খুঁজুন
রবিবার, ৯ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৪শে ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

লোহাগাড়ায় চিহ্নিত শিবির ক্যাডার, সাজাপ্রাপ্ত আসামি, নৌকা বিরোধী, মোটর মেকানিক, প্রবাসীও এখন স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা!

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: শনিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ৯:২৮ অপরাহ্ণ
লোহাগাড়ায় চিহ্নিত শিবির ক্যাডার, সাজাপ্রাপ্ত আসামি, নৌকা বিরোধী, মোটর মেকানিক, প্রবাসীও এখন স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা!

নিজস্ব প্রতিবেদক : দলীয় প্রতীক নৌকার বিরোধিতাকারী এবং নিজের গ্রুপ ভারী করতে বিএনপি- জামায়াত থেকে লোক ভাড়া এনে দলের পদ-পদবীতে স্থান না দিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্পষ্ট নির্দেশনাকে অনেকটা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ।

গত উপজেলা ও ইউপি নির্বাচনে প্রকাশ্যে নৌকার বিরোধিতাকারী, চিহ্নিত ছাত্রশিবির ক্যাডার ও রাজপথে ছাত্রদলের মিছিলে নেতৃত্বদানকারী, নারী নির্যাতন মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী, মোটরসাইকেল মেকানিক ও দুবাই প্রবাসীসহ বিতর্কিত ব্যাক্তিদের মুল নেতৃত্বে এনে গত ২৬ জানুয়ারী মধ্যরাতে ফেসবুকের মাধ্যমে লোহাগাড়া উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের ১৫ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা করে নানা বিতর্কের জন্ম দিলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ।

অথচ গত ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর নুরুল কবির সলিলকে আহবায়ক, আবছার উদ্দিন, জামিল উদ্দিন ও মিজানুর রহমান মিজানকে যুগ্ম আহবায়ক করে ৪ সদস্যের একটি আহবায়ক কমিটির অনুমোদন দেয়া হয়। মাত্র ৪৭ দিনের ব্যবধানে এক উপজেলায় দুইটি কমিটিরই অনুমোদন দেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোহাম্মদ জোবায়ের ও সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী মোহাম্মদ গালিব সাদলী।

আর এতে পুরো উপজেলাজুড়ে দলের ত্যাগী ও পরিক্ষিত নেতাকর্মীদের মাঝে চলছে নানা বিতর্ক, চরম ক্ষোভ ও উত্তেজনা। চলছে নানা পাল্টা-পাল্টি কর্মসুচিও। ফলে, দুই কমিটির নেতাকর্মীদের মধ্যে যেকোন মুহুর্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষেরও আশংকা করছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয় নেতৃবৃন্দের অভিযোগ, মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে দলের নির্যাতিত, ত্যাগী ও পরীক্ষিত কর্মীদের বাদ দিয়ে বিতর্কিত ব্যাক্তিদের নিয়ে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।

তাই, কমিটি ঘোষণার পর থেকেই ঘোষিত কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও এক নাম্বার সহ-সভাপতিসহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপক লেখালেখি করে সমালোচনার ঝড় তুলেছেন দলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা।

