জিয়াউর রহমানই দেশে গুম-খুনের সংস্কৃতি চালু করেছিল: শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জিয়াউর রহমানই এ দেশে গুম-খুনের সংস্কৃতি চালু করেছিল। জিয়ার আদেশ পালন করা জেলের জল্লাদরাও অবাক হয়ে যাচ্ছিলেন যে, কী ঘটে যাচ্ছে এসব?
শনিবার (১৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় গণভবনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সভায় সূচনা বক্তব্যে দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ যখন এ দেশে সরকার গঠন করেছে তখনই গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রেখেছে। দেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নতি করা, দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করার জন্য একমাত্র আওয়ামী লীগ সরকারই কাজ করেছে। আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় এসেছে তখনই মানুষের অধিকারগুলো নিশ্চিত হয়েছে।
জিয়াউর রহমানের শাসন আমলের কথা স্মরণ করিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সে সময়ে সাদা মাইক্রোবাসে যাদের তুলে নিয়ে গেছে তাদের লাশও আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। সেনাবাহিনীতে যে হাজার হাজার মানুষ হত্যা করেছে জিয়াউর রহমান। রাজশাহী-বগুড়া-ঢাকা-খুলনা কারাগারসহ বিভিন্ন কারগারে হিসাব মিলিয়ে দেখবেন শত শত সেনা অফিসার, সৈনিক, বিমানবাহিনীর অফিসার এবং অগণিত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীকে তারা হত্যা করেছে। তাদের পরিবার তো লাশই পায়নি। লাশও গুম করে ফেলা হয়েছে। তাদের খুঁজে পাওয়া যায়নি। ক্ষমতায় এসে গুমের সংস্কৃতি চালু করে দেয় এ দেশে।
তিনি বলেন, এমনকি দেড়শ মানুষ একসঙ্গে হত্যা করেছিল রাজশাহী কারাগারে। তালিকা দেখলে দেখবেন এবং জল্লাদ থেকে শুরু করে যারা কাজ করেছে তারাই মানসিক যন্ত্রণায় ভুগেছে, এটা কী হচ্ছে? ঢাকা কারাগারে প্রতিরাতে ১০ জন, ১২ জন করে ফাঁসি দিয়েছে। একইসঙ্গে দুজন তিনজন করে ফাঁসি দিয়েই গেছে। তারা জানে না কী তাদের অপরাধ? তাদের চিৎকার, তাদের আহাজারিতে আকাশ-বাতাস ভারি হয়েছে। এটাই তো ছিল বাংলাদেশের চিত্র। ১৯টা ক্যু হয়েছে এ দেশে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যাদের জন্ম হয়েছে অবৈধভাবে, ক্ষমতা দখল করে, মার্শাল ল’ এর মধ্য দিয়ে। তারা আবার আমাদের গণতন্ত্রের ছবক দেয়, পরামর্শ দেয়। তারা নাকি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করবে। মার্শাল ল’ দিয়ে, সারারাত কারফিউ দিয়ে যারা রাষ্ট্র পরিচালনা করেছে তারা গণতন্ত্র কিভাবে দেয় আর কিসের গণতন্ত্র দেয় আমি বুঝি না। আমাদের দেশে কিছু মানুষ আছে যারা নিজেদের বুদ্ধিজীবী বলে পরিচয় দেয়, জ্ঞানী-গুণী বলে পরিচয় দেয়, তাদেরও মুখে শুনি দেশে নাকি গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে। আমার এখানে প্রশ্ন হচ্ছে তাহলে মিলিটারি ডিক্টেটরিদের সময় যারা মার্শাল ল’ দিয়ে রাষ্ট্র চালিয়েছিল, সেটাকেই কি তারা গণতন্ত্র বলতে চান? ওটাই কি গণতান্ত্রিক ধারা ছিল?
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, পাঁচাত্তরের হত্যাকাণ্ডের বিচার হবে বলে ইনডেমনিটি অর্ডিনারি জারি করা হয়। হত্যাকারীদের পুরস্কৃত করা হয়। সংবিধান লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের পালা শুরু হয়। আর সেটা করতে গিয়ে অবৈধ মিলিটারি ডিক্টেটর সেনাবাহিনীর বহু মুক্তিযোদ্ধা অফিসার, হাজার হাজার সৈনিকদের হত্যা করে। বিমানবাহিনীর সদস্যদের হত্যা করে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর অকথ্য নির্যাতন করে। তাদেরকে গ্রেফতার করে দিনের পর দিন। বছরের পর বছর কারাগারে নিক্ষিপ্ত করে। এই অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে ক্ষমতায় বসে একটা দলও গঠন করে ফেলে এবং মানুষের ভোটের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলে।
আপনার মতামত লিখুন