খুঁজুন
সোমবার, ১০ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৫শে ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভেদাভেদ ভূলে এক মঞ্চে বিপ্লব-আমিন-নদভী, তুললেন ঐক্যের হাত

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৩১ আগস্ট, ২০২১, ১২:২২ পূর্বাহ্ণ
ভেদাভেদ ভূলে এক মঞ্চে বিপ্লব-আমিন-নদভী, তুললেন ঐক্যের হাত

লোহাগাড়া প্রতিনিধিঃ সাতকানিয়া-লোহাগাড়ার অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে বিভিন্ন ইস্যুতে কখনো আমিন-নদভী, কখনো বিপ্লব-নদভী আবার কখনো বিপ্লব-আমিনের মধ্যকার বিরোধ নতুন নয়। দীর্ঘদিনের অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও এসব বিরোধের কারণে সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগসহ অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনে ছিল তিন নেতার অনুসারীদের দ্বিধা বিভক্তি। নেতায় নেতায় দ্বিধা-দ্বন্দের কারণে দুই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কাঠামো নড়-বড়ে হয়ে পড়েছিল।

অতীতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ও ইউপি নির্বাচনে এসব দ্বিধা-দ্বন্দের খেসারত দিতে হয়েছে খোদ দলীয় প্রতিকের মনোনয়ন পাওয়া নৌকার প্রার্থীদেরও। দলীয় এ কোন্দলের কারণে নৌকার মনোনয়নপ্রাপ্ত প্রার্থীদের ভরাডুবির নজিরও রয়েছে এ দুই উপজেলায়। বিষয়টি দলীয় হাইকমান্ডের নজরে আসার পর দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ এমপি ও চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি’র নেতৃত্বে ঢাকায় সমঝোতা বৈঠক করে এসব বিরোধ মিমাংসার উদ্যোগ নেন। কিন্তু এ বৈঠকের পর নেতায়-নেতায় দুরত্ব কমলেও নেতার অনুসারীদের বিরোধ ঠিকই রয়ে যায়। এবার চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদ এমপি’র মধ্যস্থতায় লোহাগাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভা ও মেজবানে মাঠ পর্যায়ে তিন নেতার অনুসারীদের বিরোধ ও দ্বন্দ মেঠাতে ভেদাভেদ ভুলে তিন নেতা বিপ্লব-আমিন- নদভীকে এক মঞ্চে তুললেন মোছলেম উদ্দিন আহমদ। মঞ্চে তুললেন ঐক্যের হাতও। তিন নেতার বক্তব্যেও ছিল একই সুর, ডাকধ দিলেন ঐক্যের। শোক সভা পরিণত হয় জনসভায় এবং ঐক্যের সভায়।

সোমবার (৩০ আগষ্ট) সোমবার দুপুর ১২ টায় স্থানীয় আলহাজ্ব মােস্তাফিজুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ মাঠে লোহাগাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোকদিবস উপলক্ষে এ আলোচনা সভা, ত্রাণ বিতরণ ও মেজবান অনুষ্টিত হয়।

এ সময় সভার প্রধান অতিথি চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদ এমপি’র নেতৃত্বে একসাথে মঞ্চে উঠেন তিন নেতা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন এবং সাতকানিয়া- লোহাগাড়া আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী।

এসময় মঞ্চে উঠেই প্রধান অতিথি মোছলেম উদ্দিন আহমদ এমপি তিন নেতার হাত তুলে নেতাকর্মীদের অভিবাদন জানান।

লোহাগাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি খোরশেদ আলম চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক সালাহ উদ্দিন হিরুর সঞ্চালনায় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চট্টগ্রাম-৮ আসনের সংসদ সদস্য মোছলেম উদ্দিন আহমদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক ব্যারিষ্টার বিপ্লব বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন এবং সাতকানিয়া-লোহাগাড়া আসনের সংসদ সদস্য প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মাদ নেজামুদ্দীন নদভী।

