খুঁজুন
সোমবার, ১০ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৫শে ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মেসি-জাদু নাকি মদরিচ-মায়া

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২২, ১:৪৩ অপরাহ্ণ
মেসি-জাদু নাকি মদরিচ-মায়া

বিশ্বকাপ ফুটবল। কাঁদায়। হাসায়। হৃদয় রক্তাক্ত করে। একরাশ শূন্যতার জন্ম দেয়। আবার মুহূর্তের নাটকীয়তায় আবেগ আর উচ্ছ্বাসে ভাসিয়ে দিয়ে যায়। কাতারে মরুর বুকে ফুটবলের মহামেলায় তার ব্যতিক্রম কিছু কি দেখছে ফুটবল বিশ্ব।

গারিঞ্চাকে মনে করিয়ে দেওয়া কি অসাধারণ ড্রিবলে নেইমারের গোল! তারপরই ব্রাজিলের স্বপ্ন শেষ করে দিল লুকা মদরিচের ক্রোয়েশিয়া। চোখের জলে বিদায় নেইমারের। মরক্কো আরব্য রজনীর গল্প লিখল আর কাঁদতে কাঁদতে টানেল দিয়ে হারিয়ে গেলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। হয়তো বিশ্বকাপ মঞ্চ থেকে চিরদিনের জন্য তার চলে যাওয়া। কাতারে আপনি আর দেখবেন না, পাখির মতো শূন্যে উঠে রোনালদোর হেড। দেখবেন না গারিঞ্চাকে মনে করানো নেইমারের ড্রিবল! ফুটবলপ্রেমীদের আবেগের বলয়ে পড়ে রইল কী! লিওনেল মেসির বাঁ পায়ের জাদু। আর এমবাপ্পের চিতার মতো দৌড়।

মেসির জাদু শেষ হয়ে যেতে পারে আজ রাতে লুকা মদরিচ-মায়ায় ক্রোয়েশিয়ার কাছে। আর ফুটবল বিশ্বে আরব বসন্তের বার্তা দেওয়া মরক্কো থামিয়ে দিতে পারে কাল এমবাপ্পের দৌড়! তেমন কিছু হলে আর্জেন্টিনার পারস্য অভিযান শেষ, বিশ্বকাপ ফাইনালের আগেই। আজ যদি ফুটবল মদরিচ-মায়ায় মুগ্ধ হয়ে পড়ে তাহলে এবারের বিশ্বকাপ আর্জেন্টিনার কাছে মরুভূমিতে মরীচিকাই মনে হবে। আর্জেন্টিনাকে ঘিরে এখন ল্যাটিন ফুটবল সৌন্দর্যের যে আবেগের বলয়, সেখানে থাকবে শুধু নীরব নিস্তব্ধতা। শোকের ছায়া। নেইমার, রোনালদোর বিদায়ের পর মেসি আজ বিদায় নিলে, বারবার বলা হবে, ভাঙাগড়ার বিশ্বকাপ। হাসিকান্নার বিশ্বকাপ। স্বপ্নভঙ্গের বিশ্বকাপ! হয়তো বলা হবে, চমকের বিশ্বকাপ!

মেসি বিদায় নিলে কাতার বিশ্বকাপে নায়ক কে হবেন, বলা যাচ্ছে না। তবে নেইমার, রোনালদোর পর মেসির নামও যদি যুক্ত হয় ট্র্যাজিক হিরোদের তালিকায়, তাহলে কাকে নিয়ে লেখা হবে ফুটবলের নতুন আরব্য রজনী? তখন লেখা হবে সেই পুরোনো কথাটা আবার নতুন করে। ফুটবল বিশ্বকাপ রাজাকে ফকির বানায়। ফকিরকে রাজা! কাতার বিশ্বকাপ নতুন কোনো চমক দেখাতে যাচ্ছে কি না, তার খানিকটা আভাস মিলতে পারে আজ। চিরতরে টানেলে হারিয়ে যাওয়ার আগে বাজিমাত করে বাজিগর হওয়ার সুযোগ আছে এখনো লিওনেল মেসির।

