র ৯৫ হাজার টাকা সরকারি অনুদান পেয়েছে। মন্দির কমিটির সম্পাদক রামপদ মন্ডল জানান, সরকারিভাবে অর্থ বরাদ্দ করা না হলে ব্যক্তি উদ্যোগে মন্দিরটি সংস্কার করা সম্বব নয়।
তাই এলাকাবাসীর দাবি সরকারিভাবে অর্থ বরাদ্দ দিয়ে প্রাচীন এই গোবিন্দ মন্দিরটির পূর্ণাঙ্গ সংস্কার করার। খেদাপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান এসএম আব্দুল হক জানান, মন্দিরটি সংস্কার করতে সরকারি অর্থ বরাদ্দের জন্য চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
অবশ্য স্থানীয় যুবক শুকান্ত মন্ডল জানিয়েছেন, সরকারি বরাদ্দের জন্য ইতোমধ্যে স্থানীয় সংসদ সদস্য পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্যরে কাছে লিখিত আবেদন করা হয়েছে।
২৪ ঘণ্টা/এম আর
আপনার মতামত লিখুন