লোহাগাড়া উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহবায়ক ও দীর্ঘদিন উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়কের দায়িত্ব পালন করা মিজানুর রহমান মিজান জানান, ঘোষিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবীর ছিলেন ছাত্রশিবিরের সাবেক শীর্ষ ক্যাডার সাতকানিয়ার বহুল আলোচিত আহমদু বাহিনীর অন্যতম প্রধান সহযোগী। সাতকানিয়ায় আহমদুর প্রতিষ্টিত বিতর্কিত ক্যাডার ভিত্তিক সংগঠন ‘টাইগার ক্লাব’র প্রতিষ্টাতা সদস্য সে। পরে শিবিরের শীর্ষ ক্যাডার আহামদু বিএনপিতে যোগ দিলে হুমায়ুনও তার সাথে বিএনপিতে যোগ দেয়। বনে যায় রাতারাতি ছাত্রদলের হর্তাকর্তা। সাতকানিয়া উপজেলা ছাত্রদলের তৎকালীন সভাপতি এহতেশামুল আজিমের সাথে আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী সকল আন্দোলন-সংগ্রামের মিছিলে অগ্রভাগে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে হুমায়ুন। অলরেডি এসব মিছিলের ছবি ফেসবুকে ইতোমধ্যে ভাইরালও হয়েছে। এছাড়াও তার আদি বাড়ী সাতকানিয়া উপজেলার বারদোনা গ্রামে। বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময়ে বহু আওয়ামী নেতাকর্মীদের নির্যাতনকারী হিসেবে চিহ্নিত হুমায়ুন নিজ গ্রাম থেকে বিতাড়িত হয়ে লোহাগাড়া উপজেলার দক্ষিণ সুখছড়ি গ্রামে শ্বশুর বাড়িতে ঘর জামাই হিসেবে আশ্রিত হন। পরে ২০১৮ সালের দিকে বর্তমান চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক আরিফুর রহমানের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তোলেন।

অতপর: মাত্র দুই বছরের ব্যবধানে লোহাগাড়া উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদ ভাগিয়ে নেন হুমায়ুন। যিনি বহু আওয়ামী নেতাকর্মীকে নির্যাতনের দায়ে ঘৃনিত হয়ে নিজ গ্রাম থেকে বিতাড়িত হওয়ার পর শ্বশুর বাড়িতে আশ্রিত এমন একজন ব্যক্তির নেতৃত্বে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের মতো গুরুত্বপূর্ণ সংগঠন কতটুকু নিরাপদ? আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে তার জবাব চাই।

এদিকে, ঘোষিত কমিটির সভাপতি রিদওয়ানুল হক সুজনের বিরুদ্ধেও রয়েছে নানা অভিযোগ। গত উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থীকে পরাজিত করতে আট-ঘাট বেঁধে মাঠে নেমেছিলেন সুজন। এ নির্বাচনে লোহাগাড়া উপজেলা এলডিপির সভাপতি আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াউল হক চৌধুরী বাবুলের অন্যতম নির্বাচনী সমন্বয়কের দায়িত্বও পালন করেন তিনি। নির্বাচনের পরে ২০১৯ সালের ৪ এপ্রিল দলের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পাঠানো নৌকার বিরোধীতাকারীর তালিকায় সুজনের নাম রয়েছে ২৮ নাম্বারে। সদ্য সমাপ্ত লোহাগাড়া সদর ইউপি নির্বাচনেও নৌকা প্রতীকের বিরোধিতা করার অভিযোগ রয়েছে সুজনের বিরুদ্ধে। নির্বাচন পরবর্তী গত ২০২০ সালের ৭ নভেম্বর অনুষ্টিত উপজেলা আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় দলীয় প্রতীক নৌকা বিরোধী ভূমিকায় রিদওয়ানুল হক সুজনসহ আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে দলের হাজারো নেতাকর্মীর সামনে প্রকাশ্যে ক্ষোভ ঝাড়েন আওয়ামী লীগের স্থানীয় সংসদ সদস্য প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মাদ নেজামুদ্দীন নদভী। লোহাগাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গত উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী খোরশেদ আলম চৌধুরী এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এছাড়াও সুজনের বিরুদ্ধে বার আউলিয়া ডিগ্রী কলেজ ছাত্রলীগ নেতা তৌকির হত্যাকান্ডের সাথে সম্পৃক্ততারও অভিযোগ তুলেছেন নিহত তৌকিরের বৃদ্ধ মা আয়েশা বেগম ও বড় ভাই মো: আলমগীর। তাঁরা গত ২০২০ সনের ৭ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে উপস্থিত হয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে তৌকির হত্যার পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গ থেকে ভূঁয়া খালাতো ভাই সেজে তৌকিরের লাশ গ্রহণের অভিযোগও আনেন সুজনের বিরুদ্ধে। এসময় সুজনসহ এ হত্যাকান্ডে জড়িত সকলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করেছিলেন তৌকিরের পরিবার।