লিওনেল মেসি—এলএম টেন।এই গ্রহে আবেগ বলুন, আর ফুটবল লড়াই বলুন, মেসির শ্রেষ্ঠত্বকে বারবার চ্যালেঞ্জের মুখে ফলেছেন যিনি, সেই রোনালদো বিশ্বকাপ মঞ্চে নেই। আজ সেমিফাইনালে এলএম টেনকে চ্যালেঞ্জ জানাবেন আরেক এলএম টেন! হ্যাঁ, ঠিকই লেখা হয়েছে। এবং আপনি ঠিকই পড়ছেন। আজ সেমিফাইনালে আর্জেন্টিনা বনাম ক্রোয়েশিয়া লড়াইয়ের মাঝে আরেক লড়াই। সেটা এলএম টেন বনাম এলএম টেন! লিওনেল মেসির সঙ্গে লড়াইটা লুকা মদরিচের। দু‍‍জনেই ব্যালন ডি’অর জিতেছেন। দুজনই চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতেছেন। দু‍‍জন নিজের দেশকে বিশ্বকাপের ফাইনালে তুলেছেন। কিন্তু দু‍‍জনের কারোরই বিশ্বকাপ ছুঁয়ে দেখা হয়নি! তবে লিওকে ঘিরে আবেগের অন্য রকম আভা। এখানে খানিকটা পিছিয়ে লুকা।
তারপর মধ্য ত্রিশ পেরিয়ে যাওয়া এই দুই তারকাকে আটকানো নিয়ে দুশ্চিন্তায় দুই দলের কোচ। যদিও তারা জানেন লিও বা লুকাদের আটকানোর ফর্মুলা বের করা কঠিন। ক্রোয়েট কোচ তো বলেই ফেলেছেন, ‍‍“মেসি নয়। আমার পরিকল্পনা আর্জেন্টিনাকে নিয়ে।‍‍” আর আর্জেন্টাইন কোচের মন্তব্য অনেক বেশি টেকনিক্যালি ইতিবাচক। ক্রোয়েশিয়ার যা খেলার ধরন, তারা প্রতি-আক্রমণনির্ভর ফুটবল খেলে তারা ম্যাচটা নিয়ে যেতে চাইবে টাইব্রেকার পর্যন্ত। সে কারণেই আর্জেন্টাইন কোচ বলেছেন, ‍“আমরা ৯০ মিনিটেই খেলা শেষ করতে চাই। এবং সেটা ১২০ গজে।‍‍”

যার দলে একজন মেসি আছেন, যার একটা ম্যাজিক্যাল পাস বা টাচ ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দিতে পারে, তার কোচ কেন ভাববেন টাইব্রেকারের কথা! তার পোস্টে যতই মার্টিনেজ নামক একজন গোলকিপার থাকুন। তিনি পেনাল্টি শুট-আউটে যতই ডাচদের প্রথম দুটো শট আটকে দিয়ে আর্জেন্টিনাকে সেমিফাইনালে তুলে আনুন না কেন। ম্যাচের আগে আবেগের সীমান্তে লিওনেল মেসি আর লুকা মদরিচ একই সমান্তরালে দাঁড়িয়ে নেই। ফুটবলের মহোৎসবে মেসি আর আর্জেন্টিনাকে ঘিরে আবেগটা একটু বেশি। মেসির সঙ্গে মদরিচের তুলনা হচ্ছে তার কারণ খেলাটা ক্রোয়েশিয়ার সঙ্গে। কিন্তু লিওনেল মেসিকে বিশ্বকাপ এলেই লড়াই করতে হয় আরেকজনের ছায়ার সঙ্গে। তিনিও ১০ নম্বর জার্সি পরতেন। এবং ওই আকাশি-সাদা জার্সি। তার নামেরও প্রথম অক্ষর ‍‍‘ম‍‍’! অসামান্য প্রতিভা নিয়ে জন্মেছিলেন। অসাধারণ ফুটবল খেলে ছিয়াশিতে প্রায় একার সৃষ্টিশীল দক্ষতায় আর্জেন্টিনাকে কাপ জিতিয়েছিলেন। ম্যারাডোনা পারলে আপনি কেন কাপ এনে দিতে পারবেন না মেসি! তাহলে আপনি কিসের সেরা! এই প্রশ্ন শুনতে শুনতে ক্যারিয়ারের প্রান্তে লিওনেল মেসি। আর মাত্র দুটো ম্যাচ জিতলেই সব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে কাপ হাতে প্রান্তিক স্টেশনে নামতে পারবেন তিনি। এই পঁয়ত্রিশেও তার মধ্যে স্বপ্ন নিয়ে ছুটে চলার ফুয়েল আছে। ডাচদের বিপক্ষে ‍‍‘ব্যাটেল অব লুসাইলে‍‍’ কাপ জয়ে মরিয়া আগ্রাসী এবং স্পর্ধা দেখানো অন্য রকম এক মেসিকেই দেখল ফুটবল বিশ্ব। স্নায়ুচাপে ভুগতে থাকা আর্জেন্টাইন সমর্থকরা এই মেসিকেই দেখতে চান।