প্রধান বক্তা ছিলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান।

এতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও জেলা পিপি অ্যাডভোকেট এ. কে. এম সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক প্রদীপ দাশ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীমা হারুন লুবনা, সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান এম. এ মোতালেব সিআইপি, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক বিজয় কুমার বড়ুয়া, সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কুতুব উদ্দিন চৌধুরী, লোহাগাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জান মোহাম্মদ সিকদার, নুরুচ্ছাফা চৌধুরী, শ্রীনিবাস দাশ সাগর, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাশেম মিয়া, ফরিদ আহমদ, সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল হাসান মিন্টু, মুজিবুর রহমান মুজিব, দপ্তর সম্পাদক তৈয়বুল হক বেদার, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, উপ-দপ্তর সম্পাদক এমএস মামুন, কলাউজান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি গাজী ইছহাক মিয়া, পুটিবিলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন মানিক ও বড়হাতিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রিটন বড়ুয়া রোনা প্রমুখ।

সভায় চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ, লোহাগাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের পাচঁ হাজার নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদ এমপি বলেন, পাকিস্তান সরকার এদেশের মানুষের সাথে বৈষম্যমূলক আচরণ করেছে। বাঙ্গালি জাতিকে দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক করে রেখেছিল। তাদের এ আচরণের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রাম গড়ে তুলেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাঙ্গালির মুক্তির ৬দফা দিয়ে আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু এদেশের মানুষের মধ্যে জাগরণ সৃষ্টি করেছিলেন। আওয়ামী লীগ এদেশের মানুষের স্বীকৃতি পেয়েছে। ১৯৭০ এর নির্বাচনে নৌকায় ব্যাপক ভোট দিয়েছে।

দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে মোছলেম উদ্দিন আহমদ বলেন, একে অপরের বিরুদ্ধাচারণ করলে দল ও জাতির ক্ষতি হবে। নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে দলের সকলকে ঐক্যদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। নৌকার বিজয় অব্যহত রাখতে হবে। ঐক্যই হচ্ছে আওয়ামী লীগের মুল শক্তি। দলীয় নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদেরকে যথাযথভাবে পালন করতে হবে।

সভার বিশেষ অতিথি আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ২২ বার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। কারা হত্যার এই ষড়যন্ত্র করেন। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট হামলা চালাতে তারেক রহমান, মন্ত্রী লুৎফুর রহমান বাবর, শিক্ষা-উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টু, মন্ত্রী আলী আহসান মুজাহিদ হাওয়া ভবনে বসে ১৪ আগস্ট নির্দেশ দিয়েছিল। এটি আমার কথা নয়, এই ঘটনার যারা গ্রেফতার হয়ে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।

ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু খুনিদের বৈধতা দিতে সেদিন নেপথ্যের নায়ক জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচার না করে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশকে আইনে পরিণত করেছিল। তথ্য প্রযুক্তির কারণে অনেক তথ্য আমাদের সামনে চলে আসছে। বঙ্গবন্ধু খুনিরা ১৯৭৫ সালের ২০ মার্চ জিয়া রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বঙ্গবন্ধু হত্যার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিল ষড়যন্ত্রকারীরা। সে সময় জিয়া বলেছিলেন ‘গো অ্যাহেড’।

তিনি আরও বলেন, স্বাধীন বাংলার বয়স ৫০ বছর হয়েছে। এমন মুহুর্তে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী সারা পৃথিবীতে উদযাপন হচ্ছে। একই সঙ্গে জাতির পিতার জন্ম শতবার্ষিকীও উদযাপিত হচ্ছে। কারণ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও বঙ্গবন্ধু অভিন্ন সত্ত্বা। বঙ্গবন্ধু কন্যা ১৯৮১ সালে বাংলাদেশে ফিরে আসলে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে গিয়ে পিতা ও মাতার জন্য কোনো মিলাদ পড়তে দেওয়া হয়নি। সে বন্ধুবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা আজকে জনগণের ভোটে তিন বারের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার। সরকারের বিরুদ্ধে বার বার ষড়যন্ত্র হয়েছে, ষড়যন্ত্র চলছে। বিদেশী মানবাধিকার সংগঠন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট ও ২০০৪ সালের ২১ আগষ্ট ষড়যন্ত্রকারীরা যে ঘটনা ঘটিয়েছে, তখন মানবাধিকার নামের সংগঠনের সেসব লোকগুলো তখন কোথায় ছিলেন। জিয়াউর রহমান সরকারের আমলে এদেশের মানুষের কোন অধিকার ছিল না। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের নির্যাতন করা হয়েছে। তখন কিন্তু মনবাধিকার নেতারা কোন কথা বলেননি। সকল ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদেরকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। অন্যথায় দল ও দেশের ব্যাপক ক্ষতি হবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেখানো পথে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন বর্তমান বিশ্বের রোল মডেল।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাতকানিয়া- লোহাগাড়ার সংসদ সদস্য অধ্যাপক ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী বলেন, লোহাগাড়া-সাতকানিয়ায় উল্লেখযোগ্য কোন ক্ষোভ-বিক্ষোভ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে ছিল না। আগামীতে মনোনয়ন কে পাবে, আর কে পাবে না সেটি বড় কথা নয়। তবে দলের কাজ করতে হবে ঐক্যবদ্ধভাবে। লোহাগাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের এ সমাবেশে সকলের দাবি আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের দৃঢ় ঐক্য। জঙ্গীদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের সকল নেতাকর্মীদেরকে কাজ করতে হবে, সজাগ থাকতে হবে। জঙ্গীরা দেশের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। ঐক্যের কোন বিকল্প নেই। আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়েছি, আগামীতেও এ ঐক্যের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।