৪৭ দিনের মধ্যে দুই কমিটি

ঘোষিত কমিটির এক নাম্বার সহ-সভাপতি আকতার হোসেন ফরিদ ওরফে এলজি ফরিদের বিরুদ্ধেও রয়েছে নারী ও শিশু নির্যাতন মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত হওয়ার অভিযোগ।

গত ২০১৮ সালের ৩ জানুয়ারী আদালত নারী ও শিশু নির্যাতন মামলায় তাকে যাবজ্জীবন সাজা দেন। এছাড়াও অস্ত্র, পুলিশের ওপর হামলা, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগে তার বিরুদ্ধে রয়েছে আরও ৪/৫ টি মামলা।

কমিটির তিন নাম্বার সহ-সভাপতি বেলাল উদ্দিন বেলাল কোন সময় আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন না। পেশায় মোটরসাইকেল মেকানিক। চার নাম্বার সহ-সভাপতি সাইফুল ইসলাম জিয়ার বিরুদ্ধে জামায়াত-শিবিরের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ততার অভিযোগ রয়েছে।
কমিটির দুই নাম্বার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন রকি দুবাই প্রবাসী। সে তিন মাস পূর্বে দেশে এসে স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের পদ ভাগিয়ে নিয়ে আবার দুবাই ফিরে যান। কমিটির অন্যান্য সদস্যের বিরুদ্ধেও রয়েছে নানা অভিযোগ ও বিতর্ক। মোটা অংকের আর্থিক লেনদেন এবং আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় এক নেতার সাথে ঘনিষ্টতার কারণে তারা তিনজনই স্বেচ্ছাসেবক লীগের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ সংগঠনের উপজেলা কমিটির সহ-সভাপতি ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে আসীন হয়েছেন- এমন অভিযোগ ৪৭ দিন পূর্বে গত ১০ ডিসেম্বর অনুমোদিত কমিটির আহবায়ক নুরুল কবির সলিল ও যুগ্ম আহবায়ক আবছার উদ্দিনের।

অন্যদিকে, সাতকানিয়া-লোহাগাড়া আসনের স্থানীয় সংসদ সদস্য প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মাদ নেজামুদ্দীন নদভী ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা আমিনুল ইসলাম আমিনকে পাশ কাটিয়ে এ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে বলে অভিযোগ দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের বিরুদ্ধে। তাছাড়া কোন মতামতও নেয়া হয়নি লোহাগাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ থেকেও। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় এক নেতাকে সন্তুষ্ট করতেই তাঁর অনুসারীদের নিয়ে তড়িঘড়ি করে একতরফাভাবে এ কমিটির অনুমোদন দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোহাম্মদ জোবায়ের বলেন, সাংগঠনিক কর্মকান্ডকে গতিশীল করতে লোহাগাড়া উপজেলা কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়েছে। দুটি কমিটি অনুমোদন করা হয়নি। আমরা অফিসিয়ালি সুজন- হুমায়ুনের নেতৃত্বাধীন কমিটিই পাবলিষ্ট করেছি।

কমিটি অনুমোদনের ক্ষেত্রে দলের স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের মতামত নেয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আসলে এদের কোন মতামত নেয়া হয়নি। দক্ষিণ জেলা কমিটিকে থাকা লোহাগাড়ার নেতাদের সুপারিশে এ কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ঘোষিত কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুনের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ কয়েকজনের ফেসবুক পোষ্টে দেখেছি ; আবার অনেকেই আমার মেসেঞ্জারেও পাঠিয়েছে।

