সীতাকুণ্ডে এসএসসি পরিক্ষা দিয়েই চিরকুট লিখে পালিয়েছে দুই বান্ধবী

সীতাকুণ্ড প্রতিনিধিঃ সীতাকুণ্ডের কুমিরা মছজিদ্দা উচ্চ বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষা দিতে গিয়ে তামান্না আকতার(১৭) ও অর্পা মল্লিক(১৬) নামে দুই ছাত্রী নিখোঁজ হয়েছে। দুইজন লতিফা সিদ্দিকা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী।
তাদের সন্ধান চেয়ে তামান্না আকতার এর মা ছকিনা বেগম ও অর্পা মল্লিক এর মা অঞ্জনা মল্লিক সীতাকুণ্ড থানায় পৃথক দুটি জিডি করেন। একইভাবে তামান্নার মা ছকিনা বেগম র্যাব কার্যালয়েও অভিযোগ করেছেন।
জিডি মূলে জানা যায়, গত ২৩ নভেম্বর সকালে উপজেলার দক্ষিণ মছজিদ্দা মাস্টার পাড়ার ফুরক মিস্ত্রীর বাড়ির মৃত মাসুদ মিয়ার মেয়ে তামান্না আকতার এবং ছোট কুমিরা ৩নং ওয়ার্ড মছজিদ্দা এলাকার স্বপন মল্লিকের মেয়ে অর্পা মল্লিক এসএসসি পরীক্ষা দিতে ছোট কুমিরা মছজিদ্দা উচ্চ বিদ্যালয়ে যায়। তারপর থেকে তারা দুইজন আর ফিরে আসেনি।
নিখোঁজ তামান্না আকতারের মা ছকিনা বেগম বলেন, আমরা গরিব অসহায়। খুব দু:খ কষ্ট করে সংসার চালায়। স্বামী নেই অনেক আগে মারা গেছেন। আমার মেয়ে কোন মোবাইল ফোন ব্যবহার করে না। কোন ছেলের সাথে সম্পর্কও নেই। অর্পা তার যাবতীয় টাকা পয়সা ও কাপড় চোপড় নিয়ে গেছে কিন্তু আমার মেয়ে স্কুলে পোশাক ছাড়া আর কিছুই নেয়নি।
অর্পা মল্লিকের মায়ের অভিযোগে জানা যায়, অর্পা পরীক্ষা দিতে যাওয়ার আগে তার বালিশের নিচে একটি চিটি লিখে রেখে গেছে। সেটিতে বলা হয়েছে আমি চলে যাচ্ছি আর আসব না। সে আরো লিখেছে, আমি একজনকে ভালোবাসি তাকে নিয়েই চলে যাচ্ছি। আমাকে মাফ করে দিও।
অর্পার মা অঞ্জনা মল্লিক বলেন, তামান্না আর অর্পা বান্ধবী, সে সুবাদে প্রতিদিনই তামান্না আমাদের ঘরে আসতো। তাদের দুইজনের মধ্যে আমি কিছুটা ঘনিষ্টভাবে মেলামেশা করতে দেখতাম, যেহেতু দুইজনই মেয়ে তাই প্রথম প্রথম কিছু মনে করতাম না। পরে তাদের আচরণ দেখে আমি তাদেরকে বকাও দিয়েছি কয়েকবার।
এদিকে সীতাকুণ্ড মডেল থানার এসআই ও মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা এমরান বলেন, তামান্না ও অর্পা নামে দুই এসএসসি পরীক্ষার্থী বান্ধবী একই সাথে নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি সম্পর্কে আমরা অবগত আছি। অভিযোগ পাওয়ার পর থেকে আমরা অত্যন্ত গুরুত্বসহকারী নিখোঁজ হওয়া দুই শিক্ষার্থীর ঘটনাটি দেখছি। দুই পরিবারের সাথে কথা বলে এবং অর্পার একটি ডায়েরি দেখে ধারণা করা হচ্ছে দুই বান্ধবী সমকামী। এছাড়া তাদের যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে একে অপরকে লিখা দেখেও তা অনুমান করা হচ্ছে।
সীতাকুণ্ড মডেল থানার (ওসি) আবুল কালাম আজাদ সাংবাদিকদের বলেন, তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ। আমরা সব জায়গায় তাদের খুঁজছি।
আপনার মতামত লিখুন