Feb2

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপা পুনরুদ্ধার করল ভারত

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: সোমবার, ১০ মার্চ, ২০২৫, ১২:০৮ পূর্বাহ্ণ
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপা পুনরুদ্ধার করল ভারত

আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগের নাম ছিল আইসিসি নকআউট বিশ্বকাপ। ২০০০ সালে নকআউট বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারতকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল নিউজিল্যান্ড। দুই যুগ পর সেই হারের প্রতিশোধ নিলো ভারত। কিউইদের ৪ উইকেটে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছে রোহিত শর্মার দল। তাতে সর্বশেষ আসরে পাকিস্তানের কাছে হারানো শিরোপা এবার পুনরুদ্ধার করল তারা।

দুবাইয়ে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৫১ রান সংগ্রহ করে নিউজিল্যান্ড। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৬৩ রান করেছেন ড্যারিল মিচেল। তাছাড়া ফিফটি পেয়েছেন মাইকেল ব্রেসওয়েল। ভারতের হয়ে দুটি করে উইকেট শিকার করেছেন বরুণ চক্রবর্তী ও কুলদীপ যাদব। জবাবে খেলতে নেমে ৪৯ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ভারত। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৭৬ রান করেছেন রোহিত।

২৫২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে উড়ন্ত সূচনা পায় ভারত। দুই ওপেনার রোহিত শর্মা ও শুবমান গিল শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ছিলেন। বিশেষ করে রোহিত, ব্যাট হাতে তিনি রীতিমতো ঝড় তোলেন। বড় ম্যাচে এসে নিজের সেরাটা দেখালেন ভারত অধিনায়ক।

দুই ওপেনারের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে শুরুর পাওয়ার প্লেতে বিনা উইকেটে ৬৪ রান তোলে ভারত। ৪১ বলে ব্যক্তিগত ফিফটি করেন রোহিত। তার তুলনায় কিছুটা রয়ে-সয়ে খেলেছেন গিল। ৫০ বলে ৩১ রান করে এই ওপেনার ফিরলে ভাঙে ১০৫ রানে উদ্বোধনী জুটি।

ওপেনারদের গড়ে দেওয়া শক্ত ভিতে দাঁড়িয়েও সুবিধা করতে পারেননি তিনে নামা বিরাট কোহলি। অভিজ্ঞ এই ব্যাটার ২ বলে করেছেন ১ রান। কোহলি ফেরার পর রোহিতও আর বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি। সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়েও থেমেছেন ৭৬ রানে।

১৮ রানের ব্যবধানে ৩ উইকেট তুলে তখন কিছুটা হলেও ম্যাচে ফেরে কিউইরা। তবে চতুর্থ উইকেট জুটিতে শ্রেয়াস আইয়ার ও অক্ষর প্যাটেল আবারো নিউজিল্যান্ডকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দেয়। ৬২ বলে ৪৮ রান করে আইয়ার ফিরলে ভাঙে ৬১ রানের চতুর্থ উইকেট জুটি।

এরপর অক্ষর, হার্দিক পান্ডিয়া শুরু পেলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি। তাদের বিদায়ে কিছুটা হলেও ভারতের ওপর চাপ পড়ে। তবে সেই চাপ শক্ত হাতে সামাল দেন লোকেশ রাহুল। এক প্রান্ত আগলে রেখে হিসেব-নিকেষ করে শট খেলেছেন তিনি। দলের প্রয়োজন মতো আক্রমণাত্মক হয়েছে তো আবার প্রয়োজনে দেখে-শুনে খেলেছেন। তার অপরাজিত ৩৪ রানের ইনিংসে ৬ বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ভারত।