সভাপতি সুজনের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের ব্যাপারে আমি অবগত নই। তবে, এসব অভিযোগ প্রমাণিত হলে বিষয়টি দেখবো।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু মুঠোফোনে বলেন, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ কর্তৃক ৪৭ দিনের মাথায় এক উপজেলায় দুটি কমিটি ঘোষণার বিষয়ে আমি অবগত নই। কমিটিতে নৌকার বিরোধিতাকারী, শিবির ক্যাডার, নারী নির্যাতন মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি স্থান পাওয়ার বিষয়ে আমি খোঁজ নিচ্ছি। এ মুহুর্তে আমি একটি মিটিং এ আছি ভাই জানালেন আফজালুর রহমান বাবু।

এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ- প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বলেন, সাতকানিয়া-লোহাগাড়ার সন্তান হিসেবে লোহাগাড়া উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি ঘোষণার বিষয়ে আমার কোন মতামত চাওয়া হয়নি এবং এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।

আওয়ামী লীগের দলীয় স্থানীয় সংসদ সদস্য প্রফেসর আবু রেজা মুহাম্মাদ নেজামুদ্দীন নদভী বলেন, দলের স্থানীয় সংসদ সদস্য হিসেবে লোহাগাড়া উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে আমার মতামত নেওয়া উচিত ছিল জেলা কমিটির। কিন্তু আমার কোন মতামত নেয়া হয়নি। এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। ফেসবুকে কমিটি দেখেছি মাত্র। বিপ্লব বড়ুয়াকে সন্তুষ্ট করতেই মধ্যরাতে ফেসবুকে এ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। জানতে পারলাম নৌকার বিরোধিতাকারী, ছাত্রলীগ নেতা হত্যার সাথে জড়িত, সাতকানিয়ার চিহ্নিত শিবির ক্যাডার, নারী নির্যাতন মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি ও মোটরসাইকেল মেকানিকসহ বিতর্কিত ব্যক্তিদের নিয়ে এ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এ কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে মোটা অংকের লেনদেনও হয়েছে বলে আমি শুনেছি।

লোহাগাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খোরশেদ আলম চৌধুরী বলেন, লোহাগাড়া উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে আমাদের কাছ থেকে কোন মতামত নেয়া তো দুরের কথা জানিও না কমিটি দেয়া হচ্ছে। সাতকানিয়া থেকে শিবির ক্যাডারকে ভাড়া করে এনে লোহাগাড়ায় নেতা বানানো হচ্ছে বিষয়টি বুঝলাম না। আর উপজেলা ও ইউপি নির্বাচনে প্রকাশ্যে নৌকার বিরোধিতা করা ও এলডিপির সভাপতির পক্ষে ভুমিকা পালনকারী ব্যক্তিকে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি করা কর্ণেল অলির এজেন্ডা বাস্তবায়ন নয় কি? জেলা ও কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের কাছে প্রশ্ন রাখেন লোহাগাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও গত উপজেলা নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী খোরশেদ আলম চৌধুরী।

২৪ ঘণ্টা/আজাদ

Feb2

মাগুরার শিশুটির সব ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে সরানোর নির্দেশ

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: রবিবার, ৯ মার্চ, ২০২৫, ১:০১ অপরাহ্ণ
মাগুরার শিশুটির সব ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে সরানোর নির্দেশ

মাগুরায় বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার শিশুটির সব ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে সরানোর নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

ওই শিশুর ছবি সরিয়ে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসির) দুপুর সোয়া ১২টার মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীর কাছে তথ্য জানানোর জন্য বলেছেন আদালত।

বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন উপস্থাপন করার পর রোববার (৯ মার্চ) হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদেশের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শাহিনুজ্জামান।

তিনি বলেন, মাগুরাসহ সারাদেশে ধর্ষণের ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যাওয়ায়, আজ পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করার পর, মাগুরার সেই শিশু সমস্ত ছবি ইউটিউব, ফেসবুকসহ অন্যান্য মাধ্যম থেকে সরিয়ে ফেলার জন্য বিটিআরসিকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে এ সংক্রান্ত বিষয়ে যথাযথ প্রক্রিয়ায় আবেদন করার জন্য পরামর্শ দিয়ে, আবেদনের পর এ সংক্রান্ত বিষয়ে পরবর্তী নির্দেশনা দেবেন বলে আদালত জানিয়েছেন।

