কক্সবাজারে পর্যটকের ঢল

টানা তিন দিনের সরকারি ছুটিতে পর্যটন নগরী কক্সবাজারে পর্যটকের ঢল নেমেছে। দেশের নানা প্রান্ত থেকে বেড়াতে এসে সাগর তীরে আনন্দে মেতেছেন তারা। আর তাদের নিরাপত্তায় কাজ করছে ট্যুরিস্ট পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের কর্মীরা।
এবারের ছুটিতে কক্সবাজারে সাড়ে ৩ লাখের বেশি পর্যটকের উপস্থিতি আশা করছেন পর্যটন সংশ্লিষ্টরা। এর মাধ্যমে বিগত দিনের ক্ষতি পুষিয়ে ৫০ কোটি টাকার বেশি বাণিজ্যের আশা ব্যবসায়ীদের।
শুক্রবার (২৩ডিসেম্বর) সকাল থেকে সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে পর্যটকের বিচরণ লক্ষ্য করা গেছে। সমুদ্রস্নান থেকে শুরু করে বালিয়াড়িতে বাঁধ ভাঙা আনন্দ করছেন তারা। এসব ভ্রমণপিপাসুদের নিরাপত্তায় প্রতিটি স্পটে সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছে ট্যুরিস্ট পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, শীতের কুয়াশামাখা মুহূর্ত উপভোগ করার জন্য সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে সকাল থেকে পর্যটকরা ভিড় করতে শুরু করেন। পর্যটকের ভিড় রয়েছে হোটেল- মোটেলের অলিগলিগুলোতেও। পর্যটকবাহী ও সাধারণ পরিবহন এবং ইজিবাইক, সিএনজি অটোরিকশায় বাইপাস সড়ক, কলামতী ডলফিন মোড়, হোটেল-মোটেল জোন, লাবণী, শৈবাল সড়কে তীব্র যানজটেরও সৃষ্টি করেছে।
ঢাকা থেকে আগত রিয়াজুল হাসান বলেন, ‘কক্সবাজার পৌঁছে রুম বুকিং করবো এমন পরিকল্পনায় এসেছি। কিন্তু হোটেল মোটেলগুলোর কোনো রুম পাইনি। কোনো মতে ২দিনের জন্য একটি নিম্নমানের হোটেলে রুম নিয়েছি।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী সুমাইয়া শিমু বলেন, ‘পরিবারের সঙ্গে কক্সবাজার এসেছি। এখানে খাবার থেকে শুরু করে প্রতিটি জিনিসের বাড়তি দাম চাওয়া হচ্ছে। বলতে গেলে প্রশাসনের কোনো নজরদারি নেই।’
শান্ত ইসলাম নামে অপর এক পর্যটক বলেন, ‘পরিবার নিয়ে কক্সবাজার ঘুরতে এসেছি। বাজেটের তুলনায় টাকা একটু বেশি খরচ হলেও সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে ঘুরতে পেরে ও সময় কাটাতে পেরে আমার খুবই ভালো লাগছে।’
ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কক্সবাজার (টুয়াক) সভাপতি আনোয়ার কামাল বলেন, ‘তিন দিনের ছুটিতে আমাদের ৪৫০টি হোটেল বুকিং হয়ে গেছে। অনেক পর্যটক অনলাইনে রুম চাইলেও তাদের দিতে পারছি না। আশাকরি এই ছুটির দিনগুলোতে পর্যটন নগরীতে সাড়ে ৩ লাখের বেশি পর্যটক সমাগম হবে।’
পর্যটকদের দায়িত্বে নিয়োজিত লাইফ গার্ড কর্মীরা জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে সমুদ্র সৈকতে পর্যটকের চাপ বেশি। তাদের সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তারপরও পর্যটকের নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ সেবা দিয়ে যাচ্ছি আমরা।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়নের ওসি গাজী মিজান বলেন, ‘কক্সবাজারের প্রতিটি পর্যটক স্পটে তিন দিনের জন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পর্যটকদের সেবা নিশ্চিত এবং হয়রানি রোধে আমরা হেল্প ডেস্ক স্থাপন করেছি।‘
কক্সবাজার পর্যটন সেলের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘সেবা নিশ্চিতে আমরা ২৪ ঘণ্টা মাঠে আছি। পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য বিভিন্ন টিমে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’
আপনার মতামত লিখুন