হালিশহরে ক্যারাভান: করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ও ডেঙ্গু মোকাবেলায় সুজনের নাগরিক বার্তা

নাগরিক সচেতনতায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজনের আজকের বুধবার (১১ নভেম্বর) ‘নগর সেবায় ক্যারাভান’ কর্মসূচিতে ছিল কোভিড-১৯ এর দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলা ও ডেঙ্গু থেকে বাঁচতে খাল-নালায় যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা ফেলা থেকে বিরত থাকার নাগরিক আহ্বান। সল্টগোলা ক্রসিং হয়ে পুরাতন ডাকঘর ২নং সাইট বাকের আলী ফকিরের ও চৌচালা মোড় পর্যন্ত। কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্ন ও প্রকৌশল বিভাগের সমন্বয়ে প্রশাসকের এই কর্মসূচি ধারাবাহিকভাবে চলমান আছে। তাৎক্ষণিক নাগরিক সমস্যা সমাধানের উদ্দেশ্যে প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন এই ক্যারাভান কর্মসূচি গ্রহণ করেন।
এর ফলে নগরবাসী তাদের নাগরিক জীবনের সুবিধা, অসুবিধা, অভাব, অভিযোগ সহজে জনপ্রতিনিধিদের জানাতে পারেন। এতে পারস্পরিক মতামত আদান-প্রদানের মাধ্যমে নাগরিক জীবনের বেশ কিছু সমস্যা স্পটেই সমাধান হয়। কর্পোরেশন প্রশাসকের ওই কর্মসূচি নগরবাসীর মধ্যে বেশ সাড়া ফেলেছে।
আজকের ‘ক্যারাভান’ কর্মসূচিতে যাওয়ার আগে প্রশাসক চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের জলাবদ্ধতা নিরসনে হালিশহর সল্টগোলা ক্রসিং মোড়ে মহেশখালের মুখে রেগুলেটর পয়েন্ট স্থাপনের কাজ পরিদর্শন করেন। এই রেগুলেটর স্থাপনে চউকের ১৫০ কোটি টাকা ব্যয় হবে। এর কাজ সম্পূর্ণ শেষ হলে বৃষ্টি ও জোয়ারের পানি ও জলাবদ্ধতা থেকে দক্ষিণ মধ্যম হালিশহর এলাকায় জনসাধারণ রক্ষা পাবে।
এ কাজ পরিদর্শনকালে চউকের চলমান প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা কর্ণেল আলী উপস্থিত ছিলেন। পরে ক্যারাভান কর্মসূচিতে রাস্তার দু’পাশে দাঁড়িয়ে থাকা নগরবাসীর সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। নালা-খালের পানিপ্রবাহ স্বাভাবিক আছে কিনা তা প্রত্যক্ষ করেন।
এ সময় নগরবাসীর মাঝে কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলা ও ডেঙ্গু প্রতিরোধে প্রচারপত্র বিলির পাশাপাশি দক্ষিণ মধ্যম হালিশহর স্কুল ডাকঘরের পাশে খালে ফগার মেশিনের সাহায্যে মশার ওষুধ ছিটান ও অনেককে মাস্ক বিতরণ করেন।
কিছু পথ হেঁটে কিছু পথ স্কুটি চালিয়ে পুরো এলাকার লোহার পুল, নিশ্চিন্তা পাড়া, মিস্ত্রি পুকুর পাড়, মহাজন পাড়া, পুরাতন ২ নম্বর সাইড, সাচী চৌধুরী পাড়া, বরহান পাড়া, আলী মিয়া সরকার বাড়ি এলাকার অধিবাসীদের সাথে কথা বলে তারা কর্পোরেশনের নাগরিকরা ঠিকঠাক ভাবে সেবা পান কিনা তা জানতে চান।
সে সময় বরহান পাড়া, আলী মিয়া সরকার বাড়ির সড়কটি নীচু হওয়ায় বৃষ্টির মৌসুমে জলামগ্ন থাকে শুনে, এই সড়ক সহসা কর্পোরেশনের উদ্যোগে উঁচু ও পাকা করার ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে ঘোষণা করেন প্রশাসক।
পুরো ক্যারাভান কর্মসূচিতে প্রশাসক হ্যান্ড মাইকে কিছু দূর পর পর নগরবাসীর মাঝে নাগরিক সচেতনতায় তাঁর বার্তা পৌঁছে দেন। প্রশাসক বলেন, আসন্ন শীত মৌসুমে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ হিসেবে সংক্রমন বাড়তে পারে। অপরদিকে শুস্ক মৌসুমে ডেঙ্গুর প্রকোপও বাড়ে। তাই করোনা ও ডেঙ্গু প্রতিরোধে নগরবাসীকে সচেতন হতে হবে। নিজ বাড়ির আঙ্গিনা, পুকুর, ডোবা আশাপাশের নালা-খাল পরিস্কার রাখতে হবে। যাতে মশার উপদ্রব না বাড়ে। পাশাপাশি করোনা মোকাবেলায় সামাজিক দূরত্ব মেনে বাইরে গেলে মাস্ক পরিধানের পাশাপাশি কিছুক্ষণ অন্তর সাবান পানিতে কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধুতে হবে।
তিনি আরো বলেন, এই শহর আমাদের তাই একে নান্দনিক, পরিবেশ বান্ধব করে রাখতে সকলের সম্মিলিত প্রয়াস প্রয়োজন। প্রশাসক করোনার ঠিকা দেশে সহজলভ্য না হওয়ায় পর্যন্ত নগরবাসীকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচলের আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, সামান্য অবহেলায় নিজের ও জনজীবন হুমকির মুখে পড়তে পারে তাই সাবধানতা অবলম্বনের বিকল্প নাই।
এ সময় সাবেক কাউন্সিলর মোহাম্মদ হোসেন, গোলাম মোহাম্মদ চৌধুরী, সমাজসেবক হাসান মুরাদ, জানে আলম, হাজী মো. সুলতান, এ এ মান্নান, কামরুল হোসেন, হাবিব শরীফ প্রমুখ প্রশাসকের সাথে ক্যারাভান কর্মসূচিতে ছিলেন।
২৪ ঘণ্টা/রিহাম
আপনার মতামত লিখুন