এর আগে, শনিবার ঢাকা মেডিকেল থেকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচে) নেওয়া হয় শিশুটিকে। সেখানেই তার চিকিৎসা চলছে।

এদিকে, ধর্ষণের ঘটনায় মামলা করেছেন শিশুটির মা। মামলায় শিশুটির বোনের স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাশুরকে আসামি করা হয়েছে। তারা আগে থেকেই পুলিশের হেফাজতে ছিলেন। মামলার এজাহারে তিনি অভিযোগ করেন, মেয়ের স্বামীর সহায়তায় তার বাবা (শ্বশুর) শিশুটিকে ধর্ষণ করেন। বিষয়টি মেয়ের শাশুড়ি ও ভাশুর জানতেন। তারা ঘটনা ধামাচাপা দিতে শিশুটিকে হত্যাচেষ্টা চালান।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সম্মুখসারিতে ছিল নারীরা: ড. ইউনূস

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: শনিবার, ৮ মার্চ, ২০২৫, ৪:৩০ অপরাহ্ণ
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সম্মুখসারিতে ছিল নারীরা: ড. ইউনূস

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে বাংলাদেশের ছাত্র-শ্রমিক-জনতা মিলে যে অসাধ্য সাধন করেছে তার সম্মুখসারিতে ছিল এ দেশের নারীরা। ফ্যাসিবাদী শক্তির প্রাণঘাতি অস্ত্রের সামনে হিমালয়ের মতো দাঁড়িয়েছিল আমাদের মেয়েরা।

তিনি বলেন, পতিত স্বৈরাচার দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করছে। আমাদেরকে এখন ততটাই সতর্ক থাকতে হবে যেমনটা আমরা যুদ্ধের মতো পরিস্থিতির মধ্যে ছিলাম। নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা রক্ষায় সর্বোচ্চ সজাগ থাকুন। নিপীড়নের বিরুদ্ধে সামাজিক ঐক্য গড়ে তুলুন। একে অন্যের পাশে দাঁড়ান। একটি সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ সমাজ গড়তে সরকারকে সহযোগিতা করুন।

৮ মার্চ (শনিবার) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, গণঅভ্যুত্থানে সম্মুখসারিতে থাকলেও আমাদের সমাজে এখনো অনেক ক্ষেত্রেই নারীরা পিছিয়ে আছে। নারীদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে সরকার সবসময় সচেষ্ট। এজন্য বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ চলমান। দুস্থ মায়েদের আর্থিক সহায়তা প্রদান, নারীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচি, কর্মজীবী নারীদের থাকার হোস্টেল, ডে-কেয়ার সেন্টার সুবিধাসহ বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ অন্তর্বর্তী সরকার নিচ্ছে। আরও কী কী করা যেতে পারে সেটা নিয়েও আলোচনা চলছে।

ড. ইউনূস বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতা রোধ সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকার। অনেক সময় নারীরা নির্যাতনের শিকার হলেও তারা বুঝতে পারেন না কোথায় অভিযোগ জানাবেন। নারীরা যেন তাদের অভিযোগ জানাতে পারেন সেজন্য হটলাইন চালু করা হয়েছে। আইনি সহায়তা দেওয়ার জন্য আমরা পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন, ২০১০ হালনাগাদ করার উদ্যোগ নিয়েছি। যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও সুরক্ষা আইন, ২০২৫ প্রণয়নের কাজও আমরা হাতে নিয়েছি। আমরা একটি নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন করেছি, তারাও তাদের সুপারিশগুলো দেবে।