অন্যদিকে ব্রাজিলকে বিদায় করে সেমিফাইনালে আসা মদরিচকে লড়াই করতে হয় নিজের সঙ্গে। সাঁইত্রিশে পৌঁছে যে লড়াইটা তিনি করছেন, সেটা অবিশ্বাস্য। অসাধারণ। এখন দরকার অবিস্মরণীয় দুটো জয়। তাহলে পেলে-ম্যারাডোনার পাশে না রাখলেও পাওলো রসি, জিনেদিন জিদানদের সঙ্গে মদরিচের নামটা ফুটবল বিশ্বকে উচ্চারণ করতেই হবে।

মেসি-জাদু, নাকি মদরিচ-মায়ায় আচ্ছন্ন হবে ফুটবল বিশ্ব! উত্তরের জন্য অপেক্ষা তো আর কিছু সময়ের।

লেখক:অঘোর মণ্ডল, ক্রীড়া সাংবাদিক

Feb2

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপা পুনরুদ্ধার করল ভারত

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: সোমবার, ১০ মার্চ, ২০২৫, ১২:০৮ পূর্বাহ্ণ
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপা পুনরুদ্ধার করল ভারত

আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগের নাম ছিল আইসিসি নকআউট বিশ্বকাপ। ২০০০ সালে নকআউট বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারতকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল নিউজিল্যান্ড। দুই যুগ পর সেই হারের প্রতিশোধ নিলো ভারত। কিউইদের ৪ উইকেটে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছে রোহিত শর্মার দল। তাতে সর্বশেষ আসরে পাকিস্তানের কাছে হারানো শিরোপা এবার পুনরুদ্ধার করল তারা।

দুবাইয়ে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৫১ রান সংগ্রহ করে নিউজিল্যান্ড। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৬৩ রান করেছেন ড্যারিল মিচেল। তাছাড়া ফিফটি পেয়েছেন মাইকেল ব্রেসওয়েল। ভারতের হয়ে দুটি করে উইকেট শিকার করেছেন বরুণ চক্রবর্তী ও কুলদীপ যাদব। জবাবে খেলতে নেমে ৪৯ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ভারত। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৭৬ রান করেছেন রোহিত।

২৫২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে উড়ন্ত সূচনা পায় ভারত। দুই ওপেনার রোহিত শর্মা ও শুবমান গিল শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ছিলেন। বিশেষ করে রোহিত, ব্যাট হাতে তিনি রীতিমতো ঝড় তোলেন। বড় ম্যাচে এসে নিজের সেরাটা দেখালেন ভারত অধিনায়ক।

দুই ওপেনারের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে শুরুর পাওয়ার প্লেতে বিনা উইকেটে ৬৪ রান তোলে ভারত। ৪১ বলে ব্যক্তিগত ফিফটি করেন রোহিত। তার তুলনায় কিছুটা রয়ে-সয়ে খেলেছেন গিল। ৫০ বলে ৩১ রান করে এই ওপেনার ফিরলে ভাঙে ১০৫ রানে উদ্বোধনী জুটি।

ওপেনারদের গড়ে দেওয়া শক্ত ভিতে দাঁড়িয়েও সুবিধা করতে পারেননি তিনে নামা বিরাট কোহলি। অভিজ্ঞ এই ব্যাটার ২ বলে করেছেন ১ রান। কোহলি ফেরার পর রোহিতও আর বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি। সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়েও থেমেছেন ৭৬ রানে।

১৮ রানের ব্যবধানে ৩ উইকেট তুলে তখন কিছুটা হলেও ম্যাচে ফেরে কিউইরা। তবে চতুর্থ উইকেট জুটিতে শ্রেয়াস আইয়ার ও অক্ষর প্যাটেল আবারো নিউজিল্যান্ডকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দেয়। ৬২ বলে ৪৮ রান করে আইয়ার ফিরলে ভাঙে ৬১ রানের চতুর্থ উইকেট জুটি।

