করোনায় থমথমে শিক্ষাব্যবস্থা, সেশনজটের শঙ্কায় চবি শিক্ষার্থীরা

মেহেদী হাসান, চবি : করোনা ভাইরাসের কারণে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) সহ সারা দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় থমথমে অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এমতবস্থায় শিক্ষাব্যবস্থা এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে গত ৬ সেপ্টেম্বর থেকে অনলাইন ক্লাস চালু করে চবি প্রশাসন।
কিন্তু অধিকাংশ শিক্ষার্থীর স্মার্টফোন ও উন্নত মোবাইল নেটওয়ার্ক এর আওতাধীন না থাকায় অনলাইন ক্লাসে পাঠগ্রহণ করতে পারছেন না।
ইতিহাস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক দেবাশীষ প্রামাণিক বলেন, প্রথম দিকে অনলাইন ক্লাসে উপস্থিতি মোটামুটি ভালো ছিল। কিন্তু এখন সেই উপস্থিতির হার হ্রাস পেয়েছে। শতভাগ শিক্ষার্থীর স্মার্টফোন ও সবল মোবাইল নেটওয়ার্কের সুবিধা সারা দেশে না থাকায় এমন দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে।
এমন দুর্ভোগের কারণে সেশনজটের শঙ্কায় রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বিগত কয়েক বছরের প্রচেষ্টায় সেশনজট অনেকাংশে কমে আসলেও মহামারীর কারণে ফের সেশনজটের সম্ভাবনা রয়েছে বলে ধারণা করছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থী মামুনুর রশিদ বলেন, অনলাইন ক্লাস নেওয়া হলেও অধিকাংশ শিক্ষার্থী ক্লাসে যোগদান করতে পারছে না। নানাবিধ সমস্যা ও স্মার্টফোনের অভাবে অনেকেই অনলাইন ক্লাস থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
আমাদের ইন্সটিটিউটে আগে থেকেই সেশনজট ছিল। যার কারণে আমরা অন্যান্য বিভাগের চেয়ে পিছিয়ে ছিলাম। এখন করোনার প্রভাবে সেই সেশনজট আরও জটিল সমস্যায় রুপ নিচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী নুর উদ্দিন শহীদ বলেন, মহামারী পরিস্থিতির আগে থেকেই চবির বিভিন্ন বিভাগে সেশনজট বিদ্যমান ছিল। আমি ১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী হয়েও কেবল দ্বিতীয় বর্ষ শেষ করতে পেরেছি। মহামারীর প্রভাবে আমার বিভাগসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য বিভাগের শিক্ষার্থীরাও অধিক মাত্রায় সেশনজটে পড়বে।
বাংলাদেশ স্টাডিজ বিভাগের সিদরাতুল মুনতাহা বলেন, করোনায় প্রতিকূল পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় দীর্ঘদিন বন্ধ রয়েছে। এর ফলে বিভিন্ন বিভাগে ইতোমধ্যে সেশন জটের মারাত্বক প্রভাব আঁচ করা যাচ্ছে। অনেক শিক্ষার্থীই চরম হতাশার মধ্যে দিনযাপন করছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শতভাগ শিক্ষার্থীকে অনলাইন ক্লাসের আওতাভুক্ত করতে পারলে এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যাবে বলে জানান শিক্ষার্থীরা।
বন্ধের কারণে বিভিন্ন বিভাগের অনেক ব্যাচের পরীক্ষা স্থগিত হয়ে আছে, বিশ্ববিদ্যালয় খোলার সাথে সাথেই আটকে থাকা পরীক্ষা দ্রুততার সহিত শেষ করতে হবে এবং দ্রুত ফলাফল ঘোষণা দিলে সেশনজটের ঝুকি কিছুটা কমবে বলে ধারণা শিক্ষার্থীদের।
সেশনজট যেন না হয় সে বিষয়ে কি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার (ভারপ্রাপ্ত) এস এম মনিরুল হাসান বলেন, আমরা অনলাইনে ক্লাস নেওয়া শুরু করেছি। পরীক্ষার বিষয়ে একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত এখনো আসেনি।
বিশ্ববিদ্যালয় খোলা হলে আমরা সাপ্তাহিক ছুটি একদিন কমিয়ে দেব। ক্লাসের সময় বাড়িয়ে দেওয়া হবে। আশা করছি এই পদক্ষেপ গ্রহণ করলে সেশন জটের শঙ্কা কমে যাবে।
২৪ ঘণ্টা/রাজীব
আপনার মতামত লিখুন