নিরাপত্তাকর্মীরা পালন করবেন পুলিশের দায়িত্ব, করতে পারবেন গ্রেফতার

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: শনিবার, ৮ মার্চ, ২০২৫, ৪:২৩ অপরাহ্ণ
নিরাপত্তাকর্মীরা পালন করবেন পুলিশের দায়িত্ব, করতে পারবেন গ্রেফতার

রমজান ও ঈদ উপলক্ষে অনেক রাত পর্যন্ত ঢাকা মহানগরীর মার্কেট, শপিংমল খোলা থাকে। তবে পুলিশের স্বল্পতা রয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রাজধানীর বিভিন্ন আবাসিক এলাকা, শপিংমল ও মার্কেটগুলোতে ‘অক্সিলারি পুলিশ ফোর্স’ নিয়োগ দিয়েছে ডিএমপি।

আবাসিক এলাকা, বিভিন্ন মার্কেট, শপিংমলে নিয়োজিত বেসরকারি নিরাপত্তা কর্মীরা ‘অক্সিলারি পুলিশ ফোর্স’ হিসেবে কাজ করবেন। তাদের ক্ষমতা থাকবে গ্রেফতারের।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের আইনবলে তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী।

শনিবার (৮ মার্চ) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি।

তিনি বলেন, আজ ৭ রমজান। সন্ধ্যা হতেই মুসল্লিরা মসজিদে যান। দেড়-দুই ঘণ্টা সময় যায় তারাবির নামাজে। ওই সময় শহরের বিভিন্ন অলিগলিতে জনশূন্যতা তৈরি হয়। বিশেষ করে পুরুষ মানুষ তারাবি নামাজে থাকে। আপনারা বাড়ি, ফ্ল্যাট দোকান যত্নে রেখে আসবেন। নিরাপত্তাটা খেয়াল করবেন।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘আমি ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার হিসেবে আপনাদের জানাতে চাই, অনুরোধ করতে চাই, আপনারা যখন বাড়ি যাবেন (ঈদে), তখন আপনার বাড়ি, ফ্ল্যাট-দোকান, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা নিজ দায়িত্বে করে যাবেন। আমরা আপনাদের সাথে আছি। তবে আমাদের পুলিশের স্বল্পতা আছে। আমাদের লোকও অনেকে ছুটিতে যাবে, যেতে চায়। যারা ব্যারাকে থাকে, তারা দীর্ঘ সময় পরিবার ছাড়া থাকে। তাদের একটা পার্সেন্টেজ সরকারের নির্দেশে ছুটি দিতে হয়।’

শেখ মো. সাজ্জাত আলী আরও বলেন, শপিং সেন্টারগুলো অনেক রাত পর্যন্ত খোলা থাকবে। বিভিন্ন শপিংমল, শপিং সেন্টার ও গেট দিয়ে ঘেরা বিভিন্ন আবাসিক এরিয়ায় মেট্রোপলিটন পুলিশ আইনবলে অক্সিলারি (সহযোগী) পুলিশ ফোর্স নিয়োগ ক্ষমতা আমার আছে। সেই ক্ষমতা মোতাবেক আমি বেসরকারি নিরাপত্তা কর্মীদের অক্সিলারি পুলিশ ফোর্স হিসেবে নিয়োগ দিয়েছি। তাদের হাতে একটি ব্যান্ড থাকবে। লেখা থাকবে সহায়ক পুলিশ কর্মকর্তা।

আইন মোতাবেক তিনি দায়িত্ব পালন ও গ্রেফতারের ক্ষমতা পাবেন। পুলিশ অফিসার আইনগতভাবে যে প্রটেকশন পান এই অক্সিলারি ফোর্সের সদস্যরাও প্রটেকশন পাবেন।

এসময় উপস্থিত ছিলেন ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এন মো. নজরুল ইসলাম; অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) রেজাউল করিম মল্লিক, যুগ্ম কমিশনার রবিউল (ডিবি) ইসলাম ও মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম, রমনার ডিসি মাসুদ আলম, ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেসন্স বিভাগের মুহাম্মদ ডিসি তালেবুর রহমান প্রমুখ।