এর আগে আগে ব্যাট করতে নেমে দুই ওপেনারের ব্যাটে ভালো শুরু পেয়েছিল নিউজিল্যান্ড। রাচিন রবীন্দ্র ও উইল ইয়াং বেশ আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেছেন। বিশেষ করে রাচিন। এই ইনফর্ম ব্যাটার পেসারদের বেশ স্বাছন্দ্যেই খেলছিলেন। যদিও সপ্তম ওভারে মোহাম্মদ শামিকে ফিরতি ক্যাচ দিয়েও জীবন পেয়েছিলেন।

তবে ভারত স্পিন আক্রমণে যাওয়ার পর বেশ ভুগেছেন রাচিন। অষ্টম ওভারের প্রথম বলে বরুণকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ডিপ মিডউইকেটে ক্যাচ দিয়েছিলেন রাচিন। এবারও বল হাতে পেয়ে জমাতে পারেননি ফিল্ডার। তাতে আরো একবার জীবন পান এই ওপেনার।

রাচিন জীবন পেলেও একই ওভারের পঞ্চম বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন উইল ইয়াং। এই ওপেনার সাজঘরে ফেরার আগে ২৩ বলে করেছেন ১৫ রান।

ফাইনালের মতো বড় ম্যাচে দুইবার জীবন পেয়েও বেশি দূর এগোতে পারলেন না রাচিন। এগারোতম ওভারে প্রথমবারের মতো আক্রমণে এসেই রাচিনকে ফিরিয়েছেন কুলদীপ যাদব। এই চায়নাম্যানের গুগলিতে বোকা বনে যান রাচিন। বোল্ড হওয়ার আগে ২৯ বলে করেছেন ৩৭ রান।

বড় ম্যাচে বেশিরভাগ সময়ই রান পান উইলিয়ামসন। তবে আজ সেই রীতি ভাঙলেন তিনি নিজেই। বাজে এক শটে রীতিমতো আত্মহত্যা করেছেন এই অভিজ্ঞ ব্যাটার! রাচিন ফেরার পর বড় দায়িত্ব ছিল তার কাঁধে। তবে আজ আর পারলেন না। ১৩তম ওভারের দ্বিতীয় বলে কুলদীপকে ফ্লিক করতে গিয়ে ফিরতি ক্যাচ দিয়েছেন তিনি। তার আগে ১৪ বলে করেছেন ১১ রান।

এরপর টম ল্যাথামও উইকেটে থিতু হয়ে ফিরেছেন। কিন্তু বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। ৩০ বলে করেছেন ১৪ রান। ১০৮ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর গ্লেন ফিলিপসকে সঙ্গে নিয়ে দলকে টেনে তোলেন ড্যারিল মিচেল। ভালো শুরু পেয়েও তা কাজে লাগাতে পারেননি ফিলিপস। ৫২ বলে করেছেন ৩৪ রান।

বাকি ব্যাটারদের আসা-যাওয়ার মাঝে এক প্রান্ত আগলে রেখেছিলেন মিচেল। দেখে-শুনে খেলায় প্রচুর ডট বল খেলেছেন। তাই ব্যক্তিগত ফিফটির পর গিয়ার পরিবর্তন করেন। তাতেই বাড়ে বিপদ। ৬৩ রান করে রোহিত শর্মার হাতে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি।

মিচেল ফিরলে দলের হাল ধরেন ব্রেসওয়েল। তার দুর্দান্ত ব্যাটিংয়েই লড়াই করার পুঁজি পায় দল। ৪০ বলে অপরাজিত ৫৩ রান করেছেন এই ব্যাটার।

মাগুরার শিশুটির সব ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে সরানোর নির্দেশ

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: রবিবার, ৯ মার্চ, ২০২৫, ১:০১ অপরাহ্ণ
মাগুরার শিশুটির সব ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে সরানোর নির্দেশ

মাগুরায় বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার শিশুটির সব ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে সরানোর নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

ওই শিশুর ছবি সরিয়ে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসির) দুপুর সোয়া ১২টার মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীর কাছে তথ্য জানানোর জন্য বলেছেন আদালত।

বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন উপস্থাপন করার পর রোববার (৯ মার্চ) হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদেশের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শাহিনুজ্জামান।

তিনি বলেন, মাগুরাসহ সারাদেশে ধর্ষণের ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যাওয়ায়, আজ পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করার পর, মাগুরার সেই শিশু সমস্ত ছবি ইউটিউব, ফেসবুকসহ অন্যান্য মাধ্যম থেকে সরিয়ে ফেলার জন্য বিটিআরসিকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে এ সংক্রান্ত বিষয়ে যথাযথ প্রক্রিয়ায় আবেদন করার জন্য পরামর্শ দিয়ে, আবেদনের পর এ সংক্রান্ত বিষয়ে পরবর্তী নির্দেশনা দেবেন বলে আদালত জানিয়েছেন।

এর আগে, শনিবার ঢাকা মেডিকেল থেকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচে) নেওয়া হয় শিশুটিকে। সেখানেই তার চিকিৎসা চলছে।

এদিকে, ধর্ষণের ঘটনায় মামলা করেছেন শিশুটির মা। মামলায় শিশুটির বোনের স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাশুরকে আসামি করা হয়েছে। তারা আগে থেকেই পুলিশের হেফাজতে ছিলেন। মামলার এজাহারে তিনি অভিযোগ করেন, মেয়ের স্বামীর সহায়তায় তার বাবা (শ্বশুর) শিশুটিকে ধর্ষণ করেন। বিষয়টি মেয়ের শাশুড়ি ও ভাশুর জানতেন। তারা ঘটনা ধামাচাপা দিতে শিশুটিকে হত্যাচেষ্টা চালান।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সম্মুখসারিতে ছিল নারীরা: ড. ইউনূস

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: শনিবার, ৮ মার্চ, ২০২৫, ৪:৩০ অপরাহ্ণ
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সম্মুখসারিতে ছিল নারীরা: ড. ইউনূস

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে বাংলাদেশের ছাত্র-শ্রমিক-জনতা মিলে যে অসাধ্য সাধন করেছে তার সম্মুখসারিতে ছিল এ দেশের নারীরা। ফ্যাসিবাদী শক্তির প্রাণঘাতি অস্ত্রের সামনে হিমালয়ের মতো দাঁড়িয়েছিল আমাদের মেয়েরা।

তিনি বলেন, পতিত স্বৈরাচার দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করছে। আমাদেরকে এখন ততটাই সতর্ক থাকতে হবে যেমনটা আমরা যুদ্ধের মতো পরিস্থিতির মধ্যে ছিলাম। নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা রক্ষায় সর্বোচ্চ সজাগ থাকুন। নিপীড়নের বিরুদ্ধে সামাজিক ঐক্য গড়ে তুলুন। একে অন্যের পাশে দাঁড়ান। একটি সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ সমাজ গড়তে সরকারকে সহযোগিতা করুন।

৮ মার্চ (শনিবার) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, গণঅভ্যুত্থানে সম্মুখসারিতে থাকলেও আমাদের সমাজে এখনো অনেক ক্ষেত্রেই নারীরা পিছিয়ে আছে। নারীদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে সরকার সবসময় সচেষ্ট। এজন্য বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ চলমান। দুস্থ মায়েদের আর্থিক সহায়তা প্রদান, নারীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচি, কর্মজীবী নারীদের থাকার হোস্টেল, ডে-কেয়ার সেন্টার সুবিধাসহ বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ অন্তর্বর্তী সরকার নিচ্ছে। আরও কী কী করা যেতে পারে সেটা নিয়েও আলোচনা চলছে।

ড. ইউনূস বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতা রোধ সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকার। অনেক সময় নারীরা নির্যাতনের শিকার হলেও তারা বুঝতে পারেন না কোথায় অভিযোগ জানাবেন। নারীরা যেন তাদের অভিযোগ জানাতে পারেন সেজন্য হটলাইন চালু করা হয়েছে। আইনি সহায়তা দেওয়ার জন্য আমরা পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন, ২০১০ হালনাগাদ করার উদ্যোগ নিয়েছি। যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও সুরক্ষা আইন, ২০২৫ প্রণয়নের কাজও আমরা হাতে নিয়েছি। আমরা একটি নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন করেছি, তারাও তাদের সুপারিশগুলো দেবে।