এরপর অক্ষর, হার্দিক পান্ডিয়া শুরু পেলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি। তাদের বিদায়ে কিছুটা হলেও ভারতের ওপর চাপ পড়ে। তবে সেই চাপ শক্ত হাতে সামাল দেন লোকেশ রাহুল। এক প্রান্ত আগলে রেখে হিসেব-নিকেষ করে শট খেলেছেন তিনি। দলের প্রয়োজন মতো আক্রমণাত্মক হয়েছে তো আবার প্রয়োজনে দেখে-শুনে খেলেছেন। তার অপরাজিত ৩৪ রানের ইনিংসে ৬ বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ভারত।

এর আগে আগে ব্যাট করতে নেমে দুই ওপেনারের ব্যাটে ভালো শুরু পেয়েছিল নিউজিল্যান্ড। রাচিন রবীন্দ্র ও উইল ইয়াং বেশ আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেছেন। বিশেষ করে রাচিন। এই ইনফর্ম ব্যাটার পেসারদের বেশ স্বাছন্দ্যেই খেলছিলেন। যদিও সপ্তম ওভারে মোহাম্মদ শামিকে ফিরতি ক্যাচ দিয়েও জীবন পেয়েছিলেন।

তবে ভারত স্পিন আক্রমণে যাওয়ার পর বেশ ভুগেছেন রাচিন। অষ্টম ওভারের প্রথম বলে বরুণকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ডিপ মিডউইকেটে ক্যাচ দিয়েছিলেন রাচিন। এবারও বল হাতে পেয়ে জমাতে পারেননি ফিল্ডার। তাতে আরো একবার জীবন পান এই ওপেনার।

রাচিন জীবন পেলেও একই ওভারের পঞ্চম বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন উইল ইয়াং। এই ওপেনার সাজঘরে ফেরার আগে ২৩ বলে করেছেন ১৫ রান।

ফাইনালের মতো বড় ম্যাচে দুইবার জীবন পেয়েও বেশি দূর এগোতে পারলেন না রাচিন। এগারোতম ওভারে প্রথমবারের মতো আক্রমণে এসেই রাচিনকে ফিরিয়েছেন কুলদীপ যাদব। এই চায়নাম্যানের গুগলিতে বোকা বনে যান রাচিন। বোল্ড হওয়ার আগে ২৯ বলে করেছেন ৩৭ রান।

বড় ম্যাচে বেশিরভাগ সময়ই রান পান উইলিয়ামসন। তবে আজ সেই রীতি ভাঙলেন তিনি নিজেই। বাজে এক শটে রীতিমতো আত্মহত্যা করেছেন এই অভিজ্ঞ ব্যাটার! রাচিন ফেরার পর বড় দায়িত্ব ছিল তার কাঁধে। তবে আজ আর পারলেন না। ১৩তম ওভারের দ্বিতীয় বলে কুলদীপকে ফ্লিক করতে গিয়ে ফিরতি ক্যাচ দিয়েছেন তিনি। তার আগে ১৪ বলে করেছেন ১১ রান।

এরপর টম ল্যাথামও উইকেটে থিতু হয়ে ফিরেছেন। কিন্তু বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। ৩০ বলে করেছেন ১৪ রান। ১০৮ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর গ্লেন ফিলিপসকে সঙ্গে নিয়ে দলকে টেনে তোলেন ড্যারিল মিচেল। ভালো শুরু পেয়েও তা কাজে লাগাতে পারেননি ফিলিপস। ৫২ বলে করেছেন ৩৪ রান।

বাকি ব্যাটারদের আসা-যাওয়ার মাঝে এক প্রান্ত আগলে রেখেছিলেন মিচেল। দেখে-শুনে খেলায় প্রচুর ডট বল খেলেছেন। তাই ব্যক্তিগত ফিফটির পর গিয়ার পরিবর্তন করেন। তাতেই বাড়ে বিপদ। ৬৩ রান করে রোহিত শর্মার হাতে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি।

মিচেল ফিরলে দলের হাল ধরেন ব্রেসওয়েল। তার দুর্দান্ত ব্যাটিংয়েই লড়াই করার পুঁজি পায় দল। ৪০ বলে অপরাজিত ৫৩ রান করেছেন এই ব্যাটার।

মাগুরার শিশুটির সব ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে সরানোর নির্দেশ

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: রবিবার, ৯ মার্চ, ২০২৫, ১:০১ অপরাহ্ণ
মাগুরার শিশুটির সব ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে সরানোর নির্দেশ

মাগুরায় বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার শিশুটির সব ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে সরানোর নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

ওই শিশুর ছবি সরিয়ে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসির) দুপুর সোয়া ১২টার মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীর কাছে তথ্য জানানোর জন্য বলেছেন আদালত।

বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন উপস্থাপন করার পর রোববার (৯ মার্চ) হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদেশের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শাহিনুজ্জামান।

তিনি বলেন, মাগুরাসহ সারাদেশে ধর্ষণের ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যাওয়ায়, আজ পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করার পর, মাগুরার সেই শিশু সমস্ত ছবি ইউটিউব, ফেসবুকসহ অন্যান্য মাধ্যম থেকে সরিয়ে ফেলার জন্য বিটিআরসিকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে এ সংক্রান্ত বিষয়ে যথাযথ প্রক্রিয়ায় আবেদন করার জন্য পরামর্শ দিয়ে, আবেদনের পর এ সংক্রান্ত বিষয়ে পরবর্তী নির্দেশনা দেবেন বলে আদালত জানিয়েছেন।

এর আগে, শনিবার ঢাকা মেডিকেল থেকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচে) নেওয়া হয় শিশুটিকে। সেখানেই তার চিকিৎসা চলছে।

এদিকে, ধর্ষণের ঘটনায় মামলা করেছেন শিশুটির মা। মামলায় শিশুটির বোনের স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাশুরকে আসামি করা হয়েছে। তারা আগে থেকেই পুলিশের হেফাজতে ছিলেন। মামলার এজাহারে তিনি অভিযোগ করেন, মেয়ের স্বামীর সহায়তায় তার বাবা (শ্বশুর) শিশুটিকে ধর্ষণ করেন। বিষয়টি মেয়ের শাশুড়ি ও ভাশুর জানতেন। তারা ঘটনা ধামাচাপা দিতে শিশুটিকে হত্যাচেষ্টা চালান।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সম্মুখসারিতে ছিল নারীরা: ড. ইউনূস

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: শনিবার, ৮ মার্চ, ২০২৫, ৪:৩০ অপরাহ্ণ
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সম্মুখসারিতে ছিল নারীরা: ড. ইউনূস

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে বাংলাদেশের ছাত্র-শ্রমিক-জনতা মিলে যে অসাধ্য সাধন করেছে তার সম্মুখসারিতে ছিল এ দেশের নারীরা। ফ্যাসিবাদী শক্তির প্রাণঘাতি অস্ত্রের সামনে হিমালয়ের মতো দাঁড়িয়েছিল আমাদের মেয়েরা।

তিনি বলেন, পতিত স্বৈরাচার দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করছে। আমাদেরকে এখন ততটাই সতর্ক থাকতে হবে যেমনটা আমরা যুদ্ধের মতো পরিস্থিতির মধ্যে ছিলাম। নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা রক্ষায় সর্বোচ্চ সজাগ থাকুন। নিপীড়নের বিরুদ্ধে সামাজিক ঐক্য গড়ে তুলুন। একে অন্যের পাশে দাঁড়ান। একটি সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ সমাজ গড়তে সরকারকে সহযোগিতা করুন।

৮ মার্চ (শনিবার) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, গণঅভ্যুত্থানে সম্মুখসারিতে থাকলেও আমাদের সমাজে এখনো অনেক ক্ষেত্রেই নারীরা পিছিয়ে আছে। নারীদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে সরকার সবসময় সচেষ্ট। এজন্য বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ চলমান। দুস্থ মায়েদের আর্থিক সহায়তা প্রদান, নারীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচি, কর্মজীবী নারীদের থাকার হোস্টেল, ডে-কেয়ার সেন্টার সুবিধাসহ বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ অন্তর্বর্তী সরকার নিচ্ছে। আরও কী কী করা যেতে পারে সেটা নিয়েও আলোচনা চলছে।

ড. ইউনূস বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতা রোধ সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকার। অনেক সময় নারীরা নির্যাতনের শিকার হলেও তারা বুঝতে পারেন না কোথায় অভিযোগ জানাবেন। নারীরা যেন তাদের অভিযোগ জানাতে পারেন সেজন্য হটলাইন চালু করা হয়েছে। আইনি সহায়তা দেওয়ার জন্য আমরা পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন, ২০১০ হালনাগাদ করার উদ্যোগ নিয়েছি। যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও সুরক্ষা আইন, ২০২৫ প্রণয়নের কাজও আমরা হাতে নিয়েছি। আমরা একটি নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন করেছি, তারাও তাদের সুপারিশগুলো দেবে।